বত্রিশ
সন্ধ্যা নেমে যাওয়ার আগেই লক আরডাইকের তীরে পৌঁছে গেল রানা ও জেসিকা। কালচে আকাশ থেকে ঝরছে সফেদ তুষারকণা। ছাতিসদৃশ পাইনের একটি ঝাড়ের কাছে পাতলা বরফে ঢেকে গেছে পুরনো ল্যাণ্ড রোভার। টয়োটা থেকে নামার আগে জিজ্ঞেস করল জেসিকা, ‘তুমি তো বললে না কে আমাদেরকে সাহায্য করতে পারবে?’
‘শুনে হয়তো হতাশ হবে, তাই কিছু বলিনি,’ বলল রানা। ‘ওটা বোধহয় কোনও কানাগলি। তবে এটা জেনেও কটেজে পৌঁছে কয়েক জায়গায় ফোন দেব।’
‘তুমি কটেজে গেলে আমিও তোমার সঙ্গে যাব।’
এরইমধ্যে রানা বুঝেছে, তর্কে জড়ালে ওকে গ্রেফতারের হুমকি দেবে জেসিকা। তাই সেদিকে না গিয়ে টয়োটার ইঞ্জিন চালু রেখে নেমে পড়ল ও। তিরতির করে কাঁপছে শীতে। বিরস মুখে বলল, ‘তুমি টয়োটাটা ড্রাইভ করবে। আমি ল্যাণ্ড রোভার নিয়ে আসছি। দেখা হবে কটেজে।’
সেন্ট্রাল কন্সোল পার হয়ে স্টিয়ারিং হুইলের পেছনে বসল জেসিকা। দরজা আটকে ঠিক করে নিল রিয়ারভিউ মিরর। পায়ের দৈর্ঘ্য কম বলে সামনে টেনে নিল সিট। তারপর ব্যাক গিয়ার ফেলে পিছিয়ে রওনা হলো ফিরতি পথে। গাড়িটা চলে যেতেই ছুটে গিয়ে লকের তীরে সেই ঝোপ থেকে ওর জিনিসপত্র নিল রানা। সব রাখল ল্যাণ্ড রোভারের পেছন সিটে। গাড়িটার উইণ্ডস্ক্রিনে জমেছে পাথরের মত শক্ত বরফ। গ্লাভ্স্ পরা হাতে সেগুলো সরিয়ে কফিনের মত ঠাণ্ডা ক্যাবে উঠল রানা। চাবি মুচড়ে ধরতেই ক’বার গাঁইগুঁই করে স্টার্ট নিল ইঞ্জিন। ট্র্যাকশন কন্ট্রোল, অ্যান্টি-লক ব্রেক বা আধুনিক ইলেকট্রনিক্স ঝরঝরে ল্যাণ্ড রোভারে না থাকলেও, যে জানে তুষারে এই গাড়ি ড্রাইভ করতে তার খারাপ লাগবে না। তুমুল বেগে জেসিকার পিছু নিল রানা। চলেছে মিসেস ক্লার্কের কটেজের উদ্দেশে।
জেসিকার পাঁচ মিনিট পর গন্তব্যে পৌঁছুল রানা। উষ্ণ কটেজে ঢুকে দেখল, উড বার্নারে জ্বলছে গনগনে আগুন। রান্নার চুলোয় হিসহিস শব্দ তুলছে পানিভরা কেতলি। ফোনে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ডিউটি অফিসারের সঙ্গে দুর্বল স্বরে কথা বলছে জেসিকা। হঠাৎ করেই ফ্লু হয়েছে ওর। তাই আর ডিউটিতে যোগ দিতে পারবে না। নেহায়েত মন্দ অভিনয় করছে না জেসিকা, মনে মনে হাসল রানা। কিছুক্ষণ পর কল কেটে স্বাভাবিক স্বরে বলল, ‘এবার ক’দিন অফিসে যেতে হবে না। চা করছি। নেবে এক কাপ?’
মাথা নেড়ে কিচেনের তাক থেকে ইন্সট্যান্ট কফির বোতল নিল রানা। কাউন্টারে দুটো মগে দেখল দুটো টি-ব্যাগ। একটা মগ থেকে আপত্তিকর জিনিসটা তুলে সরিয়ে রাখল কাউন্টারের ওপর। কেতলির পানি ঢালল ওর মগে। তারপর সেখানে ঢালল তিন চামচ ইন্সট্যান্ট কফি। ওর পাশে এসে থেমেছে জেসিকা। আগ্রহ নিয়ে দেখছে কতটা চিনি আর দুধ দেয় রানা। যখন দেখল দুধ-চিনি কিচ্ছু না, শুধু কড়া কফি নিয়েই সন্তুষ্ট বেরসিক লোকটা, কফিটার তিতার পরিমাণ আন্দাজ করে গাল কুঁচকে ফেলল জেসিকা।
রানা সরে যেতে যেতেই ওর ডানকনুই লাগল অতি নরম কিছুতে। তখনই নাকে এল অদ্ভুত মাদকীয় মেয়েলি দেহের সুবাস। তাতে কেমন যেন নেশা ধরল ওর। প্রথমবারের মত রানা অনুভব করল, জেসিকা দাঁড়িয়ে আছে ওর খুব বেশি কাছে। পরমুহূর্তে জোর করে ঘোরটা কাটিয়ে স্বাভাবিক হলো রানা।
জেসিকার চা তৈরি হলে যার যার মগ হাতে কটেজের লিভিংরুমে এল ওরা। উড বার্নারে আরও কয়েকটা কাঠ ফেলে মুখোমুখি দুটো চেয়ারের একটায় বসল রানা। বের করল মোবাইল ফোন। ওর আর্মচেয়ারের হাতলে কোমর ঠেকিয়ে দাঁড়াল জেসিকা। চায়ের মগে চুমুক দিয়ে বলল, ‘আমাদেরকে সাহায্য করতে পারবে, সেই মানুষটার কাছে ফোন করছ?’
‘হুঁ। তার নাম চার্লি জন্সটন।’
‘কী করে সে?’
‘আগে ব্রিটিশ স্পেশাল ফোর্সে চাকরি করত। এখন বাস করে চেক রিপাবলিকে।
‘কী করে, সেটা তো বললে না?’
‘বেআইনি মাল বিক্রি করে। সোভিয়েত আমলের ট্যাঙ্ক, অ্যাটাক হেলিকপ্টার থেকে শুরু করে স্কাড মিসাইলও পৌঁছে দেবে ঠিক জায়গামত। বদলে নেবে প্রচুর টাকা।’
ভুরু কুঁচকে রানাকে দেখল জেসিকা। ‘ও? তা হলে আমরা এখন ট্যাঙ্ক কিনব?’
‘না, আমরা এখন পাল্টা উপকার চাইব। দুনিয়ার নানান জায়গায় ওর শত শত বন্ধু আছে। তারা হয়তো আমাদেরকে সাহায্য করতে পারবে।’
মুখস্থ নম্বর থেকে মোবাইল ফোনে ডায়াল করল রানা। ছয়বার রিং হওয়ার পর ওদিক থেকে ধরল চার্লি জন্সটন। ‘হ্যালো? কে রে তুই? কোথায় পেলি আমার নাম্বার?’
‘হ্যালো, চার্লি, আমি,’ বলল রানা।
‘ওরে শালা! আমি তো গাধা হয়ে গেলাম! আরে, দোস্ত, কী খবর? আগের ফোনটা কি হারিয়ে গেছে? অনেক দিন কোনও খবর পাই না! আমি তো শেষবার শুনেছি তোমাকে মাটির ছয়ফুট নিচে পুঁতে ফেলেছে সিআইএ!’
‘চিলে তোমার কান নিয়ে গেছে শুনলেই, ব্যস, তোমাকেও নাচতে হবে, চার্লি? এখন বেশি কথা বলতে পারব না। একটা উপকার করতে পারো কি না সেটা দেখো।’
‘বলো, দোস্ত। গতকাল অন্যরা কিনে নেয়ার আগেই হাতে পেয়েছি ইসরায়েলি সার্ফেস-টু-এয়ার মিসাইল। একদম নতুন। লাগবে নাকি? তোমার কাছে পয়সা নেব না। নাকি তোমার চাই কোনও রণ-হেলিকপ্টার? যা লাগবে বলে ফেলো, ব্যবস্থা হয়ে যাবে।’
কয়েক বছর আগে আফগানিস্তানে গ্রেফতার হওয়া চার্লি জন্সটনকে আমেরিকান আর্মির কাছ থেকে ছিনতাই করে ইরানে পৌঁছে দিয়েছিল রানা। এরপর থেকেই ওর জন্যে জান দিতে রাজি ওই আর্মস ডিলার।
‘হেলিকপ্টার চাই না। আমার চাই একটা ফোন নম্বর।’
‘কার ফোন নম্বর, রানা? তুমি একবার বললেই দুনিয়ার সেরা মডেলের ফোন নম্বর হাজির করে দেব।’
‘তুমি তো বোধহয় চিনতে এসআরআর কর্নেল কার্ল হপকিন্সকে?’এসআরআর অর্থাৎ স্পেশাল রিকনেসেন্স রেজিমেন্ট। ওই ফোর্স তৈরি করা হয় ইউকে স্পেশাল ফোর্সের ইউনিটগুলোর ভেতর কাউন্টারটেরোরিযম নিয়ন্ত্রণের জন্যে। ‘বেশ কয়েক বছর আগেই অবসর নিয়েছেন। আগে ব্রিটিশ আর্মিতে মেজর জেনারেল (অব.) রাহাত খানের অধীনে কাজ করেছেন। উনি বেঁচে থাকলে তাঁর ফোন নম্বরটা আমার দরকার।’
‘তোমার বসই তো * বোধহয় ফোন নম্বরটা দিতে পারবেন।
‘হয়তো। কিন্তু তাঁকে বিরক্ত করতে চাই না।’
‘তুমি বোধহয় তা হলে বলছ পাগলা হপির কথা?’
‘হ্যাঁ, পাগলা হপি,’ বলল রানা।
‘বুড়ো খোকার সঙ্গে তোমার কী?’
পরে বলব। তার ফোন নম্বরটা তোমার কাছে আছে?’
‘একজনকে চিনি। সে বোধহয় পাগলা হপির ফোন নম্বর দিতে পারবে। তার সঙ্গে কথা বলে তোমাকে ফোন দেব।’
‘ঠিক আছে। দেখো, আমাকে অপেক্ষা করিয়ে রেখো না।’ ফোন রেখে দিল রানা।
‘আহা, উপকার পাওয়ার কী অদ্ভুত কায়দা!’ মন্তব্য করল জেসিকা।
‘সম্পর্কটা এমনই,’ বলল রানা।
‘অদ্ভুত সব মানুষের সঙ্গে তোমার সম্পর্ক,’ বলল জেসিকা, ‘বলবে, কেন ওই লোকের নাম পাগলা হপি হলো?’
‘কারণ, সবাই হাসলেও অন্যের অনেক কথা শুনে বিশ্বাস করতেন তিনি,’ বলল রানা। ‘বহু আগেই কীভাবে যেন বুঝে যেতেন বিপদ হবে। সত্যিই হয়তো পীরটির টাইপের লোক।’ কথা না বাড়িয়ে কাজে নেমে পড়ল ও। পরিষ্কার করল আততায়ীর কাছ থেকে পাওয়া পিস্তল। রিলোড করে রেখে দিল ব্যাগের ভেতর বন্দুকের পাশে। ব্যাগ থেকে নিল কালো টেপ। বাইরে গিয়ে ওটা ব্যবহার করে বুজে দিতে লাগল কালো গাড়ির বডিতে গুলির গর্তগুলো। বাইরে এসে ওর কাজ দেখছে জেসিকা। নিখুঁতভাবে কাজ করছে রানা। খুব কাছ থেকে না দেখলে কেউ বুঝবে না গুলির আঘাতে ক্ষত হয়েছে গাড়ির বডি। তবে উইণ্ডশিল্ডের ফাটল মেরামত করা গেল না।
‘সবমিলিয়ে ছয়টা গুলির ফুটো,’ বলল জেসিকা T
‘সাতটা,’ অবশিষ্ট গুলির জায়গাটা ওকে দেখাল রানা।
‘হুঁ। এবার বুঝেছি কেন কার রেন্টাল কোম্পানি তোমাকে দু’চোখে দেখতে পারে না।’
‘অথচ, গাড়িটা এখনও আস্তই আছে,’ মৃদু হেসে বলল রানা। গাড়ির বডিতে সপ্তম গুলির আঘাতের জায়গাটা কালো টেপ দিয়ে আটকে দিল। কাজটা মাত্র শেষ করেছে, এমনসময় বেজে উঠল মোবাইল ফোন। চট করে কল রিসিভ করল রানা।
কথা না বাড়িয়ে চার্লি জন্সটন জানিয়ে দিল, হ্যাঁ, এখনও বেঁচে আছেন (অব.) কর্নেল কার্ল হপকিন্স। ইউকে ল্যাণ্ড লাইনের ০৩৯৯৭ প্রিফিক্স এরিয়া কোড অনুযায়ী ওই ফোনের মালিক বাস করেন পুব মিডল্যাণ্ডে।
চার্লিকে ধন্যবাদ না জানিয়ে ফোন রেখে দিল রানা। বন্ধু বিপদে পড়লে চেষ্টা করবে উপকারটা শোধ করে দেয়ার। কটেজে ফিরে দেরি না করে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেলের ফোনে ডায়াল করল রানা। কয়েক মুহূর্ত পর ওদিক থেকে এল অভিজাত, ভারী কণ্ঠ, ‘হপকিন্স বলছি।’
মাত্র একবার সুযোগ পাবে, জানে রানা। তাই নরম সুরে বলল, ‘আমি বাংলাদেশ আর্মির প্রাক্তন মেজর মাসুদ রানা। কর্নেল, আগে কখনও আপনার সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। তবে আমার বসের সঙ্গে আপনার পরিচয় আছে। তিনি একসময়ে ব্রিটিশ আর্মিতে মেজর পদে ছিলেন। তাঁর নাম রাহাত খান।’
অবাক হয়ে ওকে দেখছে জেসিকা। প্রথমবারের মত, শুনছে, গোপন কোনও এক সংস্থায় চাকরি করে রানা।
‘আপনাকে বিরক্ত করছি বলে ক্ষমা করবেন,’ বলল রানা। ‘আসলে ব্রিটিশ মিলিটারির প্রাক্তন কিছু লোকের কারণে বাধ্য হয়েই আপনাকে ফোন দিয়েছি। তাদের সংগঠনটির নাম: ‘দ্য ডিযঅনারেবস্’।’
ওদিক থেকে কোনও সাড়া নেই।
অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল হয়তো ভাবছেন, তথ্য পাওয়ার জন্যে তাঁর কাছে কেন ফোন করেছে এই লোক?
আরও ক’মুহূর্ত পর গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, ‘পরিচিত হয়ে খুশি হলাম, মেজর রানা। তোমাকে কী ধরনের সহায়তা দিতে পারি?’
.
রানা যখন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেলের সঙ্গে কথা বলছে, সেই একইসময়ে বিলিয়নেয়ার স্টুয়ার্টের কাছে ফোন করেছে ইন্সপেক্টর জন মুরে। এতই ঘাবড়ে গেছে, খুব নিচু স্বরে কথা বলছে সে। বারবার তার মনে হচ্ছে, কান পেতে সব কথা শুনে ফেলবে কেউ।
‘আপনি জেসিকা থমসনের বাড়ির ঠিকানা চেয়েছেন। ওই মেয়েটা বাস করে কিনলোকার্ড গ্রামে।’
‘ঠিকানা দাও,’ বলল স্টুয়ার্ট। ওদিক থেকে তথ্য জোগাল ইন্সপেক্টর মুরে। জেসিকার ঠিকানা প্যাডে লিখে নিয়ে তারপর বলল বিলিয়নেয়ার, ‘ওই কুত্তীর ব্যাপারে সব তথ্য চাই। কী ধরনের গাড়ি ব্যবহার করে? স্বামী, নাকি বয়ফ্রেণ্ড আছে?’
‘আটানব্বুই সালের ধচাপচা একটা ল্যাণ্ড রোভার ডিফোর গাড়ি চালায়,’ প্রায় ফিসফিস করল জন মুরে। ‘যতটা জানি, তার কোনও বয়ফ্রেণ্ড নেই। একাই ওই বাড়িতে থাকে।’
গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর জেনে নিয়ে প্যাডে লিখল রন স্টুয়ার্ট। ‘কখন শেষ হবে ওর ডিউটি?’
‘সন্ধ্যায় ডিউটি ছিল। তবে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছে, তার ফ্লু হয়েছে। তাই ছুটি নিয়েছে কয়েক দিনের জন্যে।’
‘বললেই হলো? তা হলে তো আমি বুড়ো শিম্পাঞ্জির খালাতো নানা!’
‘এবার কী করবেন বলে ভাবছেন?’
‘আবার জিজ্ঞেস করে! যা করা দরকার তাই করব।’
ইন্সপেক্টর মুরে শুকনো গলায় বলল, ‘আরও খবর আছে। আপনি যে গাড়িটার রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিলেন, সেটারও খোঁজ নিয়েছি। ওই লোক ব্যবহার করছে কালো রঙের টয়োটা আরএভি ৪২০। ক’দিন আগে ইনভার্নেস এয়ারপোর্টের একটা কার রেন্টাল থেকে ভাড়া নিয়েছে। কাস্টমারের নাম মাসুদ রানা। লণ্ডন থেকে এসেছে। ওখানে তার একটা প্রাইভেট ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি আছে।’
আনমনে তিক্ত হাসল স্টুয়ার্ট। ভাল তথ্যই দিচ্ছে মুরে। মাসুদ রানা নামটা প্যাডে লিখল সে। ‘তুমি শিয়োর তো যে এই লোককেই আমরা খুঁজছি?’
‘তাতে সন্দেহ নেই। পুলিশ কমপিউটারে তার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে কোনও ক্রিমিনাল রেকর্ড পাইনি। ট্রেইনিং নিয়েছে ব্রিটিশ মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে। ওদিকটা এখন দেখছে আমার ভায়রা ভাই। তথ্যগুলো পেয়েই আমাকে জানিয়ে দিয়েছে। আমার কাছে জানতে চেয়েছে, এই যে এত ঝুঁকি নিয়ে সব কাজ করে দিচ্ছে, সেজন্যে যথেষ্ট টাকা পাবে তো?’
‘তোমার ভাগের পয়সা থেকে ওকে কিছু দিয়ো। কথা আর বাড়িয়ো না, মুরে। জলদি বলো কী জেনেছ।’
‘ব্যাপারটা জটিল,’ ঢোক গিলল মুরে। ‘মিনিস্ট্রি অভ ডিফেন্সে লোকটার যে ফাইল, ওটা লাল টেপ টাইপের। চাইলেও সাধারণ কোনও মন্ত্রী চট করে দেখতে পাবে না। সেজন্যে লাগবে ফুল সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স।’
‘ফালতু প্যাচাল বাদ দাও, মুরে,’ বিরক্ত হয়ে বলল রন স্টুয়ার্ট। ‘কী জেনেছ, সেটা খুলে বলো।’
‘সব জানলে আপনার ভাল লাগবে না,’ খুক্-খুক করে কাশল ইন্সপেক্টর মুরে।