নরক সংকেত – ৩৬

৩৬

শান্তশিষ্ট নির্জন জায়গাটা পুলিশের গাড়ির মুহুর্মুহু জ্বলতে নিভতে থাকা নীল লাল আলো, সাইরেন আর ছুটোছুটিতে গমগম করছে। রুদ্র অবসন্ন দেহে একটা চেয়ারে বসে ছিল। পাশে প্রিয়ম একটা জলের বোতল দিয়ে ওর মাথায় আলগা করে বুলিয়ে দিচ্ছিল।

সিগফ্রেডের নেশার ঘোর এখনও কাটেনি, একটা অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাকে।

রুদ্র প্রিয়মের হাতটা ধরে ক্লান্ত গলায় হাসল, ‘তোমার চাকরি নিয়ে আর চাপ নেই তো?’

প্রিয়ম বলল, ‘চাপ নেই কী বলছ! তোমার এই কীর্তির পরে তো মনে হচ্ছে তোমাকে আমাকে দুজনকেই সারাজীবনের অতিথি করে রেখে দেবে জার্মানি সরকার! দেশে ফিরতে পারব তো?’

রুদ্র হাসল, আদুরে গলায় বলল, ‘বাজে বোকো না। আমার সঙ্গে প্যারিস যাবে তো? একা একা একটুও যেতে ইচ্ছে করছে না আমার।’

প্রিয়ম বলল, ‘যেতে তো হবেই। না হলে ওখানে গিয়ে আবার কী কাণ্ড বাধাবে তার ঠিক আছে? কোথায় ভাবলাম লন্ডনটা দুজন মিলে ঘুরে বেড়াব, ওদিকের স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এইগুলো যাব, তা নয় কয়েকদিন ধরে চরকির মতো ঘুরছি।’

রুদ্র ম্লান হাসল, ‘কী অদ্ভুত, বলো! হিটলার মারা গেছে প্রায় সত্তর বছর আগে। তার ভেতরের সেই ত্রূ«র জিনটা কেমনভাবে ইনহেরিটেড হয়েছে তার পরের পরের প্রজন্মতে। সেই একই ধরনের নিষ্ঠুরতা। একই ধরনের পাশবিক মনোবৃত্তি!’

প্রিয়ম বলল, ‘আচ্ছা পুরো ব্যাপারটায় কী করে একটার সঙ্গে একটা লিঙ্ক করলে তুমি?’

রুদ্র বলল, ‘হিটলারের সঙ্গে কানেকশনটা বুঝতে পারার পরেই ফোন করলাম বাবাকে। ডাবল এইচ যে তখন হেইল হিটলার বোঝাতে ব্যবহার হত, এটা বাবাই পয়েন্ট আউট করলেন। সেই সময় ওই খবরের কাগজের নিউজটাও চোখে পড়ল যে, প্রথম ছবিটায় হিটলার রয়েছে। তখন বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম হিটলারের ব্যাপারে কোথা থেকে জানতে পারব? বাবা তো একগাদা বইয়ের নাম দিয়ে দিলেন, সেগুলোর মধ্যে যেগুলো ই—বুক ভার্সনে পেলাম, পড়তে শুরু করলাম। তখনই আস্তে আস্তে জটগুলো খুলতে লাগল।’

প্রিয়ম বলল, ‘কিন্তু সিগফ্রেড কী করে জার্মানি চলে এল? জিমিরা বলেছিল ওরা সব জায়গায় পাহারা বসিয়েছিল।’

রুদ্র মাথা নাড়ল, ‘এটা আমিও ভাবছিলাম। তবে স্নেইডারের যা ইনফ্লুয়েনস, সিগফ্রেডের কাছে একটা নয়, অনেক ভুয়ো পাসপোর্ট আছে নিশ্চয়ই। সেদিন রাতে তুমি সেন্ট প্যানক্রাসে গিয়ে সুইচ অন করে ফেলেছিলে ফোনের, স্নেইডার সঙ্গে সঙ্গে সেটার লোকেশন ট্র্যাক করে সিগফ্রেডকে জানায়। তারপরেই ইভা আমাদের কামরায় ওঠে। এ সবই অবশ্য আমার অনুমান, কিন্তু এটা ছাড়া আর কোনো সম্ভাবনা তো দেখছি না। পুলিশি তদন্তে সব বেরোবে একে একে। তবে কাজ মিটে যাবার পরেই যে স্নেইডার সিগফ্রেডকে পৃথিবী থেকে সরানোর তাল করেছিল সে—ব্যাপারে আমি শিয়োর।’

প্রিয়ম মাথা নাড়ল।

‘হিটলার ইহুদিদের শেষ করে জার্মানিকে শ্রেষ্ঠ করতে চেয়েছিল, আর স্নেইডার মধ্যপ্রাচ্যের ইমিগ্র্যান্টদের দেশ থেকে তাড়িয়ে। উদ্দেশ্যটা কিন্তু এক! শুধু তাই নয়, হিটলার নিজের দিদির মেয়েকে মানসিক টর্চার করে, ঘরে বন্দি রেখে সুইসাইড করতে বাধ্য করেছিল, আর স্নেইডার তার সৎ ছেলেকে ব্ল্যাকমেল করে এইসব কাজ করাত! সত্যি, ভালো জিন হলে যেমন মেরি কুরির ফ্যামিলিতে পাঁচটা নোবেল প্রাইজ যায়, তেমনই খারাপ জিন হলে কী অবস্থা হয় দ্যাখো।’ রুদ্র বলল।

প্রিয়ম মাথা নাড়ল, কিন্তু হাসল না। গম্ভীরভাবে ভ্রূ কুঁচকে কী যেন চিন্তা করছে।

রুদ্র বলল, ‘কী ভাবছ?’

প্রিয়ম বললে, ‘স্নেইডার ছিল ফেডেরাল পুলিশের হেড। ওদের নিজস্ব প্রচুর ক্রিপটো অ্যানালিস্ট থাকে, তবু ও এটার অর্থ বের করতে পারল না কেন? সিগফ্রেডকে ডিসাইফার করার দায়িত্ব দিল?’

রুদ্র বলল, ‘কি বোকার মত যে কথা বল প্রিয়ম! নেগেটিভটা ও চুরি করিয়েছিল, সেটা ও অফিসে ফাঁস করে দেবে? তা কখনো হয়?’

প্রিয়ম ঘাড় নেড়ে চুপ করে গেল। একটু পরে বলল, ‘ভাবছি আমাদের যে প্রোডাক্টগুলো হবে সেগুলো কার জিন ইনহেরিট করবে বলো তো? তোমার না আমার?’

রুদ্র কিছুক্ষণ চোখটা ছোটো করে বুঝতে চাইল কী বলতে চাইছে প্রিয়ম, তারপর হেসে ফেলল, ‘তোমার এই সময়েও এসব মাথায় আসে, সত্যি!’

তারপরেই ও একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল, ‘ভেবেছিলাম লোকটা আর যাই বদ মতলবে আসুক, ক্যান্সারের ব্যাপারটা হয়তো সত্যি, সেইজন্যই অতটা ইনভলভড করেছিলাম নিজেকে। কোথায় কী! যে কোডিং—এর মধ্যে ভাবলাম ক্যান্সার দূর করার বীজ লুকিয়ে রয়েছে, সেটা আসলে ভালো কিছু তো নয়ই, বরং পৃথিবীটাকে নরকের কুম্ভীপাকে পরিণত করার মূলে রয়েছে সেই সংকেত!’

ফেলিক্সের হাতের ক্ষত শুশ্রূষা করতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সিকিউরিটি অফিসার ম্যাক্সের সঙ্গে কথা বলতে বলতে জিমি হন্তদন্ত হয়ে এগিয়ে এল, ‘আমাদের চ্যান্সেলর ম্যাডাম আসছেন কিছুক্ষণের মধ্যেই। আপনি প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন ম্যাডাম, সঙ্গে জার্মানির সম্মানও। বাইরে অনেক প্রেস জমে গেছে। চ্যান্সেলর এসে যাওয়ার পর তো আপনাকে ওঁর সঙ্গে কথা বলতে হবে, তাই এখনই কি প্রেসের সঙ্গে কথা বলে নেবেন?’

রুদ্র একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল, তারপর উত্তর না দিয়েই উঠে পায়ে পায়ে এগিয়ে গেল সামনের এন্ট্রান্সটার দিকে। ভেতরে না ঢুকে বাইরে থেকে চোখ রাখল ভেতরের সার সার তাঁবুগুলোতে।

ভেতরের মানুষগুলো বাইরে বেরিয়ে এসেছে ঘুম ভেঙে, তারা কিছুই বুঝতে পারছে না, কী হয়েছে।

তবে সবার মুখেই আশঙ্কার ছাপ।

এই দেশের সরকারও কি তাদের তাড়িয়ে দেবে, আবার মাইলের পর মাইল হেঁটে, পালিয়ে, লুকিয়ে, অত্যাচারের শিকার হয়ে খুঁজতে হবে আশ্রয়?

নানা উদবেগের কথা নিজেদের মধ্যে ভয়ার্ত চোখে বলাবলি করে চলেছে তারা।

কেউ লক্ষ না করলেও একটা ছোট্ট পুতুলের মতো বাচ্চা মেয়ে কিন্তু ঠিক খেয়াল করেছে রুদ্রকে।

আড়াই তিন বছর বয়স তার, খয়েরি রঙের চোখ, আপেলের মতো লাল তার দুটো ফোলা ফোলা গাল, মাথা ভরতি ঝাঁকড়া চুল। অসময়ে কাঁচা ঘুম ভেঙে যাওয়াতে তার টুকটুকে লাল ঠোঁটের একপাশ দিয়ে লালা গড়িয়ে পড়ছে।

ঘুমজড়ানো লাল চোখে টলোমলো পায়ে সে এগিয়ে আসতে থাকল রুদ্রর দিকে।

মাঝে মাঝে রুদ্রর যে কী হয়!

কোথা থেকে রাজ্যের জল চলে আসে চোখে।

জলভরা চোখে ও দেখল কত সংগ্রাম করে কত সমুদ্র, কত দেশ পেরিয়ে হাজার মাইল হেঁটে আসা, এই বয়সেই কত অন্যায়, কত অত্যাচার সওয়া ছোট্ট দুটো চোখ যেন অপলক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে।

হাসছে মিটিমিটি।

সে—চোখে ভয় নেই, রাগ নেই, বিস্ময় নেই। কোনো অভিযোগও নেই।

সেই দৃষ্টিতে শুধুই কৃতজ্ঞতা!

প্রিয়ম গিয়ে আলতো হাত রাখল রুদ্রর কাঁধে।

পূনর্জন্ম বলে সত্যিই হয়তো কিছু হয় না, তবু ব্রহ্মান্ডের কোনো এক মহাজাগতিক স্থান থেকে দুটো মহাশূন্যে বিলীন হয়ে যাওয়া আত্মাও হয়তো আনন্দে চোখের জল ফেলছিল।

একজনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে গলা তোলার সাহস ছিল, হাজার বাধাতেও স্বপ্ন দেখেছিল তার দেশ একদিন স্বাধীন, মুক্তমনা হবে। নাগরিকরা বাঁচবে নিজেদের মতো, স্বাধীনভাবে, নির্ভয়ে।

কিন্তু তার সেই স্বপ্ন সত্যি হয়নি। নিষ্ঠুরভাবে কুখ্যাত এক্স—টারমিনেশন কিলিং ক্যাম্পে হত্যা করা হয়েছিল তাকে।

আর একজন ছিল অতি সাধারণ। তার শুধু স্বপ্ন ছিল সে একদিন পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু শৃঙ্গ জয় করবে, ধরিত্রীর বুকে সোনার জলে অক্ষয় করে রেখে যাবে পর্বতারোহী হিসেবে নিজের নাম।

মনে হয়তো তাকে কেউ রাখেনি, কিন্তু তার জীবনের প্রথম এবং শেষ অভিযান চালিয়ে একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সে রাখতে গিয়েছিল প্রকৃতির কোলে, মানবসভ্যতাকে বাঁচানোর জন্য।

দামাল প্রকৃতির রোষে সেখান থেকে আর ফেরেনি সে, কিন্তু নিজের জীবন দিয়েও তার কাছে থাকা মূল্যবান জিনিসটা সযত্নে রেখে এসেছিল প্রকৃতির কোলে।

.

লেখকের কথায়

অনেকে শুনে নাক কুঁচকেছেন, ‘নরক’ নামটাই যেন কেমন অশুভ ইঙ্গিত বয়ে আনে!

তবু যে সংকেত পৃথিবীকে ভয়াল নরকে রূপান্তরিত করার ক্ষমতা রাখে, তার নাম ‘নরক সংকেত’ তো দিতেই হয়!

অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল বিংশ শতাব্দীর অন্যতম কুখ্যাত এবং বর্ণময় চরিত্রকে নিয়ে লিখব, তবে সেটা যে থ্রিলারই হতে হবে, এমন কোনো আবশ্যিকতা ছিল না। কিন্তু ঘটনাচক্রে নরক সংকেত লিখলাম, যেটি একটি বৈজ্ঞানিক প্রেক্ষাপটে ঐতিহাসিক ‘থ্রিলার ফিকশন’ বললে খুব ভুল হবে না।

আগাগোড়া ইউরোপীয় পটভূমিতে লেখা এই উপন্যাসে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ঘটে চলা সন্ত্রাসবাদ, মধ্যপ্রাচ্যের শরণার্থী সমস্যার সঙ্গে সমান্তরালভাবে আমি আঁকতে চেয়েছি প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী রাজনৈতিক এবং ঔপনিবেশিক ডামাডোলে বিধ্বস্ত জার্মানির চালচিত্র, অ্যাডলফ হিটলারের রাজনৈতিক কেরিয়ারের প্রথমদিক এবং এক অধুনালুপ্ত প্রাচীন সমাজ ওলটপালট করে দেওয়া ইউজেনিক্স তত্ত্বের প্রয়োগ।

শুধুমাত্র রুদ্ধশ্বাস থ্রিলার হিসেবে পড়তে গেলে হয়তো সময়বিশেষে উপন্যাসের গতি শ্লথ মনে হতে পারে, তাই এই অগ্রিম স্বীকারোক্তি।

ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিতে উপন্যাস রচনা করতে গেলে তৎকালীন চরিত্রগুলোর যথাযথ রূপায়ণে লেখকের কল্পনা মিশ্রিত থাকবেই, সেইভাবেই আমি অ্যাডলফ হিটলার, তরুণ প্রতিবাদী সাংবাদিক ফ্রিৎজ গার্লিক কিংবা ভিক্টর ব্র্যাকের চরিত্রগুলোকে আঁকার চেষ্টা করেছি। যদিও আমার এই উপন্যাস শেষ হয়ে গেছে হিটলারের রাজনৈতিক কেরিয়ারের একদম প্রথম কয়েক বছরেই। তাঁর শাসনকালের একদম প্রথমদিক প্রতিফলিত হয়েছে এতে, সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েনও।

জার্মান স্বৈরাচারী শাসক ইউজেনিক্স তত্ত্ব প্রকৃতই প্রয়োগ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ক্রমাগত বহিরাগত আক্রমণ বা যেকোনো কারণেই হোক সেই ব্যাপারে তিনি বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেননি। স্যার ফ্র্যান্সিস গ্যালটনের গবেষণা নিয়ে তাঁর আগ্রহের উল্লেখও রয়েছে বহু প্রামাণ্য নথিতে। বর্ণনা রয়েছে ফ্রিৎজ গার্লিকের মর্মান্তিক হত্যার কথাও। তেমনই ফ্রেডরিকের মতো চরিত্রগুলো একেবারেই উপন্যাসের স্বার্থে গঠিত।

এই উপন্যাস লেখার জন্য আমাকে বহু সময় ধরে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করতে হয়েছে, কৌতূহল নিবারণে আমি দিনের পর দিন স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে গিয়ে বিভিন্ন বই চেয়ে স্টাফেদের বিরক্ত করেছি, জানার আগ্রহে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, বিশেষত জার্মানির বিভিন্ন স্মৃতিসৌধ এবং সংগ্রহশালাতেও হানা দিয়েছি। আর সেইসঙ্গে ভয়ও পেয়েছি তথ্য জানার নেশায় উপন্যাস যেন তথ্যভারে জর্জরিত না হয়ে পড়ে, এর রোমাঞ্চে যেন কোনো ঘাটতি না হয়।

অ্যাডলফ হিটলার, সেই সময়ের ইউরোপ, ‘রাজায় রাজায় যুদ্ধ’ হওয়ার সময় উলুখাগড়া অর্থাৎ সাধারণ নাগরিকদের দুর্বিষহ জীবন, গ্রেট ডিপ্রেশন, বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে রয়েছে অগুনতি ঐতিহাসিক গ্রন্থ এবং মূল্যবান সিনেমা। কাজেই আমার উপন্যাসের জন্য যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই আমি আহরণ করেছি তাদের থেকে। সেইসমস্ত গ্রন্থপঞ্জি এবং চলচ্চিত্রের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা আমি এই লেখার শেষে জ্ঞাপন করেছি।

পাঠক যদি আমার প্রথম উপন্যাস ঈশ্বর যখন বন্দি—র সঙ্গে পরিচিত থাকেন তবে অবগত আছেন যে প্রোটাগনিস্ট মুখ্য চরিত্র রুদ্রাণী ওরফে রুদ্র বলে তরুণীটি কোনো পেশাদার গতানুগতিক গোয়েন্দা নয়, সাধারণ চাকুরীজীবী আধুনিক যুগের এক শিক্ষিতা যে তার নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া আরকিয়োলজিস্ট বাবার অন্তর্ধানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, উন্মোচিত হয় কিছু ঐতিহাসিক রহস্য। রুদ্র তার সহজাত বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে উদ্ধার করেছিল তার বাবাকে। শুধুই গা হিম করে দেওয়া রহস্য নয়, একজন সাধারণ মেয়ের মতোই তার সদ্যবিবাহিত জীবন, স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের মতো অনুভূতিও ছিল ঈশ্বর যখন বন্দি—তে।

স্বীকার করতে কোনো লজ্জা নেই, ঈশ্বর যখন বন্দি শুধু আমার প্রথম উপন্যাস নয়, ছিল আমার প্রথম রচনা। আমি নিজের তার মধ্যে পরবর্তীকালে অনেক ভুলত্রুটি খুঁজে পেলেও প্রকাশককে এক বছরের মধ্যে চারটি মুদ্রণ বার করতে বাধ্য করে পাঠকমহল আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে, তাতে আমি আপ্লুত।

যুদ্ধবিধ্বস্ত হিটলারশাসিত জার্মানির ঐতিহাসিক দলিলের সঙ্গে আধুনিক অতিনব্য জীববিজ্ঞানের ‘ডিজাইনার বেবি’র মতো কিছু বিতর্কিত এবং আপাতশুভ মতবাদ, জিন থেরাপির কিছু ‘সু’ এবং ‘কু’ প্রভাব, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের বহুলপ্রচলিত ক্রিপ্টোগ্রাফি, সাইফার কোডিং এবং সমান্তরালে রয়েছে এক নব্য স্বামীস্ত্রীর বিবাহিত জীবনপ্রবাহ, যা এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য।

আমার পরিবারের সকলে, আমার সহকর্মীরা, আমার শুভাকাঙ্ক্ষী সমস্ত বন্ধুজন এবং সর্বোপরি আমাকে ক্রমাগত অনুপ্রেরণা জোগানো এবং আমার পাশে থাকার জন্য আমার সোশ্যাল মিডিয়া পেজের দেড় লক্ষাধিক পাঠকপাঠিকার সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই।

সহায়ক গ্রন্থ/চলচ্চিত্র তালিকা

1. Mein Kampf, Adolf Hitler

2. Hitler : Speeches and Proclamations 1932-1945, Max Domarus

3. Hitler : A Study in Tyranny, Alan Bullock

4. Rise of Adolf Hitler, A Dufner

5. Hitler and Geli, Ronald Hayman

6. Hitler’s Women, Guido Knopp

7. From Darwin to Hitler : Evolutionary Ethics, Eugenics, and Racism in Germany, Richard Weikart.

8. Essays in Eugenics, Francis Galton.

9. Victorian London, Liza Picard

10. Designer Babies : Where should we draw the line, Institute of Ideas, Ellie Lee.

11. The Origins of Nazi Genocide : From Euthanasia to the Final Solution, Henry Friedlander

12. The further of Assisted Suicide and Euthanasia, Neil M. Gorsuch

13. The Nazi Doctors : Medical killing and the Psychology og Genocide, Robert Jay Lifton

14. গ্যাস চেম্বার, চিরঞ্জীব সেন

15. হিটলার, সৈয়দ মুজতবা আলী

16. Hitler : The Rise of Evil, 2003Movie

17. The Planist, 2002 Movie

18. Downfall, 2004 Movie

বিবিধ সহায়তায় গুগল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *