[সোর্স না জানা অজানা গল্প]

৫১. এডমান্টন বিমানবন্দরে

এডমান্টন বিমানবন্দরে চেনা কারুকে পাব এমন আশা করিনি। দীপকদা নেই, জয়তীদি তো মেয়েদের বাড়িতে ফেলে রেখে এতদূরে আসতে পারেন না। যাওয়ার ব্যবস্থা আমাকেই করতে হবে। ট্যাক্সি নেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এখান থেকে দীপকদার বাড়ি অনেক দূর, প্রকৃতপক্ষে ওঁরা থাকেন অন্য একটি শহরে। এখান থেকে দীপকদাদের বাড়ির যা ট্যাক্সি ভাড়া হবে, সে টাকায় কলকাতা থেকে দার্জিলিং-এর প্রথম শ্রেণির ট্রেন ভাড়া হয়ে যায়। সে টাকা আমার নেই-ও, প্রথমেই বেয়ারিং হয়ে জয়তীদির কাছে উপস্থিত হওয়ার কোনও মানে হয় না। আমার কাছে যা খুচরো পয়সা আছে, তাতে কোনওক্রমে বাসভাড়া কুলিয়ে যাবে। একটা সুবিধে এই, এই বিদেশ বিভুঁই-এ দু-একবার বোকা বনে গেলেও কেউ তো তার সাক্ষী থাকছে না।

ইমিগ্রেশান কাউন্টারে প্রথমেই খানিকটা নাকানিচোবানি খাওয়াল আমাকে। মধ্যবয়স্ক সাহেবটি যেন আমাকে নিয়ে ইঁদুর-বেড়াল খেলতে চায়। মুখে মিটিমিটি হাসি আর নানান প্রশ্ন : তুমি তো কয়েক মাস আগেই একবার এডমন্টনে এসেছিলে দেখছি! আবার কেন এলে? এখানে এমনকী দ্রষ্টব্য বস্তু আছে? কার বাড়িতে উঠবে? সে তোমার কে হয়? সে কি তোমায় রিসিভ করতে এয়ারপোর্টে এসেছে? তুমি দেশেকী চাকরি করো? ইত্যাদি-ইত্যাদি!

টোরোন্টোয় পাঞ্জাবি শরণার্থীদের নিয়ে নানান গোলমালের কথা কাগজে পড়েছি। ভারতীয় আগন্তুকদের কানাডার সরকার এখন বেশ সন্দেহের চোখে দেখছে। এর মধ্যে ভারতীয়দের জন্য ভিসা ব্যবস্থা চালু হয়েছে। আমার কাছে যদিও মাল্টিপল এনট্রি ভিসা আছে তবু আমার বুক ঢিপঢিপ করছে। যদি রিটার্ন টিকিট দেখতে চায়? সাময়িক ভ্রমণকারীদের কাছে রিটার্ন টিকিট না থাকলে যে এরা ঢুকতেই দেয় না, সেটা তো আমার আগে মনে পড়েনি।

সাহেবটি যে আমায় আটকাতে চায়, তার ভাবভঙ্গি দেখে তা ঠিক মনে হয় না। যেন আমায় নিয়ে খানিকটা মশকরা করাই তার উদ্দেশ্য। সে আমায় জিগ্যেস করল, আমি আগে কখনও তুষারপাত দেখেছি কি না! আরও সব অবান্তর প্রশ্ন। শেষ পর্যন্ত আমি দেওয়ালে-পিঠ-দেওয়া বেড়ালের মতন ফাঁস করে বললুম, যেতে দেবেন কি না বলুন, না হলে আমি এক্ষুনি ফিরে যাচ্ছি। নেহাৎ আমার এক আত্মীয় এখানে ক্রিসমাসের নেমন্তন্ন করেছেন তাই এসেছি।

সাহেবটি এবারে ভুরু তুলে বলল, ও, ক্রিসমাস? ঠিক আছে যাও, আরও দিন পনেরো থেকে যাও, মেরি ক্রিসমাস!

সে আমার পাসপোর্টে ছাপ মেরে দিল, টিকিট দেখতে চাইল না। ততক্ষণে আমার গেঞ্জি ঘামে ভিজে গেছে।

বাইরে বেরিয়েই দেখি একটি পরিচিত মুখ। ভট্টাচার্য সাহেব! আদি ও অকৃত্রিম বাংলা-হাসি দিয়ে তিনি জিগ্যেস করলেন, কী ব্যাপার, এত দেরি হল কেন?

–বিমলবাবু আপনি?

কী করব, দীপক সরস্বতী নেই এখানে, জয়তী বলল… আমারও এদিকে একটা কাজ ছিল…।–আপনি কষ্ট করে এতক্ষণ দাঁড়িয়ে আছেন, আমার জন্য!

–আরে মশাই, থামুন তো! খুব ভালো সময় এসেছেন, চমৎকার শীত পড়েছে, জমিয়ে আড্ডা দেওয়া যাবে!

আমি আগেরবার এসেছিলুম বেশ গরমকালে। তখনও বিমলবাবু বলেছিলেন, খুব ভালো সময়ে এসেছেন। অর্থাৎ জীবনের সব অবস্থা থেকেই বিমলবাবু আনন্দ খুঁজে নিতে জানেন। গল্প করতে-করতে পৌঁছে গেলুম বাড়ি।

জয়তীদি জিগ্যেস করলেন, ফ্লাইট লেট ছিল? তোমার দেরি দেখে আমি ভাবছিলুম, টিকিটটা ঠিক পেলে কি না!

–আপনি হঠাৎ টিকিটটা পাঠালেন কেন, জয়তীদি?

–তুমি শুধু-শুধু ওখানে বসে থেকে কী করতে? টিকিট হারিয়েছে। টাকা পয়সাও সব হারিয়েছে নিশ্চয়ই?

মেয়েদের কিছু একটা ইন্সটিংক্ট থাকে, যাতে তারা ঠিক বুঝতে পারে। আমি হেসে বললুম, টাকাপয়সা আর বিশেষ কিছু ছিলও না। এবারে বাড়ি ফিরে যাব ভাবছিলুম, এর মধ্যে টিকিটটা হারিয়ে গেল।

জয়তীদি বললেন, বেশ হয়েছে! আমাদের বাড়িতে থাকো, রান্না করবে, বাসন মাজবে, বাচ্চাদের দেখাশুনো করবে, তার বদলে কিছু মাইনে পাবে।

–আমায় যে মাত্র পনেরো দিনের ভিসা দিয়েছে এবারে?

–তবে তো আরও ভালো। ভিসা ফুরিয়ে যাওয়ার পর যদি ধরা পড়ো, তাহলে জেল খাটবে। তারপর একদিন এদের খরচেই হয়তো দেশে ফিরে যাবে! কানাডার জেলখানা খুব ভালো, দেখো!

–বাঃ, তাহলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ব্যবস্থা হলেই তো ভালো!

পরদিনই ফিরে এলেন দীপকদা। আমিই তাঁকে দরজা খুলে দিলুম। আমায় দেখে তিনি যেন ভূত দেখলেন।

–কী ব্যাপার। তুমি?

আমি যতদূর সম্ভব মন-গলানো হাসি দিয়ে বললুম, এই তো, আবার চলে এলুম!

–আবার এডমন্টনে? এই শীতের মধ্যে? জানো, আর কয়েকদিনের মধ্যেই শূন্যের নীচে তিরিশ-চল্লিশ হয়ে যাবে? এখন ক্যালিফোর্নিয়ার দিকে গেলে বরং তোমার ভালো লাগত।

–ভেতরে আসুন, দীপকদা, তারপর সব কথা বলছি।

দীপকদা দুপদাপ করে পায়ের বরফ ঝাড়লেন, ভেতরে ঢুকে হাতের গ্লাভস খুলে ফেলে বললেন, উঃ, এই সময়টায় ঘোরাফেরা করা এক ঝকমারি। বাড়ির বাইরে থাকতে একটুও ইচ্ছে করে না। তাই একদিন আগেই ফিরে এলুম।

দুই মেয়ে ছুটে এল বাবার কাছে। জয়তীদি সাড়া দিলেন রান্নাঘর থেকে। আমি কিছুক্ষণের জন্য এই দাম্পত্য দৃশ্যটি থেকে নিষ্ক্রান্ত হয়ে চলে গেলুম টিভি’র ঘরে।

খানিক পরে যখন দেখা হল, ততক্ষণে দীপকদা আমার ব্যাপারটা সব শুনে ফেলেছেন। উনিও জয়তীদির মতন গম্ভীরভাবে বললেন, দ্যাখো, আমার গিন্নি টিকিট পাঠিয়ে তোমাকে ইউ এস থেকে নিয়ে এসেছেন বটে, কিন্তু এখান থেকে ভারতবর্ষে তোমাকে টিকিট কেটে ফেরত পাঠাবার ক্ষমতা আমাদের নেই। সে অনেক টাকার ধাক্কা। তা ছাড়া এই উইন্টারে রিসার্ভেশন পাওয়াই শক্ত। গিন্নি তোমায় যে এখানে আনিয়েছেন, ভেবো না, সেটা তোমাকে দয়া দেখাবার জন্য। এর মধ্যে বিশেষ স্বার্থ আছে। আমাদের একজন কাজের লোকের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। আমি সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকব, জয়তীও ইউনিভার্সিটিতে কোর্স নিয়েছে। জানো তো, এদেশে যা আগুন লাগার ভয়, কক্ষনো বাচ্চা ছেলে-মেয়েদের একা বাড়িতে রাখা চলে না। বেবি সিটারেরও সাংঘাতিক খরচ। সুতরাং তোমায় আমরা থাকা-খাওয়ার বিনিময়ে রাখতে পারি।

আমি বললুম, শুধুই থাকা-খাওয়া? বিড়িটিড়ি খাওয়ার জন্য কিছু অন্তত হাত খরচ দেবেন না? আর বছরে দুবার জামাকাপড়?

দীপকদা বললেন, আমার অনেক পুরোনো জামা-টামা আছে, সেজন্য চিন্তা নেই। হাত খরচের কথাটা বিবেচনা করতে হবে!

জয়তীদি বললেন, না, না, ওর হাতে পয়সা দেওয়া ঠিক নয়। যখন তখন সব জিনিস হারিয়ে ফেলে। বিড়িটিড়ি কিংবা ওর নেশার জিনিস যা লাগে তা আমরাই কিনে দেব।

আমি বললুম, আমি কিন্তু মাছ ছাড়া ভাত খেতে পারি না।

দীপকদা বললেন, ওসব চলবে না। গরু-শুয়োর যা দেব, তাই সোনামুখ করে খেতে হবে।

জয়তীদি বললেন, ভাত? আমরা মোটে সপ্তাহে একদিন ভাত খাই!

আমি বললুম, ইস জয়তীদি, আপনারা কি গরিব! আমরা কিন্তু কলকাতায় প্রত্যেকদিনেই ভাত খাই আর মাছের দাম খুব বেশি হলেও কুচো মাছ অন্তত জুটে যায়। আপনাদের গরু শুয়োরের মতন অখাদ্য খেয়ে বেঁচে থাকতে হয়।

জিয়া আর ছুটকি এতটা বাংলা বোঝে না, ওরা আমাদের এই কথোপকথনের মর্ম টের পেল না।

দু’দিন বাদেই ক্রিসমাস। বৈঠকখানায় শোভা পাচ্ছে ক্রিসমাস ট্রি। সারাদিন ধরেই ঘুরে ফিরে সেটাকে সাজানো চলছে। এটাই নিয়ম, ক্রিসমাস ট্রি সাজাতে হয় অন্তত দিন দশেক আগে থেকে, অনেকটা দুর্গা পুজোর প্রস্তুতির মতন। সুপার মার্কেটগুলোর সামনে ডাঁই করা থাকে ঝাউগাছের টুকরো যার যেমন পছন্দ সেইরকম ছোট বড় এক একটা টুকরো কিনে নিয়ে যায়।

ক্রিসমাস ইভ-এ দীপকদাদের নেমন্তন্ন আছে ওঁদের এক পাঞ্জাবি বন্ধুর বাড়িতে। অনেকদিন আগে থেকেই ঠিক করা। এইসব পার্টিতে একজন অতিরিক্ত লোককে নিয়ে যাওয়া মোটেই অসঙ্গত নয়। সুতরাং দীপকদা ধরেই নিয়েছিলেন আমি যাব। কিন্তু আমি শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসলুম।

মনটা কীরকম ফাঁকা-ফাঁকা লাগছে, এখন একগাদা অচেনা মানুষের মধ্যে গিয়ে ভদ্রতার হাসি হাসতে আমার ইচ্ছে করছে না। অনেকেই জিগ্যেস করবে, আমি দ্বিতীয়বার কেন এডমন্টনে এলুম?কী উত্তর দেব!

দীপকদা অনেক অনুরোধ করলেন, জয়তীদি বকুনি দিলেন পর্যন্ত। মেয়েরা বললো, চলো, চলো, তবু আমি অনড় রইলুম। আমি বললুম, আপনারা ঘুরে আসুন, রাত দুটো-তিনটে যাই বাজুক। আমি ঘুমোব না, দরজা খুলে দেব।

বাড়ি ফাঁকা হয়ে যেতেই আমি বেশ আত্মবিশ্বাস ফিরে পেলুম। গৃহস্বামীর সেলার থেকে বার করে আনলুম এক বোতল ইটালিয়ান ড্রাই ওয়াইন। দুটি গেলাসে সেই ওয়াইন ঢেলে, দু-হাতে গ্লাস দুটো তুলে ঠোকাঠুকি করে বললুম, চিয়ার্স!

এক-এক সময় নিজেকেই নিজের সান্নিধ্য দিতে বেশ লাগে।

দুরকম গলার আওয়াজ করে আমি কথাও বলতে লাগলুম নিজের সঙ্গে। যেন সত্যিই আমার বুকের মধ্যে দুটি সত্তা আছে, তারা বেশ পরস্পরবিরোধী যুক্তিও ফাঁদতে পারে।

জানলার পরদা সরিয়ে দিতেই দেখতে পেলুম এক অপরূপ দৃশ্য। খুব পাতলা, পালকের মতন তুষারপাত হচ্ছে। কিংবা যেন খসে পড়ছে চাঁদের বুড়ির চরকার তুলো। আকাশ ঠিক দেখা যাচ্ছে না, তবু যেন মনে হচ্ছে আজ একটা নীল রঙের চাঁদ উঠেছে। পৃথিবী অদ্ভুত নিঃশব্দ।

বেশ তরতরিয়ে কেটে যেতে লাগল সময়। একটুও নিঃসঙ্গতা বোধ হল না। গোঁফ গজাবার পর থেকেই আমি প্রত্যেক ক্রিসমাস ইভের রাত্রিই বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে প্রচুর হই-হল্লা করে কাটিয়েছি। এই প্রথম এমন বিশেষ দিনে আমার একা এই রাত্রিযাপন। বেশ উপভোগ করতে লাগলুম ব্যাপার।

টিভি খোলাই ছিল, কিন্তু সেদিকে চোখ ছিল না বিশেষ। ঠিক রাত বারোটা বাজার সময় ঘোষণা করতেই আমার খেয়াল হল। এদেশের পার্টিতে এই সময় আলো নিবিয়ে দেওয়া হয়, যার যাকে ইচ্ছে চুমু খেতে পারে। আমিও নিবিয়ে দিলুম আলো, নিজের ডান হাতে সশব্দে একটা চুমু খেলুম। তারপর গৃহসজ্জার বেলুনগুলো একটার পর একটা ফাটাতে লাগলুম জ্বলন্ত সিগারেট দিয়ে।

তার একটু পরেই টেলিফোন বাজল। নিশ্চয়ই দীপকদা চেক করতে চাইছেন আমি ঘুমিয়ে পড়েছি কিনা। দৌড়ে গিয়ে ফোন ধরলুম। তারপরই পেলুম পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ খবর।

সিডার র‍্যাপিডস থেকে ফোন করছে সূর্য। সে বলল, সে গতকালই ফিরে এসেছে। ফিরে এসে আমার চিঠি পেয়েছে আর মুখার্জিদার কাছ থেকে সব শুনেছে। আমি কেন আর দু-একদিন থেকে এলুম না ওখানে! এডমন্টনে বুঝি বিরাট পার্টি আছে? আমাকে বুঝি পার্টি ছেড়ে এসে ফোন ধরতে হল?

আমি বললুম, হ্যাঁ, এ বাড়িতে খুব জমজমাট পার্টি চলছে। তোর কী খবর বল!

প্রায় মিনিট পাঁচেক এলেবেলে সংলাপের পর সূর্য বলল, তোর ব্যাগটা ফেরত এসেছে। গ্রে হাউন্ড বাস ডিপো থেকে ফোন করেছিল, আমি গিয়ে নিয়ে এসেছি।

আমি বললুম, ব্যাগ? আমার? এতদিন বাদে? সূর্য বলল, হ্যাঁ, ওটা নাকি শিকাগোতে পড়ে ছিল। আজই এসেছে এখানে।

–আমার ব্যাগ? তুই ঠিক বলছিস? তার মধ্যে আমার প্লেনের টিকিট আছে? ক্যামেরা? একটা বইয়ের মধ্যে টাকা–

–সব আছে। কিছুই খোয়া যায়নি।

–সূর্য, আমার ব্যাগটা কে ফেরত দিল বল তো? তাহলে কি সত্যিই ভগবান টগবান বলে কিছু আছে নাকি?

–ভগবান থাকলেও তোর মতন পাষণ্ডকে দয়া করবে কেন? তবে গ্রে হাউন্ড কোম্পানি ভগবানের চেয়ে কম এফিসিয়েন্ট নয়।

এরপর এমন সব ঘটনা ঘটতে লাগল যা এক মুহূর্তের জন্য খুব আনন্দের, পর মুহূর্তে দারুণ বিষাদের।

রাত তিনটের সময় দীপকদারা ফিরতেই তো সুখবরটা দিলুম। পরদিন বিকেলেই ব্যাগটা পৌঁছে গেল। দীপকদা বললেন, তোমার টিকিটটা দাও, আমার এজেন্টকে বলে দেখি, সিট জোগাড় করে দিতে পারবে কি না। এই শীতে খুব রাশ থাকে।

টিকিটটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ উলটে পালটে দেখে দীপকদা বললেন, এটা ফিরে পাওয়া-না পাওয়া সমান। এটাকে বাজে কাগজের ঝুড়িতে ফেলে দিতে পারো।

আমি আঁতকে উঠে বললুম, কেন?

দীপকদা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, তুমি কী বলো তো? জীবনে কি এই প্রথম প্লেনে চাপছ? টিকিটটা একবার পড়েও দ্যাখোনি?

কাঁচুমাচু গলায় বললুম, কী হয়েছে বলুন তো দীপকদা? কিছুই বুঝতে পারছি না। টিকিটটা চলবে না?কিন্তু এটা তো রাউন্ড ট্রিপের…

–এটা তো আউট ডেটেড টিকিট। তোমাকে চিপ কনসেশানাল রেটের রিটার্ন টিকিট দিয়েছে, এটা মাত্র চার মাস ভ্যালিড। এতে তোমার জার্নির তারিখ উল্লেখ করা আছে, তারপর পাঁচ মাসের বেশি কেটে গেছে। এখন এ টিকিট চলবে না। তুমি এই সামান্য জিনিসটাও আগে খেয়াল করোনি?