দি পেল হর্স – ১১

একাদশ অধ্যায় 

প্রথমে হারসিয়া। এখন করিগ্যান। 

ঠিক আছে। আমি তাহলে বোকা বনেছি। 

বাক চাতুরিতে ভুলে তাকেই সত্য বলেই গ্রহণ করেছিলাম। ওই বাচাল মেয়ে মানুষ থিরজা গ্রে আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করেছিলো। আমি একটা কুসংস্কার বিশ্বাসী মানুষ। তাই ঠিক করলাম সমস্ত ব্যাপারটাই ভুলতে চেষ্টা করবো এটার সাথে কি বা সম্পর্ক? সহসা মোহমুক্তি কুয়াশার আবরণ ভেদ করে যেন মিসেস ডেন ক্যালথ্রপের কণ্ঠস্বর ভেসে এলো—তোমার কিছু একটা করা উচিত। 

কথাটা বলতে খুব ভালো লাগে। 

হারসিয়াকে তো প্রয়োজন ছিলো। করিগ্যানকেও প্রয়োজন। কিন্তু ওরা দুজনের কেউই এই খেলায় মাততে রাজী হল না। ওরা ছাড়া কেউ তো সাহায্য করার মতন নেই। যদি না…। বসে বসে একটা মতলব ভাঁজতে লাগলাম। খানিকটা আবেগ তাড়িত হয়ে মিসেস অলিভারকে ফোন করলাম। 

—হ্যালো। মার্ক ইন্টারব্রুক কথা বলছি। 

—কি ব্যাপার। 

—আচ্ছা। মেলার দিন যে মেয়েটি বাড়িতে ছিলো তার নাম বলতে পারেন কি?

—হ্যাঁ, তার নাম জিনজার। 

—ওটা ওর সঠিক পদবী নয়। ওর আসল নামটা কি বলতে পারেন? 

—না। তার আর অন্য নাম আছে কিনা আমার জানা নেই। তবে রোডাকে একবার ফোন করে আপনি জানতে পারবেন। 

তাকে আমি ফোন করে জানতে লজ্জিত হলাম। তাই বললাম—ফোন করতে আমি এখন পারছি না। 

মিসেস অলিভার উৎসাহিত করার জন্য বললেন—খুবই সহজ কাজ। ফোন করে রোডাকে বলুন যে ঐ মেয়েটির ঠিকানা হারিয়ে ফেলেছি তাই নামটা মনে পড়ছে না। অথচ আপনি তাকে আপনার একখানা বই পাঠাবেন বলে কথা দিয়েছিলেন কিংবা সস্তায় জিনিসপত্র বিক্রি করে যে দোকানটা তার নাম জানাবেন বা সেদিন নাক ঝাড়বার জন্যে তার কাছ থেকে একখানা রুমাল ধার করেছিলেন সেখানা ফেরত দিতে চান কিংবা পুনরুদ্ধার করা ছবি কিনতে চান এমন এক ধনী বন্ধুর নাম জানতে চান –এর মধ্যে যে কোনো একটা ছুতো করে তা নাম ঠিকানাটা জানতে চাইতে পারেন, তাই না? 

—হাঁ, এর যে কোনো একটা ছুতোয় কাজ হাসিল করা যাবে। রোডাকে ফোনে পেয়ে গেলাম। 

—জিনজার? সে ক্যালগারি প্লেসের একটা আস্তাবলে থাকে। রোডা তার ফোন নম্বর বললো। 

—কিন্তু তার নাম আমি জানি না। তার নাম কখনও শুনিনি। 

—তার নাম? তার আসল নাম জানতে চাইছেন তো। করিগ্যান। হাঁ করিগ্যান। কিছু বললেন? 

—না, কিছু বলিনি। ধন্যবাদ রোডা। 

মনে হলো এই ঘটনা পরম্পরা। করিগ্যান। দু’জন করিগ্যান। মনে হচ্ছে একটা শুভ লক্ষণ। 

তাই ফোন করলাম ক্যাথরিন করিগ্যানকে। 

****

হোয়াইট কোকাটু বারে দুজনে মদ পানের জন্য ঢুকেছিলাম। টেবিলে জিনজার আমার মুখোমুখি বসেছিলো তাকে ঠিক আগের মতনই প্রাণবন্ত মনে হচ্ছে—সেদিন সুচ ডিপিঙে এমনই দেখায় তাকে। পরনে আঁটসাটো প্যান্ট—গায়ে জার্সি জামা আর পায়ে পশমের মোজা মাথায় লালচে চুল। জিনজারকে এই মুহূর্তে বড় ভালো লাগছে। 

বলালম, তোমার সাথে দেখা করতে আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তোমার আসল নাম ঠিকানা আর ফোন নম্বর আমার জানাই ছিলো না। একটা সমস্যায় পড়েছিলাম। 

জিনজার একটা রসিকতা করলো। 

হারসিয়াকে যে কাহিনী শুনিয়েছিলাম জিনজারকে সেই কাহিনী বললাম। বেশি কথা বলতে হলো না জিনজারকে, কেননা পেল হর্স বাড়ি আর তার অধিবাসীদের সে চেনে। ওর মুখের উপর থেকে নজর ঘুরিয়ে নিয়ে আমি কাহিনী শেষ করলাম। কাহিনী শোনার পর ওর মুখের উপর ফুটে ওঠা প্রতিক্রিয়া দেখার এতটুকু ইচ্ছা আমার হলো না। এখন মনে হচ্ছে আমি দারুণ বোকামী করেছি। 

জিনজারের বিরক্ত কণ্ঠস্বর ধ্বনিত হলো—কি বলা শেষ তো? 

স্বীকার করলাম—হ্যাঁ, কাহিনী শেষ। 

–এ ব্যাপারে কি করতে চাও। 

—কাউকে ত এ কাজটা করতেই হবে। একটা সংগঠন মানুষকে খতম করছে এবং আর কিছুই করছে না। 

— কিন্তু আমি কি করতে পারি? 

আমি ওর ঘাড়ে লাফিয়ে পড়ে ওকে পিষ্ট করতে পারতাম। 

ভুরু কুচকে জিনজার মদ পান করেছিলো। তার আচার আচরণে উষ্ণতার আবেশ। বুঝতে পারলাম যে, আমি আর একা নই। 

খুশি ভরা কণ্ঠে জিনজার বললো, এ সবের কি অর্থ তাই তুমি জানতে চাও। 

—তোমায় স্বীকার করছি। কিন্তু কিভাবে করবো? 

—জানবার দু’তিনটে উপায় আছে। বোধ হয় আমি সাহায্য করতে পারবো। 

—করবে? কিন্তু তোমার চাকরি রয়েছে। চিন্তিত জিনজার ভুরু কোঁচকালো। বললো, অফিসের কাজ সেরেও অনেক কাজ করবার সময় পাবো। রাতের ভোজনের সময় পপি নামের একটা মেয়েকে দেখছো। ওই মেয়েটা এ ব্যাপারে জানে। সে কি করেছে তার মুখ থেকে শুনতে হবে। 

—হাঁ, জানি। তাকে যখন কয়েকটা প্রশ্ন করেছিলাম তখনই সে ভয় পেয়ে সরে গেলো। সে দারুণ ভয় পেয়েছে। সে নির্ঘাৎ মুখ খুলবে না। 

বিশ্বাসভরা কণ্ঠ জিনজারের—এ ব্যাপারে তোমাকে আমি সাহায্য করবো। সে তোমাকে যা বলবে না তা আমাকে বলবে। আমাদের মধ্যে যাতে দেখা হয় তার ব্যবস্থা করতে পারবে কি? সেখানে থাকবে তোমার বন্ধু এবং তার বন্ধু আর থাকবো আমি তুমি, এই ত? একটা ছবি দেখা কিংবা ডিনার বা এধরনের কোনো ব্যবস্থা করা যায় কি? আচ্ছা, এতে কি খুব খরচ হবে? 

ওকে আঘাত করে জানালাম যে, সে খরচ আমি দিতে পারবো। 

একটু চিন্তা করে জিনজার বললো, থমসিনা টাকারটন রূপী বঁড়শীতে তোমার সেরা টোপ গেঁথে দেবে। 

—কিভাবে দেব? সে ত মৃত। 

—তোমার ধারণা যদি সঠিক হয় তাহলে নিশ্চয় কেউ তার মৃত্যু চেয়েছিলো। এবং পেল হর্সের মাধ্যমে সে ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলো। দু’টো সম্ভাবনা রয়েছে। মনে হচ্ছে এই সম্ভাবনার দুটো দিক রয়েছে। এর জন্য দায়ী তার বিমাতা। আর না হয় যে মেয়েটির বয়ফ্রেন্ডকে ঠাট্টা করায় তার সাথে লড়াই বেধেছিলো। সেই লুইজি মেয়েটির। বোধ হয় মেয়েটি ওই যুবকটিকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছিল। এদের দুজনের মধ্যে যে কোনো একজনের পক্ষে পেল হর্সে যাওয়া খুবই সম্ভব ছিলো। আমরা এখান থেকেই শুরু করবো। মেয়েটির নাম কি? অথবা তুমি তাকে জানো নাকি? 

—মনে হয়, ওর নাম লাউ। 

— ধূসর সোনালি চুল, মাঝারি দৈহিক উচ্চতা, বেশি ভারি বক্ষঃস্থল। 

ওর কাছ থেকে শোনা লাউ-এর দেহ বর্ণনা যে সঠিক তা স্বীকার করলাম। 

—মনে হচ্ছে, ওকে আমি জানি। লোর্ড এলিস। ওর হাতে টাকা পয়সা আছে। 

—ওকে দেখে ত তা মনে হয় না। 

—লোক মনে না করলেও ওর হাতে পয়সা আছে। যা হোক, পেল হর্সের দাবি মেটানোর ক্ষমতা ওর আছে। আমার ধারণা, কোনো কিছু না পেলে ওরা কাজ করে না। 

—কোনো লোকের পক্ষে তা কল্পনা করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। 

—ওর সৎ মাকে তুমি সামলাবে। তার বাড়ি তোমার বাসার কাছে। আমি আরো দূরে থাকি। কিন্তু ওর সৎ মা থাকে কোথায় তা আমি জানি না। 

—লুইজি জানে টমির বাড়ির ঠিকানা। কিন্তু আমরা কি বোকা। তুমি ত মেয়েটির মৃত্যুর খবর দ্য টাইম পত্রিকায় দেখেছো। কাজেই পুরনো পত্রিকার ফাইল দেখলে তুমি ঠিকানা জানতে পারবে। 

চিন্তিত মনে বললাম, ওর সৎমাকে হয়ত আমি সামলাতে পারবো। 

আমার কাজ যে সহজেই আমি করতে পারবো জানিয়ে জিনজার বললো, দ্যাখো তুমি একজন ঐতিহাসিক বস্তা। তোমার নামের পাশে ডিগ্রি লেখা থাকে। মিসেস টাকারটন তোমাকে দেখে প্রভাবিত হবে এবং হয়ত মরণের কোলে ঢলে পড়বে বেদম হাসতে হাসতে। 

—কোনো ছুতো নিয়ে যাবো? 

জিনজার অস্পষ্টভাবে বললো, তার বাড়ির কিছু কৌতূহলোদ্দীপক বস্তু দেখতে চাও এটা কি বলা যায়? বাড়িখানা পুরানো হলে এমন দর্শনীয় বস্তু থাকতে পারে। 

—এসব আমি জানতে চাই না। ওকে বাধা দিয়ে বললাম। 

জিনজার বললো, এসব বিষয় মহিলাও জানে না। তবে শতাব্দী প্রাচীন বস্তুগুলো যে ঐতিহাসিক বা পুরাতত্ত্ববিদদের মন আকর্ষণ করে তা সবাই জানে। কিংবা ধরো ছবির কথা বললে কেমন হয়? কিছু পুরনো ছবি ওখানে থাকতে পারে। কাজেই মহিলার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ব্যবস্থা করে তার বাড়িতে যাও। নানা বিষয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে মহিলাকে বলবে যে তার সৎ মেয়ের সঙ্গে তোমার পরিচয় হয়েছিলো। মেয়েটির মৃত্যুর জন্য তুমি দুঃখিত। কথা বলতে বলতে আকস্মিকভাবে পেল হর্সের প্রসঙ্গ তুলবে। একটু বদ লোকের মতন আচরণ করার ইচ্ছে হলে। 

—এবং তারপর? 

—মহিলার প্রতিক্রিয়ার উপর নজর রাখবে। 

যদি এর অপরাধ সচেতন মন হয় তবে আচমকা পেল হর্সের নাম শুনলেই তার মনে প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। 

—যদি তার মনে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তবে এরপর কি করবো? 

—তাহলে বুঝবো আমরা ঠিক পথে চলেছি। তখন আমরা পুরোপুরি কাজে নেবে পড়বো। 

বলতে বলতে বার কয়েক মাথা ঝাঁকিয়ে জিনজার বললো -ওই গ্রে স্ত্রীলোকটি নিজের অনুষ্ঠিত কাজ কর্মের কথা তোমাকে বলতে গেল কেন? বিশেষ করে তোমাকে? ভাবছি, এর মধ্যে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না? তোমাকে কি জড়াতে চায়? 

—আমাকে কিসের সাথে জড়াবে? 

—ধরো এমন হতে পারে। ওই পপি মেয়েটি ‘পেল হর্স’ বাড়ি সম্বন্ধে কিছুই জানে না, তবে লোকমুখে সে বাড়ির রহস্যের কথা শুনেছে। তুমি তাকে ‘পেল হর্স’ বাড়িখানার কথা জিজ্ঞাসা করতে তার মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছ। কেন জানতে চাইছে? তুমি পুলিশনও। তাই হয়ত তোমাকে ভেবেছে ওখানকার তুমি একজন সম্ভাব্য খরিদ্দার। 

—কিন্তু নিশ্চিতভাবে…। 

—যেটা যুক্তির কথা সেটাই তোমাকে বলছি। নিজের প্রয়োজনে খোঁজ নিতে গিয়ে তুমি ‘পেল হর্স’ বাড়িখানার রহস্যের গুজব শুনেছিল। তারপর গেলে মেলায়। সেখানে তুমি ‘পেল হর্সে’ যেতে চাইলে আর তখন তোমাকে আরো কৌতূহলী করার জন্যই থিরজা গ্রে তোমাকে এসব কাহিনী শুনিয়েছে। 

—হাঁ, এটা হতে পারে। আচ্ছা জিনজার, তুমি কি ভাবো মেয়েটা যা করেছে এবং যা বলে দাবি করেছে তা কি সে সত্যি করতে পেরেছে? 

জিনজার বললো, আমি ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি সে একাজ করতে পারে না। তবে আজব ঘটনা ত ঘটতেই পারে। বিশেষভাবে সম্মোহনের সাথে জড়িত ঘটনা। ধরো কাউকে বলা হয়েছে যাও কাল বিকেল চারটার সময় বাড়িতে এক কামড় বসাবে। কাজটা কেন করছে তা না জেনেও লোকটা তাই করবে। কিংবা বলা হলো বিদ্যুতের বাক্সের উপর এক ফোঁটা রক্ত ফেলো তা থেকে জানা যাবে যে, আগামী দু’বছরের মধ্যে তোমার ক্যানসার হচ্ছে কি না। এসবই আজগুবি কাজ মনে হয়—কিন্তু হয়ত সবটাই আজগুবি নয়। কিন্তু থিরজা সম্পর্কে আমার ভয়। সে হয়ত এমন কাজ করতে পারে। 

বললাম—সুন্দর ব্যাখ্যা করেছো। 

জিনজার চিন্তিত মনে বললো, লাউ সম্পর্কে মনে হয় আমি খোঁজ নিতে পারবো। কয়েকটা জায়গায় গেলে ওর সাথে আমার দেখা হতে পারে। লুইজিও কিছু কিছু খবর জানতে পারে। 

তবে প্রথমেই পপির সঙ্গে দেখা করার দরকার। বললাম। খুব সহজেই দেখা হয়ে গেলো। তিনটে রাত ডেভিডের হাতে কোনো কাজ ছিল না। তাই একদিন পপিকে নিয়ে এলো। আমরা সবাই ফ্যানটাসি খাবার ঘরে ডিনার খেতে গেলাম। জিনজার একান্তে উঠে গেলো পপিকে নিয়ে। এক সময় খাওয়া দাওয়ার পাট চুকলে ছাড়াছাড়ি হলো আমাদের। জিনজারকে আমি নিজের গাড়িতে তুলে নিলাম। একসময় বেশ খুশি ঝরা গলায় বললো জিনজার-খুব বেশি না হলেও কাজটা হয়েছে কিছুটা। যে যুবকটির জন্যে লাউ বিবাদ করেছিলো তার নাম জোন প্লেডন। খুবই বদ যুবক। মেয়েগুলো ওর পিছনে মরীয়া হয়ে ছোটে। লাউ এবং পরে টমির সাথে ছোকরা প্রেমের খেলা খেলছিলো। লাউ এর কথায় ছোকরা তার টাকা পয়সা হাতাবার জন্যই তার পিছনে ঘুরছে। ফলে একদিন ছোকরার সঙ্গে লাউ-এর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল। কাজেই সে রেগে গেলো। কিন্তু এসব মেয়েলি ঝগড়া। 

— মেয়েলি ঝগড়া! সে তো টমির মাথা থেকে গোড়া সহ চুল ছিঁড়ে নিয়েছিলো। 

—ওরা সবাই নিজের নিজের কথা বলতে চায়। আমি লাউ-এর কথাই বলছি। এর মধ্যেই সে আর একজন বয় ফ্রেণ্ড জোগাড় করেছে। তাই মনে হয় লাউ পেল হর্সের খরিদ্দার হয়নি। কাজেই ওকে আমরা বাদ দিতে পারি। টমির সাথে এখন জোনের খুব বেশি মাখামাখি। ওরা আর এসবের মধ্যে নেই। তুমি ওর সৎ মায়ের সম্পর্কে কি খোঁজ পেলে? 

—মহিলা বিদেশে গেছে। কাল ফিরছে। তাকে একটা চিঠি লিখেছি। বললাম। 

ঘটনাটা একেবারে শুরু থেকে আলোচনা করা যাক। খবরে প্রকাশ-ফাদার গোরম্যান সে রাতে যখন একজন মরণাপন্ন মহিলার সাথে দেখা করে ফিরছিলেন তখন পথে খুন হন মহিলা ফাদারের কাছে মৃত্যুকালীন যে বিবৃতি দিয়েছিলেন তারই জন্য তিনি খুন হন। সেই মহিলার কি হলো? মহিলা কি মারা গেছেন? আর সেই মহিলা কে? এসব প্রশ্নের জবাব থেকে আমরা কিছুটা এগিয়ে যেতে পারবো। 

বললাম মহিলা মৃত। তার সম্পর্কে বেশি কিছু জানতে পারিনি। তবে মহিলার নাম ডেভিস। 

—আর বেশি কিছু কি জানতে পারোনি? 

—কি করতে পারি দেখবো। 

—মহিলার বিগত জীবনের কথা না জানতে পারলেও তিনি যা জেনেছিলেন তা কিভাবে জেনেছিলেন তার খোঁজ নাও। 

—তোমার যুক্তি বুঝেছি। 

করিগ্যানের কাছ থেকে মহিলার খবর জানার জন্যই পরের দিন সকালে তাকে ফোন করলাম। 

—দ্যাখো। ডেভিস ওর আসল নাম নয়। তার আসল নাম আর্ডার। তবে মহিলার স্বামী ছিল একটা জালিয়াৎ। তাই মহিলা স্বামীকে ছেড়ে চলে আসে। এবং আবার কুমারী জীবনের পদবী গ্রহণ করে। 

—কি ধরনের জালিয়াৎ ছিলো তার স্বামী? এবং লোকটি এখন কোথায় থাকে? 

ছোট খাটো জালিয়াৎ। দোকান থেকে হাত সাফাই করে দাগী আসামী। বেশ কয়েকবার জেলও খেটেছে। কোথায় সে জানতে চাইছো ত? সে মারা গেছে। 

—মহিলা সম্পর্কে আর বেশি কিছু জানা থাকলে বল। 

—না, আর কিছু জানা যায়নি। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত মহিলা যেখানে কাজ করতেন, তারাও কিছু বলতে পারেনি। করিগ্যান। 

তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফোন রেখে দিলাম