পরোপকারের বিপদ

পরোপকারের বিপদ

আমার বন্ধু নিরঞ্জন ছোটোবেলা থেকেই বিশ্বহৈতেষী—ইংরেজিতে যাকে বলে ফিলানথ্রপিস্ট। একসঙ্গে ইসকুলে পড়তে ওর ফিলানথ্রপিজমের অনেক ধাক্কা আমাদের সইতে হয়েছে। নানা সুযোগে ও দুর্যোগে ও আমাদের হিত করবেই, একেবারে বদ্ধপরিকর—আমরাও কিছুতেই দেব না ওকে হিত করতে। অবশেষে অনেক ধ্বস্তাধ্বস্তি করে, অনেক কষ্টে, হয়তো ওর হিতৈষিতার হাত থেকে আত্মরক্ষা করতে পেরেছি।

হয়তো ফুটবল ম্যাচ জিতেছি, সামনে এক ঝুড়ি লেমনেড, দারুণ তেষ্টাও এদিকে—ও কিন্তু কিছুতেই দেবে না জল খেতে, বলেছে, ‘এত পরিশ্রমের পর জল খেলে হার্ট ফেল করবে।’

আমরা বলেছি, ‘করে করুক, তোমার তাতে কী?’

‘আহা, মারা যাবে যে!’’

‘জল না খেলেও যে মারা যাব, দেখছ না?’

সেগম্ভীর মুখে উত্তর দিয়েছে—‘সেও ভালো।’

তখন ইচ্ছে হয়েছে আরেক বার ম্যাচ খেলা শুরু করি—নিরঞ্জনকেই ফুটবল বানিয়ে। কিংবা ওকে ক্রিকেটের বল ভেবে নিয়ে লেমনেডের বোতলগুলোকে ব্যাটের মতো ব্যবহার করা যাক।

পরের উপকার করবার বাতিকে নিজের উপকার করার সময় পেত না ও। নিজের উপকারের দিকটা দেখতেই পেত না বুঝি। এক দারুণ গ্রীষ্মের শনিবারে হাফ-স্কুলের পর মাঠের ধার দিয়ে বাড়ি ফিরছি, নিরঞ্জন বলে উঠল—‘দেখছ, হিরণ্যাক্ষ, দেখতে পাচ্ছ?’

কী আবার দেখব? সামনে ধুধু করছে মাঠ, একটা রাখাল গোরু চরাচ্ছে, দু-একটা কাক-চিল এদিক-ওদিকে উড়ছে হয়তো—এ ছাড়া আর কোনো দ্রষ্টব্য পৃথিবীতে দেখতে পেলাম না। ভালো করে আকাশটা লক্ষ করে নিয়ে বললাম—‘হ্যাঁ দেখেছি, এক ফোঁটাও মেঘ নেই কোত্থাও। শিগগির যে বৃষ্টি নামবে সে-ভরসা করি না।’

‘ধুত্তোর মেঘ! আমি কি মেঘ দেখতে বলেছি তোমায়? ওই যে রাখালটা গোরু চরাচ্ছে দেখছ না!’

‘অনেকক্ষণ থেকেই দেখছি, কী হয়েছে তাতে? গোরুদের কোনো অপকার করছে নাকি?’

‘নিশ্চয়ই! এই দুপুর রোদে ঘুরলে বেচারাদের মাথা ধরবে না? না গোরু বলেই মাথাই নেই ওদের! মানুষ নয় ওরা? বাড়ি নিয়ে যাক, বলে আসি রাখালটাকে। সকাল-বিকেলে এক-আধটু হাওয়া খাওয়ালে কি হয় না? সেই হল গে বেড়ানোর সময়—এই কাটফাটা রোদ্দুরে এখন এ কী?’

কিন্তু রাখাল বাড়ি ফিরতে রাজি হয় না—গোরুদের অপকার করতে সেবদ্ধপরিকর।

নিরঞ্জন হতাশ হয়ে ফিরে হা-হুতাশ করে—‘দেখছ হিরণ্যাক্ষ, ব্যাটা নিজেও হয়তো মারা যাবে এই গরমে, কিন্তু দুনিয়ার লোকগুলোই এইরকম? পরের অপকারের সুযোগ পেলে আর কিছু চায় না, পরের অপকারের জন্যে নিজের প্রাণ দিতেও প্রস্তুত!’

যখন শুনলাম সেই নিরঞ্জন বড়োলোকের মেয়ে বিয়ে করে শ্বশুরের টাকায় ব্যারিস্টারি পড়তে বিলেত যাচ্ছে, তখন আমি রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম। যাক, এতদিনে তাহলে ও নিজেকে পর বিবেচনা করতে পেরেছে, তা না হলে নিজেকে ব্যারিস্টারি পড়তে বিলেত পাঠাচ্ছে কী করে? নিজেকে পর না ভাবতে পারলে নিজের প্রতি এতখানি পরোপকার করা কি নিরঞ্জনের পক্ষে সম্ভব?

অকস্মাৎ একদিন নিরঞ্জন আমার বাড়ি এসে হাজির। বোধ হয় বিলেত যাবার আগে বন্ধুদের কাছে বিদায় নিতেই বেরিয়েছিল। অভিমানভরে বললাম—‘চুপি চুপি বিয়েটা সারলে হে, একবার খবরও দিলে না বন্ধুদের? জানি, আমাদের ভালোর জন্যই খবর দাওনি, অনেক কিছু ভালো-মন্দ খেয়ে পাছে কলেরা ধরে, সেই কারণেই কাউকে জানাওনি,—কিন্তু নাহয় না-ই খেতাম আমরা, কেবল বিয়েটাই দেখতাম। বউ দেখলে কানা হয়ে যেতাম না তো!’

‘কী যে বল তুমি! বিয়েই হল না তো বিয়ের নেমন্তন্ন! নিজের উপকার করব তুমি তাই ভেবেছ আমাকে? পাগল! ভাবছি তোতলাদের জন্যে একটা ইশকুল খুলব। মূক-বধিরদের বিদ্যালয় আছে, কিন্তু তোতলাদের নেই। অথচ কী পসিবিলিটি-ই না আছে তোতলাদের!’

‘কীরকম?’—আমি অবাক হবার চেষ্টা করি।

‘জান? প্রসিদ্ধ বাগ্মী ডিমস্থিনিস আসলে কী ছিলেন? একজন তোতলা মাত্র। মুখে মার্বেলের গুলি রাখার প্র্যাকটিস করে করে তোতলামি সারিয়ে ফেললেন। অবশেষে, এত বড়ো বক্তা হলেন যে অমন বক্তা পৃথিবীতে আর কখনো হয়নি। সেটা মার্বেলের গুলির কল্যাণে কিংবা তোতলা ছিলেন বলেই হল, তা অবশ্য বলতে পারি না।’

‘বোধ হয় ওই দুটোর জন্যই’—আমি যোগ দিলাম।

নিরঞ্জন খুব উৎসাহিত হয়ে উঠল—‘আমারও তাই মনে হয়। আমিও স্থির করেছি বাংলাদেশের তোতলাদের সব ডিমস্থিনিস তৈরি করব। তোতলা তো তারা আছেই, এখন দরকার শুধু মার্বেলের গুলির। তাহলেই ডিমস্থিনিস হবার আর বাকি কী রইল?’

আমি সভয়ে বললাম—‘কিন্তু ডিমস্থিনিসের কি খুব প্রয়োজন আছে এদেশে?’

সেযেন জ্বলে উঠল—‘নেই আবার! বক্তার অভাবেই দেশের এত দুর্গতি, লোককে কাজে প্রেরণা দিতে বক্তা চাই আগে। শতসহস্র বক্তা চাই, তা না হলে এই ঘুমন্ত দেশ আর জাগে না। কেন, বক্তৃতা ভালো লাগে না তোমার?’

‘থামলে ভারি ভালো লেগে যায় হঠাৎ, কিন্তু যখন চলতে থাকে তখন মনে হয় কালারাই পৃথিবীতে সুখী।’

আমার কথায় কান না দিয়ে নিরঞ্জন বলে চলল—‘তাহলেই দ্যাখো, দেশের জন্যে চাই বক্তা, আর বক্তার জন্য চাই তোতলা। কেননা ডিমস্থিনিসের মতো বক্তা কেবল তোতলাদের পক্ষেই হওয়া সম্ভব, যেহেতু ডিমস্থিনিস নিজে তোতলা ছিলেন। অতএব ভেবে দ্যাখো, তোতলারাই হল আমাদের ভাবী আশাভরসা, আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ।’

যেমন করে ও আমার আস্তিন চেপে ধরল, তাতে বাধ্য হয়ে জামা বঁাচাতে আমাকে সায় দিতে হল।

‘তোতলাদের একটা ইশকুল খুলব, সবই ঠিক, বিস্তর তোতলাকে রাজিও করিয়েছি, কেবল একটা পছন্দসই নামের অভাবে ইশকুলটা খুলতে পারছি না। একটা নামকরণ করে দাও-না তুমি। সেইজন্যই এলাম।’

‘কেন, নাম তো পড়েই আছে, ‘নি:স্বভারতী’,—চমৎকার! ভারতী,—মানে, বাক্য, যাদের নি:স্ব—কিনা, থেকেও নেই, তারাই হল গিয়ে নি:স্বভারতী।’

‘উঁহু, ও নাম দেওয়া চলবে না। কারণ রবি ঠাকুর ভাববেন ‘বিশ্বভারতী’ থেকেই নামটা চুরি করেছি।’

‘তবে একটা ইংরেজি নাম দাও—Sanatorium for faltering Tongues (স্যানাটোরিয়াম ফর ফলটারিং টাংস)—বেশ হবে।’

‘কিন্তু বড়ো লম্বা হল যে।’

‘তা তো হলই। যেদিন দেখবে, তোমার ছাত্ররা তাদের ইশকুলের পুরো নামটা সটান উচ্চারণ করতে পারছে, কোথাও আটকাচ্ছে না, সেদিনই বুঝবে তারা পাস হয়ে গেছে। তখন তারা সেলাম ঠুকে বিদায় নিতে পারে। নাম-কে-নাম, কোশ্চেন পেপার-কে-কোশ্চেন পেপার।’

‘হ্যাঁ, ঠিক বলেছ। এই নামটাই থাকল।’—বলে নিরঞ্জন আর দ্বিতীয় বাক্যব্যয় না করে সবেগে বেরিয়ে পড়ল, সম্ভবত সেই মুহূর্তেই তার ইশকুল খোলার সুমতলবে।

মহাসমারোহে এবং মহা শোরগোল করে নিরঞ্জনের ইশকুল চলছে। অনেকদিন এবং অনেক ধার থেকেই খবরটা কানে আসছিল। মাঝে মাঝে অদম্য ইচ্ছেও হত একবার দেখে আসি ওর ইশকুলটা, কিন্তু সময় পাচ্ছিলাম না মোটেই। অবশেষে গত গুডফ্রাইডের ছুটিটা সামনে পেতেই ভাবলাম—না:, এবার দেখতেই হবে ওর ইশকুলটা। এ সুযোগ আর হাতছাড়া নয়। নিরঞ্জন ওদিকে দেশের এবং দশের উপকার করে মরছে, আর আমি ওর কাছে গিয়ে ওকে একটু উৎসাহ দেব, এইটুকু সময়ও হবে না আমার! ধিক আমাকে!

মার্বেলের গুলির কল্যাণে নিশ্চয়ই অনেকের তোতলামি সেরেছে এতদিনে। তা ছাড়া আনুষঙ্গিকভাবে আরও অনেক উপকার—যেমন দাঁত শক্ত, মুখের হাঁ বড়ো, ক্ষুধাবৃদ্ধি—এসবও হয়েছে। এবং ডিমস্থিনিস হবার পথেও অনেকটা এগিয়েছে ছাত্ররা।—অন্তত ‘ডিম’ পর্যন্ত তো এগিয়েছেই, এবং যেরকম কষে তা দিচ্ছে নিরঞ্জন, তাতে ‘স্থিনিসের’ও বেশি দেরি নেই—হয়ে এল বলে।

ঠিকানার কাছাকাছি পৌঁছোতেই বিপর্যয় রকমের কলরব কানে এসে আঘাত করল; সেই কোলাহল অনুসরণ করে স্যানাটোরিয়াম ফর ফলটারিং টাংস খুঁজে বের করা কঠিন হল না। বিচিত্র স্বরসাধনার দ্বারা ইশকুলটা প্রতিমুহূর্তেই যেন প্রমাণ করতে উদ্যত যে, ওটা মূক-বধিরদের বিদ্যালয় নয়—কিন্তু আমার মনে হল, তাই হলেই ভালো ছিল বরং—ওদের কষ্ট লাঘব এবং আমাদের কানের আত্মরক্ষার পক্ষে।

আমাকে দেখেই কয়েকটি ছেলে ছুটে এল—‘কা-কা-কা-কা-কা-কে চান?’

দ্বিতীয়টি তাকে বাধা দিয়ে বলতে গেল—‘মা-মা-মা-মা—’ কিন্তু মা-মার বেশি আর কিছুই তার মুখ দিয়ে বেরোল না।

তখন প্রথম ছাত্রটি দ্বিতীয়ের বাক্যকে সম্পূর্ণ করল—‘মাস্টার বা-বা-বা-বা—’ আমি বললাম ‘কাকাকে, মামাকে কি বাবাকে কাউকে আমি চাই না। নিরঞ্জন আছে?’

ছেলেরা পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে লাগল। সেকী, নিরঞ্জনকে এরা চেনে না? এদের প্রতিষ্ঠাতা নিরঞ্জন, তাকেই চেনে না! কিংবা যার যার নাম উচ্চারণ-সীমার বাইরে, তাকে না চেনাই এরা নিরাপদ মনে করেছে?

একজন আধাবয়সি ভদ্রলোক যাচ্ছিলেন ওইখান দিয়ে, মনে হল এই ইশকুলেরই ক্লার্ক, তাঁকে ডেকে নিরঞ্জনের খবর জিজ্ঞাসা করতে তিনি বললেন—‘ও, মাস্টারবাবু?’ এই পর্যন্ত তিনি বললেন, বাকিটা হাতের ইশারা দিয়ে জানালেন যে তিনি ওপরে আছেন। এই ভদ্রলোকও তোতলা নাকি?

আমাকে দেখেই নিরঞ্জন চেয়ার থেকে লাফিয়ে উঠল—‘এই যে অ-অনেক দিন পরে! খ-খবর ভালো?’

অ্যাঁ? নিরঞ্জনও তোতলা হয়ে গেল নাকি? না, ঠাট্টা করছে আমার সঙ্গে? বললাম—‘তা মন্দ কী! কিন্তু তোমার খবর তো ভালো মনে হচ্ছে না? তোতলামি প্র্যাকটিস করছ কবে থেকে?’

‘প্যা-প্যা-পর্যাক—প্র্যাকটিস করব কে-কেন? তো-তো-তোতলামি আবার কে-কেউ প্র্যাকটিস করে?’

‘তবে তোতলামিতে প্রোমোশন পেয়েছ বলো!’

‘ভাই হি-হি-হিরন্না-ন্না-ন্না-ন্না-ন্না-ন্না’—বলতে বলতে নিরঞ্জনের দম আটকে যাবার জোগাড় হল। আমি তাড়াতাড়ি বললাম—‘হিরণ্যাক্ষ বলতে যদি তোমার কষ্ট হয়, নাহয় তুমি আমাকে হিরণ্যকশিপুই বোলো। ‘কশিপুর মধ্যে ‘দ্বিতীয় ভাগ’ নেই।’

স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে নিরঞ্জন বলল,—‘ভাই হি-হিরণ্যকশিপু, আমার এই স্যানাটো-টো-টো-টো-টো’—

এবার ওর চোখ কপালে উঠল দেখে আমি ভয় খেয়ে গেলাম। ইশকুলের লম্বা নামটা সংক্ষিপ্ত ও সহজ করার অভিপ্রায়ে বললাম—‘হ্যাঁ, বুঝেছি, তোমার এই স্যানাটোজেন, তারপর?’

নিরঞ্জন রীতিমতো চটে গেল—‘স্যানাটোজেন? আমার ইশকুল হো-হো-হল গিয়ে স্যা-স্যানাটোজেন? স্যানাটোজেন তো এ-একটা ও-ও-ওষুধ!’

‘আহা ধরেই নাও-না কেন! তোমার ইশকুলও তো একটা ওষুধবিশেষ! তোতলামি সারানোর একটা ওষুধ নয় কি?’

অতঃপর নিরঞ্জন খুশি হয়ে একটু হাসল। ভরসা পেয়ে জিজ্ঞাসা করলাম—‘তা, তোমার ছাত্ররা কদ্দুর ডিমস্থিনিস হল?’

‘ডি-ডিম হল!’

‘অর্ধেক যখন হয়েছে, তখন পুরো হতে আর বাকি কী!’ আমি ওকে উৎসাহ দিলাম।

নিরঞ্জন বিষণ্ণভাবে ঘাড় নাড়ে—‘আ-আর হবে না! মা-মা-মার্বেলই মুখে রাখতে পা-পারে না তো কী-কী-কী-করে হবে?’

‘মুখে রাখতে পারে না? কেন?’

‘স-স-সব গি-গিলে ফ্যালে!’

‘গিলে ফ্যালে? তাহলে আর তোতলামি সারবে কী করে, সত্যিই তো! তা, তুমি নিজেরটা সারিয়ে ফ্যালো, বুঝলে? রোগের গোড়াতেই চিকিৎসা হওয়া দরকার, দেরি করা ভালো না!’

হতাশ ভাবে মাথা নেড়ে নিরঞ্জন জবাব দেয়—‘আ-আমার যে ডি-ডি-ডি-ডিসপেপশিয়া আছে! হ-হ-হজম করতে পা-পারব কেন?’

‘ও, ডিসপেপশিয়া থাকলে তোতলামি সারে না বুঝি?’

‘তা-তা কেন? আ-আমিও গি-গিলে ফেলি!’—আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম; নিরঞ্জন বলল, ‘আ-আমার কী আর পা-পা-পাথর হ-হজম করবার ব-ব-বয়েস আছে?’

‘তাইতো! ভারি মুশকিল তো! তোমার চলছে কী করে? ছেলেরা বেতন দেয় তো নিয়ম মতো?’

‘উঁহু,—স-সব ফি-ফি-ফ্রি যে! অ-অনেক সা-সাধাসাধি করে আনতে হয়েছে!’

‘তবে তোমার চলছে কী করে?’

‘কে-কেন? মা-মা-মার্বেল বেচে? এক-একজন দ-দ-দশটা-বারোটা করে খায় রোজ! ওগুলো মু-মুখে রাখা ভা-ভা-ভা-ভারি শক্ত।’

‘বটে? বিস্ময়ে অনেকক্ষণ আমি হতবাক হয়ে রইলাম, তারপর আমার মুখ দিয়ে কেবল বেরোল—‘ব-ব-বল কী!’

যেমনি না নিজের কন্ঠস্বর কানে যাওয়া, অমনি আমার আত্মাপুরুষ চমকে উঠল! অ্যাঁ, আমিও তোতলা হয়ে গেলাম নাকি! না:, আর একমুহূর্তও এই মারাত্মক জায়গায় নয়! তিন লাফে সিঁড়ি টপকে ঊর্ধ্বশ্বাসে বেরিয়ে পড়লাম সদর রাস্তায়।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *