ভৌতিক উপন্যাস
ভৌতিক গল্প

সাহেব বাগান

সাহেব বাগান

বারহারওয়া লুপ লাইনে নবদ্বীপ ছাড়িয়ে কাটোয়ার দিকে যেতে লাইনের ধারে আম—কাঁঠালের বিরাট বাগানের মধ্যে সাহেব—বাড়ির দোতলার ছাদটা দেখা যায়।

জায়গাটার নাম সাহেব—বাগান। কোনোকালে মিশনারি সাহেবরা এখানে এই নির্জন জঙ্গলের মধ্যে অনেকখানি জায়গা নিয়ে দোতলা বাড়ি করেছিলেন। কেউ কেউ বলে, এটা কোনো সাহেব—ডাক্তারের ডিসপেনসারি ছিল—কেউ বলে হাসপাতাল। তারপর সাহেবরা একদিন চলে গেল। এক বাঙালি খ্রিস্টান—সম্ভবত তিনিও ডাক্তার ছিলেন—সাহেবদের কাছ থেকে ওই বাড়িটা পুকুর—বাগান সমেত কিনে নেন।

যাই হোক, শুধু কৌতূহলের জন্যেই আমি কোনো সূত্র ধরে একদিন ওই বাড়িতে গিয়ে পড়েছিলাম।

বেলা সাড়ে তিনটে। শীতকাল। তাই এরই মধ্যে যেন দিনের আলোর তেজ মিইয়ে এসেছে। লাইন ধরে বাগানের মধ্যে দিয়ে বাড়িতে এলাম। গৃহকর্তার বয়েস বছর পঁয়ত্রিশ। কোথায় শিকারে গেছেন। গৃহকর্ত্রী—কতই বা বয়েস, বছর আটাশ, তিনিই আপ্যায়ন করলেন।

আমি বললাম, আগে চলুন, দিনের আলো থাকতে থাকতে বাগানটা ঘুরে দেখি।

ভদ্রমহিলা খুশি হলেন। গায়ে কালো রঙের একটা কার্ডিগান চড়িয়ে বাগান দেখাতে বেরোলেন।

বাড়ির সঙ্গে এত বড় বাগান আজকালকার দিনে বড় একটা দেখা যায় না। আম—কাঁঠাল—লিচু—পেয়ারা—নোনা আতা, কী নেই? বাগানের একটা দিকে তো শুধু কলার চাষ সেটার নাম কলাবাগান। ভদ্রমহিলা পুকুরের পাড় দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পুকুরের ওপারে কতকগুলো বাঁধানো সমাধি।

আমি জিজ্ঞেস করলাম—এটা কি গোরস্থান?

—না। এ বাড়ির পূর্বপুরুষদের এখানে কবর দেওয়া হত।

যদিও এই সন্ধ্যার সময়ে—বিশেষ করে শীতকালের সন্ধ্যায় কবরগুলোর কাছে ঘোরাঘুরি করতে গা ছমছম করছিল। তবু সমাধিগুলোর গায়ে পাথরের ফলকে তাদের যে জন্ম—মৃত্যুর তারিখ লেখা ছিল তা দেখার কৌতূহল হচ্ছিল। যেমন একটা পুরোনো সমাধির গায়ে লেখা ছিল—খ্রিস্টদাস মণ্ডল (জন্ম ১৮৩৬, মৃত্যু ১৮৮৬)। ভাবতে অবাক লাগে, প্রায় একশো বছর আগে এখানে খ্রিস্টদাস নামে কেউ একজন সপরিবারে বাস করতেন। এই রকম ভাঙা—ভাঙা সমাধি আরো কয়েকটা ছিল। তার মধ্যে দুটো ছিল পাশাপাশি। সে দুটোর একটাতে লেখা ছিল প্রাণকুমার মণ্ডল (জন্ম ১৯০২, মৃত্যু ১৯২৬)। ইস! ভদ্রলোক মাত্র চব্বিশ বছর বয়েসেই মারা গেছেন। কী হয়েছিল কে জানে! হয় তো ম্যালেরিয়া কিংবা টাইফয়েড কিংবা থাইসিস। একসময়ে তো ম্যালেরিয়ায় দেশ ভরে গিয়েছিল। কতজনে যে ম্যালেরিয়ায় ভুগে ভুগে মরেছে, তার হিসেব নেই। আর থাইসিস বা টি. বি. হলে তো কথাই নেই। এখন যেমন ক্যানসারের ওষুধ নেই, তখন তেমনি থাইসিসের ওষুধ বেরোয়নি। থাইসিস হওয়া মানেই মৃত্যু! যাই হোক, প্রাণকুমারের সমাধির পাশেই আর একটি সমাধি। তাতে লেখা—মিসেস মেরি মণ্ডল (জন্ম, ১৯১০, মৃত্য ১৯৩০)। মাত্র কুড়ি বছর বয়েসেই এঁরও জীবনাবসান!

আমি গৃহকর্ত্রীর দিকে তাকাতেই তিনি বললেন, হ্যাঁ, এঁরা স্বামী—স্ত্রী। খুব অল্প বয়সেই এঁরা মারা গেছেন। এমনি সময়ে মাথার ওপর তেঁতুল গাছটায় কেমন একটা শব্দ হল। ডালপালা নড়ে উঠল। আমি চমকে উঠলাম। ভদ্রমহিলা বললেন, ও কিছু নয়। পাখি—টাখি। চলুন, বাড়ি যাওয়া যাক। অন্ধকার হয়ে আসছে।

যেতে যেতে জিজ্ঞেস করলাম, এ বাড়িতে এখন আপনারা ক’জন থাকেন?

—দুজন। আমি আর আমার হাজব্যান্ড। একটু থেমে বললেন, আমি একলাই থাকি বলতে পারেন। উনি তো সব সময়ে বাইরে বাইরে।

—একা থাকেন। ভয় করে না?

গৃহকর্ত্রী একটুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, ভয়? না, তেমন নয়। প্রথম প্রথম অবশ্য ভয় করত। এখন অভ্যেস হয়ে গেছে।

আমি একটু চুপ করে থেকে জিজ্ঞেস করলাম—প্রথম প্রথম কীসের ভয় করত? ভূত—টূত?

—না—না, ওসবের ভয় করি না। মানিও না। আর পাঁচজনের মতো ডাকাতের ভয় করত। তা এতগুলো বছর তো রয়েছি, কখনো ডাকাতি তো দূরের কথা, একটা ছিঁচকে চোরের আবির্ভাবও হয়নি।

বলতে বলতে আমরা তাঁর বাড়িতে এসে ঢুকলাম। বিরাট বাড়ি। তবে বাড়ির কোনো ছিরিছাঁদ নেই। বড় বড় ঘর। অন্ধকারে ভরা। সে আমলের বড় বড় জানলা। মোটা মোটা গরাদ।

ভদ্রমহিলা দু’খানা ঘর পেরিয়ে ভেতরের একটা ঘরে বসালেন। তখন লোডশেডিং চলছে। ডিম্বাকৃতি পুরোনো একটা টেবিলের ওপর পেট মোটা সেজ জ্বলছে। এ ধরনের সেজ এখন আর দেখা যায় না। ভদ্রমহিলা আমাকে বসিয়ে চা করতে গেলেন।

আমি ঘরটা দেখছিলাম। একদিকের দেওয়ালে একটা মস্ত খাঁড়া লটকানো। ঝুল জমে গেছে তার ওপর। বোঝা যায়, এ খাঁড়ায় এখন আর কাজ হয় না। ওপাশের দেওয়ালে একটা মহিলার ছবি। বেশ বড় ছবি—অয়েলপেন্টিং করা। সেজের আলোয় ভালো দেখা যাচ্ছিল না বলে টর্চ জ্বেলে দেখলাম। অল্পবয়সি তরুণী মেয়ে। পরনে সাদা শাড়ি। গায়ে ফুলহাতা সাদা ব্লাউজ। পাতলার ওপর গড়ন। মুখখানি বিষণ্ণ ম্লান। বুঝলাম ইনি এই বংশেরই কেউ। হয় তো কোনো এককালের নববধূ।

এই সময়ে এ কালের গৃহকর্ত্রী চায়ের পট হাতে নিয়ে ঘরে ঢুকলেন।

আমি জিজ্ঞেস করবার আগেই বললেন, ওঁরক সম্বন্ধে কৌতূহল হচ্ছে?

আমি লজ্জিত হয়ে বললাম, হ্যাঁ। সাধারণত এত অল্প বয়সি বৌয়ের একলা ছবি দেখা যায় না।

—অল্পবয়সেই তিনি মারা গিয়েছিলেন। অবশ্য তাঁর আগে তাঁর স্বামী—

গৃহকর্ত্রী একটু থামলেন। তারপর বললেন, আপনি একটু আগে ভয়ের কথা বলছিলেন না? এই বাড়িতে ভয় নিয়েই একটা কাণ্ড ঘটে গিয়েছিল। সে ঘটনাটা বলি।

মিসেস মণ্ডল আমার পেয়ালায় চা ভরে দিয়ে এগিয়ে দিলেন। তারপর বলতে লাগলেন—সে আজ চুয়ান্ন বছর আগের কথা। এই বাড়িতে বউ হয়ে এলেন মেরি মণ্ডল। মাত্র ষোলো বছর বয়েস। তা তখনকার দিনে ষোলো কেন, তেরো—চোদ্দো বছরেও মেয়েদের বিয়ে হয়ে যেত। মেরির বাবা ছিলেন কলকাতার এক পুলিস অফিসার। তখনকার দিনের সেভেন ক্লাস পর্যন্ত পড়া। যেমন সুন্দরী তেমনি ছিলেন তেজি। বাপের কাছে শিখেছিলেন ছুরি খেলা আর বন্দুক ছোড়া। বাপের ইচ্ছে ছিল মেয়ের বিয়ে দেবেন কোনো শিকারির সঙ্গে। কিন্তু ওই যে কথায় বলে—জন্ম মৃত্যু বিয়ে, তিন বিধাতা নিয়ে। তা শেষ পর্যন্ত তাঁর বিয়ে হল কি না এক আধা জমিদার বাড়ির ছেলের সঙ্গে। তাও যদি শহর—বাজার হত তো কথা ছিল, হল কি না এই জঙ্গলের দেশে—সাহেব—বাগানে।

গৃহকর্ত্রী আবার একটু থামলেন। তার পর বললেন, এ জায়গাটায় এখনই এই অবস্থা দেখছেন। তাহলে আন্দাজ করুন পঞ্চাশ—পঞ্চান্ন বছর আগে কীরকম ছিল। চারদিকে শুধু জঙ্গল আর জঙ্গল। শুনেছি, দিনে—রাতে তখন ওই লাইন দিয়ে একখানি করে ট্রেন যাতায়াত করত। লোকজন ছিল না। বাঘ ঘুরে বেড়াত বাগানের মধ্যে।

এইরকম জায়গায় স্টেশনে নেমে পাল্কি চড়ে নতুন বউ কলকাতা থেকে এসেছিলেন শ্বশুরবাড়ি ঘর করতে।

মিসেস মণ্ডল তারপর যে ঘটনাটা বলে চললেন তা যেন চোখের সামনে ভাসতে লাগল।

পাল্কির মধ্যে থেকে নববধূ মাঝে মাঝে উঁকি মেরে দেখেন আর চমকে ওঠেন—এ কোথায় তাঁকে নিয়ে এল! জনমনিষ্যি নেই। শুধু ধুলোভরা রাস্তা আর জঙ্গল। দিনের বেলাতেও শেয়াল ঘুরছে। তাঁর কেমন ভয় করতে লাগল। তাঁর এমনও মনে হতে লাগল—ওই বরটা ডাকাত নয় তো? তাঁকে মেরে ফেলে গয়নাগাঁটি—না না, অত ভালো যে দেখতে, সে কি কখনো ডাকাত হতে পারে?

কি, ভয় করছে? বর হঠাৎ তার দিকে তাকিয়ে হাসল। তার সঙ্গে এই প্রথম কথা বলল।

মেরি মাথা নাড়ল। অর্থাৎ না।

কিছুক্ষণ পর দেখল জঙ্গলের মধ্যে এক বাড়ি। পাকা—বড় দোতলা বাড়ি। হাঁপ ছেড়ে বাঁচল মেরি। যাক, তবু ভদ্রলোকের বাড়ি।

বাড়ির মধ্যে ঢুকে কিন্তু তার মন আবার দমে গেল! এত বড় বাড়ি—এত ঘর—কিন্তু লোক কই? দোতলার একটা ঘরে বুড়ো শ্বশুর পড়ে থাকেন। বাতের যন্ত্রণায় চলাফেরা করতেও পারেন না। আর আছে একটা বুড়ো চাকর। ব্যস!

মেরি শ্বশুরবাড়ি এসে কেমন মনমরা হয়ে গেল। ভালো করে খায় না, হাসে না, ঘুমোতেও পারে না।

একদিন প্রাণকুমারকে জিজ্ঞেস করল, এখানে তোমার ভয় করে না?

প্রাণকুমার মজা করার জন্যে বললে, খুব করে।

—তবে থাকো কী করে?

—কী করব? নিজেদের বাড়ি ছেড়ে তো পালাতে পারি না। ভরসা শুধু ওই বন্দুকটা।

—তুমি বন্দুক চালাতে পার?

—নিশ্চয়ই। এ বংশে সবাই বন্দুক চালাতে জানে।

মেরি উৎসাহে বলে উঠল—আমিও পারি।

—তাই নাকি? একদিন বন্দুক ছুড়ো তো দেখি।

—আচ্ছা।

কয়েক দিন কাটল। দিনের বেলা একরকম কাটে। কিন্তু সন্ধে হলেই মেরির গা ছমছম করে। তার কেবলই মনে হয়, এই বুঝি কারা এসে জোর করে তার মুখ চেপে ধরে গা থেকে গহনা খুলে নিচ্ছে। তখন আর ঘর থেকে বেরোতে চায় না।

এদিকে তার তরুণ স্বামীটিও তেমনি। কিছুতেই সন্ধের সময়ে বাড়ি আসবে না। রাগারাগি করলে হেসে বলে, সন্ধে থেকে বৌয়ের আঁচল ধরে বসে থাকব এমন ছেলে আমি নই।

আসলে তার বউ যে ভয় পায় আর ভয় পেয়ে তার খোঁজ করে, এটা ভেবে তার খুব আনন্দ হয়। নিজেকে বীরপুরুষ মনে করে।

শ্রাবণ মাসের সে সন্ধেটা ছিল দুর্যোগপূর্ণ। সন্ধের পর থেকেই বৃষ্টি নেমেছিল আকাশ ভেঙে। সেই সঙ্গে ঝড়।

নিজের একতলার ঘরটিতে দরজা—জানলা এঁটে মেরি ভয়ে কাঁটা হয়ে একা চুপচাপ বসেছিল। আর কেবলই ভাবছিল কখন তার প্রাণকুমার বাড়ি আসবে। খুব রাগ হচ্ছিল। কেননা, মাত্র দু’দিন আগেই লাইনের ওপারে সাংঘাতিক ডাকাতি হয়ে গেছে। আর আজ তো এই দুর্যোগ! এ অবস্থায় তাকে একা ফেলে—

হঠাৎ বন্ধ জানলায় দড়াম করে কী যেন এসে পড়ল। মেরি চমকে উঠল। তার পরেই আবার! কে যেন জানলা লক্ষ্য করে ইট ছুড়ছে। বুদ্ধিমতী মেয়ে বুঝে নিল, ডাকাত পড়েছে। তারা জানলা ভেঙে ঢুকবে। সর্বাঙ্গ থরথর করে কেঁপে উঠল। এমনি সময়ে আবার শব্দ—দড়াম! জানলার ছিটকিনি ছিটকে পড়ল। একটা পাল্লা খুলে এক ঝলক ঠান্ডা বাতাস আর বৃষ্টির ছাঁট ঘরে ঢুকল। না না, আর চুপ করে বসে থাকা নয়। বিপদ এসে পড়েছে। দেরি করলে রক্ষে থাকবে না।

কিন্তু—কিন্তু কী উপায়? পালাবে? কোথায় পালাবে? ডাকাতরা যদি দরজা ভেঙে ঢোকে?

কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে মেরি। এমনি সময়ে আবার দরজায় দুমদাম শব্দ। প্রথমে মেরি ভাবল, প্রাণকুমার এসে দরজা ঠেলছে না তো? তার পরেই মনে হল—না, প্রাণকুমার তো অমন করে দরজা—

আবার দুমদাম শব্দ। মেরি উঠে দাঁড়াল। লক্ষ পড়ল দেওয়ালের কোণে বন্দুকটার ওপর। তখনই বন্দুকটা তুলে নিল। গুলি ভরাই ছিল। তারপর বন্দুকটা জানালায় রেখে পর পর দু’বার গুলি ছুঁড়ল—দ্রুম দ্রুম।

বন—জঙ্গল কাঁপিয়ে, বৃষ্টির শব্দ ছাপিয়ে সেই শব্দ দূরে মিলিয়ে গেল। আর তারপরই একটা কাতরানি—একটা আর্তনাদ।

মেরি মণ্ডলের রক্ত চনচন করে উঠল। লক্ষ্য তার ভ্রষ্ট হয়নি। একজন ডাকাত মরেছেই।

গৃহকর্ত্রী থামলেন। বললেন, ডাকাত নয়। মেরির স্বামী প্রাণকুমার। ভয় দেখিয়ে ছেলেমানুষি করতে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর হাতেই বেচারিকে প্রাণ দিতে হল।

আমি চমকে উঠলাম!

—তারপর?

প্রাণকুমার মণ্ডলের সমাধি তো দেখলেন। তার পাশেই মেরি মন্ডলের। সে বেচারি তারপর পাগল হয়ে গিয়েছিল। বছর চারেক পরে সেও বন্দুকের গুলিতে আত্মহত্যা করল।

কিছুক্ষণ চুপচাপ।

তারপর আমি বললাম, যে ঘরটায় মেরি মণ্ডল থাকতেন, সেটা একবার দেখতে পারি?

—নিশ্চয়ই। তবে ও—ঘরটা এখন খালি পড়ে থাকে। পুরোনো জিনিসপত্তর—

বলতে বলতে সেজটা হাতে নিজে গৃহকর্ত্রী এগিয়ে চললেন।

আরো দু’খানা ছোট—বড় ঘর—বারান্দা পেরিয়ে বাগানের পশ্চিম দিকের একটা ঘরের সামনে এসে দাঁড়ালেন। তারপর শেকল খুলে ঘরে ঢুকতেই থমকে গেলেন—কে?

কেউ একজন যে ঘরে ছিল তা আমিও স্পট দেখেছি।

—কে? গৃহকর্ত্রীর গলার স্বর ভয়ে উত্তেজনায় কেঁপে উঠল।

—নিশ্চয় চোর। বলেই তিনি ছুটে গিয়ে নিজের ঘর থেকে একটা দোনলা বন্দুক নিয়ে এলেন। আমরা দুজনেই ঘরে ঢুকলাম। কিন্তু সেজের আর আমার টর্চের আলোয় তন্ন—তন্ন করে খুঁজেও ঘরের মধ্যে কাউকে দেখা গেল না।

গৃহকর্ত্রী হেসে বললেন, ছিঁচকে চোর ঢুকেছিল। ভয়ে পালিয়েছে।

কিন্তু কেন জানি না, আমি হাসতে পারলাম না।

১৯৮২, জানুয়ারী, শুকতারা

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *