জীবনের অর্থ
আমার সন্দেহ আছে, কোনো ডাক্তার এক কথায় এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে কি না, যা সবার জন্য প্রযোজ্য হবে। জীবনের অর্থ একেক মানুষের কাছে একেক রকম। প্রতিদিন, প্রতিঘণ্টায় এর অর্থ বদলে যায়। এজন্য সবার জন্য জীবনের অর্থ এক রকম হয় না। শুধু তাই নয়, বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে একজন ব্যক্তির জীবনের অর্থ বদলে যেতে পারে। এখন আমরা যদি দাবার চ্যাম্পিয়নকে জিজ্ঞেস করি, ‘স্যার, বলুন তো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চাল কোনটি?’ আসলে শ্রেষ্ঠ বা ভালো চাল বলে কিছু নেই। খেলার কোনো বিশেষ কোনো মুহূর্তে বা কারো বিরুদ্ধে কোনো চাল ভালো হলেও সেটা সব সময়ই ভালো হবে, তেমন কোনো কথা নেই। ভালো চাল নির্ভর করে মুহূর্তের উপর, অবস্থার উপর। মানুষের অস্তিত্বের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তাই জীবনের কোনো বিমূর্ত মানে খোঁজা উচিত নয়। সবারই নিজের জীবন নিয়ে আলাদা আলাদা চিন্তা আছে। সবারই নিজস্ব লক্ষ্য আছে। সেই লক্ষ্য পূরণের জন্যই সে এগিয়ে যায়। তার সে লক্ষ্য পরিবর্তন করা ঠিক নয়। মানুষ জীবন একবারই পায়। সবার কাজই গুরুত্বপূর্ণ। নিজ নিজ মেধা এবং যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে সেটাকে সার্থক করা উচিত।
জীবনের প্রতি মুহূর্তেই নানা ধরনের বাধা আসে। চ্যালেঞ্জ আসে। মানুষকে তা সমাধান করতে হয়। হতে পারে এর ফলে জীবনের মানে সম্পূর্ণ উল্টেও যেতে পারে। শেষপর্যন্ত বলা যায়, মানুষকে কখনোই জিজ্ঞেস করতে নেই, জীবনের মানে কী? তবে তাকে এটা বুঝতে হবে, সে যা জানতে চায়, সে তা-ই। অর্থাৎ একজন মানুষ যেসব প্রশ্ন করে, সেই উত্তরগুলো তার নিজের জীবনেই খুঁজে বের করতে হয়। এভাবেই তার জীবন গড়ে ওঠে। তাই, লোগোথেরাপি মনে করে, দায়বদ্ধতা বা দায়িত্বশীলতাই মানুষের অস্তিত্বের মূল কথা।