২৭. শুক্লযজুর্বেদ – সপ্তবিংশ অধ্যায়

সপ্তবিংশ অধ্যায়

মন্ত্রঃ– সমাস্তায় ঋতবো বর্ধয়ন্তু সংবৎসরা ঋষয়ো যানি সত্যা। সং দিব্যেন দীদিহি রোজনেন বিশ্ব আ ভাহি প্রদিশশ্চতঃ।।১। সং চেk্যাম্বাগ্নে প্ৰচ বোধয়ৈনমুচ্চ তিষ্ঠ মহতে সৌভগায়। মা চ রিষদুপসত্তা তে অগ্নে ব্রহ্মাণস্তে যশসঃ সন্তু মানন্য।২। ত্বমগ্নে বৃণতে ব্রাহ্মণা ইমে শিববা অগ্নে সংবরণে ভবা নঃ। সপত্নহা নো অভিমাতিজিচ্চ স্বে গয়ে জাগৃহ্যপ্রযুচ্ছ৷৷৩৷৷ ইহৈবাগ্নে অধি ধারয়া রয়িং মা ত্বা নি ক্রম্পূর্বচিত নিকারিণঃ। ক্ষত্রমগ্নে সুষমমস্ত তুভ্যমুপসত্তা বর্ধতাং তে অনিদ্ভুতঃ।।৪৷৷ ক্ষত্রেণায়ে স্বায়ুঃ সং রভম্ব মিত্রেণাগ্নে মিত্ৰধ্যেয়ে যতম্ব। সজাতানাং মধ্যমস্থা এধি রাজ্ঞামগ্নে বিহবব্যা দীদিহীহ৷৷৷৷ অতি নিহো অতি পিধাহত্যচিত্তিমত্যরীতিমগ্নে। বিশ্বা হয়ে দুরিতা সহস্বার্থস্মভ্যং সহবীরং রয়িং দাঃ৷৬৷৷ অনাধৃষ্যো জাতবেদা অনিষ্টততা বিরাগ্নে ক্ষত্ৰভৃদ্দীদিহীহ। বিশ্বা আশাঃ প্রমুঞ্চন্মানুষীর্ভিয়ঃ শিবেভিরদ্য পরি পাহি নো বৃধে।৭৷৷ বৃহম্পতে সবিতর্বোধয়ৈনং সংশিতং চিৎসন্তরাং সং শিশাধি। বর্ধয়ৈনং মহতে সৌভগায় বিশ্ব এমনু মদন্তু দেবাঃ।।৮। অমুত্রভূয়াদধ যদ্যমস্য বৃহস্পতে অভিশস্তেরমুঞ্চঃ। প্রত্যৌহমশ্বিনা মৃত্যুমম্মাদ্দেবানামগ্নে ভিষজা শচীভিঃ ॥৯। উদ্বয়ং তমসম্পরি স্বঃ পশ্যন্ত উত্তর দেবং দেবত্রা সূর্যমগন্ম জ্যোতিরুম৷১০৷৷ ঊর্ধ্বা অস্য সমিধো ভবন্তুৰ্ব্বা শুক্রা শোচীংষ্যদেঃ। দ্যুমত্তমা সুপ্রতীকস্য সূনো৷১১। তন্নপাদসুরো বিশ্ববেদা দেবো দেবেষ্ণু দেবঃ। পথো অন মধ্বা গৃতেন।১২৷৷মধ্বা। যজ্ঞং নক্ষসে প্রীণানো নরাশংসো অগ্নে। সুকৃদেবঃ সবিতা বিশ্ববারঃ ॥১৩৷৷ অচ্ছায়মেতি শবসা ঘৃতেনেড়ানো বহ্নিমসা। অগ্নিং সুচো অধ্বরেষু প্রযৎসু৷১৪। স যক্ষদস্য মহিমানমগ্নেঃ স ঈং মন্দ্রা সুপ্রসঃ। বসুশ্চেতিষ্ঠো বসুধাতমশ্চ৷৷১৫৷৷ দ্বারা দেবীরম্বস্য বিশ্বে ব্ৰতা দদন্তে অগ্নেঃ। উরুবাচসো ধামা পত্যমানাঃ৷১৬৷ তে অস্য যোষণে দিব্যে ন যোনা ঊষাসানক্তা। ইমং যজ্ঞমবতামরং নঃ।।১৭৷৷ দৈব্যা হোতারা ঊর্ধ্বমধ্বরং নোহগ্নেৰ্জিহ্বামভি গৃণীত কৃণুতং নঃ স্বিষ্টি৷১৮৷ তিস্রো দেবীবহিরেদং সদৰ্তৃডা সরস্বতী ভারতী। মহী গৃণানা৷১৯৷৷ তন্নস্তুরীপমদ্ভুতং পুরুক্ষু ত্বষ্টা সুবীর্য। রাজম্পোষং বিষ্যতু নাভিমস্মে৷৷২০৷ বনস্পতেহব সৃজা রাণত্মনা দেবেষু। অগ্নিহব্যং শমিত সূদয়াতি৷৷২১৷ অগ্নে স্বাহা কৃণুহি জাবেদ ইন্দ্রায় হব্য। বিশ্বে দেবা হবিরিদং দূষন্তাম৷৷২২। পীবো অন্না রয়িবৃধঃ সুমেধাঃ শ্বেতঃ সিষক্তি নিযুতামভিশ্রীঃ। তে বায়বে সমনসো বিতর্বিশ্বেন্নরঃ স্বপত্যানি চক্রুঃ৷৷২৩৷৷ রায়ে নু যং জজ্ঞতৃ রোদসীমে রায়ে দেবী ধিষণা ধাতি দেব। অধ বায়ুং নিযুতঃ সশ্চতঃ স্বা উত শ্বেতং বসুধিতিং নিরেকে৷৷২৪৷ আপো হ যদ্ধৃহতীবিশ্বমায় গর্ভং দধানা জনয়ন্তীরগ্নি। তত দেবানাং সমবর্তসুরেকঃ কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম৷৷২৫৷ যশ্চিদাপো মহিনা পর্যপশ্যক্ষং দধানা জনয়ন্তীর্যজ্ঞ। যো দেবেম্বধি দেব এক আসীৎ কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম।২৬। প্র যাভির্যাসি দাশ্বাংসমচ্ছা নিযুট্টিবায়বিষ্টয়ে দুরোণে। নি নো রয়িং সুভোজসং যুবস্ব নি বরং গব্যম্যং চ রাধঃ ॥২৭৷৷ আ নো নিযুঙিঃ শতিনীভিরধ্বরং সহশ্রিণীভিরূপ যাহি যজ্ঞ। বায়ো অস্মিন্ সবনে মাদয়স্ব শূয়ং পাত স্বস্তিভিঃ সদ্য নঃ৷২৮৷ নিয়ুত্বান্বয়বা গহ্যয়ং শুক্রো অযামি তে। গন্তাসি সুন্বততা গৃহ৷৷২৯৷৷ বায়ো শুক্রো অযামি তে মধ্বে অগ্রং দিবিষ্ঠিযু। আ যাহি সোমপীতয়ে স্পার্তো দেব নিযুক্তৃতা৷৩০৷ বায়ুরগ্রেগা যজ্ঞপ্রীঃ সাকং গন্মনসা যজ্ঞ। শিবো নিযুঙিঃ শিবাভিঃ।।৩১। বায়ো যো তে সহশ্রিণো: রথাসস্তেভিরাগহি। নিযুত্ব সমপীতয়ে৷৩২। একয়া চ দশভিশ্চ স্বভূতে দ্বাভ্যামিষ্টয়ে বিংশতী চ। তিসৃভিশ্চ বহসে ত্রিংশতা চ নিযুঙিৰ্বায়বিহ তা বি মুঞ্চ৷৷৩৩৷৷ তব বায়বৃতস্পতে ত্বৰ্জামাতরদ্ভুত। অবাংস্যা বৃণীমহে৷৷৩৪]। অভি ত্বা শূর নোনুমোইদুগ্ধা ইব ধেনবঃ। ঈশানমস্য জগতঃ স্বদৃশমীশানমি তন্তুষঃ ॥৩৫ন ত্বাবা অন্যো দিব্যোন পার্থিবোন জাতো ন জনিষ্যতে। অম্বায়ন্তো মঘবন্নিন্দ্র বাজিনো গব্যস্তত্ত্বা হবামহে৷৷৩৬৷৷ ত্বামিদ্ধি হবামহে সাতৌ বাজস্য কারবঃ। ত্বাং বৃত্ৰেম্বিন্দ্র সৎপতিং নরত্ত্বাং কাষ্ঠাস্ববর্তঃ ॥৩৭৷৷ স ত্বং নিশ্চিত্র বজ্রহস্ত ধৃষ্ণুয়া মহঃ স্তবানো অদ্রিবঃ। গামশ্বং রথ্যমি সং কির সত্ৰা বাজং ন জিষে।৩৮৷ কয়া নশ্চিত্র আ ভুবদূতী সদাবৃধঃ সখা। কয়া শচিয়া বৃতা।৩৯৷৷ কস্তুা সত্যো মদানাং মংহিষ্ঠো মৎসন্ধসঃ। দৃঢ়া চিদারুজে বসু৷৷৪০৷৷ অভী যুণঃ সখীনামবিতা জরিতৃণা। শতং ভবাস্তয়ে।৪১৷ যজ্ঞা যজ্ঞা বো অগ্নয়ে গিরা গিরা চ দক্ষসে। প্র প্র বয়মসৃতং জাতবেদসং প্রিয়ৎ মিত্রং নশংসিষম্৷৪২। পাহি নো অগ্ন একয়া পাহুত দ্বিতীয়য়া। পাহি গীর্ভিস্তিসৃভিরুজাং পতে পাহি চতসৃভিসো৪৩৷৷ উর্জো নপাতং স হিনায়মস্মযুদাশেম হব্যদাতয়ে। ভুবদ্বাজেম্ববিতা ভুবদ্ধ উত ত্রাতা তনূনা৷৪৪৷৷ সংবৎসরোহসি পরিবৎসররাহসীদাবৎসররাহসীদ্বৎসরোহসি বসবোহসি। উষসস্তে কল্পন্তামহোরাত্রাস্তে কল্পন্তামধৰ্মসাস্তে কল্পাং মাসাস্তে কল্পন্তামৃতবস্তে কল্পাং সংবৎসরস্তে কল্পতা। প্ৰেত্যা এত্যৈ সং চাঞ্চ প্র চ সারয়। সুপর্ণচিদসি তয়া, দেবতয়াহঙ্গিরস্ব ধ্রুবঃ সীদ।৪৫৷৷

(কণ্ডিকা-৪৫ : মন্ত্র-৪৫]

.

মন্ত্ৰার্থঃ– (এই অধ্যায়ে পঞ্চচিতিকের অগ্নিসম্বন্ধী প্রজাপতি দৃষ্ট হয়েছেন…)

১। হে অগ্নি! বর্ষ, ঋতুসমূহ, সম্বৎসর, ঋষিজন এবং সত্য-পদার্থ তোমাকে বর্ধিত করুক। হে অগ্নি! তুমি আপন দিব্য প্রকাশের দ্বারা দেদীপ্যমান হও এবং সম্পূর্ণ চারি দিকসমূহকে প্রকাশিত করো।

২। হে অগ্নি! সমিন্ধিত (প্রজ্বলিত) হও। এই যজমানকে প্রবাধিত করো। মহৎ সৌভাগ্যের নিমিত্ত তুমি উন্নত (স্থিত) হও। হে অগ্নি! তোমার নিকট উপবিষ্ট যজমান যেন কখনও হিংসিত না হয়। তোমার ঋত্বিক ও যজমানগণ যশ-সম্পন্ন হোক; অন্য কোন প্রাকৃত জন নয়।

৩। হে অগ্নি! এই ঋত্বিকগণ তোমাকে বরণ করছে। এদের সংবরণে, হে অগ্নি! তুমি আমাদের কল্যাণকারী হও। শত্রুকে হননশীল এবং আমাদের শত্রুকে জয়কারী, হে অগ্নি! তুমি প্রমাদ রহিত হয়ে আপন যজ্ঞগৃহে সতত প্রজ্বলিত থাক।

৪। হে অগ্নি! তুমি এই স্থানে ধন ধারিত করো। পূর্বের অগ্নি চয়নকারীগণ যেন তোমাকে তিরষ্কার করতে না পারে। হে অগ্নি! ক্ষত্রিয়জাতি তোমার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হোক এবং তোমার উপাসক যজমান অহিংসিত হয়ে বৃদ্ধিলাভ করুক৷

৫। হে দীর্ঘায়ু অগ্নি! ক্ষত্রিয়ের দ্বারা তুমি উদ্দীপ্ত হও। মিত্র (অর্থাৎ সূর্য)-এর সাথে তুমি আপন মিত্র যজমানের হিতে সংলগ্ন হও। হে অগ্নি! তুমি আমাদের সজাতিগণের মধ্যস্থিত হও। হে অগ্নি! রাজবর্গের দ্বারা যজ্ঞসমূহে বিবিধ রূপে আহ্বায়মান হয়ে তুমি দেদীপ্যমান হও।

৬৷ নিহন্তাগণ, হিংসকগণ, অন্যমনস্কতা ও অদাতাগণকে লঙ্ঘন করে, হে অগ্নি!তুমি সমস্ত পাপকে অভিভূত করো। তারপর আমাদের বীর পুত্রের সাথে যুক্ত ধন প্রদান করো৷

৭। হে জাতবেদা অগ্নি! অনুপহিংসিত, অক্ষীণ এবং বিশেষরূপের দ্বারা শোভমান তুমি জগতে ক্ষত্রিয়গণের দ্বারা আধানকৃত (স্থাপিত) হয়ে দেদীপ্যমান হও। সকল দিকে মৃত্যু ইত্যাদি মানবভয়কে আমাদের নিকট হতে দূর করে আপন কল্যাণী জ্বালাসমূহের দ্বারা বৃদ্ধির নিমিত্ত আমাদের পালন করো।

৮। হে বৃহস্পতি! হে সবিতা! এই যজমানকে প্রবোধিত করো। সুবুদ্ধকে. (অর্থাৎ জ্ঞানপ্রাপ্তকে) আরও সুবুদ্ধ করো। এঁকে মহৎ সৌভাগ্যের নিমিত্ত বর্ধিত করো। এঁর দ্বারা কৃত যজ্ঞের দ্বারা বিশ্বদেব তৃপ্ত হোক।

৯। পরলোকের সাথে সম্বন্ধিত যমের নরক-পাত ইত্যাদি পাপ হতে, হে বৃহস্পতি! তুমি আমাদের রক্ষা করো। দেবভিষক অশ্বিদ্বয় আপন যুক্তির দ্বারা আমাদের মৃত্যুকে দূর (নিবারণ) করুক৷

১০। হে অগ্নি। শ্রেষ্ঠ পরমাত্মা-জ্যোতি দর্শন করে আমরা অন্ধকার হতে উত্তীর্ণ হয়ে একই দেবতা এবং উত্তমজ্যোতি সূর্যকে প্রাপ্ত হয়েছি; (অর্থাৎব্রহ্মস্বরূপ জ্ঞাত হয়েছি)।

১১। এই অগ্নির সমিধসমূহ উচ্চ হোক এবং শুভ্র রশ্মি জ্বালাসমূহও উচ্চ (অর্থাৎ ঊর্ধ্বগতি প্রাপ্ত) হোক। যজমান পুত্রের সম্মুখে এই অগ্নির দীপ্তা রশ্মিগুলি ঊর্ধ্বগামী হোক৷

১২। জলের পৌত্র, প্রাণবান্ (অসুরঃ) সর্বধনবান্ এবং দেবগণের মধ্যে একভাবেই দ্যোতমান অগ্নি মধু ও ঘৃতের দ্বারা যজ্ঞপথ আরঞ্জিত করে৷৷

১৩। ঋত্বিকবৃন্দের দ্বারা স্থূয়মান হে অগ্নি! তুমি মধুর ঘৃতের হেতু যজ্ঞে ব্যাপ্ত হয়ে থাক, এবং পুণ্যবান্ এবং বিশ্বের দ্বারা বরণীয় সবিতাদেবকে তৃপ্ত করে থাক ৷

১৪। যজ্ঞ প্রারম্ভ হবার পর জ্ঞানের দ্বারা স্তুতি করে যজ্ঞনির্ধারক অধ্বর্যু স্তোত্র বা অন্ন এবং সুবা প্রভৃতির সাথে যজ্ঞের নিকট আগমন করে।

১৫। সেই, অধ্বর্যু এই মহিমাবান্ অগ্নিকে যজন করছে। উধ্বর্য সেই অগ্নিকে মদকারী হবিঃ-সমূহ প্রদান করে, যে অগ্নি সু-হবিযুক্ত, বাসয়িতা, অত্যন্ত চেতনাপ্রদ এবং ধনদাতা।

১৬। বিশাল অন্তরশালী এবং আপন স্থান গ্রহণের দ্বারা যজ্ঞকে ঐশ্বর্য-সম্পন্নকারিণী দ্বারদেবীগণ এই অগ্নির কর্মসমূহকে ধারণ করছে, (অর্থাৎ রাক্ষস ইত্যাদির উপদ্রব হতে সুরক্ষিত রাখছে)। বিশ্বদেবতাও এর কর্মসমূহকে রক্ষা করছে৷

১৭। সেই দিব্য নারীদ্বয়–উষা ও রাত্রি–এই অগ্নির ভার্যারূপে গাহপত্যাগ্নিতে স্থিত আমাদের এই শাস্ত্রোক্ত যজ্ঞকে রক্ষা করুক।

১৮। দৈবী হোতা অগ্নি ও বায়ু আমাদের এই যজ্ঞকে ঊধ্বস্থ করুক। সেই দুজনে অগ্নির জ্বালাসমূহের স্তুতি করুক। আমাদের যজ্ঞকে সিদ্ধ করুক।

১৯৷ জুয়মানা তিন মহতী দেবী– ইড়া, সরস্বতী ও ভারতী, এই দুর্ভাসনে বিরাজিতা হোন।

২০। শীঘ্রলব্ধ, অদ্ভুত, বহু স্থানে স্থিত তথা বীর্যশালী (সামর্থশালী) ধনের সমৃদ্ধিকে তৃষ্টাদেব আমাদের নাভিস্থানে (অর্থাৎ ক্রোড়দেশে) নিক্ষেপ করুক (অর্থাৎ ঢেলে দিক)।

২১। শান্তিকর অগ্নি হবিকে সংস্কৃত করছে, অতএব হে বনস্পতি!তুমি সেই হব্যসমূহকে সুকের দ্বারা দেবগণকে সমর্পণ করে তাদের হবির্ভুক্ত করো।

২২। হে জাতবেদা অগ্নি! ইন্দ্রের নিমিত্ত হবিঃ স্বীকার করে। এই হবিঃ বিশ্বদেবতাগণ আস্বাদিত করুক।

২৩। অন্নের দ্বারা স্ফীতকায় এবং ধনবর্ধক নিযুত সংজ্ঞক অশ্বসমূহকে সুপ্রজ্ঞ ও শ্বেত বায়ু অধিষ্ঠিত করছে। সেই নিযুত অশ্ব সেই বায়ুর নিমিত্ত প্রস্তুত হচ্ছে। তখন সকল যজমান ইত্যাদিগণ সুপুত্র ইত্যাদি প্রাপক কর্ম অর্থাৎ যজ্ঞ ইত্যাদি সাধন করছে৷

২৪। ধনের নিমিত্ত যে বায়ুকে এই দ্যাবাপৃথিবী উৎপন্ন করেছিল এবং যে দ্যোতমান বায়ুকে বাক্-দেবী স্বয়ং ধারণ করছে; জনাকীর্ণ পথে সেই শ্বেত ও ধনধারক বায়ুকে তার আপন নিযুত অশ্বগণ প্রাপ্ত হচ্ছে।

২৫। মহতী আপঃ (জলরূপা দেবী) যখন এই বিশ্ব প্রপঞ্চকে গর্ভরূপে ধারণ করেছিল, এবং গর্ভকে ধারণ করে তাদের দ্বারা আপন অন্দরে উত্মাকে উৎপন্ন করেছিল, তখন দেবতাগণের একমাত্র প্রাণ সেই হিরণ্যগর্ভ বিদ্যমান হয়েছিল। সেই হিরণ্যগর্ভ প্রজাপতির উদ্দেশ্যে আমরা হবিঃ ইত্যাদির দ্বারা যজন করি৷

২৬। হে বায়ু! তুমি আপন যে সমস্ত নিযুত অশ্বসমূহের দ্বারা হবিদাতা যজমানের যজ্ঞগৃহের দিকে যজ্ঞের উদ্দেশ্যে গমন করছ, সেই স্থান হতে আগমন করে আমাদেরও ভোজন, পর্যাপ্ত ধন, পুত্র এবং গো-অশ্বধনও প্রদান করো।

২৭ নম্বর মন্ত্রার্থ মিসিং

২৮। হে বায়ু! তুমি আপন শত সহস্র অশ্বের দ্বারা আমাদের এই অহিংসক যজ্ঞে আগমন করো। হে বায়ু! তুমি এই তৃতীয় সনে তৃপ্ত হও। হে দেবগণ! তুমি সদা কল্যাণসমূহের সাথে আমাদের সুরক্ষিত রাখো৷

২৯। হে বায়ু! নিযুত অশ্বের সাথে যুক্ত হয়ে তুমি আগমন করো। এই শুক্র গ্রহ তোমার নিমিত্ত প্রস্তুত আছে। তুমি সদাই শুক্র ইত্যাদি গ্রহপাত্রসমন্বিত যজমানের গৃহে গমন করে থাক৷৷

৩০। দেবযজ্ঞে মধুর সোমে পূর্ণ এই শুক্র গ্রহ; হে বায়ু! তোমার নিমিত্ত প্রস্তুত করা হয়েছে। হে স্পৃহনীয় বায়ুদেব! নিযুত অশ্বের সাথে যুক্ত হয়ে তুমি সোমপানের নিমিত্ত যজ্ঞে আগত হও।

৩১। অগ্রগন্তা, যজ্ঞের দ্বারা তুষ্টিশীল তথা কল্যাণকারী বায়ু আপন কল্যাণী নিযুত অশ্বগণের দ্বারা সাদরে (আদরের বা সম্মানের সাথে) যজ্ঞে আগমন করুক।

৩২। হে বায়ু! তোমার যে সেই সহস্ৰসংখ্যক রথ আছে, সেই রথে যুক্ত নিযুত অশ্বগণ সহ (অর্থাৎ নিযুতবান হয়ে) সোমরস পানের নিমিত্ত আগমন করো ৷

৩৩। হে জগৎস্বরূপ সমৃদ্ধিশালী বায়ু! আপন এক-দুই দশ-বিশ-ত্রিশ প্রভৃতি অশ্বগণের দ্বারা যে ধন বা পাত্রসমূহকে যজ্ঞের নিমিত্ত বহন করে আগত হয়েছ, সেইগুলি এই স্থানেই বিমোচিত (বিমুঞ্চিত) করো।

৩৪। হে জলপতি! হে ত্বষ্টার অদ্ভুত জামাতা! আমরা তোমার অন্নকে যাচিত করছি।

৩৫। হে শূর ইন্দ্র! আমরা তোমারই স্তুতি করছি; যেমন অদুগ্ধা গাভী তার বৎসের নিমিত্ত আহ্বান করে, স্বর্গদ্রষ্টা তথা এই চরাচর জগতের প্রভু তোমাকে সংস্তুত করছি৷

৩৬। হে ইন্দ্র! তোমার ন্যায় অন্য কেউ দেবলোকবাসী নেই, পৃথিবীবাসীও নেই, তোমার ন্যায় এখনও পর্যন্ত কেউ উৎপন্ন হয়নি এবং উৎপন্ন হবেও না। হে ধনবান্ ইন্দ্র! অশ্বসমূহকে কামনা করে হবিরান্ন যুক্ত গোকামী আমরা তোমাকে আহবান করছি। অন্নের লাভের নিমিত্ত হে ইন্দ্র! আমরা ঋত্বিকগণ তোমাকে আহবান করছি।

৩৭। হে ইন্দ্র! বৃত্রকে (অর্থাৎ শত্রুগণকে) বিনাশের নিমিত্ত, জলের প্রাপ্তির নিমিত্ত এই অশ্বসমূহের নিমিত্ত আমরা যজ্ঞকর্তাগণ তুমি হেন শ্রেষ্ঠ পালক ইন্দ্রকেই আহ্বান করছি।

৩৮৷ হে বিচিত্র বজ্রহস্ত! হে বজি ইন্দ্র! আপন তেজের দ্বারা স্কৃয়মান তুমি আমাদের গাভী ও রথবহনসমর্থ অশ্ব প্রদান করো।

৩৯৷ বিচিত্র ও সদা বর্ধনশীল কোন্ স্তুতির দ্বারা আবৃত হয়ে এবং কোন অভিষব ক্রিয়ার দ্বারা আমাদের মিত্র হবেন?

৪০। হে ইন্দ্র! মদসমূহের মধ্যে অত্যন্ত মদকারী কোন্ সদৃশ হবিরান্ন মদমত্ত করে যে, যে মদে তুমি মত্ত হয়েও সুদৃঢ় থাক এবং গোপনে রক্ষিত গো, ধন ইত্যাদিকে চূর্ণ করে, (অর্থাৎ গোপনস্থান খুঁড়ে) বাহির করে থাক।

৪১। হে ইন্দ্র! তুমি আমাদের আপন মিত্র স্তোতৃগণের রক্ষক হও।রক্ষার নিমিত্ত তুমি শত শত রূপ ধারণ করে থাক।

৪২। প্রতি যজ্ঞে স্তুতির পর স্তুতির দ্বারা কুশল বা বলবা, অমূরণধর্ম তথা জাতপ্রজ্ঞ অগ্নিকে আমরা সংস্তুত করছি; যেমন কেউ তার প্রিয় মিত্রের সংস্তুতি করে থাকে।

৪৩। হে অনুসমূহের পালক, বাসয়িতা অগ্নি। একবার দুবার-তিনবার-চারিবার স্তুতিসমূহের দ্বারা সংস্তুত হয়ে তুমি আমাদের পালন করো বা রক্ষা করো। (বক্তব্য এই যে, প্রথম ঋক্ বাক্যের দ্বারা স্তুত হয়ে তুমি আমাদের রক্ষা করো। দ্বিতীয় যজুঃ বাক্যের দ্বারা স্তুত হয়ে তুমি আমাদের রক্ষা করো। তৃতীয় ঋক্, যজুঃ ও সাম-বাক্যের দ্বারা স্তুত হয়ে তুমি আমাদের রক্ষা করো। চতুর্থ ঋক্, সাম ও যজুঃ এবং গদ্য-পদ্য কাব্যলক্ষণের দ্বারা স্তুত হয়ে আমাদের রক্ষা করো)

৪৪। হে অধ্বর্যু! জলের পৌত্র অগ্নিকে তর্পিত করো; সে আমাদের হবিঃকে কামনা করছে। দেবতাবর্গকে হবিঃ প্রদান করার নিমিত্ত আমরা এই অগ্নিকেই সঙ্কল্পিত করছি। অন্নের বৃদ্ধিকারী এই অগ্নি আমাদের রক্ষক হোন। সে আমাদের ভার‍্যা ইত্যাদি সকলের বৃদ্ধিকারক হোক এবং সেই-ই আমাদের শরীর সমূহের অর্থাৎ পুত্রসমূহের রক্ষকও হোক৷ ৪৫। হে অগ্নি! তুমি সম্বৎসর (পূর্ণ বৎসর); তুমি পরিবৎসর (সম্বৎসর পঞ্চকের অন্তর্গত বৎসরবিশেষ); তুমি ইদাবৎসর; তুমি ইদ্বৎসর; ও বৎসর। (অর্থাৎ তুমি জ্যোতিঃশাস্ত্রোক্ত পঞ্চসম্বৎসরাত্মক যুগরূপ)। উষাসমূহ তোমার অবয়ব কল্পিত করুক। দিবা-রাত্রি তোমার কাল-অবয়ব কল্পিত করুক। অর্ধমাস ও মাস তোমাকে অবয়বীভাবের দ্বারা কল্পিত করুক। ঋতুসমূহ তোমাকে কল্পিত করুক। সম্বৎসর তোমাকে কল্পিত করুক। মরণের নিমিত্ত এবং জন্ম গ্রহণের নিমিত্ত তুমি সংকোচন ও বিস্তারণ করো এবং স্বয়ং (নিজেকে) প্রসরিত করো। হে অগ্নি! তুমি সুপর্ণচিতি হও। সেই সুপর্ণ (সূর্য) দেবতার দ্বারা অনুজ্ঞাত হয়ে তুমি অঙ্গিরা ঋষির যজ্ঞের ন্যায় আমাদেরও যজ্ঞে স্থিরভাবে স্থির হও।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *