ভৌতিক উপন্যাস
ভৌতিক গল্প

ও কার মুখ?

ও কার মুখ?

শীতকাল।

রাত সাড়ে আটটা বাজতে না বাজতেই রাস্তা নিঝুম। এমনকি সার্কুলার রোডের এই মোড়টা পর্যন্ত নির্জন হয়ে যাচ্ছে।

আমি সার্কুলার রোড আর লি রোডের মোড়ে বাসের জন্যে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এখান থেকে শ্যামবাজার যেতে হবে। সোজা যাবার কোনো বাস যখন পাচ্ছি না তখন ভাবলাম কোনোরকমে এসপ্ল্যানেড পৌঁছতে পারলেও হয়। সেখান থেকে শ্যামবাজার যাবার ঢের উপায় আছে।

কিন্তু এমনই কপাল এসপ্ল্যানেডেরও কোনো বাস আসছে না।

দাঁড়িয়ে আছি তো আছিই। এ অঞ্চলে বেশির ভাগই অবাঙালির বাস। যে দোকান কটা তখনো খোলা রয়েছে সেখানেও কোনো খদ্দের নেই। আমার কেমন ভয় হল। এখনই যদি দুজন এসে আমার হাত থেকে ব্রিফকেসটা ছিনিয়ে নিয়ে যায় অবাক হব না।

কী করব ভাবছি লক্ষ পড়ল একটি লোক কখন এসে আমারই স্টপেজে দাঁড়িয়েছে। লোকটি একটু দূরে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়েছিল। গায়ে একটা চাদর জড়ানো, পরনে পাজামা কি ধুতি দেখিনি। কিন্তু শীত থেকে কান দুটো বাঁচাবার জন্যে জড়ানো ছিল কম্ফটার। লোকটাকে দেখে খুশিই হয়েছিলাম। যাক, তবু একজন সঙ্গী পাওয়া গেল।

কিন্তু লোকটা অতক্ষণ ধরে মাথা নীচু করে রয়েছে কেন বুঝতে পারলাম না।

একটু পরে লোকটা মুখ তুলল। তুলে অন্য দিকে তাকিয়ে রইল। আমি ওর চোয়াল দেখেই চমকে উঠলাম যেন চেনা চেনা মনে হচ্ছে। আমি আবার ভালো করে ওকে দেখতে লাগলাম। হ্যাঁ, চেনা মুখ। একে যেন কোথায় দেখেছি। কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারলাম না।

এইবার লোকটা হঠাৎ আমার দিকে মুখ ফেরাল। আর সন্দেহ রইল না মুখটা আমার খুবই চেনা। আর লোকটাও এবার আমাকে লক্ষ করতে লাগল। তার তাকানো দেখে বেশ বুঝতে পারলাম সেও আমাকে চিনতে পারছে। কিন্তু মনে করতে পারছে না।

একবার ভাবলাম ওর কাছে গিয়ে কথা বলি। কিন্তু ওর চাদর জড়ানো চেহারাটা এমন যে কিছুতেই কাছে যেতে রুচি হল না। তা ছাড়া আলাপ করবার মতো মনের অবস্থাও ছিল না।

ঘড়ি দেখলাম। এ কী! ঘড়ি বন্ধ হয়ে গেছে? বন্ধ তো হবার কথা নয়। রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘড়িতে দম দেওয়া আমার অভ্যেস। বেশ মনে পড়ল আজও দম দিয়েছি। তা হলে বন্ধ হল কখন? আবার ঘড়ির দিকে তাকালাম। দেখলাম ছোটো কাঁটাটা আটটা পনেরো মিনিট হয়ে থেমে গেছে। অর্থাৎ যে সময়ে লোকটা এসে দাঁড়িয়ে ছিল মোটামুটি সেই সময়ে।

এতক্ষণে তাহলে পৌঁনে নটা তো হবেই। কিন্তু এখনো পর্যন্ত বাসের চিহ্ন নেই।

তা হলে? অন্য জায়গায় গিয়ে কিছু একটা ধরতে হয়। থিয়েটার রোডে গেলে বাস না হোক ট্যাক্সি মিলতে পারে। কিছু না হোক রিকশার অভাব হবে না।

আমি ওপারে যাবার জন্যে রাস্তায় নামলাম। হঠাৎ আবার আমার দৃষ্টি পড়ল লোকটার দিকে। সে আমার দিকে তাকিয়েই আছে। কেমন অদ্ভুত সে দৃষ্টি। এখন আর লোকটার দৃষ্টিতে কৌতূহল নয় শিকার ফসকে যাচ্ছে দেখলে শিকারির যেমন চোখের ভাব হয় তেমনি একটা অবিশ্বাস্য হিংস্র ভাব ফুটে উঠেছে। মনে হচ্ছে লোকটা বুঝি এখনই আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ব্রিফকেস ছিনিয়ে নেবে। তবু ভয় পেলাম না। কেননা ওই চাদর—মাফলার—জড়ানো লোকটা আমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে বলে মনে করাটা মূর্খামি।

আমি রাস্তা পার হয়ে প্রিটোরিয়া স্ট্রিটে ঢুকলাম। ভাবলাম রাস্তাটা শর্টকাট হবে। একেবারে সোজা গিয়ে পড়ব থিয়েটার রোডে। কিন্তু ভুল করলাম তা প্রিটোরিয়া স্ট্রিটে ঢুকে বুঝতে পারলাম। রাস্তাটা শুধু অন্ধকারই নয়, একেবারে নির্জন। দু’পাশে সাহেবি আমলের পুরোনো পুরোনো বাড়ি। বাড়ির সঙ্গে লাগাও কম্পাউন্ড। কম্পাউন্ডের মধ্যে আমগাছ নিমগাছ। ডাল—পালা সব রাস্তার ওপর ঝুঁঁকে পড়েছে। হঠাৎ দেখে কে বলবে এটা শহর কলকাতা।

আমি রাস্তা ধরে হাঁটছিলাম। বাস ধরার চিন্তাটা কখন সরে গিয়ে অন্য চিন্তা ভর করেছে। লোকটা অমন করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল কেন? কী ওর উদ্দেশ্য? আর তাই মনে করবার চেষ্টা করছি ওই মুখটা কবে কোথায় দেখেছি। আমার জেদ চাপল ওই মুখ আমাকে মনে করতেই হবে।

ভাবতে ভাবতে যাকে বলে বিদ্যুৎচমকের মতো একটা মুখ বহুকাল আগের স্মৃতির গহ্বর থেকে চকিতে ঝলকে উঠল। সে মুখ বিশু নন্দীর। অনেক দিন আগের কথা। আমার বয়েস যখন দশ—এগারো। আমার দাদামশাই ছিলেন তখনকার দিনে বর্ধমান জেলার দুর্ধর্ষ ফৌজদারি উকিল। খুনিরা ধরা পড়ে বাঁচবার জন্যে যত বড়ো উকিলই দিক না কেন আমার দাদুর কাছে পারত না। হেরে যেত। আর এই হেরে যাওয়া মানেই তাদের ফাঁসি কিম্বা দ্বীপান্তর—কিছু না হোক সারা জীবনের জন্যে জেল হয়ে যেত। এমনি ভাবে দাদুর বক্তৃতা শুনে বিচারকরা যে কত খুনি আসামিকে শাস্তি দিয়েছেন তার হিসেব নেই।

খুনি আসামিরা তাই দাদুকে যেমন ভয় করত তেমনি দাদুর ওপর রাগ ছিল।

কালীগঞ্জের জমিদার ইন্দ্রনাথ চৌধুরী ছিল দুর্ধর্ষ জমিদার। গ্রামের লোকেরা তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। এই জমিদারের অপকর্মের ডান হাত ছিল তার নায়েব শয়তান বিশু নন্দী। বিশু নন্দীই জমিদারকে যা পরামর্শ দিত জমিদার সেইরকম আদেশ দিত। বিশু নন্দীর লেঠেলদের হাতে কত গরিব প্রজার সর্বনাশ হয়ে গেছে তার ইয়ত্তা নেই। কত ঘর—বাড়ি জ্বলেছে, কত নিরীহ দরিদ্রের ধড় থেকে মাথা নিঃশব্দে খসে পড়েছে।

খুন—খারাপি করেই বিশু নন্দী কলকাতায় এক ফিরিঙ্গিবন্ধুর হোটেলে এসে কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকত তারপর সুযোগ বুঝে আবার গ্রামে ফিরে আসত। এই বিশু নন্দীও দাদুকে ভয় করত। ভয় করত বলেই দাদুর ওপর ছিল রাগ। দাদু বাড়িতে হাসতে হাসতে বলতেন, বিশু যদি আমাকে কোনো দিন বাগে পায় শেষ করে দেবে। আর আমিও যদি ওর বিরুদ্ধে খুনের কেস পাই তাহলে ফাঁসিতে ঝোলাবই।

একদিন শুনলাম নীচে সেরেস্তাখানায় বিশু নন্দী এসেছে। দাদুর সঙ্গে কী কথা বলছে। শুনে বাড়ির সকলের মুখ শুকিয়ে গেল। রান্নাবান্না মাথায় উঠল। তবু বিশু নন্দীকে দেখার জন্যে বাড়ির মেয়েরা পর্যন্ত জানালা দিয়ে, দরজার আড়াল থেকে উঁকি মারতে লাগল। আমি তো সোজা সেরেস্তাখানায় গিয়ে দাদুর পাশে দাঁড়ালাম।

যে রোগা চিমড়ে শকুনির মতো লোকটা তার উঁচু উঁচু দাঁত বের করে হেসে দাদুর সঙ্গে কথা বলছিল, বুঝতে দেরি হল না সেইই বিশু নন্দী।

লোকটা হঠাৎ আমার দিকে তাকাল।

এটি কে? বিশ্রী খসখসে গলায় লোকটা দাদুকে জিজ্ঞেস করল।

দাদু আমাকে কাছে টেনে নিয়ে বললেন, আমার নাতি, একমাত্র নাতি।

সঙ্গে সঙ্গে বিশু নন্দীর ঘন জোড়া ভুরু কুঁচকে উঠল। কেমন একরকম ভাবে আমায় দেখল। তারপর দাদুর দিকে তাকিয়ে চোখ পিটপিট করে বলল, উকিলবাবু, একটু আগে আপনাকে বলছিলাম আমার অসাধ্য কিছু নেই। আমি যদি ইচ্ছে করি তা হলে এক সপ্তাহের মধ্যে আপনার এই নাতিটিকে লোপাট করে দেখিয়ে দিতে পারি। বলে বিকট শব্দে হেসে আমার কাঁধে হাত রাখল। সেই হাতের স্পর্শ এখনো আমার মনে আছে। সমস্ত কাঁধটা ঝনঝনিয়ে গিয়েছিল।

দাদুর মুখটা মুহূর্তে ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছিল। তারপর হেসে বলেছিলেন, নন্দীমশাই, পৃথিবীটাকে আপনার জমিদারের খাস তালুক মনে করবেন না। পুলিশ আছে, আদালত আছে।

কিন্তু নন্দী সেদিন এসেছিল দাদুর সঙ্গে একটা রফা করতে। সে বলতে চেয়েছিল জমিদার ইন্দ্রনাথ চৌধুরীর বা তার লোকের বিরুদ্ধে মামলা উঠলে দাদু যেন জমিদারের পক্ষে দাঁড়ান। তার জন্যে জমিদার কত মোহর ফি দেবে বিশু নন্দী তাও ইঙ্গিতে জানিয়ে দিয়েছিল।

উত্তরে দাদু যখন বললেন অন্যায়ের পক্ষ তিনি কখনো নেবেন না, তখন বিশু নন্দীর চোখ দুটো প্রথমে একবার বুঝি দপ করে জ্বলে উঠেছিল। তারপরই মোলায়েম গলাতে বলেছিল, বেশ, তা না হয় আমাদের পক্ষে নাই দাঁড়ালেন, কিন্তু কথা দিন আমাদের বিপক্ষে কখনো দাঁড়াবেন না। বলে ফতুয়ার ভেতর—পকেট থেকে একটা থলি বের করে দাদুর সামনে রাখল।

দাদুও ছিল বদরাগি মানুষ। আমায় ঘুষ দেওয়া! বলে দাদু সেই মোহরের থলিটা সজোরে ছুঁড়ে বিশু নন্দীর মুখে মারলেন।

বিশু নন্দীর উঁচু দাঁত দিয়ে রক্ত পড়তে লাগল। কোনো কথা না বলে থলিটা কুড়িয়ে নিয়ে দাদুর দিকে আগুন—ঝরা চোখে তাকিয়ে বেরিয়ে চলে গেল।

তারপরই দাদু বাড়ির সকলকে ডেকে আমার ওপর বিশেষ লক্ষ রাখতে বলে দিলেন। সেই থেকে যখনই বেরোতাম ইস্কুলে যাবার সময়েই হোক কিংবা খেলতে যাবার সময়ে—দুজন চাকর সব সময়ে সঙ্গে থাকত। আমি বড়ো হয়েছি বলে দোতলায় একটা ছোটো ঘরে একা শুতাম। সেইখানেই পড়াশোনা করতাম। এখন সে ঘরে আমার সঙ্গে আমার এক আত্মীয়েরও শোবার ব্যবস্থা হল। শুধু তাই নয়, ওই ঘরের জানালাগুলোয় পর্যন্ত জাল এঁটে দেওয়া হল।

এইরকম সাবধানতার মধ্যে বছরখানেক কাটল। তারপর একদিন সকালে উঠেই শুনলাম বিশু নন্দী একটা খুনের অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছে। যথাসময়ে আদালতে কেস উঠল। যাকে খুন করা হয়েছে তার বিধবা স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে দাদুকে বললে, আপনি আমার পক্ষ নিয়ে ওই আসামিকে দোষী প্রমাণ করে উচিত শাস্তি দেবার ব্যবস্থা করুন। সত্যের জয় হোক।

দাদু বিশু নন্দীর বিরুদ্ধে এই বিধবার পক্ষ নিয়ে লড়লেন। দাদুর জয় হল। জজ সাহেব বিশু নন্দীর ফাঁসির হুকুম দিলেন। বিশুর ফাঁসি হয়ে গেল।

* * *

একমনে ছেলেবেলার সেই সব পুরোনো স্মৃতির কথা মনে করতে করতে পথ হাঁটছি তো হাঁটছিই। কিন্তু পথ কি শেষ হবে না? এ পথ তো এত দীর্ঘ নয়। এর আগেও আমি এই প্রিটোরিয়া স্ট্রিটে এসেছি। এ পথ আমার যথেষ্ট চেনা। সার্কুলার রোডের মুখ থেকে প্রিটোরিয়া স্ট্রিট ধরে থিয়েটার রোডে পড়তে পাঁচ মিনিটের বেশি সময় কিছুতেই লাগতে পারে না। অথচ—

ঘড়ি দেখবার জন্যে রিস্টওয়াচটার দিকে তাকালাম। অন্ধকারে কিছু দেখতে পেলাম না। উঃ! তত অন্ধকার। দেশলাই যতবার জ্বালাতে গেলাম দুই বারই নিভে গেল। তখন মনে পড়ল ঘড়ি দেখেই বা কী হবে? ঘড়ি তো বন্ধ হয়ে গেছে।

এক মুহূর্তের জন্যে আমি রাস্তার ওপর থমকে দাঁড়ালাম। আমি কি তাহলে রাস্তা ভুল করেছি? এদিক ওদিক তাকাচ্ছি। হঠাৎ মনে হল; এই নির্জন অন্ধকার গলিরপথে আমি আর একা নাই। আরো কেউ যেন আছে। আর সে রয়েছে ঠিক আমারই পেছনে।

সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে দাঁড়ালাম। দেখলাম চাদরজড়ানো সেই লোকটা একটা একটা পা ফেলে আমার দিকেই আসছে। লোকটাকে ভালো করে লক্ষ করতে হল না। তার দুই জ্বলন্ত—চোখ আর ঠোঁটের ফাঁক থেকে ঠেলে বেরিয়ে আসা উঁচু দাঁতগুলো দেখেই প্রায় আঠারো বছর আগের দেখা মুখটাকে চিনতে পারলাম। সেই মৃত মানুষের মুখ আজ আঠারো বছর পর কলকাতার রাস্তায় কী করে দেখা সম্ভব এসব যুক্তি তর্ক না করেই আমি প্রাণপণে ছুটতে লাগলাম। কোন দিকে কোথায় যাচ্ছি জানি না শুধু ছুটছি—ছুটছি। এই দারুণ শীতে আমি ঘামছি—আর—জিভটা ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে। বুঝতে পারছি প্রচন্ড তেষ্টা পেয়েছে। এখনি জল খেতে না পারলে আমি আর বাঁচব না। কিন্তু—কোথায় জল পাবো?

কতক্ষণ এইভাবে ছুটেছি জানি না। এক সময়ে আবার ঠুন ঠুন শব্দ কানে এল। একটু আলো চোখে পড়ল—রিকশার আলো।

রিকশাওয়ালা রোখো!

রিকশাওয়ালা অবাক হয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। আমি কোনো কথা না বলে রিকশাতে উঠে পড়লাম। রিকশাওলা জিজ্ঞাসা করল কোথায় যাবো? আমি বললাম— এসপ্ল্যানেড।

ও অবাক হয়ে বলল—এসপ্ল্যানেড ধরমতলা বহু দূর হ্যায়।

আমি জিজ্ঞাসা করলাম এটা কোন জায়গা?

রিকশাওয়ালা বললে ইয়ে তো গোরস্থান হ্যায় বাবু। সর্বনাশ! এই রাত্রিরে পার্কস্ট্রিটের সেই দুশো বছরের পুরোনো কবর খানার কাছে এসে পড়েছি। কটা বাজল বলতে পারো?

ও বলার আগেই দূরে কোন চার্চের ঘড়িতে রাত তিনটে বাজল।

রিকশাওয়ালা বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করল কাঁহা যায়েগা?

একটু ভেবে বললাম পার্কসার্কাস ট্রামডিপোতেই চলো। ঘণ্টাখানেক পরে তো ট্রাম ছাড়বে।

রাস্তায় দিব্যি আলো জ্বলছে। রিকশা ঘণ্টা বাজিয়ে ট্রমডিপোর দিকে এগিয়ে চলল। আমার তখনো যেন মনে হচ্ছে রিকশার পিছনে পিছনে কে যেন ছুটে আসছে।

কিন্তু না, সেটা ভুল। যে আসছিল সে এই পুরোনো কবরখানার কাছে এসেই মিলিয়ে গেছে। এখন আর ভয় নেই। চারিদিকে আলো। তেষ্টার ভাবটাও কমে গেছে। আর আশ্চর্য ঘড়িটা আবার চলছে।

১৯৮৫, শুকতারা শারদীয়া

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *