দ্য উইল টু মিনিং
জীবনের মানে খোঁজা মানুষের অপ্রধান অভ্যাস নয়, এটি প্রাথমিক ভাবেই তার মধ্যে থাকে। এর মানেটাও বেশ ইউনিক। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে এই অভ্যাসটি নিজে নিজেই মানুষের মধ্যে তৈরি হয়। যখন সে গুরুত্বপূর্ণ কিছু অর্জন করে, তখনই সে তৃপ্ত হয়। অনেক লেখক মনে করেন, তাৎপর্য এবং মূল্যবোধ কিছু নয় কিন্তু এটা নিজের মধ্যে প্রতিরোধ ব্যবস্থা, প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। আনন্দ দেয়। তবে আমি যদি আমার কথা বলি, শুধু নিজের জন্য এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বাঁচতে চাই না। কিংবা শুধু নিজের জন্য কিছু করে মরতে চাই না। মানুষ তার আদর্শের জন্য, মূল্যবোধের জন্য যেমন বাঁচতে জানে, তেমনি হাসতে হাসতে মরতেও পারে।
কয়েক বছর আগে ফ্রান্সে জনগণের মতামত নিয়ে একটি জরিপ করা হয়েছিল। যখন ফলাফল প্রকাশিত হয়, দেখা গেল, ৮৯ শতাংশ লোক মনে করেন বেঁচে থাকার জন্য কিছু একটা থাকা চাই। শুধু তাই নয়, শতকরা ৬১ লোক স্বীকার করেছে, তাদের জীবনে কিছু ছিল বা কেউ ছিল, যাদের জন্য তারা মরতেও প্রস্তুত ছিল। এই একই জরিপ আমি ভিয়েনার হাসপাতালে রোগী এবং কর্মচারীদের উপরও করেছিলাম। ফ্রান্সে হাজার হাজার মানুষের উপর জরিপ করে যে ফলাফল পাওয়া গিয়েছিল, এখানে সেই একই ফলাফল পাওয়া গেছে। মাত্র দুই ভাগ পার্থক্য ছিল।
৪৮ কলেজের ৭৯৪৮ জন ছাত্রছাত্রীর উপর আরেকটি জরিপ করা হয়েছিল। জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির সমাজ বিজ্ঞানীরা এই জরিপ পরিচালনা করে ছিল। তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনটি ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ-এর দুই বছরের গবেষণা সমীক্ষার অংশ ছিল। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এই মুহূর্তে তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কাঙ্ক্ষিত জিনিস কী? ১৬ ভাগ শিক্ষার্থী উত্তর দিয়েছিল, ‘প্রচুর টাকা উপার্জন করা। ৭৮ ভাগ শিক্ষার্থী উত্তর দিয়েছিল, ‘জীবনের উদ্দেশ্য এবং মানে খুঁজে বের করা।’
অবশ্য মূল্যবোধ সম্পর্কে এখানে কারো কারো উদ্বেগ, আগ্রহ কৃত্রিমও হতে পারে। তবে এমন যদি হয়ই, বুঝতে হবে তা ব্যতিক্ৰম। তাছাড়া এরকম কাজে এ বিষয়গুলো থাকতেই পারে। আমাদের সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে। তবে একজন মানুষের যখন তার প্রকৃত, অকৃত্রিম সত্তার সাথে পরিচয় ঘটবে তখন সে যথাসম্ভব অর্থপূর্ণ জীবন যাপনের চেষ্টা করবে।