ঋগ্বেদ ০৬।৬৬

ঋগ্বেদ ০৬।৬৬
ঋগ্বেদ সংহিতা । ৬ষ্ঠ মণ্ডল   সূক্ত ৬৬
মরুৎগণ দেবতা। ভরদ্বাজ ঋষি।

১। মরুৎগণের সেই সমান ও স্থির পদার্থে অবমমনকারী প্রীতিকর ও বেগবান বপুঃ বিদ্বান স্তোতার নিকট শীঘ্ৰ প্ৰাদুর্ভূত হউক। উহা অন্তরিক্ষে একবার শুক্লবৰ্গ জল ক্ষরণ করে এবং মর্তলোকে অন্য পদার্থ দোহন করিবার জন্য বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়।

২। যাঁহারা সমৃদ্ধিশালী অগ্নির ন্যায় দীপ্তি পান, যাঁহারা দ্বিগুণ এবং ত্রিগুণ বৃদ্ধি প্ৰাপ্ত হন, সেই মরুৎগণের রথ ধূলিরহিত এবং সুবৰ্ণালঙ্কারবিশিষ্ট। তাঁহারা ধন এবং বলের সহিত প্রাদুর্ভূত হন।

৩। অভীষ্টবর্ষী রুদ্রের যে পুত্র মরুৎগণ আছেন এবং যাঁহাদিগকে ধারণকারী অন্তরিক্ষ ধারণ করিতে সক্ষম, সেই মহান মরুৎগণের মাতা মহতী। ঐ অন্তরিক্ষ মনুষ্যগণের উৎপত্তির জন্য গর্ভ জল ধারণ করেন।

৪। যাঁহারা স্তোতৃগণের নিকট যানযোগে গমন করিতে ইচ্ছা করেন না, কিন্তু তাঁহাদের অন্তঃকরণ মধ্যে বিদ্যমান থাকিয়া পাপসমূহ শোধিত করেন, যাঁহারা দীপ্তিমান, যাঁহারা স্তোতৃগণের অভিলাষানুসারে জল দোহন করেন। যাঁহারা দীপ্তিযুক্ত হইয়া স্বশরীর প্রকাশ করেন এবং ভূমি সিক্ত করেন।

৫। সমীপগামী স্তোতৃগণ যাঁহাদিগের উদ্দেশে মারুৎ স্তোত্ৰ উচ্চারণ করতঃ শীঘ্র অভিলষিত লাভ করিতেছেন, এবং যাঁহারা অপহর্তা, গমনশীল ও মহত্বযুক্ত হইতেছেন, সম্প্রতি সুন্দর দানবিশিষ্ট যজমান সেই উগ্ৰ মরুৎগণকে বীতক্ৰোধ করিতেছেন।

৬। তাঁহারা উগ্র এবং বলশালী, তাঁহারা ধর্ষক সেনাগণকে সুরূপা দ্যাবাপৃথিবীর সহিত যোজিত করেন। ইহাদিগের প্রতিরোদসী স্বদীপ্তিবিশিষ্টা বলবান মরুৎগণেতে দীপ্তি থাকে না।

৭। হে মরুৎগণ! তোমাদিগের রথ পাপরহিত হউক। স্তোতা সারথি না হইয়াও যাহাকে চালনা করে, সেই রথ অশ্বরহিত হইয়াও, আহার রহিত ও পাশ রহিত হইয়াও, জলপ্রেরক এবং অভীষ্টপ্রদ হইয়া দ্যাবাপৃথিবী ও অন্তরীক্ষমাৰ্গে গমন করে।

৮। হে মরুৎগণ! তোমরা যাহাকে সংগ্রামে রক্ষা কর, তাহার প্রেরকও নাই ও হিংসিতাও নাই। তোমরা যাঁহাকে পুত্র, পৌত্র, গাভী এবং জল বিষয়ে রক্ষা কর, তিনি সংগ্রামে দীপ্ত শত্রুর গাভীসমূহ বিদীর্ণ করেন।

৯। হে অগ্নি! যাঁহারা বলদ্বারা শক্রগণের বল অভিভূত করেন, যে মহান মরুৎগণ হইতে পৃথিবী কম্পিত হয়, সেই শব্দকারী, ত্বরিত বলবান মরুৎগণকে দর্শনীয় অন্ন দান কর।

১০। মরুৎগণ যজ্ঞের ন্যায় দ্যোতমান, শীঘ্রগামী অগ্নিরশ্মির ন্যায় দীপ্তিমান এবং অর্চনীয়, তাঁহারা শত্রুগণের প্রকম্পক ব্যক্তিগণের ন্যায় বীর, দীপ্ত শরীরবিশিষ্ট এবং অনভিভূত।

১১। আমি, সেই বৰ্দ্ধমান, দীপ্তিমান খড়গবিশিষ্ট, রুদ্রের পুত্র মরুৎগণকে স্তোত্রদ্বারা পরিচর্যা করি। স্তোতার নির্মল স্তুতিসমূহ উগ্ৰ হইয়া মেঘের ন্যায় মরুৎগণের বলের প্রতি স্পর্ধা করিতেছে।