এই আয়াত নাযিল হওয়ার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে বনু হাশেমদের সমবেত করলেন। তাদের সাথে বনু মোত্তালেব ইবনে আবদে মান্নাফের একটি দলও ছিলো। তারা ছিলো মোট পঁয়তাল্লিশ জন। আবু লাহাব কথা লুফে নিয়ে বিরোধিতার সুরে বললো, দেখো, এরা তোমার চাচা এবং চাচাতো ভাই। কথা বললো তবে মুর্খতার পরিচয় দিয়ো না এবং মনে রেখো, তোমার খান্দান সমগ্র আরবের সাথে মোকাবেলা করতে পারবে না। আমিই তোমাকে পাকড়াও করার বেশী হকদার। তোমার জন্যে তোমার পিতৃকূলের লোকেরাই যথেষ্ট। যদি তুমি তোমার কথার ওপর অটল থাকো, তাহলে কোরায়শদের সমগ্র গোত্র তোমার ওপর ঝাপিয়ে পড়বে। আরবের অন্যান্য গোত্রও তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। এরপর কি হবে? তোমার পিতৃকূলের মধ্যে তুমিই হবে সবচেয়ে বেশী ধ্বংসাত্মক কাজের মানুষ। এসব কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চুপ করে রইলেন, সেই মজলিসে কোন কথা বললেন না।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরপর পনরায় তাদের সমবেত করলেন এবং বললেন, “আল্লাহর জন্যেই সকল প্রশংসা”। আমি তাঁর প্রশংসা করছি এবং তাঁর কাছেই সাহায্য চাইছি। তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করছি। তাঁর ওপর ভরসা করছি। আমি এ সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত এবাদাতের উপযুক্ত কেউ নেই। তিনি এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরিক নেই। এরপর রসূল্লল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, পদ প্রদর্শক তার পরিবারের লোকদের কাছে মিথ্যা কথা বলতে পারে না। সেই আল্লাহর শপথ, যিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই, আমি তোমাদের প্রতি বিশেষভাবে এবং অন্য সব মানুষের প্রতি সাধারণভাবে আল্লাহ রসূল। আল্লাহ শপথ, তোমরা যেভাবে ঘুমিয়ে থেকো, সেভাবেই একদিস মৃত্যুমুখে পতিত হবে। ঘুম থেকে যেভাবে তোমরা জাগ্রত হও, সেভাবেই একদিন উঠানো হবে। এরপর তোমাদের থেকে তোমাদের কৃতকর্মের হিসাব নেয়া হবে। তারপর রয়েছে চিরকালের জন্যে হয়তো জান্নাত নতুবা জাহান্নাম।
একথা শুনে আবু তালেব বললেন, তোমাকে সহায়তা করা আমার কতো যে পছন্দ, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তোমার উপদেশ গ্রহণযোগ্য। তোমার কথা আমি সত্য বলে বিশ্বাস করি। এখানে তোমার পিতৃকূলের সকলে উপস্থিত রয়েছে, আমিও তাদের একজন। কাজেই তুমি যে কাজের নির্দেশ পেয়েছো, আমি অব্যাহতভাবে তোমার হেফাযত এবং সহায়তা করে যাবো। তবে আমার মন আবদুল মোত্তালেবের দ্বীন ছাড়ার পক্ষপাতি নয়। আবু লাহাব বললো, আল্লাহর শপথ এটা মন্দ কাজ। অন্যদিকে আগে তুমিই তার হাত ধরেছো? আবু তালেব বললেন, আল্লাহর শপথ, যতদিন বেঁচে থাকি, ততোদিন আমি তার হেফাযত করতে থাকবো।