২০. শুক্লযজুর্বেদ – বিংশ অধ্যায়

বিংশ অধ্যায়

মন্ত্রঃ– ক্ষত্রস্য যোনিরসি ক্ষত্রস্য নাভিরসি। মা ত্বা হিংসী হিংসীঃ।১৷ নি যসাদ ধৃত বরুণঃ প্যাস্বা। সাম্রাজ্যায় সুক্ৰতুঃ। মৃত্যোঃ পাহি বিদ্যোৎ পাহি।২৷৷ দেবস্য ত্বা সবিতুঃ প্রসবেংশ্বিনো বাহুভ্যাং পূষ্ণো হস্তাভ্যাম্। অশ্বিনোভৈষজ্যেন তেজসে ব্ৰহ্মবসায়াভি বিঞ্চামি। সরস্বত্যৈ ভৈষজ্যেন বীর্যান্নাদ্যায়াভিষিঞ্চামীন্দ্রস্যেন্দ্রিয়েণ । বলায় শ্রিয়ৈ যশসেহভি মিঞ্চামি৷৷৩৷৷ কোহসিকতমোহসিকস্মৈ ত্বাকায় ত্বা। শ্লোক সুমঙ্গলং সত্যরাজ৷৪৷৷ শিয়ো মে শ্রীর্যশো মুখং দ্বিষিঃ কেশাশ্চ শ্মশ্রুণি। রাজা মে প্রাণো অমৃতং সম্রাট চক্ষুবিরাট শ্রোত্র৷৷৷৷ জিহ্বা মে ভদ্রং বামহো মনো মনুঃ স্বরাড় ভামঃ। মোদাঃ প্রমোদা অঙ্গুলীরঙ্গানি মিত্ৰং মে সহঃ।।৬। বাহু মে বলমিয়িং হস্তৌ মে কর্ম বীর্য। আত্মা ক্ষত্ৰমুরো মম৷৷৷৷ পৃষ্ঠীর্মে রাষ্ট্ৰমুদরমংসৌ গ্রীবাশ্চ শ্রোণী। উরু অরত্নী জানুনী বিশশা মেহজানি সর্বতঃ।।৮। নাভির্মে চিত্তং বিজ্ঞানং পায়ুর্মেপচিতির্ভসৎ। আনন্দনন্দাবাণ্ডেী মে ভগঃ সৌভাগ্যং পসঃ। জঞ্জভ্যাং পদভ্যাং ধর্মোহস্মি বিশি রাজা প্রতিষ্ঠিতঃ ৯৷৷ প্রতি ক্ষত্রে প্রতি তিষ্ঠামি রাষ্ট্রে প্রত্যশ্বেযু প্রতি তিষ্ঠামি গোষু। প্রত্যঙ্গেযু প্রতি তিষ্ঠাম্যাত্মন্ প্রতি প্রাণেষু প্রতি তিষ্ঠামি পুষ্টে প্রতি দ্যাপৃথিব্যোঃ প্রতি তিষ্ঠামি যজ্ঞে৷৷১০৷ ত্রয়া দেবা একাদশ ত্রয়স্ত্রিংশাঃ সুরাধসঃ। বৃহস্পতিপুরোহিতা দেবস্য সবিতুঃ সবে। দেবা দেবৈরবন্তু মা ॥১১।প্রথমা দ্বিতীয়েদ্বিতীয়া তীয়ৈস্তৃতীয়াঃ সত্যেন সত্যং যজ্ঞেন যজ্ঞো যজুৰ্ভিৰ্ষজুংষি সামভিঃ সামাভিচঃ পুরোহনুবাক্যাভিঃ পরোহনুবাক্যা যাজ্যাভিাজ্যা বষারৈবর্ষ কারা আহুতিভিরাহুতয়ো মে কামামধয়ন্তু ভূঃ স্বাহা।১২। লোমানি প্রতির্মম ত্ব আনতিরাগতিঃ। মাংসং ম উপনতিবস্থি মজ্জা ম আনতিঃ ॥১৩৷৷ যদ্দে দেবহেডনং দেবাসকৃমা বয়ম্। অগ্নিৰ্মা তস্মাদেনসো বিশ্বাঞ্চত্বংহসঃ ॥১৪৷৷ যদি দিবা যদি নক্তমনাংসি চকৃমা বয়। বায়ুমা তম্মদেনসো বিশ্বাঞ্চত্বংহসঃ ১৫৷৷ যদি জাগ্ৰদ্যদি স্বপ্ন এনাংসি চকৃমা বয়ম্। সূর্যো মা তস্মাদেনসো বিশ্বায়ূঞ্চত্বংহসঃ১৬৷৷ যগ্রামে যদরণ্যে যৎসভায়াং যদিন্দ্রিয়ে যচ্ছদ্রে যদর্যে যদেনশ্চমা বয়ং যদেকস্যাধি ধর্মাণি স্যাযজনমসি৷৷১৭৷ যদাপো অগ্ন্যা ইতি বরুণেতি শপামহে ততো বরুণ নো মুঞ্চ। অবভৃথ নিচুম্পূণ নিচেরুরসি নিচুম্পুণঃ। অব দেবৈদেবকৃতমনোহব মমৈত্যকৃতং পুরুঝো দেব রিষম্পাহি৷১৮৷৷ সমুদ্রে তে হৃদয়মস্বন্তঃ সং ত্বা বিশন্তোষধীরুতাপঃ। সুমিত্রিয়া ন আপ ওষধয় সন্তু। দুর্মিত্রিয়াস্তস্মৈ সন্তু যোইপ্যান্বেষ্টি যং চ বয়ং দ্বিম্মঃ ॥১৯ পদাদিব মুমুচানঃ স্বিন্ন স্নাতো মলাদিব। পূতং পবিত্রেণ ৰাজ্যমাপঃ শুন্ধন্তু মৈনসঃ৷৷২০৷ উদ্বয়ং তমসম্পরি মৈনসঃ৷৷২০৷ উদ্বয়ং তমসম্পরি স্বঃ পশ্যন্ত উত্তর দেবং দেবত্রা সূর্যমগন্ম জ্যোতিরুত্তমম্।।২১৷ অপো অদ্যাম্বচারিষং রসেন সমসৃন্মুহি। পয়শ্বনগ্ন আহগমং তংমা সংসৃজ বচসা প্রজয়া চ ধনেন চ৷২২৷৷এখোহস্যেধিষীমহি সমিদসি তেজোহসি তেজো ময়ি ধেহি। সমাববর্তি পৃথিবী সমুষাঃ সমু সূর্যঃ। সমু বিশ্বমিদং জগৎ। বৈশ্বানরজ্যোতির্ভূয়ান্সং বিভূন্ কামান্ ব্যশ্নবৈ ভূঃ স্বাহা।।২৩৷ অভ্যা দধামি সমিধমগ্নে ব্রতপতে ত্বয়ি। ব্রতং চ শ্রদ্ধাং চোপৈমীন্ধে ত্বা দীক্ষিতত অহ৷৷২৪। যত্র ব্রহ্ম, চ ক্ষত্রং চ সমঞ্চেী চরতঃ সহ। শ্লোকং পুণ্যং প্রজ্ঞেষং যত্র দেবাঃ সহাগ্নিনা ২৫যত্রে বায়ুশ্চ সম্যঞ্চেী চরতঃ সহ। ত শ্লোকং পুণ্যং প্রজ্ঞেষং সেদিন বিদ্যতে৷৷২৬ অংশুনা তে অংশুঃ পৃচ্যতাং পরুষা পরুঃ। গন্ধস্তে সোর্মমতু মদায় রসো অচ্যুতঃ।।২৭৷ সিঞ্চন্তি পরি যিঞ্চন্ত্যৎসিঞ্চন্তি পুনন্তি চ। সুরায়ে বভ্রবৈ ববৈ মদে কিন্তো বদতি কিন্তুঃ ॥২৮। ধানাবন্তং করম্ভিণমপূপৰম্ভ মুখিন। ইন্দ্র প্রাতর্ভুষনঃ ।।২৯৷ বৃহদিন্দ্রায় গায়ত মরুততা বৃত্রহতম। যেন জ্যোতিরজনযন্বতাবৃধো দেবং দেবায় জাগৃৰি৷৷৩০। অধ্বৰ্যো অদ্রিভিঃ সুতং সোমং পবিত্র আ নয়। পুনাহীন্দ্রায় পাতবে।৩১৷৷ যো ভূতানামধিপাত যস্মিলোঁকা অধি শ্রিতাঃ। য ঈশে মহতো মহস্তেন গৃমি দ্বামহং ময়ি গৃহূমি ত্বমহ৷৩২৷৷ উপমগৃহীতোহস্যশ্বিভ্যাং ত্বা সরস্বত্যৈ ত্বোয় ত্বা সুত্রামে এ তে যোনিরশ্বিভ্যাং ত্ব সরস্বত্যৈ ত্বোয় ত্বা সুত্রামে৷৩৩৷৷ প্রাণপা মে অপানপাশ্চক্ষুষ্পঃ শ্রোত্ৰপাশ্চ মে। বাচো মেবিশ্বভেষজো মনসোহপি বিলায়কঃ ৩৪৷ অশ্বিনকৃতস্য তে সরস্বতিকৃতস্যোণে সুত্রাশ্চ কৃতস্য। উপহৃত উপহৃতস্য ভক্ষয়ামি৷৩৫। সমিদ্ধ ইন্দ্র উষসামনীকে পুরোরুচা পূর্বকৃঘাবৃধানঃ। ত্রিভির্দেবৈস্ত্রিংশতা বজহুর্জঘান বৃত্ৰং বি দুবো ববার।।৩৬৷ নরাশংসঃ প্রতি শুরে মিমানস্তনপাৎ প্রতি যজ্ঞস্য ধাম। গোভির্বপাবা মধুনা সমঞ্জন হিরণ্যৈশ্চন্দ্ৰী যজতি প্রচেতাঃ ॥৩৭। ঈড়িতে দেবৈরিবাঁ অভিষ্টিরাজুনো হরিষা শর্ধমানঃ। পুরুরো গোত্রভিজ্রবাহুরা যাতু যজ্ঞমুপ নো জুষাণঃ ॥৩৮৷ জুষাণো বহিহরিবান্ ন ইন্দ্রঃ প্রাচীনং সীদৎ প্রদিশা পৃথিব্যাঃ। উরুপ্রথাঃ প্রথমানং স্যোনমাদিত্যেরক্তং বসুভিঃ সজোষাঃ ৩৯৷ ইন্দ্ৰং দুরঃ কবষ্যো ধাবমানা বৃষাণং যন্তু জনয়ঃ সুপত্নীঃ। দ্বাররা দেবীরভিত বি শ্ৰয়ন্তাং সুবীরা বীরং প্রথমানা মহোভিঃ ৪০৷ উষাসানা বৃহতী বৃহন্তং পয়স্বতী সুদুঘে শারমিন্দ্র। তন্তুং ততং পেশসা সংবয়ন্তী দেবানাং দেবং যজতঃ সুরু৪১। দৈব্যা মিমানা মনুষঃ পুরুত্ৰা হোতারাবিং প্রথবা সুবাচা। মূর্ধন্ যজ্ঞস্য মধুনা দুখানা প্রাচীনং জ্যোতিবিষা বৃথাতঃ ৪২৷ তিম্রো দেবীহবিষা বর্ধমানা ইন্দ্ৰং জুষাণা জনগো ন পত্নীঃ। অচ্ছিন্নং তন্তুং পয়সা সরস্বতী দেবী ভারতী বিশ্বর্তিঃ ॥৪৩৷৷ ধৃষ্টা দধঞ্ছত্মমিন্দ্রায় বৃষ্ণেহপাকোহচিৰ্যশসে পুরূণি। বৃষা যজষণং ভূরিরে মূর্ধন যজ্ঞস্য সমনঞ্জু দেবান্৪৪৷ বনস্পতিরসৃষ্টো ন পাশৈত্মন্যা সমঞ্জঙুমিতা ন দেবঃ। ইন্দ্ৰাস্য হব্যৈর্জঠরং পৃণানঃ স্বদাতি যজ্ঞং মধুনা ঘৃতেন৷৪৫৷৷ স্তোকানামিং প্রতি শূর ইন্দ্রো বৃষায়মাণো বৃষভস্তুরাট। ঘৃতষা মনসা মোদমানাঃ স্বাহা দে অমৃতা মায়স্তাম্।৪৬৷৷ আ যাত্বিন্দ্ৰোহবস উপ ন ইহ স্তুতঃ সধমদস্তু শূরঃ। বাবৃধানস্তবিষীর্যস্য পূর্বী দৌর্ন ক্ষত্রমভিভূতি পুষ্যাৎ॥৪৭৷ আ ন ইন্দ্রো দূরাদা ন আসাদভিষ্টিদবসে যাসদুগ্রঃ। ওজিষ্ঠেভিপতিবজ্ৰবাহুঃ সঙ্গে সমৎসু তুবণি পৃত৷৪৮৷৷ আ ন ইন্দ্রো হরিভির্যাত্বচ্ছার্বাচীনোহবসে রাধসে চ। তিষ্ঠাতি বর্জী মঘবা বিরশীমং যজ্ঞমনু নো বাজতৌ৪৯৷ ত্রাতারমিন্ত্রমবিতারমিন্দ্রং হবে হবে সুহবং শূরমি। হায়ামি শক্রং পুরস্ফুতমিং স্বস্তি, নো মঘবা ধাত্বি।৫০৷ ইন্দ্রঃ। সুত্ৰামা স্ববা অবোভিঃ সুমৃজীকো ভবতু বিশ্ববেদাঃ। বাধতাং ষো অভয়ং কৃপোতু সুবীর্যস্য পতয়ঃ স্যাম৷৫১৷ তস্য বয়ং সুমতৌ যজ্ঞিয়স্যাপি ভদ্রে সৌমনসে স্যাম। স সুত্ৰামা স্ববা ইন্দ্রো অস্মে আরাচ্চিদ দ্বেষঃ সতর্যযোতু।৫২। আ মন্দ্রৈবিন্দ্র, হরিভিষাহি ময়ুররোমভিঃ। মা ত্বা কে চিন্নি যম বিং ন পাশিনোহতি ধম্বেব তা ইহি।৫৩৷৷ এবেদিং বৃষণং বজ্ৰবাহুং বসিষ্ঠাসসা অভ্যৰ্চন্ত্যর্কৈঃ স ন স্তুততা বীরবদ্ধাতু গোমদূয়ং পাত স্বস্তিভিঃ সদন নঃ ॥৫৪৷ সমিঘদ্ধা অগ্নিরশ্বিনা তপো ঘৰ্মো বিরাট সুতঃ। দুহে ধেনুঃ সরস্বতী সোমং শুক্রমিহেন্দ্রিয়৷৷৫৫৷৷ তনুপা ভিষজা সুতেহশ্বিনোভা সরস্বতী। মধ্বা রজাংসীন্দ্রিয়মিন্দ্রায় পথিভিব৷৫৬৷৷ ইন্দ্রায়ৈং সরস্বতী নরাশংসেন নগ্নহু। অধাতামশ্বিনা মধু ভেষজং ভিষজা সুতে৷৫৭৷৷ আজুহানা সরস্বতীন্দ্ৰায়েন্দ্রিয়াণি বীর্য। ইড়াভিরশিনাবিষং সমূর্জং সং রয়িং দধুঃ ৫৮৷৷ অশ্বিনা নমুচেঃ সুতং সোমং শুক্রং পরিসুত। সরস্বতী তমাভরদ্বৰ্হিন্দ্রোয় পাতবে।৫৯৷ কবষ্যো ন ব্যচস্বতীরশ্বিভ্যাং ন দূরো দিশঃ। ইন্দ্রো ন রোদসী উভে । দুহে কামা সরস্বতী ৷৬০৷ উষাসানমশ্বিনা দিবেন্দ্রং সায়মন্দ্রিয়ৈঃ। সঞ্জানানে সুপেশসা সমঞ্জাতে সরস্বত্যা॥৬১। পাতং নো অশ্বিনা দিবা পাহি নক্তং সরস্বতি। দৈব্যা হোতারা ভিষজা পাতমিং সচা সুতে।।৬২। তিস্নস্ত্রেধা সরস্বত্যশিনা ভারতীড়া। তীব্রং পরিশ্রুতা সোমমিন্দ্রায় সুষুবুর্মদ৷৬৩৷৷ অশ্বিনা ভেষজং মধু ভেষজং নঃ সরস্বতী। ইন্দ্রে ত্বষ্টা যশঃ শিয়ং রূপং রূপমধুঃ সুতে।।৬৪৷৷ ঋতুথেন্দ্রো : বনস্পতিঃ শশমানঃ, পরিতা। কীলালমশ্বিভ্যাং মধু দুহে ধেনুঃ সরস্বতী ॥৬৫৷৷ গোভির্ন সোমমশ্বিনা মাসরেণ পরিষু। সমধাতং সরস্বত্যা স্বাহেন্দ্রে সুতং মধু৷৬৬৷৷ অশ্বিনা হবিরিয়িংনমুচের্ধিয়া সরস্বতী। আ শুক্ৰমাসুরাসুমঘমিন্দ্রায় জজিরে৷৬৭৷৷ যমশ্বিনা সরস্বতী হবিষেন্দ্রমবর্ধয়। স বিভেদ বলং মঘং নমুচাবাসুরে সচা ৷৷৬৮৷৷ তমিং পশবঃ সচাশ্বিনোভা সরস্বতী। দধনা অভ্যষত হবি যজ্ঞ ইন্দ্রিয়ৈঃ ৬৯৷৷ য ইন্দ্র ইন্দ্রিয়ং দধুঃ সবিতা বরুণো ভগঃ। স সুত্ৰামা হবিম্পতির্যজমানায় সশ্চত৷৷৭০৷৷ সবিতা বরুণো দধদ্যজমানায় দাশুষে। আদত্ত নমুচে বসু সুত্রামা বলমিন্দ্রিয়৷৷৭১৷ বরুণঃ ক্ষত্রমিয়িং ভগেন সবিতা শিয়। সুত্রামা যশসা বলংদনা যজ্ঞমাশত।৭২৷৷ অশ্বিনা গোর্ভিরিন্দ্রিয়মশ্বেভিবীর্যং বল। হবিষেং সরস্বতী যজমানবধয়৷৭৩৷ তা নাসত্যা সুপেশসা হিরণ্যবর্তনী নরা। সরস্বতী হবিষ্মতীন্দ্র কর্মসু নোহবত৷৷৭৪৷৷ তা ভিষজা সুকর্মণা সা সুদুঘা সরস্বতী। স বৃত্ৰহা শততুরিন্দ্রায় দধুরিন্দ্রিয়৷৭৫৷৷ যুবং সুরামশ্বিনা নমুচাবাসুরে সচা। বিপিপানাঃ সরস্বতীন্দ্ৰং কৰ্মাবত৷৭৬৷৷ পুত্রমিব । পিতরাবশ্বিনোভেন্দ্রাবথুঃ কাব্যৈর্দংসনাভিঃ। যত্রুরামং ব্যপিবঃ শচীভিঃ সরস্বতী ত্বা মঘবন্নভিষ্ণ৷৭৭৷৷ যস্মিন্নশ্বাস ঋষভাস উক্ষণো বশা মেষা অবসৃষ্টাস আহুতাঃ। কীলালপে সোমপৃষ্ঠায় বেধসে হৃদা মতিং চারুমগ্নয়ে।৭৮অহাব্যয়ে হবিরাস্যে তে সুচীব ঘৃতং চম্বীব সোমঃ। বাজসনিং রয়িমম্মে সুবীরং প্রশস্তং ধেহি, যশসং বৃহন্ত৷৷৭৯। অশ্বিনা তেজসা চক্ষুঃ প্রাণেন সরস্বতী বীর্য বাঁচেন্দ্রো বলেনেন্দ্রায় দধুরিন্দ্রিয়৷৮০৷ গোমদূ ষু সত্যাশ্বাবদ্যামশিনা। বৰ্তী রুদ্রা নৃপায্য৷৮১ন যৎপরো নাস্তর আদধর্ষধৃষৎসু। দুঃশংসো মর্তো রিপুঃ ৮২। তা ন আ বোঢ়মশ্বিনা রয়িং পিশঙ্গসদৃশ। ধিষ্ণ্যা বরিবোবিদ৷৷৮৩৷ পাবকা নঃ সরস্বতী বাজেভিবাজিনীবতী। যজ্ঞং বন্ধু ধিয়াবসুঃ৮৪৷৷ চোদ্দয়িত্ৰী সূতানাং চেতন্তী সুমতীনা। যজ্ঞং দধে সরস্বতী ॥৮৫৷৷ মহো অর্ণঃ সরস্বতী প্রচেতয়তি কেতুনা। ধিয়ো বিশ্বা বি রাজতি।৮৬৷৷ ইন্দ্রা, যাহি চিত্রভানো সুতা ইমে ত্বায়বঃ। অন্বীভিস্তনা পূতাসঃ ৮৭৷ইন্দ্রা যাহি ধিয়েষিত বিপ্রহৃতঃ সুতারতঃ। উপব্ৰহ্মাণি বাঘতঃ৮৮৷৷ ইন্দ্রা যাহি তৃতুজান উপব্ৰহ্মাণি হরিবঃ। সুতে দধিবনশ্চনঃ ৮৯৷ অশ্বিনা পিবতাং মধু সরস্বত্যা সজোষসা। ইন্দ্ৰঃ সুত্ৰামা বৃত্ৰহা জুবন্তাং সৌম্যং মধু।৯০।

[কোণ্ডিকা–৯০, মন্ত্র–১০০]

.

মন্ত্ৰার্থঃ– (উত্তরবেদি এবং দক্ষিণবেদির মধ্যভাগে একটি উচ্চ মঞ্চ স্থাপনীয়)–হে আসন্দি! তুমি ক্ষত্রিয়ের যোনি। (উৎপত্তি স্থান) এবং ক্ষত্রিয়ের নাভি (নহনং বা বন্ধন) স্থান। (আসন্দীর উপর কৃষ্ণাজিন বিস্তীর্ণ করে)

১। হে কৃষ্ণাজিন! তোমাকে আসন্দী যেন হিংসিত না করে এবং তুমিও আসন্দীকে হিংসিত করো না।

২। ব্রতধারী এবং সুকর্মা রাজা বরুণ সাম্রাজ্যের নিমিত্ত প্রজাগণে স্থিত হয়েছেন। (আসন্দীর উপর উপবিষ্ট যজমানের পদের নিম্নে রৌপ্যের রুক্স (অর্থাৎ মণ্ডলাকার ভূষণবিশেষ) এবং মস্তকের উপরে স্বর্ণের রুক্স স্থাপনীয়) হে রুক্স! তুমি আমাকে অকালমরণ হতে রক্ষা করো। হে স্বর্ণরুক্স! তুমি আমাকে বিদ্যুৎ-পতন (বিদ্যুৎপাত) হতে রক্ষা করো।

৩। হে যজমান! সবিতাদেবের অনুজ্ঞায় বর্তমান, আমি অশ্বিন্দ্বয়ের বাহুযুগল এবং পূষার হস্তদ্বয়ের দ্বারা তোমাকে অভিসিঞ্চিত করছি। আমি তোমাকে অশ্বিদ্বয়ের বৈদ্যকর্মের কারণ তেজ এবং ব্রহ্মবৰ্চস্ প্রাপ্তির নিমিত্ত আসিঞ্চিত করছি। সরস্বতীর ভৈষজ্যের (ভিষজ ক্রিয়ার) দ্বারা তোমাতে বীর্য তথা অন্ন অন্নভোগের সামর্থ্যের নিমিত্ত আসিঞ্চিত করছি। তোমাতে ইন্দ্রের ইন্দ্রিয়বলের দ্বারা বল লাভের নিমিত্ত, শ্ৰী বা সমৃদ্ধির নিমিত্ত, তথা যশ, প্রাপ্তির নিমিত্ত আসিঞ্চিত করছি৷৷

৪। (অধ্বর্যু কর্তৃক যজমানকে স্পর্শ করণীয়)–হে যজমান! তুমি প্রজাপতিস্বরূপ। তুমি প্রজাপতিতম। প্রজাপতির পদের নিমিত্ত এবং প্রজাপতি হওয়ার নিমিত্ত আমি তোমাকে স্পর্শ করছি। (যজমান এই লোকগুলির নাম উচ্চারণ পূর্বক আহ্বান করছেন)–হে সুশ্লোক (অর্থাৎ শোভনকীর্তিশালী)! হে সুমঙ্গল (অর্থাৎ সুকল্যাণকারী)! হে সত্যরাজ (অর্থাৎ অনশ্বর রাজা)! তোমরা এইস্থানে আমার নিকটে আগত হও।

৫। (যজমান কর্তৃক নিজেকে ইন্দ্রস্বরূপ জ্ঞান করে বা সম্মানিত করে আপন অঙ্গকে স্পর্শ করণীয়)–আমার মস্তক শ্রীযুক্ত (অর্থাৎ শোভাবর্ধনকারী), আমার মুখ যশোযুক্ত (অর্থাৎ যশ বর্ধনকারী) হোক। আমার কেশ ও শ্মশ্রু (দাড়ি) দীপ্তিযুক্ত; হোক আমার প্রাণ (মুখবায়ু) অমৃতময় হোক; আমার চক্ষু সম্রাট (অর্থাৎ সম্যক্‌ বিরাজিত) হোক, এবং আমার শ্রোত্র বিরাট (বিবিধরূপে রাজমান) হোক।

৬। আমার জিহ্বা কল্যাণী হোক, আমার বাণী মহতী হোক, মন মন্পূর্ণ (ক্রোধফলদায়ী) হোক। আমার ভাব স্বরাট (স্বরাজ্যক্ষম) হোক। আমার অঙ্গুলিগুলি. মোদ (আনন্দস্বরূপ) ও অঙ্গ প্রমোদ (হর্ষযুক্ত) হোক। শত্রুকে অভিভূত করার বল (শক্তি) আমার মিত্র হোক।৷

৭। আমার বাহুতে ইন্দ্রের বল হোক, আমার হস্তদ্বয় বীরকর্মকারী হোক! আমার আত্ম ও হৃদয় ক্ষত্রিয় কর্মের দ্বারা ব্যাপ্ত হোক৷৷

৮। আমার পৃষ্ঠদেশ একদেশের (অর্থাৎ এক রাষ্ট্রের) ন্যায় সকলের আধার (আশুয়ভূত) হোক। আমার উদর, আমার স্কন্ধ, আমার গ্রীবা (ঘাড়), আমার কণ্ঠদেশ, আমার কটিদেশ (কোমর), আমার উরুদেশ, আমার অস্থি (হাড়), আমার মুষ্টিপ্রদেশ এবং আমার জানুদ্বয় সহ সমগ্র অঙ্গ প্রজার ন্যায় (পোষ্য) হোক।

৯। আমার নাভি জ্ঞানস্বরূপ হোক, আমার পায়ু বিজ্ঞানস্বরূপ হোক, আমার পত্নীর জননেন্দ্রিয় (যোনি) সুভগ (অর্থাৎ সুসন্তানপ্রদ) হোক, আমার অণ্ডকোষ আনন্দ নন্দ এবং ভগ-শিশ্ন সৌভাগ্যযুক্ত হোক। আমি আপন জঙঘাদ্বয় ও পদদ্বয়ের দ্বারা প্রজাগণের মধ্যে রাজা হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি৷৷

১০। আমি ক্ষত্রিয় জাতিতে, রাষ্ট্রে, অশ্বসমূহে, গো-সমূহে, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে, আত্মায়, প্রাণসমূহে, সমৃদ্ধিতে, দাবা পৃথিবীতে ও যজ্ঞে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছি।

১১৷ সুধন সম্পন্ন দেবতা তিন, একাদশ ও ত্রয়োস্ত্রিংশ সংখ্যক। বৃহস্পতির পৌরোহিত্যশালী সেই দেবতাগণ সবিতাদেবের অনুজ্ঞায় বর্তমান আছে। দ্যোতমান সেই দেবতাগণ আমাকে দুঃখ হতে রক্ষা করুক।

১২। প্রথম দেবতা দ্বিতীয় দেবতার সাথে, দ্বিতীয় দেবতা তৃতীয় দেবের সাথে, তৃতীয় দেবতা সত্যের সাথে, সত্য যজ্ঞের সাথে, যজ্ঞ যজুর্মন্ত্রের সাথে, যজুঃ সামমন্ত্রের সাথে, সাম ঋমন্ত্রের সাথে, ঋক্‌সমূহ পুরোনুবাকার সাথে, পুরোনুবাক্যা যাজ্যার সাথে, যাজ্যা বষট্‌কারের সাথে, বষট্‌কার আহুতি সমূহের সাথে সঙ্গত হয়ে আমার বৃদ্ধি সাধিত করুক। আহুতিগুলি আমার মনোরথকে সমৃদ্ধ করুক। আমি ভূঃ হুতমিদং স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি৷৷

১৩। আমার রোমসমূহে প্রযত্ন আছে (অর্থাৎ যজমানের অসংখ্য রোমাবলীর মতো, সকলের প্রতি তার যত্নপরতা আছে)। আমার ত্বক আনতি (অর্থাৎ প্রাণীবর্গকে অবনমিত করে) ও আগতি (প্রাণীগণকে আগমন করায়)। আমার মাংস উপনতি (প্রাণীবর্গকে শরণাগত করে); আমার অস্থি ধনস্বরূপ এবং আমার মজ্জা আনতি। (লোকে এইগুলি দর্শন করে আমার সম্মুখে আকৃষ্ট হয়ে থাকে)।

১৪। হে দেবগণ! আমার যা কিছু দেবাপরাধ (দেবগণের প্রতি জ্ঞানে ও অজ্ঞানে পাপ) করেছি, অগ্নি সেই সমগ্র পাপ হতে আমাদের মুক্ত করুক।

১৫৷ যদি দিবা বা রাত্রে পাপ করে থাকি, তবে সেই সমগ্র পাপ হতে বায়ু আমাদের রক্ষা করুক।

১৬৷ যদি জাগরণে বা নিদ্রাকালে (স্বপ্নের মধ্যে) আমরা কোন পাপ করে থাকি, তবে সূর্য সেই সমস্ত পাপ হতে আমাদের মুক্ত করুক।

১৭। গ্রামে, অরণ্যে, সভায়, ইন্দ্রিয় বিষয়ে, শূদ্র ও বৈশ্যের বিষয়ে আমরা যে পাপ করেছি এবং পত্নী ও যজমানের মধ্যে একের ধর্ম বিষয়ে বিদ্যমান থেকে (অর্থাৎ প্রত্যেকের ধর্ম সম্বন্ধে) যে পাপ আমরা করেছি, হে ঘট (অর্থাৎ যজ্ঞে স্থাপিত কুম্ভ)! তুমি সেই সেই পাপকে নাশকারী হও।

১৮৷ যে জল, তা অহিংসনীয়। হে বরুণ! যদি আমরা অহিংস্য হয়েও (অর্থাৎ হিংসিত না হয়েও) আপন পাপবশতঃ অভিশপ্ত হয়ে থাকি, তবে তুমি সেই পাপ হতে আমাদের মুক্ত করো। হে অবভৃথ (প্রধান যজ্ঞের অঙ্গীভূত যজ্ঞ)! হে নিচুম্পূণ (যে নিম্নমুখ পাত্র নিঃশব্দে জলে পূর্ণ হয়ে যায়)! যদিও তুমি নিতান্ত গমনশীল, তথাপি এই সময় নিতান্ত মন্দগতি হও, কেননা আমার আপন ইন্দ্রিয়-লাম্পট্যে দেবগণের প্রাপ্য হবির্ভাগ প্রদানের ত্রুটিজনিত পাপসমূহ এবং আপন মনুষ্যের দ্বারা অন্য মনুষ্যের প্রতি কৃত পাপসমূহ আমাকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। হে যজ্ঞদেব! সেই সেই পাপের ক্রোধ হতে তুমি আমাকে রক্ষা করো। অত্যন্ত বিপরীত ফলদায়ী সংসার-লক্ষণ বন্ধ হতেও তুমি আমাদের মুক্তি প্রদান করো।

১৯। সমুদ্রের অন্দরস্থিত জলে তোমার হৃদয় আছে। তোমাতে ওষধিসমূহ ও জল প্রবিষ্ট হোক। আমাদের নিমিত্ত জল ও ওষধিসমূহ সুমিত্র সদৃশ হোক। যারা আমাদের দ্বেষ করে এবং আমরাও যাদের দ্বেষ করি, তাদের নিমিত্ত জল ও ওষধিসমূহ দুষ্ট মিত্ৰসমান হোক। (অবভৃথ স্থান থেকে যজমান কর্তৃক উত্তর দিকে দুপদক্ষেপে অগ্রসর হয়ে হাতে জল গ্রহণ করে যে দিকে তার শত্রু আছে, সেই দিকে সেই জল নিক্ষেপণীয়)৷

২০। যেমন চলতে চলতে কাষ্ঠনির্মিত পাদুকা (খড়ম) ত্যাগ করলে পাদুকাসম্বন্ধী দোষ (বা কষ্ট) হতে ছাড় পাওয়া যায়, এবং স্বেদযুক্ত হয়ে স্নান করে মল (ময়লা) হতে শুদ্ধ হওয়া যায় এবং যে প্রকারে (কম্বলময়) পূত পবিত্রে আজ্য (ঘৃত)। শুদ্ধীকৃত হয়, সেই প্রকারে জল আমাকে পাপ হতে শুদ্ধ করে দিক৷

২১৷ উত্তম সূর্যের প্রকাশকে দর্শন করে আমরা অন্ধকারের পরপারে উত্তীর্ণ হয়েছি। দেবলোকে সর্বোত্তম জ্যোতি সূর্যকে (পরব্রহ্মকে) প্রাপ্ত হয়েছি।

২২। হে আবহনীয় অগ্নি! আজ আমি জলকে আচরণ করেছি (অর্থাৎ জলে স্নান করেছি)। আমি জলে সিক্ত হয়ে আছি। হে অগ্নি! আমি জলসিক্ত হয়েই তোমার নিকট আগমন করেছি। তোমার নিকট আগত আমাকে তুমি ব্রহ্মবৰ্চস, সন্তান ও ধনে সংযোজিত করো।

২৩। হে সমিধ (অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত যজ্ঞকাষ্ঠ)!তুমি দীপ্ত হও। তুমি ইন্ধনস্বরূপ। আমি তোমার প্রভাবে অভিবৃদ্ধি প্রাপ্ত হবো। হে সমিধ!তুমি সমিধা (অর্থাৎ তেজঃ)-রূপ। তুমি আমাতেও তেজঃ সঞ্চারিত করো। (ঘৃতাহুতি প্রদান)–পৃথিবী সম্যক আবর্তন করছে; উষা ও সূর্যও (সম্যক্ আবর্তন করছে) এই সম্পূর্ণ জগতও সমাবর্তনশীল। আমি বৈশ্বানর-জ্যোতি হবো। (অর্থাৎব্রহ্মরূপ প্রাপ্ত হবো)। আমি প্রভূত কামনাসমূহের সম্পূর্ণতা প্রাপ্ত হবো। ভূঃ স্বাহা মন্ত্রে (অর্থাৎ ভুবনমাত্রেরই সম্বন্ধিত স্বাহাযুক্ত মন্ত্রে) আমি ব্ৰহ্মকে এই আহুতি প্রদান করছি৷

২৪। হে ব্রতপালক আহবনীয় অগ্নি! আমি তোমাতে সমিধসমূহ প্রদান করছি। আমি তোমার, কৃপায় ব্রত ও শ্রদ্ধাকে লাভ করব। আমি তোমাকে প্রদীপ্ত করছি। সমিধ-আধানের দ্বারা এক্ষণে আমি দীক্ষিত হয়ে গিয়েছি৷৷

২৫৷ যে ব্রহ্মলোকে ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় এক সাথে বিচরণশীল হয়ে থাকে এবং যে। স্থানে অগ্নির সাথে অন্য দেবতাও বিদ্যমান, আমি সেই পুণ্যের দ্বারা লব্ধ ব্রহ্মলোককে জ্ঞাত হবো–প্রাপ্ত হবো৷৷

২৬। যেস্থানে ইন্দ্র ও বায়ু সহচর হয়ে সঞ্চারণ (বা বিচরণ) করে থাকে এবং যে স্থানে কোন ক্ষুধার্ত নেই (অর্থাৎ অন্নাভাব নেই), আমি সেই পুণ্যলোককেই জানবপ্রাপ্ত হবো।

২৭। হে সুরা! সোমের অংশু (বা ভাগের) সাথে তোমার অংশু (বা ভাগ) সম্পৃক্ত হোক, এবং তোমার পর্বের (বা পরুষের) সাথে সোমের পর্ব সংযুক্ত হোক; তোমার গন্ধ আমাদের নিমিত্ত সোমকে আলিঙ্গিত করুক এবং তোমার অনাশমান্ (অচ্যুত ও অনশ্বর) রস সোমরসের সাথে সঙ্গত হোক৷

২৮। সোমরসকে সুরায় সিঞ্চিত, পরিসিঞ্চিত এবং উৎসিঞ্চিত করে তাকে পবিত্র করা হয়। পীতবর্ণা সুরার মদে মত্ত হয়ে ইন্দ্ৰ শত্ৰুগণকে কে তুই? তুই কারা? ইত্যাদি এইরকম তিরস্কার-বাক্য বলে থাকে৷৷

২৯। আমাদের যে পুরোডাশে ধান্যজাত করম্ভ (দধিমিশ্রিত শত্রু বা ছাতু), যবজাত শত্রু, অপুপ (পিষ্ট) ও উথবচনবন্ত (অর্থাৎ উথ মন্ত্র বর্তমান), হে ইন্দ্র! তুমি তা প্রাতঃকালে সেবন করো।

৩০। হে ঋত্বিকগণ! পুনঃ পুনঃ বৃত্রকে হননকারী ইন্দ্রের উদ্দেশ্যে তোমরা সেই সামগান করো। যে সামের দ্বারা যজ্ঞের বৃদ্ধি সাধনশালী দেবগণ ইন্দ্রের নিমিত্ত জাগরণশীল জ্যোতিকে উৎপন্ন করেছিলেন।

৩১৷ হে অধ্বর্যুগণ! তোমরা প্রস্তরের দ্বারা চূর্ণ করে (অর্থাৎ থেতো করে) অভিষবকৃত সোমরসকে দশাপবিত্রে পরিশ্রত করে (অর্থাৎ হেঁকে) নাও; সেটি তোমরা ইন্দ্রের পানের নিমিত্ত শোধন করো।

৩২। যে পরমাত্মা সকল প্রাণীর স্বামী (অর্থাৎ পালক), এবং যাঁতে এই সকল লোক-লোকান্তর অধিষ্ঠিত আছে, যিনি মহানগণ অপেক্ষাও মহান ও সামর্থ্যবান, সেই পরব্রহ্মের অনুশাসনের দ্বারা, হে গ্রহ! আমি তোমাকে গ্রহণ করছি। পরব্রহ্মস্বরূপ (বা পরমাত্মাভাব প্রাপ্ত) আমিই আমার নিমিত্ত তোমাকে গ্রহণ করছি৷৷

৩৩৷ হে গ্রহ! তুমি উপযাম পাত্রের দ্বারা গৃহীত হয়েছ। আমি তোমাকে অশ্বিদ্বয়, সরস্বতী, এবং সুরক্ষক (সুত্ৰাতা) ইন্দ্রের নিমিত্ত গ্রহণ করছি। হে গ্রহ! এই তোমার স্থান। আমি তোমাকে অশ্বিদ্বয়, সরস্বতী এবং সুরক্ষক ইন্দ্রের নিমিত্ত এইস্থানে প্রতিষ্ঠিত করছি৷৷

৩৪। হে গ্রহ! তুমি আমার প্রাণের পালক; অপানের পালক; চক্ষুর পালক এবং শ্রোত্রের পালক। তুমি আমার বাণীর (অর্থাৎ বাক্-ইন্দ্রিয়ের) সর্বভৈষজ্য (অর্থাৎ সকলপ্রকার! ভেষজ)। তা হতে (অর্থাৎবা ইন্দ্রিয় থেকে) অনৃত বা মিথ্যাকে দূরীভূত করে সৎকর্মে নিয়োজকশালী তুমি। তুমি আমার মনের সৎপ্রেরক ৷

৩৫। হে গ্ৰহ! অশ্বিদ্বয়, সরস্বতী ও সুত্রাতা ইন্দ্রের দ্বারা তুমি দৃষ্ট হয়েছ এবং ঋত্বিগণের দ্বারা উপহৃত তোমাকে আমি ভক্ষণ করছি।

৩৬। অপূর্ব কর্মসমূহের সম্পাদনশীল এবং সোমরসপানের অভিবৃদ্ধি প্রাপ্তশীল ইন্দ্র উষার মুখকালে (অর্থাৎ প্রত্যুষে) পূর্ব দিগন্তে প্রথম আগমনশীল (সূর্যের) জ্যোতির সময় প্রবুদ্ধ হয়েছেন। তেত্রিশ সংখ্যক দেবতার সাথে বজ্ৰবাহু ইন্দ্র বৃত্রকে হত্যা করেন এবং নদিসমূহের বন্ধ দ্বার উন্মুক্ত করেন ৷

৩৭। ঋত্বিকগণের দ্বারা প্রশংস্যমান, শূর, পুত্র ইত্যাদির দ্বারা স্বশরীরসম্পন্ন বা বংশ পাতিত না করণশীল, যজ্ঞের বিধানকে প্রতিমিত করণশীল, পশুবপার সাথে যুক্ত, গাভীর দুগ্ধ ইত্যাদি ও মধুর সাথে হবিকে সংমিশ্রিত করে, স্বর্ণখণ্ডের দ্বারা দক্ষিণা প্রদান করে আনন্দ দানশীল ও প্রকৃষ্ট চিত্তসম্পন্ন যজমান ইন্দ্রের যজন করছেন৷

৩৮। ঋত্বিকবৃন্দের দ্বারা প্রশংসিত, হরি নামক অশ্বযুক্ত, অভিগন্তা (চারিদিকে বিস্তৃত যজ্ঞবান্), আহ্বায়মান, সোমহবির হেতুতে বল ব্যক্ত কারক, অসুরপুরীকে দহনকারী, গাভীগণকে ব্রজে তাড়নাকারী (বা গোত্রভিৎ–অর্থাৎ মেঘ বিদীর্ণ করে বৃষ্টি আনয়নশীল), এবং বভ্রুবাহু (অর্থাৎ বাহুতে ব্রজধারী) ইন্দ্র আমাদের যজ্ঞকে প্রতিপূর্বক সেবন করতে এইস্থানে আগমন করুক৷

৩৯। হরি নামক অশ্বশালী, উরুপ্রথা (অর্থাৎ বিস্তীর্ণ খ্যাতি), যজ্ঞভূমির উপদেশকর্তা, বিস্তীৰ্যমান, সুখপ্রদ ও আদিত্যবর্গ তথা বসুগণের সাথে প্রীতি সহকারে সেবিত দর্ভাসনকে সেবন পূর্বক ইন্দ্র বেদির পূর্বভাগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন ৷

৪০। শব্দকারী যজ্ঞদ্বার ভঙ্গ হয়ে সেচনসমর্থ ইন্দ্রকে প্রাপ্ত হোক (অর্থাৎ ইন্দ্র যজ্ঞদ্বার দিয়ে প্রবিষ্ট হোক); যেমন সুপত্নী (সাধ্বী) স্ত্রীগণ (স্বামীর প্রতি ধাবিতা হন)। হে দ্বারদেবিগণ! ইন্দ্রের আগমনার্থে, বীর ঋতুগণের সাথে যুক্তা এবং উৎসবের কারণে পরম বিস্তার প্রাপ্তিশালিনী তোমরা সেই বীর ইন্দ্রের নিমিত্ত পূর্ণভাবে উন্মুক্ত হয়ে যাও।

৪১। মহতী শিশির জলসম্পন্না, সুষ্ঠু দোঞ্জী(দোহনযোগ্যা), সুন্দর রুক্সধারিণী এবং বিস্তারিত যজ্ঞ বা কালতন্তুর দ্বারা শ্বেত কৃষ্ণ রূপে বয়নীতা (বুনন করা) বস্ত্রের ন্যায় উষা ও রাত্রি সেই মহান্‌, শূর ও দেব-দেব (দেবতাগণেরও দেবতাস্বরূপ) ইন্দ্রকে যজন করছে৷৷

৪২। দেবতা হওে হোতা, যজ্ঞের পরিমাপ করণশালী, মানব হোতা অপেক্ষা প্রথমভাবী প্রধানভূত, ইন্দ্রের যজ্ঞকে প্রধান অঙ্গে স্থাপিত করণশালী এবং সুন্দর বাণীযুক্ত অগ্নি ও বায়ু পূর্ব দিকে বর্তমান আবহনীয় নামের জ্যোতিকে মধুর মৃত ইত্যাদি হবির দ্বারা বর্ধন করছে৷৷

৪৩। হবির দ্বারা বৃদ্ধি প্রাপ্তশীলা, সাধ্বী স্ত্রীর ন্যায় ইন্দ্রকে সেবাকারিণী এবং সর্বত্রগতি ইড়া, সরস্বতী ও ভারতী (বাক্-দেবীর তিন রূপ ও নাম) তিন দেবী যজ্ঞ-তন্তুকে অচ্ছিন্ন করুক৷

৪৪। চতুর, যশস্বী ও সেক্তা (সেচনকর্তা বা কর্মবক) ইন্দ্রের নিমিত্ত বহুবলধারী, সর্বত্রগতি, বর্ষক তথা বর্ষক ইন্দ্রের পূজন করণশালী ও প্রভূতবীর্য ত্বষ্টা যজ্ঞের শিরঃস্থানীয় আহবনীয় যজ্ঞে দেবগণকে যজন করেন (বা ভোজন করান)।

৪৫। শর্মিতা (অর্থাৎ কসাই) যেমন যূপবন্ধনসমূহে বলির নিমিত্ত পশুকে স্বয়ংই সংযোজিত করে থাকে, সেই রকম যুপরূপ বনস্পতি দেবতা সেই পশুহব্যে ইন্দ্রের উদর পূর্ণ করে যজ্ঞকেও মধুর ঘৃতে সুস্বাদু করে থাকে৷

৪৬। বপাবিন্দু রূপী সোমকে পান করে বৃষসদৃশ আচরণশীল, বর্ষক, শূর ও শত্রুসেনাকে শীঘ্রতার সাথে বিনাশকারী ইন্দ্র প্রসন্ন হোক। বিন্দুমাত্র ঘৃতেই মনে প্রসন্ন-সম্পন্ন হবির্ভুক ও অমর দেবতাগণও রপাসোমে (ঘৃতযুক্ত সোমে) মদমত্ত হোক।

৪৭। আমাদের রক্ষার নিমিত্ত ইন্দ্র এইস্থানে আগমন করুক। আমাদের দ্বারা প্রশংসিত সেই শূর, যজ্ঞে সহভোক্তকারী হোক (অর্থাৎ আমাদের সাথে সোমরস পান করুক)। যে ইন্দ্রের পূর্ব বীর্যকর্ম দুলোকের সমান স্তুত্য; বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে সেই ইন্দ্র আমাদের শত্রুগণকে অভিভবকারী (অভিভবনশীল) ক্ষত্রিয়গণকে পুষ্ট করুক৷৷

৪৮। অভীষ্টপ্রদ এবং উগ্র সেই ইন্দ্র রক্ষার নিমিত্ত সুদূর দ্যুলোক ইত্যাদি হতে এবং সমীপৰ্বতী পৃঙ্খীলোক ইত্যাদি হতে আমাদের নিকটে আগত হোক। মনুষ্যগণের পালক এবং বজ্ৰবাহু ইন্দ্র যুদ্ধ বা অনেক যুদ্ধে শত্ৰুত্ব আচরণশীলদের আপন বলবীর্যে শীঘ্র বিনষ্ট করে দিতে পারঙ্গম।

৪৯। রক্ষা ও হবিরান্নের নিমিত্ত, এই ইন্দ্ৰ আপন হরি নামক অশ্বের দ্বারা আমাদের দিক অভিমুখ হয়ে শীঘ্র আগত হোক। অন্নপ্রাপ্তির এই যুদ্ধে বজ্রধারী, ধনবান্ ও বহুভাষী (অর্থাৎ মহা) এই ইন্দ্র আমাদের এই যজ্ঞের নিকট উপস্থিত থাকুক (একে রক্ষা করুক)।

৫০। রক্ষক ইন্দ্রকে এবং প্রতি যুদ্ধে (বা যজ্ঞে) আহ্বানীয় ইন্দ্রকে; সর্বসমর্থ তথা বহুতো জনের দ্বারা আহ্তশালী ইন্দ্রকে আমি আহ্বান করছি। ধনবান্ এই ইন্দ্র আমাদের অবিনাশ প্রদান করুক (অর্থাৎ আমরা যেন বিনাশ প্রাপ্ত হই, তেমন করুক)।

৫১। সুরক্ষক সর্বজ্ঞ ও ধনরা ইন্দ্র আপন রক্ষণের দ্বারা আমাদের সুখ দানকারী হোক। সেই বিশ্ববেদা ইন্দ্র আমাদের বাধিত করুক তথা আমাদের নির্ভয়তা প্রদান করুক। তার দয়াতে আমরা সুষ্ঠু বলশালী হবো ৷

৫২। আমরা সেই যজনীয় দেবতার সৎ-বুদ্ধি তথা মনের প্রসন্নতায় স্থিত থাকি। সে সুরক্ষক ও ধনশালী। ইন্দ্র আমাদের শত্রুগণকে পৃথক্ পূর্বক বিনাশ করুক।

৫৩। ময়ূরের পালক যেমন শ্যামবর্ণ, তেমনই মন্দমতি (বা বর্ণশালী) হরি নামক অশ্বের দ্বারা, হে ইন্দ্র! তুমি আমাদের যজ্ঞে আগমন করো। আমাদের যজ্ঞে আগমনের সময় তোমাকে কোন দুষ্ট রাক্ষস ইত্যাদি কোথাও যেন ধরে না ফেলে; যেমন ব্যাধ (তার জলে) পক্ষীকে ধরে থাকে। যেমন ব্যাপারী (বা পথিক) মরুস্থল পার হয়ে উৎকৃষ্ট স্থানে শীঘ্র সমুপস্থিত হয়, সেই ভাবেই তুমিও সেই প্রতিবন্ধককে পার করে আমাদের যজ্ঞের আগমন করো ॥

৫৪। এই প্রকারেই বশিষ্ঠ ঋষির গোত্রজ ঋষিগণ বৰ্ষক ও বজ্ৰবাহু ইন্দ্রকে মন্ত্রের দ্বারা সংস্তুত করেন। আমাদের দ্বারা সংস্তুত সেই দেবতা আমাদের বীর পুত্রের সাথে যুক্ত এবং গোযুক্ত ধন প্রদান করুক। হে দেবতাগণ বা ঋত্বিকগণ! তোমরা সকলে আমাদের সদা কল্যাণের সাথে পালন করো।

৫৫। হে অশ্বিদ্বয়! অগ্নি প্রদীপ্ত হয়েছে, প্রবর্গ (অর্থাৎ মহাবীর ঘট) তপ্ত হয়ে গিয়েছে, এবং রাজমান সোমরসও অভিযুত হয়েছে। এই যজ্ঞে স্থিত সরস্বতী শুদ্ধ ও ইন্দ্রের বল বৃদ্ধিকারক সোম (বা দুগ্ধ)-কে গাভী হতে দোহন করছে। (এই রকম অবস্থায় তোমরা এইস্থানে আগমন করো)।

৫৬। শরীর-রক্ষক ও বৈদ্যরূপী দুই অশ্বিন্ এবং সরস্বতী সোমরস অভিযুত হওয়ার পর মধুর দ্বারা লোকসমূহকে পূরিত করে। থাকে। তারা যজ্ঞপথে ইন্দ্রের বল বহন (বা প্রদান করে থাকে।

৫৭। ঋত্বিকগণের দ্বারা শংসনীয় যজ্ঞের মাধ্যমে সরস্বতী ইন্দ্রের নিমিত্ত সোম ও সুরাকন্দ প্রদান করেন। সোম অভিযুত হওয়ার পর অশ্বিদ্বয় মধুর ভেষজ প্রদান করেন।

৫৮৷ ইন্দ্রকে আহ্বান করে সরস্বতী তার নিমিত্ত চক্ষু ইত্যাদি ইন্দ্রিয় বলকে ধারণ করে (তাকে প্রদান করে)। অশ্বিনদ্বয় পশুগণের সাথে অন্ন, ওজঃ (বল) ও ধন ধারণ করেন (অর্থাৎ ইন্দ্রকে প্রদান করেন)।

৫৯। অশ্বিনদ্বয় নমুচির (নামক দৈত্যের) রক্তে শুদ্ধ সোমরসকে অভিযুত করেন। সরস্বতী দৰ্ভাসনের উপর স্থিত ইন্দ্রের নিমিত্ত সেই সোমরসকে পরিসুত সুরার সাথে পানের নিমিত্ত প্রদান করেন।

৬০। শব্দ ও অবকাশের সাথে যুক্ত দ্বারা হতে, দিকসমূহ হতে অশ্বিনযুগল, সরস্বতী এবং ইন্দ্র দ্যাবাপৃথিবী সম্পর্কিত সকল মনোরথ দোহন করেছেন।

৬১। হে অশ্বিনীকুমারযুগল! জ্ঞাতশীলা, সুখরূপা ও সরস্বতীর সাথে সঙ্গতা উষা ও রাত্রিকে প্রাতঃকালে ও সায়ংকালে ইন্দ্রের ইন্দ্রিয়বলের সাথে সংযোজিত করে থাকে।

৬২। হে অশ্বীদ্বয়! তোমরা দিনে আমাদের রক্ষা করো। হে সরস্বতী! তুমি রাত্রে আমাদের রক্ষা করো। হে দৈবী হোতা ও বৈদ্যদ্বয়! তোমরা অভিযুত সোমরসকে পান করার সাথে সংযুক্ত ইন্দ্রকে রক্ষা করো।

৬৩। হে অশ্বিনদ্বয়! মধ্যস্থানা সরস্বতী, দুস্থানা ভারতী এবং পৃথ্বীস্থানা ইড়া নাম্নী তিন দেবী পরিতা সুরার সাথে তীব্র মদজনক সোমরসকে ইন্দ্রের পানের নিমিত্ত ধারণ করেছেন (অর্থাৎ প্রদান করেছেন) ॥

৬৪। অশ্বিদ্বয়, সরস্বতী ও ত্বষ্টা সোমরস অভিযুত হওয়ার পরে আমাদের ইন্দ্ৰে ঔষধি, মধুরূপ ভেষজ, কীর্তি, লক্ষ্মী ও নানারকম রূপ ধারিত (অর্থাৎ স্থাপিত) করেন।

৬৫। প্রশংস্যমান বনস্পতি (বা প্রযাজদেব) কালে-কালে (অর্থাৎ প্রতি ঋতুকালে) পরিতা সুরার সাথে ইন্দ্রের নিমিত্ত মধু দোহন করেন। অশ্বিন্দ্বয়ের সাথে ধেনুভূতা সরস্বতীও ইন্দ্রের নিমিত্ত মধুর দুগ্ধ দোহন (প্রদান করছেন ৷

৬৬। হে অশ্বিনদ্বয়! গো প্রভৃতি পশু, মাসর (মণ্ড), পরিশ্রুত সুরা এবং অভিযুত সোমরসকে ইন্দ্রের নিমিত্ত ধারণ করো–তাকে অর্পণ করো। হে প্রযাজদেবগণ! তোমরাও সরস্বতীর সাথে ইন্দ্রকে সোমরস প্রদান করো।

৬৭। অশ্বীদ্বয় ও সরস্বতী আপন বুদ্ধিবলে ইন্দ্রের নিমিত্ত নমুচি নামধারী অসুরের শরীর হতে ইন্দ্রিয়বল, শুদ্ধ সোমহবিঃ এবং মহনীয় ধন আহরণ করেছিলেন।

৬৮৷ অশ্বিনদ্বয় ও সরস্বতী যে ইন্দ্রকে হবির দ্বারা অভিবৃদ্ধ করেছিল, সেই ইন্দ্র নমুচিকে হত্যা করে তার সাথে বিলগ্ন হয়ে থাকা ধনী বলদৈত্যকেও হত্যা করেছিল। (নমুচি বা মেঘকে বিদীর্ণ করে বৃষ্টি আনয়ন করা হয়েছিল)

৬৯। যজ্ঞের অঙ্গভূত গো ইত্যাদি পশু, দুই অশ্বিন্ ও সরস্বতী যজ্ঞে হবির দ্বারা ইন্দ্রে বল স্থাপিত পূর্বক তার স্তুতি করে।

৭০। যে সবিতা, বরুণ ও ভগদেব যে ইন্দ্রে ইন্দ্রিয়বল (বা সামর্থ্য) স্থাপিত করেছিলেন, সেই সুষ্ঠুত্রাতা ও বিবিধ হবির পালক ইন্দ্ৰ ইষ্টপ্রদানের সাথে যজমানে সঙ্গত হোক।

৭১। হবিঃপ্রদাতা, যজমানের নিমিত্ত সবিতা এবং বরুণ সেই ধন ইত্যাদিকে ধারিত (প্রদান) করুন, যে বল-ধন ইত্যাদি সুরক্ষক ইন্দ্র নমুচির নিকট হতে বীর্যের দ্বারা অপহরণ করে, আনীত করেছিলেন ৷৷

৭২৷ বরুণ ক্ষত্র ও বল, সবিতা ঐশ্বর্যের সাথে শ্রী এবং ইন্দ্র যশের সাথে বলকে যজমানে ধারিত (স্থাপিত) করে যজ্ঞে প্রতিষ্ঠিত হয়।

৭৩। অশ্বীদ্বয় ও সরস্বতী গাভী হতে ইন্দ্রিয়বলকে, অশ্বসমূহ হতে বীর্যবলকে এবং হবিঃ হতে ইন্দ্র ও যজমানকে অভিবর্ধিত করে থাকে।

৭৪। সুখরূপ, স্বর্ণবর্ণের মার্গে আবর্তনশীল এবং নরাকার বা নেতা অশ্বিনীকুমারদ্বয়; হবির সাথে যুক্তা সরস্বতী এবং ইন্দ্র সৌত্ৰামণি প্রভৃতি যজ্ঞসমূহে আমাদের রক্ষা করুক।

৭৫। সেই সুকর্মা বৈদ্য অশ্বিনযুগল; সুষ্ঠু দোঞ্জী (জ্ঞানদোহনশালিনী) সরস্বতী ও বৃত্রঘাতী শতপ্রজ্ঞ (বা শততু) ইন্দ্র যজমানের নিমিত্ত ইন্দ্রিয়বল ধারিত (বা প্রদান) করে ৷৷

৭৬৷ হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা দুজন এবং সরস্বতী মিলিত হয়ে নমুচি অসুরে সংলগ্ন হয়ে, সুরাকে পরিসুত পূর্বক পান করে যজ্ঞ ইত্যাদি কর্মে রক্ষক ভাবে ব্যাপৃত ইন্দ্রকে রক্ষা করো ৷

৭৭। আপন কৌশল ও কর্মের দ্বারা, হে ইন্দ্র! তোমাকে অশ্বিদ্বয় রক্ষা করেছিল–যেমন মাতা পিতা পুত্রকে রক্ষা করে থাকে। কারণ, হে ইন্দ্র!তুমি সুরমণীয় সোমরসকে আপন শক্তিতে পান করেছ। এবং অধিক কি, সরস্বতীও তোমার সেবা করে থাকে।

৭৮৷(হে অধ্বর্যুগণ!) যে অগ্নিতে এই অশ্ব, বৃষ, সেচনসমর্থ ঋষভ, বন্ধ্যা গাভী ও মেষ ইত্যাদি সঙ্কল্পিত এবং আহুত হয়; অন্নরসপায়ী, সোমাহুতিশালী, বুদ্ধি দানকারী এবং উৎপাদক সেই অগ্নির প্রতি আপন বুদ্ধিকে হৃদয়ের সাথে শুদ্ধ করো।

৭৯। হে অগ্নি! তোমার মুখে হবিঃ আহুত হয়; যেমন সুকে পবিত্র ধৃত। অথবা যেমন অধিষবণ চর্মের উপরে যেভাবে সোম সদা ধৃত থাকে, সেই পদ্ধতিতে অবিচ্ছেদে তোমাতে হবিঃ-হোম করা হয়।(বা আহুতি দেওয়া হয়)। হে অগ্নি! প্রসন্ন হয়ে তুমি আমাদের মধ্যে অন্নদান, বীর পুত্রযুক্ত প্রশস্ত গো-অশ্বধন এবং মহৎ যশ ধারিত (বা স্থাপিত) করো।

৮০। অশ্বিনদ্বয় তেজের সাথে চক্ষু, সরস্বতী প্রাণের সাথে বীর্য, এবং স্বয়ং ইন্দ্র বলের সাথে ইন্দ্রিয়বলকে যজমানে ধারিত করেছেন (অর্থাৎ প্রদান করেছেন)।

৮১। হে নাসত্য অশ্বিনদ্বয়! তোমরা রুদ্রের মার্গে আগমন-গমনশীল। গাভী ও অশ্বের সাথে যুক্ত ধনের সাথে।! তোমরা দুজন যজ্ঞে আগত হও।

৮২। যাতে মিত্র বা সহোদর নিন্দক ও শত্রু মনুষ্য যে ধনকে, হে ধনবৰ্ষক নাসত্যদ্বয়! বর্ষিত করতে সক্ষম হয় না।

৮৩। সেই পীত স্বর্ণ সদৃশ ও অন্য ধনপ্রাপক গো অশ্বধনকে, হে বুদ্ধিমান অশ্বিদ্বয়! তোমরা আমাদের নিমিত্ত আনয়ন করো। (৮২ ও ৮৩ কণ্ডিকার মন্ত্রদ্বয় পরস্পর সংশ্লিষ্ট)।

৮৪। পবিত্ৰকারিণী, অন্নের দ্বারা অন্নবতী সরস্বতী, বুদ্ধির দ্বারা ধনকে ধারণকারিণী সরস্বতী আমাদের যজ্ঞকে কামনা করে৷

৮৫। প্রিয় সত্যকে (বা সত্যবাক্যকে) প্রেরিত করণশালিনী এবং শোভন মতিকে প্ৰকটকারিণী সরস্বতী আমাদের যজ্ঞকে ধারণ করেন৷

৮৬। আপন জ্ঞান বা কর্মের দ্বারা সরস্বতী মহৎ জলকে প্রকাশিত করে এবং সর্বপ্রাণিস্থ বুদ্ধিসমূহকে প্রদীপিত করে থাকে৷

৮৭। হে বিবিধ দীপ্তিশালী ইন্দ্র! তোমাকে কামনাকারী এই সোমরস অভিযুত হয়েছে এবং এইগুলি অঙ্গুলীসমূহ এবং দশাপবিত্রে পবিত্রও করা হয়ে গিয়েছে। এক্ষণে তুমি শীঘ্র যজ্ঞে আগমন করো।

৮৮৷ হে ইন্দ্র! কর্মের দ্বারা অভিপ্রেত; ব্রাহ্মণের স্তোত্রসমূহে প্রেমান (অর্থাৎ প্রেরণাশীল); সোমকে অভিলাষী এবং ঋত্বিকগণের স্তোত্রসমূহকে আকাঙ্ক্ষাশীল তুমি এক্ষণে শীঘ্রই যজ্ঞে আগত হও।

৮৯। হে হরি নামক অশ্বশালী ইন্দ্র! অত্যন্ত শীঘ্রতার সাথে তুমি হবিরান্নকে লক্ষ্য করে যজ্ঞে আগমন করো। সোমরস অভিযুত হওয়ার পর আমাদের সোমন্নিকে (সোমরূপ হবিকে) আপন জঠরে ধারণ করো।

৯০। হে অশ্বিনীকুমারযুগল! সরস্বতীর সাথে প্রেমভাব প্রাপ্ত হয়ে তোমরা দুজনে মধুময় স্বাদযুক্ত সোমরস পান করো। সুষ্ঠুত্রাতা (সুরক্ষক) ও বৃঘাতী ইন্দ্রও মধুর সোমময় হবিঃ সেবন করুক।

  শুক্ল যজুর্বেদ পূর্বাধ সমাপ্ত —

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *