কল-স্বর
অবিনাশের আপিসে এসেছে অভিলাষ। সাড়ে চারটা পার তখন, ছুটি হব-হব, কিন্তু তখনও অবিনাশের হাত কামাই নেই। তখনও সেনিজের মেশিনে বসে; মেশিনের মতোই কাজ করে যাচ্ছে দু-হাতে।
রাশি রাশি আঁক। লম্বা লম্বা যোগ। বড়ো বড়ো হিসেবের ফিরিস্তি। সেসব চক্ষের পলকে দেখতে না দেখতে মেশিনের সাহায্যে কষিত হয়ে কাগজের পিঠে বসিত হচ্ছে। দেখলে তাক লাগে।
তাক-লাগানো এই আঁকের কলটার নাম কম্পটোমিটার। বড়ো বড়ো আপিসে থাকে। বারো জন হিসেবির কাজ একটা মেশিনে মাথা খাটিয়ে নিকেশ করে—মিনিটের মধ্যে, একলা। কলকবজার এই মাথা, গোড়ায় মানুষের মাথার থেকে বেরোলেও, এখন মানুষের মাথাকে টেক্কা মারছে।
অভিলাষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখল—তাকিয়ে তাকিয়ে। দেখতে দেখতে ছুটির ঘণ্টা বাজল। নিজের কাজ বাজিয়ে, কাগজপত্তর গুছিয়ে রেখে উঠে পড়ল অবিনাশ। বেরিয়ে পড়ল দুই বন্ধুতে আপিস থেকে। জমল গিয়ে এসপ্ল্যানেডের কাফেটোরিয়ায়।
‘ইস! মেশিনের এরকম মাথা!’ খাবার টেবিলে বসেও অভিলাষের মাথায় কম্পটোমিটার ঘুরছে তখনও—‘ভাবতেই পারা যায় না! বড়ো বড়ো যোগ-বিয়োগ ঠিক দিচ্ছে মিনিটের মধ্যে। ঠিক ঠিক দিচ্ছে তার ওপর।’
‘ঠিকে ভুল হয় না কখনো।’ অবিনাশ তার ওপরে যোগ দেয়।
‘বিজ্ঞানের কী বাহাদুরি! দেখে অবাক হতে হয়।’ অভিলাষ বলে।
‘এ আর কী দেখলি!’ অবিনাশ চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে বাতলায়—‘মেশিনে কথা কয় তা জানিস? মেশিনের সঙ্গে চালাকি না! চাট্টিখানি নয়। মেশিন কথা কইছে ভাবতে পারিস একথা?’
কেন ভাবতে পারবে না শুনি? সেকথা কি অভিলাষের অবিদিত? গ্রামোফোন, রেকর্ড, রেডিয়ো—এদের বোলচাল কি জানা নেই ওর? কী ওগুলো? মেশিনই তো? মেশিন ছাড়া কী আর?
আরে না না, তার কথা বলছে না অবিনাশ। এমন মেশিন যা মানুষের মতোই কথা কয়, কথার জবাব দেয়, ঠিক তার মতোই বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে থাকে। টেলিফোনের কল ধরে, খবরাখবর লেনদেন করে, ঘরবাড়ি পাহারা দেয়—সেই রোবোট-মানুষের কথাও সেবলছে না। এমন মেশিন যা মানুষের অন্তঃস্থল অবধি দেখতে পায়, ভূত, ভবিষ্যৎ, বর্তমান সব নখদর্পণে, আর সমস্ত ঠিক ঠিক বাতলায়।
অভিলাষ চোখ বড়ো করে তাকায়—‘আছে নাকি এমন মেশিন?’
‘আছে বলে আছে! মানুষের চোখে ধুলো দেয়া যায়, কিন্তু তাদের চোখে? অসম্ভব। তাদের সঙ্গে চালাকি চলে না। একবার তাদের একটার সঙ্গে টক্কর দিতে গিয়ে—না বাবা, কলদের আমি রীতিমতো সমীহ করে চলি।’
‘কীরকম, শুনি?’ শোনবার জন্যে হাঁ করে অভিলাষ। —‘সেই মেশিনের সঙ্গে কোথায় তোর মুলাকাত হল? হঠাৎ যে কলদের এত খাতির করতে গেলি? বল আমায় সমস্ত। বিলেতেই বুঝি?’
‘বিলেতে নয় রে, নিউ ইয়র্কে।’ অবিনাশ প্রকাশ করে।—‘জাহাজের চাকরি করি তখন। ইউরোপ, আমেরিকা, ফার ইস্টের—এ বন্দর থেকে সে-বন্দরে—মালের জোগানদারি কাজ আমাদের। এক-এক বন্দরে এসে আমাদের জাহাজ লাগে। মাল খালাস হয়, নতুন মালের আমদানি আসে—কিছুদিনের জন্যে নোঙর ফেলে খাড়া থাকে জাহাজ। জাহাজ বন্দরে ভিড়লে কাজের ভিড় থাকে না। হপ্তা দু-হপ্তার ছুটি মেলে তখন। সবাই মিলে ডাঙায় নেমে পড়ি আমরা। লাগাও শহরে গিয়ে ফুর্তি লাগাই। সময় থাকলে কাছাকাছি আরও দু-একটা শহর ঘুরে আসা যায়—সেই ফাঁকে দেখে আসা যায় নানান জায়গা। বুঝলি ভাই অভিলাষ, এত তো শহর দেখলাম, নিউ ইয়র্কের মতন ওরকম আর দেখিনি—অমনটি আর হয় না। কী বর্ণনা দেব তোকে নিউ ইয়র্কের—’
‘জানি জানি।’ কাহিনির গোড়াতেই অভিলাষ আর আগাতে দেয় না—‘আমারও দেখা সব—এই চোখেই। সিনেমার ছবিতে দেখেছি ঢের ঢের। আমেরিকার কোন শহরটা দেখিনি? কী দেখতে বাকি আছে? হলিউডের দৌলতে এমনকী পিকিং হংকং পর্যন্ত দেখলাম! গুড আর্থ? গুড আর্থ দেখেছিলিস? বিলকুল চায়না।’
না, নিউ ইয়র্কের কাহিনি শুনতে চায় না অভিলাষ। নগরবর্ণনার একটি বর্ণও সেশুনতে রাজি নয়। শুধু অভিলষিত খবরটিই সেজানতে চায়—‘তোর সেই আলাপী মেশিনটার কথা বল আগে।’
‘বলছি তো, তখন আমি নিউ ইয়র্কে গ্র্যাণ্ড সেন্ট্রাল ইস্টিশনে বসে। পাঁচটা পঁয়তাল্লিশের গাড়িতে বোসটনে যাব। বোম্বের আলাপী আমার এক বন্ধু সেখানে থাকেন, তাঁর বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছি। বসে আছি ইস্টিশনে, বসে বসে দেখছি মানুষের আনাগোনা। আমার একটু দূরে একটা মেশিন। আমাদের হগ সাহেবের বাজারে ওজন নেবার যে অটোমেটিক যন্ত্রটা আছে না?—সেই যাতে আনি ফেলে দিলেই ওজন বলে দেয়?—অনেকটা সেই ধরনের। হঠাৎ দেখি, একটা মোটাসোটা লোক হন্তদন্ত হয়ে ভিড়ের ভেতর থেকে বেরিয়ে এল—এসে সেই মেশিনটার কাছে গিয়ে দাঁড়াল। তার তলায় পাদপীঠের মতন যে একটুখানি জায়গা ছিল, খাড়া হল সেতার ওপর। মেশিনের গায়ে গর্তের মতো একটা ছিল, তার মধ্যে একটা সেন্ট ফেলে দিলে—’
‘একটা সেন্ট নয়, একটু সেন্ট।’ অভিলাষ শুধরে দিতে যায়। ‘ব্যাকরণ ভুল হচ্ছে তোমার। গন্ধদ্রব্য, তরলসার—এসব জিনিসের একটা হয় না, একটু হয়। যেমন ধরো, জল— জলকে ধর্তব্য করে, দৃষ্টান্ত দিয়ে, জলের মতোই সেসোজা করতে চায়—‘আমরা কি একটা জল বলি? বলি, একটু জল।’
কিন্তু তারপরেও তার একটা (কিংবা একটু) খটকা থাকে—‘কিন্তু ভাই, মেশিনের মধ্যে গন্ধ ঢালবার মানে কী? তার কি নাক-মুখ আছে?’
‘সে-সেন্ট নয় গো পন্ডিত, সে-সেন্ট নয়। মহাপুরুষদের আমরা যে সেন্ট বলি তাও না। এক ডলারে একশো সেন্ট হয়—জানিসনে? এ হচ্ছে সেই সেন্ট। আমাদের আনির মতন নিকেলের চাকতি। যাক, শোন তারপর। সেন্টটা চালান করে লোকটা পাদপীঠের সেন্টারে গিয়ে দাঁড়াল। কী আশ্চয্যি, পর মুহূর্তেই লাউড স্পিকারে যন্ত্রটার গলা খনখন করে উঠল—তোমার ওজন হচ্ছে একশো সত্তর পাউণ্ড। নাম—বেসটার চাওয়েলস। পাঁচটা কুড়ির গাড়িতে তুমি ব্রুস্টারে যাচ্ছ। চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম। ভালো কথা, ক্যাথারিন তোমাকে যে উল নিয়ে যেতে বলেছিল তা তোমার মনে আছে তো?’
‘ওই যা:! উল কিনতে তো ভুলে গেছি! বলেই লোকটা এক লাফে নেমে পড়ল মেশিনের থেকে। হন্তদন্ত হয়ে ছুটল আবার—স্টেশনের বাইরে।
‘আমি তো তাজ্জব বনে গেছি। ‘মানুষ আমরা নহি তো মেষ।’ মেশিনও নই। কিন্তু মেশিন যে মানুষকে হার মানাবে এমন কথা ভাবাও যায় না। ক্যাথারিনের ছেলের ক্যাঁথার জন্যে কি তার বাবার গলাবন্ধ বুনতে উলের দরকার, তার খবরদারি করবে বেপাড়ার এক মেশিন? জানা নেই, শোনা নেই—বিলকুল অচেনা, বেসটারের বেস্ট ফ্রেণ্ডের মধ্যেও নয়, চাওয়েলস-এর পারিবারিক চৌহদ্দিতে গতিবিধিও নেই যার—পয়সা দিলে বড়োজোর সেওজন জানাতে পারে, কিন্তু তাই বলে কি প্রয়োজনও জানাবে? আদার ব্যাপারীর কাছে জাহাজের খবর?
‘জাহাজের ব্যাপারী হলেও তাক লেগে গেল আমার। অবাক হয়ে ভাবছি, এমন সময়ে এক মেম, বেশ নাদুসনুদুস, এসে দাঁড়াল সেই মেশিনটার ওপর।
‘নিকেলটা ফেলতে না ফেলতে বিটকেল আওয়াজ বেরিয়েছে মেশিনটার—‘আপনার ওজন এখন দুশো চল্লিশ পাউণ্ড। গত মাসের থেকে চার পাউণ্ড কমেছে। এজন্য, মিসেস উইলমেট, আপনাকে আমার অভিনন্দন। আপনার গাড়ি ছাড়ো-ছাড়ো। সাত নম্বর গেট দিয়ে ছুটুন এক্ষুনি—যদি পাঁচটা তিরিশের গাড়ি ধরতে চান।
‘মেয়েটি তখনই নেমে পড়ল মেশিনের থেকে, ফিরে তাকে ধন্যবাদ জানাবারও ফুরসত পেল না। সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে ছুট লাগাল থপ থপ করে।
‘আমি আর বসে থাকতে পারলাম না। উঠে গেলাম মেশিনটার কাছে। কাছে গিয়ে ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম। গ্লাস কেসের ভেতর দিয়ে বেশ নজর যায়। অনেক ঘোরপ্যাঁচ আছে তার ভেতরে, চাকা আর জড়ানো তার। ইলেকট্রিক মোটর, কয়েল্ড কয়েল, রেডিয়ো পার্টস, ফোটো সেলস—দেখলাম খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। সব নিয়ে এক ঘোরালো ব্যাপার।……’
‘তোমার কাছে কোনো সেন্ট ছিল না?’ অভিলাষ জিজ্ঞেস করে।
‘কেন থাকবে না? এমন কিছু আমি ডেভিল নই। সেন্টরা আমার কাছে হরদম আসে-যায়। একটা সেন্ট খসিয়ে ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের এই বাচ্চাটাকে পরখ করার আমার শখ হল। তার ঘাড়ে একবার চেপে দেখার আশটা আমিও মিটিয়ে নিলাম—
‘দাঁড়াতে না দাঁড়াতে আওড়াতে শুরু করেছে মেশিনটা—
‘তোমার ওজন হচ্ছে একশো ত্রিশ পাউণ্ড—তার মধ্যে আট পাউণ্ড তোমার ওভারকোটটার ওজন। আর একটু মোটা হওয়ার দরকার তোমার। ভোজন বাড়াও বাপু, ওজন বাড়বে তা হলেই। তুমি একজন বাঙালি। বিক্রমপুরের বাঙাল। তোমার নাম ওবিনাশ ট্রাফডার।’
‘আমি বাধা দিয়ে বললাম, উঁহুঁ, ভুল হচ্ছে, ঠিক ঠিক হল না। ট্রাফডার নয়, তরফদার। বলব কী ভাই, মেশিনটা আমার কথার জবাব দিল চটপট—বললে, ‘‘ও একই কথা। ট্রাফডারও যা টারাফডারও তাই’’।’
অভিলাষ বলে—‘তোমারও যেমন। ওদের সঙ্গে তক্কাতক্কি করতে গেছ! সাহেবরা কি ত-উচ্চারণ করতে পারে? উচ্চারণ শুদ্ধ হতে এখনও ঢের দেরি ওদের।’
‘যা বলেছিস। আমিও মেশিন সাহেবকে বেশি আর ঘাঁটাইনি। তকার নিয়ে বাজে তকরার করে কী হবে? মেশিনটা থামেনি তখনও,—বলেই চলেছে একটানা,—‘‘তা বাপু, ঠিক ঠিক ট্রাফডার না হলেও তুমি একজন ওস্তাদ লোক। ফাঁকি দিতে ওস্তাদ। সেন্ট বলে আমার কাছে একটা পাকিস্তানি আনি চালিয়েছ, ভাবছ তা কি আমি টের পাইনি? কিন্তু সেকথা যাক, বোস্টনে যাবার পাঁচটা পঁয়তাল্লিশের গাড়ি যদি ধরতে চাও তা হলে আর দেরি কোরো না। তেরো মিনিট মাত্র বাকি আছে তোমার ট্রেনের। চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম।
তেরো মিনিট, সেঢের সময়। টিকিট কাটা ছিল আমার। আমি বললাম—‘দাঁড়াও। তোমায় দেখাচ্ছি। মজা টের পাবে। মেশিনটাকেই বললাম, কিন্তু নিজের মনে মনে। তোমাকে যদি-না বেকুব বানাতে পারি তো আমি বাংলাদেশের ছেলে নই। তক্ষুনি চলে গেলুম এক সেলুনে—সেখানে গিয়ে আমার গোঁফ জোড়া কামিয়ে ফেললাম। তারপর পোশাক বদলালাম আমার। একটা পরচুলা আঁটলাম মাথায়। হাতে নিলাম একটা বেলুন। এইভাবে ভেক বদলে ফের ঢুকলাম স্টেশনে। এবারটি বাছাধন? চিনতে পারবে আমায় আর? গোঁফ বাদ দিয়ে এই পোশাকে আর এমন পরচুলায়? অন্য পর কী, আমাকে দেখে আমার বাবাও চিনতে পারবেন না। হুঁহুঁ!’
‘ছদ্মবেশ ধরে আপন মনে হাসতে হাসতে গিয়ে দাঁড়িয়েছি মেশিনটার ওপর। নিকেলটা দিয়েছি ওর ফোকরে। দাঁড়িয়ে আছি চুপ করে। ওটাও চুপচাপ। উচ্চবাচ্যই নেই ওর কোনো!
‘হ্যাঁ, হয়ে গেছে বাছাধনের। যেমনি-না একটু ভোল ফিরিয়ে আসা আর সমস্ত গোল! আর ওর মুখে কোনো বোল নেই। টু-শব্দটিও না। চাকাওয়ালা ঘোরালো তারের বৈদ্যুতিক ব্রেনের সাধ্যি হল না যে আমার ছদ্মবেশ ধরতে পারে। আমার সঙ্গে চালাকি?
জয়গর্বে মশগুল হচ্ছি মনে মনে, ও মা, এমন সময়ে ঘ্যানঘ্যান করে উঠেছে মেশিনটা—
‘তোমার ওজন এক মন বাইশ পাউণ্ড। ওভার কোটটা ছেড়ে এসেছ বলে আট পাউণ্ড কম আগের থেকে। গোঁফটা ফেলে আসার জন্য এমন কিছু ইতরবিশেষ হয়নি। যে ছিটেফোঁটা কমেছিল তোমার হাতের বেলুনে সেটা পুষিয়ে গেছে। তুমি একজন বাঙালি; তোমার নাম হচ্ছে ওবিনাশ ট্রাফডার। ট্রাফডার কি টারাফডার যা তোমার অভিরুচি—যেটা বললে তুমি খুশি হও। ফাঁকি দিতে ওস্তাদ বলেছিলুম তোমায়, তাই না? কিন্তু বোকামি করে ফের আমায় ফাঁকি দিতে এসে পাঁচটা পঁয়তাল্লিশের গাড়ি তুমি হারিয়েছ। সেইসঙ্গে দুঃখের সঙ্গে জানাতে বাধ্য হচ্ছি, সেলুনে তোমার যে ওভারকোট ছেড়ে এসেছ সেখানাও তুমি হারালে। এইমাত্র সেখানকার আর এক খদ্দের সেটা নিজের গায়ে চড়িয়ে সটকান দিচ্ছেন। সেই ওভারকোটের পকেটে আছে তিনশো পঞ্চাশ ডলার নগদ, তোমার ট্রাভলারস চেক-বই, পার্কার ফিফটিওয়ান, আর তোমার পাসপোর্ট এবং অন্যান্য কাগজপত্র…’
‘কিন্তু তার ফিরিস্তি শোনার জন্য আমি আর দাঁড়াইনি। ছুট মারি সেলুনের দিকে। পরচুলা পড়ে খসে। কিছু না হক হয়রানি কেবল!’
‘পেলে না তোমার কোট?’ অভিলাষ জিজ্ঞেস করে।
‘ট্রেনও হারালাম—আর আমার ওভারকোটও।’ পুরোনো স্মৃতি উথলে উঠে দীর্ঘনিশ্বাস পড়ে অবিনাশের।—‘তারপর থেকে মেশিনকে আমি ডরাই। মানুষের কাছে যদি-বা কোনো চাল মারি কখনো—মেশিনের কাছে একদম কোনো বেচাল নয়!’