অধ্যায় তেইশ – হিসকোসরা মিশরের দখল কেড়ে নিল
খ্রিষ্টপূর্ব ১৭৮২ থেকে ১৬৩০ সালের মাঝে পশ্চিমের সেমাইটরা মিশরের সিংহাসন দখল করে নেয় এবং এর মাধ্যমে মধ্যম রাজত্বের অবসান হয়।
মধ্যম রাজত্বের সমৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে স্বল্পস্থায়ী ছিল। সেনুতে তৃতীয়-এর পুত্র আমেনেমহেত তৃতীয়-এর শাসনামলটিকেই মধ্যম রাজত্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ সময় হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
তার মৃত্যুর পর দেশকে বাইরের আক্রমণকারীদের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখা এবং সকল অঙ্গরাজ্যকে একীভূত করে রাখার কাজগুলো ফারাওর জন্য বেশ কঠিন হয়ে যায় এবং তার ক্ষমতা ফিকে হতে শুরু করে।
তখনও নীল নদে যথেষ্ট পরিমাণ পানি ছিল। তবে আমেনেমহেত তৃতীয়-এর রাজত্বের শেষভাগে এসে আবারও পানির ধারা কমতে শুরু করে। এবং যথারীতি, নীল নদের পানি কমে যাওয়ার সাথে ফারাওদের ক্ষমতা কমে যাওয়ার একটি সহজাত যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়।
ফারাওর ক্ষমতা হ্রাসের পেছনে যোগ্য উত্তরাধিকারী না থাকার ব্যাপারটিও একটি বড়ো কারণ। আমেনেমহেত তৃতীয় প্রায় ৪৫ বছর ধরে রাজত্ব করেছেন। যতদিনে তার মৃত্যু হয় ততদিনে সিংহাসনের জন্য নির্বাচিত উত্তরাধিকারীর বয়সও অনেক বেশি হয়ে গিয়েছে এবং তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। এই কারণে তার বিকল্পও ছিল না কোনো।
আমেনেমহেত চতুর্থ সারা জীবন অপেক্ষা করেছিলেন সিংহাসনে অভিষিক্ত হওয়ার জন্য কিন্তু দুঃখজনকভাবে তিনি ফারাও হওয়ার প্রায় সাথে সাথেই মারা যান। তার স্ত্রী রানি সোবেকনেফরু তার স্থলাভিষিক্ত হন। রানির রাজত্ব নিয়ে ইতিহাসে তেমন কোনো গল্প খুঁজে পাওয়া যায় না; এটুকু জানা গিয়েছে যে সেই যুগে দেশের সিংহাসনে একজন নারীর অভিষিক্ত হওয়ার ব্যাপারটি ছিল অলক্ষুণে এবং এটি রাজপ্রাসাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের চিহ্ন হিসেবে সবার সামনে উপস্থাপিত হয়।
রানি সোবেকনেফরুর পর থেকে ইতিহাসবিদ মানেথো একটি নতুন রাজবংশের কথা লিপিবদ্ধ করেছেন; কারণ রানির কোনো ছেলে-উত্তরাধিকারী ছিলেন না। ত্রয়োদশ রাজবংশের রাজা হিসেবে যিনি অভিষিক্ত হয়েছিলেন তিনি ছিলেন একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি। এই ধোঁয়াটে চরিত্রের পর আরও কয়েকজন রাজা হয়েছিলেন যাদের ব্যাপারেও তেমন কিছু জানা যায়নি।
অপরদিকে, নুবিয়াতে রাজার পক্ষ থেকে দক্ষিণের ভূমিগুলোর তদারকি করার দায়িত্বে নিয়োজিত গভর্নররা ধীরে ধীরে স্বাধীনভাবে কাজ করতে শুরু করেন। সেনুস্রেত তৃতীয় দ্বাদশ রাজবংশের সময়ে নুবিয়ান ভূমিগুলোকে নিজের দখলে এনেছিলেন হিংস্রতার সাথে কিন্তু ত্রয়োদশ রাজবংশের আমলে এসে সেগুলো আবারও হাতছাড়া হয়ে যায়। ততদিনে উত্তরাঞ্চলেও গোলযোগ দেখা দিয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে দেখা যায় যে পূর্বের সীমান্ত এবং বদ্বীপের মাঝের দুর্গগুলো এবং ‘এশিয়াটিকদের ভূমি হিসেবে পরিচিত অঞ্চলটিও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল।
এককালে সীমান্ত এত ভালোভাবে সুরক্ষিত ছিল যে সভাসদ সিহেকে মিশর থেকে বের হতেই বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। কিন্তু এই সময়ে এশিয়াটিক নামে পরিচিত পশ্চিমের যাযাবর সেমাইটরা গণহারে বদ্বীপ ভূমিতে প্রবেশ করছিলেন। তাদের অনেকেই মিশরীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গায় থিতু হয়ে বসবাস করতে শুরু করলেন। ত্রয়োদশ রাজবংশ রাজত্ব শুরু করার প্রায় ৬০ বছর পর, খ্রিষ্টপূর্ব ১৭২০ সালের দিকে, একদল আগ্রাসী যাযাবরের দল মিশরের প্রাচীন রাজধানী মেমফিস আক্রমণ করে তার কিয়দংশ পুড়িয়ে দিলো। মিশরীয়দের মতো তারা পদাতিক বাহিনীর উপর নির্ভরশীল ছিল না; তারা ঘোড়া ও ঘোড়ায় টানা গাড়িতে চড়ে যুদ্ধ করত। এই কারণে তারা সংখ্যায় অল্প হয়েও যুদ্ধক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পেয়ে গেল।
এরকম অপমানজনক পরাজয়ের পরও ত্রয়োদশ রাজবংশ সাময়িকভাবে সারা দেশের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পেরেছিল। কিন্তু তাদের সেই নিয়ন্ত্রণটি এতটাই নড়বড়ে ছিল যে ইতিহাসবিদরা ত্রয়োদশ রাজবংশকে মধ্যম রাজত্বের অবসান এবং দ্বিতীয় অন্তর্বর্তীকালীন রাজত্বের শুরু হিসেবে ধরে নিয়েছেন। এই রাজবংশের শাসনামলের শেষদিকে ফারাওর ক্ষমতা এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিল যে একইসাথে আরেকটি রাজবংশের উৎপত্তি ঘটে। আমরা এই ‘চতুর্দশ রাজবংশ’ সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানি না। শুধু এটুকু জানা যায় যে এই দুটি রাজবংশ বেশ কয়েক বছর পাশাপাশি রাজত্ব করে গিয়েছে। একদিকে ত্রয়োদশ রাজবংশটি মধ্য রাজত্বের রাজধানী ইতিজ-তাওয়ায় বসে থেকে কালক্ষেপণ করছিল আর অপরদিকে এই তথাকথিত চতুর্দশ রাজবংশ নীল নদের বদ্বীপের পূর্বদিকের ভূমিগুলো দখল করে নিয়েছিল।
তারও ত্রিশ কিংবা চল্লিশ বছর পর আরও একটি রাজবংশ ক্ষয়িষ্ণু ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ রাজবংশের পাশাপাশি আবির্ভূত হলো। এই পঞ্চদশ রাজবংশের রাজধানীটি স্থাপিত হলো বদ্বীপের ঠিক পূর্ব প্রান্তের মরুভূমিতে—আভারিস শহরে। পঞ্চদশ রাজবংশের প্রথম রাজা শেশি তার অনুসরণকারীদেরকে একত্র করে একটি সৈন্যবাহিনী গঠন করলেন এবং তার শাসনকে পশ্চিম ও দক্ষিণে জোরপূর্বক ছড়িয়ে দিতে লাগলেন। প্রায় বিশ বছর পর, খ্রিষ্টপূর্ব ১৬৬৩ সালের দিকে, পঞ্চদশ রাজবংশ পূর্ববর্তী দুই রাজবংশকে নির্মূল করে একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করতে সমর্থ হলো।
মানেথোর ভাষায়, শেশি ছিলেন একজন ‘বিদেশি। তিনি এবং তার অনুসারীরা ‘মরুভূমির রাজপুত্র’ বা ‘হিকাউ খোসওয়েট’ বা শুধু ‘হিকসোস’ নামের একটি গোত্রের অন্তর্গত ছিলেন। মানেথো হিকসোসদের ক্ষমতা দখলের ঘটনাকে একটি হিংস্র ও বন্য প্রাণীর অতর্কিত হামলার সাথে তুলনা করেন। তিনি আরও বর্ণনা করেন যে তাদের সহসা এবং প্রবল আক্রমণে মিশরীয়রা একদম হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন এবং খুব সহজেই তারা পরাজিত হন।
মানেথোর ভাষায় : ‘আমি জানি না কী কারণে দেবতারা আমাদের দিকে কঠোর আঘাত ছুড়ে দিলেন আর অপ্রত্যাশিতভাবে পূর্বের ভূখণ্ড থেকে এক অজ্ঞাতনামা আক্রমণকারীর দল এসে আমাদের রাজাদের উৎখাত করলেন। এরপর তারা নির্দয়ভাবে আমাদের শহরগুলো পুড়িয়ে দিলেন, দেবতাদের মন্দিরগুলো মাটির সাথে মিশিয়ে দিলেন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে নিষ্ঠুরতা ও শত্রুতাসুলভ আচরণ করতে শুরু করলেন। তারা অনেক মানুষকে মেরে ফেললেন এবং বাকিদের বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের দাসত্বের বেড়াজালে আবদ্ধ করলেন এবং নিজেদের একজনকে রাজা হিসেবে নির্বাচিত করলেন।’
মানেথো নিজে একজন মিশরীয় ছিলেন এবং স্বভাবতই তিনি তার পূর্বসূরিদের পরাজয়কেও এক সহসা এবং দেবতাদের মদদপুষ্ট আক্রমণের ফলাফল হিসেবে দেখাতে চেয়েছেন। অর্থাৎ ব্যাপারটা এরকম, যেন হিকসোসদের কোনো কৃতিত্ব নেই, দেবতারা রেগে গিয়েছিলেন দেখেই ফারাওরা পরাজিত হলেন।
তবে পঞ্চদশ রাজবংশের শাসকদের রেখে যাওয়া বিভিন্ন নিদর্শন থেকে এটাই বোঝা যায় যে রাজ্য দখল করে নেওয়ার অনেক আগে থেকেই মিশরে হিকসোসদের আনাগোনা ছিল।
মধ্যম রাজত্বের বিভিন্ন শিলালিপি ও তালিকায় ১৬৬৩ সালের ক্ষমতা দখলের বেশ আগে থেকেই সেমাইট নামগুলোর আবির্ভাব হয়েছিল। আভারিস শহরে (যার মানে হচ্ছে ‘মরুভূমির বিলাসবহুল বাসা’) এত বেশি পশ্চিমা সেমাইটদের সমাগম হয়েছিল যে এক পর্যায়ে সেই শহরের পুরো জনগোষ্ঠীই সেমিটিক হয়ে যায়। যখন ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ রাজবংশ মিশরের দুর্বল শাসনযন্ত্র নিয়ে কাড়াকাড়ি করছিলেন তখন সুযোগ বুঝে আভারিসের বাসিন্দারা তাদের আক্রমণ করে বসেন। সুতরাং মিসরের আক্রমণটি আসলে বহিরাগত বা বিদেশিদের দ্বারা সংঘটিত হয়নি, এটি হয়েছিল তাদের নিজেদের দেশের ভেতর থেকেই।
মানেথোর অতিরঞ্জিত বর্ণনাকে অবজ্ঞা করে বলা যায় যে হিকসোস গোষ্ঠীর সদস্যরা এক বা দুই প্রজন্ম ধরে মিশরে বসবাস করছিলেন এবং তারা খুব বেশি শহরও ধ্বংস করেননি। যদিও তাদের নামগুলো সেমিটিক ছিল তবুও তারা ততদিনে মিশরীয় পোশাক ও তাদের রীতিনীতি অনুসরণ করতে শুরু করে দিয়েছেন। মিশরীয় ভাষাতেই সকল শিলালিপি লেখা হতো এবং নথি সংরক্ষণের কাজেও ব্যবহৃত হতো একই ভাষা। মিশরীয়রা হিকসোসদের অধীনে প্রশাসক ও যাজক হিসেবে কাজ করতেন।
যদিও ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ রাজবংশ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল তবুও হিকসোসদের হাতে সারা দেশের দখল কখনও ছিল না। রাজ্যের বিভিন্ন অংশ শাসন করার জন্য ‘প্রতিনিধি রাজা’দের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল এবং তারা হিকসোসদের অনুমোদন নিয়েই কাজটি করতেন। এই রাজাদের কারও নামই তেমন একটা শোনা যায় না কিন্তু তাদেরকে মানেথো ষোড়শ রাজবংশ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
অপরদিকে, থেবেস শহরের মিশরীয় গভর্নরদের ঘোষণা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তারা একযোগে ঘোষণা দিলেন যে তারা হিকসোসদের আধিপত্য মেনে নেবেন না এবং তারাও মানেথোর ভাষায়–’সপ্তদশ রাজবংশ’ হিসেবে রাজত্ব করতে লাগলেন। এক পর্যায়ে একইসাথে মিশরে পঞ্চদশ, ষোড়শ ও সপ্তদশ রাজবংশ রাজত্ব করছিলেন।
হিকসোস রাজারা তাদের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার ব্যাপারে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল ছিলেন এবং এই কারণেই তারা দক্ষিণদিকে সাম্রাজ্য বিস্তারের কোনো চেষ্টাই করেননি। থেবেসের মিশরীয় শাসকরা এবিডোস পর্যন্ত তাদের প্রভাব বিস্তৃত করতে পেরেছিলেন। দক্ষিণের এই রাজত্বে মধ্যম রাজত্বের সকল কৃষ্টি বজায় রাখতে পেরেছিলেন তারা এবং সেখানে কোনো বৈদেশিক প্রভাব ছিল না। কিন্তু হিকসোস ও থেবেসের শাসকদের মাঝে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ছিল না। মানেথো লিখেছেন: ‘থেবেসের রাজারা এবং মিশরের অন্যান্য অংশের শাসকরা মিলে বিদেশি রাজপুত্রদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং তাদের মাঝে একটি ভয়াবহ ও দীর্ঘ যুদ্ধের অবতারণা হয়।’
প্রায় ৫০০ মাইল দূরে থাকা এই দুই রাজবংশের মাঝে বিরূপ মনোভাবের বিষয়টি পঞ্চম হিকসোস রাজা আপেপির আমলে চরমে পৌঁছে যায়। তিনি খ্রিষ্টপূর্ব ১৬৩০ সালে থেবেসের তৎকালীন রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার জন্য মরিয়া হয়ে অজুহাত খুঁজছিলেন।
ব্রিটিশ জাদুঘরে সংরক্ষিত একটি প্যাপিরাসে আপেপি প্রথম-এর পাঠানো একটি চিঠির অংশবিশেষ সংরক্ষিত আছে। তিনি থেবেসের রাজা ও সপ্তদশ রাজবংশের প্রতিনিধি সেকুয়েনেরেকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেন, ‘থেবেসের সকল জলহস্তীকে বধ করুন। তারা রাতভর জোরে শব্দ করতে থাকে আর সেই শব্দ আভারিস পর্যন্ত শোনা যায়। এই শব্দের তীব্রতায় আমার ঘুমের বারোটা বেজে যাচ্ছে।’
আপেপি প্রথম-এর প্রাসাদ থেকে প্রায় ৫০০ মাইল দূরে বসে থেকে তার এই সতর্কবাণী কিংবা আদেশকে সেকুয়েনেরে যুদ্ধের হুমকি হিসেবেই ধরে নিলেন। তার দেহাবশেষ আজও কায়রো জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। সেটিকে ভালোভাবে পরীক্ষা করে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে তিনি জলহস্তীদের বিন্দুমাত্র বিরক্ত না করে বরং সৈন্যদল একত্র করে উত্তরের দিকে যুদ্ধযাত্রা করেছিলেন। পথিমধ্যে সেকুয়েনেরের সাথে হিকসোসদের সীমান্তরক্ষী দলের মোলাকাত হয় এবং তিনি তাদের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন।
যুদ্ধ চলাকালীন সেকুয়েনেরে ঘোরার পিঠ থেকে পতিত হন এবং একটি মুগুর দিয়ে তার মাথার হাড় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। মাটিতে পড়ে থাকা অবস্থায় তার সারা শরীরে ছুরি, বর্শা ও কুড়াল দিয়ে আঘাত করা হয়। পরবর্তীতে তার শরীরকে তাড়াহুড়া করে মমিতে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। তবে ততক্ষণে মৃতদেহের অনেকটুকু অংশে পচন ধরে গিয়েছিল। ধারণা করা হয়, থেবিয়ান ফারাওর লাশটি যুদ্ধক্ষেত্রে বেশ কিছুদিন পড়ে ছিল। হিকসোসদের বাহিনী পিছু হটার পরেই কেবল দক্ষিণের সৈন্যরা তার লাশটিকে সংগ্রহ করতে পেরেছিল।