প্ৰথম পৰ্ব
দ্বিতীয় পৰ্ব

সাইকিয়াট্রিক রিহিউমানাইজড

সাইকিয়াট্রিক রিহিউমানাইজড

অনেক দিন আগের কথা— বছর পঞ্চাশ তো হবেই। মনোরোগ- বিশেষজ্ঞগণ মানুষের মনকে মেশিনের সাথে তুলনা করতে চেয়েছিলেন। ফলে মানসিক রোগের চিকিৎসা বা থেরাপিকে টেকনিক নামে অভিহিত করে। আমার বিশ্বাস, মানুষের মনকে মেশিনের সাথে মেলানোর তাদের যে স্বপ্ন, ইতোমধ্যেই তা ভেঙ্গে গেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে, এখানে মনোরোগের চিকিৎসা মানবিক মনোরোগের চিকিৎসাই, মেশিনের মনোচিকিৎসা নয়।

হতে পারে একজন ডাক্তার নিজেকে টেকনেশিয়ান মনে করেন কিন্তু রোগীকে তিনি কখনোই একটি মেশিন হিসেবে দেখে না, মানুষ হিসেবেই তাকে মূল্যায়ন করেন।

একজন মানুষ কখনোই আরেক জনের মতো হয় না। একটি বস্তু আরেকটি বস্তুর মতো হতে পারে। কিন্তু মানুষ? না, সে সবসময় নিজের মতো। এখানে কারো সাথে কারো তুলনা চলে না। একজন মানুষ উচ্চ বংশে জন্ম গ্রহণ না করেও, পরিবেশ পরিস্থিতির আনুকূল্য না পেয়েও নিজেকে সমাজের, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ চূড়ায় নিয়ে যেতে পারে।

উদাহরণ হিসেবে, কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। বলা যেতে পারে, কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প ছিল একটি জীবন্ত পরীক্ষাগার। সেখানে দেখেছি, বন্দিদের মধ্যেই কারো আচরণ ছিল শুয়োরের মতো। আবার কারো আচরণ ছিল সাধু-সন্ন্যাসীর মতো। মানুষ নানা ধরনের সম্ভবনা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কী হবেন, তা তার ইচ্ছার উপর, সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে। পরিবেশ-পরিস্থিতির উপর নয়।

আমাদের জেনারেশন বাস্তবাবাদী। কারণ মানুষ যে কী, তা আমরা জানি। সবশেষে বলা যায়, অশউইজের গ্যাস চেম্বার মানুষই বানিয়েছে। আবার সেখানে যারা আল্লাহর নাম জপতে জপতে কিংবা ঠোঁট নেড়ে শেমা ইসরায়েল উচ্চারণ করতে করতে মৃত্যুর জন্য প্রবেশ করেছে, তারাও মানুষই ছিল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *