উল্লেখিত দুটি দুঘর্টনা কয়েকদিনের মধ্যেই সংঘটিত হয়েছিল। এতে রসুলুল্লাহ (সাঃ) শোকে দুঃখে কাতর হয়ে পরেছিলেন। এছাড়া তাঁর স্বজাতীয়দের পক্ষ থেকেও নির্যাতন নিপীড়ন নিস্পেষন চলছিলো। কেননা আবু তালেবের ওফাতের পর তাদের সাহস বেড়ে গিয়েছিলো। তারা খোলাখুলিভাবে রসুলুল্লাহ (সাঃ)কে কষ্ট দিতে লাগলো। রসুলুল্লাহ (সাঃ) এরুপ অবস্থায় তায়েফ গেলেন। মনে মনে আশা করেছিলেন যে, সেখানের জনসাধারণ হয়তো তাঁর প্রচারিদ দ্বীনের দাওয়াত কবুল করবে, তাঁকে আশ্রয় দেবে এবং তাঁ স্বজাতীয়দের বিরোধিতার মুখে তাঁকে সাহায্য করবে।
কিন্ত সেখানে কোন সাহায্যকারী বা আশ্রয়দাতাতো পাওয়া গেলই না বরং উল্টো তাঁর উপর নির্যাতন চালানো হলো। তাঁর সাথে এমন দুর্ব্যবহার করা হলো যে, তাঁর কওমের লোকেরাও এযাবত ওরকম ব্যবহার করেনি। এ স্মপর্কিত বিবরণ পরে আলোজনা করা যাবে।
এখানে এ কথা বলা অপ্রাসঙ্গিক হবে না যে, মক্কার অধিবাসীরা যেভাবে নবী (সাঃ) এর উপর অত্যাচার, নির্যাতন, নিপিড়ন চালিয়েছিলো, তাঁর বন্ধুদের উপরও একই রকম অত্যাচার চালিয়েছিলো। আল্লাহর রসুলের প্রিয় সহচর হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা) সেই অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে হাবশা অভিমুখে রওয়ানা হলেন। মক্কার এক প্রভাবশালী ব্যক্তি ইবনে দাগানার সাথে পথে দেখা হলো। তিনি হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) কে নিজের হেফাজতে রাখার দায়িত্ব নিয়ে মক্কায় ফিরিয়ে আনলেন।
ইবনে ইসহাক উল্লেখ করেছেন যে, আবু তালেবকের ইন্তেকালের পর কোরাইশরা রসুল (সাঃ) এর উপর এত বেশী নির্যাতন চালিয়েছিলো যে, তাঁর জীবদ্দশায় চিন্তাও করতে পারেনি। কোরাইশের এক বেকুব সামনে এসে আল্লাহর রসুলের মাথায় মাটি নিক্ষেপ করলো। তাঁর এক মেয়ে ছুটে এসে মাটি পরিস্কার করলো।
মাটি পরিস্কার করার সময় তিনি শুধু কাঁদছিলেন। রসুলুল্লাহ (সা) তাঁকে সে সময় সান্তনা দিচ্ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, মা, তুমি কেঁদনা। আল্লাহ তাআলা তোমার আব্বাকে হেফাজত করবেন। এ সময় রসুল (সাঃ) এ কথাও বলেছিলেন যে, কোরাইশরা আমার সাথে এমন কোন খারাপ আচরণ করেনি, যাতে আমার খারাপ লেগেছে। এমনি পরিস্থিতিতে আবু তালেব ইন্তেকাল করেন।
পর্যায়ক্রমে এ ধরনের অত্যাচার নির্যাতনের কারণে রসুলুল্লাহ (সাঃ) সে বছলের নাম রেখেছিলেন “’আমুল হোযন”’ অর্থ্যাৎ দুঃখের বছর। সেই বছরটি এ নামেই ইতিহাসে বিখ্যাত।