গোবর্ধনের কেরামতি
আসাম সরকারের নোটিশ এসেছে প্রত্যেক আসামির কাছেই। হর্ষবর্ধনরাও বাদ যায়নি। যদিও বহুকাল আগে দেশ ছেড়ে কলকাতায় এসে কাঠের ব্যবসায় লিপ্ত রয়েছেন, তাহলেও আসাম সরকারের কঠোর দৃষ্টি এড়াতে পারেননি তাঁরা। সরকারি কড়া নজর পড়েছে তাঁদের ওপরেও।
শুধু হর্ষবর্ধনই নন। তাঁর ভাই গোবর্ধনও পেয়েছে এক নোটিশ। সীমান্তে যুদ্ধে যাবার নোটিশ।
পররাজ্য লিপ্সায় চীন যখন নেফার সীমানা পার হয়ে তেজপুরের দরজায় এসে হানা দিল, তখন কেবল আসামিদেরই নয়। প্রত্যেক তেজস্বী ভারতীয়রই ডাক পড়েছিল চীনকে রুখবার আর তেজপুর রাখবার জন্যে।
কলকাতায় হর্ষবর্ধনের কাছেও এসে পৌঁছোল সেই ডাক। হর্ষবর্ধন কিন্তু বললেন— ‘না, আমি যুদ্ধে যাব না।’
‘সেকী দাদা!’ বিস্ময়ে হতবাক গোবর্ধন—‘তুমি না বিলেত গিয়ে যুদ্ধ করেছিলে; সেই যুদ্ধ যখন নিজের দেশেই এসেছে এই সুযোগ তুমি হাতছাড়া করবে বল কী?’
‘বিলেত গেছিলাম নাকি? সেতো ইসপেন।’ বলেন হর্ষবর্ধন—‘ইসপেনেই তো লড়েছিলাম গিয়ে?’
‘একই কথা; বিলেত যাবার পথেই ইসপেন যেখানে হিটলারের ফাসিস্ত বাহিনীকে তুমি ফাঁসিয়ে দিয়ে এসেছ। আমিও তো লড়েছিলাম তোমার পাশেই গো। আমাদের লড়াইয়ের সেই কাহিনি যুদ্ধে গেলেন হর্ষবর্ধন বইয়ে ফাঁস করে দিয়েছে সেই হতভাগাটা।’
‘কোন হতভাগা?’
‘কে আবার’, তোমার পেয়ারের চকরবরতি। জান না কি? ন্যাকা।
‘জানব না কেন? পড়েছি বইটা। আমাকেও দিয়েছিল এক কপি যে। লোকটা ভারি বাড়িয়ে লেখে কিছু। গাঁজা খায় বোধ হয়। হ্যাঁ বড্ড বেশি গ্যাঁজায়। ওর সব গল্পই গ্যাঁজানো। গঞ্জনা বলতেও পারিস—সমসকৃত করে। কিন্তু সেকথা নয়। কথা হচ্ছে এই, চিরকাল আমরাই যুদ্ধে যাব নাকি? তখন যুবক ছিলাম লড়েছি, কিন্তু বুড়ো হয়ে যাইনি কি এখন? গায়ের জোর কি কমে যায়নি আমাদের? বন্দুক তুলতে গেলেই তো উলটে পড়ব মনে হয়। তা ছাড়া প্যারেড! লম্বা লম্বা রুট মার্চ করতে পারব আমরা এই বয়সে?’
‘এই মার্চ মাসে তো নয় দাদা।’ এমন দারুণ গরমে গোবর্ধন সাড়া দেয়।
‘তবে? এখন যারা যুবক তারা গিয়ে যুদ্ধ করুক। আমরা লড়ায়ের কথা পড়ব খবরের কাগজে। কিংবা বলব সেই চকরবরতিকে তাদের যুদ্ধের গল্প লিখতে—বইয়ে পড়া যাবে তখন।’
‘তা বটে।’
‘আর, সত্যি বলতে তারাই লড়ছে এখন। সেই জওয়ানরাই’।
‘জওয়ান। জওয়ান আবার কী দাদা?’
‘রাষ্ট্রভাষা। জওয়ান মানে জোয়ান।’
‘মানে তুমি।’ জানায় গোবর্ধন!
‘আমি জোয়ান! তার মানে?’ হর্ষবর্ধন হকচকান।
‘বউদি বললে যে সেদিন,’ প্রকাশ করে গোবরা।
‘তোর বউদি বললে আমি জোয়ান? সে-ই দেখছি ফাঁসাবে আমায়। কোনো মিলিটারি অফিসারের কাছে বলেছে নাকি সে?’
‘না না। সেই চকরবরতিটার কাছেই বললে তো। শুনি তো ব্যাপারটা। সেযদি গল্পে লিখে কথাটা ছাপিয়ে দেয় তাহলেই তো গেছি। তারপর এই নোটিশ এসেছে। বউদির ইতু পূজার বর্ত ছিল না? পুজোটুজো সেরে বললে আমায় ‘যাও তো ভাই, একটা বামুন ধরে নিয়ে এসো তো। বামুনভোজন করাতে হবে।’ আমি বললাম, বউদি; তুমি ইতু পুজো করছ জানলে আমি জ্যান্ত ইতুকেই ধরে আনতে পারতাম। জ্যান্ত ইতুর পুজো করতে পারতে তাহলে। তা যখন হল না তার দাদাকেই ধরে আনা যাক এখন, তখন বউদি বুঝতে পারল কথাটা।’
‘সব কিছুই একটু লেটে বোঝে সে।’ হাসলেন হর্ষবর্ধন।
‘গেলাম চকরবরতির কাছে। যাবার কথা শুনে তখনই সেএকপায়ে খাড়া, কিন্তু যখন সেশুনল যে ব্রত উদযাপনের বামুনভোজন, তখন আবার পিছিয়ে গেল ঘাবড়ে। বলল, ভাই, আমি তো ঠিক বামুন নই। পৈতেই নেইকো আমার! আমি বললাম, ধোপার বাড়ি কাচতে দিয়েছেন বুঝি? সেবললে, তা নয় ঠিক। কখনো পৈতে হয়েছিল কি না, তা মনেই পড়ে না আমার। আমি বলি তা না হোক, আপনার পৈতের দরকার কী? বাবার পৈতে ছিল তো? বামুন না হোক, বামুনের ছেলে হলেই হবে। তখন সেএল খেতে।’
‘তা এল না হয়।’ বললেন দাদা, ‘কিন্তু তার খাবার সঙ্গে আমার জোয়ান হবার কী সম্পর্ক তা তো বুঝছি না। এ তো সর্বনেশে কথা ভাই!’
‘সর্বনেশে কথাই বটে। লোকটার কথাই এইরকম। পেট ঠেসে খেয়ে ঢেঁকুর তুলে বলে কিনা সে—সবই তো করলেন বউদি। বেশ ভালোই করেছেন। রেঁধেছেনও খাসা, কেবল একটা জিনিস বাদ পড়ে গেছে। অম্বলটা করেননি। একটু অম্বলও করতে পারতেন এইসঙ্গে। শুনে বউদি বলল, চকরবরতি মশাই এ-বাজারে কি খাঁটি জিনিস মেলে নাকি? এখন কাঁকড়মণি চালের ভাত। পচামাছ, বাদাম তেলের রান্না, এই থেকেই যথেষ্ট অম্বল হবে। সেই ভেবেই আর অম্বলটা করিনি। শুনে তো আঁতকে উঠল লোকটা—অ্যাঁ বলেন কী বউদি? তা হলে তো হজম করা মুশকিল হবে দেখছি। হজম করবার কোনো দাবাই আছে বাড়িতে? দিন তাহলে একটু। এইসঙ্গে খেয়ে নিই। কীরকম দাবাই? জানতে চাইলেন বউদি। এই যোয়ান-টোয়ান। এই বাড়িতে জোয়ান বলতে তো—জানাল বউদি—‘জোয়ান বলতে গোবরার দাদা।’ ‘তা তিনি তো এখন তাঁর কাঠের কারখানায়।’
‘তোর বউদির যেমন কথা! আমি যদি জোয়ান তাহলে প্রৌ… প্রৌ… প্রৌ… কথাটা কী রে? গলায় আসছে মুখে আসছে না। মানে প্রৌঢ় কে তাহলে? প্রৌঢ়? প্রৌঢ় না-কি প্রৌঢ? ও সেএকই কথা। তোর, তোর বউদির সার্টিফিকেটে দেখছি এখন আমায় তেজপুরে গিয়ে গড়াতে হবে। বিধবা হতে এই বয়সে!’
‘তুমি বিধবা হবে! বলো কী?’ গোবরা হাঁ করে থাকে।
‘আমি কেন। তোর বউদিই হবে তো, সে-ই তো হবে বিধবা। ও সেএকই কথা। তা হলে মজাটা টের পাবে তখন। মাছ খেতে পাবে না আর। সাধের বেড়াল মাছ না পেয়ে পালিয়ে যাবে বাড়ি থেকে বোঝো ঠেলা।’
‘বউদির ঠেলা বউদি বুঝবে। এখন নিজেদের ঠেলা তো সামলাই আমরা,’ বলে গোবরা।
‘সামলাবার কী আছে আর।’ জবাব দেন দাদা, ‘বললাম না, এই ঠেলায় গড়াতে হবে গিয়ে তেজপুরে। মুন্ডু একদিকে গড়াবে। ধড়টা আর একদিকে।’
‘আমিও গড়াব তোমার পাশেই দাদা।’ গোবরার উৎসাহ ধরে না।
‘হায় হায়। বংশলোপ হয়ে গেল আমাদের।’ কাতর সুরে শুরু করেন শ্রীহর্ষ। ‘এক লক্ষ পুত্র তার সওয়া লক্ষ নাতি। এক জনও না রহিল বংশে দিতে বাতি,’ রামায়ণের লঙ্কাকান্ডের সঙ্গে নিজেকে গুলিয়ে রাবণের শোকে তিনি মুহ্যমান হয়ে থাকেন।
‘মিছে হায় হায় করছ দাদা। তোমার ছেলেও নেই, নাতিও নেই। গোবর্ধন বাতলায়। তোমার আবার বংশলোপ হবে কী করে?’
‘নাতিবৃহৎ তুইতো আছিস। তুই গেলেই আমাদের বংশ গেল।’ দাদার শোক উথলে ওঠে, ‘এতদিনে আমাদের বর্ধন বংশ গোল্লায় গেল। আর বর্ধিত হতে পেলনা।’
‘গোল্লায় বল আর গোলায় বল একই কথা। না-না। তোমাকে কি সর ফ্র… ফ্র… ফ্র… ফ্র…।’
‘কী কড়কড় করছিস।’ ‘কেন ফ্রন…’ বলেই হতবাক গোবর্ধন। ‘মানে?’ হর্ষবর্ধন বিরক্ত হন। ‘মানে তোমাকে কি ওরা আর ফ্রন্টে পাঠাবে?’ কথাটা খুঁজে পেয়েছে গোবরা, ‘তুমি নাকি ইসপেনের যুদ্ধ জয় করে এসেছ? পড়েছে নিশ্চয়ই তারা বইয়ে। তাইতো ডেকেছে তোমাকে। নিশ্চয়ই তোমাকে তারা সেনাপতিটতি করে দেবে সামনে থেকে লড়তে হবে না তোমায়। মরতে হবে না গোলায়। পেছনে থেকে পালাবার পথ পরিষ্কার পাবে।’
‘পেয়েছি আর, পালাবার পথ নাই যম আছে পিছে। যুদ্ধ কাকে বলে জানিসনেতো’ বলে দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়েন দাদা, ‘সেবড়ো কঠিন ঠাঁই। গুরু-শিষ্যে দেখা নাই।’
‘দাদা-ভাইয়ে দেখা হবে কিন্তু,’ গোবর্ধন আশ্বাস দেয়। ‘তোমার কাছে কাছেই থাকব আমি, পালাব না।’
‘জ্বালাসনে আর। এখন পড় তো কী লিখেছে নোটিশটায়।’
‘গোখেল রোডের একটা ঠিকানা দিয়েছে।’ নোটিশ পড়ে গোবরা জানায়। ‘রিক্রুটিং অপিসের ঠিকানা, যেখানে আগামী পরশু সকাল দশটায় গিয়ে হাজির হতে হবে। নাম লেখাতে হবে। তারপরে মেডিক্যাল এগজামিনেশনের পর ভরতি করে নেবার কথা।’ ‘আর যদি না যাই?’ ‘ওয়ারেন্ট নিয়ে এসে পাকড়ে নিয়ে যাবে পেয়াদায়।’
‘আর যদি পালিয়ে যাই এখান থেকে?’
‘হুলিয়া বেরিয়ে যাবে। পুলিশ লেলিয়ে দেবে পেছনে।’ ‘পুলিশ! ওরে বাবা! আঁতকে ওঠে হর্ষবর্ধন। তাহলে আর না গিয়ে উপায় নেই। যাব আমরা।’
যথা দিবসে যথা সময়ে যথাস্থানে গেলেন দু-ভাই। দাঁড়ালেন পাশাপাশি।
প্রথমে পরীক্ষা হল হর্ষবর্ধনের।
‘নাম?’
‘শ্রীহর্ষবর্ধন।’
‘বয়স?’
‘বিয়াল্লিশ।’
‘পিতার নাম?’
‘বেঠেন্দ্রবর্ধন। মা-র নাম বলব?’
‘না, দরকার নেই, ঠিকানা?’
‘চেতলা।’
‘পেশা? মানে কী কাজটাজ করেন?’
‘কাঠের কারবার।’
‘ভারতের সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া একটা গর্বের বস্তু। গৌরবের বস্তু বলে কি আপনি মনে করেন?’
‘নিশ্চয় নিশ্চয়।’
‘বাহিনীর কোন বিভাগে ভরতি হতে চান আপনি?’
‘আজ্ঞে?’ প্রশ্নটা ঠিক আঁচ পান না হর্ষবর্ধন।
‘নানান বিভাগ আছে তো আমাদের? পদাতিক বাহিনী, গোলন্দাজ বাহিনী। বিমানবাহিনী—’
‘আমি একেবারে জেনারেল হতে চাই। মানে সেনাপতিটতি।’ জানান হর্ষবর্ধন।
‘পাগল হয়েছেন?’ রিক্রুটিং অফিসার না বলে পারেন না। ‘সেটা একটা শর্ত নাকি?’
হর্ষবর্ধন জানতে চান, ‘জেনারেল হতে হলে কি পাগল হতে হবে?’
সেকথার কোনো জবাব না দিয়ে অফিসার গোবর্ধনকে নিয়ে—পড়েন—‘নাম?’
‘গোবর্ধন।’
‘বয়েস?’
‘বত্রিশ—আর বাকি সব ওই ওই ওই ওই ওই ওই।’ ‘তার মানে?’ থই পান না অফিসার। ‘মানে ঠিকানা। পিতার নাম, পেশা সব ওই ওই।’ বিশদ করে দেয় গোবরা। ‘অর্থাৎ ইংরেজি করে বললে ডিটো ডিটো। আমরা আসলে দুই ভাই কিনা।’
‘ও, তাহলে এবার আপনারা ওই পাশের ঘরে চলে যান, সেখানে আপনাদের মেডিক্যাল চেক-আপ হবে।’ বললেন ‘অফিসার ডাক্তারি পরীক্ষায় পাস করতে পারলে তারপরে ভরতি।’
পাশের ঘরে যাবার পথে ফিসফিস করে গোবরা, ‘আর ভয় নেই দাদা। আমরা জীবনে কোনো পরীক্ষায় পাস করতে পারি নি। আর ডাক্তারি পরীক্ষায় পাস করব, ক্ষেপেছ তুমি? ফেল যাব নির্ঘাত— দেখে নিয়ো। বোধ হচ্ছে বেঁচে গেলাম এ যাত্রা।’ ‘হ্যাঁ ফেলেছে কিনা আমাদের।’ আশ্বাস পান না দাদা ‘এই যুদ্ধের বাজারে কেউ ফেলবার নয়। কিছু ফ্যালনা নয়।’ হর্ষবর্ধনের বিপুল ভুঁড়ি দেখেই বাতিল করে দিলেন ডাক্তার—না—এ চলবে না। প্রতিবাদ করে বলতে গেছিলেন বহুত-বহুত জেনারেলের ভূরি-ভূরি ভুঁড়ি তিনি দেখেছেন। কিন্তু তাঁর ভুঁড়িতে গোটা দুই টোকা মেরে তুড়ি দিয়ে তাঁকে উড়িয়ে দিলেন ডাক্তার।
তারপর গোবর্ধনের পালা এল।
সব পরীক্ষায় পাস করার পর চক্ষু পরীক্ষা। ‘চার্টের হরফগুলো পড়তে পারছেন তো?’ ‘কোন চার্ট?’ জিজ্ঞেস করল গোবরা ‘চার্ট কোথায়?’
‘কেন দেয়ালের গায় ওই যে চার্ট ঝুলছে।’ ‘অ্যাঁ। ওখানে একটা দেয়াল আছে নাকি আবার।’ ‘আপনার চোখ তো দেখছি তেমন সুবিধার নয়।’ বলে ডাক্তার একটা অ্যালুমিনিয়ামের প্রকান্ড ট্রে ওর চোখের দু-ফুট দূরে ধরে রেখে শুধালেন ‘এটা কী দেখছেন বলুন তো?’
‘একটা আধুলি বোধ হয়? নাকি সিকিই হবে।’ দৃষ্টিহীনতার দোষে গোবর্ধনও বাতিল হয়ে গেল। গোখেল রোডের বাইরে এসে হাঁফ ছাড়ল দু-ভাই। ‘চলো দাদা। আজ একটু ফুর্তি করা যাক। আড়াইটা বাজে প্রায়। রেস্তরাঁয় কিছু খেয়েদেয়ে দুজনে মিলে তিনটের শোয়ে কোনো সিনেমা দেখি গে।’
নানান খানা খেতে খেতে তিনটে পেরিয়ে গেল। তিনটের পরে সিনেমায় অন্ধকার ঘরে গিয়ে ঢুকল দু-ভাই। হাতড়ে মাতড়ে ঠোক্কর খেয়ে নির্দিষ্ট আসনে গিয়ে বসল পাশাপাশি।
ইন্টারভ্যালের আলো জ্বলে উঠতেই চমকে উঠলেন হর্ষবর্ধন একী! গোবর্ধনের পাশেই যে সেই ডাক্তারটা বসে, খারাপ চোখ নিয়ে সিনেমা দেখা হচ্ছে দিব্যি— এত কান্ড করে শেষটায় বুঝি ধরা পড়ে গেল গোবরা। কনুয়ের আলতো গুঁতোয় পাশের ডাক্তারকে দেখিয়ে দিলেন দাদা।
গোবরা কিন্তু ঘাবড়াল না। জিগেস করল ডাক্তারকেই— কিছু মনে করবেন না দিদি। শুধোচ্ছি আপনাকে—এটা তেত্রিশের বাস তো?
অ্যাঁ—অতর্কিত প্রশ্নবাণে চমকে ওঠেন ডাক্তারবাবু।
মানে মাপ করবেন বড়দি। এটা চেতলার বাস তো? ভিড়ের ভেতর পড়ে ঢুকে তো পড়লাম। কিন্তু ঠিক বাসে উঠেছি কি না ঠেলাঠেলিতে বুঝতে পারছি না। চেতলায় পৌঁছোব কি না কে জানে।