৩৮. শুক্লযজুর্বেদ – অষ্টত্রিংশ অধ্যায়

অষ্টত্রিংশ অধ্যায়

মন্ত্রঃ– দেবস্য ত্বা সবিতুঃ প্রসবেংশ্বিনোর্বাহুভ্যাঃ পূষ্ণো হস্তাভ্যাম। আ দদেহদিত্য রাস্নহসি৷৷৷৷ ইড় এহদিত এহি সরস্বত্যেহি। অসাবেহসাবেহসাবেহি৷৷২৷৷ অদিত্যৈ রাস্নাহসীন্দ্রাণ্যা উষ্ণীষঃ। পূষাহসি ঘর্মায় দী৷৷৩৷ অশ্বিভ্যাং পিন্বস্ব সরস্বত্যৈ পিন্বম্বোয় পিম্বস্ব। স্বাহেন্দ্ৰবৎ স্বাহেন্দ্ৰবৎ স্বাহেন্দ্ৰবৎ ॥৪॥ যস্তে স্তনঃ শশয়ো যো ময়োভূর্যো রত্নধা বসুবিদ্যঃ সুদত্রঃ। যেন বিশ্বা পুষ্যসি বার্যাণি সরস্বতি তমিব ধাতবের্কঃ উর্বন্তরিক্ষমন্বেমি।।৫৷৷ গায়ত্রং ছন্দোহসি ত্রৈষ্টুভং ছন্দোহসি দ্যাবাপৃথীভ্যাং ত্বা পরি গৃহ্নামন্তরিক্ষেণোপ যচ্ছামি৷৷ ইন্দ্রাশ্বিনা মধুনঃ সারঘস্য ঘর্মং পাত বসবো যজত বাট। স্বাহা সূর্যস্য রশ্ময়ে বৃষ্টিবনয়ে৷৬৷ সমুদ্ৰায় ত্ব বাতায় স্বাহা। সরিয়ায় ত্বা বাতায় স্বাহা। অনাধৃষ্যায় ত্বা বাতায় স্বাহা হপ্রতিধৃষ্যায় জ্বা বাতায় স্বাহা। অবস্যবে ত্বা বাতায় স্বাহা হশিমিদায় ত্বা বাতায় স্বাহা৷৭৷ ইন্দ্রায় ত্ব বসুমতে রুদ্রবতে স্বাহেন্দ্ৰায় ত্বাহদিত্যবতে স্বাহেন্দ্ৰায় ত্বাইভিমাতিয়ে স্বাহা। সবিত্রে ত্ব ঋভুমতে বি ভুমতে বাজতে স্বাহা বৃহস্পতয়ে ত্বা বিশ্বদেব্যাবতে স্বাহা।।৮। যমায় ব্যাহঙ্গিরস্বতে পিতৃমতে স্বাহা। স্বাহা ঘর্মায় স্বাহা ঘর্মঃ পিত্রে৷৷৷৷ বিশ্বা আশা দক্ষিণসদ্বিশ্বান্ দেবনয়াডিহ। স্বাহাকৃতস্য ঘর্মস্য মধধাঃ পিবতমশিনা।১০৷ দিবি ধা ইমং যজ্ঞমিমং যজ্ঞং দিবি ধাঃ। স্বাহাইগ্নয়ে যজ্ঞিয়ায় শং যজুর্ভঃ১১৷ অশ্বিনা ঘর্মাং পাতং হার্ঘানমহর্দিাভিরাতিভিঃ। তন্ত্রায়িণে নমো দ্যাবাপৃথিবী ভ্যাম্৷৷১২৷৷ অপাতামশ্বিনা ঘর্মমনু দ্যাবাপৃথিবী অমংসাতা। ইহৈব রাতয়ঃ সন্তু৷৷১৩৷৷ ইষে পিন্বম্বোর্জে পিন্বস্ব ব্ৰহ্মণে পিন্বস্ব ক্ষত্রায় বিশ্বস্ব দ্যাবাপৃথিবীভ্যাং বিশ্বস্ব। ধর্মাসি সুধর্মাই মেন্যষ্মে নৃস্নানি ধারয় ব্রহ্ম ধারয় ক্ষত্রং ধারয় বিশং ধারয়।১৪৷ স্বাহা পূষ্ণে শরসে স্বাহা গ্রাবভ্যঃ স্বাহা প্রতিরবেভ্য। স্বাহা পিতৃভ্য উর্ববহির্ভো ঘর্মপাবভ্যঃ স্বাহা দ্যাবাপৃথিবীভ্যাং স্বাহা বিশ্বেভ্যো দেবেভ্যঃ।।১৫৷৷ স্বাহা রুদ্রায় রুদ্ৰহুতয়ে স্বাহা সং জ্যোতি জ্যোতিঃ। অহঃ কেতুন জুতাং সুজ্যোতি জ্যোতিষা স্বাহা, রাত্রিঃ কেতুন জুতাং সুজ্যোতির্জ্যোতিষা স্বাহা। মধু হুতমিতমে অগ্নাবশ্যাম তে দেব ঘর্ম নমস্তে অস্তু মা মা হিংসীঃ৷১৬৷ অভীমং মহিমা দিবং বিপো বভূব সপ্রথাঃ। উত শ্ৰবসা পৃথিবীং সং সীদস্ব মহা অসি রোচস্ব দেববীতমঃ। বি ধূমমগ্নে অরুষং মিযেধ্য সৃজ প্রশস্ত দৰ্শত৷৷১৭৷ যা তে ঘর্ম দিব্যা শুগ্যা গায়ত্র্যাং হবির্ধানে। সা ত আপ্যায়ং নিষ্টয়তাং তস্যৈ তে স্বাহা। যা তে ঘমন্তরিক্ষে শুগা ত্রিষ্টুভ্যাগ্নীদ্রে। সাত আ প্যায়তাং নিষ্ট্যায়ং তস্যৈ তে স্বাহা। যা তে ঘর্ম পৃথিব্যাং শুণ্যা জগত্যাং সদস্যা। সা ত আ প্যায়তাং নিষ্টায়তাং তস্যৈ তে স্বাহা।।১৮। ক্ষত্রস্য ত্বা পরম্পায় ব্রহ্মস্তম্বং পাহি। বিশা ধর্মণ বয়মনু ক্ৰামাম সুবিতায় নবসে৷৷১৯৷৷ চতুঃক্তিনাভিঋতস্য সপ্রথাঃ স নো বিশ্বায়ুঃ সপ্রথাঃ স নঃ সৰ্বায়ুঃ সপ্রথাঃ। অপ দ্বেষো অপ হুরোহন্যব্রতস্য। সশ্চিম।।২০। ঘর্মৈতত্তে পুরীষং তেন বর্ধর্ষ চা চ প্যায়স্ব। বর্ধিষীমহি চ বয়মা চ প্যসিষীমহি৷৷২১৷ অচিক্রদৃষা হরির্মহান্মিত্রো ন দৰ্শতঃ। সং সূর্যেণ দিদ্যুতদুদধিনিধিঃ।।২২। সুমিত্রিয়া ন আপ ওষধয়ঃ সন্তু দুর্মিত্রিয়াস্তস্মৈ সন্তু। যোহম্মান্দেষ্টি যং চ বয়ং দ্বিষ্মঃ ॥২৩৷ উদ্বয়ং তমসম্পরি স্বঃ পশ্যন্ত উত্তর দেবং। দেবত্রা সূর্যমগন্ম জ্যোতিরুত্তমম্৷৷২৪৷৷ এধ্যেহস্যেধিষীমহি সমিদসি তেজোহসি তেজো ময়ি ধেহি৷৷২৫৷৷ যাবতী দ্যাবাপৃথিবী যাবচ্চ সপ্ত সিন্ধবো বিতস্থিরে। তাবন্তমিন্দ্র তে গ্রহমূর্জা গৃগ্নাম্যক্ষিতং ময়ি গৃহাম্যক্ষিত৷৷২৬ময়ি ত্যদিন্দ্ৰিয়ং বৃহ মহি দক্ষো ময়ি ক্রতুঃ। ঘর্মস্ত্রিশুথি রাজতি রিরাজা জ্যোতিষা সহ ব্ৰহ্মণা তেজসা সহ৷৷২৭৷ পয়সো রেত আভৃতং তস্য দোহমশীমহু্যত্তরামুত্তরাং সমা। ত্বিষঃ সংবৃক ক্ৰত্বে দক্ষস্য তে সুষুম্নস্যতে সুষুম্নগ্নিহুতঃ। ইন্দ্রপীতস্য প্রজাপতিভক্ষিতস্য মধুমত উপহূত উপহূতস্য ভক্ষয়ামি৷৷২৮৷৷

[কাণ্ড-২৮ ও মন্ত্র-৭৫]

.

মন্ত্ৰার্থঃ— ১। (গাভীকে রজ্জবদ্ধ করণীয়)–হে রঞ্জু! সবিতাদেবের অনুজ্ঞায় বর্তমান আমি অশ্বিন্দ্বয়ের বাহুসমূহ এবং পুষাদেবের হস্তদ্বয়ের দ্বারা তোমাকে গ্রহণ করছি। তুমি অদিতির মেঘলাস্বরূপ।

২। হে ইড়া (বা মানবী)! আগতা হও। হে অদিতি! আগতা হও। হে সরস্বতী! আগতা হও। হে ধবলী (গাভীর নামের পরিবর্ত)! আগমন করে। (তিনবার নাম সহ আহ্বান করণীয়)।

৩। হে রঞ্জু! তুমি অদিতির মেঘলা। তুমি ইন্দ্রাণীর (ইন্দ্ৰপত্নীর) শিরোবেষ্টনী। (গাভীর পশ্চাৎ পাদদ্বয়ে রঙ্কু বন্ধন করণীয়)–হে গোবৎস! তুমি পূষাদেবতা।(বৎসটিকে ছেড়ে দিয়ে)–হে গোবৎস! তুমি কিছু পরিমিত দুগ্ধ ঘর্মদেবতার নিমিত্ত শেষে পরিত্যাগ করো (অর্থাৎ ছেড়ে দাও)।

৪। হে গাভী! তুমি অশ্বীযুগলের নিমিত্ত আপ্যায়িত হও (অর্থাৎ প্লাবিত হও)। সরস্বতীর নিমিত্ত প্লাবিত হও! ইন্দ্রের নিমিত্ত প্লাবিত হও। (গাভীকে দোহন করণীয়) (দোহনকালে ছিটকে পড়া দুগ্ধকে উদ্দেশ্য করে) এই পতিত পয়ঃকণাগুলি ইন্দ্রের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদত্ত হচ্ছে।

৫। হে সরস্বতী! তোমার স্তন সুপ্তসদৃশ হয়ে আছে, যা সুখভাবক, যা রত্ন দানশালী, যা ধনলাভ করানোর সামর্থযুক্ত, যা সুদাতা, যাতে তুমি সকল বরণীয় ধন্য ইত্যাদি পোষিত করে থাকো; হে সরস্বতী তোমার সেই আপন স্তনকে আমাদের পানের নিমিত্ত এই দিকে (অর্থাৎ আমার দিকে) প্রদান করো। আমি বিশাল অন্তরিক্ষকে প্রাপ্ত হতে গমন করছি। (অধ্বর্যুর গার্হপত্যাগ্নির দিকে গমন করণীয়)।

৬। (দুটি পরিশাসকে গ্রহণ করণীয়)–হে প্রথম পরিশাস! তুমি গায়ত্রী ছন্দস্বরূপ। হে দ্বিতীয় পরিশাস! তুমি ত্রিষ্টুপ ছন্দ স্বরূপ। (পরিশাসদ্বয়ে মহাবীরকে ধারণীয়)। হে ঘর্ম! আমি তোমাকে দ্যাবাপৃথিবীর উদ্দেশ্যে গ্রহণ করছি। হে ঘর্ম। আমি তোমাকে অন্তরিক্ষের উদরে ধারণ (স্থাপন) করছি। হে ইন্দ্র! হে অশ্বিনদ্বয়! মধুমুক্ষিকার দ্বারা একত্রীকৃত এই মধু (পয়)-কে তুমি পান করো। হে বসুগণ! বষারের দ্বারা স্বাহাকৃত এই দুগ্ধকে তোমরা সূর্যের বৃষ্টিকারিণী বৃষ্টিবনীরশ্মিসমূহকে প্রদান করো।

৭। (অধ্বর্যুকর্তৃক বায়ুর এই নামগুলি জপনীয়)-সমুদ্র রূপ বায়ুর নিমিত্ত, হে ঘর্ম! তুমি স্বাহা হও; (অর্থাৎ বায়ুর উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে তোমাকে আহুতি প্রদান করছি)। সহগতি বায়ুর নিমিত্ত, হে ঘর্ম! তুমি স্বাহা হও। অপ্রধর্ষিত বায়ুর নিমিত্ত, হে ঘর্ম! তুমি স্বাহা হও। শত্রুকে প্রতিধর্ষিত করণশালী বায়ুর নিমিত্ত, হে ঘর্ম! তুমি স্বাহা হও। রক্ষক বায়ুর নিমিত্ত, হে ঘর্ম! তুমি স্বাহা হও। অক্লেশদ (ক্লেশ নিবারক) বায়ুর নিমিত্ত, হে ঘর্ম! তোমাকে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি।

৮। বসু ও রুদ্রের সাথে যুক্ত ইন্দ্রের নিমিত্ত, হে ঘর্ম! তোমার উদ্দেশে এই আহুতি প্রদান করছি। শত্রুকে হননশালী ইন্দ্রের নিমিত্ত, হে ঘর্ম! তুমি স্বাহা হও। রিভু-বিভু-বাজবা যুক্ত সবিতার নিমিত্ত, হে ঘর্ম! তুমি স্বাহা হও। বিশ্বদেবগণের সাথে যুক্ত বৃহস্পতির নিমিত্ত, হে ঘর্ম! তোমাকে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি।

৯। অঙ্গিরা এবং পিতৃগণের সাথে যুক্ত যমের নিমিত্ত, হে ঘর্ম! তোমাকে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। ঘর্মের উদ্দেশে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। ঘর্ম পিতৃপুরুষগণের নিমিত্ত আহূত হোক।

১০। সকল দিক্‌ দক্ষিণ দিকে স্থিতিশীল হয়, কারণ অধ্বর্যু দক্ষিণ দিকেই উপবিষ্ট হয়ে সকল দেবকে যজন করেছে। হে অশ্বিনদ্বয়! ঘর্মস্থ মধুর স্বাহাকৃত অংশকে পান করো।

১১। হে মহাবীর! তুমি এই যজ্ঞকে দ্যুলোকে স্থাপিত করো; এই যজ্ঞকে দ্যুলোকে স্থাপিত করো। যজনীয় অগ্নির উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদত্ত হচ্ছে। যজুঃসমূহের সাথে সম্পর্কের দ্বারা আমাদের সুখ লব্ধ হোক।

১২। হে অশ্বিদ্বয়। দিবা-রাত্র আপন রক্ষার দ্বারা তোমরা দুজন এই হৃদয়ের প্রিয় ঘর্মস্থ মধু পান করো। কালচক্রের নির্মাতা (বা কালাচক্রে ধাবিত) আদিত্যের উদ্দেশে নমস্কার করি; দ্যাবাপৃথিবীর অধিষ্ঠাত্রী দেবীদ্বয়ের উদ্দেশে নমস্কার করি।

১৩। হে অশ্বিদ্বয়! ঘর্মস্থ মধুর পয় (রস) পান করো। দ্যাবাপৃথিবী দেবীদ্বয় আমাদের কর্মকে অনুমোদন করুক। ইন্দ্র ইত্যাদির দান আমাদেরই যজ্ঞে প্রাপ্ত হোক।

১৪। হে অতিতপ্ত ঘর্ম! বর্ষার নিমিত্ত তুমি পুষ্ট হও। অন্নের নিমিত্ত তুমি পুষ্ট হও। ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয় এবং দ্যাবাপৃথিবীর নিমিত্ত তুমি পুষ্ট হও। হে ঘর্ম! তুমি জগৎকে ধারণশালী ঘর্ম। তুমি সুঘর্ম। হে ঘর্ম! হিংসিত না করে (অর্থাৎ আমাদের প্রতি ক্ষুব্ধ না হয়ে) তুমি আমাদের মধ্যে ধন ইত্যাদি স্থাপিত করো। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, প্রজাগণকে আমাদের মধ্যে স্থাপিত করো; (অর্থাৎ তাদের আমাদের বশীভূত করে দাও)।

১৫। স্নেহ-উৎপাদক পূষার (বা বায়ুর) নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। গ্রহণকারী প্রাণসমূহের নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। প্রতিরকারী প্রাণসমূহের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। বৰ্হির অগ্রবর্তী ভাগের পাত্র (সোমপায়ী) পিতৃগণের নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। ঘর্মপায়ী পিতৃপুরুষবর্গের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। প্রাণ ও উদানের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি। সকল প্রাণের নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি।

১৬। ঋত্বিকগণের দ্বারা স্তুত রুদ্রের নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। ঘর্মস্থ ঘৃতজ্যোতি উপমনী সুবাস্থ ধৃতজ্যোতির সাথে সঙ্গত হোক। আপন জ্যোতির দ্বারা শুভ জ্যোতিশালী দিবস প্রজ্ঞাপক সূর্যের সাথে সেচন করুক বা প্রীত হোক। স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। আপন জ্যোতিতে জ্যোতিষ্মতী রাত্রি প্রজ্ঞাপক অগ্নির সাথে সপ্রীতা হোক। স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। অত্যন্ত বীর্যমান্ অগ্নিতে মধুর দ্বারা হোম সাধিত হয়েছে। হে ঘর্মদেব! তোমাতে স্থিত ঘৃতকে আমরা ভক্ষণ করছি। (উপমনীতে অবশিষ্ট ঘৃত সকল ঋত্বিক ও যজমান ভক্ষণ করছে)। হে ঘর্ম! তোমাকে নমস্কার করি। তুমি আমার হিংসিত করো না ৷

১৭। হে ঘর্ম! তোমার মেধা ও বিস্তারবতী মহিমা এই দ্যুলোককেও অভিভূত করে দিয়েছে। তুমি আপন যশের দ্বারা পৃথিবীকে অধিষ্ঠিত (বা ব্যাপ্ত) করছ। হে যজনীয়প্রশস্ত অগ্নি! তুমি মহান্। তুমি আপন রক্তাভ ধূমকে বর্ধন করো। দেবগণের অত্যন্ত প্রিয় তুমি প্রকাশমান হও।

১৮। হে ঘর্ম! তোমার যে প্রভা দ্যুলোকে আছে; যা গায়ত্রী ছন্দে আছে এবং যা হবিধান গৃহে আছে, সেই তোমার প্রভা বর্ধিত হোক এবং দৃঢ় হোক। হে ঘর্ম! তোমার সেই প্রভাব উদ্দেশে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। হে ঘর্ম! তোমার জ্যোতি অন্তরিক্ষে আছে; যা ত্রিষ্টুপ ছন্দে আছে এবং যা আগ্নীপ্রগৃহে আছে, সেই তোমার জ্যোতি প্রবৃদ্ধ ও সংহত হোক। তোমার সেই জ্যাতির নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। হে ঘর্ম! তোমার যে জ্যোতি পৃথিবীতে রয়েছে, যা জগতী ছন্দে রয়েছে এবং যা সভাগৃহে (বা যজ্ঞগৃহে) প্রবিষ্ট হয়ে রয়েছে, সেই তোমার জ্যোতি বৃদ্ধিলাভ করুক এবং এবং দৃঢ় হোক। তোমার সেই জ্যোতির উদ্দেশে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। (আগ্নী ঋত্বিকের দ্বারা ধার্যমান তিনটি শলাকার উপর অধ্বর্যু কর্তৃক ধৃতের আহুতি প্রদান করণীয়)।

১৯। হে মহাবীর! ক্ষত্রিয়কে পরম পালনের নিমিত্ত আমরা তোমার অনুগমন করছি। তুমি ব্রাহ্মণের শরীরকে পালন করো। যজ্ঞকে ধর্মপূর্বক ধারণের হেতু আমরা তোমাকে অনুগমিত করছি এবং নবীন কল্যাণের নিমিত্ত আমরা তোমার অনুগমন করছি।

২০। যে মহাবীর চতুর্দিক রূপী কোণ-সম্পন্ন যজ্ঞের নাভি এবং বিস্তারযুক্ত, সে আমাদের সম্পূর্ণ আয়ু প্রদান করুক; সমগ্র জগৎকে আয়ু প্রদান করুক। আমাদের কৌটিল্যকে দূর করুক। আমরা জগদনুগ্রহরূপ ব্রতধারী পরমাত্মার সাথে সঙ্গত হবো।

২১। হে ঘর্ম! এই দুগ্ধ তোমার পূরণকর্তা (অর্থাৎ তোমাকে পূর্ণকারী) তাতে তুমি পূর্ণ হও; পরিবর্ধিত হও। (দুগ্ধের দ্বারা তিনটি মহীবীরঘটকে পূর্ণ করণীয়)। হে মহাবীর! কৃপাপূর্বক আমাদেরও বর্ধন করো এবং আমরা ধনধান্যে সমৃদ্ধ হবো।

২২। অভীষ্টবর্ষক, রসহারী, মহান্ তথা মিত্রের ন্যায় প্রিয় মহাবীর পুনঃ পুনঃ শব্দ করছে। জলাধার এবং ধননিধি মহাবীর সূর্যের সাথে সঙ্গত হয়ে প্রকাশিত হচ্ছে।

২৩। আপঃ (জল) ও ওষধিসমূহ আমাদের নিমিত্ত সুমিত্র-সদৃশ হোক; এবং তাদের নিমিত্ত দুর্মিত্র (বা শত্রু)-সদৃশ হোক, যারা আমাদের দ্বেষ করে এবং আমরা যাদের দ্বেষ করি।

২৪। অন্ধকারের অবসানে শ্রেষ্ঠ পরমাত্মজ্যোতিকে দর্শন করে আমরা পরমোত্তম সূর্য (অর্থাৎ পরমাত্ম)-জ্যোতিকে সম্প্রাপ্ত হয়ে থাকি।

২৫। (যজমান কর্তৃক একটি সমিধা (সমিৎ) আহবনীয়। অগ্নিতে ক্ষেপণীয়)- হে কাষ্ঠ! তুমি সমিৎ হয়ে দীপ্ত হও।(অগ্নিতে ক্ষেপণ)। হে আবহনীয়াগ্নিস্থ সমিধা! তোমার কৃপায় আমরা বর্ধন প্রাপ্ত হবো। তুমি সমিধা;তুমি তেজের কারণস্বরূপ, তুমি আমাতে তেজঃ ধারিত (স্থাপিত) করো।

২৬। (দধিতে পূর্ণ করে ঘর্মকে গ্রহণ করণীয়)–হে ইন্দ্র! এই দ্যাবাপৃথিবী যে পরিমাণ বিস্তারশালিনী এবং এই স্থানে যে পরিমাণ বিস্তারশালী সপ্ত সাগর আছে, সে ই পরিমাণশালী তোমার গ্রহকে (যজ্ঞপাত্রকে) আমি অন্নের সাথে গ্রহণ করছি। হে ইন্দ্র! আমি নিজেতেই সেই গ্রহকে অনুপক্ষীণ গ্রহণ করছি। আমি সেই অক্ষয় পাত্রকে (অনুপক্ষীণ গ্রহকে) গ্রহণ করছি।

২৭। সেই প্রসিদ্ধ মহৎইন্দ্রিয়বল আমাতে প্রতিষ্ঠিত হোক। সঙ্কল্প-সম্পত্তি আমাতে বিরাজমান হোক। সঙ্কল্প আমাতে আশ্রয়ান্বিত হোক। তিন জ্যোতিসম্পন্ন ঘর্ম আমাতে শোভিত হচ্ছে। আদিত্য জ্যোতি, বেদ বা জ্ঞানজ্যোতি, এবং ব্রহ্মজ্যোতির সাথে ঘর্ম আমাতে শোভিত হোক।(ঋত্বি ও যজমান কর্তৃক ঘর্মস্থ দধি ভক্ষণ করণীয়)৷

২৮। দুগ্ধের যে সার দধি এই ঘৰ্মে পূর্ণ হয়েছে, তার প্রপূরণকে আমরা আগামী আগামী বর্ষ পর্যন্ত ভোগ করতে পারব। হে কান্তিস্বরূপ! হে স্বীকর্তা! হে সু সুখপালক ঘর্ম! সু-সুখভূত অগ্নিতে হোমের দ্বারা শেষ, ইন্দ্রের দ্বারা পীত, প্রজাপতির দ্বারা ভক্ষিত, মাধুর্যযুক্ত এবং আহ্বানকৃত তোমার দধির অংশকে আমন্ত্রিত করে আমি ভক্ষণ করছি।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *