টায়ার অবরোধ

পারস্যের সম্রাট পালিয়ে যাওয়ায় স্বস্তি পেলেন না আলেকজান্ডার। এবার তিনি চললেন দক্ষিণে। দক্ষিণে গিয়ে প্রথমেই জয় করে নিলেন ফনেসিয়া নগর। তারপর চললেন টায়ার জয় করতে। টায়ার হচ্ছে আধুনিক লেবাননের উপকূলের একটি দ্বীপনগর। মূল ভূখণ্ড থেকে বেশ দূরেই দ্বীপটি। মূল ভূখণ্ড থেকে দ্বীপ নগরী টায়ারে যেতে সাগরের পানির গভীরতা মাত্র আঠারো ফুট। 

দারুণ সুরক্ষিত নগরী টায়ার । চারপাশে উঁচু উঁচু দেয়াল। নিরাপদ পোতাশ্রয়। উঁচু যে দেয়াল দিয়ে ঘেরাও করে রাখা ছিল টায়ার, সেই দেয়ালের বাইরে দ্বীপের কোনো স্থলভাগ ছিল না। একেবারে সাগর ঘেঁষে দেয়াল দিয়ে ঘেরা এই নগর। এই নগরের বাসিন্দারা অনেকটা দুর্ভেদ্য করেই সাজিয়েছে দ্বীপটাকে। সহজে এই দ্বীপ দখল করা সম্ভব নয়। 

আলেকজান্ডারের সাথে হেফাস্টিয়ন ছায়ার মতো থাকেন। হেফাস্টিয়ন তো এমন সুরক্ষিত দূর্গ দেখে দমে গেলেন। এটাকে জয় করা কেমন করে সম্ভব হবে, তার মাথায় কোনো বুদ্ধিই এলো না।

আলোচনায় বসলেন আলেকজান্ডার। একজন সেনাপতি বললেন, টায়ার জয় করা অনেক কষ্ট হবে। তারচেয়ে আমরা মিসরের দিকে যাই। 

আলেকজান্ডার সেনাপতির কথা শুনে হাসলেন। তার মনের গোপন ইচ্ছে কিন্তু ভিন্ন। হেফাস্টিয়নও মত দিলেন, এখানে থেকে সময় নষ্ট না করাই ভালো। কারণ টায়ার খুব গুরুত্বপূর্ণ কোনো নগরী নয়।

আলেকজান্ডার বললেন, কিন্তু টায়ার নগরী দখলে থাকলে অনেক সুবিধা। 

আসলেই দ্বীপনগরী টায়ার দখলে থাকলে পরবর্তী অভিযান আরো সহজ হবে। পূর্বভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের আধিপত্য বজায় রাখতে হলে টায়ার জয় করতেই হবে। এই টায়ার দিয়েই তার বাহিনীর খাবারসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করা যাবে। কারণ সমুদ্র শাসন করতে হলে টায়ারকে গুরুত্ব দিতেই হবে।

আলেকজান্ডারের যুক্তি শুনে সবাই একবাক্যে মেনে নিলেন টায়ারের গুরুত্ব। আলেকজান্ডার তারপর যোগ করলেন, এখানেই হবে আমার সৈন্যদের অন্য রকম লড়াই। এ লড়াইয়ের সাফল্যের ওপর আমাদের পরবর্তী যে কোনো লড়াইয়ের সাফল্য নির্ভর করবে। এবং এ লড়াইয়ে হারা যাবে না । কোনোভাবেই না। 

টায়ারে ঢোকার সবগুলো পথ বন্ধ। নগর আক্রমণ করবেন কী ভাবে? এ তো আর ডাঙা নয় যে, নগরফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকবেন। আঠারো ফুট পানির উপর সঁতরে যুদ্ধ করা যায় না। কাজেই নগর আক্রমণের যত রকম পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি ছিল তার কোনোটাই কাজে এলো না।

এবার নগরের রসদ সরবরাহ বন্ধ করে দিলেন আলেকজান্ডার। নগরফটকে পাহারা বসালেন যাতে এক দানা খাবার বা এক ফোটা খাবার পানিও টায়ার নগরীতে ঢুকতে না পারে।

কিন্তু টায়ারবাসীরা আগেই জানতো যে তারা আক্রান্ত হবে। তারা জানত টায়ার নগরীর গুরুত্বের কথা। জানত বলেই এতটা সুরক্ষিত করে রেখেছিল নগরী। জানত বলেই আগে থেকেই প্রচুর খাবার আর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুদ করে রেখেছিল। তবে খাবার পানির জন্য তাদের চিন্তা করতে হতো। আলেকজান্ডার ভেবেছিলেন যেহেতু দ্বীপ নগরী, তাই খাবার পানিও বুঝি মূল ভূখণ্ড থেকে আনতে হয়। টায়ার নগরীর নিজেরই খাবার পানির ব্যবস্থা ছিল। 

আলেকজান্ডার হামলার কৌশল বদলে ফেললেন। জাহাজের ডেক থেকে টায়ারের দেয়ালে আঘাতের পর আঘাত চালাতে লাগলেন। তার আবিষ্কৃত গুলতি দিয়েও আক্রমণ চালালেন। কিন্তু মোটেই সুবিধা করতে পারলেন না। বেশ শক্ত—পোক্ত দেয়াল। তার ওপর জাহাজ ডুবিয়ে দিচ্ছিল টায়ারযোদ্ধারা। দেয়ালের ওপাশ থেকে বিশাল বিশাল পাথর ছুড়ে মারতে লাগল জাহাজের ওপর। এতেই একটার পর একটা আলেকজান্ডারের জাহাজ ডুবতে শুরু করল। 

নাহ্! বড় বিপদ হলো দেখছি। আবারও আলোচনায় বসলেন আলেকজান্ডার। আলেকজান্ডার জানতে চাইলেন, ওদের দেয়াল ভাঙার মতো শক্তি কি আমাদের নেই? 

একজন প্রকৌশলী জানালেন, অবশ্যই আছে। আমাদের একশ ফুট লম্বা র‍্যামগুলো দিয়ে অনায়াসে ওদের দেয়াল ভাঙা যাবে। কিন্তু এত লম্বা র‍্যাম তো পানির উপর দিয়ে আনা সম্ভব নয়। জাহাজে করে তো নয়ই। 

আলেকজান্ডার বললেন, তাহলে উপায়? 

উপায় খুঁজে পাওয়া গেল না। রাতের খাবার শেষে নিজের জাহাজে বসে ভাবতে লাগলেন আলেকজান্ডার। জাহাজের ডেকে বসে আছেন তিনি। তার সামনে সুরার পাত্র। একটু পর পর পাত্র ভরা হচ্ছে আর খালি হচ্ছে। আর আলেকজান্ডার ভাবছেন। একসময় হঠাৎ পাত্রটা ছুড়ে ফেললেন ভূমধ্যসাগরে। কান পেতে রইলেন ঝপাৎ শব্দটা শোনার জন্য। কিছুক্ষণ পর শব্দটা হলো। আর তখনই এলেন হেফাস্টিয়ন। হেফাস্টিয়নকে দেখে হেসে ফেললেন আলেকজান্ডার। হাসতে হাসতে জানতে চাইলেন, আমাকে একা থাকতে দিতে চাও না, তাই না হেফাস্টিয়ন? 

বন্ধুর কথা শুনে হেসে দিলেন হেফাস্টিয়নও। বললেন, আমাদের একটা উপায় বের করতেই হবে। 

আলেকজান্ডার বললেন, বড় জ্ঞানী টায়ারবাসী। কত আগে থেকেই সবকিছু গুছিয়ে রেখে দিয়েছে। আহা, এক সময় না একসময় তো ওরা পরাজিত হবেই। মাঝখানে খামোখা আমার সময় নষ্ট করছে। কিন্তু কেমন করে ওদের হারানো যায়, বল তো হেফাস্টিয়ন? 

হেফাস্টিয়ন বললেন, যদি কোনোভাবে ওদের নগরফটকের কাছে। আমাদের র‍্যামগুলো নেয়া যায় এবং ঠিক মতো আঘাত করা যায় । 

আলেকজান্ডার বললেন, ঠিক বলেছ হেফাস্টিয়ন। কিন্তু সেটা কেমন করে? জাহাজে করে এনে আঘাত করা যাবে না। আমি আর জাহাজ হারাতে চাই না। তাহলে উপায়? সাঁতার কেটে কেটে কি এতটা আঘাত দেয়া যাবে? যাবে না। কারণ নগরফটক পানি থেকে অনেক উপরে। আবার দেয়ালের এপাশে কোনো ডাঙাও নেই যে মোক্ষম আঘাত করতে পারবো। 

হঠাৎ কী যেন মনে হলো আলেকজান্ডারের। চিকার করে বললেন, আচ্ছা হেফাস্টিয়ন, যদি আমি ডাঙাটাকেই টেনে নিয়ে যাই নগরফটকের কাছে, তাহলে হবে তো! 

হেফাস্টিয়ন অবাক হয়ে গেলেন আলেকজান্ডারের কথা শুনে। এটা কী করে সম্ভব! কেউ কি কখনো শুনেছে, ডাঙা টেনে নেয়া যায় কোনো দ্বীপের কাছে। কিংবা দ্বীপ কি কখনো ডাঙার কাছে আসে? 

হেঁয়ালি করার সুযোগটা ছাড়লেন না হেফাস্টিয়ন। বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন রাজা। আরেকটা উপায় অবশ্য আছে। 

আলেকজান্ডার অবাক হয়ে বললেন, কী উপায়? 

হেফাস্টিয়ন বললেন, দ্বীপটাকে যদি ডাঙার কাছে টেনে নেয়া যায়, তাহলেও তো আমরা ওদের নগরফটক ভাঙতে পারবো। 

আলেকজান্ডার হাসলেন হেফাস্টিয়নের কথা শুনে। বললেন, আমার কথাটাই তো হলো । দ্বীপটাকে টেনে ডাঙার কাছে নেয়া কিংবা ডাঙাটাকেই টেনে দ্বীপের কাছে নেয়া— একই কথা। তাহলে কাজ শুরু করা যাক।

হেফাস্টিয়ন অবাক। আলেকজান্ডার সত্যি সত্যি ডাঙাকে টেনে আনবেন দ্বীপের কাছে? কিন্তু কেমন করে? ভাবতে শুরু করলেন হেফাস্টিয়ন। বেশিক্ষণ অবশ্য ভাবতে হয়নি তাকে। আর ভেবেও কোনো উপায় বের করতে পারতেন কি না সন্দেহ আছে। তবু তাকে যে বেশিক্ষণ ভাবতে হয়নি, এ—ই ঢের। আলেকজান্ডার চিৎকার করে ওঠলেন, আমার প্রকৌশলীদের খবর দাও। এক্ষুনি।

খবর দেয়া হলো আলেকজান্ডারের প্রকৌশলীদের। তাদের সাথে আলাপ শুরু করলেন আলেকজান্ডার। বললেন, দ্বীপটাকে টেনে ডাঙায় আনতে কতদিন লাগবে? 

আলেকজান্ডারের কথায় অবাক হলেন তারা। জানতে চাইলেন, মানে। 

আলেকজান্ডার বললেন, মানে ডাঙা টেনে দ্বীপের কাছে নিতে কতদিন লাগবে? 

একজন বললেন, আমরা আপনার কথা বুঝতে পারছি না রাজা।

আলেকজান্ডার বললেন, মাটি দিয়ে ভরাট করতে হবে এই দ্বীপে যাওয়ার রাস্তাটা। এবার বুঝেছেন? 

একজন প্রকৌশলী বললেন, রাস্তাটা কতখানি চওড়া হবে? 

আলেকজান্ডার বললেন, আমার পুরো শক্তিই যাতে লড়াই করতে পারে ওই নগরফটকের সাথে। সেরকম চওড়া হওয়া চাই। খুব তাড়াহুড়োর প্রয়োজন নেই। আপনার আস্তে ধীরে কাজ শুরু করে দিন। 

পরদিন থেকে শুরু হলো মূল ভূখণ্ড থেকে টায়ার পর্যন্ত মাটির সেতু তৈরির কাজ। মাটির সেতু মানে মূল ভূখণ্ড থেকে টায়ার পর্যন্ত সাগরের পানি ভরাট করে রাস্তা তৈরি করা। অনেক দিনের কাজ। ততদিন কী করবেন আলেকজান্ডার? 

আলেকজান্ডার জানতেন একসময় না একসময় টায়ারবাসীদের সঞ্চয় শেষ হয়ে আসবে। কতদিনের খাবার ওরা মজুদ করেছিল কে জানে? সাধারনত ছয়মাসের বেশি খাবার কেউ মজুদ করে রাখে না। সে হিসেবে তাকে এখানে থাকতে হবে ছয়মাসের বেশি। আর ওদের সঞ্চয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছুই করার নেই। কিছুই করার নেই বললে ভুল বলা হবে, কেবল একটা জিনিসই করার আছে। আর তা হলো অবরোধ  করে রাখা। কাজেই একদিকে মাটির সেতু তৈরির কাজ হতে থাকল, আর অন্যদিকে আলেকজান্ডার অবরোধ  করে রাখলেন টায়ার নগরী। তবে বেশিরভাগ সৈন্যকেই সেতু তৈরির কাজে লাগিয়ে দিলেন। অবরোধ  করে রাখা বেশ ধৈর্যের কাজ। এখানেও আলেকজান্ডার তার সৈন্যদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিলেন। কেউ অবরোধ  দিতে অধৈর্য হলেই তাকে 

লাগিয়ে দিলেন সেতু তৈরির কায়িক পরিশ্রমের কাজে। ফলে এক টায়ার নগরী জয় করতে গিয়ে আলেকজান্ডার দু ধরনের মানসিক শক্তি আদায় করে নিলেন তার সৈনিকদের কাছ থেকে এক হচ্ছে ধৈর্য মানে মানসিক শক্তি এবং অন্যটি হচ্ছে কঠোর কায়িক শ্রম। 

মূল ভূখণ্ডের সাথে টায়ারের সংযোগ ঘটাতে কয়েকমাস লেগে গেল। অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন প্রায় ছয়মাস সময় লেগেছিল। খৃষ্টপূর্ব ৩৩৩ অব্দে তৈরি হলো মাটির সেতু। ২০০ ফুট চওড়া এই সেতু দিয়ে এবার আঘাত হানা যাবে টায়ারনগরীর ফটকে। আর ততদিনে কিন্তু টায়ারবাসীদের সঞ্চয়ও শেষ হয়ে গেছে। তারাও অধৈর্য হয়ে পড়ল। তারা এবার লড়াই করতে চাইল। কিন্তু আলেকজান্ডারের বাহিনী তাদের সাথে কোনো লড়াই করল না। টায়ারযোদ্ধারা লড়াই করতে এলেই, আলেকজান্ডারের যোদ্ধারা পিছিয়ে যায়। একসময় তারা লড়াই করার হালও ছেড়ে দিল। না খেয়ে দিন কাটাতে লাগল টায়ারবাসীরা। কিন্তু না খেয়ে কতদিন থাকা যায়। শেষ পর্যন্ত আলেকজান্ডারের কাছে আত্মসমর্পন করল টায়ার। তারা নগীরর ফটক খুলে দিল আলেকজান্ডারের সৈন্যদের জন্য। দীর্ঘ সাতমাস এর অপেক্ষাতেই ছিল সৈন্যরা। টায়ারের ফটক খোলামাত্র আর দেরি করল না কেউ। ঢুকে পড়ল টায়ারে। যে যা পারল লুট করতে শুরু করল।

ভূমধ্য সাগরের গুরুত্বপূর্ণ একটা নগরী বলতে গেলে বিনা যুদ্ধে জয় করলেন আলেকজান্ডার। সত্যিই কি এটা বিনাযুদ্ধে জয়লাভ ছিল? না। আলেকজান্ডার এখানে অন্য রকম এক যুদ্ধ করলেন। এবং এই যুদ্ধে তিনি জয়ী হয়েছেন। টায়ার জয় তার জন্য ভৌগলিক দিক থেকে যতখানি সুবিধার হয়েছে, তারচেয়ে বেশি তার সেনাদের মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছে। মানসিক শক্তি দেখিয়ে তারা জয় করেছে টায়ার। মানসিক শক্তির চেয়ে বড় কোনো যুদ্ধ কি আর আছে? নেই। 

সেই থেকে টায়ার নগরী মূল ভূখণ্ডের সাথে এভাবে সংযুক্ত হয়ে আছে। এখনও আছে। 

যেদিন আলেকজান্ডারের সৈন্যরা টায়ারে প্রবেশ করল, সেদিন তার চোখের তারা দুটো জ্বলছিল। ঠিক রাতের আকাশের তারার মতো। হেফাস্টিয়ন এই তারা জ্বলার অর্থ বোঝেন। অনেকদিন হয়ে গেল একটা নগর জয় করতে। বলতে গেলে অনেকটা শুয়ে বসেই জয় করা হলো। যদিও সাত মাসেরও বেশি সময় লাগল। আর কোনো নগর জয় করতে এতটা সময় নেননি আলেকজান্ডার । হেফাস্টিয়নও জানেন, এরপর কী হবে। এরপর নতুন কোনো নগর জয় করতে এতটা সময় নেবেন না আলেকজান্ডার। এরপর তিনি ছুটবেন পাগলা ঘোড়ার মতো। যাবেন আর জয় করবেন। টায়ারের বেলায় কেবল ব্যতিক্রম হলো। এমন ব্যতিক্রম জয় আর হয়নি।

আবার কোনো কোনো ইতিহাসবিদ বলেন, কেবল অবরোধ  করেই টায়ার জয় করতে পারেননি আলেকজান্ডার। তাকে লড়াই করতে হয়েছিল সাহসী টায়ারযোদ্ধাদের সাথে। টায়ারের নৌসেনা ও পদাতিক সেনারা আলেকজান্ডারের বাহিনীর সাথে তুমুল লড়াই চালিয়ে যায়। যদিও শেষ পর্যন্ত আলেকজান্ডারের দুর্ধর্ষ বাহিনীর কাছে হারতে হয়েছিল। এই যুদ্ধে মারা যায় প্রায় ৮ হাজার টায়ার যোদ্ধা। আর আলেকজান্ডার টায়ার থেকে পেয়ে যান ৩০ হাজার মানুষ। এদের পরে দাস হিসেবে বিক্রি করেন।