৩০. শুক্লযজুর্বেদ – ত্রিংশ অধ্যায়

ত্রিংশ অধ্যায়

মন্ত্রঃ– দেব সবিতঃ প্র সুব যজ্ঞং প্র সব মন্ত্রাৰ্থপতিং ভগায়। দিব্যো গন্ধর্বঃ কেতপূঃ কেতং নঃ পুনাতু বাচস্পতিবাচং নঃ স্বদতু৷৷১৷ তৎসবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি ধিয়ো যো নঃ প্রচোদ্দয়াৎ।।২।। বিশ্বানি দেব সবিতর্দুরিতানি পরা সুব। যদ্ভদ্রং তন্ন আ সুব।৷৩৷৷ বিভক্তারং হবামহে বসোশ্চিত্রস্য রাধসঃ। সবিতারং নৃচক্ষসম্৷৷৷৷ ব্ৰহ্মণে ব্রাহ্মণং ক্ষত্রায় রাজন্যং মরুদ্ভো বৈশ্যং তপসে শূদ্রং তমসে তস্করংনারকায় বীরহণং পাঅনে ক্লীবমাক্রায়ায়া অযোগুংকামায় পুংশ্চ মতিকুষ্টায় মাগধ৷৷৷৷ নৃত্তায় সূতং গীতায় শৈলুষং ধর্মায় সভাচরং নরিষ্ঠায়ৈ ভীমলং নর্মায় রেভং হসায় কারিমানন্দায় স্ত্রীখং প্রমদে কুমারীপুত্রং মেধায়ৈ রথকারং ধৈর্যায় তক্ষাণ৷৷৬৷৷ তপসে কৌলালংমায়ায়ে কর্মারং রূপায় মণিকারং শুভে বপংশরব্যায়া ইমুকারং হেত্যৈ ধনুষ্কারং কর্মণে জ্যাকারং দিষ্টায় রজুসর্জং মৃত্যবে মৃগয়ুমন্তকায় শ্বনিন৷৷৭৷ নদীভ্যঃ পৌঞ্জিষ্ঠমৃক্ষীকাভ্যো নৈষাদং পুরুষব্যাঘ্রায় দুর্মদং গন্ধর্বারোভ্যো ব্রাত্যং প্রযুভ্য উন্মত্তং সর্পদেবজনেভ্যোহপ্রতিপদময়েভ্যঃ কিতবমীর্যতায়া অকিতবং পিশাচেভ্যো বিদলকারীং যাতুধানেভ্যঃ ( কন্টকীকারী৷৷৮। সন্ধয়ে জারং গেহায়োপপতিমার্তৈ পরিবিত্তং নিঋত্যৈ পরিবিবিদানমরাধ্যা এদিধিঃপতিং নিষ্কৃত্যৈ পেশস্কারীং সংজ্ঞানায়। স্মকারীং প্রকামোদ্যায়োপসদং বর্ণায়ানুরুধং বলায়োপদা৷৷৯৷৷ উৎসাদেভ্যঃ কুজং প্রমুদে বামনং দ্বাৰ্ভঃ স্বামং স্বপ্নান্ধ-মধর্মায় বধিরং পবিত্রায় ভিষজং প্রজ্ঞানায় নক্ষত্ৰদৰ্শমাশিক্ষায়ৈ প্রশ্নিন-মুপশিক্ষায় অভিপ্রনিং মর্যাদায়ৈ প্রশ্নবিবাক৷৷১০৷৷ অর্মেভ্যো হস্তিপং জবায়াশ্বপং পুষ্ট্যৈ গোপালং বীয়ায়াবিপালং তেজসেহজপালমিরায়ৈ কীনাশং কীলালায় সুরাকারং ভদ্ৰায় গৃহপং শ্রেয়সে বিত্তধমাধ্বক্ষ্যায়ানুক্ষত্তার৷১১। ভায়ৈ দাবাহারং প্রভায়া অগ্ন্যেধং ব্ৰধস্য বিষ্টপায়াভিষেক্তারং বর্ষিষ্ঠায় নাকায় পরিবেষ্টারং, দেবলোকায় পেশিতারং মনুষ্যলোকায় প্রকরিতারং সর্বেভ্যো লোকেভ্য উপসেক্তারমব ঋত্যৈ বধায়োপমন্থিতারং মেধায় বাসঃপঙ্গুলীং প্রকামায় রজয়িত্রী৷১২৷৷ ঋতয়ে স্তেনহৃদয়ং বৈরহত্যায় পিশুনং বিবিক্তৈ ক্ষার-মৌপদ্রষ্ট্রায়ানুক্ষত্তারং বলয়ানুচরং ভূমে পরিষ্কন্দং প্রিয়ায় প্রিয়বাদিন মরিষ্ট্যা অশ্বসাদং স্বর্গায় লোকায় ভাগদুঘং বর্ষিষ্ঠায় নাকায় পরিবেষ্টার৷১৩৷ মন্যবেষয়স্তাপং ক্রোধায় নিসরং যোগায় যোক্তারং শোকায়াভিসর্তারং ক্ষেমায় বিমোক্তারমুক্লনিকূলেভ্যস্রিষ্ঠিনং বপুষে মানস্কৃতং শীলায়াঞ্জনীকারীং নৈঋত্যৈ কোশকারীং যমায়াসূম৷৷১৪৷৷ যমায় যমসূ-মথর্বভ্যো হবতোকাং সংবৎসরায় পর্যায়ণীং পরিবৎসরায়াবিজাতামিদাবৎসরায়াতীত্বরী-মিদ্বৎ সরায়াতিষ্কদ্বরীং বৎসরায় বিজর্জরাং সংবৎসরায় পলিব্ধী মৃভুভ্যোহজিনসদ্ধং সাধ্যে ভ্যশ্চর্ম৷১৫৷৷ সরোভ্যো ধৈবর-মুপস্থাবরাভ্যো দাশং বৈশাভ্যো বৈদং নব লাভ্যঃ শৌষ্কলং পারায় মার্গার-মবারায় কৈবর্তং তীর্থেভ্য আন্দং বিষমেভ্যো মৈনালং স্বনেভ্যঃ পর্ণকং গুহাভ্যঃ কিরাতং সানুভ্যো জম্ভকং পর্বতেভ্যঃ কিম্পূরুষ৷৷১৬৷ বীভৎসায়ৈ পৌল্কসং বৰ্ণায় হিরণ্যকারং তুলায়ৈ বাণিজং পশ্চাদোষায়, গ্লাবিনং বিশ্বেভ্যঃ ভূতেভ্যঃ সিব্বলং ভূত্যৈ জাগরণ-মভূত্যৈ স্বপনমার্তৈ জনদিনবদ্ধ্যা অপগভং সংশয় প্রচ্ছিদ৷৷১৭। অক্ষরাজায় কিতবং কৃতায়াদিনবদর্শং ত্রেতায়ৈ কল্পিনং দ্বাপরায়াধিকল্পিন-মাস্কন্দায় সভাস্থাণুং মৃত্যবে গোব্যচ্ছ-মন্তকায় গোঘাতং ক্ষুধে যো, গাং বিকৃন্তন্তং ভিক্ষমাণ উপতিষ্ঠতি দুষ্কৃতায় চরকাঁচার্যং পাশ্মনে সৈলগ৷৷১৮৷৷ প্রতিশ্রুঙ্কায়া অৰ্তনং ঘোষায় ভয়মন্তায় বহুদিনমনস্তায় মূকং শব্দায়াডম্বরাঘাতং মহসে বীণাবাদং ক্রোশায় তৃণবধ্ব-মবরম্পরায় শঙ্খং বনায় বনপমন্যতোহরণ্যায় দাবপ৷৷১৯৷৷ নর্মায় পুঁশ্চং হসায় কারিং যাদসে শাবল্যাং গ্রামণ্যং গণকমভিক্রোশকং তান্মহসে বীণাবাদং পাণিষ্মৎ তৃণবং তান্বত্তায়ানন্দায় তলব৷২০৷ অগ্নয়ে পীবানং, পৃথিব্যৈ পীঠসর্পিণং বায়বে চাণ্ডালমন্তরিক্ষায় বংশনৰ্তিনং দিবে খলতিং সূর্যায় হর্যক্ষং নক্ষত্রেভ্যঃ কির্মিরং চন্দ্রমসে কিলাসময়ে শুক্লং পিঙ্গাক্ষং রাত্রৈ কৃষ্ণং পিঙ্গাক্ষ৷৷২১৷৷ অথৈতানষ্টেী বিরূপানা লভতেহতি দীর্ঘং চাতিস্বং চাতিস্তুলংচাতিকৃশং চাতিশুক্লং চাতিকুব্বং চাতিলোমশং চ। অশূদ্রা অব্রাহ্মণাস্তে প্রাজাপত্যাঃ। মাগধঃ পুঁলী কিতবঃ কীবোহশূদ্রা অব্রাহ্মণাস্তে প্রাজাপত্যাঃ।।২২।

[কাণ্ড-২২ : মন্ত্র ১৭৭]

.

মন্ত্ৰার্থঃ— ১। হে সবিতাদেব! যজ্ঞকে প্রেরিত করো। যজ্ঞমানকে ঐশ্বর্যের নিমিত্ত প্রেরিত করো। বাণীর ধারক, দিব্য তথা বিজ্ঞানকে পবিত্র করণশালী আমাদের বিজ্ঞানকে পবিত্র করো। বাণী (বা বাকের) স্বামী সবিতাদেব আমাদের স্তুতি আস্বাদিত করুক ৷৷

২। সবিতাদেবের বরণীয় সেই তেজকে আমরা ধারণ করছি, যে সবিতাদেব আমাদের বুদ্ধি ও কর্মসকলকে প্রেরিত করে।

৩। হে সবিতাদেব! তুমি আমাদের সমস্ত দুগুণ (দোষ বা পাপ) দূর করে দাও। যা শুভ গুণ, তা আমাদের প্রাপ্ত করাও ৷

৪৷ বিবিধ ধন। দানশালী এবং মনুষ্যকে যথার্থ রূপে দর্শনশালী সবিতা দেবতাকে আমরা আহবান করছি।

৫। [এবার। পুরুষমেধ যজ্ঞ সম্পর্কে বলা হচ্ছে–ব্রহ্মার উদ্দেশ্যে প্রিয় ব্রাহ্মণ পুরুষকে, ক্ষত্রিয়ের নিমিত্ত ক্ষত্রিয়কে, মরুবৃন্দের নিমিত্ত বৈশ্যকে, তপঃ দেবতার নিমিত্ত শূদ্রকে, অন্ধকারের অধিষ্ঠাত্ দেবতার উদ্দেশ্যে তস্করকে, নরকের অভিমানী দেবতার উদ্দেশ্যে নষ্টাগ্নিকে (অর্থাৎ শূরকে), পাপের অধিষ্ঠাতা দেবতার নিমিত্ত নপুংসককে, আক্রয় নাম দেবতার উদ্দেশ্যে লৌহমধ্যে গমনকারী পুরুষকে, কামদেবতার উদ্দেশ্যে ব্যাভচারিণী নারীকে, অতিকৃষ্ট নামক দেবতার উদ্দেশ্যে মগধদেশজ ক্ষত্রিয় অথবা বৈশ্যপুরুষকে যুপে বন্ধন করছি।

৬৷ নৃত্যের নিমিত্ত সূতকে (সূতজাতীয় পুরুষকে), গীতের উদ্দেশ্যে শৈলুষ অর্থাৎ নটকে, ধর্মের নিমিত্ত সভাচারী পুরুষকে, নরিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ভয়ঙ্কর পুরুষকে, নর্মদেবতার উদ্দেশ্যে শব্দকারী বাঁচালকে, হাস্যে সেবক বা ভৃত্যকে, আনন্দের নিমিত্ত স্ত্রীলোকর মিত্র বা সখাকে, প্রমদের নিমিত্ত কানীন বা কুমারীপুত্রকে, মেধার উদ্দেশ্যে মাহিষ্য-কুলজাত রথকারকে, ধৈর্য্যের নিমিত্ত তক্ষা অর্থাৎ সূত্রধরকে শূপে বন্ধন করছি।

৭। তপের নিমিত্ত কুলাল অর্থাৎ কুম্ভকারের অপত্যকে, মায়ার উদ্দেশ্যে লৌহকার বা কামারকে, রূপের নিমিত্ত মণিকারকে, শুভের উদ্দেশে বীজবপনকারীকে, শরব্যার নিমিত্ত ইষুকার বা বাণ নির্মাতাকে, হেতির উদ্দেশ্যে ধনুয-নির্মাতাকে, কর্মের নিমিত্ত জ্যা-নির্মাতাকে, দিষ্টের উদ্দেশে রঞ্জুকারকে, মৃত্যুর নিমিত্ত ব্যাধকে এবং যমের (অর্থাৎ অন্তকের) উদ্দেশ্যে কুকুরের দ্বারা শিকার ধারণকারীকে শূপে বন্ধন করছি।

৮। নদীর উদ্দেশ্যে পুল্কসের অপত্যকে, ঋক্ষিকার (বা ভল্লুকের) নিমিত্ত নিষাদপুত্রকে, পুরুষ ব্যাঘ্রের উদ্দেশ্যে দুর্ধর্ষ উন্মুত্তকে, গন্ধর্ব-অপ্সরাদের নিমিত্ত ব্রাত্যকে (অর্থাৎ সাবিত্রীপতিতকে), প্রযুগগণের উদ্দেশ্যে উন্মত্ত জনকে, সর্পদেবজনের নিমিত্ত পঙ্গু বা বিকলাঙ্গ পুরুষকে, অয়ের উদ্দেশে কিতবকে (অর্থাৎ জুয়ারীকে), ঈর্যতার নিমিত্ত অকিতব জনকে, পিশাচগণের উদ্দেশে বিদলকারী বা বংশবিদারিণীকে, এবং যাতুনের নিমিত্ত কণ্টকীকারী বা কণ্টকীকর্মকারী জনকে যূপবদ্ধ করছি।

৯। সন্ধির নিমিত্ত জার বা কোন নারীর উপপতিকে, গেহের উদ্দেশ্যে ব্যভিচারী জনকে, আর্তির নিমিত্ত পরিবিত্তিকে (অর্থাৎ বিবাহিত কনিষ্ঠের অবিবাহিত জ্যেষ্ঠ ভ্রাতাকে), নিঋতির নিমিত্ত জ্যেষ্ঠের বিবাহ না হওয়া সত্ত্বেও বিবাহিত কনিষ্ঠ ভ্রাতাকে, অপরাধ্যার (বা আরাধ্যদেবদ্বয়ের) উদ্দেশ অবিবাহিতা জ্যেষ্ঠা কন্যাকে ত্যাগ করে তার কনিষ্ঠা ভগ্নীকে বিবাহকারী পতিকে, নিষ্কৃতির নিমিত্ত রূপকরী অর্থাৎ রূপকর্মকারী জনকে, সংজ্ঞানের উদ্দেশ্যে স্মরকারী অর্থাৎ কামদীপ্তিকরী জনকে, প্রকামোদ্যত দেবের নিমিত্ত উপসদকে বন্ধন করছি। (এইসব পুরুষকে অগ্নিষ্ট শূপে বন্ধনীয়। অপর দ্বিতীয় যুপে) বর্ণের নিমিত্ত অনুরুধ্য পুরুষকে এবং বলের উদ্দেশ্যে উপদা (উৎকোচ গ্রহণকারী) পুরুষকে ঘূপবদ্ধ করছি।

১০। উৎসাদসমূহের নিমিত্ত কুজ বা বক্রাঙ্গশালী পুরুষকে, প্রমুদের উদ্দেশ্যে বামনাকৃতি সম্পন্ন পুরুষকে, দ্বারের নিমিত্ত সর্বদা জলক্লিন্ননেত্রশালী পুরুষকে, স্বপ্নের নিমিত্ত অন্ধপুরুষকে, অধর্মের নিমিত্ত বধির অর্থাৎ কর্ণেন্দ্রিয়হীন পুরুষকে, পবিত্রের উদ্দেশে বৈদ্যকে, প্রজ্ঞানের নিমিত্ত জ্যোতিষীকে, অশিক্ষার উদ্দেশে শকুন ইত্যাদি অর্থাৎ জ্যোতিষ সম্পর্কিত প্রশ্নকারীকে, উপশিক্ষার নিমিত্ত অভিপ্রশ্নকর্তাকে (অর্থাৎ অতিরিক্ত প্রশ্নকারীকে) শূপে বদ্ধ করছি।

১১। অর্মের (বা নেত্রের) নিমিত্ত হস্তীপালককে, জবের (বা রোগের) উদ্দেশে অশ্বপালককে, পুষ্টির নিমিত্ত গোপালনকারীকে, বীর্যের উদ্দেশ্যে মেষপালককে, তেজের নিমিত্ত ছাগপালককে, ইরার উদ্দেশ্যে কর্ষণকারীকে (কৃষককে), কালীলের নিমিত্ত সুরাকার অর্থাৎ মদ্যপ্রস্তুতকারীকে, ভদ্রের নিমিত্ত গৃহপালককে, শ্রেয়ের নিমিত্ত মহাজনকে এবং আধ্যক্ষের উদ্দেশে অনুক্ষন্তা অর্থাৎ সারথির অনুসারী জনকে শূপে বন্ধন করছি।

১২। ভারের উদ্দেশে কাষ্ঠহর্তাকে অর্থাৎ কুঠারিয়াকে, প্রভার নিমিত্ত অগ্নিবর্ধককে, সূর্যলোকের উদ্দেশে অভিষেক্তাকে, শ্রেষ্ঠ স্বর্গের নিমিত্ত পরিবেষণকর্তাকে, দেবলোকের নিমিত্ত পেশিতাকে অর্থাৎ প্রতিমা ইত্যাদি নির্মাণকারীকে, মনুষ্যলোকের উদ্দেশে প্রকরিতাকে (অর্থাৎ বিক্ষেপকারীকে), সকল লোকের নিমিত্ত উপসেক্তাকে, অবঋতিবধের উদ্দেশে উপমন্থনকারীকে, মেধার নিমিত্ত রজককে এবং প্রকামের উদ্দেশ্যে বস্ত্র রঞ্জনকারিণীকে যুপে বন্ধন করছি।

১৩। ঋতির উদ্দেশ্যে স্তেনহৃদয় অর্থাৎ চৌর্যসম্পন্ন চিত্তশালী জনকে, বৈরহত্যার নিমিত্ত পিশুনকে, বিবিক্তির নিমিত্ত প্রতীহারকে, ঔপদ্রষ্ট্যার উদ্দেশ্যে প্রতীহারের সেবককে, বলের উদ্দেশ্যে অনুচরকে, ভূমার নিমিত্ত পরিষ্কন্দকে, প্রিয়ের নিমিত্ত প্রিয়বাদীকে, অরিষ্টির উদ্দেশে অশ্বারোহীকে, স্বর্গলোকের উদ্দেশ্যে ভাগদুধকে অর্থাৎ বিভাগকারীকে, এবং বর্ষিষ্ঠায়নকের উদ্দেশে পরিবেষ্ঠাকে শূপে বন্ধন করছি।

১৪। মোর নিমিত্ত লৌহতাপককে, ক্রোধের উদ্দেশে নিসরকে (অর্থাৎ গমনশীলকে), যোগের নিমিত্ত যোগীকে, শোকের উদ্দেশে সম্মুখভাগে গমনকারীকে, ক্ষেমের নিমিত্ত বিমোচনকারীকে, উকুলনিকুলের উদ্দেশে বিদ্যা ইত্যাদিতে স্থিতবান্ বা শীলবন্ত জনকে, বপুর নিমিত্ত মানকারীকে, শীলের নিমিত্ত কজ্জ্বল-নির্মাণকীকে, নিঋতির উদ্দেশে কোশকারিণী অর্থাৎ খঙ্গ ইত্যাদির আবরণ প্রস্তুতকারিণী স্ত্রীলোককে, এবং যমের নিমিত্ত বন্ধ্যা নারীকে ঘূপবদ্ধ করছি।

১৫। যমের উদ্দেশে যুগ্মপ্রসবিত্রী অর্থাৎ যমজ সন্তানের প্রসবকারিণীকে, অথর্বের নিমিত্ত অবতোকা বা নিরপত্যা অর্থাৎ নষ্ট-সন্তানশালিনী নারীকে, সম্বৎসরের নিমিত্ত পৰ্যায়িণীকে অর্থাৎ অনুক্রমে, প্রজ্ঞাশালিনীকে, পরিবৎসরের উদ্দেশে অবিজাতাকে অর্থাৎ অপ্রসূতাকে, ইদাবৎসরের নিমিত্ত কুলটা নারীকে, ইদবৎসরের উদ্দেশে প্রদররোগিণীকে, বৎসরের নিমিত্ত শিথিল অঙ্গশালিনীকে, সম্বৎসরের উদ্দেশে শ্বেতকেশা রমণীকে, ঋতুসমূহের নিমিত্ত চর্ম-সন্ধানকারী জনকে এবং সাধ্যগণের উদ্দেশে চর্মকারকে (অর্থাৎ মুচিকে) শূপে বদ্ধ করছি।

১৬। সরোবরের নিমিত্ত ধীবরকে, উপস্থাবরগণের নিমিত্ত দাতাকে, বৈশন্তগণের উদ্দেশে নিষাদের পুত্রকে, নলের নিমিত্ত মৎস্যজীবীকে, পারের উদ্দেশে মার্গার অর্থাৎ মৃগশিশুকে, অবারের নিমিত্ত কৈবর্ত জনকে, তীর্থের উদ্দেশে আন্দ অর্থাৎ বন্ধকর্তাকে, বিষমের নিমিত্ত মৈনাল অর্থাৎ মীন বা মৎস্যজীবীর পুত্রকে, স্বনের উদ্দেশে পর্ণক অর্থাৎ ভিল্লকে, গুহার নিমিত্ত কিরাতকে, সানুসমূহের উদ্দেশে জম্ভক অর্থাৎ হিংসককে এবং পর্বত সমূহের নিমিত্ত কিম্পুরুষকে (বা কুৎসিত জনকে) যূপবদ্ধ করছি।

১৭। বীভৎসের নিমিত্ত পৌল্কস বা পুল্কসের পুত্রকে, বর্ণের উদ্দেশে হিরণ্যকারকে, তুলার নিমিত্ত বণিপুত্রকে পশ্চাদোষার উদ্দেশ্যে গ্লাবিন অর্থাৎ অহৃষ্ট বা অসন্তুষ্ট জনকে, সকল প্রাণীর নিমিত্ত সিল অর্থাৎ ছুলিরোগাক্রান্তকে, ভূতির নিমিত্ত জাগ্রত জনকে, অভূতির উদ্দেশে স্বপ্নালু (অর্থাৎ নিদ্রামগ্ন) জনকে, আর্তির উদ্দেশে জনবাদী জনকে, ব্যর্ধির নিমিত্ত অপগম্ভকে এবং সংশরের উদ্দেশে প্রচ্ছেদনকর্তাকে যুপে বন্ধন করছি৷

১৮। অক্ষরাজের নিমিত্ত কিতব অর্থাৎ ধূর্ত জনকে, কৃতের নিমিত্ত দোষদর্শনকারী জনকে, ত্রেতার উদ্দেশ্যে কল্পককে, দ্বাপরের নিমিত্ত অধিক কল্পনাকর্তাকে, আস্কন্দের উদ্দেশে সভাস্থানু অর্থাৎ সভায় স্থিরভাবে অবস্থানকারী জনকে, মৃত্যুর নিমিত্ত গোব্যচ্ছ অর্থাৎ গরুর প্রতি গমনশীলকে, অন্তকের উদ্দেশে গো-ঘাতককে, ক্ষুধার নিমিত্ত গোমাংসযাচককে বা গোমাংসের দ্বারা জীবিকানির্বাহকারীর নিকট ভিক্ষাগ্রহণকারীকে, দুষ্কৃতের নিমিত্ত চরকাঁচার্য অর্থাৎ চরকগণের গুরুকে এবং পাপের নিমিত্ত সৈলগ অর্থাৎ দুষ্টের পুত্রকে শূপে বন্ধন করছি।

১৯। প্রতিশ্রুৎকার নিমিত্ত অর্তন অর্থাৎ দুঃখীজনকে, ঘোষের উদ্দেশ্যে ভষ অর্থাৎ জল্পক বা বাঁচালকে, অন্তের নিমিত্ত বহুবাদী জনকে, অনন্তের নিমিত্ত মূককে, শব্দের উদ্দেশে কোলাহলকারীকে, মহের নিমিত্ত বীণাবাদনকারীকে, ক্রোশের উদ্দেশ্যে তুণব বাদ্যবিশেষ বা বংশী বাদনকারীকে, অবরস্পরের নিমিত্ত শঙ্খবাদককে, বনে উদ্দেশে বনপালককে এবং অরণ্যশেষের উদ্দেশে দাবপালকে অর্থাৎ বনবহ্নির পালককে শূপে বন্ধন করছি৷

২০। নর্মের নিমিত্ত পুংশ্চলীকে অর্থাৎ ব্যভিচারিণী বা দুষ্টা রমণীকে; হাস্যের উদ্দেশে করণশীল বা চারককে; যাদসের নিমিত্ত শাবলীকে অর্থাৎ কবুরবর্ণের অপত্যভূতা স্ত্রীলোককে; মহাসের উদ্দেশে গ্রামের নেতা, জ্যোতির্বিদ ও নিন্দককে; নৃত্যের নিমিত্ত তান্ অর্থাৎ বীণাবাদক, পাণিগ্ন অর্থাৎ হস্তের দ্বারা তালবাদক, তৃণবঋ নামক বাদ্যের বাদককে এবং আনন্দের উদ্দেশে মুখের দ্বারা বাদ্যবাদককে শূপে বন্ধন করছি।

২১। অগ্নির উদ্দেশে স্থূল ব্যক্তিকে, পৃথিবীর নিমিত্ত পঙ্গু ব্যক্তিকে, বায়ুর উদ্দেশে চাণ্ডালকে, অন্তরিক্ষের নিমিত্ত বংশের (অর্থাৎ বাঁশের) উপর নর্তনকারীকে, দিবের (অর্থাৎ দ্যুলোকের) উদ্দেশে খলিতশিরস্ক অর্থাৎ টাকমাথা বিশিষ্ট মনুষ্যকে, সূর্যের নিমিত্ত হর্যক্ষ অর্থাৎ হরিতনেত্র বিশিষ্ট ব্যক্তিকে, নক্ষত্রসমূহের উদ্দেশ্যে কির্মির অর্থাৎ কবুবরণ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে, চন্দ্রমার নিমিত্ত কিলাস অর্থাৎ সি বা ছুলিরোগবন্ত ব্যক্তিকে, দিবসের উদ্দেশে শুক্লবর্ণ পিঙ্গলাক্ষ ব্যক্তিকে এবং রাত্রির নিমিত্ত কৃষ্ণবর্ণ পিঙ্গলাক্ষ ব্যক্তিকে যুপে বন্ধন করছি৷

২২। এক্ষণে পরম্পর বিপরীত স্বরূপ মনুষ্যকেও প্রাপ্ত করা হয়। যেমন–অতি দীর্ঘ ও অতি হ্রস্ব, অতি স্থূল ও অতি কৃশ, অতি শুক্ল ও অতি কৃষ্ণ, অতি রোমহীন ও অতি লোমশ–এইগুলি অশূদ্র-অব্রাহ্মণ যা-ই হোক, তারা প্রজাপতিদেবতার উদ্দেশে যূপবদ্ধ হয়ে থাকে। মাগধ অর্থাৎমগধদেশীয়, পুংশ্চলীনারী, কিতব (জুয়ারী) এবং নপুংসক–এদের মধ্যে যারা অশূদ্র ও অব্রাহ্মণ তাদের প্রজাপতিদেবতার উদ্দেশ্যে যূপবদ্ধ করছি।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *