1 of 2

স্বর্ণলিপ্সা – ২৫

পঁচিশ

রানার মনে জন্ম নিয়েছে এক হাজার একটা প্রশ্ন। তবে এত শীতে প্রায় জমাট বেঁধে গেছে জেসিকা। ঠিকভাবে কথা বলতে পারছে না। জঙ্গল ও লকের তাপমাত্রা নেমে এসেছে মাইনাস ছয়ে। মেয়েটার বেহাল অবস্থা দেখে রানা বলল, ‘চলো, আগে গা গরম করবে। তোমার গাড়িটা কোথায়? ওখানে বসে আলাপ করা যাবে।’

জঙ্গলের দূরে গ্লাভ্স্ পরা হাত তাক করল জেসিকা। কথা বলতে চাওয়ায় দাঁতে দাঁত লেগে খটাখট আওয়াজ উঠল। ‘ওদিকে!’

জঙ্গলের মাঝে ওদিকে রয়েছে কাঁচা রাস্তা। ওটা থেমেছে গিয়ে লক আরডাইকের তীরে। মাটিতে জমাট বেঁধে যাওয়া তুষারের মাঠে চল্লিশ গজ দূরে মেয়েটার গাড়ি দেখল রানা। ল্যাণ্ড রোভারের ছাত ও বডি থেকে ঝুলছে চকচকে সাদা বরফ। গাড়ির ভেতরটা যেন ডিপ ফ্রি। স্টিয়ারিং হুইলের পেছনে বসে ইগনিশনে চাবি দেখল রানা। ইঞ্জিন চালু করতেই দুর্বলভাবে চালু হলো হিটিং সিস্টেম। ড্যাশবোর্ডের দুই এয়ার ভেণ্ট থেকে বেরোল মৃদু উষ্ণ হাওয়া। তবে তিনহাত দূর থেকেও সেই হাওয়ার সাধ্য নেই যে জ্বলন্ত মোমবাতির শিখা নাড়িয়ে দেবে। কিছুক্ষণ পেরিয়ে যাওয়ার পর সামান্য উষ্ণতা ফিরল গাড়ির ভেতর। পরিবেশ একটু স্বাভাবিক হওয়ায় মুখ খুলল জেসিকা।

মন দিয়ে ওর কথা শুনতে লাগল রানা।

পিটার হ্যাননের ওপর হামলার কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে পরিবেশবাদী জিম অ্যাণ্ডারসনকে। ‘শেষ যা জেনেছি, তাতে এখনও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইন্সপেক্টর আর সার্জেন্ট। স্বীকার করাতে চাইছে যে সে-ই পিটিয়ে আহত করেছে পিটারকে। তবে তাতে কোনও লাভ হবে বলে মনে হচ্ছে না। আমার মনে হয়নি ওই লোক কোনও অপরাধ করেছে। অ্যাণ্ডারসনের গ্রেফতারের পেছনে অন্যকিছু আছে। ইন্সপেক্টর আর সার্জেণ্ট চাইছে সবার চোখ ভিন্ন দিকে সরিয়ে দিতে। রানা, তুমি বলেছিলে টাকা দিয়ে পুলিশকে কিনে নিয়েছে কেউ। আমারও এখন ঠিক তাই মনে হচ্ছে।’

‘তুমি না বলেছিলে: পুলিশের তথ্য ফাঁস করবে না?’ জানতে চাইল রানা।

‘এই কেসে কৌশলগত কারণে নিজের পরিকল্পনা সামান্য বদলে নিতে হয়েছে।’

‘তাই? কিন্তু কী কারণে হঠাৎ কৌশল পাল্টে নিলে?’

গ্লাভ্স খুলে হিটার ভেন্টের ওপর হাত রাখল জেসিকা। শিরায় রক্ত চলাচল ফেরানোর জন্যে নাড়তে শুরু করেছে দশ আঙুল। ‘গতকাল পাবে তোমার একটা কথা শুনে ভাবতে শুরু করেছি। রাতে ওই বিষয় নিয়ে ভাবতে গিয়ে আর ঘুমাতেই পারিনি।’

‘আমি আবার কী বলেছি?’

‘তুমি বলেছিলে: পিটার জানত না পোচার আসলে কে।’

‘বেন হ্যাননের স্ত্রী আমাকে তা-ই বলেছে। অচেনা কেউ ফোন করেছিল পিটারকে। খুব ভয়ে ছিল সেই পোচার। সেজন্যে নিজের পরিচয় জানায়নি।’

মাথা দোলাল জেসিকা। ‘কিন্তু পরে আমার মনে পড়ল, অন্য তথ্য দিয়েছেন বেন হ্যানন। ওই ফোনকারী অচেনা হলেও পিটার বলেছিল, তাকে চেনা চেনা লেগেছে ওর। গলার আওয়াজটা পরিচিত। তখন তখন আর তার চেহারা বা নাম মনে পড়েনি।’

ভুরু কুঁচকে গেল রানার। ‘বলতে থাকো।’

‘তারপর গতরাতে তুমি বললে এই কেসের চাবিকাঠি আসলে ওই সাক্ষী। তখন ততটা শিয়োর ছিলাম না। কারণ মনে হয়েছিল তোমার কথা ভুলও হতে পারে। হয়তো পিটারের কেসের সঙ্গে জড়িত নয় রবার্টের কেস। কিন্তু এখন যেভাবে অ্যাণ্ডারসনের বিরুদ্ধে মামলা সাজানো হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে কাউকে না কাউকে আড়াল করছে ইন্সপেক্টর মুরে আর সার্জেন্ট রিড। এমন ভান করছে যেন রবার্টের সোনার কয়েনের ব্যাপারটার কোনও ভিত্তিই নেই। আমার কথা বুঝতে পেরেছ?’

‘হুঁ।’

‘তাই আজ প্রথম থেকে সব ভেবে দেখলাম,’ বলল জেসিকা। ‘তারপর তদন্ত করতে গিয়ে দেখলাম অ্যারেস্ট রেকর্ড। কাজটা আগে করিনি বলে নিজেকে মারতে ইচ্ছে হয়েছে। আগে সব জেনে নিলে পিটারের চাচাকে সাহায্য করতে পারতাম। সেক্ষেত্রে হয়তো বাজে ধরনের বিপদে পড়তেন না মানুষটা।’

‘অ্যারেস্ট রেকর্ডে কী আছে?’

‘ফিশারির লোক আরডাইক লক থেকে বেআইনি স্যামন মাছ ধরার জন্যে মাঝে মাঝেই চোরা শিকারিদেরকে গ্রেফতার করে। আগের আমলে পিট্টি দিয়ে ছেড়ে দেয়া হতো পোচারদেরকে। তবে আজকাল পুলিশের কাছে কেস দিতে হয়। তাতে বেধড়ক মার খাওয়া থেকে বেঁচে গেছে পোচাররা। বড়জোর দু’চারটে চড়-চাপড় জোটে কপালে। অবশ্য ক্রিমিনাল হিসেবে রেকর্ড থাকে ফাইলে।’

‘আমাদের পোচারের ব্যাপারে কী জানলে?’

‘বেশ ক’জন পোচারের রেকর্ড পেলাম,’ বলল জেসিকা।

‘তাদের ভেতর কেউ কেউ নিয়মিত ধরা পড়ে। অন্যরা একবারের বেশি দোষী হিসেবে জেলে যায়নি। এক এক করে সবার ব্যাপারে কমপিউটারে চেক করেছি। প্রথমজনের নাম টমি জেনিংস। বেআইনিভাবে স্যামন মাছ ধরার কারণে বেশ কয়েকবার জেল হয়েছে তার। শেষবার ধরা পড়েছে গত মার্চ মাসে। তার দুই মাস পর এমফেসিমা রোগে মারা যায় সে। তখন লিস্ট থেকে তাকে বাদ দিলাম। দ্বিতীয়জন ইউনিস ব্রাউন। তার ব্যাপারে কমপিউটার ঘাঁটলাম। তাতে জানলাম ওই পোচার আরও নানান অপরাধে জড়িত। তবে দোকান থেকে মালপত্র চুরির দায়ে আপাতত জেলেই আছে সে। তাকেও লিস্ট থেকে বাদ দিলাম। এভাবে একে একে দেখলাম সবার ফাইল। এক ডযনের চেয়ে বেশি ফাইল। তবে সার্চ করতে গিয়ে একসময়ে বেরিয়ে এল আমাদের পোচারের নাম।’ মুচকি হাসল জেসিকা। ‘তার নাম বিলি ম্যাকগ্রা। পোচারদের ভেতর তাকে বলা যেতে পারে রাজা চোর। আজ পর্যন্ত স্যামন মাছ ধরে জেলে গেছে মোট এগারোবার। কখনও বিয়ে করেনি। কোনও চাকরি করে না। উল্লেখ করার মত কোনও কাজও নেই তার। একা ঘুরে বেড়ায় জঙ্গলে। আসলে ওই লোকই আমাদের সেই পোচার।’

‘তুমি এত নিশ্চিত হলে কীভাবে?’

‘কারণ পিটার, আমি আর ওই লোক গ্রামের একই স্কুলে পড়তাম। ভাল করে চিনি না তাকে। পিটারও তাকে এড়িয়ে চলত। আসলে স্কুলের কেউ তাকে পছন্দ করত না। বিলি ম্যাকগ্রা ছিল ষাঁড়ের মত গোঁয়ার। যখন-তখন মারপিটে জড়িয়ে যেত। আমরা জানতাম যে বাড়িতে সমস্যা আছে তার। নিয়মিত মার খেত বাবার হাতে। তবে সেটা নিয়ে বেশি ভাবত না কেউ। একবার ফাটা ঠোঁট নিয়ে স্কুলে এল ম্যাকগ্রা। বেশ ক’বার সেলাই করতে হয়েছিল আহত জায়গা। ফুলে ওই ঠোঁটের অবস্থা হয়েছিল রাগবি বলের মত। তখন থেকেই বিকৃত উচ্চারণে কথা বলত। বিশ্রী ক্ষতচিহ্ন হয়ে গিয়েছিল ঠোটে। ওটা নিয়ে মজা করত অন্য ছেলেরা। ফলে এর-ওর সঙ্গে লড়াইয়ে জড়িয়ে যেত বিলি ম্যাকগ্রা। বেচারার জীবন ছিল নরকবাসীর মত। দুঃখজনক। আর এরপর কী এক রোগে মোটা হয়ে গেল সে। তাতে আরও বিপদ বাড়ল। টিটকারি মারত সবাই।’

দু’রাত আগের কথা মনে পড়ল রানার। পোচারকে খুঁজতে গিয়ে মানুষ-শিকারিরা ওকে মোটা শুয়োর বলে গাল দিয়েছিল। জেসিকা বোধহয় ঠিক লোকই খুঁজে বের করেছে। ‘তার মানে বলতে চাইছ, ফোনে কথা শুনে বিলি ম্যাকগ্রার ঠোঁটের কারণে তাকে চেনা চেনা লেগেছিল পিটারের?’

‘তখন পুরো না চিনলেও এটা বুঝে গেছিল, ওই লোক ওর চেনা কেউ। মানুষের মন মাঝে মাঝে দ্বিধায় ফেলে দেয়, তাই না? তা ছাড়া, ম্যাকগ্রার সঙ্গে পিটারের শেষ কথা হয়েছিল হয়তো বেশ কয়েক বছর আগে।’

চুপচাপ ভাবছে রানা। ম্যাকগ্রা অসুখী পেটমোটা এক লোক। মুখে পুরনো ক্ষতচিহ্ন। জরুরি কারণেই সভ্যতা থেকে দূরে সরে জঙ্গুলে এলাকায় বাস করে। তবে মনটা পুরো মরে যায়নি তার। স্কুলে পরিচিত এক ছেলেকে মেরে ফেলা হলে সাক্ষী হিসেবে রয়ে গেল সে। তখন তার মনে হলো কাউকে সেটা জানিয়ে দেয়া উচিত। হয়তো মনে পড়েছিল নিজের ছোটবেলায় বেধড়ক মার খাওয়ার কথা। ঘটনা যাই হোক, এখন জেসিকা আর ওর উচিত তাকে খুঁজে বের করে আলাপ করা।

‘পুলিশ রেকর্ড ক্রস-চেক করেছি,’ বলল জেসিকা, ‘ম্যাকগ্রা ব্যবহার করে দুই হাজার সালের নীল এক সুবারু ফরেস্টার। বর্তমান ঠিকানা: কিনলোকার্ড গ্রাম থেকে আধমাইল দূরে ভাড়া করা এক ট্রেইলার। আপাতত সেখানেই বাস করছে। আমার মনে হয় সহজেই তাকে হাতের মুঠোয় পাব।’ জেসিকার গাল ও নাক থেকে দূর হয়েছে লালচে ভাব। চোখে উত্তেজনা। ‘এবার কী করতে চাও, রানা?’

‘গুড, জেসিকা,’ বলল রানা, ‘এক্সেলেন্ট ওঅর্ক!’

দুষ্টু হাসল জেসিকা। ‘তা হলে একটা মেডেল দাও?’

‘ম্যাকগ্রা ওই পোচার হলে সত্যিই দেব,’ মৃদু হাসল রানা। ‘এই ব্যাপারে আর কাউকে কিছু বলেছ?’

লক্ষ্মী মেয়ের মত মাথা নাড়ল জেসিকা। ‘শুধু তুমি জানো। ম্যাকগ্রা আর পিটার যে সত্যিই পরিচিত, সেটা আর কেউ জানে না। শুধু আমরা দু’জন।’

‘ইন্সপেক্টর মুরে আর সার্জেন্ট রিড জানলে রেগে উঠবে। তাদেরই এই কেসে তদন্ত করার কথা। তুমি তথ্য গোপন করলে পুলিশি ঝামেলায় পড়বে। তোমার ব্যক্তিগতভাবে তদন্ত করার কথা নয়। এবার বলো দেখি, আমাকে এসব বলছ কেন?’

অনুরোধের দৃষ্টিতে ওকে দেখল জেসিকা। ‘আমি নিজের কাজ পছন্দ করি। ক্যারিয়ারকে হালকাভাবে নিইনি। তবে আমার কেন যেন মনে হচ্ছিল এসবের ভেতর অসত্য কিছু আছে। কারা যেন আমার কাছ থেকে কিছু গোপন করছে। আর পিটার ছিল আমার ছোটবেলার বন্ধু। তাই চাই ওর ব্যাপারে সঠিক তদন্ত হোক।’

‘তোমার পাশে যেন থাকি সেটা চাইছ? কিন্তু তা কেন?’

‘কারণ, আমরা একই তদন্তে জড়িয়ে গেছি। একটার চেয়ে দুটো মাথা সবসময় ভাল। তা ছাড়া, একা এত ঝুঁকি নিতে চাই না। যখন-তখন বিপদ হবে। সেজন্যেই চাই তোমাকেও সঙ্গে নিতে। এখানে আসার আগে প্রথমে মিসেস ক্লার্কের কটেজে গিয়ে দেখলাম তুমি ওখানে নেই। মহিলা জানাল তুমি সকালে বেরিয়ে গেছ। তখন ভাবলাম নিশ্চয়ই লক আরডাইকে খুঁজলে পাব।’

‘বারো মাইল জায়গা পুরোটা খুঁজে দেখতে?’

‘দরকার হলে। তবে একঘণ্টা আগেই পেয়েছি তোমার গাড়ি। বুঝে গেছি কোন্ দিকে আছ। রবার্ট যেখানে মারা গেছে, তার উল্টোদিকে ম্যাকগ্রাকে খুঁজবে, এটা স্বাভাবিক ছিল।’

‘বুদ্ধিমতী অফিসার।’

‘কাজে নিখুঁত হতে চাই। তোমাকে খুঁজছিলাম লকের তীরে। বরফে প্রায় জমে গেছি, এমনসময় দেখা দিলে। এখন কী করবে বলে ভাবছ?’,

‘তুমি প্রায় চেনোই না আমাকে, তবুও বিশ্বাস করছ কেন?’

‘তোমাকে বুদ্ধিমান আর সাহসী বলে মনে হয়েছে। বন্ধুর বিপদে ছুটে এসেছ। মানুষ চেনার অদ্ভুত গুণ আছে আমার, রানা। তাই বুঝেছি, তুমি আসলে অতটা খারাপ নও। চাইলে ভাল একজন পুলিশ অফিসারও হতে পারতে।’

‘খারাপ, কিন্তু অতটা খারাপ নই? তারপর ভাল একজন পুলিশ অফিসার হতে পারতাম? হঠাৎ কী মনে করে চরম অপমান শুরু করে দিলে? আমি কী করেছি?’

‘ঠাট্টা নয়, রানা। আমি সিরিয়াস।’

‘আমিও সিরিয়াস, জেসিকা। বলো দেখি, কী কারণে একজন পুলিশ অফিসারের সঙ্গে হাত মেলাব?’

দীর্ঘশ্বাস ফেলল জেসিকা। ‘তার আগে বলো, কেন একা বেন হ্যাননকে খুঁজছ? গোপন এমন কী আছে যে আমাকে ভয় পেতে হবে তোমার?’

‘ভয় পাচ্ছি বুঝি? উঁহুঁ! গোপন করারও কিছু নেই।’

‘ভাবছ পিটারের চাচাকে উদ্ধার করতে গিয়ে খুনো- খুনিতে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হবে, আর আমি সেটা দেখে ফেললে বিপদে পড়বে?’

চুপ করে থাকল রানা।

মৃদু হাসি ফুটল জেসিকার ঠোঁটে। ‘আমার সঙ্গে হাত না মেলালে জীবনেও বিলি ম্যাকগ্রার ঠিকানা জানবে না।’

‘কিনলোকার্ড গ্রাম থেকে আধমাইল দূরে ওর ট্রেইলার। আগেই এটা বলেছ।’

‘তা বলেছি। তবে তোমাকে পরীক্ষা করতে হয়তো মিথ্যা বলেছি। হতে পারে না? সেক্ষেত্রে বাকি জীবনেও ম্যাকগ্রার খোঁজ পাবে না।’

কোনও জবাব দিল না রানা।

‘তুমি ভাল করেই জানো, আমাকে তোমার দরকার। আমাকে ছাড়া চলবে না তোমার।’

কয়েক মুহূর্ত ভাবার পর জানতে চাইল রানা, ‘আবার কখন ডিউটি তোমার?’

চট্ করে হাতঘড়ি দেখল জেসিকা। এখন দুপুর। ‘ডিউটি শুরু হবে ছয় ঘণ্টা পর। রাতের শিফট। হাতে সময় আছে।’

‘তা হলে, চলো, খুঁজে বের করি ম্যাকগ্রাকে,’ বলল রানা।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *