আমরা বলতে চেয়েছি, আমাদের দেশে রাষ্ট্রশক্তির আবির্ভাব হবার পরও তারই পাশাপাশি ট্রাইব্যাল সমাজ টিকে থেকেছিলো। রাষ্ট্রশক্তির মুখপাত্রেরা সেই ট্রাইব্যাল সমাজগুলিকে মোটেই সুনজরে দেখেননি। ধর্মচেতনার স্তরে ওই বিরুদ্ধ মনোভাবটির পরিচয় পাওয়া যায় সেকালের বিনায়ক-বিদ্বেষের মধ্যে, সমাজচেতনার স্তরে মহাভারতের বাহীক বর্ণনায় এবং সুস্পষ্ট রাজনীতির স্তরে কৌটিল্যের সংঘবৃত্ত নামের অধিকরণে।
সেকালের শাসকশ্রেণী ওই গণ বা সংঘগুলিকে ভাঙবার উৎসাহে যে কতোদূর নির্লজ্জ ও দুর্নীতিমূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করতেও কুন্ঠিত হয়নি তারই নিদর্শন হলো কৌটিল্যের রচনা। কেননা, আমরা একটু পরেই দেখতে পাবো, এই উদ্দেশ্যে কৌটিল্য মদ্য ও গণিকার বহুল ব্যবহার করতে বলেই ক্ষান্ত নন, সধবা ও বিধবা নারী এবং সন্ন্যাসী-বেশধারী গুপ্তচর কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তারও বর্ণনা খুঁটিয়েই দিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কৌটিল্যের পক্ষে এই গণগুলি নিয়ে এতো মাথাব্যথা কেন? সে-প্রশ্নের জবাব তিনি শুরুতেই দিয়ে দিয়েছেন : আসল কথা, গণগুলি অধ্যষ্য ও অজষ্য। তাই এগুলিকে যদি মিত্রভাবে পাওয়া যায় তাহলে রাজার পক্ষেও অধৃষ্য হয়ে ওঠবার সম্ভাবনা(১৭৫)। কিন্তু, গণসমাজের এই শক্তিটার উৎস ঠিক কী? এক কথায় তার জবাব হলো, গণের একতা,–গণবন্ধন বা group-bond(১৭৬)। জুলু কাফিরদের বর্ণনায় এঙ্গেল্স্ ঠিক এই কথাই বলেছেন এবং সাম্প্রতিক ভারতীয় ইতিহাসেও—সাঁওতাল বিদ্রোহ থেকে শুরু করে অতি-আধুনিক কালের গাড়ো-হাজঙ ও তেলেঙ্গানায় লাম্বোড়ি প্রভৃতিদের বিদ্রোহ পর্যন্ত—শাসকশ্রেণীর মুখপাত্রেরাও বারবার এই কথাই স্বীকার করে গিয়েছেন(১৭৭)। অতএব, কৌটিল্যও যে বলবেন, ছলে-বলে-কৌশলে, ঘুষ দিয়েই হোক আর যে-করেই হোক, সর্বপ্রথম গণগুলিকে হাত করবার চেষ্টা করতে হবে,–এ-বিষয়ে আশ্চর্য হবার সত্যিই কারণ নেই।
অবশ্যই, কৌটিল্যের লেখা পড়লে বুঝতে পারা যায়, ঘুষের সাহায্যে এই গণগুলিকে হাত করবার বাস্তব সম্ভাবনাটা সত্যিই সংকীর্ণ ছিলো। কেননা, এ-কথা একটিবার মাত্র উল্লেখ করে(১৭৮) কৌটিল্য বাকি অধিকরণটি জুড়ে বর্ণনা করছেন কেমন ভাবে এই সংঘগুলি ধ্বংস করা সম্ভবপর। সংঘের মূল শক্তিটা যেহেতু তার একতা বা গণবন্ধন সেইহেতু কৌটিল্যের পক্ষে সংঘগুলিকে ভাঙবার কৌশল হিসেবে বিভেদ-সৃষ্টির কথাই প্রাসঙ্গিক হওয়া সম্ভব। কিন্তু তাঁর রচনাটি যে-কারণে সত্যিই চিত্তাকর্ষক তা হলো এই বিভেদ-সৃষ্টির ব্যাপারে তিনি যে-সব রকমারি ব্যবস্থা অবলম্বন করতে বলেছেন তারই তালিকা। মহাভারতে বাহীকদের বর্ণনা দেবার সময় শাসক-সম্প্রদায়ের মুখপাত্রেরা ঘৃণাভরে বলছেন, বাহীকেরা হলো পৃথিবীর মল-স্বরূপ। তার কারণ, গণসমাজের ওই সহজ-সরল মানুষগুলির মধ্যে “সদাচারের” পরিচয় নেই। কিন্তু ওই গণসমাজকে ধ্বংস করবার জন্যেই শাসক সম্প্রদায়ের মুখপাত্রেরা যখন জঘন্যতম মিথ্যার ও নির্লিজ্জতম ব্যবস্থার কথা অবলম্বন করতে বলেন তখন “সদাচার” বলে শব্দটির উপর থেকেও মুখোসটা সত্যিই খুলে পড়ে না কি? তাছাড়া আরো একটি কথা আছে। মহাভারতের বর্ণনাদাতা সদাচারের পরাকাষ্ঠা ওই ব্রাহ্মণেরা বলছেন, “নিতান্ত নিগূঢ় কারণবশতঃঃ তাঁরা গণসমাজগুলিতে বাস করতে গিয়েছিলেন। কৌটিল্যের ব্যবস্থা থেকে অনায়াসেই অনুমান করা যায়, এই নিগূঢ় কারণটি ঠিক কী রকম? সাধুবেশে চর হয়ে গণসমাজগুলির মধ্যে মিথ্যা কথা প্রচার করা, গণিকা ও মদ ব্যবহার করে গণসমাজের মানুষগুলির মধ্যে নৈতিক অধঃপতন ঘটানো—তাছাড়া ওই নিগূঢ় কারণ আর কিছুই নয়। শাসক-সম্প্রদায়ের “সদাচার” সংক্রান্ত দম্ভের উপর এই হলো চূড়ান্ত ভাষ্য।
কৌটিল্যের কথাগুলি সেদিক থেকে সত্যিই চিত্তাকর্ষক। পুরো অধিকরণটি উদ্ধ্বৃত করতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু জায়গার অভাবে তা সম্ভব হবে না। কৌটিল্য(১৭৯) বলছেন :
…সংঘের আসন্নবর্তী হইয়া (বিজিগীযুর) সাত্রিনামক গূঢ় পুরুষগণ সংঘগুলির পরস্পরের মধ্যে দোষ, দ্বেষ বা রোষ, অপকারাদি-নিমিত্তক বৈর বা দ্রোহ ও কলহের কারণ উপলব্ধি করিয়া তাহাদিগের মধ্যে ক্রমশ অনুপ্রবেশিত ভেদ ঘটাইবে এবং বলিবে, ‘অমুখ সংঘ তোমাদিগের সংঘের এইরূপ অপবাদ করে’। (অন্য সংঘের প্রতিও এইভাবে বলিয়া) তাহারা উভয়পক্ষমধ্যে ভেদ আনয়ন করিবে। পরস্পরের প্রতি রুষ্টভাবাপন্ন সংঘীদিগের মধ্যে আচার্যব্যঞ্জন গূঢ়পুরুষগণ বিদ্যা, শিল্প, দ্যুত ও বৈহারিক বিষয়ে বালকলহ উৎপাদন করাইবে।……(সংঘমধ্যে) হীনগণের সহিত বিশিষ্টগণের এক পংক্তিতে ভোজন ও বিবাহসম্বন্ধ তাহারা নিবারণ করিবে।…অথবা, (সংঘমধ্যে) কোনো ব্যবহার ন্যাজ্যভাবে নির্ণীত হইলেও, তাহার ইহার বিপরীত ন্যায় সমর্থন করিয়া শুনাইবে বা বুঝাইবে। অথবা, তীক্ষ্ণ নামক গূঢ়পুরুষেরা, রাত্রিতে সংঘীগণমধ্যে কোনো বিবাদবিষয় উপস্থিত হইলে, (একপক্ষের) দ্রব্য, পশু ও মনুষ্য নষ্ট করিয়া (অপর কোনও পক্ষের উপর সেই নাশের দোষ আরোপ করিয়া) তাহাদের মধ্যে কলহ উৎপাদন করিবে।…বিক্রমের অবসর উপস্থিত হইলে, শৌণ্ডিক ও সৌরিকের বেশধারী গূঢ়পুরুষগণ নিজেদের পুত্র ও স্ত্রীর মরণচ্ছলে, ইহা (প্রেতের উদ্দেশ্যে দেয়) ‘নৈষেচয়িক’ নামক মদ্য—এই বলিয়া মদনরসযুক্ত শতশত মদ্য কুম্ভ (সংঘের নিকট) প্রদান করিবে।………অথবা, কুলটা স্ত্রীর পোষণকারী, অথবা, প্নবক, নট, নর্তক ও সৌভিকগণের (ঐন্দ্রজানিকগণের) বেশধারী গূঢ়পুরুষেরা গুপ্তচরের কার্যে ব্যাপারিত থাকিয়া, পরমরূপযৌবনবিশিষ্টা স্ত্রীলোকদ্বারা সংঘমুখ্যদিগকে উন্মাদিত করিবে। সংঘমুখ্যেরা এইভাবে স্ত্রীকামী হইলে, তাঁহাদের মধ্য হইতে অন্যতমের কোনো স্ত্রীলোকের প্রতি বিশ্বাস উৎপাদন করিয়া (মিলনের সংকেতস্থান ঠিক হইলে) সেই রমণীকে অন্য এক সংঘমুখ্যদ্বারা অন্যত্র নেওয়াইয়া বা অন্য সংঘমুখ্য তাহাকে অপহরণ করিয়া নিয়াছেন বলিয়া মিথ্যা কথা রটনা করাইয়া, সংঘমুখ্যদিগের মধ্যে তাহারা কলহ উৎপাদন করিবে। এইভাবে কলহ উৎপন্ন হইলে তীক্ষ্ণ নামক গূঢ়পুরুষেরা তাহাদের নিজ কার্য সমাধা করিবে, অর্থাৎ কোনো একজন সংঘমুখ্যের হত্যাসাধন করিবে এবং রটাইয়া দিবে, ‘এই কামুক ব্যক্তি প্রতিকামুক অন্য ব্যক্তি দ্বারা হত হইয়াছে’। অথবা, এই সংঘমুখ্যগণমধ্যে যদি কেহ ঝগড়া করিতে না চাহেন, তাহা হইলে সেই রমণী এই প্রকার বলিবে—‘আপনার প্রতি আমি জাতকামা হই—ইহাতে অমুখ সংঘমুখ্য বাধাপ্রদান করেন অর্থাৎ তিনি ইহা ইচ্ছা করেন না। তিনি জীবিত থাকিলে আমি আর এখানে (আপনার নিকট) থাকিতে পারি না’—এই বলিয়া সে তাঁহার বধের আয়োজন করিবে। অথবা, যদি কোনো সংঘমুখ্য তাহাকে বলাৎকারপূর্বক অপহরণ করিয়া কোনো জঙ্গলে বা ক্রীড়াগৃহে (সংকেতগৃহে) লইয়া যান, তাহা হইলে তাঁহাকে তীক্ষ্ণনামক গূঢ়পুরুষেরা হত্যা করাইবেন, অথবা, সে স্বয়ং বিষপ্রয়োগে তাঁহাকে হত্যা করিবে। তাহার পর সেই রমণী এইরূপ প্রকাশ করিবে—‘অমুখ (প্রতিকামুক) ব্যক্তির দ্বারা আমার প্রিয়জন হত হইয়াছেন’। অথবা, সিদ্ধপুরুষের বেশধারী কোনো গূঢ়পুরুষ কোনো স্ত্রীকে জাতকাম সংঘমুখ্যকে বশীকরণের উপযোগী ওষধিসমূহের প্রয়োগের ছল করিয়া, বিষমিশ্রিত ঔষধের প্রয়োগদ্বারা ঠকাইয়া (তাঁহার বধসাধনপূর্বক) পলাইয়া যাইবে। সে পলাইয়া গেলে পর, অন্য সত্রী পুরুষেরা প্রকাশ করিবে যে, অন্য একজন প্রতিকামুক দ্বারা প্রেরিত হইয়াই সেই সিদ্ধপুরুষ তাঁহার বধসাধন করিয়াছেন। অথবা, ধনী বিধবা স্ত্রীলোক, অথবা (সধবা হইলেও দারিদ্র্যাদিদোষে) গূঢ়ভাবে ব্যাভিচারকারিণী স্ত্রীলোক ও কপট স্ত্রীলোক (অর্থাৎ স্ত্রীবেশধারী পুরুষগণ) দায় ও নিক্ষেপ সম্বন্ধী বিবাদে রত হইয়া (নির্ণয়ার্থ) সংঘমূখ্যগণের নিকট উপস্থিত হইয়া তাঁহাদিগের উন্মাদিত করিবে। অথবা, অদিতিস্ত্রী (অর্থাৎ, নানাপ্রকার দেবতার ছবি প্রদর্শন করিয়া জীবিকাকারিণী স্ত্রী), কৌশিক-স্ত্রী (সর্পগ্রাহীদিগের স্ত্রী), নর্তকী ও গায়িকা স্ত্রী (এইভাবে) সংঘমূখ্যদিগকে উন্মাদিত করিবে। এই প্রকার ভাবে উন্মাদিত হইয়া বশীকৃত সংঘমূখ্যদিগকে সংকেতের গূঢ়গৃহে রাত্রিতে সমাগমার্থ প্রবেশ করিলে তীক্ষ্ণনামক গূঢ়পুরুষেরা তাঁহাদিগকে বধ করিবে, কিংবা, বন্ধনপূর্বক অপহরণ করিবে। অথবা, কোনো সত্রী গূঢ়পুরুষ সংঘমূখ্যকে এইভাবে জানাইবে—‘অমুখ গ্রামে দরিদ্রকুলজাত অমুখ পুরুষ (জীবিকার জন্য) অন্যত্র চলিয়া গিয়াছে, তাহার স্ত্রী রাজার ভোগের ভোগ্যা, তাহাকে আপনি স্বীকার করিয়া লউন’। সেই স্ত্রী (সংঘমূখ্যদ্বারা) গৃহীত হইলে, পনেরো দিবস পরে সিদ্ধবেশধারী এক দূষ্য সংঘমূখ্যদিগের মধ্যে যাইয়া এইরূপভাবে আক্রন্দন বা চিৎকার করিয়া বলিবে,–‘এই মূখ্যপুরুষ আমার ভার্যা, পুত্রবধু, ভগিনী বা কন্যাকে বলাৎকারে ভোগ করিতেছেন’। যদি সংঘ সেই মূখ্যকে নিগৃহীত করে, তাহা হইলে (বিজিগীষু) রাজা তাঁহাকে স্ববশে আনিয়া অন্যান্য প্রতিকুলচারী মূখ্যদিগের উপর তাঁহাকে উদ্যুক্ত করিবেন। আর যদি সেই মুখ্য সংঘকর্তৃক নিগৃহীত না হন, তাহা হইলে তীক্ষ্ণগণ রাত্রিতে সেই সিদ্ধবেশধারী দূষ্য পুরুষকে হত্যা করিবে। তৎপর অন্যান্য সিদ্ধব্যঞ্জক গূঢ়পুরুষেরা চিৎকার করিয়া বলিবে—‘এই সংঘমূখ্য পুরুষ ব্রহ্মঘাতী এবং তিনি ব্রাহ্মণীর সহিত জারকর্মে রত ছিলেন’। অথবা, কার্তান্তিক বা দৈবজ্ঞের বেশধারী গূঢ়পুরুষ (সংঘমূখ্যগণের) অন্যতমদ্বারা বৃতা (কোনো ব্যক্তির) কন্যাসম্বন্ধে অন্যতম সংঘমূখ্যের নিকট এইভাবে বুঝাইবে—‘অমুক ব্যক্তির কন্যা যাঁহার পত্নী হইবে, তিনি রাজা হইবেন এবং সে-কন্যা যে-পুত্র প্রসব করিবে তিনিও রাজা হইবেন; অতএব, সর্বস্বদানে, বলাৎকারপূর্বক সেই কন্যাকে লাভ কর’। (সেই বোধিত সংঘমূখ্যদ্বারা) যদি সেই কন্যা লব্ধ না হয়, তাহা হইলে পূর্ববরণোকারীপক্ষকে তাহারা তাঁহার বিরুদ্ধে উৎসাহিত করিবে। আর যদি (সেই সংঘমুখ) সেই কন্যাকে লাভ করিতে পারে, তবে (পূর্ববরয়িতা ও পরবর্তী যাচক—এই উভয়ের মধ্যে)—কলহ সিদ্ধ হইবে। অথবা, ভিক্ষুকীবেশধারী স্ত্রী-গুপ্তচর ভার্যাপ্রেমরত কোনো সংঘমূখ্যকে এইরূপ বলিবে—‘অমুক যৌবনদৃপ্ত মূখ্য আপনার ভার্যার প্রতি (কামলোলুপ হইয়া) তাঁহার নিকট আমাকে (দূতীরূপে) পাঠাইয়াছেন। তাঁহার ভয়ে আমি এই পত্র ও আভরণ লইয়া এখানে আসিয়াছি। আপনার ভার্যা নির্দোষা। আপনি গূঢ়ভাবে তাঁহার বিরুদ্ধে প্রতিকারের চেষ্টা করুন (অর্থাৎ তাঁহার বধোপায় নির্ধারণ করুন)। (যতক্ষণ আপনি তাহা না কএন) ততক্ষণ আমিও আপনার নিকট অবস্থান অঙ্গীকার করিব’। এই প্রকার কলহকারণ উপস্থিত হইলে, কিংবা, (উপজাপ ব্যতীত) আপনা হইতেই কলহ উৎপন্ন হইলে, অথবা, তীক্ষ্ণ পুরুষগণদ্বারা কলহ উৎপাদিত হইলে, (বিজিগীষু) রাজা অল্পশক্তি-বিশিষ্ট সংঘমূখ্যকে কোষ অ দণ্ডদ্বারা নিজ বশে আনিয়া তাঁহাকে প্রতিকুলচারী অন্যান্য সংঘমূখ্যের বিরুদ্ধে আক্রমণ করিতে নিয়োজিত করিবেন…
মহাভারতে ভীষ্ম বলেছিলেন, গণগুলির মধ্যে লোভ, ক্রোধ ইত্যাদি দেখা দিলে পর সেগুলির অভ্যন্তরীণ একতা ভেঙে যায় এবং এইভাবেই গণের বিনাশ হয়। কিন্তু কৌটিল্যের রচনা পড়লে বোঝা যায়, গণসমাজের ওই সহজ-সরল মানুষগুলির মধ্যে লোভ, ক্রোধ ইত্যাদি আপনি-আপনি জাগে না—তা জাগাবার জন্যে রাষ্ট্রশক্তির তরফ থেকে সাধু-বেশধারী গুপ্তঘাতক, সধবা বিধবা ও গণিকা, মদনরসমিশ্রিত মদ্য ইত্যাদি অনেক কিছুই পাঠাবার ব্যবস্থা করতে হয়।
১৭৫. অর্থশাস্ত্র (রাধাগোবিন্দ বসাক) ২:২০৮।
১৭৬. cf. W. W. Hunter IGI 4:177.
১৭৭. Ibid 4:191ff.
১৭৮. অর্থশাস্ত্র (রাধাগোবিন্দ বসাক) ২:২০৮-১২।
১৭৯. ঐ ২:২০৯-১২।