০৮. আরবের অন্যান্য অংশের প্রশাসনিক অবস্থা

ইতিপূর্বে কাহতানি এবং আদনানী আরবের দেশ ত্যাগের কথা আলোচনা করা হয়েছে এবং উল্লেখ্য করা হয়েছে, সমগ্র দেশ আরবের এসব গো্ত্রের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়েছে।
এরপর তাদের নেতৃত্ব এবং কর্তৃত্বের অবস্থা এরূপ ছিলো যে, কাবার আশেপাশে যেসব গোত্র বসাবাস করতো, তাদেরকে হীরার অধীনন্থ মনে করা হতো। যেসব গোত্র সিরীয় এলাকায় বসবাস করতো, তাদেরকে আসমানী শাসকদের অধীনন্থ মনে করা হতো। কিন্তু এটা ছিলো নামকাওয়াস্তে, বাস্তবে না। উল্লেখিত দু’টি জায়গা বাদে অন্যান্য এলাকার আরবরা ছিলো সম্পূর্ণ স্বাধীন।
এ সকল গোত্রের মধ্যে সর্দার ব্যবস্থা প্রচলিত ছিলো। গোত্রের লোকেরাই নিজেদের সর্দার নিযুক্ত করতো। এ সকল সর্দারদের জন্যে গোত্র হতো ছোট খাট সরকার। রাজনৈতিক অস্তিত্বের নিরাপত্তার ভিত্তি, গোত্রীয় বিবাদ বিশৃঙ্খলা নিরসন এবং নিজেদের ভূখন্ডের রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রতিরক্ষার সম্মিলিত স্বার্থ এর দ্বারা রক্ষা করা হতো।
সর্দারদের মর্যাদা ছিলো তাদের সমাজে বাদশার মতো। যুদ্ধ সন্ধির ব্যাপারে সর্দারদের ফয়সালাই হতো চূড়ান্ত। এ অবস্থায় কোন পরিবর্তন কোন অবস্থায়ই হতো না। একজন একনায়কের যেরূপ ক্ষমতা দরকার, সর্দারের ক্ষমতা তার চেয়ে কোন অংশেই কম ছিলো না, কোন কোন সর্দারের অবস্থা এমন ছিলো যে, তারা সব দিক থেকে স্বাতন্ত্রের অধিকারী হতেন। একজন কবি একথা এভাবে বর্ণনা করেছেন যে, আমাদের মধ্যে তোমার জন্যে গণিমতোর মালের এক চতুর্থাংশ রয়েছে। এছাড়া রয়েছে নির্বাচিত ধন-সম্পদ। তুমি ফয়সালা করে দেবে, সে সম্পদেও রয়েছে তোমার মালিকানা। পথে যা কুড়িয়ে পাওয়া যাবে এবং যা বন্টন না হয়ে উদ্বৃত্ত থাকবে, সে সম্পদের মালিকও তুমি।