৩৭. শুক্লযজুর্বেদ – সপ্তত্রিংশ অধ্যায়

সপ্তত্রিংশ অধ্যায়  

মন্ত্রঃ– দেবস্য ত্বা সবিতুঃ প্রসেবংশ্বিনোর্বাহুভ্যাং পূষ্ণো হস্তাভ্যাম। আ দদে নারিরসি৷৷৷৷ যুঞ্জতে মন উত যুঞ্জতে ধিয়ো বিপ্রা বিপ্রস্য বৃহততা বিপশ্চিতঃ। বি হোত্রা দধে বয়ুনাবিদেক ইন্মহী দেবস্য সবিতুঃ পরিঙ্কুতিঃ।।২। দেবী দ্যাবাপৃথিবী মখস্য বামদা শিরো রাধ্যাসং দেব্যজনে পৃথিব্যাঃ। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে৷৷৩৷ দেবব্যা বষ্যো ভূতস্য প্রথমজা মখস্য বোহদ শিরো বাধ্যাসং দেবযজনে পৃথিব্যাঃ। মখায় স্বামখশ্য ত্বা শীষ্ণে।৪৷৷ ইয়ত্য আসীম্মুখস্য তেইদ্য শিরো রাধ্যাসং দেবযজনে পৃথিব্যাঃ। মখায় বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে।৫৷৷ ইন্দ্রসৌজঃ স্থ মখস্য বোহদ শিরো রাধ্যাসং. দেবযজনে পৃথিব্যাঃ। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে। মখায় ত্বা মখস্য ত্বাশীষ্ণে। মখায় ত্বা মখস্য বা শীষ্ণে।।৬৷৷ তু ব্ৰহ্মণস্পতিঃ প্র দেব্যেতু সূন্যতা। অচ্ছা বীরং নং পঙক্তিরাধসং দেবা যজ্ঞং নয়ন্তু নঃ। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে। মখায় বা মখস্য ত্বা শীর্ষে। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে৭৷৷ মখস্য শিয়োহসি। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীর্ষে। মখস্য শিরোহসি। মখায় ত্বা মস্য ত্বা শীষ্ণে। মখস্য শিরোহসি। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে৷৮। অশ্বস্য ত্বা বৃষ্ণঃ শা ধূপয়ামি দেবযজনে পৃথিব্যাঃ। মখায় ত্বা মখস্য ত্ব। শীষ্ণে। অশ্বস্য ত্ব বৃক্ষঃ শা ধূপয়ামি দেবযজনে পৃথিব্যাঃ। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে। অশ্বস্য ত্ব বৃষ্ণঃ শা ধূপয়ামি দেবযজনে পৃথিব্যাঃ। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীর্ষে। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে৷৷৷৷ ঋজবে ত্বা সাধবে ত্বা সুক্ষিত্যৈ ত্বা। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণেমখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে। মখায় ত্বা মখস্য ত্বা শীষ্ণে৷৷১০৷৷ যমায় ত্বা মখায় ত্বা সূর্যাস্য ত্বা তপসে। দেবা সবিতা মধ্বানক্রু পৃথিব্যাঃ সংস্পশম্পাহি। অর্চিরসি শোচিরসি তপোহসি৷১১। অনাধৃষ্টা পুরস্তাদগ্নেরাধিপত্য আয়ুর্মে দাঃ। পুত্রবতী দক্ষিণত ইন্দ্রস্যাধিপতে প্রজাং মে দাঃ। সুষদা পশ্চাদ্দেবস্য সবিতুরাধিপত্যে চক্ষুর্মে দাঃ। আশ্রুতিরুত্তরতো ধাতুরাধিপত্যে রায়ম্পোষং মে দাঃ। বিধৃতিরুপরিষ্টাদৃহস্পতেরাধিপত্য ওজো মে দা। বিশ্বাভ্যো মা নাঘ্রাভ্যম্পাহি মনোরশ্বাসি৷৷১২৷ স্বাহা মরুদ্ভিঃ পরি শ্ৰীয়স্ব দিবঃ সংস্পশম্পাহি। মধু মধু মধু।১৩৷৷ গর্ভো দেবানাং পিতা মতীনাং পতিঃ প্রজানা। সং দেবো দেবেন সবিত্রা গত সং সূর্যেণ রোচতে৷৷১৪৷ সমগিরগ্নিনা গত সং দৈবেন সবিত্রা সং সূর্যের্ণাবরাচিষ্ট। স্বাহা সমগ্নিস্তপসা গত সং দৈব্যেন সবিত্রা সং সূর্যের্ণারূরুচত৷১৫৷৷ ধর্তা দিবো বি ভাতি তপসম্পৃথিব্যাং ধর্তা দেবো দেবানামমর্ত্যস্তপোজাঃ। বাচমস্মে নিযচ্ছ দেবায়ুব৷১৬৷ অপশ্যং গোপামনিপদ্যমানমা চ পরা চ পথিভিশ্চরন্ত। স সীচীঃ স বিমূচীর্বসান আ বরীবর্তি ভূবনেন্তঃ৷৷১৭৷ বিশ্বাসাং ভুবাং পতে বিশ্বস্য মনসম্পতে বিশ্বস্য বচসম্পতে সর্বস্য বচসম্পতে। দেবত্বং দেব ঘর্ম দেবো দেবান্। পাহাত্র প্রাবীরনু বাং দেববীতয়ে। মধু মাধ্বীভ্যাং মধু মাধূচীভ্যা৷১৮। হৃদে ত্বা মনসে ত্বা দিবে ত্বা সূর্যায় ত্বা। উর্ধো অধ্বরং দিবি দেবেষু ধেহি৷৷১৯। পিতা নোহসি পিতা নো বোধি নমস্তে অস্তু মা মা হিংসী। ত্বষ্ট্রমন্তা সপেম পুত্ৰাম্পশূন্ময়ি ধেহি প্রজামশ্মসূ ধেহ্যরিষ্টাহহং সহ পত্যা ভূয়াস৷৷২০৷ অহঃ কেতুনা জুষতাং সুজ্যোতিজ্যোতিষা স্বাহা। রাত্রিঃ কেতুন জুতাং সুজ্যোতিৰ্জোতিষা স্বাহা।।২১৷ :

[কাণ্ড-২১, মন্ত্র-৫৫]

.

মন্ত্ৰার্থঃ— ১। (মৃত্তিকা খননের নিমিত্ত অদ্রি অর্থাৎ কাষ্ঠনির্মিত কুড়াল গ্রহণ করণীয়)। হে অভি! সবিতাদেবের প্রেরণায় বিদ্যমান আমি অশ্বিন্দ্বয়ের বাহুসমূহ এবং পূদেবতার হস্তযুগলের দ্বারা তোমায় গ্রহণ করছি। তুমি নারীরূপা (স্ত্রীনাম্নী) হও।

২। বিদ্বান্ এবং ব্রাহ্মণ যজমানের মহান ঋত্বিকগণ আপন মনকে একাগ্র করছে এবং আপন বুদ্ধিবৃত্তিকেও একাগ্র করছে। প্রজ্ঞানবি কোন হোতা যজ্ঞের বিধান করছে। সেগুলি এই সবিতাদেবেরই মহতী পরিস্তুতি।

৩। হে দ্যোতমানা দ্যাবাপৃথিবী! পৃথিবীর দেবযজন স্থান এই যজ্ঞে আজ আমি তোমাদের দুজনের দ্বারা (দ্যুলোকের জল এবং পৃথিবীর মৃত্তিকায়) যজ্ঞের শিরোভূত মহাবীর-ঘটকে নির্মাণ করছি। (খনন পূর্বক মৃত্তিকা গ্রহণ করণীয়)। আমি যজ্ঞের নিমিত্ত এবং যজ্ঞের শিরোভূত মহাবীরঘটের নিমিত্ত তোমাকে গ্রহণ করছি৷

৪। হে বল্মীকরূপা দেবীগণ! সর্বপ্রথম উৎপন্না পৃথিবীর সম্বন্ধে তোমরাও ভূতজাত প্রাণীগণের উৎপত্তির মধ্যে প্রথম উৎপন্নশীলা। পৃথিবীর দেব্যজন স্থান যজ্ঞে আমরা আজ তোমাদের মৃত্তিকার দ্বারা যজ্ঞের শিরোভূত মহাবীর ঘটকে নিষ্পন্ন করব। (বল্মীক-মৃত্তিকাকে গ্রহণ করণীয়) হে বল্মীকমৃত্তিকা! যজ্ঞের শিরোভূত মহাবীরঘটের নিমিত্ত তোমাকে (বা তোমাদের) আমি গ্রহণ করছি।

৫। এই পৃথিবী আদিকালে অনেকটাই ক্ষুদ্র-মতো ছিল। হে পৃথিবী! তোমার দ্বারা আজ আমি পৃথিবীর দেবযজন স্থান এই যজ্ঞে যজ্ঞের শিরোভূত মহাবীরঘটকে নিষ্পন্ন করব। (শূকরের দ্বারা খোদিত মৃত্তিকা গ্রহণ করণীয়)। হে মৃত্তিকা! যজ্ঞের নিমিত্ত আমি তোমাকে গ্রহণ করছি। যজ্ঞের শিরোভূত মহাবীরঘটের নিমিত্ত আমি তোমাকে গ্রহণ করছি।

৬। হে পূতীকা (তৃণবিশেষ)! তোমরা ইন্দ্রের ওজঃ হতে সৃষ্ট হয়েছে। পৃথিবীর দেব্যজন স্থান এই যজ্ঞে তোমাদের দ্বারা আজ আমি যজ্ঞের শিরোভূত মহাবীরঘটকে নিষ্পন্ন করব। (পূতিকা গ্রহণ করণীয়)। যজ্ঞের নিমিত্ত আমি তোমাকে গ্রহণ করছি। যজ্ঞের শিরোভূত মহাবীরঘটের নিমিত্ত তোমাকে গ্রহণ করছি। (ছাগদুগ্ধ গ্রহণ করণীয়)। যজ্ঞের নিমিত্ত এবং যজ্ঞের শিরোভূত মহাবীরঘটের নিমিত্ত আমি তোমাকে গ্রহণ করছি। (কৃষ্ণাজিনের উপর স্থাপিত এইসব যজ্ঞসম্ভারকে স্পর্শ করণীয়)। হে সম্ভারসমূহ! যজ্ঞ তথা যজ্ঞের শিরোভূত মহাবীরঘটের নিমিত্ত আমি তোমাদের স্পর্শ করছি।

৭। (কৃষ্ণজিনটিকে নিয়ে পরিবৃত্তের দিকে চলনীয়)–ব্রহ্মণস্পতি দেবতা আগত হোন। সত্য এবং দ্যোতমানা দ্যাবাপৃথিবীও আগমন করুক। বীর, মার্নবহিতকরীও পংক্তিসাধক আমাদের যজ্ঞকে উত্তারণ করুক। (যজ্ঞীয় সম্ভারগুলি একটি চতুষ্কোণ বিশিষ্ট স্থানে পরিবৃত্তে রক্ষণীয়)। হে সম্ভারসমূহ! যজ্ঞ ও যজ্ঞের শিরোভূত মহাবীরঘটের নিমিত্ত ও তোমাদের এই স্থানে পরিবৃত্তে ধারণ (বা স্থাপন) করছি। (বল্মীকমৃত্তিকা, শূকরমৃত্তিকা এবং পূতিকাগুলি ছাগদুগ্ধের সাথে চটকিয়ে মেখে ভূমিতে রক্ষণীয়) হে মহাবীরঘট নির্মাণকারী সম্ভাররাশি! যজ্ঞ ও যজ্ঞের শিরোভূত মহাবীরঘটকে নির্মাণের নিমিত্ত আমি তোমাদের মিশ্রিত করছি। (ক্রমশঃ তিনটি মহাবীরঘটকে বিধিমতো নির্মাণ করণীয়)। হে মহাবীরঘট! যজ্ঞ ও যজ্ঞের শিরোভূত যজ্ঞদেবতার নিমিত্ত আমি তোমাকে নির্মিত করছি।

৮। হে প্রথম মহাবীরঘট! তুমি যজ্ঞের শিরস্বরূপ। (স্পর্শ করণীয়) যজ্ঞের নিমিত্ত এবং যজ্ঞের শিরোভূত যজ্ঞদেবতার নিমিত্ত আমি তোমাকে স্পর্শ করছি। হে দ্বিতীয় মহাবীরঘট! তুমি যজ্ঞের শিরস্বরূপ। (স্পর্শ করণীয়)। যজ্ঞ এবং যজ্ঞের শিরোভূত যজ্ঞদেবতা বিষ্ণুর নিমিত্ত আমি তোমাকে স্পর্শ করছি। হে তৃতীয় মহাবীরঘট! তুমি যজ্ঞের শিরস্বরূপ। (স্পর্শ করণীয়)। যজ্ঞ এবং যজ্ঞদেবতার নিমিত্ত আমি তোমাকে স্পর্শ করছি। (তিনটি মহাবীরঘটকে তৃণধান্যে ঘর্ষণ করে চিক্কণ করণীয়)। হে মহাবীরঘটসমূহ! যজ্ঞ এবং যজ্ঞের শিরোভূত যজ্ঞদেবতার নিমিত্ত আমি তোমাদের চিক্কণ (চক্চকে) করছি।

৯। হে মহাবীরঘট! পৃথিবীর দেবযজন স্থান যজ্ঞে সেচক অশ্বের বিষ্ঠায় আমি তোমাকে ধূপিত করছি। হে মহাবীরঘট! যজ্ঞ এবং যজ্ঞের শিরোভূত যজ্ঞদেবতার নিমিত্ত আমি তোমাকে ধূপিত করছি। সেচক অশ্বের বিষ্ঠায় আমি তোমাকে পৃথিবীর দেবযজন স্থান যজ্ঞে ধূপিত করছি। (দ্বিতীয় মহাবীরঘটটিকে ধূপিত করণীয়)। যজ্ঞ তথা যজ্ঞের শিরোভূত অধিদেবতার নিমিত্ত আমি তোমাকে ধূপিত করছি। (এইভাবে তৃতীয় মহাবীরঘটকে ধূপিত করণীয়)।

১০। হে প্রথম মহাবীরঘট! ঋজু দ্যুলোকের (অর্থাৎ আদিত্যের) নিমিত্ত আমি তোমাকে অগ্নির উপর স্থাপিত করছি (উঠাচ্ছি)। হে দ্বিতীয় মহাবীরঘট! বৃষ্টির দ্বারা সকল কামনাকে সাধনশালী অন্তরিক্ষের (অর্থাৎ বায়ুর) নিমিত্ত আমি তোমাকে অগ্নির উপর স্থাপন করছি। হে তৃতীয় মহাবীরঘট! আমাদের নিবাসকে সাধারভূতা ভূমির নিমিত্ত আমি তোমাকে অগ্নির উপর স্থাপন করছি। হে প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয় মহাবীরঘট সমুদায়! যজ্ঞ এবং যজ্ঞদেবতার নিমিত্ত আমি তোমাদের ছাগদুগ্ধের সাথে আসিঞ্চিত করছি।

১১। (ব্রহ্মা নামক ঋত্বিক কর্তৃক আজ্ঞাকৃত হয়ে অধ্বর্যু প্রত্যেক মহাবীর বা ঘর্ম বা প্রবর্গকে তিনবার প্রেক্ষণ অর্থাৎ জলসিঞ্চন করে থাকে)।–হে ঘর্ম! যম, যজ্ঞ এবং সূর্যে তাপের নিমিত্ত আমি তোমাকে জলের দ্বারা পবিত্র করছি। (ঘর্মকে ঘৃতে আলিপ্ত করণীয়)–হে ঘর্ম! সবিতাদেব তোমাকে মধুর ঘৃতে আলিপ্ত করুক। (তৃণাস্তীর্ণ বা খড় বিছানো বালুর নীচে শতমান (বা শত রত্তি) পরিমিত রৌপ্য রক্ষণীয়)–হে রজত! তুমি অগ্নি হতে পৃথিবীর সংস্পর্শকে রক্ষা করো। (হে রৌপ্য! তুমি পৃথিবীর রাক্ষসগণের সংস্পর্শ হতে মহাবীরঘটকে রক্ষা করো)। হে ঘর্ম (মহাবীর)! তুমি চন্দ্রের রশ্মি সদৃশ; তুমি অগ্নির তেজঃস্বরূপ; তুমি সূর্যের তাপের সমান।

১২। (এক-এক ঘর্মের উপর অঙ্গুলী রক্ষণশালী যজমানকে অধ্বর্যু কর্তৃক এই মন্ত্র উচ্চারণীয়) হে পৃথিবী! তুমি পূর্ব দিকে অগ্নির আধিপত্যে অবস্থিত হয়ে রাক্ষস ইত্যাদির দ্বারা সর্বথা অনাধৃষ্টা হয়ে আছ। সেই তুমি আমাকে আয়ু প্রদান করো। দক্ষিণ দিকে ইন্দ্রের আধিপত্যে বিদ্যমানা তুমি, হে পৃথিবী! পুত্রবতী হয়ে আছ। তুমি আমাকে সন্তান প্রদান করো। পশ্চিম দিকে সবিতার আধিপত্যে বিদ্যমান তুমি সুখের সাথে আশ্রয়ণীয়া হয়ে আছ। তুমি আমাকে দর্শনশক্তি প্রধান করো। উত্তর দিকে ধাতার আধিপত্যে বিদ্যমানা তুমি ঋত্বিগণের আশ্রয়ণের যজণীয় প্রদেশ হয়ে আছ। তুমি আমাকে ধনের সমৃদ্ধি প্রদান করো। ঊধ্বস্থ প্রদেশে বৃহস্পতি দেবের আধিপত্যে বিদ্যমানা তুমি বিশেষ রূপে সকলকে ধারণকারিণী বিধৃতি সংজ্ঞিকা হয়ে আছ। তুমি আমাকে ওজঃ প্রদান করো। (মহাবীর হতে দক্ষিণ ভূমির উপর যজমান কর্তৃক আপন হস্ত উলটা করে ধরণীয়)–হে মহাবীরঘট হতে দক্ষিণ দিকে স্থিতা ভূমি! তুমি আমাকে সকল নাশক রাক্ষক ইত্যাদি হতে রক্ষা করো। (উত্তর দিকে হস্ত স্থাপন করে) হে ঘর্মের উত্তর ভূমি! তুমি মনুর অশ্বরূপ।

১৩। হে ঘর্ম! তুমি স্বাহার আকারশালী হওয়ার কারণে সূর্যস্বরূপ; তুমি মরুত্বর্গের দ্বারা অধিষ্ঠিত হও। (প্রত্যেক ধর্মে শত শত রত্তি সুবর্ণ রক্ষণীয়)–হে স্বর্ণ শতমান! তুমি আমাকে ভদ্রলোকের সংস্পর্শক রাক্ষস ইত্যাদি হতে রক্ষা করো। (কৃষাজিনের ব্যজনে বা পাখায় প্রবর্গকে বাতাস করণীয়)–প্রাণ, উদান, ব্যানকে ক্রমশঃ মধু-মধু-মধু বলে এক-এক প্রবর্গে (মহাবীরে) স্থাপন করছি।

১৪। দেববর্গের গর্ভ, স্তুতিসমূহের পিতা, এবং প্রজা সকলের অধিপতি প্রবর্গ (মহাবীর) সবিতাদেবের সাথে সঙ্গত হয়েছে। সে (ঘর্ম) এক্ষণে সূর্যের সাথেই শোভিত হচ্ছে।

১৫। যে ঘর্ম অগ্নির সাথে একীভাব প্রাপ্ত হয়েছে, সবিতাদেবের সাথে সঙ্গত হয়েছে এবং সূর্যের সাথে শোভিত হয়েছে; স্বাহাকৃত সেই অগ্নিরূপ ঘর্ম সূর্যের তেজের সাথে সবিতাদেবের সাথে এবং সূর্যের সাথে সঙ্গত হয়ে আরোচমান হচ্ছে।

১৬। যে এই দ্যুলোককে এবং কিরণরাশিকে ধারণ করণশালী এবং স্বয়ং মনুষ্যধর্ম রহিত (অর্থাৎ অজর ও অমর) দেবতা, সূর্য হতে উৎপন্ন সেই ঘর্মদেব আমাদের বাক্শক্তি প্রদান করুক।

১৭। রক্ষক ঘর্মশালী (বা ঘর্মরূপী) আদিত্যকে আমরা কখনও আকাশচ্যুত হতে দর্শন করিনি; (অর্থাৎ আশ্চর্য এই যে, আদিত্য কেন পতিত হয় না?), সেই সার্থেই আমরা তাকে বিভিন্ন মার্গে আগমন ও গমন করতেও দর্শন করেছি। সে সহগমনা এবং বিস্তৃর্গ (এইধারে ঐধারে)–গমনা রশ্মিসমূহকে ধারণ করে এই ভূবনের অন্দরে স্বচ্ছন্দে বিচরণ করছে।

১৮। হে সর্বভূ (অর্থাৎ সকল ভুবনের) স্বামী! হে সকলের মনসম্পতি (মনের অধিপতি)! হে সকলের বাণীপতি (বাক্যের পালক)! হে ঘর্ম! দেবশ্রুৎ (অর্থাৎ দেবগণের মধ্যে প্রসিদ্ধ) তুমি দেবতা হয়ে দেবগণকে রক্ষা করো। হে অশ্বিদ্বয়! এইস্থানে যজ্ঞে দেবগণের তর্পণকালে মধুবিদ্যার জ্ঞানের নিমিত্ত মধু নামক ব্রাহ্মণকে প্রাপণশালী এবং মধুবিদ্যাকে পূজনশালী যে অর্থবাগণ তোমাদের দুজনকে জ্ঞান দান করেছিল, তারা তোমাদের দুজনকেও রক্ষা করুক৷

১৯। হে ঘর্মদেব! হৃদয় ও মনের পরিশুদ্ধি এবং দ্যুলোক ও সূর্যলোকের প্রাপ্তির নিমিত্ত আমি তোমার স্তব করছি। ঊর্ধ্বমুখ হয়ে, হে ঘর্মদেব! তুমি আমাদের যজ্ঞকে দেবগণের মধ্যে স্থাপিত করো।

২০। হে ঘর্ম (বা মহাবীর)! তুমি আমাদের পিতা বা পালক। তুমি নিজেকে আমাদের পিতারূপে জ্ঞাত হও। তুমি আমাদের নমস্কার প্রাপ্ত হও। তুমি আমাদের কখনও হিংসিত করো না। (মুখাবরণ অর্থাৎ ঘোমটা অপসারিত করে দর্শনশালিনী যজমানের পত্নীদের অধ্বর্যু এই যজুঃ বলাবে) –হে মহাবীর! বীর্যের অধিদেতা তৃষ্টার সাথে যুক্ত আমরা স্ত্রীগণ তোমাকে মৈথুনের নিমিত্ত স্পর্শ করছি। পুত্রগণ ও গাভী ইত্যাদি পশুসমূহকে (বা পশুসম্বন্ধিনী বৃদ্ধিকে) তুমি আমাদের মধ্যে স্থাপিত করো। প্রজাগণকে আমাদের মধ্যে ধারিত করো। এই পতির সাথে অবস্থিত হয়ে আমরা যেন সদা অহিংসিতা থাকতে পারি।

২১। আপন শুভ জ্যোতির সাথে সুজ্যোতিষ্মন্ দিবস সূর্যের সাথে হবিঃ সেবন করুক। স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি! আপন জ্যোতির সাথে শুভ তেজঃশালিনী রাত্রি প্রজ্ঞাপাক অগ্নির সাথে এই হবিঃ সেবন করুক। তাদের উদ্দেশে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। (এই যজুমন্ত্রগুলি পাঠ করে রৌহিণ হোমে দুই ঘৃতাহুতি প্রদান করণীয়)।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *