ঋগ্বেদ ০৬।২৮

ঋগ্বেদ ০৬।২৮
ঋগ্বেদ সংহিতা । ৬ষ্ঠ মণ্ডল । সূক্ত ২৮
গো দেবতা, কিন্তু দ্বিতীয় ঋকের ও অষ্টম ঋকের কিয়দংশের ইন্দ্র দেবতা। ভরদ্বাজ ঋষি।

১। গোগণ যেন আমাদিগের গৃহে আগমন করে ও আমাদিগের কল্যাণ বিধান করে (১), তাহারা যেন আমাদিগের গোষ্ঠে উপবেশন করে ও আমাদিগের প্রতি প্রসন্ন হয়। বিচিত্রবণ ধেনুবৃন্দ যেন এই স্থানে সন্ততি সম্পন্ন হইয়া প্রত্যুষে ইন্দ্রের নিমিত্ত দুগ্ধপ্রদান করে।

২। ইন্দ্ৰ যজমানের ও প্রতিদায়ক স্তোতার অভিলাষ পূর্ণ করেন। তিনি সৰ্ব্বদা তাহাদিগকে ধন প্রদান করেন এবং কখনও তাহাদিগকে ত্বদীয় নিজ ধন হইতে বঞ্চিত করেন না। তিনি নিরস্তর তাহাদিগের ধন বৃদ্ধি করিয়া নিজ ভক্তদিগকে দুর্ভেদ্য দুর্গে স্থাপন করেন।

৩। ধেনুগণ যেন বিনষ্ট না হয়। তস্করগণ যেন তাহাদিগকে অপহরণ না করে। শক্রসম্বন্ধীয় অস্ত্র সকল যেন তাহাদিগের উপর পতিত না হয়। যে সকল ধেনু দেবোদেশে প্রদত্ত হয়, যাগ সাধন সেই গোবৃন্দের সহিত গোস্বামী যেন কখনও বিযুক্ত না হয়েন।

৪। রেণু সকলের উত্থাপনকারী সামরিক অশ্ব যেন তাহাদিগের নিকট উপস্থিত না হয়। তাহারা যেন যজ্ঞে বিশসনাদি অর্থাৎ বলিদানাদি সংস্কার প্রাপ্ত না হয়। যাগানুষ্ঠানকারী মমুষ্যের ধেনুগণ যেন নির্ভয় ও স্বাধীনভাবে বিচরণ করে।

৫। গোগণ আমার ধনস্বরূপ। ইন্দ্র আমাকে গোসমূহ প্রদান করুন। ধেনুগণ হবাশ্রেষ্ঠ সোমরসের ভক্ষণীয় প্রদান করুক। হে মনুষ্যগণ! এই সমস্ত ধেনুগণই সেই ইন্দ্র, যাঁহাকে আমি হৃদয় ও মনের সহিত কামনা করি।

৬। হে ধেনুগণ! তোমরা আমাদিগের পুষ্টিবিধান কর। তোমরা ক্ষীণ ও কুৎসিত দেহকে শ্ৰীযুক্ত কর। হে কল্যাণকর ধ্বনিসম্পন্ন ধেনুবৃন্দ! তোমরা আমাদিগের গৃহ সমৃদ্ধিসম্পন্ন কর। যজ্ঞসভায় তোমাদিগের প্রদত্ত প্রচুর অল্পই সম্যক রূপে কীৰ্ত্তিত হয়।

৭। হে ধেনুগণ! তোমরা সন্ততিসম্পন্ন হও। শোভন শম্পভক্ষণ ও সুগম সরোবরে জল পান কর। তস্কর যেন তোমাদিগের অধিপতি না হয় এবং হিংস্ৰক জন্তুও যেন তোমাদিগকে আক্রমণ না করে এবং রুদ্রাস্ত্র যেন তোমাদিগের দূরে থাকে।

৮। হে ইন্দ্র! তোমার বলাধানের নিমিত্ত ধেনুগণের পুষ্টি প্রার্থিক হউক এবং গোগণের গর্ভাধানকারী বৃষভের বল প্রার্থিত হউক।

————-
(১) তৎকালে দুগ্ধদাত্রী গাভীই লোকের একটি প্রধান সম্পত্তি ছিল, সুতরাং ঋষিগণের বড় প্রিয় ছিল। এই স্থক্তের ঋষি গোসমূহেরই স্তুতি করিতেছেন, এবং ৫  ঋকে তাহাদিগকে স্বয়ং ইন্দ্র বলিয়া অভিহিত করিয়াছেন। ৪ ঋকে গাভীর আহুতি দানের কথাও উল্লেখিত হইয়াছে।