৩১
মি. স্নেইডার, জিমি, প্রিয়ম সবাই অবাক চোখে শুনছিল রুদ্রর কথা। পুরো ঘরটায় বিরাজ করছে এক আশ্চর্য নিস্তব্ধতা, যেন পিন পড়লেও শোনা যাবে।
স্নেইডারই নীরবতা ভাঙলেন, একটু যেন কিন্তু কিন্তু করে উঠলেন, ‘হিটলার তো মর্স কোড, এনিগমা মেশিন এইসব ব্যবহার করত ক্রিপটোগ্রাফির জন্য।’
রুদ্র এবার একপাশে রাখা জলের গ্লাসটা নিয়ে নির্দ্বিধায় চুমুক দিল, যে যা ভাবে ভাবুক, তার বেজায় তেষ্টা পেয়েছে। ‘সে তো অনেক পরে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। এটা খুব সম্ভবত হিটলার ক্ষমতায় আসার পরে পরেই লেখা, তখনও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কোডিংই জনপ্রিয় ছিল, ওইসব মেশিন—টেশিন বেরোয়নি।
স্নেইডার ওর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন দেখে ও আবার বলল, ‘এই ডিসাইফার করার সময়ই আমি লোকটাকে একটু আভাস দিয়ে ফেলেছিলাম যে কোন রাস্তায় এগোচ্ছি। তখনও পুরোটা বের করতে পারিনি কারণ পিগপেন সাইফার অনুযায়ী এগোলে যেসব ওয়ার্ডগুলো পাচ্ছিলাম সেগুলোর কোনো অর্থ ছিল না, না ইংরেজিতে, না ফ্রেঞ্চে। পরে অবশ্য বুঝলাম ওটা জার্মান ভাষায় লেখা। জার্মান ভাষায় ইংরেজির হরফগুলোই ব্যবহার করা হয়, কিন্তু শব্দ আলাদা। এদিকে ছবিগুলো পাওয়ার জন্য ওই লোকটা মরিয়া হয়ে উঠল। ওকে নিয়ে আমার মনের মধ্যে যে খটকাগুলো তৈরি হচ্ছিল সেগুলোর জন্যই ছবিগুলো আমি ওকে দেব না ঠিক করলাম। ওর চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য এয়ারপোর্ট না গিয়ে ট্রেনে করে বার্লিন আসছিলাম, কিন্তু আমার হাজব্যান্ডের একটু ভুলের জন্য ফোনের লোকেশন থেকে ও ট্র্যাক করে ফেলে আমাদের। তারপর আজ সকালে আমাদের ক্যুপ থেকে ছবিগুলো চুরি হয়ে যায়।’
মি স্নেইডার এবার চোখ কপালে তুলে বললেন, ‘ওটা চুরি হয়ে গেছে? আবার?’
রুদ্র সায় দিল, ‘হ্যাঁ। সেটাই সবচেয়ে ভয়ের। আচ্ছা, এবার আসল কথায় আসি। একটা জিনিস লক্ষ করেছেন? সারা ইউরোপে ব্লাস্ট হচ্ছে, আর তাতে টার্গেট করা হচ্ছে রিফিউজিদের? আর এটা শুরু হয়েছে গত মাস থেকে। বেছে বেছে রিফিউজিদের থাকার জায়গায় ব্লাস্ট করা হচ্ছে। আপাতদৃষ্টিতে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে হলেও একটু ভাবলেই দেখা যাবে এটা একটা গ্যাঙেরই কাজ, যারা চায় না এই ইমিগ্র্যান্টরা ইউরোপে থাকুক। যারা চায় না এই রিফিউজিরা এসে তাদের সবকিছুতে ভাগ বসিয়ে প্রতিযোগিতা বাড়াক।’
‘কিন্তু এই ব্লাস্টগুলোর সঙ্গে ওই লোকটার কী সম্পর্ক?’ বলল জিমি।
রুদ্র মাথা নাড়ল, ‘ইসুটা এতটাই সম্পর্কহীন আমারও প্রথম মাথাতে আসেনি এইরকম কিছু হতে পারে। কিন্তু যখন পুরোটা বুঝতে পারলাম, আর একটুও সময় নষ্ট না করে বার্লিন স্টেশনে নেমেই পুলিশের কাছে গেলাম।’
প্রিয়ম বলল, ‘কিন্তু ও তো চেয়েছিল ক্যান্সারের প্রতিষেধক বের করতে!’
জিমি আর প্রিয়মের দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে রুদ্র একটা বড়ো নিশ্বাস নিল, ‘ক্যান্সার না ছাই। সব গল্প। ও আমাকে একটু বেশি বোকা ভেবে ফেলেছিল। ক্যান্সারের সেন্টিমেন্টাল সুড়সুড়ি দিয়ে ভেবেছিল যদি এই কোডটা বের করা যায়। এই পুরো ব্যাপারটার একটা অন্য দিক আছে। সবচেয়ে মারাত্মক এবং ভয়ংকর দিক। প্রায় একশো বছর আগের একটা রক্তাক্ত ইতিহাস। ফ্র্যান্সিস গ্যালটনের নাম শুনেছেন কেউ?’
মি স্নেইডার মাথা নাড়লেন দু—পাশে। কেউই শোনেনি এখানে।
রুদ্র বলতে লাগল, ‘উনিশ শতকের শেষের দিকে এক অসাধারণ প্রতিভাবান ব্রিটিশ সায়েটিস্ট। বিজ্ঞানের লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি বললেও যাকে বেশি বলা হবে না। সম্পর্কে ছিলেন চার্লস ডারউইনের এক তুতো ভাই। একটা প্রবাদ আছে না, অসম্ভব প্রতিভাবান আর পাগলের মধ্যে খুব সূক্ষ্ম একটা ডিফারেন্স থাকে, এটা বোধ হয় ওঁর ক্ষেত্রেই খাটে। অঙ্ক, স্ট্যাটিস্টিক্স, নৃতত্ত্ব, সমাজতত্ত্ব, বায়োলজি, মেডিক্যাল সায়েন্স, ফরেন্সিক স্টাডিজ, কোন দিকে না কন্ট্রিবিউট করেননি তিনি! কতরকম বিষয়ের উপর যে ভদ্রলোকের সাড়ে তিনশোর ওপর রিসার্চ পেপার ছিল দেখলে স্তম্ভিত হয়ে যেতে হয়। তাঁকেই ইউজেনিক্সের জনক বলা হয়।’
প্রিয়ম এবার বাধা দিল, ‘গাড়িতেও তুমি এই টার্মটা বলেছিলে। ইউজেনিক্স মানে কী?’
রুদ্র বলল, ‘ইউজেনিক্স একটা জেনেটিক গবেষণা যাতে কোনো জাতিকে ইম্প্রুভ করার জন্য তার জিন উন্নত করার পেছনেই মুখ্য নজর দেওয়া হয়। এই টার্মটা ওই ড শ্যুমাখারের নাম ভাঁড়ানো লোকটা আমার সামনে অসতর্ক অবস্থায় একবার বলে ফেলেছিল। তারপর আমি সেটা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে জানতে পারি, একদম প্রাচীন যুগে গ্রিসে কোনো কোনো জায়গায় অসুস্থ মানুষদের বাঁচিয়েই রাখা হত না, তাদের থেকে আরও কিছু অসুস্থ প্রজন্ম জন্ম নিতে পারে, এই আশঙ্কায়। হিটলার যখন জার্মানির প্রধান হয়েছিলেন তখন তিনি ওই ফিলোজফিটাই ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করতে চেয়েছিলেন জার্মানিতে। নাতসি ইউজেনিক্স নামে ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছে সেটা। হিটলার চেয়েছিলেন পৃথিবী থেকে অন্য সমস্ত জাতিকে সরিয়ে দিতে, বিশেষত ইহুদিদের, এটা আমরা সবাই জানি। লক্ষ লক্ষ ইহুদিকে মারার জন্য তাঁর কনসেনট্রেশন ক্যাম্প, এক্স—টারমিনেশন ক্যাম্প, লেথাল গ্যাস দিয়ে মাস মার্ডার, সবই কুখ্যাত হয়ে আছে ইতিহাসে। এমনকী, তিনি যে অসুস্থ বা ক্রিমিনাল, যাদের দেশকে কিছু দেওয়ার ক্ষমতা নেই, তাদেরও মেরে ফেলেছিলেন সেটাও জেনেছি আমরা। অ্যাকশন টি—ফোর সেই প্রোজেক্টটার নাম।’
জিমি মাথা নাড়ল, ‘হ্যাঁ, অ্যাকশন টি—ফোর,। জানি এটা।’
রুদ্র বলল, ‘কিন্তু যেটা আমরা জানি না সেটা হল, উনি চেয়েছিলেন যারা খাঁটি জার্মান, তাদের জিনটাকে সবদিক থেকে উন্নত করতে, তাদের উবেরমেঞ্চ অর্থাৎ জার্মান ভাষায় সুপারম্যানে পরিণত করতে। আর কোনোভাবে ওইসময়েই তাঁর হাতে এসে পড়ে ফ্র্যান্সিস গ্যালটনের এই মৌল তৈরির ফর্মুলা।’
মি স্নেইডার অবাক বিস্ময়ে শুনছিলেন, ‘মৌল?’
রুদ্র মাথা নাড়ল, ‘হ্যাঁ। ফ্র্যান্সিস গ্যালটনই প্রথম, যিনি ইউজেনিক্স নিয়ে এতটা কাজ করেছিলেন। উনি এমন কোনো একটা মৌল আবিষ্কার করেন যেটা মানবদেহের জিনগুলোকে মডিফাই করে সুপারজিনে পরিণত করার ক্ষমতা রাখে। মানে ধরুন প্রতিটা মানুষই অসাধারণ সুন্দর হবে, দুর্দান্ত শক্তিশালী হবে, সমস্ত গুণে পারদর্শী হবে। আর কোনোভাবে সেটা হিটলারের হাতে এসে পড়ে।’
প্রিয়ম অস্ফুটে বলল, ‘ডিজাইনার বেবি!’
রুদ্র এবার ওর দিকে তাকাল, ‘অনেকটা তাই। তবে এখনকার জেনেটিক সায়েন্সে ডিজাইনার বেবির মানে বোঝায় কোনো বাচ্চার শরীরে যে ডিফেক্টিভ জিনের জন্য হেরিডিটারি রোগগুলো বাসা বাঁধার সম্ভাবনা আছে, সেই জিনগুলোকে মডিফাই করা। এখন প্রচুর বিত্তশালী মানুষজন এইদিকে ঝুঁকছেন, তবে তা নিয়ে খুব বিতর্ক চলছে সারা পৃথিবীতে। কিন্তু এটা তার চেয়েও অনেক বেশি ভয়ানক। কোনো জিনগত অসুখ হবে না তাদের, কোনো দূর্বলতা থাকবে না, সব কিছুতেই তারা হবে শ্রেষ্ঠ! বুঝতে পারছ তার সাইড এফেক্ট কী হবে? পুরো পৃথিবীটা দু—ভাগে ভাগ হয়ে যাবে, এই কাস্টমাইজড ওয়েতে বানানো মানুষেরা পায়ের তলায় রাখবে ন্যাচারাল মানুষদের।’
মি স্নেইডার বলেন, ‘তার মানে ওই গ্যালটনই এইরকম সাংকেতিক অক্ষরে লিখে গেছিলেন পুরো জিনিসটা?’
রুদ্র সঙ্গে সঙ্গে মাথা নাড়ল, ‘না, আমার তা মনে হয় না। কারণ গ্যালটন নিজে এটা লিখে গেলে হেইল হিটলার লেখাটা থাকত না, আর এই ক্রিপটোগ্রাফির প্যাটার্নটা নাতসি যুগের প্রথমদিকে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ছিল। তা ছাড়া গ্যালটন মারাও যান হিটলার ক্ষমতায় আসার প্রায় বছর কুড়ি আগে। সুতরাং হিটলারের হয়ে ওঁর কাজ করারও কোনো সুযোগ নেই।’
মি স্নেইডার বললেন, ‘তবে?’
রুদ্র কাঁধ ঝাঁকাল, ‘আমি যেটা আন্দাজ করছি, গ্যালটনের ওই ফর্মুলা কোনোভাবে হিটলারের হাতে এসে পড়ে এবং সেটাকে গোপন রাখতে তিনি এইরকম এনক্রিপ্ট করে রাখেন। কিন্তু যেকোনোভাবেই হোক, সেটা খোয়া যায়, আর এতদিন বাদে সেটা উদ্ধার হয় ভাটনাজুকল হিমবাহের সেই এক্সপ্লোরেশন হাট থেকে।’
মি স্নেইডার অধৈর্য হয়ে উঠছিলেন। ক্যাসপার ফটোগ্রাফির এই চুরির কিনারাটা ইম্পর্ট্যyন্ট ঠিকই, কিন্তু তার চেয়েও হাজার গুণ জরুরি ইউরোপের এই সিরিয়াল টেররিজমটা। এতগুলো ঘটনা ঘটল, কোনো সন্ত্রাসবাদী দলই দায় স্বীকার করল না, যেখানে নিজেদের সাহস দেখানোর জন্য আমরা করেছি বলার হিড়িক পড়ে যায় তাদের মধ্যে।
ওদিকে জিমি ঝড়ের গতিতে মনে মনে হিসেব করল, কাল ইউনাইটেড নেশনসের ওই টিম বার্লিন ঢুকছে, সেখানে আবার এই এক কথা উঠবে, স্যার কোনো সন্তাোষজনক উত্তরই দিতে পারবেন না।
একটু অস্থিরভাবে ও ঝুঁকে পড়ল রুদ্রর দিকে, ‘এর সঙ্গে ব্লাস্টগুলোর কী সম্পর্ক?’
রুদ্র বলল, ‘ওই লোকটা যেদিন আমাদের সঙ্গে লন্ডনে প্রথম দেখা করেছিল, সেদিনই একবারের জন্য প্রকাশ করে ফেলেছিল, ইউরোপে এত রিফিউজিদের ভিড় হচ্ছে, সেজন্য কোনো সরকারই নাকি নিজেদের নাগরিকদের সুযোগ সুবিধার দিকে কোনোরকম নজর দিচ্ছে না। তারপর আমি কাল একটা জিনিস লক্ষ করি। এই ব্লাস্টগুলো একটা সিরিয়াল অর্ডারে ঘটছে, প্রথম ব্লাস্ট হয়েছিল ইসলিংটনে, আগের মাসের দু—তারিখে। তারপর গ্রিসের কাভালায় এগারো তারিখ, নেক্সট প্যারিস, কুড়ি তারিখ, তারপর কিংস্টন এই মাসের দু—তারিখ, তারপর কোলন এই মাসের এগারো তারিখ। অর্থাৎ দুই, এগারো, কুড়ি, আবার দুই, এগারো।’
মি স্নেইডার নির্নিমেষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন রুদ্রর দিকে।
রুদ্র বলে চলল, ”দুই” তারিখটা ছাড়াও বাকি প্রতিটা নম্বরের যোগফল দুই। এগারোর এক আর এক যোগ করলে দুই হয়, কুড়িরও দুই আর শূন্য যোগ করলে হয় দুই। আর,’ ও ছোটো একটা নিশ্বাস ফেলল, ‘যেকোনো ইতিহাসের বই ঘাটলে দেখতে পাবেন হিটলারের প্রিয় নম্বর ছিল দুই। তিনি নিজেও লিখে গেছেন, আর প্রতিটা কাজেও তিনি ওই নম্বরটাকেই গুরত্ব দিতেন সবচেয়ে বেশি। তার মানে, এই মাসের এগারো তারিখের পর যে তারিখটায় আবার দুই যোগফল পাওয়া যেতে পারে, সেটা হল কুড়ি তারিখ। আর সেটা হল আগামীকাল।’
এতক্ষণ বাদে জিম এই প্রথম মুখ খুলল, ‘মানে, কাল আবার ব্লাস্ট হবে?’
রুদ্র বলল, ‘আমি হান্ড্রেড পারসেন্ট শিয়োর। আর আমার ইনটিউশন বলছে এটা ছোটোখাটো লেভেলের কিছু হবে না, হবে সাংঘাতিক কিছু।’
জিমি বলল, ‘তাহলে?’
রুদ্র বলল, ‘যেকোনোভাবেই হোক সেটা আটকাতে হবে। ওই লোকটা বা তার দল চায়, ইউরোপে শুধু ইউরোপিয়ানরাই থাকুক, তাই তারা প্রাথমিকভাবে সমস্ত রিফিউজিদের মেরে ফেলতে চাইছে, এই হত্যালীলা শেষ হলে তারা হাত দেবে ইউজেনিক্স অ্যাপ্লাই করার কাজে।’
জিমি এবার উদ্ভ্রান্তের মতো স্নেইডারের দিকে তাকাল, ‘স্যার, আমাদের উচিত এমারজেন্সি বেসিসে সব রিফিউজি ক্যাম্পগুলো সিকিয়োর করা।’
রুদ্র হঠাৎ প্রশ্ন করল, ‘আচ্ছা, টেম্পলহফ এয়ারপোর্টটা কোথায়?’
মি স্নেইডার বললেন, ‘বার্লিনের একটা এয়ারপোর্ট ছিল হিটলারের জমানায়। এখন আর নেই।’
রুদ্র চোখ সরু করে বলল, ‘ওখানে কি এখন কোনো রিফিউজিদের ক্যাম্প বানানো হয়েছে?’
ফেলিক্স কখন ঘরে ঢুকেছে কেউ খেয়াল করেনি, ওর উত্তরে সবাই তাকাল, ‘হ্যাঁ, হয়েছে তো! জার্মানির, না শুধু জার্মানির নয়, সারা ইউরোপের সবচেয়ে বড়ো ইমিগ্র্যান্টদের শেল্টার বানানো হয়েছে সেখানে। প্রায় পাঁচ হাজার রিফিউজি রয়েছে ওখানে।’
রুদ্র এবার উত্তেজনায় চেচিয়ে উঠল, ‘আর দেরি করবেন না। আগে ওই জায়গাটা নিশ্চিত করুন। আপনারা শিগগিরই প্রপার অ্যাকশন নিন!’
মি স্নেইডার উদ্ভ্রান্তের মতো তাকালেন ফেলিক্সের দিকে। টেনশনে তাঁর হাতের আংটিটা একবার খুলছিলেন, পরক্ষণেই পরছিলেন তিনি। রুদ্রকে বললেন, ‘আচ্ছা, ওরা কি ওই মৌলটাও তৈরি করে ফেলতে পারবে?’
রুদ্র এবার মাথা নাড়ল, ‘না, সেটা একটু চাপ। কারণ আমি শুধু পিগপেন সাইফার টেকনিকটার ইঙ্গিত দিয়েছিলাম লোকটাকে, পুরোটা বলিনি। কিন্তু তবু, যেহেতু ছবিগুলো এখন ওদের জিম্মায়, সাবধানের মার নেই। যেভাবেই হোক সেগুলোকে উদ্ধার করতে হবে, আর তার সঙ্গে কালকের মধ্যে টেম্পলহফকে পুরো নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলতে হবে।’
জিমি সঙ্গেসঙ্গে বলল, ‘কিন্তু ব্লাস্ট যদি অন্য কোথাও হয়?’
রুদ্র বলল, ‘হতেই পারে। বাকি ক্যাম্পগুলোতেও প্রোটেকশন দিন। কিন্তু যেহেতু এটা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রিফিউজির শেলটার, তাই সেটার দিকে বেশি নজর রাখাই ভালো।’