দ্বাবিংশ অধ্যায় – ঘাঘরার যুদ্ধ
২ ফেব্রুয়ারি, ১৫২৯ ঈসায়ী সনে আমাকে ঘাঘরার রণক্ষেত্রে আমার মোগল সেনাকে আফগানদের বিরুদ্ধে নামতে হলো।
পানিপথের যুদ্ধে প্রকৃতপক্ষে আমি আফগানদের দিল্লি পাঞ্জাব ও আশপাশের প্রদেশগুলো থেকে দূর করে দিই, তবে তারা পূর্ব প্রান্তের প্রদেশগুলোতে অন্তিম প্রয়াস রূপে সংগঠিত হতে শুরু করেছিল। [১]
[১. পানিপথের যুদ্ধ (১৫২৬, ২১ ফেব্রুয়ারি)-র এর ইব্রাহীম লোদির মা-কে পরগনা দিয়ে আগ্রা কেল্লায় থাকার অধিকার দেওয়ার পর ১৫২৭ ১৫২৮, ১৫২৯-র বাবুরনামাকে সংক্ষিপ্ত করে প্রধান প্রধান ঘটনার উপর আলোকপাত করা হয়েছে। এ সব ঘটনা ইতিহাস প্রসিদ্ধ, অতএব, এগুলোকে সময়ানুগ করাটা আবশ্যক বলে গণ্য করা হলো।—অনুবাদক ]
মাহমুদ লোদি আফগানদের সংগঠিত করে বিহারকে তার নিজের অধিকারে নিয়ে এসেছিলেন। তারপর, তারা সংগঠিত সেনা নিয়ে দোয়াবের দিকে এগুতে শুরু করেছিল।
দোয়াবের দিকে আফগান সেনাদের অগ্রসর হতে দেখে আমার সৈনিকদের মধ্যে হইচই শুরু হয়ে গেল। তখন আমি ঘাঘরার প্রান্তরে গিয়ে অবস্থান নিলাম।
এই যুদ্ধে আফগানদের সহজে হারিয়ে দেওয়া হলো এবং তাদের বিহারের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হলো।
আমি ওই স্থানে, যুদ্ধের জয়লাভের পর বেশি সময় পর্যন্ত থাকতে পারলাম না, কারণ বর্ষা ঋতু এসে যাওয়াতে ওই এলাকায় সেনার পক্ষে শিবির ফেলে অবস্থান করা অসম্ভব কাজ ছিল।
কিছুদিন বাদেই আফগানরা পুনরায় একত্রিত হয়ে চুনার কেল্লা অবরোধ করল তো আমাকে একটি বড় সেনাদল নিয়ে ওই দিকে প্রস্থান করতে হলো।
মোগল সেনার আগমন বার্তা পেয়েই আফগান সরদাররা পলায়নপর হলো। কিন্তু এ কথা জানার পর যে তারা বারবার পেরেশন করতে পারে, আমি তাদের সম্পূর্ণরূপে দমন করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি তাদের পিছু ধাওয়া করে বাংলার দিকে অগ্রসর হলাম।
৬ মে, ১৫২৯ ঈসায়ীতে বাংলার শাসক নুসরত খাঁ এ বিষয়ে স্বাক্ষর করলেন যে, তিনি বিদ্রোহীদের আশ্রয় দেবেন না, বিদ্রোহী বলতে এখানে আফগানদের বোঝানো হয়েছে।
এই সন্ধি তথা নুসরত শাহের পরাজয়ের পর আফগানদের সাহস চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গিয়েছিল।