রোদনভরা এ বসন্ত

সে যে পাশে এসে বসেছিল

আমার এ পথ তোমার পথের থেকে

কে উঠে ডাকি মম বক্ষোনীড়ে থাকি

এ তো খেলা নয় খেলা নয়

আমার অঙ্গে অঙ্গে কে বাজায় বাঁশি

তুমি মোর পাও নাই পরিচয়

তুমি কোন্‌ কাননের ফুল

আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল

আমার যেতে সরে না মন

আয় রে মোরা ফসল কাটি

ওগো কিশোর আজি তোমার দ্বারে

ধূসর জীবনের গোধূলিতে ক্লান্ত আলোয় ম্লানস্মৃতি

এসো এসো ফিরে এসো

কোন্‌ গহন অরণ্যে তারে এলেম হারায়ে

একলা ব’সে একে একে অন্যমনে

ওগো কে যায় বাঁশরি বাজায়ে

দিবস রজনী আমি যেন কার আশায় আশায় থাকি

কোন্‌ দেবতা সে

এবার সখী সোনার মৃগ

আয় তবে সহচরী হাতে হাতে ধরি ধরি

ওকে বল্‌ সখী বল্

দুইটি হৃদয়ে একটি আসন

অগ্নিশিখা এসো এসো আনো আনো আলো

জয় ক’রে তবু ভয় কেন তোর যায় না

কে বলে ‘যাও যাও’

সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে

যে ছিল আমার স্বপনচারিণী

কাঁদালে তুমি মোরে ভালোবাসারই ঘায়ে

কেন আমায় পাগল করে যায়

সেই ভালো সেই ভালো আমারে নাহয় না জানো

হায় হতভাগিনী স্রোতে বৃথা গেল ভেসে

আমার মনের কোণের বাইরে

যদি হল যাবার ক্ষণ

কাছে যবে ছিল পাশে হল না যাওয়া

কোন্‌ সে ঝড়ের ভুল ঝরিয়ে দিল ফুল

আমি নিশিদিন তোমায় ভালোবাসি

মুখপানে চেয়ে দেখি ভয় হয় মনে

ক্লান্ত বাঁশির শেষ রাগিণী বাজে শেষের রাতে

আমার প্রাণের ‘পরে চলে গেল কে

ছি ছি মরি লাজে মরি লাজে

সখী ওই বুঝি বাঁশি বাজে

স্বপনে দোঁহে ছিনু কী মোহে জাগার বেলা হল

কখন দিলে পরায়ে স্বপনে বরণমালা

মনে রয়ে গেল মনের কথা

শুভ মিলনলগনে বাজুক বাঁশি

ওরে কী শুনেছিস ঘুমের ঘোরে

মিলনরাতি পোহালো বাতি নেভার বেলা এল

যাবার বেলা শেষ কথাটি যাও বলে

ওগো আমার চির-অচেনা পরদেশী

আর নহে আর নহে বসন্তবাতাস কেন আর শুষ্ক ফুলে বহে

কার চোখের চাওয়ার হাওয়ায় দোলায় মন

হে ক্ষণিকের অতিথি

জানি তুমি ফিরে আসিবে আবার

কোথা হতে শুনতে যেন পাই

ছিন্ন শিকল পায়ে নিয়ে ওরে পাখি

অনেক কথা যাও যে ব’লে কোনো কথা না বলি

হায় অতিথি এখনি কি হল তোমার যাবার বেলা

না রে না রে ভয় করব না বিদায়বেদনারে

পান্থপাখির রিক্ত কুলায় বনের গোপন ডালে