গঙ্গাপদ বসুর মৃত্যুতে

গঙ্গাপদ বসুর মৃত্যুতে

গঙ্গাদার সঙ্গে আমার পরিচয় এমন ঘনিষ্ঠ ছিল না যার থেকে তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু লিখতে পারি। সামান্য কয়েকটি ছবিতে তাঁর সঙ্গে অভিনয় করেছি— যার মধ্যে শেষ ছবিটি হল ‘অপর্ণা’। সম্ভবত এই ছবিটিই গঙ্গাদার অভিনীত শেষ ছবি।

শুটিং-এ বা অন্য কোনও সময় যখনই দেখা হত তখনই তাঁর মিষ্টি অমায়িক ব্যবহারে মুগ্ধ হয়েছি। সব সময়ই মনে হত মানুষটির মধ্যে এমন এক ধরনের রুচি ও সৌজন্যবোধ আছে যা তাঁর স্বভাবের সঙ্গে ওতপ্রাোত। দেঁতো হাসির ভান দিয়ে তাঁকে লোক ভোলাতে হয় না।

ছাত্রাবস্থা থেকেই তাঁর অভিনয় দেখছি। অনেক অভিনয়ই এখনও মনে আছে। যেমন ‘পথিক’ ছবিতে তাঁর অভিনয় খুব ভাল লেগেছিল, এখনও মনে আছে। তাঁর অভিনয়ে সব সময়েই মনে হত একটা মান আছে। হঠাৎ একটা খারাপ অভিনয় করে ফেলবেন এমন কথা কোনও সময়েই যেন তাঁর সম্পর্কে ভাবা যেত না।

কলকাতার বাইরে থেকে ট্রেনে ফিরছিলাম। ট্রানজিস্টরে গঙ্গাদার মৃত্যুসংবাদ শুনে খুবই খারাপ লাগল। কেবলই মনে হচ্ছিল তার কয়েকদিন আগেই তাঁর শেষ ছবিতে যে একসঙ্গে কাজ করেছি সেই কথা।

আমাদের দেশের অভিনেতাদের যত গুণই থাক না তাঁদের মনে রাখার ব্যাপারে অনেক সময়েই দেশবাসী উদাসীন। বিশেষ করে যাঁরা নম্র, ভদ্র, নিজেদের ঢাক নিজেরা সজোরে বাজাতে পারেন না, জীবিতাবস্থাতেই অনেক সময় তাঁদের যথাযোগ্য কদর হয় না।

অভিনেতা হিসেবে, নাট্যকর্মী হিসেবে গঙ্গাদার সঠিক মূল্যায়ন কবে, কতখানি হবে জানি না। শুধু এই লেখার সুযোগ নিয়ে আমার ব্যক্তিগত শ্রদ্ধা জানিয়ে রাখলাম।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *