ঢেউ ওঠে পড়ে কাঁদার সম্মুখে ঘন আঁধার

“ঢেউ ওঠে পড়ে কাঁদার সম্মুখে ঘন আঁধার

খাচ্ছে, দাচ্ছে, বেড়িয়ে বেড়াচ্ছে, কখনও হতাশ হয়, কখনও-বা খুশি, বউ বাপের বাড়ি গেল তো মুখে ব্যাজার ভাব, এমন সময়ে চ্যারিটি ম্যাচের একখানা টিকিট ফোকটে পাওয়াতে সে বেদনা না-পাত্তা ঘুচে গেল– এই নিয়ে আমরা পাঁচজন আছি। সৃষ্টিকর্তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, এই আমরাই পৃথিবীতে ম্যাজরিটি। আমাদের বেদনা সামান্য, সেটা ঘুচতেও বেশিক্ষণ লাগে না।

অথচ মুনিঋষি পীর-প্যাকম্বর বলেন, তোমরা অমৃতের সন্তান, অমৃতের সন্ধান কর। একফোঁটা একটি মেয়েও নাকি বিস্তর ধনদৌলত পাবার পর বলেছিল, যা দিয়ে আমি অমৃত হব না, তাতে আমার কী প্রয়োজন!

চাকরি বজায় রাখার জন্য আমাকে সমস্ত জীবন ধরে দুনিয়ার তাবৎ ধর্মের, (বেশি না, আল্লার দয়ায় মাত্র সাতটি) বিস্তর বই পড়তে হয়েছে। কিন্তু আমি এখনও বুঝে উঠতে পারিনি, এই আমরা সাধারণ পাঁচজন তো অমৃত না পেয়েও দিব্যি বেঁচে আছি, ওর পিছনে ছুটোছুটি করার আমাদের কী প্রয়োজন। আর বাঙলা কথা বলতে কি, আমার নিতান্ত ব্যক্তিগত মত, তখন ওই অমৃতটা আমাদের ঘাড়ে চাপানোই অন্যায়। অন্তত একটি মহাপুরুষ– আমাদের মতে– এ খাতায় একটি মুক্তো জমা রেখে গেছেন; তিনি বলেছেন, শুয়োরের সামনে মুক্তো ছড়িয়ো না। তাই সই। গালাগালটা বরদাস্ত করে নিলুম। আর, মহাপুরুষ একথাটা বলার সময় ক্ষণেকের তরে আমার দিকে একবার তাকিয়ে ছিলেন তো? তাতেই হয়ে যাবে। মোক্ষ নামক অমৃত বলে কোনও পদার্থ যদি থাকে তবে ওই একটি চাউনিতেই সকলং হস্ততলং। অবশ্য সে অমৃতের জন্য কোনও অসম্ভব ভবিষ্যতে যদি আমার প্রাণ আদৌ কাঁদে!

রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, অরবিন্দ এরা দেখতে মানুষের মতো বটে, কিন্তু আসলে এঁরা মানুষ নন। নইলে বলুন দেখি, তুমি কবি, দু পয়সা তোমার আছে, পদ্মায় বোটে ভাসতে তুমি ভালোবাসো, কী দরকার তোমার স্কুল করার আর তার খাই মেটাবার জন্যে বৃদ্ধ বয়সে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে দিল্লি, বোম্বাই চষার? কিংবা বিবেকানন্দ। অসাধারণ জিনিয়াস। পঁচিশ হতে না হতেই প্রাচীন অর্বাচীন দিশি-বিদেশি সর্বশাস্ত্র নখদর্পণে! কী দরকার ছিল সেই সুদূর আমেরিকায় গিয়ে শেকস্‌পিয়ারের ভাষায়– টু টেক্ আর্মস্ এগেন্স এ সি অব ট্রাবলস?(১) কী দরকার ছিল অরবিন্দের নির্জনে ধ্যানে ধ্যানান্তরে উধ্ব হতে ঊর্ধ্বতর লোকে ব্রহ্মের কাছ থেকে অমৃতবারি আহরণ করে নিম্নে, তারও নিম্নে এসে এই ভস্মীভূত ভারতসন্তানকে পুনর্জীবিত করার?

এঁদের কথা বাদ দিলুম। এরা আমাদের মতন নন।

কিন্তু– এখানেই একটা বিরাট কিন্তু।

এই যে আমরা রামাশ্যামা, আমাদের ভিতর বিবেক-রবি নেই, কিন্তু তাই বলে আমাদের সক্কলেরই কি ওঁদের চেয়ে স্পর্শকাতরতা কম? ওঁদের মতো কীর্তি আমরা রেখে যাই না, তাই বলে বেদনাবোধ কি আমাদের সক্কলেরই ওঁদের চেয়ে কম? বরঞ্চ বলব, বিধি-প্রসাদাৎ, কিংবা আপন সাধনবলে তারা চিত্তজয় করতে সক্ষম হয়েছিলেন বলে বেদনাবোধ তাদের ভেঙে ফেলতে পারেনি। কিন্তু আমাদের কেউ কেউ যে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। যেন জীবন্ত অবস্থায়ই হঠাৎ তাদের জীবন-প্রদীপ নিভে যায় আর চোখের সামনে সে যেন শূন্যে বিলীন হয়ে যায়। যেন বিরাট নবাববাড়ি আধঘণ্টার ভিতর চোখের সামনে জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে গেল। আমরা যে কটি অকর্মণ্য গাছ তার চতুর্দিকে ছিলুম– যাবার সময় আমাদের ঝলসে দিয়ে গেল।

হয়তো ঠিক অতখানি না। আমার এক অতি দূরসম্পর্কের ভাগ্নে ছিল। ডিগডিগে লম্বা পাতলা, কাঁচা সোনার বর্ণ, ভারি লাজুক। বিধবা মায়ের এক ছেলে। তাঁর মানা না শুনে পড়াশুনো করতে এসেছে শহরে। সে গাঁয়ের আর কোনও ছেলে কখনও বাইরে যায়নি। এর বোধহয় উচ্চ আকাঙ্ক্ষা ছিল। ছেলেটি কিন্তু তোতলা। হয়তো সেই কারণেই বেশি লাজুক।

এক মাসও যায়নি। ইন্সপেক্টর এসেছেন স্কুল দেখতে। তাকে শুধিয়েছেন একটা প্রশ্ন। উত্তরটা সে খুব ভালো করেই জানে। কিন্তু একে তো তোতলা, তার ওপর উত্তর জানে বলেই হয়ে গেছে বেজায় নার্ভাস্। তোৎ তোৎ করে আরম্ভ করতে না করতেই ইন্সপেক্টর তার দিকে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টি ফেলে চলে গেলেন এগিয়ে।

ব্যাপারটা হয়েছিল বেলা তিনটেয়।

রাত সাতটায় পাওয়া গেল তার লাশ! গাছ থেকে ঝুলছে।

ভাবুন তো, স্কুল থেকে ফিরে যাবার পথে, তার মায়ের স্নেহের আঁচল থেকে দূরে, সেই আপন নির্জন কক্ষে ঘণ্টা তিনেক তার মনের ভিতর কী ঝড় বয়ে গিয়েছিল? অপমানের কালনাগিনীর বিষ যখন তার মস্তিষ্কের স্নায়ুর পর স্নায়ু জর্জর করে করে শেষ স্নায়ু কালো বিষেই রূপান্তরিত করেছে তখনই তো সে দড়িগাছা হাতে তুলে নেয়। সে তখন সহ্য-অসহ্যের সীমার বাইরে চলে গিয়েছে। আচ্ছা, সে কি তখন তার বিধবা মায়ের কথা একবারও ভাবেনি? কিন্তু দয়াময়, আমাকে মাফ কর, আমি বিচারকের আসনে বসবার কে?

অতি গরিব মধ্যবিত্ত ঘরের মৌলিক কায়েত, আমার প্রতিবেশী হাতে যেন স্বর্গ পেল যখন তার সাদামাটা মেয়েকে বিয়ে করল এক মহাবংশের ঘোষ– বিনা পণে। ছেলেটি গরিব এই যা দোষ কিন্তু ভারি বিনয়ী আর বড়ই কর্মঠ। প্রেসের কাজ জানে। আমরা হিন্দু-মুসলমান। সবাই শতহস্ত তুলে তাকে আশীর্বাদ করেছিলুম।

বিয়ের কিছুদিন পরে কী জানি কী করে ধরে নিয়ে এল এক পার্টনার। খুলল ছোট্ট একখানা প্রেস। হ্যান্ডবিল বিয়ে-শ্রাদ্ধের চিঠি ছাপায়, কখনও-বা মুন্সেফি আদালতের ফর্ম ছাপাবারও অর্ডার পায়। জল নেই, ঝড় নেই, দুই দুপুরই বরাবর, সর্বত্রই তাকে দেখা যায় প্রফের বোন্দা বগলে। হেসে বলে, এই হয়ে এল। অর্থাৎ শিগগিরই ব্যবসাটা পাকা ভিতে দড় হয়ে দাঁড়াবে। একটু যাকে দরদি ভাবত তাকে বলত, মাকে নিয়ে আসছি। গরিব মা গায়ে থাকে। হয়তো-বা গতর খাঁটিয়ে দু মুঠো অন্ন জোটায়।

দশ বছর পরে দেশে ফিরেছি। বাড়ি পৌঁছবার পূর্বেই রাস্তায় সেই ছোকরা– না, এখন, বুড়োই বলতে হবে, অকালে দেখি উল্টো দিক থেকে আসছে, পরনে মাত্র শতচ্ছিন্ন গামছা। বগলে ঘেঁড়া খবরের কাগজের বোন্দা। ছন্নের মতো চেহারা। আমার কাছ থেকে সিগারেট চাইল। আমি তো হতভম্ব। তার স্ত্রী আমার ছোট-বোনের ক্লাসফ্রেন্ড। আমি তার মুরুব্বি। সিগারেট দিলুম। সেটা ধরিয়ে আমার দেশলাইটা ফেলে দিল নর্দমায়। একগাল হেসে বলল, মাকে নিয়ে আসছি। মনটা বিকল হয়ে গেল। দশ বছর পর আমার শহর এই দিয়ে আমায় ঘরে তুলছে?

বোন বলল, প্রেস যখন রীতিমতো পয়সা কামাতে আরম্ভ করেছে তখন তার পার্টনার তাকে দিল ফাঁকি। একটা আদালত পর্যন্ত লড়েছিল। তার পর পয়সা কোথায়? পাগল হয়ে গেছে।

তবু এখনও তার মাকে শহরে এনে পাকা বাড়িতে তুলছে। মা কবে ভূত হয়ে গিয়েছে। গাঁয়ের আর পাঁচটা বিধবা যে-রকম দুঃখ-দুশ্চিন্তায় মরে।

আর মাধবী? আমার বোন শ্বশুরবাড়ি থেকে এলে সে তাকে দেখতে আসে। আমি তখন মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে বৈঠকখানায় আশ্রয় নিই।

আর যে আত্মহত্যা করল না, পাগলও হল না, তার অবস্থা যে আরও খারাপ।

সরকার আমাকে অনর্থক একটা টেলিফোন দিয়েছিল। তবে সেটা কাজে লাগত তেতলার একটি মেয়ের। আমরা যৌবনে যে সুযোগ পেলুম না তা যদি ওই মেয়েটি পেয়ে থাকে তবে, আহা, ভোগ করুক না সে আনন্দ– তার ইয়ংম্যান প্রায়ই তাকে ফোন করে।

তার পর হঠাৎ মাসাধিক কাল কোনও ফোন নেই। ভাবলুম, আমি যখন আপিসে তখন বোধহয় ফোন করে। তার পর একদিন বাথরুমের দরজায় দমাদ্দম ধাক্কা আর আমার চাকরের ভীত কণ্ঠস্বর। তাড়াতাড়ি খুলে দেখি, তেতলার মেয়েটি মেঝেতে পড়ে ভিরমি গেছে– পাশে টেলিফোনের রিসিভার।

সন্ধ্যাবেলা আমার লোকটা বলল, ভিরমি কাটাতে বেশিক্ষণ লাগেনি, তবে কিছু খেলেই সঙ্গে সঙ্গে বমি হয়ে যাচ্ছে।

আমার ঘরে এসে টেলিফোন করত বলে আমি ইচ্ছে করেই কোনও কৌতূহল দেখাইনি। কিন্তু তৎসত্ত্বেও খবরটা কানে এসে পৌঁছল। এসব ব্যাপার পাড়াতে জানাজানি হয়ে যায়। মেয়েটির পরিবারের ডাক্তারও আমার ভালো করে চেনা। ইংরেজিতে বললেন, He walked out on her to another girl!

কেমন যেন চোখের সামনে দেখতে পেলুম, ওই ভিরমি-যাওয়া মেয়েটার উপর পা দিয়ে যেন সেই ছেলেটা পার হয়ে আরেকটা মেয়ের হাত ধরে চলে গেল। Walk on তো তাই মানে হয় না?

আজ আর মনে নেই- কতদিন ধরে মেয়েটা কিছু খেলেই বমি করত।

দু বছর তাকে দেখিনি। তার পর একদিন সিঁড়িতে দেখা। আগেকার মতোই সেই সাজগোজ করেছে। মনে হল চীনে ফানুস দেখছি, কিন্তু প্রদীপটি নিভে গেছে।

ওই বেদনাই তো সবচেয়ে বড় বেদনা।

মা যখন বাচ্চাকে মারে তখন সে বার বার ওই মায়ের কোলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে আশ্রয়ের জন্য যেখান থেকে আঘাত আসছে সেখানেই। আশ্চর্য, কিন্তু আশ্চর্য হবার কীই-বা আছে, কারণ মারুক আর যাই করুক, অজানার মাঝেও অবুঝ জানে সে তার মা-ই। কিন্তু যখন দয়িত walk out on her, তখন বেচারি আশ্রয় খুঁজবে কোথায়? সে দয়িত তো এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন লোক, সম্পূর্ণ ভিন্ন সত্তা। এতদিন ধরে তার সামান্যতম বেদনা যখনই কোনও জায়গা থেকে এসেছে–বাপ মা সমাজ যেখান থেকেই হোক– তখনই ছুটে গিয়ে বলেছে তার দয়িতকে। ওই বলা-টুকুতেই পেয়েছে গভীর সান্ত্বনা। আর আজ? আজ তার সেই শেষ নির্ভর গেল। বরঞ্চ পাষাণ-প্রাচীরের উপর বল ছুড়লেও সেটা ফিরে আসে। কথা বললেও প্রতিধ্বনি আসে। কিন্তু এখন শূন্যে, মহাশূন্যে সব বিলীন।… (অবশ্য মডার্নরা বলবেন, ওসব রোমান্টিক প্রেম আজ আর নেই। আজ এক মাস যেতে না যেতেই সবাই অন্য লাভার পেয়ে যায়। তাই হোক, আমি তাই কামনা করি। আমার সর্বান্তঃকরণের আশীর্বাদ তাদের ওপর।)।

ধর্মের সমুখে উপস্থিত হলুম এই তিনটি মাত্র দৃষ্টান্ত নিয়ে। কেউ বলেন, এসব মায়া। তুমিও নেই, আমিও নেই, এই পৃথিবীও নেই, তথাপি কেন শোকাতুর হও। কেউ বলেন, লীলা। ঈশ্বরে সর্বস্ব সমর্পণ কর। সান্ত্বনা পাবে। কেউ বলেন, মনই সর্ব দুঃখের উৎপত্তিস্থল। সেই চিত্তের বৃত্তি নিরোধ কর। তাতেই শান্তি। আরও অনেক মত আছে।

আমি নতমস্তকে সব কটাই মেনে নিচ্ছি। মা-ঠাকুরমারা এসবে বিশ্বাস করতেন, কিংবা আরও ভালো হয় যদি বলি, ধর্ম তখন সজীব ছিল, সে তখন সে-বিশ্বাস জাগাতে পারত তাই তারা শান্তি পেয়েছেন।

কিন্তু ধর্ম কেন আমার সেই ভাগ্নেকে চিত্তবল দিল না আত্মহত্যা না করার জন্য, প্রেসের পাগলকে রুখল না সেই দারুণ দুর্দৈব থেকে, প্রতিবেশীর মেয়েকে দিল না শক্তি সইবার ফের স্বাভাবিক সুস্থ সবল হওয়ার? শুধু তাদেরই দোষ? ধর্মের আত্মশক্তি কমে যায়নি কি? কিংবা দোষ উভয়ের?

কম্যুনিজম তাই বুঝি। সে বলে রাষ্ট্রই সব। তোমার ব্যক্তিগত শোক কিছুই না। তুমি বেশি গম ফলাও, বেশি কামান বানাও রাষ্ট্ররক্ষার জন্য। সব ভুলে যাবে। কম্যুনিস্টরা এ ধর্মে বিশ্বাস করেন কি না তা জানিনে কিন্তু এ কথা জানি, রাষ্ট্র এ বিশ্বাস তাদের হৃদয়-মনে দৃঢ় করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। অন্য ধর্মেরা করে?

***

আমরা কয়েকজন মিলে চা খাচ্ছিলুম। নানারকম দুঃখ-সুখের কথা হচ্ছিল। আমাদের মধ্যে একজন অল্পবয়সী বড়ই স্পর্শকাতর ডাক্তার। হঠাৎ বলল, জানেন, আলী সাহেব, আমাদের হাসপাতালে একটি চার বছরের ছেলে বড় ভুগে খানিকটা সেরে বাড়ি গিয়েছিল, আজ আবার ফিরে এসেছে। ও সারবে না। আমি যখন ইনজেকশন তৈরি করছিলুম তখন আমার গা ঘেঁষে যেন করুণা জাগাবার জন্য বলল, দাত্তার, দিয়ো না, বন্দো লাগে।

হে ধর্মরাজগণ, এ শিশুকে কী দিয়ে কে বোঝাবে?

দুপুররাতে যখন তার ঘুম ভেঙে যায়, ইনজেকশনের ভয়ে শিউরে উঠে চেয়ে দেখে, এই বিশাল পুরীতে কেউ নেই, তার কেউ নেই- তখন?

হয়তো-বা বিজ্ঞান পারবে। বিজ্ঞান একদিন তাকে সারিয়ে দেবে। না পারলেও হয়তো তাকে কোনও প্রদোষ-ন্দ্রিায় (আমি এসব জিনিস জানি না, তবে twilight sleep না কী যেন একটা আছে এবং আশা, সেটা আরও উন্নতি করবে) ঘুম পাড়িয়ে দেবে। হাসপাতালে গিয়ে দেখব, সে ঘুমিয়ে আছে, পুতুলটি বুকে চেপে ঘুমিয়ে আছে, নন্দনকাননের অপ্সরীদের আদর পেয়ে তার মুখে মিঠে হাসি।

জয় বিজ্ঞানের!

 কিন্তু বিজ্ঞানের কাছে তো জীবনের কোনও comprehensive philosophy নেই, যা ভাগ্নেকে রাখবে, প্রতিবেশীর মেয়েকে নর্মাল করে তুলবে।

হে ধর্মরাজগণ, বিজ্ঞানের সঙ্গে একটা ব্যবস্থা করে, তাকে আশীর্বাদ দিয়ে এবং আপন আত্মশক্তি দৃঢ়তর করে আমাদের বাঁচাও।

আমি জানি, আমার জীবনে সে দিন আমি দেখে যেতে পারব না।

এই নির্জন প্রান্তরে এ জীবনের শেষদিন পর্যন্ত থেকে থেকে নিশির ডাকের মতো শুনতে পাব, দাত্তার, দিয়ো না, বন্দো লাগে, দেখতে পাব সেই প্রদীপহীন চীনা ফানুস ॥

———–

১. ইদানীং রবীন্দ্রনাথ ও বিবেকানন্দ নিয়ে তুলনাত্মক আলোচনা হচ্ছে। অন্য কেউ দেখিয়ে না দিয়ে থাকলে আমি একটি মিল দেখাই। দুজনেই প্রথমেই আমেরিকা গিয়েছিলেন ভারত-সেবার জন্য অর্থ আনতে। দুজনাই নিরাশ হয়েছিলেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *