২২. শুক্লযজুর্বেদ – দ্বাবিংশ অধ্যায়

দ্বাবিংশ অধ্যায়

মন্ত্রঃ– তেজোহসি শুক্রমমৃতমায়ুম্পা আয়ুর্মে পাহি। দেবস্য ত্ব সবিতুঃ প্রসবেংশ্বিনো বাহুভ্যাং পূষ্ণো হস্তাভ্যামাদদে৷৷৷৷৷ ইমামগণ রশনামৃতস্য পূর্ব আয়ুষি বিদথেষু কব্যা। সা নো অস্মিত আবভূব ঋতস্য সামরমারপন্তী৷৷২৷ অভিধা অসি ভূবনমসি যন্তাহসি ধর্তা। স ত্বমগ্নিং বৈশ্বানরং সপ্রথসং গচ্ছ স্বাহাকৃতঃ।।৩৷৷ স্বগা ত্বা দেবেভ্যঃ প্রজাপতয়ে ব্রহ্মন্নশ্বং ভস্যামি দেবেভ্যঃ প্রজাপতয়ে তেন রাধ্যাস। তং বধান দেবেভ্যঃ প্রজাপতয়ে তেন রাধুহি৷৷৷৷ প্রজাপতয়ে ত্বা জুষ্টং পোক্ষামন্দ্রাগ্নি ভ্যাং ত্বা জুষ্টং প্রেক্ষামি। বায়বে ত্বা জুষ্টং সোক্ষামি বিশ্বেভ্যস্খা দেবেভ্যো জুষ্টং প্রেক্ষামি। সর্বের্ভ্যস্তা দেবেভ্যো জুষ্টং প্রেক্ষামি। যো অবন্তং জিঘাংসতি তমভ্যমীতি বরুণঃ। পরে মর্তঃ পরঃ শ্ব।৫৷৷ অগ্নেয় স্বাহা সোমায় স্বাহাইপাং মোদায় স্বাহা সবিত্রে স্বাহা রায়বে স্বাহা বিষ্ণবে স্বাহেন্দ্রায় স্বাহা বৃহস্পতয়ে স্বাহা মিত্রায় স্বাহা বরুণায় স্বাহা।।৬ হিষ্কারায় স্বাহা হিস্কৃতায় স্বাহা ক্রন্দতে. স্বাহাহবক্রন্দায় স্বাহা প্রাথতে স্বাহা প্রপোথায় স্বাহা গন্ধায় স্বাহা, ঘ্রাতায় স্বাহা নিবিষ্টায় স্বাহোপবিষ্টায় স্বাহা সন্দিতায় স্বাহা বল্পতে স্বাহাহসীনায় স্বাহা শয়নায় স্বাহা স্বপতে স্বাহা জাগ্রতে স্বাহা কূজতে স্বাহা প্রবুদ্ধায় স্বাহা বিস্কৃম্ভমাণায় স্বাহা বিচুত্তায় স্বাহা সংহানায় স্বহোপস্থিতায় স্বাহাহয়নায় স্বাহা প্রায়ণায় স্বাহা।।৭৷ যতে স্বাহা ধাবতে স্বাহোদ্ধদবায় স্বাহোতায় স্বাহা শুকারায় স্বাহা শুকৃতায় স্বাহা নিষগ্নায় স্বাহোহু তায় স্বাহা জবায় স্বাহা বলায় স্বাহা বিবর্তমানায় স্বাহা বিবৃত্তায় স্বাহা বিধূন্বনায় স্বাহা বিধূতায় স্বাহা শুশ্রুষমাণায় স্বাহা শৃগ্নতে স্বহেক্ষমাণায় স্বাহেক্ষিতায় স্বাহা বীক্ষিতায় স্বাহা নিমেষায় স্বাহা যদত্তি তস্মৈ স্বাহা যৎ পিবতি তস্মৈ স্বাহা যমূত্রং করোতি তস্মৈ স্বাহা কুৰ্বতে স্বাহা কৃতায় স্বাহা।।৮৷ তৎসবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি। ধিয়ো যো নঃ প্রচোদ্দয়াৎ৯৷ হিরণ্যপাণিমূহয়ে সবিতারমুপয়ে। সচেত্তা দেবতা পদ৷১০৷৷ দেবস্য চেততো মহীং প্র সবিতুহামহে। সুমতিং সত্যরাধসম্৷৷১১৷৷ সুষ্ঠুতিং সুমতীবৃথো রাতিং সবিতুরীমহে। প্র দেবায় মতীবিদে৷৷১২৷৷ রাতিং সৎপতিং মহে সবিতারমুপহৃয়ে। আসবং দেববীতয়ে৷৷১৩৷৷ দেস্য সবিতুর্মতিমাসবং বিশ্ব দেব্য। ধিয়া ভগং মনামহে৷৷১৪৷৷ অগ্নিং স্তোমেন বোধয় সমিধানো অমর্ত। হব্যা দেবেষু নো দধৎ৷৷১৫৷৷ স হব্যবাডমর্ত্য উশিদূতশ্চনেহিতঃ। অগ্নিৰ্ধিয়া সমৃতি।১৬। অগ্নিং দুতং পুরো দধে হব্যবাহমুপ ব্রুবে। দেবা আ সাদয়াদিহ৷৷১৭৷ অজীজনো হি পবমান সূর্যং বিধারে শক্মনা পয়ঃ। গোজীরয়া রংহমাণঃ পুরন্ধ্যা।১৮৷৷ বিভূমাত্রা প্রভূঃ পিত্রাহশ্বাহসি হয়োহস্যতত্যাহসি ময়োহস্য বার্সি সপ্তিরসি বাজসি বৃষাহসি নৃমণা অসি। যযুনামাসি শিশুর্নামাস্যাদিত্যানাং পত্বাইন্বিহি দেবা আশাপালা এতং দেবেন্ডভ্যাংশং মেধায় ভোক্ষিতংরক্ষতেহরন্তিবিহ রমতামিহ ধৃতিরিহ স্বধৃতিঃ স্বাহা।১৯৷ কায় স্বাহা কস্মৈ স্বাহা কমস্মৈ স্বাহা স্বাহাহধিমাধীতায় স্বাহা মনঃ প্রজাপতয়ে স্বাহা চিত্তং বিজ্ঞাতায়াদিত্যৈ, স্বাহাদিত্যৈ মহ্যৈ স্বাহাদিত্যৈ সুমৃডীকায়ৈ স্বাহা সরস্বত্যৈ স্বাহা সরস্বত্যৈ পাবকায়ৈ স্বাহা সরস্বত্যৈ বৃহত্যৈ স্বাহা পূষ্ণে স্বাহা পূষ্ণে প্রপথ্যায় স্বাহা পূষ্ণে নরন্ধিষায় স্বাহা ত্বষ্ট্রে স্বাহা ত্বষ্ট্রে তুরীপায় স্বাহা তুষ্ট্রে পুরুরূপায় স্বাহা বিষ্ণবে স্বাহা বিষ্ণবে নিভূয়পায় স্বাহা বিষ্ণবে শিপিবিষ্টায় স্বাহা।।২০৷৷বিশ্বে দেবস্য নেতুৰ্মৰ্তো বুরীত সখ্য। বিশ্বে রায় ইষুধ্যতি দ্যুম্নংবৃণতি পুষ্যসে স্বাহা।।২১৷ ব্ৰহ্মব্ৰাহ্মণণা ব্রহ্মবৰ্চস জায়তামী রাষ্ট্রে রাজন্যঃ শূর ইষব্যোহতিব্যাধী মহারথো জায়তাং দোস্ত্রী ধেনুর্বোঢ়ানড়ানাশুঃ সপ্তিঃ পুরন্ধির্যোষা জিষ্ণু রথেষ্ঠাঃ সভেয়ো যুবাস্য যজমানস্য বীরো জায়তাং নিকামে নিকামে নঃ পর্জনন্যা বর্ষতু ফলবতত্যা ন ওষধয়ঃ পচন্তাঃ যোগক্ষেমমা নঃ কল্পতাম্।।২২। প্রাণায় স্বাহাইপানায় স্বাহা ব্যানায় স্বাহা চক্ষুষে স্বাহা শ্রোত্রায় স্বাহা বাঁচে স্বাহা মনসে স্বাহা।।২৩ প্রাচ্যৈ দিশে স্বাহাহাচ্যৈ দিশে স্বাহা দক্ষিণায়ৈ দিশে স্বাহাহবাচ্যৈ দিশে স্বাহা প্রতীচ্যৈ দিশে স্বাহাহবাচ্যৈ দিশে স্বাহোহবদীচ্যৈ দিশে স্বাহোহবাচ্য দিশে স্বাহোৰ্ব্বায্যৈ দিশে স্বাহাহাচ্যৈ দিশে স্বাহাহবাচ্যে দিশে স্বাহা৷৷২৪৷৷ অভ্যঃ স্বাহা বার্ভঃ স্বহোদকায় স্বাহা তিন্তভ্যঃ স্বাহা স্রবন্তীভ্যঃ স্বাহা স্যন্দমানাভ্যঃ স্বাহা প্যাভ্যঃ স্বাহা সূদ্যাভ্যঃ স্বাহা ধার্যাভ্যঃ স্বাহাহৰ্ণবায় ব্যয় স্বাহা সমুদ্ৰায় স্বাহা সরিরায় স্বাহা।।২৫৷৷ বাতায় স্বাহা ধূমায় স্বাহাহভ্রায় স্বাহা মেঘায় স্বাহা বিদ্যোমানায় স্বাহা স্তনয়তে স্বাহাহবস্ফুর্জতে স্বাহা বর্ষতে স্বাহাহববর্ষতে স্বাহোগ্রং বর্ষতে স্বাহা শীঘ্রং বর্ষতে স্বাহোগৃহুতে স্বাহোগৃহীতায় স্বাহা প্ৰষ্ণতে স্বাহা শীকায়তে স্বাহা স্বাভ্যঃ স্বাহা হ্রাদুনীভ্যঃ স্বাহা নীরাহায় স্বাহা৷৷২৬৷ অগ্নয়ে স্বাহা সোমায় স্বাহেন্দ্রায় স্বাহা পৃথিব্যৈ স্বাহাহন্তরীক্ষায় স্বাহা দিবে স্বাহা দিভ্যঃ স্বাহাহশাভ্যঃ স্বাহের্বৈ দিশে স্বাহাহবাচ্যৈ দিশে স্বাহা।।২৭৷৷ নক্ষত্রেভ্যঃ স্বাহা নক্ষত্রিয়েভ্যঃ স্বহোহহোরাত্রেভ্যঃ স্বাহাইধৰ্মাসেভ্যঃ স্বাহা মাসেভ্যঃ স্বাহা ঋতুভ্যঃ স্বাহাইৰ্তবেভ্যঃ স্বাহা সংবৎসরায় স্বাহা দ্যাবাপৃথিবীভ্যাং স্বাহা চন্দ্রায় স্বাহা সূর্যায় স্বাহা রশ্মিভ্যঃ স্বাহা বসুভ্যঃ স্বাহা রূদ্রেভ্যঃ স্বাহাহদিতেভ্যঃ স্বাহা মরুপ্তঃ স্বাহা। বিশেভ্যো দেবৈভ্যঃ স্বাহা মূলেভ্যঃ স্বাহা শাখাভ্যঃ স্বাহা বনস্পতিভ্যঃ স্বাহা পুষ্পেভ্য স্বাহা ফলেভ্যঃ স্বাহৌষধীভ্যঃ স্বাহা।।২৮৷৷ পৃথিব্যৈ স্বাহাহন্তরিক্ষায় স্বাহা দিবে স্বাহা সূর্যায় স্বাহা চন্দ্রায় স্বাহা নক্ষত্রেভ্য স্বাহাইদ্ভঃ স্বাহৌষধীভ্যঃ স্বাহা বনস্পতিভ্যঃ স্বাহা পরিপ্লবেভ্যঃ স্বাহা চরাচরেভ্যঃ স্বাহা সরীসৃপেভ্যঃ স্বাহা।২৯৷ অসবে স্বাহা বসবে স্বাহা বিভুবে স্বাহা বিবস্বতে স্বাহা গণশিয়ে স্বাহা গণপতয়ে স্বাহাইভিভুবে স্বাহাহধিপতয়ে স্বাহা শূষায় স্বাহা সংসর্পায় স্বাহা চন্দ্রায় স্বাহা জ্যোতিষে স্বাহা মলিম্লচায় স্বাহা দিবা পতয়তে স্বাহা।।৩০৷৷ মধবে স্বাহা মাধবায় স্বাহা শূক্ৰায় স্বাহা শুচয়ে স্বাহা নভসে স্বাহা নভস্যায় স্বাহেষায় স্বাহোর্জায় স্বাহা সহসে স্বাহা সহস্যায় স্বাহা তপসে স্বাহা তপস্যায় স্বাহাহংহসম্পতয়ে স্বাহা।।৩১৷ বাজায় স্বাহা প্রসবায় স্বাহাইপিজায় স্বাহা তবে স্বাহা স্বঃ স্বাহা মূৰ্পে স্বাহা ববিনে স্বাহাহত্যায় স্বাহাহত্যায় ভৌবনায় স্বাহা ভুবনস্য, পতয়ে স্বাহহধিপতয়ে স্বাহা প্রজাপতয়ে স্বাহা।।৩২। আয়ুজ্ঞেন কল্পতাং স্বাহা প্রাণো যজ্ঞেন কল্পতাং স্বাহাইপানো যজ্ঞেন কল্পতাং স্বাহা ব্যানো যজ্ঞেন কল্পতাং স্বাহাদানো যজ্ঞেন কল্পতাং স্বাহা সমাননা যজ্ঞেন কল্পত্যং স্বাহা চক্ষুর্যজ্ঞেন কল্পতাং স্বাহা শ্রোত্রং যজ্ঞেন কল্পতাং স্বাহা বাস্যজ্ঞেন কল্পতাং স্বাহা মনো যজ্ঞেন কল্পত্যং স্বাহাত্মা যজ্ঞেন কল্পতাং স্বাহা ব্রহ্মা যজ্ঞেন। কল্পতাং স্বাহা জ্যোতির্যজ্ঞেন কল্পতাং স্বাহা স্বর্যজ্ঞেন কল্পতাং স্বাহা পৃষ্ঠং যজ্ঞেন কল্পতাং স্বাহা যজ্ঞো যজ্ঞেন কল্পতাং স্বাহা।।৩৩৷৷ একস্মৈ স্বাহা দ্বাভ্যাং স্বাহা শতায় স্বাহৈকশতায় স্বাহা ব্যুষ্ট্যৈ স্বাহা স্বর্গায় স্বাহা।।৩৪।

[কাণ্ড-৩৪, মন্ত্র-২৬৭]

.

 মন্ত্ৰাৰ্থঃ– (এই অধ্যায় থেকে পঞ্চবিংশ অধ্যায় পর্যন্ত অশ্বমেধ যজ্ঞের বর্ণনা বিধৃত হয়েছে। এই যজ্ঞ শুক্ল অষ্টমীর প্রারম্ভক। সর্বপ্রথম অধ্বর্যু একটি চার সুবর্ণ (মোহর) নির্মিত নিষ্ক (অর্থাৎ কণ্ঠভূষণ-বিশেষ) যজমানের গলে পরিয়ে দেন)

১। হে নিষ্ক! তুমি তেজঃস্বরূপ। তুমি শুদ্ধ স্বরূপ, তুমি অমৃতস্বরূপ এবং তুমি আয়ুকে রক্ষাকারী। তুমি আমার আয়ুকে রক্ষা করো। (অশ্বকে বন্ধনের নিমিত্ত হস্তে রঞ্জু গ্রহণীয়)-হে রঞ্জু! সবিতাদেবের অনুজ্ঞায় বর্তমান আমি অশ্বিনযুগলের বাহুসমূহ এবং পুষা দেবতার হস্তদ্বয়ের দ্বারা তোমাকে গ্রহণ করছি৷৷

২। যজ্ঞের আয়ুতে, যজ্ঞসমূহে পূর্বকালেও এই রঞ্জুকে বিদ্বানগণ গ্রহণ করেছিল। যজ্ঞের প্রারম্ভে সোমকে অভিযুত করার পর, যজ্ঞের বিস্তার হোক–এই কথা যে বলেছিল, সেই রঞ্জু আজ আমাদের দ্বারাও গৃহীত হয়েছে।

৩। (ওকে বন্ধন করো এই রকমে ব্রহ্মার দ্বারা আদিষ্ট হয়ে অধ্বর্যু সেই রজ্জুতে অশ্বকে বন্ধন করে থাকে)–হে অশ্ব! তুমি স্তুতিযোগ্য নামশালী; তুমি সকলের আশ্রয়; তুমি সকলের নিয়ন্ত্রণকর্তা এবং ধারণকর্তা। এই হেন তুমি স্বাহাকৃত হয়ে সকলের হিতকরী ও বিস্তার প্রাপ্তশীল অগ্নিকে প্রাপ্ত হও।

৪। হে অশ্ব! তুমি দেবগণ তথা প্রজাপতির নিমিত্ত স্বয়ং প্রাপ্তশালী হয়ে থাকো। (অধ্বর্যু বলবে–) হে ব্রহ্মা! আমি দেবতাগণ ও প্রজাপতির নিমিত্ত অশ্বকে বন্ধন করব; আমি সেই দেবগণকে আপন অনুকূল করে তুলব। (ব্রহ্মা বলবে–) হে অধ্বর্যু! তুমি তাকে (অর্থাৎ সেই অশ্বকে) দেবগণ ও প্রজাপতির নিমিত্ত বন্ধন করো। তাতে তুমি ওকে সিদ্ধিলাভ করাবে (অথবা, এর দ্বারা তুমি সিদ্ধিপ্রাপ্ত হবে)।

৫। (তড়াগ ইত্যাদির জলে অশ্বকে পোষণ করণীয়)–হে অশ্ব! প্রজাপতির নিমিত্ত প্রিয় তোমাকে আমি প্রেক্ষিত করছি। জলে উৎসক্তি করে তোমাকে পবিত্র করছি। বায়ুর নিমিত্ত প্রিয় তোমাকে প্রেক্ষিত করছি। ইন্দ্র ও অগ্নির নিমিত্ত প্রিয় তোমাকে প্রেক্ষিত করছি। বিশ্বদেবগণের নিমিত্ত প্রিয় তোমাকে প্রেক্ষিত করছি। সকল দেবতার নিমিত্ত প্রিয় তোমাকে পোক্ষিত করছি। (শূদ্র হতে বৈশ্যায় উৎপন্ন পুরুষের দ্বারা খদির কাষ্ঠের মূষলে চারি চক্ষু বিশিষ্ট কুকুরকে হত্যা করে অধ্বর্যু এই যজুঃ–যো অবন্তং জিঘাংসতি তমভ্যমীতি বরুণঃ–যজমানকে বলাবে)।যে এই অশ্বকে হত্যা করতে ইচ্ছা করে, তাকে বরুণই হিংসা করুক।(সেই মৃত কুকুরকে বেত্রে বা বাঁশের চটাইয়ের উপরে ধরে অশ্বের নিম্নে জলে নিক্ষেপনীয়)। অশ্বকে হত্যায় ইচ্ছাশীল মনুষ্য দূর হয়েছে কুকুর দূর হয়েছে।

৬। (স্তোকীয় সংজ্ঞকা আহুতি)–অগ্নির নিমিত্ত এই আহুতি; সোমের নিমিত্ত স্বাহা; জলের বক্ষের নিমিত্ত এই আহুতি; সবিতার নিমিত্ত স্বাহা; বায়ুর নিমিত্ত স্বাহা; বিষ্ণুর নিমিত্ত স্বাহা; ইন্দ্রের নিমিত্ত স্বাহা; বৃহস্পতির নিমিত্ত স্বাহা; মিত্রের নিমিত্ত স্বাহা; বরুণের নিমিত্ত স্বাহা এই স্বাহা মন্ত্রে সকলের উদ্দেশ্যে এই অশ্ব অর্পণ করছি।

৭। (প্রক্রম সংজ্ঞকা আহুতি)–অশ্বের হিংকার, হিংকৃত, ক্রন্দন, অবক্ৰন্দন, প্রোথ, প্রপোথ, গন্ধ, ঘ্রাত, নিবিষ্ট, উপবিষ্ট, সন্দিত, বঙ্গন, আসীন, শয়ান, সুপ্ত জাগ্রত, কূজনরত, প্রবুদ্ধ, বিম্ভনতা অর্থাৎ হাই গ্রহণশীলতা, উদ্দীপ্ত, সংহৃত শরীর, উপস্থিত, চলিত ও প্রচলিত এই সকলের নিমিত্ত এই আহুতি প্রদত্ত হচ্ছে৷

৮৷ গতি প্রাপ্ত, ধাবিত, বেগবান শীঘ্রগতি, শূ করণশীল, শুকৃত, উপবেশন, উত্থিত, বেগ, বল, বিবর্তমান, বিবৃত্ত, শরীর দোলন, কম্পিতগাত্র, সেবিত, শ্রবণশীলতা, দর্শনশীলতা, বিশেষ ভাবে দেখে যাওয়া, পলকপতনশীলতা, যা কিছু সে পান করে, যতটুকু সে প্রস্রাব করে, সেগুলির নিমিত্ত, কর্মকারী ও কৃতকর্ম অশ্বের নিমিত্ত এই আহুতি প্রদত্ত হচ্ছে৷

৯। বরণীয় সবিতাদেবের সেই পাপাবিনাশকারী তেজকে ধারণ (ধ্যান) করি, যে আমাদের বুদ্ধিকে সৎকর্মে প্রেরিত করে।

১০৷ রক্ষার নিমিত্ত আমি হিরন্ময় সবিতাকে আহ্বান করছি। সেই বিজ্ঞানী দেবতাই স্বর্গ ইত্যাদি উত্তম পদকে জ্ঞাতশীল৷

১১৷ সব কিছু জ্ঞাতশীল সবিতাদেবের মহতী ও সত্যসাধিনী সুমতিকে আমরা যাচনা করি৷৷

১২৷ সুমতিকে বর্ধনশীল এবং সকলের মতিকে জ্ঞাতশীল সবিতাদেবের সংস্তুতি করে আমরা তার দানকে যাচনা করি।

১৩। দেবগণের তর্পণের নিমিত্ত শ্রেষ্ঠের পালক ও শুভ কর্মসমূহে প্রেরণা দানশীল সবিতা দেবের দানকে আমরা যাচনা করছি।

১৪। সকল দেবতার তর্পণের নিমিত্ত প্রেরক সবিতাদেবকে ঐশ্বর্যের নিমিত্ত যাচনা আমরা স্ববুদ্ধির (অর্থাৎ স্তুতির) দ্বারা করছি৷৷

১৫। হে অধ্বর্যু! সমিদ্ধ করে তুমি অমর অগ্নিকে প্রবোধিত করো। প্রবুদ্ধ হয়ে অগ্নি আমাদের হবিঃসমূহকে দেবগণের মধ্যে বহন করে নিয়ে গিয়ে ধারণ করুক (অর্পণ করুক)।

১৬৷ হবিঃ বহনকারী, মরণরহিত, কাম্য বা কামিতা, দূত এবং হবিরান্নকে গ্রহণের নিমিত্ত স্থাপিত এই অগ্নি স্তুতির দ্বারা দেবতাগণের সাথে সম্মত হচ্ছে৷৷

১৭। হৃত অগ্নিকে আপন সম্মুখে স্থাপিত করছি এবং সেই হবিবাহককে আমি বলছি যে, সে এইস্থানে যজ্ঞে দেবতাগণকে নিয়ে এসে স্থাপন করুক৷

১৮৷ হে পবিত্রকারী সোম! তুমি আপন শক্তিতে সূর্যকে প্রকট করেছ। তুমি ধারার বেগে গতিসম্পন্ন হয়ে গাভী প্রভৃতি পশুদের জীবনের নিমিত্ত বর্ষার জলকে ধারণ করছ–বর্ষণ করছ।

১৯। হে অশ্ব!তুমি মাতা পৃথিবীর সম্পর্কে এত সমর্থ হয়েছ এবং পিতা দ্যুলোকের সাথে সম্পর্কের দ্বারাই এত প্রভূতাবান্ হয়েছ। তুমি অশ্ব-হয়-অত্য-ময়-অর্বা সপ্তি-বাজী-বৃষা-নৃমনা এইরকম নামে শংসনীয় হয়েছে; তুমি যজমানে বিলগ্ন মনঃসম্পন্ন এবং যযু, শিশু নামশালী হয়েছ। তুমি দেবমার্গকে প্রাপ্ত হও। হে আশাপাল দেবগণ (রক্ষক ক্ষত্রিয় কুমারগণ)! দেবগণের নিমিত্ত জলের দ্বারা পবিত্ৰীকৃত এই অশ্বকে সর্বথা রক্ষা করো। হে অশ্ব! এই স্থান তোমার রমণস্থলী। তুমি এইস্থানে রমণ করো। এইস্থানে তোমার স্থিতিস্থলী। তুমি এইস্থানে অবস্থান করো। এই স্থলে তুমি সন্তোষ প্রাপ্ত হও৷

২০। প্রজাপতির নিমিত্ত এই আহুতি। প্রজাপতি প্রজাপতিতমের নিমিত্ত স্বাহা। আধানকৃতের নিমিত্ত স্বাহা। মনে বর্তমান প্রজাপতির নিমিত্ত স্বাহা। চিত্তকে জ্ঞাতশীল আদিত্যের নিমিত্ত স্বাহা। মহতী-সুখদা অদিতির নিমিত্ত স্বাহা। মহতী ও পবিত্র কত্রী সরস্বতীর নিমিত্ত স্বাহা। পথে প্রাপ্ত এবং আপন উদয়ের দ্বারা মনুষ্যগণকে শব্দিত (আহূত) করণশীল পূষার নিমিত্ত স্বাহা। তীব্রগতি ও বহুরূপধারী ত্বদেবের নিমিত্ত স্বাহা। মৎস্য ইত্যাদি অবতারধারী হয়ে রক্ষাকরণশালী এবং অন্তর্যামিরূপে প্রাণীগণের মধ্যে প্রবিষ্ট সর্বব্যাপক দেবতা (বিষ্ণুর) নিমিত্ত এই আহুতি সমর্পিত করছি। (এটি ঔগ্রভণ মন্ত্র)।

২১। সকল মনুষ্য নেতা সবিতা দেবের মিত্রতা বরণ করে। সকলেই ধন প্রার্থনা করে। সন্তান ইত্যাদির পোষণের নিমিত্ত সকলে দ্যোতমান অন্ন ইত্যাদি যাচনা করে। সেই সবিতাদেবের উদ্দেশ্যে এই আহুতি সমর্পণ করছি।

২২। হে ব্ৰহ্মণ! আমাদের দেশে (রাষ্ট্র) যজ্ঞ ও অধ্যয়নশীল ব্রাহ্মণ উৎপন্ন হোক। ক্ষত্রিয়গণ শূর, লক্ষভেদী, ধনুষ ও বাণধারী এবং মহরথীরূপে উৎপন্ন হোক। দুগ্ধবতী গাভী, ভারবাহী বৃষভ, ব্যাপনশীল অশ্ব, মনোহারিণী স্ত্রী; এবং এই যজমানের জয়শীল, রথারোহী, সভাকুশল এবং সেচনসমর্থ পুত্র উৎপন্ন হোক। সময়-সময় কামনা করার পরে পর্জন্য বর্ষণ করুক। ব্রীহি, যব ইত্যাদি ওষধিসমূহ ফলযুক্ত হয়ে পরিপক্কতা প্রাপ্ত হোক। পরমাত্মা আমাদের যোগ (অর্থাৎ অলব্ধের লাভ) ও ক্ষেম (অর্থাৎ লব্ধের রক্ষা) দর্শন করুন; (অর্থাৎ আমরা যেন যোগ ও ক্ষেমে সমর্থ হই)।

২৩। প্রাণ-অপান-ব্যান-চক্ষু শ্রোত্র বাক্ ও মনের নিমিত্ত এই আহুতি প্রদান করছি৷

২৪। প্রাচী-অর্বাচী-দক্ষিণ-পশ্চিম-উদীচি ও ঊর্ধ্ব দিসমূহের অধিষ্ঠাতা দিক্‌দেবতার নিমিত্ত স্বাহা।

২৫। অদভ্য-বারি-উদক-স্থির-স্রবণ-স্পন্দমান-কূপ সূদ্যা-ধার্য-অর্ণব-সমুদ্র ও সলিল–এই সকলের অধিস্বামী জলদেবতাগণের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি।

২৬। বাত-ধূম-মেঘ-বিদ্যোতমান-নয়িতু-স্ফুর্জত বর্ষণপ্রাপ্ত-অববর্ষণ-উগ্রবর্ষণ শীঘ্রবর্ষণ ও উগ্রহণ করণশীল, উদগৃহীত-প্রহ্লাশী করণশীল, পুম্বা-হ্রাদুনী-নীহার ইত্যাদি মেঘঘাপযোগী দেবতাগণের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে আহুতি প্রদান করছি।

২৭। অগ্নি-সোম-ইন্দ্র-পৃঙ্খী-অন্তরিক্ষ-দিব-দিশা আশা-উর্বীদিশা এবং অর্বাচী দিশার অধিস্বামী দেবগণের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি।

২৮৷ নক্ষত্র-নক্ষত্রি-অহোরাত্র-অর্ধমাস-মাস-ঋতু-আবর্ত-সম্বৎসর-দ্যাবাপৃথিবী-চন্দ্র-সূর্যরশ্মি বসু-রুদ্র-আদিত্য-মরুৎ-বিশ্বদেব-মূল-শাখা-বনস্পতি-পুষ্প-ফল-ওষধিসমূহ ইত্যাদির অধিষ্ঠাত্ দেবতার উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি৷৷

২৯। পৃথিবী-অন্তরিক্ষ-দ্যুলোক-সূর্য-চন্দ্র-আপঃ ওষধিসমূহ-বনস্পতিসমূহ-পরিপ্লব-চরাচর-সরীসৃপ (কীটপতঙ্গ) ইত্যাদির অধিষ্ঠাতৃ দেবতার উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি৷৷

৩০। অসুবসু-বিভু-বিবস্বান-গণশ্রী-গণপতি-অভিভূ-বল-সংসর্প জ্যোতিষ-শ্লীমুচ-দিবাপতি ইত্যাদির অধিপতি দেবগণের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি৷৷

৩১। মধু-মাধব-শুক-শুচি-নভনভস্য-ইষঊর্জ-সহ-সহস্য-তপ-তপস্য ইত্যাদি অংহস্পতি (মাস ও দিনের অধিপতি), দেবগণের উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি।।

৩২। বাজ-প্রসব অপিজ-কুতু-স্বঃ-মূর্ধা ব্যশ্নবি-অন্ত্য-ভৌবন-ভুবন-পতি-অধিপতি-প্রজাপতি ইত্যাদি অন্নের অধিষ্ঠাত্ দেবতার উদ্দেশ্যে এই আহুতি প্রদান করছি।

৩৩। অশ্বমেধ যজ্ঞের দ্বারা আয়ু প্রাপ্ত হওয়ার নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; প্রাণকে প্রাপ্ত হওয়ার নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; আপানকে প্রাপ্তির নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; ব্যানকে প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; উদানকে প্রাপ্তির অভিপ্রায়ে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; সমানকে প্রাপ্তির লক্ষ্যে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; চক্ষুকে প্রাপ্তির অভিলাষে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; শ্রোত্রকে প্রাপ্তির প্রয়োজনে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; বাককে প্রাপ্তির বাঞ্ছনায় স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; মনকে প্রাপ্তির কামনায় স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; আত্মাকে প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষায় স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; ব্রহ্মাকে প্রাপ্তির যাচনায় স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; জ্যোতিকে প্রাপ্তির তাড়নায় স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; স্বর্গকে প্রাপ্তির আবশ্যকতায় স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; পৃষ্ঠকে প্রাপ্তির চাহিদায় স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি; যজ্ঞকে প্রাপ্তির উদ্দেশনায় স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। এগুলি যজ্ঞের দ্বারা সিদ্ধ হোক। এই নিমিত্তই এই আহুতি৷৷

৩৪। এক-দুই-শত এক-শত-এক ইত্যাদি সংখ্যক যা কিছু বর্তমান ও দিবারাত্রির অধিস্বামীর উদ্দেশ্যে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। যজ্ঞ সমাপন হোক।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *