মঞ্চ ও পর্দা
ব্যক্তিত্ব ও ব্যক্তিগত
পরিশিষ্ট ১
পরিশিষ্ট ২

‘হীরক রাজার দেশে’র একটি স্মরণীয় আউটডোর

হীরক রাজার দেশে’র একটি স্মরণীয় আউটডোর

একটা বিরাট পর্ব শুটিং শেষ করে সবাই রওনা হলাম মাদ্রাজ। সেখানে স্টুডিয়োতে কিছু ইম্পর্ট্যান্ট কাজ হবে, কিছু কাজ হবে সমুদ্রের ধারে এবং সবচাইতে ভাইটাল যে কাজটা, সেটা হল বাঘের সঙ্গে, সেটাও হবে এখানে। খুব একটা মাথা ঘামাইনি ব্যাপারটা নিয়ে। কেননা এটা নিশ্চয়ই যে মানিকদা কিছু টেকনিক্যাল কায়দা করবেনই, যাতে বাঘের খুব কাছে আমায় যেতে না হয়। সুতরাং ব্যাপারটার গুরুত্ব আমার কাছে খুব একটা ছিল না। যা-ই হোক, পরদিন বিকেলে মাদ্রাজ পৌঁছোলাম। এই পৌঁছোবার সঙ্গে সঙ্গে বাঘের চিন্তাটা একেবারে চেপে বসল। ওখানে পৌঁছেই দেখি সব আলোচনাটা হচ্ছে বাঘকে নিয়ে। তখনও ঠিক যেন বুঝতে পারছিলাম না। খাওয়াদাওয়া সেরে সে দিনকার মতো শুয়ে পড়া গেল। পরদিন সকাল থেকে শুরু হল বাঘ সম্পর্কে খবরাখবর। ব্রেকফাস্টের পর খবর এল যে আমাকে মানিকদার সঙ্গে বেরুতে হবে। কালু (সৌমেন্দু রায়) এসে বলল যে বাঘ দেখতে যাব আমরা— তোমাকেও যেতে হবে। বেরিয়ে পড়লাম, কিন্তু আমার ন্যায় লোকের ক্রমেই কথা বন্ধ হতে লাগল। মানিকদা, পুনু, কালু, সন্দীপ, রঞ্জিতদাএবং আমি। বাঘ দেখাতে নিয়ে গেল মাদ্রাজ বাসিন্দা আমাদের সবার প্রিয় বলাই। অজান্তে যেন কীরকম সব হতে শুরু করল। মনে হল সবাই আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। একজনও একটু সান্ত্বনা দিচ্ছে না। একটু পরেই বাঘের ডেরায় পৌঁছোলাম। বলাই দৌড়ে গিয়ে বাঘের মালিককে ডেকে আনল। মালিক এলেন। একটু পরে সব্বাইকে খাঁচার কাছে নিয়ে গেলেন। খাঁচা থেকে বাঘকে বাইরে বার করা হল। সবার আগে মানিকদা একেবারে বাঘের কাছে গেলেন— তার গায়ে হাত দিলেন। দূরে আমরা সবাই দাঁড়িয়ে। আমায় ডাকলেন মানিকদা, আমি গেলাম এবং একটু তফাতে দাঁড়ালাম। মানিকদা বললেন, ‘এসো, কোনও ভয় নেই, বাঘটা বুড়ো এবং চোখেও কম দ্যাখে।’

একবার কেমন লাগল, তারপর গেলুম এগিয়ে। মানিকদা বললেন, ‘গায়ে হাত দাও।’ দিলুম। সত্যিই কিছুই করল না। একবার একটু হাঁউ করে তাকাল। আমার সব ভয় এক সেকেন্ডে কেটে গেল। ব্যাস, আবার আমি কথা বলতে শুরু করলাম এবং একটু বেশি করেই কথা বলতে লাগলাম রিল্যাক্সড হবার জন্যে। দিনটা ছিল সপ্তমী। হোটেলে ফিরে সবাই খুব মেজাজে। বাঘ এমন একটা কিছু ব্যাপারই নয়—এই নিয়ে নিজেদের মধ্যে খুব গুলতানি হল। পরের দিন থেকে শুটিং অর্থাৎ মহা-অষ্টমী থেকে। বাঘ নিয়ে শুটিং মহা-নবমীর দিন। পরের দিন খুব হইহই করে শুটিং করছি। বাঘ নিয়ে কোনও আলোচনাই আর নেই। কেননা একটা কানা বাঘ, কতটুকুই বা তার ক্ষমতা। দিনের শেষে শুটিং প্যাকআপ করে সবাই হোটেলে। কিন্তু মানিকদা ও কালু কোথায় যেন গেলেন। সঙ্গে রঞ্জিতদাও। অন্য আর যে কারা ছিল সঙ্গে, মনে পড়ছে না। ঘরে তপেন আর আমি বসে আড্ডা দিচ্ছি। একটু পরে কালু ঢুকল। দেরি হল কেন জিজ্ঞাসা করতে বলল, ‘রবিদা, কালকের বাঘটা ক্যানসেলড, অন্য বাঘ ঠিক করা হল।’ ব্যাস, আবার আমি ফিউজড—আবার সব কথা থেমে গেল। কেমন একটা লাগতে লাগল। শুয়ে পড়লাম। তপেনও শুয়ে পড়ল। মনে হল, আবার নতুন বাঘ কেন! রাত্রে খাওয়াদাওয়া সেরে কোনওরকমে শুয়ে পড়লাম। ঘুম হল কি না জানি না, তবে ছিলাম ঝিম মেরে।

পরদিন সকাল। কীরকম যে একটা লাগছিল, সেটা কাউকে বোঝাতে পারব না। সকাল দশটা থেকে প্রসাদ স্টুডিয়োতে শুটিং; বাঘের সঙ্গে শুটিংটা হবে লাঞ্চের পর। হোটেল থেকে সবাই যথাসময়ে বেরুলাম। যাবার পথে আমাদের দাদা এবং ম্যানেজমেন্ট-ইন-চার্জ রঞ্জিতদা বললেন, ‘চলুন, একবার মায়ের দর্শন করে যাই। আজ নবমী।’ যন্ত্রের মতো বাঙালিদের পুজোমণ্ডপে একবার গেলাম। মায়ের দর্শন হল। তারপর স্টুডিয়ো, যথারীতি কাজ শুরু হল। মানিকদা একবার এক ঝলকে বললেন, ‘রবি, গতকালের বাঘটা বাদ দিলাম। কোনও ক্যারেকটার নেই বাঘটার। আজকেরটা খুব ভালো। কোনও ভয় নেই, ট্রেনড বাঘ।’ ব্যাস, আর কোনও কথা বললেন না। শুধু এক ফাঁকে কালু বলল, ‘রবিদা, বাঘটা বিরাট, তবে ট্রেনড।’ সবাই খালি ট্রেনড কথাটা বারে বারে ব্যবহার করছে। ক্রমে দিন গড়িয়ে লাঞ্চের সময় এল। বুঝুন, ঠিক ওই সময় আমি কী অবস্থায় রয়েছি। মনে হচ্ছিল যেন সবাই আমার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল। ঠিক একটার সময় একটা হইচইয়ের আওয়াজ শুনতে পেলাম স্টুডিয়োর এক প্রান্ত থেকে। এসে গেছে। একটা বিরাট খাঁচায় (চাকাওয়ালা) করে প্রায় জনা ষোলো লোক ঠেলে নিয়ে আসছে বাঘটাকে। বিশাল— দৈর্ঘ্যে প্রায় সাড়ে দশ ফুট। খাঁচার মধ্যেই যেভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছিল, দেখলে ধড়ে আর প্রাণ থাকে না। ফ্লোরের সেটটার কাছে এসে দাঁড়াল। মানিকদা, বউদি, আমি এবং ইউনিটের লোকেরা দাঁড়িয়ে। অন্য সবাই বেশ খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে। মানিকদা খাঁচাটার কাছে গেলেন। একটু পরে আমায় ডাকলেন। গেলাম। আমাকে খাঁচার বাইরে থেকে ট্রেনার মহিলাটি বাঘের গায়ে হাত দিতে বললেন। দিলাম। কীরকম যেন একটা অবস্থায় সবাই ছিল। কেউ কোনও কথা বলে না। এতে করে ভয় আমার আরও বেড়ে গেল।

লাঞ্চ ব্রেক হল। মানিকদা ট্রেনারকে বললেন, বাঘটা ফ্লোরের ভিতর নিয়ে যেতে। গাড়িটাকে ঠেলে সেই লোকজনেরা ঠিক একটা দরজার মুখে দাঁড় করাল এবং তারপর খাঁচার গেটটা খুলে দিল। ঠিক এক লাফে বাঘটা বেরিয়ে পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে সেই লোকজন হাতে একটা লাঠি দিয়ে ফ্লোরে আওয়াজ করতে লাগল। বাঘের মুভমেন্টটা চেকড হল এবং দেয়াল ঘেঁষে বাঘটা বসল। সঙ্গে সঙ্গে সেই লোকজন ট্রেনার সমেত বাঘটাকে চেপে ধরল এবং ট্রেনার একটা ভিজে কাপড় দিয়ে বাঘটার গা মুছতে লাগলেন। ততক্ষণে মানিকদা ক্যামেরায় চোখ লাগিয়ে বসে গেছেন। ক্যামেরাটা প্রায় বাঘের থেকে বিশ গজ দূরে— জুম ফিট করা। মানিকদার ঠিক পাশে একটা সিটে বউদি বসে এবং ঠিক তার পাশে আমি দাঁড়িয়ে। আর চারদিকে ইউনিটের সবাই এবং ওখানকার লোকজন। যে রঞ্জিতদা সকালে আমায় মায়ের দর্শন করিয়ে আনলেন, দেখলাম প্রায় পঞ্চাশ গজ দূরে তিনি একটা তক্তার ওপর দাঁড়িয়ে। ওদিকে তখনও ভীষণভাবে বাঘটাকে বশে আনবার জন্যে লোকজন ওই দেশীয় ভাষায় কী সব বলে যাচ্ছিল। এবার আমার আর ভয় রইল না। তারপর পরের স্টেজে চলে গিয়েছিলাম। অর্থাৎ কীসের এ জীবন—কেন এই জীবন ইত্যাদি ইত্যাদি। একবার ভাবছিলাম, বাঘটা কি কামড়াবে, না একটা থাপ্পড় মারবে। অর্থাৎ, মৃত্যু আমার সুনিশ্চিত আজ।

একবার মনে হল বোধহয় মানিকদা এই শুটিংটা ক্যানসেল করে দেবেন। আবার মনে হল, দূর, ভারী তো মরব। লোকে বলবে, সত্যজিৎ রায়ের শুটিং করতে করতে মারা গেছল। সেই সময়টা চিন্তার কোনও রুট ছিল না। চিন্তা তখন আপন চিন্তায় বিচরণ করছিল। চারদিকে একবার চোখ ঘুরিয়ে নিলাম। দেখলাম, সবার মুখ থমথম করছে। সবাই তখন ভাবতে শুরু করেছে, এই রবির সঙ্গে শেষ দেখা। এমন সময় ট্রেনার চিৎকার করে বললেন, ‘বাঘ কে সাথ কৌন কাম করেগা?’ বলিষ্ঠ গলায় আমি বললাম, ‘হাম।’ মহিলা ট্রেনার বললেন, ‘আইয়ে।’ কোনও দ্বিধা আর ছিল না আমার তখন। সোজা হেঁটে গিয়ে বাঘের পাশে গা ঘেঁষে দাঁড়ালাম। ট্রেনার বললেন, ‘বৈঠিয়ে।’ বসলাম। ট্রেনার আমার হাতে সেই ভিজে কাপড়টা দিয়ে বললেন, ‘এইসা করকে বুলাতে জাইয়ে।’ কাপড়টা যখন হাতে নিলাম, তখন দেখলাম বাঘটা এক ঝলক আমার দিকে আড়চোখে তাকাল। সে চাউনির বর্ণনা দেবার ক্ষমতা আমার নেই। তবে যে প্রবাদটা এতদিন শুনে এসেছিলাম যে অমুকের চাউনিটা বাঘের মতন, এই মুহূর্তে মনে হল প্রবাদটা একেবারেই বাজে। কোথায় বাঘ আর কোথায় মানুষ! প্রায় গা ঘেঁষাঘেঁষি করে এখন আমি বাঘের কাছে বসে, সুতরাং বাঘ সম্পর্কে কোনও গুল শুনতে আর আমি রাজি নই।

সেই কাপড়টা দিয়ে ঘষে যাচ্ছি আর যথাসম্ভব মুখের হাসিটা মেনটেন করে যাচ্ছি। ট্রেনার আবার বললেন, ‘উম্মা উম্মা বোল জাইয়ে।’ তা-ই বলতে শুরু করলাম। কিন্তু বাঘটার সামান্য গোঙানি এবং বড়ো করে নিশ্বাস ছাড়া যেন আমাকে শেষ করে দিচ্ছিল। ট্রেনার বললেন, ‘অভি ঠিক হ্যায় তো?’ বলেই লোকজন সমেত ক্যামেরার জুমের বাইরে গিয়ে দাঁড়ালেন। একেবারে আমি একা এবার— আর বাঘ। ‘উম্মা উম্মা’ করে যাচ্ছি আর ভিজে কাপড়টা বুলিয়ে যাচ্ছি। ভুলে মুখ দিয়ে একবার ‘উমা’ বেরিয়ে গেল— ব্যাস, বাঘ একেবারে দাঁড়িয়ে উঠল। দূর থেকে ট্রেনার লাঠির আওয়াজ করল— আমি আবার ‘উম্মা’ বলতে লাগলাম, আবার বাঘ বসে পড়ল। এইভাবে প্রায় দশ মিনিট বাঘ আর আমি। হঠাৎ মানিকদার গলা পেলাম— ‘রবি ঠিক হ্যায়?’ আমি তখন আর সে রবি নেই— বেশ চিৎকার করে বললাম, ‘হ্যাঁ মানিকদা। একেবারে আমার কন্ট্রোলে। টেক করতে পারেন।’ এইবার শুরু হল টেকিং-এর তোড়জোড়। নিমাই ঘোষ কাছে এসে পটাপট ছবি তুলতে লাগল। কালু মিটারটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে রিডিংটা দেখতে বলল। নিমাই আবার বলল অন্য একটা পোজ দিতে। প্রচুর পোজে ছবি দিলাম। এমনকি বাঘকে কিস করছি— এমন ছবিও নিমাই ঘোষের কাছে রয়েছে। শুরু হয়ে গেল শুটিং। যেটা সবাই পর্দায় দেখেছেন। বিকেল পাঁচটার মধ্যে বাঘকে নিয়ে ক্যামেরার সামনে আমাদের সব কাজ শেষ হয়ে গেল। মানিকদা প্যাকআপ বললেন। সবাই আমার অসীম সাহসের প্রশংসা করতে লাগল। এমনকি বাঘের মালিক যিনি, তিনিও তো বললেন, ‘আপকে ফোরহেড মে কুছ হ্যায়।’ রঞ্জিতদাও কাছে এসে খুব প্রশংসা করলেন। এইবার আর নো ছাড়ান-ছোড়ন। বললাম, ‘দাদা, প্রচণ্ড টেনশন গেছে। এটা স্কচ ছাড়া যাবে না।’ গ্রান্টেড। মাদ্রাজে এই ক’দিনের মধ্যে আজ রাত্রে সবাই একসঙ্গে খুব হুল্লোড় হল। ডিনার খাওয়া হল আমার ছোটো বোনের বাড়িতে। সেই দিনটায় মনে হয়েছিল যে ‘ভয়ংকর’ কোনও কাজ করতে হলে বোধহয় আমি ফেল করব না।

আমার কাছে আউটডোরের স্মরণীয় ঘটনা এটাই সবচাইতে বড়ো। এমন একটা থ্রিল এবং এমন একটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া অভিনেতার ভাগ্যে খুব কমই ঘটে। অবশ্য পেছনে হালটা কে ধরে রয়েছেন, সেটাই সবচাইতে বড়ো প্রশ্ন। এখানে হালটা ধরে ছিলেন সত্যজিৎ রায়। পরিচালকের স্ট্যামিনা যেখানে অনড়, সেখানে অভিনেতার কোনও রিস্কই নেই। পরিচালক যেখানে দ্বিধাগ্রস্ত, সেখানেই শিল্পীর মৃত্যু। এমন ঘটনাও ঘটেছে আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রে। সে দিন পুরো সাহসটাই আমায় জুগিয়েছিলেন মানিকদা।

‘সুকন্যা’ পত্রিকা, বিনোদন সংখ্যা (১৯৮৪)

টীকা

১) কালু—প্রখ্যাত সিনেমাটোগ্রাফার সৌমেন্দু রায়ের ডাকনাম। ১৯৩৩-এ জন্ম। বিশ্বখ্যাত সিনেমাটোগ্রাফার সুব্রত মিত্রের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু। সত্যজিৎ রায়ের অনেকগুলি ছবিতে কাজ করেছেন। যার শুরু ‘রবীন্দ্রনাথ’ তথ্যচিত্র ও ‘তিনকন্যা’ ছবি থেকে ১৯৬১ সালে। সত্যজিৎ-সহ অন্যান্য পরিচালকদের অজস্র ছবিতে কাজ করেছেন। যার মধ্যে ‘অভিযান’, ‘পলাতক’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘সাধু যুধিষ্ঠিরের কড়চা’, ‘নিধিরাম সর্দার’, ‘Islam in India’, ‘হুইল চেয়ার’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

২) পুনু—ভালো নাম রমেশ সেন। সত্যজিৎ রায়ের সহকারী পরিচালক হিসেবে ইউনিটের একজন অপরিহার্য লোক ছিলেন। অন্য নামী পরিচালকের সঙ্গেও কাজ করেছেন।

৩) সন্দীপ—সত্যজিৎ-পুত্র সন্দীপ রায়। ১৯৫৩-য় জন্ম। প্রথমে স্টিল ফোটোগ্রাফিতে পারদর্শী হন। পরে বাবার ইউনিটে অত্যন্ত অল্প বয়স থেকে কাজ করে, ফিল্মের টেকনিক্যাল খুঁটিনাটি সম্বন্ধে অবহিত হন। প্রথম পরিচালনা করেন ‘ফটিকচাঁদ’ (১৯৮৩)। এছাড়া ‘বোম্বাইয়ের বোম্বেটে’, ‘কৈলাসে কেলেঙ্কারী’, ‘নিশিযাপন’, ‘গুপী বাঘা ফিরে এলো’, ‘গোরস্থানে সাবধান’, ‘বাদশাহী আংটি’ ইত্যাদি বেশ কয়েকটি ছবি পরিচালনা করেন। টেলিভিশনেও কাজ করেছেন। এখনও কাজের ধারা অব্যাহত। প্রসঙ্গত, ছোটো সন্দীপের অনুরোধেই সত্যজিৎ রায় ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবিটি (১৯৬৯) তৈরি করেছিলেন।

৪) রঞ্জিতদা—ইনি সম্ভবত রঞ্জিৎ চট্টোপাধ্যায়। ‘সোনার কেল্লা’ ও ‘জয়বাবা ফেলুনাথ’ ছবি দু’টিতে ‘তোপসে’ চরিত্রের অভিনেতা সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাবা। রঞ্জিতবাবু সত্যজিতের ইউনিটের সেভাবে কেউ ছিলেন না। কিন্তু একটা সময় এই ইউনিটের সঙ্গে ভীষণভাবে মিশে গিয়েছিলেন তিনি।

৫) নিমাই ঘোষ—বিখ্যাত এই স্টিল ফোটোগ্রাফারের জন্ম ১৯৩৩ সালে। হঠাৎই পেশাদার ফোটোগ্রাফার হয়ে যান। সত্যজিৎ রায়ের ইউনিটে যুক্ত ছিলেন। নিমাইবাবুর অনেকগুলি ফোটোগ্রাফির বইয়ের মধ্যে—’Satyajit Ray at 70′, ‘Dramatic moments : Photography and memories of Calcutta Theatre from sixties of nineties’, ‘Faces of Indian Art : Through the less of Nemai Ghosh’ ইত্যদি উল্লেখযোগ্য।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *