নরক সংকেত – ১৩

১৩

মার্চ ১৯৩৩,

ফ্রেডরিক ক্লান্ত শরীরে বাড়ি ফিরছিল। বার্লিনের বড়ো বড়ো রাজপথগুলো এখন আলোয় ঝলমল করলেও এইসব দিক এখনও টিমটিমে গ্যাসের আলোয় চলছে।

হালকা বরফে সারা রাস্তাটা সাদা গুঁড়োয় ছেয়ে রয়েছে। লোকজন প্রায় নেই—ই। রাস্তার দু—পাশের বাড়ি প্রায় নিস্তব্ধ, কোথাও মৃদু লয়ে গান চলার আওয়াজ ভেসে আসছে।

এই রাস্তাটার মোড় ঘুরেই ওর সেই প্রিয় রেস্টুরেন্টটা চোখে পড়ল। এখানকার খাবার দারুণ সুস্বাদু, অবশ্য মাসের একদম প্রথমেই মাইনে পেয়ে একবার এখানে এসে শখ মেটানোর সুযোগ পায় ফ্রেডরিক। খাবারের চেয়েও ওর বেশি প্রিয় হল এখানকার সেই বেহালা বাজানো লোকটা। বেশ বয়স্ক, কিন্তু বাজানোর হাতটা চমৎকার। চোখদুটো বুজে ভাঁজ পড়া গালে তন্ময় হয়ে বাজিয়ে যায় সে।

রোজ এইখান দিয়েই বাড়ি ফেরে ফ্রেডরিক, মাসের বাকি উনত্রিশটা দিন ওই লোকটার সেই সুরের মূর্ছনার স্বাদ নিতে নিতেই পেরোয় জায়গাটা।

কিন্তু আজ লোকটাকে ও দেখতে পেল না। অথচ রেস্টুরেন্টটা কিন্তু খোলা। শুধু খোলা তাই নয়, বেশ ভিড়, বাইরেটা কিছু একটা সাইনবোর্ড লাগানো চলছে।

ফ্রেডরিকের মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল। রোজ এখান দিয়ে যাওয়ার সময় ওই বেহালা শোনাটা কেমন অভ্যেস হয়ে গিয়েছিল। একটু হতাশ হয়ে ও পা বাড়াল সামনের দিকে।

ফ্রেডরিক এখনও বিয়ে—থা করেনি। এখান থেকে অনেক দূরে সেই কোলন শহরের দিকে তার বাবা মা থাকে। বেশ কয়েক বছর আগেই সে বার্লিন চলে এসেছিল, কয়েক বছর আগের সেই ভয়াবহ মূল্যবৃদ্ধির ঠিক আগে আগেই। সেসব দিনগুলো অনেক লড়াই করে টিকে থাকতে হয়েছিল ওকে, মনে পড়লে এখনও গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় আর তারপর বিশাল পরাজয়ের ফলে গোটা জার্মানিতে এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছিল যে রাতারাতি এক পাউন্ড পাঁউরুটির দাম প্রায় কুড়ি হাজার গুণ বেড়ে গিয়েছিল। ওই প্রচণ্ড ঠান্ডায় নিজের একমাত্র কোটটাকে সম্বল করে দিনের পর দিন বার্লিনের মাটি কামড়ে পড়ে থেকেছে সে। তবু ফিরে যায়নি গ্রামে। সেই অবস্থাতেই একে ওকে ধরে ছাপাখানায় অ্যাপ্রেন্টিস থেকে কাজ শিখেছে। এখন একটু স্থিতাবস্থার দিকে এগোচ্ছিল, কিন্তু আজকের পর আর মনে হচ্ছে না তার চাকরিটা থাকবে। চাকরি তো দূর, ‘স্ট্রেট পাথ’ খবরের কাগজটাই আর থাকবে না, যা মনে হচ্ছে।

ঘরে ফিরে ও ওভারকোটটা খুলল, ঘরে পরার একমাত্র মোটা উলের শার্টটা পরে নিল গায়ে। এমনিতে বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে এখনও তার নেই, কিন্তু ছোটেবেলা থেকে যে একমাত্র স্বপ্নটা মনে মনে লালন করে সে বাড়িঘর ছেড়ে এই বার্লিনে এসে পড়ে রয়েছে দু—পয়সা রোজগারের আশায়, সেটা করতে না পারলে ও সত্যিই ভেঙে পড়বে।

হতাশ মুখে ও ঘরের একপাশে রাখা ট্রাঙ্কটার কাছে গিয়ে হাতড়ে হাতড়ে একটা ছবি বার করল। একটা বহু পুরোনো হলদে হয়ে যাওয়া ছবি, দুমড়ে—মুচড়ে গেছে, তবু ও সেটা চোখের কাছে নিয়ে এসে পরম ভালোবাসার সঙ্গে দেখতে লাগল।

খবরের কাগজ থেকে কাটা একজন পর্বতারোহীর ছবি। একটা সম্পূর্ণ খাড়াই পাহাড় বেয়ে উঠছেন তিনি, দুটো হাত দিয়ে উপরে আটকানো একটা দড়ি ধরা। পা দুটো দিয়ে অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতায় পাহাড়টাকে ধরে রেখে ভারসাম্য রক্ষা করছেন। সাদা কালো ছবিতে হলেও ওই প্রতিকূল পরিবেশে তাঁর মুখের অভিব্যক্তিটাও সুন্দর ফুটে উঠেছে ছবিটায়।

ছবিটি হ্যান্স ডুঁলফারের। জার্মানির সর্বশ্রেষ্ঠ পর্বতারোহীদের মধ্যে একজন। শুধু যে দুর্গম অনেক শৃঙ্গই তিনি জয় করেছিলেন তাই নয়, মাউন্টেনিয়ারিং করার জন্য অনেক ধরনের টেকনিকও তিনি বের করেছিলেন।

ফ্রেডরিকদের গ্রামের স্কুলে একটা অনুষ্ঠানে তিনি একবার গিয়েছিলেন, তখন ওর বয়স বড়োজোর বারো কিংবা তেরো। ওই বয়সে সব কিছুই আশ্চর্য লাগে, অনুসন্ধিৎসা আর কৌতূহলে মনের মধ্যে হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খায় সবসময়, রূপকথা আর ভালো লাগে না, অ্যাডভেঞ্চারের দিকে মন টানে।

হ্যান্স ডুঁলফার তখন টগবগে যুবক, সদ্য আইসল্যান্ডের দুটো শৃঙ্গ জয় করে ফিরেছিলেন। ওদের স্কুলের ছোটো ছোটো ওই কচিকাঁচাদের মনে সেদিন পাহাড়ে ওঠার নেশাটা চারিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। তিনিই বলেছিলেন কেমনভাবে মিউনিখের অ্যালপাইন ক্লাবে পাহাড়ে চড়ার ট্রেনিং দেওয়া হয়।

অন্যদের মনে হয়তো কিছুই তেমন প্রভাব পড়েনি, কিন্তু ফ্রেডরিকের মনে উনি যে স্বপ্নটা বুনে দিয়ে গিয়েছিলেন, সেটার জাল বোনা থেকে ও আর এই জীবনে বেরোতে পারবে বলে মনে হয় না।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মাত্র তেইশ বছর বয়সে যখন হ্যান্স ডুলফার মারা গিয়েছিলেন, খবরের কাগজে ও পড়েছিল সেটা। মনটা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু ততদিনে ফ্রেডরিক মোটামুটি ঠিক করে ফেলেছে জীবনের লক্ষ্য। বার্লিন বা মিউনিখের মতো কোনো বড়ো শহরে গিয়ে বছর কয়েক অর্থোপার্জন করে নিয়েই পাহাড়ে ওঠার ট্রেনিং নেবে। সেইমতো এত কিছু।

বার্লিনে আসার পরে পরেই টাকা জমিয়ে এখানকার একটা ছোটো ক্লাব থেকে বেসিক ট্রেনিংটাও নিয়ে রেখেছে। ছোটোখাটো ট্রেকিং—এও গেছে।

কিন্তু এই অভিজ্ঞতা দিয়ে দুর্গম শৃঙ্গ অভিযান করা যায় না।

ও একটা চাপা নিশ্বাস ফেলল। মাঝে মাঝে মনে হয় সত্যিই কি এই জীবনে ও ছবিতে দেখা ওই তুষারধবল শৃঙ্গগুলোর উপরে উঠতে পারবে? নাকি ছোট্ট থেকে দেখা ওই পর্বতারোহী হওয়ার স্বপ্নটা সারাজীবন শুধু স্বপ্ন হয়েই রয়ে যাবে!

ও কিছুক্ষণ চুল্লিতে হাত সেঁকল, তারপর খেয়ে নিয়ে শুয়ে পড়বে ভাবল। এখানে জীবন বড়ো একা, বিশেষত ভিক্টর আলাদা হয়ে যাওয়ার পর থেকে। এই বাড়িটা শহরতলির দিকে বলে অনেক খোঁজাখুঁজি করে একটা আলাদা ঘর পেয়েছে, না হলে মাস তিনেক আগে অবধিও সেই বাঙ্কার সিস্টেমে গুঁতোগুঁতি করে শুতে হত।

ও একটা ছোটো নিশ্বাস ফেলল কাজটা চলে গেলে আবার হয়তো সেখানেই ফিরে যেতে হবে।

কেউ স্পষ্ট করে বললও না আজ, কাল আদৌ অফিস খুলবে কি না।

কাল যদি আরও বড়ো হামলা হয়? মৃদু আওয়াজ হতেই ও ফিরে তাকাল, ওর কোটের পকেট থেকে ঠকাস করে মাটিতে পড়ল এই সপ্তাহের ‘স্ট্রেট পাথ’ খবরের কাগজটা।

নিজে যে কাগজের অফিসে চাকরি করে, সেই কাগজই পড়া হয় না, এমনই দুরবস্থা ওর।

সময় কোথায়?

বাড়ি ফিরে জল তোলা, রান্না করা, চুল্লি জ্বালিয়ে রেখে ঘর গরম করা! বিরস মুখে কাগজটা তুলতে যেতে চোখে পড়ল ফ্রিৎজ স্যারের লেখা সম্পাদকীয় কলামটা, এটার কথাই আজ বলছিলেন স্যার, কেন হিটলারকে মানুষ জেতাল এত ভোট দিয়ে।

একটা হাই তুলে আগুনের পাশটায় বসে ও পড়তে লাগল লেখাটা,

‘মহোদয় দেশবাসী ভাইয়েরা। এর থেকে আর দুঃখের কিছুই নেই, শেষ পর্যন্ত একজন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গালাগানো, স্বৈরাচারী শাসককে আমরা আমাদের দেশের সর্বোচ্চ পদে অভিষিক্ত করতে চলেছি। যিনি শান্তিতে নয়, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বিশ্বাস করেন, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নয়, নিজের জাতিকে উত্তম প্রতিপন্ন করতে অন্যদের নৃশংসভাবে ধ্বংস করতেও যিনি পিছপা হন না। বন্ধুগণ, ইহুদিরা যুগ যুগ ধরে জার্মানিতে বসবাস করছে। আমাদের দেশের অনেক মান্যগণ্য পদে তাঁরা রয়েছেন, অগণিত ইহুদি ভাইয়েরা যুদ্ধে বীরের মতো লড়াই করেছেন, প্রাণও দিয়েছেন, কোনোদিনও এই নিয়ে কোনো অসন্তাোষ সৃষ্টির নজির এদেশে নেই। কিন্তু মাননীয় নতুন চ্যান্সেলর তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরুর প্রথম থেকে বলে এসেছেন ওঁর অপরিসীম ইহুদি বিদ্বেষের কথা। বলে এসেছেন কীভাবে ক্ষমতায় এলে পুরো ইহুদি জাতিকে ওঁর নাতসি বাহিনী নিশ্চিহ্ন করতে পিছপা হবে না। ওই জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দিলেই নাকি আমাদের দেশে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি এই সমস্ত সমস্যা উধাও হয়ে যাবে। অসাধারণ যুক্তি! গণহত্যা করে যদি সামাজিক সমস্যা দূর করতে হয়, তবে তো সেই যুক্তিকে গোটা পৃথিবীই একদিন জনহীন প্রাঙ্গণে পরিণত হবে। কিন্তু সেই বুদ্ধি ওই মহামতির নেই। ব্যক্তিগত জীবনেও তাঁর উন্মাদসম স্বৈরাচারিতার শিকার হয়েছেন অনেকেই, এমনকী তাঁর নিজের আত্মীয়স্বজনরাও। তবু আমরা, বুদ্ধিমান জার্মানরা, তাঁকেই আমাদের দেশের প্রধান হিসেবে নির্বাচন করলাম!

কেন করলাম?

কেন আমরা বুঝলাম না যে তিনি আমাদের সাময়িক মানসিক চাপটাকে হাতিয়ার করে, দেশের বর্তমান টালমাটাল অবস্থার সুযোগ নিয়ে আমাদের সমর্থন আদায় করে নিলেন?

আসুন দেখে নিই আমাদের এহেন দুর্বুদ্ধির কারণ। জার্মানির অর্থনীতি এমনিতেই বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রচুর খরচের পর বিধ্বস্ত, তার ওপর বিশ্বযুদ্ধে হারার সব দায় জার্মানির ওপরেই চাপিয়ে ভার্সাই—এর চুক্তি করা হয়েছিল, তাতেও অনেক টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছিল। আপনারা প্রত্যেকেই অবগত আছেন সেই টাকার জোগাড় করতে আমাদের সরকার নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে টাকা ছাপাতে শুরু করে। কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে যে পরিমাণ সোনা রিজার্ভড থাকে, তার সমপরিমাণ টাকাই সেই দেশ ছাপাতে পারে। তার বেশি টাকা ট্যাঁকশাল থেকে ছাপালে সাময়িক হয়তো বাজারে টাকার জোগান বাড়ে, কিন্তু সেই টাকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মজুরি এবং দ্রব্যমূল্যের দামও বাড়তে থাকে। পাল্লা দেওয়ার জন্য সরকার আরও টাকা ছাপাতে শুরু করে এবং সবশেষে টাকার কোনো দামই আর থাকে না। সেটাই ঘটেছিল আমাদের ক্ষেত্রে। এমন সময়ও আমাদের দেখতে হয়েছে যখন লক্ষ লক্ষ রুবলের কাগজের নোট পুড়িয়ে মানুষ চুল্লি গরম করেছে, বাচ্চারা দলা পাকানো নোট নিয়ে খেলছে কিংবা বস্তা করে রাস্তায় লক্ষ লক্ষ টাকা ফেলে গেছে, এদিকে খাবারের দোকানের সামনে একটুকরো রুটির জন্য প্রচুর টাকা পকেটে নিয়েও মানুষ খাবার কিনতে পারেনি। অস্বীকার করে লাভ নেই, এই হাইপার ইনফ্লেশন নিয়ন্ত্রণ করতে তৎকালীন সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছিলেন।

তার ওপর বছর চারেক আগের বিশ্বব্যাপী সেই গ্রেট ডিপ্রেশন তো সকলেরই মনে আছে। স্টক মার্কেটে সেই ধসের ফলে সারা বিশ্বেই মারাত্মক মন্দা দেখা দিয়েছিল। আর তাতেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতি জার্মানিরই হয়েছে, কারণ জার্মানির ইকনমি বিদেশি মূলধন, অর্থাৎ প্রধানত আমেরিকার থেকে নেওয়া লোন আর বৈদেশিক বাণিজ্যের ওপরেই দাঁড়িয়ে আছে। তার ওপর ফ্রান্স যখন আমাদের রাঢ় অঞ্চল আক্রমণ করল, তখন পরিস্থিতি একেবারেই আয়ত্তের বাইরে চলে গেল। আমাদের কারখানাগুলোর উৎপাদন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেল, ফলে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক ছাঁটাই হতে শুরু করল, ব্যাঙ্কগুলো অবধি ফেল করতে লাগল, আর ইনফ্লেশন অর্থাৎ মূল্যবৃদ্ধি যে কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে সেটা তো সর্বজনবিদিত। আগের চ্যান্সেলর মি ব্রুয়েনিং কোথায় এই সাংঘাতিক অবস্থার মোকাবিলা করবেন, তা নয়, প্রেসিডেন্ট হিন্ডেনবার্গের সঙ্গে শলাপরামর্শ করে তিনি দুম করে আটচল্লিশ নম্বর ধারা জারি করে দিলেন, অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট’স রুল। বিরোধীদের প্রবল বিরোধিতায় মন্ত্রিসভা রেইচস্ট্যাগে কাজকর্ম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হল। ফলস্বরূপ এই নতুন ইলেকশন।

এই পরিস্থিতিতে জার্মানির মানুষরা একজন বিকল্প খুঁজছিল। যেকোনো বিকল্প। আমরা এই রাজনৈতিক টানাপোড়েনে নিজেরা শেষ হয়ে বিধ্বস্ত, ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। তাই হিটলারের জায়গায় একটা কুকুরও দায়িত্ব নিতে চাইলে আমরা বারণ করতাম না। আর তাই নির্বাচনের এই সাংঘাতিক ফলাফল। আমরা বিশ্বযুদ্ধ, মূল্যবৃদ্ধি, মন্দা, একে একে ধাক্কায় ভেতরে ভেতরে শেষ হয়ে গেছি, হারিয়েছি বহু প্রিয় আপনজনকে, তাই হয়তো আমাদের শুভ বুদ্ধিও বিনষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই সমস্ত জার্মানির মানুষের প্রতি আমার তরফ থেকে রইল গভীর সমবেদনা।’

পড়তে পড়তে ফ্রেডরিক আগুনের এতটাই কাছাকাছি চলে গিয়েছিল যে অন্যমনস্কতায় ওর আঙুলে ছ্যাঁকা লেগে গেল, ঠান্ডা একটা স্রোত চলে গেল ওর পিঠের মাঝখান দিয়ে।

ফ্রিৎজ স্যারকে ও খুব শ্রদ্ধা করে, ভালোবাসে তাঁর ওই অনমনীয় ভঙ্গিকে। কিন্তু তিনি একইরকমভাবে প্রকাশ্যে হিটলারকে কুকুর বলেছেন? এর ফল কি শুধু দলের লোকেদের ওই ডিম আর পাথর ছোঁড়াতেই সীমাবদ্ধ থাকবে?

নাকি আরও বড়ো কোনো শাস্তি পেতে হবে ওঁকে!

এই ঠান্ডাতেও নিজের অজান্তেই ফ্রেডরিক শিউরে উঠল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *