রহস্যময়ী
সেদিন বাসে একটি মেয়েকে দেখলাম। সুন্দরী মেয়ে। মুখ—চোখ নিখুঁত। রং ফর্সা। কিন্তু—
লক্ষ পড়ল ওর বাঁ হাতের কব্জির ওপর। অনেকখানি জায়গা জুড়ে কালো জরুল। আর সেই জরুল থেকে কয়েকটা কালো কালো লম্বা লোম বাতাসে শুঁয়োপোকার মতো নড়ছে।
দেখে চমকে উঠলাম।
মেয়েটির জন্যে দুঃখ তো হচ্ছিলই—আহা, অত সুন্দরী মেয়ে—তারও কী সাংঘাতিক খুঁত। তবু যে চমকে উঠেছিলাম তার কারণ আছে।
সেদিন ওই মেয়েটিকে দেখে হঠাৎ মনে পড়ে গেল কয়েক বছর আগের একটি ঘটনা। ঘটানাটা শুনেছিলাম সত্যব্রতর মুখেই। শোনার পর বেশ কয়েক রাত ঘুমোতে পারিনি। কেবলই মনে হয়েছিল—এ কি সম্ভব?
সেই ঘটনার কথা বলি।
সত্যব্রত তখন সবে ডাক্তারি পাশ করেছে। বড়লোকের ছেলে। টাকার অভাব নেই। ছোটোবেলা থেকে তার ইচ্ছে ছিল—ডাক্তার হবে। আর ডাক্তার হয়ে কলকাতায় বসবে না। বসবে কোনো পল্লিগ্রামে। কলকাতায় তো বড়ো ডাক্তারের অভাব নেই। কিন্তু পল্লিগ্রামে বড়ো ডাক্তার নেই। বড়ো ডাক্তাররা সহজে শহর—বাজার ছেড়ে গ্রামে যেতে চায় না। কেননা গ্রামে নাকি পসার জমে না। রুগির অভাব হয় তো হয় না কিন্তু টাকা? গ্রামের সাধারণ লোক ভারী গরিব। তারা ডাক্তারকে বেশি পয়সা দিতে পারে না।
আজকাল মানুষের মনটাই বদলে গেছে। টাকা ছাড়া মানুষ আর কিছু ভাবতে পারে না। যেখানে যত বেশি টাকা সেখানেই পাগলের মতো ছোটে।
কিন্তু সত্যব্রতর মনটা ছিল অন্যরকম। সে ভাবত টাকা নেই বলেই তারা বড়ো ডাক্তার দেখাতে পারবে না? এরকম হওয়া উচিত নয়।
তাই সত্যব্রত একদিন মা—বাবাকে প্রণাম করে একটা বেডিং, আর একটা সুটকেস নিয়ে রানিচকে চলে এল।
এখানে তার বাবার ছোটোবেলার এক বন্ধু থাকতেন। তিনিই উৎসাহ করে সত্যব্রতকে গ্রামে এসে বসাতে চেয়েছিলেন।
সেখানে একটা ছোটোখাটো ডিসপেন্সারি ছিল। তিনি বললেন, বাবা সত্য, এসবই তোমায় দিলাম। তুমি শুধু এখানে থাকো। গ্রামের লোকদের বাঁচাও।
বাড়িটা পুরোনো। দোতলা বাড়ি অবশ্য। ওপরে দু’খানা ঘর। নীচে দু’খানা। সে আমলের খড়খড়ি দেওয়া জানলা। ছাদের নীচে বড়ো বড়ো মোটা কড়ি। দেওয়ালে নোনা ধরেছে। হয়তো বা বর্ষায় ঘরের মধ্যে জলও পড়ে একটু—আধটু। আলসের কোণ ফুঁড়ে একটা অশ্বত্থগাছের চারা দিব্যি মাথা তুলেছে।
এ রকম পুরোনো নির্জন বাড়িতে সত্যব্রতর থাকা অভ্যেস নয়। তার ভারী মজা লাগল। ভাবল মন্দ কি! নতুনত্ব আছে। মানুষকে তো সবরকম অভ্যেসের মধ্যে দিয়ে চলতে হয়। নানা অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়েই মানুষ বড়ো হয়। এও একটা অভিজ্ঞতা।
সত্যব্রত দেখল, ডিসপেন্সারিতে ওষুধপত্তর নেই বললেই হয়। যাও বা আছে সব পুরোনো। এখন কত নতুন নতুন ওষুধ বেরিয়েছে, তার কিছুই নেই।
সত্যব্রত একটা লিস্ট করে নিজেই টাকা দিয়ে সেসব ওষুধ আনিয়ে নিল।
দেখতে দেখতে সত্যব্রতর হাতযশ ছড়িয়ে পড়ল। শুধু রানিচকই নয়—পাশাপাশি গ্রাম থেকেও রুগি আসতে লাগল। তারা সাধ্যমতো যা দেয় সত্যব্রত খুশি হয়ে তাই নেয়। সবাই বললে, এমন ডাক্তার হয় না।
শহর—বাজারেই রাত—বিরেতে ডাক্তার ডাকলে আসতে চায় না। গ্রামে তো কথাই নেই। রুগি মরে যাচ্ছে শুনলেও ডাক্তারবাবুরা আসবেন না। তাঁদের অনেক অজুহাত। গরমে বলবেন,—সাপ, বর্ষায় বলবেন—জলকাদা, শীতে বলবেন—ঠান্ডা। আবার কেউ কেউ অন্য ভয়ও পান। সে কথা থাক।
সত্যব্রত এসবই জানত। রুগিদের বললে, গুরুতর কেস হলে তোমরা আমার কাছে এসো। যত রাতই হোক আমি যাব। গ্রাম—বৃদ্ধরা দু’হাত তুলে সত্যব্রতকে আর্শীর্বাদ করলেন।
তারপর থেকেই সত্যব্রতর রাতের ঘুম ছুটে গেল। কেবল রুগির বাড়ি থেকে ডাক আসে। কখনো দূর দূর গ্রাম থেকেও।
সন্ধের সময় গ্রামের দু—চারজন প্রৌঢ় সত্যব্রতর ডিসপেন্সারিতে এসে বসেন। বয়েসে সত্যব্রত তাঁদের চেয়ে অনেক ছোটো। হলেও ডাক্তার তো। তাঁরা গল্পগুজব করেন। জ্বরজ্বালা হলে বিনা পয়সায় ওষুধও নেন।
তাঁদের মধ্যে একজন একদিন কথায় কথায় বললেন, বাবাজি, তুমি যে রাত—বিরেতে ‘ডাক’ এলেই হুট করে ছোটো এতে তোমার উঁচু মনের পরিচয় পাওয়া যায়। তবে কিনা নিজের জীবনটা বাঁচিয়ে।
সত্যব্রত ভাবল, উনি বুঝি তার বেশি পরিশ্রমের কথা বলছেন। তাই হেসে বললে, এ বয়েসটা তো পরিশ্রম করারই বয়স চরণকাকু।
—না না, পরিশ্রমের কথা নয় বাবাজি। আমি বলছি অন্য কথা।
তারপর একটু থেমে বললেন, তুমি আজকালকার ছেলে—কলকাতার ছেলে—ওসব মানবে কিনা জানি না, তবে মনে রেখো পাড়াগেঁয়ে এখনো নানারকমের অলৌকিক ভয় আছে।
সত্যব্রত উৎসাহে নড়েচড়ে বসল। হেসে বলল, অলৌকিক ভয়! সেটা কীরকম?
—হাসছ বাবাজি? হাসির কথা নয়। এই তো সেবার—তোমারই মতো একজন নতুন ডাক্তার এলেন। তারপর একমাসও কাটল না হঠাৎ একদিন সকালে দেখা গেল ওই রানীসায়রে তাঁর দেহ ভাসছে।
—আত্মহত্যা করেছিলেন?
—না। রাত্রে নিশি ডেকে নিয়ে জলে ডুবিয়ে মারল।
একটু থেমে বললেন, পালেদের বড়ো নাতি অপূর্ব কলকাতার কলেজে পড়ত। ছুটিতে এল গ্রামে আম খেতে। গরমের জন্যে ছাদে শুত। একদিন সে দেখল—একটি ছেলে তাকে ডাকছে। ভারী সুন্দর দেখতে ছেলেটিকে। অপূর্বর কৌতূহল হল। সে উঠে গেল। দিব্যি ছেলেটির পিছু পিছু সিঁড়ি দিয়ে নামল, খিল খুলল, তারপর রাস্তায় বেরিয়ে পড়ল। ছেলেটি চলেছে আগে আগে—যাচ্ছে রানিসায়রের দিকে। তারপর—ব্যস!
শুনে সত্যব্রত জোরে হেসে উঠল।
চরণকাকু বিরক্ত হয়ে বললেন, এটা হাসির কথা নয়।
—তা ছাড়া কি! একেবারে গাঁজা।
—গাঁজা! আমি মিথ্যে কথা বলছি? শুধোও তো চাটুজ্যেমশাইকে। কী চাটুজ্যেমশাই?
চাটুজ্যেমশাই মাথা দোলালেন—ঠিক।
—মিত্তিরমশাই?
মিত্তিরমশাই বললেন, অত কেন? গোকুল হালুইকরের বৌটা মরল কী করে? ওই রানিসায়রে।
সত্যব্রত বলল, আপনারা রাগ করবেন না, অপূর্ব পালের যে ঘটনাটা বললেন তা অনেকখানি অতিরঞ্জিত—বাড়িয়ে বলা।
—কী রকম?
অপূর্ব তো ছাদে একলা ঘুমোচ্ছিল। তাকে যে একটি সুদর্শন ছেলে ডাকল—অমনি অপূর্ব যে গটগট করে নেমে গেল—রাস্তা দিয়ে ছেলেটির পিছু পিছু চলল এসব আপনারা জানলেন কী করে? আপনারাও সেই সুন্দর ছেলেটিকে দেখেছিলেন নাকি?
বৃদ্ধের দল চুপ করে গেল।
সত্যব্রত বললে, দেখুন, অলৌকিক ব্যাপার সম্বন্ধে সব দেশেরই অধিকাংশ মানুষের একটা প্রচণ্ড দুর্বলতা আছে। তারা মানতে চায় বলেই খুব ঘটা করে রং চড়িয়ে গল্প বলে।
চাটুজ্যেমশাই কী বলতে যাচ্ছিলেন এমনি সময়ে একটা হাত—ভাঙার রুগি এল। প্রসঙ্গ চাপা পড়ে গেল।
সত্যব্রত রুগি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। বৃদ্ধরা আস্তে আস্তে যে যার বাড়ি চলে গেলেন।
সত্যব্রত দোতলাতে একাই থাকে। একটি অল্পবয়সি ছেলে তার রান্নাবান্না করে দেয়। তারপর সেও সন্ধের পর বাড়ি চলে যায়। তখন সত্যব্রতর মনে হয় বড্ড একলা। একটু গল্প করারও লোক নেই। তখন ঘুম না আসা পর্যন্ত ডাক্তারি বই পড়ে।
এক—একদিন বিকেলে ছাদে পায়চারি করে। ছাদ থেকে গ্রামের অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যায়। ওই যে নিমগাছটা ওটা কত কালের কে জানে! ওই যে বিরাট অশ্বত্থ গাছটা আকাশের আধখানা জুড়ে একটা মস্ত ছাতার মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে, রোজ রাতে বোধহয় এরই কোনো ডালে বসে কালপ্যাঁচা বিশ্রী শব্দ করে ডাকে। ওর পাশ দিয়ে রাস্তা চলে গেছে। দু’পাশে বাঁশঝাড়। তারপর খাঁ—খাঁ মাঠ। এক—একদিন রাতে ওই মাঠের ওপর দিয়ে দমকা বাতাস হা—হা করে ছুটে আসে। সেই শব্দে মানুষের ঘুম ভেঙে যায়। এখানকার লোকে ওই হাওয়াকে বলে ‘খারাপ হাওয়া’। দুষ্টু আত্মা নাকি ছুটে বেড়াচ্ছে।
ওই মাঠের পরে বিরাট রানিসায়র।
রানিসায়র নাম হয়েছিল কেন কে জানে! হয়তো কোনো রানির নামে। রানি তো আর একালে কেউ হয় না। হয় তো অতীতের কোনো জমিদারগৃহিণীর নামে সরোবরের নাম হয়েছে রানিসায়র।
ওই সরোবরে নাকি ডুবে মরেছিল কোন এক ডাক্তার। তারপর অপূর্ব পাল। তারপর গোকুল হালুইকরের বৌ। ডুবে মরেছিল এটা হয়তো ঠিক। কিন্তু নিশির ডাক? তাও কি আজকের দিনে বিশ্বাস করতে হবে?
ক’দিন পর।
রাত তখন কত কে জানে—টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছিল। সমস্ত রানিচক গ্রামটা ঘুমে অচেতন। হঠাৎ সত্যব্রতর ঘুম ভেঙে গেল। কেউ যেন তাকে ডাকছে—ডাক্তারবাবু—ডাক্তারবাবু।
সত্যব্রত বুঝল রুগির বাড়ি থেকে ‘কল’ এসেছে। তাড়াতাড়ি উঠে জানলা দিয়ে মুখ বাড়াল—কে?
দেখল, রীতিমতো একজন ভদ্রলোক। পরনে ট্রাউজার, গায়ে হাওয়াই শার্ট। ছাতা মাথায়।
দেখে অবাক হল। রানিচকের মতো গ্রামে এরকম কেতাদুরস্ত লোক তো দেখেনি কখনো।
—কী চাই?
—একটু যেতে হবে। একজন পেশেন্ট—
সত্যব্রত বড়ো টর্চটা নিয়ে নীচে নেমে এল। লন্ঠন জ্বালল। ডিসপেন্সারির দরজা খুলে ভদ্রলোককে ভেতরে ডাকল—আসুন।
ভদ্রলোক ঢুকলেন। সত্যব্রত লন্ঠনটা টেবিলের ওপর রেখে চেয়ারে বসল।
—বসুন।
—না, বসবার সময় নেই। এখনি আপনাকে একবার যেতে হবে।
—কোথায়?
—মদনহাটি।
—মদনহাটি! সে আবার কোথায়?
—নদীর ওপারে।
সত্যব্রত চুপ করে রইল। একে বৃষ্টি পড়ছে। তারপর এত রাত্রে নদী পেরিয়ে—
—কী ভাবছেন ডাক্তারবাবু? আপনাকে যেতেই হবে। নইলে আমার শ্বশুরমশাই বাঁচবেন না।—ভদ্রলোক মিনতি করে বললেন।
—কিন্তু—
—না—না, কিন্তু—টিন্তু নয়—আপনাকে যেতেই হবে।
ব্যস। সঙ্গে সঙ্গে সত্যব্রতর মন গলে গেল। উঠতে যাচ্ছে এমনি সময়ে ঘরে ঢুকলেন একজন মহিলা। চব্বিশ—পঁচিশ বয়েস। রীতিমতো সুন্দরী। কালো শাড়ির সঙ্গে কালো ব্লাউজ, কাঁধ থেকে ঝুলছে ফোমের কালো ব্যাগ, হাতে কালো লেডিস ছাতা! এই রাত্রেও কালো কাচের চশমা পরেছেন।
তাঁর ফর্সা ধবধবে রঙে কালোর এই সমারোহ বড়ো সুন্দর মানিয়েছিল।
ভদ্রলোক পরিচয় করিয়ে দিলেন।—ইনি আমার স্ত্রী। এঁরই বাবা—
সত্যব্রত একটু অবাক হল। যার বাবা মুমূর্ষ সে বাবাকে ফেলে এত সেজেগুজে ডাক্তার ডাকতে আসতে পারে!
ভদ্রলোক বোধয় সত্যব্রতর মনের কথা আঁচ করতে পেরেছিলেন। বললেন, আপনি পাছে না আসেন সেইজন্যে ও নিজেই ছুটে এল।
সত্যব্রত কী করবে ভাবছিল—মহিলাটি টেবিলের কাছে এসে হাত জোড় করে বললে, আপনাকে যেতেই হবে ডাক্তারবাবু। যত টাকা ফি চান—
—টাকার লোভ আমার নেই। ও কথা দয়া করে বলবেন না।
—ক্ষমা করবেন। কিন্তু আপনি না গেলে আমার বাবা—বলতে বলতে ভদ্রমহিলার গলার স্বর ভারী হয়ে উঠল।
—আগে কেসটা কী বলুন শুনি। তারপর যাওয়া দরকার কিনা ভেবে দেখব।
বলে পেনটা খুলে টেবিলে রাখতে গেল—পেনের ক্যাপটা পড়ে গেল মাটিতে।
সত্যব্রত হেঁট হয়ে অন্ধকারেই ক্যাপটা খুঁজতে লাগল—পেল না। তখন সে টর্চটা নিয়ে আবার খুঁজে লাগল। হঠাৎ টর্চের আলো গিয়ে পড়ল মহিলাটির পায়ে—আর সঙ্গে সঙ্গে সত্যব্রত একেবারে আঁতকে উঠল। দেখল মহিলাটির পা থেকে গোড়ালি বেয়ে লম্বা লম্বা লোম গোল গোল হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে।
এইরকম লোম যে কোনো মানুষের হতে পারে কল্পনাও করা যায় না। সেই অমানুষিক লোম দেখে মুহূর্তের জন্যে বুঝি সত্যব্রতর মাথাটা ঝিমঝিম করে উঠেছিল। কিন্তু সে ওই মুহূর্তের জন্যেই। তখন দুর্বল হয়ে পড়লে আর রক্ষা থাকবে না।
সত্যব্রত তখনি নিজেকে সামলে নিল। কলমের ঢাকাটা তুলে নিয়ে চেয়ারে সোজা হয়ে বসল।
কৃষ্ণবসনা সুন্দরী তখন চশমার ভেতর দিয়ে তার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে।
সত্যব্রতর সঙ্গে চোখাচোখি হতেই মহিলাটি অধৈর্য হয়ে বললে, দেরি করবেন না। চলুন। ভোর হয়ে যাবে।
—কিন্তু কীসে যাব?—সত্যব্রতর মাথায় তখন বুদ্ধির প্যাঁচ খেলছে।
—আমাদের সঙ্গে একটু কষ্ট করে হেঁটেই যেতে হবে।
—হাঁটতে তো পারব না। পায়ে ব্যথা।
—কিন্তু হেঁটে না গেলে উপায় কি? এই পাড়াগাঁয়ে—
—এক কাজ করুন। পাশেই গোয়ালপাড়া। ওখানে গিয়ে আমার কথা বলুন। ওরা গাড়ি দেবে।
অগত্যা ওদের গোরুর গাড়ির সন্ধানে যেতে হল।
যেইমাত্র তারা দরজার বাইরে বেরিয়েছে অমনি সত্যব্রত ছুটে গিয়ে দরজা বন্ধ করে খিল এঁটে দিল। তারপর সোজা দোতলায়। দোতলার দরজাগুলোতেও খিল দিতে ভুলল না।
মুহূর্তের পর মুহূর্ত। মিনিটের পর মিনিট। তারপরই শুরু হল নীচের দরজায় দুমদাম করে শব্দ। দরজা বুঝি ভেঙে পড়ে। সত্যব্রত দু’হাতে কান চেপে বসে রইল যতক্ষণ না ভোর হয়।
ভোর হবার সঙ্গে সঙ্গে শব্দ থেমে গেল।
১৯৮০, ডিসেম্বর, শুকতারা
—