রহস্যের মীমাংসা
ঝুমনকে ডেকে শংকর কিছু লুচি ও তরকারী করবার জন্য আদেশ দিতেই, কিরিটী বাধা দিলে, আরে ক্ষেপেছিস শংকর, এই রাত্রে মিথ্যে কেন ও বেচারীকে কষ্ট দিবি? তার চাইতে বল এক কাপ গরম গরম চা বানিয়ে দিক। আর তার সঙ্গে যদি কেক বা বিস্কিট কিছু থাকে তবে তাই দুচারটে দে, তাতেই হয়ে যাবে।
ঘরে কেক ছিল। কুমন একটা প্লেটে করে কয়েকটা plum cake ও এক কাপ চা এনে কিরীটির সামনে টিপিয়ে নামিয়ে রাখতে রাখতে বললে, দিই না সাহেব কয়েকটা লুচি ভেজে, কতক্ষণ লাগবে?
কিরীটী হাসতে হাসতে বললে, ওরে না না। তুই শুতে যা। এতেই আমার হবে, কাল যদি এখানে থাকি তো বেশ করে পেট ভরে খাওয়াস।
ঝুমন চলে গেল।
কিরীটী জামার পকেট থেকে চুরোট বের করে তাতে অগ্নি সংযোগ করে মৃদু টান দিতে লাগল।…
কিছুক্ষণ ধূমপান করবার পর প্রায়-ঠাণ্ডা চায়ের কাপটা তুলে নিতে নিতে বললে। Cold tea with a Burma Cigar;
Is a joy for ever।
সকলে এক সঙ্গে হেসে উঠল, কিরীটীর নিজস্ব কবিতা শুনে।
কিন্তু আমার শরীর যে ঘুমে ভেঙে আসছে শংকর, শীঘ্ৰ কোথায় শুতে দিবি বল। কিরীটী শংকরের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল।
শংকর নিজের ঘরেই এক পাশে একটা ক্যাম্প খাটে কিরীটীর শোয়ার বন্দোবস্ত করে দিল।
কিরিটী শয্যার ওপরে গা এলিয়ে দিয়ে লেপটা টেনে নিল।
পরের দিন সকলে শংকর ঘুম ভেঙে উঠে বসেছে।
এমন সময় একজন সাঁওতাল কুলী ছুটতে ছুটতে এসে হাজির বাবু হুজুর মালিক এসেছেন গো।– মালিক, কখন এলেন তিনি?
কাল রাতে বাবু।
কে কাল রাতে এসেছেন শংকর?
চমকে ফিরে তাকিয়ে দেখি খোলা দরজার ওপরে দাঁড়িয়ে কিরীটী?
খনির মালিক সুধাময়বাবু কাল রাত্রে এসেছেন।
যা তাড়াতাড়ি মনিবের সঙ্গে একবার মোলাকাত করে আয়।–
হ্যাঁ যাই।–
হাত মুখ ধুয়ে শংকর তখুনি মনিবের সঙ্গে দেখা করতে ছুটল।
খনির অল্প দূরে মাঠের মধ্যে একটা বাংলো প্যাটার্ণের বাড়ি।
খনির দুজন অংশীদার হনুমানপ্ৰসাদ কুন-ঝুন-ওয়ালা আর সুধাময় চৌধুরী? অংশীদারের মধ্যে কেউ কখন এলে ঐ বাংলো বাড়িতেই ওঠেন। অন্য সময় বাংলো তালা চাবি দেওয়াই থাকে।
শংকর যখন এসে বাংলো বাড়িতে প্ৰবেশ করল, সুধাময় বাবু তখন ঘুম ভেঙে উঠে বসে ধূমায়িত চায়ের সঙ্গে গরম গরম লুচির সদব্যবহার করছেন।
ভৃত্যকে গিয়ে সংবাদ পাঠাতেই শংকরের ভিতরে ডাক এল। বহুমূল্য আসবাব পত্রে সাজান কক্ষখানি; গৃহস্বামীর রুচির পরিচয় দেয়।
একটা বেতের চেয়ারে বসে সুধাময়বাবু প্রাতরাশ খাচ্ছিলেন।
শংকর ঘরে ঢুকে হাতে তুলে নমস্কার জানাল, নমস্কার … স্যার।
নমস্কার। বসুন। আপনিই এখানকার নতুন ম্যানেজার শংকর সেন?
অজ্ঞে।
বেশ। বেশ।
শংকর একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসল।
ওরে কে আছিস, ম্যানেজারবাবুকে চা দিয়ে যা।
সুধাময়বাবু হাঁক দিলেন।
না না। ব্যস্ত হবেন না। এইমাত্র বাড়ি থেকে চা খেয়ে বেরিয়েছি।
তাতে আর কী? add a cup more, কোন harm নেই।
শংকর সুধাময়বাবুর দিয়ে চেয়ে চেয়ে দেখতে লাগল।
উঁচু, লম্বা বলিষ্ঠ চেহারা। মাথার মাঝখানে সিঁথি। চোখা নাক। চোখ দুটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিন্তু বেশ লালচে। শিকারী বিড়ালের মত সদা চঞ্চল, অস্থির ও সজাগ। গায়ের রং আবলুশ কাঠের মত কালো। ভদ্র বেশ না হলে সাঁওতালদেরই একজন ধরা যেতে পারে অনায়াসেই। গায়ে বাদামী রংয়ের দামী সার্জের গরম স্যুট।
ভৃত্য চা দিয়ে গেল। শংকর চায়ের কাপটা টেনে নিল।
তারপর মিঃ সেন, আপনাদের কাজকর্ম চলছে কেমন?
মন্দ না। তবে পরপর এমনভাবে খুন হওয়ায় এখানকার কুলী কামিনদের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া কাল রাত্রে আমাদের সরকারমশাই বিমলবাবু অদৃশ্য আততায়ীর হাতে নিহত হয়েছেন।
কে নিহত হয়েছে?
বিমলবাবু?
The villain. Rightly served. I hated him most amongst my employees; but I am also determined to give up my shares. I am really fed-up with all this. ঝুন-ঝুনওয়ালাও আজই বিকালের দিকে এসে পৌঁছাচ্ছেন শুনলাম। তিনিও বেচে দেবেন। তাঁর share.
মনিবকে নিয়ে ঘুরে ঘুরে কাজকর্ম দেখে, শংকরের বাংলোয় ফিরতে ফিরতে বেলা দুটো বেজে গেল।
সন্ধ্যার ধূসর ছায়া ধরিত্রীর বুকে যেন রহস্যের যবনিকার মত নেমে এসেছে।
শংকরের ডাক-বাংলোয়, সকলে একত্রিত হয়েছে। খনির দুই অংশীদার, সুধাময় চৌধুরী ও হনুমান প্ৰসাদ ঝুন-ঝুন-ওয়ালা, সুব্রত, কিরীটী, দারোগাবাবু ছদ্মবেশে ও শংকর নিজে। কিরিটী বলছে আজ অপরাধী কে সকলের সামনে প্ৰকাশ করে বলবে এবং হাতে হাতে দারোগাবাবুর জিম্মায় দিয়ে দেবে। সুধাময়বাবু ও ঝুন-ঝুন-ওয়ালা দুজনেই বলেছেন। অপরাধীকে ধরিয়ে দিতে পারলে দুজনেই পাঁচ-হাজার করে দশ হাজার টাকা কিরীটীকে পুরস্কার দেবেন।
কিরীটী বলতে লাগল– Before I mention the name let me have my reward first of all with the promise that if I fail will return the same
সুধাময়বাবু ও কুন-বুন-ওয়ালা দুজনেই হাসতে হাসতে পাঁচ হাজার করে দশ হাজার টাকার দু:খানা চেক লিখে দিলেন, এই নিন।
তা হলে আপনারা সকলে শুনুন।
এই খনি অভিশপ্তও নয়, ভূতের আস্তানাও নয়; প্রচুর লাভের খনি। …এবং আজ পর্যন্ত এই খনিতে যতগুলো খুন হয়েছে তার জন্য সর্বাংশে দায়ী খনির অন্যতম অংশীদার স্বয়ং সুধাময় চৌধুরী।…
ঘরের মধ্যে বজ্ৰপাত হলেও বোধ হয় এতটা কেউ চমকে উঠত না।
প্রবল ব্যঙ্গ মিশ্রিত স্বরে সুধাময়বাবু প্ৰচণ্ড হাসির তুফান তুলে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালেন। তার এক হাত প্যান্টের পকেটে —সহসা পিস্তলের গর্জন শোনা গেল।
গুড়ুম।
উঃ! একটা বেদনার্ত চিৎকার করে সুধাময়বাবু একপাশে টলে পড়লেন, এক হাত দিয়ে ডানদিকে পাজরা চেপে ধরে অন্যহাত থেকে একটা রিভলভার ছিট্কে পড়ল।
শয়তান। কুকুর। তোকে কুকুরের মতই গুলী করতে বাধ্য হলাম, দারোগাসাহেব গর্জন করে উঠল—না হলে তুই-ই হয়ত এখনি আমায় গুলী করতিস। জীবনে আজ এই প্ৰথম সত্যিকারের গুলী করতে বাধ্য হলাম, কিন্তু তার জন্য আমার এতটুকুও অনুশোচনা হচ্ছে না। যে নৃশংস এতগুলো খুন পর পর করতে পারে—তার একমাত্র শাস্তিই পাগলা কুকুরের মত গুলী করে মারা।–
উঃ। কিরীটীবাবু। আপনার কথাই ঠিক। অতি লোভ সত্যিই শেষ পর্যন্ত আমার মৃত্যুর কারণ হলো।—হ্যাঁ স্বীকার করছি আমি-আমিই সব খুন করেছি। —উঃ –
ধীরে ধীরে হতভাগ্য সুধাময় চৌধুরীর প্রাণবায়ু বাতাসে মিশে গেল।
সহসা যেন নাটকের যবনিকাঁপাত ঘটল।
ঘরের সব কয়টি প্রাণীই স্তব্ধ।
কারও মুখে কোন কথা নেই।
কিরীটি এতক্ষণে চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসল, এবারে আমি আমার বক্তব্য সব সংক্ষেপে শেষ করব। কেন না, আজকের রাত্রের bus-ই আমার ধরতে হবে। একটা কথা সর্বাগ্রে আপনাদের কাছে খুলে না বললে আমার এই ব্যাপারে। explanationটা সহজবোধ্য হবে না। বর্তমানে এই যে এখানকার কোলিয়ারীটা দেখছেন, ৫০ বছর আগে এই কোলিয়ারীর পাশের ঐ একটা কোলিয়ারী হঠাৎ একদিন দ্বিপ্রহরে কোন অজ্ঞাত কারণবশতঃ ধ্বসে যায়। এরূপ কিংবদন্তী আছে। তারপর থেকেই এখানকার আশেপাশের লোকেরা এ জায়গাটা সম্পর্কে নানা প্রকার মনগড়া বিভীষিকার কথা তুলে এটাকে অভিশপ্ত করে তোলে। এমনি করে দীর্ঘ চল্লিশটা বছর কেটে যায়।
কেউ এর পাশে ঘেঁষে না।
এমন সময় কোলিয়ারী শুরু করবার ইচ্ছায় মিঃ ঝুন-ঝুন-ওয়ালা ও সুধাময় চৌধুরী এদিকে ঘুরতে ঘুরতে এই অভিশপ্ত ফিল্ডটার সন্ধান পান এবং অচিরে এটার লিজ নেন নব্বই বছরের জন্য খুব সামান্য টাকায়।
কিন্তু কাজ আরম্ভ করতে আরও বছর চারেক কেটে যায়।
তারপর কাজ শুরু হলো।
কাজ বেশ এগুচ্ছে এবং ফিল্ড থেকে প্রচুর কয়লা উঠছে। এই সময় শয়তান সুধাময়ের মনে কু-মতলব জাগল। তিনি মনে মনে বদ্ধপরিকর হলেন ঝুন-ঝুন-ওয়ালাকে ফাকি দিতে। কিন্তু কেমন করে ঝুন-কুনি-ওয়ালাকে সরান যায়। সেই চিন্তা করতে লাগলেন।
একদিন খনির কাজ পরিদর্শন করতে এসে সামান্য অজুহাতে খনির সরকার বিকাশবাবু ও ম্যানেজারের এ্যাসিসটেন্ট সত্যকিংকরবাবুকে বরখাস্ত করে নিজের লোক বিমলবাবু ও চন্দনসিংহকে নিযুক্ত করে গেলেন। চন্দনসিং ও বিমলবাবু ছিল সুধাময়বাবুর ডান ও বাঁ হাতের অপকর্মের প্রধান সঙ্গী ও সহায়ক। বিমলবাবু ও চন্দনসিং সুধাময়বাবুকে সকল সংবাদ সরবরাহ করত ও খনিটা ভৌতিক এই কিংবদন্তীকে আরো সুদৃঢ় করবার জন্য প্রোপাগাণ্ডা চালাত দিবারাত্র নানাভাবে।
সুধাময়বাবুর রং ছিল ঘোর কৃষ্ণবর্ণ। নিজে বহুকাল সাঁওতাল পরগণায় ঘুরে ঘুরে সাঁওতালদের সামাজিক রীতিনীতি আচারব্যবহার ও কথাবার্তাও পুরোপুরিভাবেই আয়ত্ত করেছিলেন, এবং যাতে করে তিনি অনায়াসেই, সাঁওতাল কুলীদের মধ্যে তাদেরই একজন সেজে দিব্যি খোশ মেজাজে একের পর এক খুন করে চলেছিলেন। অথচ কেউ কোনদিন সন্দেহ করবার অবকাশ পায় নি।
সুব্রতকে পাঠিয়ে দিয়েই আমি গোপনে পরের দিন সকালেই পাগলের ছদ্মবেশে এখানে চলে আসি এবং চারদিকে নজর রেখে ব্যাপারটা বুঝবার চেষ্টা করি।
আমার কেন যেন মনে হয়, যে খুন করেছে এইভাবে পরপর ম্যানেজারদের, সে এখানেই সর্বদা উপস্থিত থাকে। কিন্তু কীভাবে সে এখানে থাকতে পারে? কৰ্মচারীদের মধ্যে একজন হয়ে থাকা তার পক্ষে সম্ভব নয়; কেন না তাতে চাটু করে ধরা পড়বার সম্ভাবনা খুব বেশি। তবে কেমন করে সে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে। অথচ এ কথা যখন অবধারিত এখানে সর্বদা উপস্থিত না থাকলে চারিদিকে দেখে শুনে তার পক্ষে খুন করা সম্ভব হয় না, তখন নিশ্চয়ই কুলীদের মধ্যেই তাদের একজন হয়ে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে।
সঙ্গে সঙ্গে অনুসন্ধান শুরু করে দিই।
এবং এখানে আসবার দিন রাত্রে যখন কুলীদের মধ্যে একজন খুন হলো, সে সময় আমি কুলীদের ধাওড়ার মধ্যেই কুলী সেজে উপস্থিত ছিলাম; কুলীটাকে খুন করে সুধাময় কুলীর ছদ্মবেশে যখন পালায় তখন আমি অন্ধকারে অনুসরণ করে তার ঘরটা দেখে আসি।
বিমলবাবু ও চন্দনসিং-এর সাহায্যে নয়জন কুলীকে রাতারাতি ধানবাদ কাজের অছিলায় হাঁটা পথে রেল লাইন ধরে প্রচুর টাকা ঘুস দিয়ে বিদায় করে। মাত্র একজন কুলি নিয়ে বিমলবাবুর সাহায্যে রামলোচনের জামার পকেট থেকে চাবি চুরি করে, খনির মধ্যে নেমে ডিনামাইট্র দিয়ে পিলার ধ্বসিয়ে ১৩নং কাঁথি ভাঙ্গা হয় তাও আমার নজর এড়ায় না। সুব্রত তুমি রুমালে বাঁধা পলতে ও ডিনামাইট্ পেয়েছ।
পরের দিন সকলে জানাল ১০জন লোক মারা গেছে। যদিও মারা গেল একজন মাত্র। এটা শুধু কুলীদের মধ্যে ভয়ের সঞ্চার করবার জন্য সাজিয়ে করা হয়েছিল।
ম্যানেজারদের মারা হয়। চারিদিকে সকলের মনে একটা ভয়াবহ আতঙ্ক জাগাবার জন্য যাতে করে খনির কাজ বন্ধ হয়ে যায় এবং খনির কাজ বন্ধ হয়ে গেলে নিজে শেয়ার ছেড়ে দেবার ভাণ। দেখিয়ে ঝুন-ঝুন-ওয়ালাকে দিয়ে তার শেয়ারও বিক্রয় করিয়ে বেনামীতে সমগ্র খনিটা কিনে নিলেই কাজ হাসিল হয়ে যায়।
সব কিছু প্ৰায় হয়ে এল, সুধাময় কুন-ঝুন-ওয়ালার সঙ্গে চিঠিপত্র লিখে যখন সব ঠিক করে ফেললে তখন তার অপকর্মের সহায়ক বিমলবাবু ও চন্দনসিংহকে সরাবার মতলব করল।
গতকাল বিমলকে মারলেও চন্দন সিং নাগালের বাইরে পালিয়ে গেল। কেন না প্রভুর মনোগত ইচ্ছােটা সে আগেই টের পেয়েছিল। Metalic mails, পরে তাতে বিষ মাখিয়ে হাতের আঙ্গুলে পরে, তার সাহায্যে গলা টিপে সুধাময় কাজ হাসিল করত। Strangle করবার সময় সেই Metalic mails গলার মাংসে বসে গিয়ে বিষের ক্রিয়ায় মৃত্যু ঘটাত। এখন কথা হচ্ছে শার্দুলের ডাক যেটা শোনা যেত সেটা আর কিছুই নয়; সুধাময় নিজেই মুখ দিয়ে বাঘের হুবহু অনুকরণ করতে পারত। তোমরা হয়ত শুনে থাকবে এক একজন অবিকল পশু পক্ষীর ডাক মুখ দিয়ে অনুকরণ করতে পারে। এটা একটা মানুষকে ভয় দেখাবার ফন্দি। তা ছাড়া খুব উঁচু হিলওয়ালা এক প্রকার কাঠের জুতো পরে গায়ে একটা ধূসরবর্ণের ওড়না চাপিয়ে সুধাময় মাঠের মধ্যে দিয়ে দ্রুতবেগে চলত। একে সে একটু বেশী রকম লম্বা ছিল, তার উপরে ওই কাঠের জুতো পরাতে তাকে বেশ অস্বাভাবিক রকম বলে মনে হতো। কাঠের জুতো ব্যবহার করবার মধ্যে আরো একটা মতলব তার ছিল; পায়ের ছাপ পড়ত না। সুব্রতকে মারবার জন্য একটা সাঁওতাল কুলীকে সুধাময়বাবুই, engage করেছিলেন; কুলীটা বিষাক্ত তাঁর চূড়লো কিন্তু unsuccessfull হলো; কিন্তু সুব্রতকে তাঁর ছোঁড়বার সঙ্গে সঙ্গেই সুধাময়ও লোকটাকে গুলী করে মারে; আমিই সেই সময় ওদের পিছনে follow করতে করতে উপস্থিত ছিলাম বলে সব ব্যাপারই নিজের চোখের সামনে ঘটতে দেখেছি। এই হল এখানকার খনির মৃত্যু রহস্য। কিরীটী চুপ করল।
আমাদের গল্পও এই খানেই শেষ হলো।