ছায়াচরাচর – ১২

বারো 

পুনর্বার যাত্রা আরম্ভ হইল। একদিন এক কিশোর বিক্রমণিপুরের উনসিয়া হইতে নবদ্বীপের পথে যাত্রা করিয়াছিল। আর আজ সেই কিশোর যৌবনে পদার্পণ করিয়া নবদ্বীপ হইতে কাশী যাত্রা করিতেছে। তবে এখন আর তাহার পথ অজ্ঞাত নহে, এ পথে যাহারা অভিজ্ঞ তাহাদের নিকট হইতে কমলনয়ন কাশীর পথের বিবরণ সমস্ত জানিয়া লইয়াছে। দিল্লীর পাঠানরাজ শেরশাহ নির্মিত শাহি সড়ক ধরিয়া যাইতে হইবে। সাম্প্রতিক কালে এই পথকেই আমরা গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড নামে চিহ্নিত করিয়া থাকি। 

পথ দীর্ঘ, বেশ কয়েক মাস ধরিয়া এই পথ অতিক্রম করিলে তবে কাশীতে উপনীত হওয়া যাইবে। পথিমধ্যে পথিকাশ্রয় অতিথিশালা সমূহ আছে। সমস্ত দিন চলিয়া ওইসকল অতিথিশালায় রাত্রিযাপন করিতে হইবে। কমলনয়ন এই সুদীর্ঘ পন্থায় অক্লান্ত চরণে চলিতে লাগিল। পথে কত শূন্য মাঠ, কত নদী, কত কান্তার পড়িল। কত অতীত যুগের রাষ্ট্রবিপ্লবের চিহ্ন দেখা গেল। কত মানুষের সঙ্গে পরিচয় হইল। বাধা-বিপত্তি আসিল। সেসকল তুচ্ছ করিয়া কমলনয়ন নির্ভয়ে চলিয়াছে। তাহার একমাত্র লক্ষ্য কাশী বারাণসী। সেই পুণ্যভূমিতে উপনীত হইতে হইবে। সেখানে রামতীর্থের নিকট হইতে অদ্বৈত বেদান্তের রহস্য অধিগত করিতে হইবে। ওই মতের ভ্রান্তি আবিষ্কার করিয়া তীক্ষ্ণ যুক্তির ধারে অদ্বৈতমত কাটিয়া ফেলিতে হইবে। যে-মত ভক্তি-উপাসনার বিরোধিতা করিয়াছে বলিয়া শুনা যায়, যাহা শ্রীমন্মহাপ্রভুর ভক্তদিগের দ্বারা প্রচারিত ভক্তিবাদেরও বিপক্ষতা করিয়াছে, তাহা শতভাবে খণ্ডনীয়। কিন্তু খণ্ডন করিবার পূর্বে সেই মত সম্যকরূপে জানা প্রয়োজন। ভাবিতে ভাবিতে কমলনয়নের দৃঢ় অধরোষ্ঠ কঠোর প্রতিজ্ঞায় দৃঢ়তর হইয়া উঠিতেছিল। চলিতে চলিতে যখন পথশ্রমে মুখমণ্ডল ঘর্মাক্ত হইয়া উঠিত, উড়ানির প্রান্ত দিয়া শ্রান্ত সেই মুখ মুছিয়া লইয়া কঠোরতর সংকল্পে বুক বাঁধিয়া কমলনয়ন পথ চলিতে লাগিল। নিতান্ত ক্লান্ত হইলে কোনো বৃক্ষতলে বসিয়া সে হয়তো ক্লান্তি জুড়াইত, তাহার পর পুনর্বার নবোদ্যমে উঠিয়া দাঁড়াইয়া যাত্রা আরম্ভ করিত। 

এই যে সে যখন কাশীর পথে যাইতেছে, তখনই কোনো এক দিন হয়তো নবদ্বীপের গঙ্গার ঘাটে একটি নৌকা আসিয়া লাগিবে। নাও হইতে নামিয়া আসিবে রাজীবলোচন, যে আসলে কমলনয়নের ফেলিয়া-আসা জীবনের আরও একটি বিকল্প সম্ভাবনা। যদি কমলনয়ন মহাপ্রভুর দেখা পাইত, যদি তিনি তাহাকে চরণাশ্রয় দিতেন, তাহা হইলে কমলনয়নের জীবন যে-খাতে বহিত, রাজীবলোচন তাহাই। সে হয়তো পুরী হইতে নবদ্বীপে আসিবে। ঘাটে নামিয়া নবদ্বীপের পণ্যবীথিকার ভিতর দিয়া যাইতে যাইতে হয়তো রাজীবলোচনের সহিত পদ্মাক্ষর দেখা হইবে। পদ্মাক্ষ রাজীবলোচনকে কমলনয়ন বলিয়া ভুল করিবে। পদ্মাক্ষ বলিবে, “কী আশ্চর্য! মস্তক মুণ্ডন করিলে কেন? গলায় তুলসীকাষ্ঠের মালা পরিয়াছ, বেশ মানাইয়াছে কিন্তু!… সেই যে বিষ্ণু দামোদরের মন্দিরে দেখা হইল, তাহার পর আর দেখা হইল না। তুমি কি নগরের দিকে আস না?” 

রাজীবলোচন বিস্ময়াহত হইয়া কহিবে, “আপনার কোথাও ভুল হইতেছে, মহাশয়! আপনার সহিত আমার কুত্রাপি দেখা হয় নাই। আমার নাম রাজীবলোচন। সম্প্রতি শ্রীক্ষেত্র পুরী হইতে আসিতেছি।” তাহার পর পদ্মাক্ষর সহিত তাহার নিজের অবিকল সৌসাদৃশ্য আবিষ্কার করিয়া রাজীবলোচনও বিস্ময়ে অভিভূত হইয়া যাইবে। 

পদ্মাক্ষর ভুল ভাঙিবে, সে বুঝিয়া লইবে, রাজীবলোচন এক সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যক্তি। পদ্মাক্ষ ইতোমধ্যে মহাপ্রভুর লীলাকথা শ্রবণ করিয়াছে। সে সাগ্রহে জিজ্ঞাসা করিবে, “শ্রীমন্মহাপ্রভু সুস্থ দেহে আছেন তো? আপনি এক্ষণে নবদ্বীপ আসিলেন কেন?” রাজীবলোচন কহিবে, “প্রভুর সকলই কুশল। তিনিই আমাকে নবদ্বীপে অদ্বৈত আচার্যের নিকটে এক পত্রসহ প্রেরণ করিয়াছেন। আমি অদ্বৈত আচার্যের সকাশে উপনীত হইয়া মহাপ্রভুর পত্রটি নিবেদন করিব। তাই এই পথ ধরিয়া যাইতেছি।” 

পদ্মাক্ষ বলিবে, “আমি আপনার সহিত যাইলে কোনো আপত্তি আছে কি?” রাজীবলোচন বলিবে, “না, না আপত্তি কীসের? আমিও তো সঙ্গী খুঁজিতেছিলাম। এখান হইতে দক্ষিণে চলিয়া আমাদের মিঞাপুরে যাইতে হইবে। ভাবিতেছি, একবার মহাপ্রভুর পূর্বাশ্রমে যাইব। শচীমাতা ও শ্রীমতী বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর চরণ বন্দনা করিয়া আসিব। মহাপ্রভুর কুশল সংবাদ দিয়া তাঁহাদের আশ্বস্ত করিব।” 

পদ্মাক্ষ বলিবে, “আর শ্রীবাস? তাঁহার অঙ্গনে আমরা যাইব না?” 

রাজীবলোচন উত্তর দিবে, “যাইব বইকি! শ্রীবাস যে মহাপ্রভুর বিরহতাপে তাপিত হইয়াও তাঁহার কুশল সংবাদ জানিবার জন্যই প্রাণ ধারণ করিয়া আছেন!”

এইরূপ অন্তরঙ্গ আলাপ করিতে করিতে পরস্পর সদৃশ যমজ ভ্রাতার ন্যায় পদ্মাক্ষ ও রাজীবলোচন— এ ছায়াচরাচরের দুটি বিচিত্র সম্ভাবনা মিঞাপুরের দিকে যাত্রা করিবে…. 

আর ঠিক সেই একই সময়ে কমলনয়ন তাহার সুকঠোর পন্থা অতিবাহন করিয়া চলিয়াছে। রৌদ্র প্রখর হইতে প্রখরতর হইতেছে। কোথাও ছায়া নাই যে, একটু বসিবে। সম্মুখে নদী নাই যে, জলপান করিবে। তাহাকে এই পথেই হাঁটিতে হইবে। সে কিছুই হইতে পারে নাই। কবি নয়, ভক্ত নহে, প্রকৃতার্থে পণ্ডিতও না। সে এক একাকী অভিযাত্রী। তাহার কোনো সহায়সম্বল নাই। আছে একমাত্র মেধা ও কঠোর প্রতিজ্ঞা। আর যদি কিছু থাকে, তবে তাহা এই মনুষ্যজীবন লইয়া পরীক্ষা করিবার অন্তহীন আগ্রহ। এক প্রহর ধরিয়া হাঁটিতে হাঁটিতে কমলনয়ন দেখিল, বেলা পড়িয়া আসিতেছে। সূর্য অস্তাচলে যাইতেছে। তাহাকে সন্ধ্যার পূর্বেই নির্দিষ্ট গন্তব্যে পহুঁছিতে হইবে। সেখানে রাত্রিবাসের উপযুক্ত অতিথিশালা আছে। কমলনয়ন আরও দ্রুত হাঁটিতে লাগিল। তাহার মস্তকের উপর আকাশটা যেন দিনান্তের রৌদ্র মাখিয়া উদাস হইয়া শুইয়া আছে। 

কিন্তু এই যে বহিরাবলম্বী আকাশ, ইহা যতই বিশাল, যতই ব্যাপক হউক না কেন; ইহা তো স্থূল ইন্দ্রিয়গোচর। ইহার পশ্চাতে সূক্ষ্ম ‘আকাশ’ রহিয়াছে, যাহা সমস্ত জড়জগতের আদি উৎস ও অন্তিম পরিণাম। আর বিশ্বজগতের যাবতীয় শক্তি; কেবল উত্তাপ, বিকিরণ, তেজস্ক্রিয়তা, অভিকর্ষের ন্যায় বহির্জাগতিক শক্তিই নহে, অন্তরের চিন্তা বা মনন করিবার অন্তর্জাগতিক শক্তি—সকলই এক আদি ‘প্রাণ’ হইতে উৎসারিত হইয়াছে। সেই অতীন্দ্রিয় সূক্ষ্ম আকাশের বুকে এই অতীন্দ্ৰিয় প্রাণশক্তির লীলা চলিতেছে। আকাশের বুকে লীলাচঞ্চলা প্রাণ কম্পিত হইতেছে আর সেই কম্পনের ফলে সমস্ত সম্ভাবনা ও সম্ভাবিত বিশ্ব উঠিতেছে, পড়িতেছে। এই ছায়াচরাচর আকাশ ও প্রাণের অন্তবিহীন লীলানাট্যমাত্র। যৎ কিঞ্চিৎ জগৎ সর্বং প্রাণ এজতি নিঃসৃতম্’–এই জগতে যাহা কিছু আছে, যাহা কিছু হইতেছে, সকলই আকাশের বক্ষে প্রাণের স্পন্দনের প্রকাশ। 

আকাশ নির্বিকার হইয়া শায়িত আর তাহার সুস্থির বক্ষের উপর চিরচঞ্চলা প্রাণ নৃত্য করিতেছে; সেই নৃত্যের ছন্দে ছন্দে সূর্য, নক্ষত্র, চলগ্রহতারা সকলই বাহির হইয়া আসিতেছে। মহাজাগতিক বৃহৎ ঘটনাগুলির পার্শ্বে এ চরাচরের জীবনের তুচ্ছাতিতুচ্ছ ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ঘটনাগুলিও বাহির হইয়া আসিতেছে— জন্ম-মৃত্যু-প্রেম-বিষাদ-বিরহ বাহির হইয়া আসিতেছে, ওই যে কোনো সদ্যোবিবাহিত বধূ নদীর ঘাটে নৌকা করিয়া স্বামীর ঘর করিতে চলিল… কোনো কৃষক খেতে কাজ করিতে যাইবার আগে মাটির দাওয়ায় বসিয়া মাড়ভাত খাইতেছে… কোনো রাখাল গুলঞ্চঝোপের নীচে বসিয়া বাঁশি বাজাইতেছে… কোনো যুবতী তাহার প্রথম প্রণয়ের ব্যাকুলতায় একা একা সঙ্গোপনে বৃষ্টি ভিজিয়া পুলকশরের রোমাঞ্চে রোমাঞ্চিত হইয়া উঠিতেছে… দিনান্তে কোনো মৎস্যজীবী শ্রমসাধ্য কর্মের পর নাও বাহিয়া গৃহে ফিরিতেছে… আপণের ঝাঁপ বন্ধ করিয়া বটতলার ছায়ার ভিতর দিয়া কোনো গ্রাম্য আপণিক ফিরিয়া আসিতেছে… অপরাহু পড়িয়া আসিলে কোনো দরিদ্র মুসলমান নদীতীরে জায়নামাজের আসন পাতিয়া সান্ধ্য নামাজ আদায় করিয়া লইতেছে… চারিজন বাহক হরিধ্বনি করিয়া শবদেহ গ্রামের উপাত্তে দাহ করিবার জন্য লইয়া যাইতেছে… প্রভাতবেলায় কাহার আলয়ে শঙ্খ বাজিয়া উঠিয়া নবজাতকের আবির্ভাব ঘোষণা করিতেছে… কাহার যেন মাটির কবরের উপর সন্ধ্যামালতীর ফুল ঝরিয়া পড়িল… এ সকলই প্রাণের ক্রিয়ায় আকাশের অভিব্যক্তি। যখন খেলা ফুরাইবে, এক মুহূর্তের জন্য প্রাণ আকাশের বুকে বিশ্রাম লভিবে, তখন এ চরাচর ও তার যাবতীয় সম্ভাবনা নিশীথের অসার স্বপ্নের ন্যায় মিলাইয়া যাইবে… 

ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়গুলি রেখামাত্র চিহ্ন না-রাখিয়া মুছিয়া যাইবে… সকলই মুছিয়া যায়। সুদুর অতীতে আর্যরা সরস্বতী দৃষদ্বতী তীরে সেই যে যেদিন সন্ধ্যায় সবেমাত্র পদার্পণ করিলেন, সেই দিনটি মুছিয়া গিয়াছে… যেদিন কুরুক্ষেত্রের রণোন্মত্ততার পর অস্তরাগমাখা বিপুল বৈরাগ্যের ঔদাস্য নামিল, সে-অপরাহ্ণ বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে… যে-রাত্রিতে মহাবীর আলেকজান্ডার সিন্ধুতীরে আসিয়া উপস্থিত হইলেন, তাহা হারাইয়া গিয়াছে… নগরের অভিজাত ব্যক্তিবর্গের আমন্ত্রণ উপেক্ষা করিয়া বুদ্ধ যে-মধ্যাহ্নে নটী আম্রপালির আমন্ত্রণ রক্ষা করিতে গিয়াছিলেন, সে- মধ্যাহ্ন বিলীন হইয়া গিয়াছে… পুনরায় সেই দিন, যেদিন অসঙ্গ ও বসুবন্ধু দুই ভ্রাতা প্রজ্ঞাপারমিতার টীকা রচনা করিতে বসিলেন কিংবা রেবা নদীর তীরে যে-সন্ধ্যায় কালিদাসের হৃদয়ে প্রথম মেঘদূত রচনার প্রেরণা নামিয়া আসিল অথবা যে- প্রভাতবেলায় অতীশ দীপংকর বিক্রমশীল হইতে তিব্বতের পথে বাহির হইলেন, মহম্মদ ঘোরীর হস্তে যে সায়ংকালে যুদ্ধে পৃথ্বীরাজের সাম্রাজ্যসূর্য ডুবিয়া গেল, যে- রাত্রিতে আলাউদ্দিন খিলজির লোলুপ আগ্রাসন হইতে নিজ সম্মান বাঁচাইবার জন্য রানি পদ্মিনী তাঁহার দ্বাদশ সহস্র রাজপুতানী সহচরী লইয়া অগ্নিকুণ্ডে আত্মবিসর্জন করিলেন—সেই দিন, সেই সন্ধ্যা, সেই প্রভাত, সেই সায়ম্, সেই রাত্রি সকলই স্থূল হইতে সূক্ষ্মে, সূক্ষ্ম হইতে আরও সূক্ষ্মতর আকাশের বুকে মিলাইয়া গিয়াছে… আকাশের শূন্য চিত্রপটের উপর চিরন্তনী প্রাণশক্তি পুনর্বার নূতন সম্ভাবনার চিত্র আঁকিবার নিমিত্ত উন্মুখ হইয়া উঠিয়াছে… 

তবু আকাশকে ধরিয়া রাখিবার উপায় নাই। ঘটের ভিতর আবদ্ধ করিবার কল্পনা করো, ‘ঘটাকাশ’ বলিয়া ডাকো। মঠের ভিতর অবরুদ্ধ করো, ‘মঠাকাশ’ অভিধায় চিহ্নিত করো। কিন্তু এসকল প্রয়াস বৃথা। মঠ-ঘট-পট সকলই বিনশ্বর। আকাশ কোথাও আবদ্ধ হয় না। সকলকে জড়াইয়া আছে, অথচ কাহাকেও ধরা দেয় নাই। দূর হইতে তাকাইয়া দেখ, নীল দেখাইবে। কাছে যাও, কোনো রং নাই। পৃথিবীর উপর দাঁড়াইয়া ঊর্ধ্বে চাহিয়া দেখ, যেন একখানা নীল আবরণ অপরাজিতার পাপড়ির ন্যায় ধরিত্রীর উপর ছড়াইয়া আছে, তাহাতে যেন কত মেঘমলিনতা লাগিয়া আছে। ভালো করিয়া বিচার করিয়া দেখ, ধরিতে পারিবে না। তাহার কোনো আকার নাই, বর্ণ নাই। জগতের সকল বস্তু, সমস্ত ব্যক্তিবর্গকে লইয়া এই আকাশের বুকে প্রাণ অনুপম কাহিনি রচিতেছে, কিন্তু সে নিজে কোনো কাহিনির ছকে বাঁধা পড়ে নাই। তাহাকে ছাড়া কোনো চরিত্র সৃজিত হইতে পারে না, অথচ তাহাকে সুসংজ্ঞায়িত করিবারও উপায় নাই। 

কমলনয়ন রহস্যময় ভবিষ্যতের দিকে হাঁটিয়া চলিয়াছে, আর তাহার মাথার উপর এই সকল কিছুর ভিতর পরিব্যাপ্ত অথচ কোথাও ধরা না পড়া আকাশ পলকহীন দৃষ্টি মেলিয়া চাহিয়া আছে। নিম্নে এই অধরা আকাশকে ধরিবার, অনায়াত্ত শূন্যকে একটিবারের জন্য স্পর্শ করিবার আকাঙ্ক্ষায় এই ছায়াচরাচর ঋতম্ভরা হইয়াও নিতান্ত অসহায়ার ন্যায় অধীর হইয়া পড়িয়া আছে… 

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *