ভারত অভিযানের আগে

দারিয়ুসের মৃত্যুতে স্বস্তি পেলেন আলেকজান্ডার। এখন আর তার জন্য আইনগত কোনো হুমকি নেই। পরাজিত রাজাও যে কোনো সময় হুমকি হয়ে উঠতে পারত। আলেকজান্ডার এবার নিশ্চিন্ত। বিশাল সাম্রাজ্য পারস্য। এই পারস্যের একক অধিপতি আলেকজান্ডার। আর কোনো নতুন দেশ জয়ে নয়, আলেকজান্ডার এবার ছোটখাট লড়াই করলেন কিছু উপজাতিদের প্রতি। এরা তার বিদ্রোহ করেছিল। এতেই জয় করলেন কাস্পিয়ান সাগরের দক্ষিণাঞ্চল। দক্ষিণাঞ্চল জয় করতে করতে আরো পূর্বে অভিযান চলতে লাগল তার। তার নতুন সরকারের প্রাদেশিক শাসক হিসেবে ইরানিয়ানদের সুযোগ দিলেন। কিন্তু আড়ালে এরা তার বিরোধিতা করত। আলেকজান্ডার এরপর সোজা দক্ষিণে অভিযান চালালেন। এই অভিযান চলল পারস্যের দক্ষিণাঞ্চল আর্কোসিয়া পর্যন্ত। আর উত্তরে আফগানিস্তান পর্যন্ত। আসলে এসব জায়গায় তিনি অভিযান করতেন তার নতুন বিশাল সাম্রাজ্যের উপযুক্ত প্রশাসনিক নগরের খোঁজে এবং সেনানিবাস স্থাপনের জন্য। আগেই ব্যাকট্রিয়া জয় করেছিলেন। এবার জয় করলেন সগডিয়ানা। অভিযান চলল হিন্দুকুশ পর্বতমালার পাশ ঘেঁষে অক্সাস নদীর তীর পর্যন্ত। এই অক্সাস নদীই এখন আমুদরিয়া নামে পরিচিত। তবে কিছু ইতিহাসবিদ জানান, আলেকজান্ডারের এই অভিযান ছিল বেসাসকে ধরার জন্য। বেসাসের পিছনে তিনি ছুটতে থাকেন পশ্চিম আফগানিস্তানের মেডিয়া, পার্থিয়া আরিয়া থেকে শুরু করে দক্ষিণ আফগানিস্তানের দ্রানজিয়ানা ও আর্কোসিয়া, উত্তর ও মধ্য আফগানিস্তানের ব্যাকট্রিয়া এবং স্কিথিয়া পর্যন্ত। এর মধ্যেই তিনি জয় করেন হেরাত এবং মারকান্দা। এর বাইরেও জয় করেন কিছু গুরুত্বপূর্ণ শহর। এসব শহরকে আলেকজান্দ্রিয়া নামে ডাকা হতো। এসব শহরের মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তানের আধুনিক কান্দাহার এবং আধুনিক তাজিকিস্তানের আলেকজান্দ্রিয়া এসকট। আর এসব শহরেই তিনি খুজে বেড়িয়েছেন বেসাসকে। শেষ পর্যন্ত বেসাস তার বিশ্বাসঘাতকদের হাতেই প্রাণ হারান। পারস্য রাজধানী সুসা জয়ের পর দুই বছরের অভিযানে তিনি এসব নগর অধিকার করেন। এই দুই বছরের অভিযানে তার সাম্রাজ্যের আকার তখন সুবিশাল। এসময় আলেকজান্ডার বিয়ে করলেন রােম্লানেকে। রোক্সানে ছিলেন এক সগডিয়ান ব্যারনের কন্যা।