জাগ্রত বিশ্বকোলাহল-মাঝে

আরাম-ভাঙা উদাস সুরে

কেন জাগে না, জাগে না অবশ পরান

নাথ হে, প্রেমপথে সব বাধা ভাঙিয়া দাও

ঘোর দুঃখে জাগিনু, ঘনঘোরা যামিনী

পেয়েছি অভয়পদ, আর ভয় কারে

তুমি জাগিছ কে

আমার যে সব দিতে হবে সে তো আমি জানি

জীবনে আমার যত আনন্দ পেয়েছি দিবস-রাত

সারা জীবন দিল আলো সূর্য গ্রহ চাঁদ

শান্তিসমুদ্র তুমি গভীর

আসা-যাওয়ার মাঝখানে

যাদের চাহিয়া তোমারে ভুলেছি তারা তো চাহে না আমারে

পূর্ণ-আনন্দ পূর্ণমঙ্গলরূপে হৃদয়ে এসো

এ পরবাসে রবে কে হায়

শুনেছে তোমার নাম অনাথ আতুর জন

আজি শুভ শুভ্র প্রাতে কিবা শোভা দেখালে

আমি দীন, অতি দীন

আঁখিজল মুছাইলে জননী

আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে দাঁড়া

ডুবি অমৃতপাথারে– যাই ভুলে চরাচর

বারে বারে পেয়েছি যে তারে

আমি জেনে শুনে তবু ভুলে আছি

সংশয়তিমিরমাঝে না হেরি গতি হে

এখনো আঁধার রয়েছে হে নাথ

সত্য মঙ্গল প্রেমময় তুমি, ধ্রুবজ্যোতি তুমি অন্ধকারে

ভক্তহৃদিবিকাশ প্রাণবিমোহন

কী ভয় অভয়ধামে, তুমি মহারাজা– ভয় যায় তব নামে

তোমারি গেহে পালিছ স্নেহে, তুমি ধন্য ধন্য হে

যে থাকে থাক-না দ্বারে

ভেঙেছ দুয়ার, এসেছ জ্যোতির্ময়, তোমারি হউক জয়

এ পথ গেছে কোন্‌খানে গো কোন্‌খানে

নয়ান ভাসিল জলে

নিশিদিন মোর পরানে প্রিয়তম মম

ব্যাকুল প্রাণ কোথা সুদূরে ফিরে

চিরবন্ধু চিরনির্ভর চিরশান্তি

বাণী তব ধায় অনন্ত গগনে লোকে লোকে

আনন্দ রয়েছে জাগি ভুবনে তোমার

আকাশে দুই হাতে প্রেম বিলায় ও কে

হবে জয়, হবে জয়,হবে জয় রে

নিত্য নব সত্য তব শুভ্র আলোকময়

হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী, নিত্য নিঠুর দ্বন্দ্ব

আছ অন্তরে চিরদিন, তবু কেন কাঁদি

শূন্য প্রাণ কাঁদে সদা– প্রাণেশ্বর

বাঁচান বাঁচি, মারেন মরি

প্রথম আদি তব শক্তি

সকল ভয়ের ভয় যে তারে কোন্‌ বিপদে কাড়বে

নিত্য তোমার যে ফুল ফোটে ফুলবনে

জয় হোক, জয় হোক নব অরুণোদয়

যদি ঝড়ের মেঘের মতো আমি ধাই চঞ্চল-অন্তর

অনেক দিয়েছ নাথ

এ মোহ-আবরণ খুলে দাও, দাও হে

সুখহীন নিশিদিন পরাধীন হয়ে ভ্রমিছ দীনপ্রাণে

সংসারে কোনো ভয় নাহি নাহি

শীতল তব পদছায়া, তাপহরণ তব সুধা

নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে, রয়েছ নয়নে নয়নে

তার অন্ত নাই গো যে আনন্দে গড়া আমার অঙ্গ

হেরি তব বিমলমুখভাতি দূর হল গহন দুখরাতি

বুঝেছি কি বুঝি নাই বা সে তর্কে কাজ নাই

তোমার আনন্দ ওই এল দ্বারে