2 of 4

২.৩১ মেয়েদের সেমিজের কারুকর্মের কথা

খলিফা আল-মামুনের ভাই অল আমিন একদিন তার চাচা অল মাহদীর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে দেখলো একটি পরমা সুন্দরী বাঁদী কিনে এনেছে তার চাচা। বড় চমৎকার সে গান বাজনা জানে।

মেয়েটিকে দেখামাত্র সে তার মহব্বতে মজে গেলো। ব্যাপারটা অল মাহদীর নজর এড়ায় না। ভাবে, ভাইপো আমার সুন্দরী বাঁদীর মোহে পড়েছে। অল আমিন যখন পাশের ঘরে বিশ্রাম করছিলো সেই সময় অল মাহদী বাঁদীকে বললো, খুব ভাল করে সেজোগুঁজে তুমি আমার ভাইপোর ঘরে যাও। ও তোমার ওপর নজর দিয়েছে। মনে হয় তোমাকে ওর খুব পছন্দ হয়েছে।

বাঁদীটা সবচেয়ে দামী সাজ-পোশাক আর রত্নাভারণে নিজেকে সুন্দর করে সাজালো। তার রূপের জেল্লা।–তার ওপর এই রকম মোহিনী সাজ-যে কোনও পুরুষের বুকেই আগুন ধরাতে পারে।

পায়ে পায়ে সে অল আমিনের ঘরে এসে দাঁড়ায়। কাজল কালো সুমটািনা চোখের বান হানে। আমিনের বুকে রক্তের নাচন শুরু হয়।

মেয়েটি মুচকী হেসে খানিকটা কাছে সরে আসে। ফিস ফিস করে বলে, আমাকে তোমার পছন্দ?

আমিন কী করে বোঝাবে তাকে; প্রথম দর্শনেই সে মরেছে।

আমিন জানতো, তার চাচা কচি ডাঁসা মেয়ের সন্ধান পেলে সব কাজ ফেলে তার পিছনে ধাওয়া করে। এ কথা আমি কেন, পাড়া-পড়াশীরা সবাই জানে। এই কচি সুন্দরীকে সে অনেক আশা করে কিনে এনেছে। মেয়েটির দেহে এখনও যৌবনের পুরো ঢল নামেনি। এই রকম মেয়েই তার সবচেয়ে বেশি পছন্দ। তার মুখের জিনিসে আমিন ভাগ বসাতে পারবে না। মেয়েটিকে বললো। পছন্দ আমার খুবই। কিন্তু তুমি চাচার কাছে ফিরে যাও। তোমাকে আমি গ্রহণ করতে পারবো না।

মেয়েটি আমিনের চোখে চোখ রাখে, কেন?

–চাচা তোমাকে পছন্দ করে নিয়ে এসেছে। আমি তার ভোগে ভাগ বসাতে চাই না।

চাচাকে চিঠি লিখলো : কচি কাঁচা আপেল গাছ থেকে পেড়ে সব মালী বাজারে নিয়ে যায়-সে তার কী দাম আশা করতে পারে? বাজারে তার তো কোনও চাহিদাই নাই!

আল মাহদী চিঠিখানা পড়ে ভাবলো, ভাইপো ভুল বুঝেছে। সে ভেবেছে বাঁদীটা এখনও নেহাতই বালিকা। মেয়েটিকে সম্পূর্ণ বিবস্ত্রা করে, শুধুমাত্র একটি পাতলা ফিনফিনে রেশমী শেমিজ পরিয়ে, হাতে একখানা বীণা দিয়ে আবার আমিনের ঘরে পাঠিয়ে দিলে সে। শেমিজটার ওপরে সুন্দর সূচীকর্ম করা ছিলো। সুতোর বুননে একটি চমৎকার কবিতার কয়েকটি ছত্ব ফুটে উঠেছিলো :

এখনও সে কোনও হাতের স্পর্শ পায়নি,
একেবারে আনকোরা, অপাপ বিদ্ধ।
অতি সঙ্গোপনে আমি তাকে লুকিয়ে রেখেছিলাম,
ভয় ছিলো, কোনও লোভাতুর শ্যেন দৃষ্টি বুঝি তাকে বিক্ষত করে।
কিন্তু না, বিশ্বাস করো, আজও আনকোরা-অপাপ বিদ্ধ,
সে শুধু এখন তোমারই,
প্ৰাণ ভরে আত্মাণ করে।

মেয়েটির যাদুকরী যৌবনের আকর্ষণে অল আমিন আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না। কবিতার কলিগুলো তার শিরায় শিরায় অনুরাণিত হতে থাকলো।

শাহরাজাদ। আবার বলতে থাকে :

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *