২১
দ্রুত বেগে ভেতরে ঢুকে প্রফেসর দেখল হাসিমুখে দ্রুতবেগে পা নাচাচ্ছে অ্যালবার্ট ফাত্তাহ। যদিও ভেতরে ভেতরে উত্তেজনায় ফুটছে প্রফেসর কিন্তু নিজেকে সামলে নিয়ে টেবিলের দিকে এগিয়ে গেল সে। চেয়ারটা টেনে বসে পড়ল। নিজেকে মনে করিয়ে দিল, খেলতে হবে খুব সাবধানে। একটু এদিক- ওদিক হলেই সর্বনাশ।
“আরে, প্রফেসর দেখি,” প্রফেসরকে দেখে যারপরনাই আনন্দিত এমন একটা ভঙ্গিতে সম্বোধন করে উঠল ফাত্তাহ। “এসে গেছ তাহলে। নিশ্চই বোম দুটো পেয়ে গেছ,” বলে সে মৃদু হেসে যোগ করল। “আর আমার মেসেজটাও। তা-না হলে তুমি এই চেহারা বানিয়ে রুমের ভেতরে ঢুকতে না, বলেই সে জোরে হেসে উঠল।
“তুমি মি. রিডের ব্যাপারে কী জানো?” প্রফেসরের গলায় ডিপ ফ্রিজের বরফ ঠান্ডা পানির শীতলতা। “ওই কথা কেন লিখলে তুমি টেবিলের ওপরে?”
ফাত্তাহ কিছু না বলে তাকিয়ে আছে প্রফেসরের দিকে। তার দৃষ্টিতে কৌতুক। “ওমা, প্রফেসর আমি তোমাকে ভালো মানুষ ভেবেছিলাম। এই যে তুমি মি. রিড আর তার দলবলের উদ্ভাবিত রিড টেকনিক কাজে লাগিয়ে আমার কাছ থেকে দুই দুটো বোমা উদ্ধার করে ফেললে, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বোমাবাজিগুলোর একটা ঠেকিয়ে দিলে, সেজন্য তোমার মি. রিডের কাছে কৃতজ্ঞ থাকা উচিত না! ভাগ্যিস তিনি জেরা করার মানে ইন্টারোগেশনের, “ বলে সে তাচ্ছিল্যের সাথে হাত নাড়ল। “মানে তোমরা যেটাকে বলো ভারবাল কনফেশনের এই টেকনিক আবিষ্কার করেছিল। তা-না হলে তুমি কী করতে বলো?”
“আমি তোমার সাথে,” প্রফেসরের গলা আটকে আটকে আসছে। “মানে তোমার সাথে কথা বলর সময় রিড টেকনিক অ্যাপ্লাই করছিলাম তুমি বুঝলে কীভাবে?” আর কী জিজ্ঞেস করবে বুঝতে না পেরে এটাই বলে বসল সে।
“অহহহ প্রফেসর!” ফাত্তাহের গলায় সত্যিকারের কোমলতা। “তুমি ভাবলে কী ক’রে একেবারে আনাড়ি ক্রিমিনালদের ওপরে এপ্লাই করা একটা টেকনিক আমার ওপরে অ্যাপ্লাই করবে, আর আমি বুঝতে পারব না!” টেবিলের ওপরে হাত দুটো রেখে সামনে ঝুঁকে এলো সে। তার ভালো চোখটার দৃষ্টি সরু হয়ে গেছে। “মাই গড প্রফেসর! তাই বলে রিড টেকনিক। যেটা একেবারে প্রাথমিক স্তরের বাচ্চা ক্রিমিনালদের ওপরে অ্যাপ্লাই করা হয়, সেটা। অহ গড। আমি নিজেও যখন প্রথম ধরতে পারলাম খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এতটা বোকা হলে কী করে তুমি? একবারও তোমার মনে হলো না যে তুমি আমাকে আল-বাল বলে যা বোঝাতে চাইছ আমি সেটা ধরে ফেলব,” আফসোসের সাথে মাথা নাড়ল সে।
প্রফেসরের চেহারা উত্তেজনায় থমথমে হয়ে উঠেছে। এক হাতে নিজের অপর হাত চেপে ধরে শক্ত হয়ে বসে আছে সে। “তার মানে কী, শুরু থেকেই তুমি বোকা বানিয়ে যাচ্ছিলে আমাকে?” প্রফেসরের গলা শুনে মনে হচ্ছে পাথরে পাথরে ঘষা খাচ্ছে। তার কানের ভেতর থেকে আফসারের গলা ভেসে এলো, ‘স্যার সাবধানে,’ তার গলায় চরম আকুতি। ‘স্যার, এখনও সব শেষ হয়নি,’ প্রফেসর রাগের সাথে কান থেকে এয়ার পিসটা টেনে বের করে সেটা ছুড়ে ফেলে দিল। আর উন্মাদের মতো হেসে উঠল ফাত্তাহ।
“প্রথম কখন টের পেলে তুমি?” ঝড়ের সময় মোমবাতির আলো যেমন কাঁপাকাঁপি করে নেভার আগে প্রফেসরের গলা সেই কম্পনরত শিখার মতো তিরতির করছে।
“আহহ প্রফেসর,” আফসোসের সাথে মাথা নেড়ে নেড়ে সে বলতে লাগল। তার সমস্ত অবয়ব থেকে ফুটে বেরোচ্ছে বিজয়ের আনন্দ। “প্রথমে এই রুম দিয়েই শুরু করি,” হাতের ইশারায় সে পুরো রুমটা দেখাল। “আমি এটা খুব ভালো করেই জানি। এইসব রুমগুলো সন্দেহভাজনের ওপরে চাপ সৃষ্টি করার জন্য কীভাবে ডিজাইন করা হয়। রুমের সাইজ, টেবিল-চেয়ারের গঠন, দেওয়ালের রঙ এবং সর্বোপরি সন্দেহভাজনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একা বসিয়ে রাখা,” বলে সে সামান্য মাথা নেড়ে হেসে উঠল।
“তবে অস্বীকার করব না। আমাকে যখন প্রথম এখানে আনা হলো আমি রুমটা দেখে ইমপ্রেসড হয়ে গিয়েছিলাম। বাহ তোমাদের মতো ফকিন্নি দেশেও এত উন্নত ব্যবস্থা আছে!” বলে সে দুবার তালি দেওয়ার ভঙ্গি করল। “আমি পরিষ্কার বুঝতে পারছিলাম এরপর কী ঘটবে। কিন্তু তারপর তুমি এলে প্রফেসর। তোমার ওই চকচকে সুট, পালিশ করা চেহারা আর ওই বালের কালো চশমা দেখে আমি একটু অবাকই হয়েছিলাম। মুখে যদিও তোমাকে ইনসাল্ট করছিলাম কিন্তু আমার মনে হচ্ছিল তোমার মধ্যে গভীরতা আছে। কিন্তু তারপর,” বলে সে একটু থেমে আবারও বলে উঠল। “তারপর তুমি কথা শুরু করলে। আমাকে সিগার অফার করলে বিশেষ কফি খাওয়ালে, হ্যান্ডকাফ খুলে দিলে— আমি সত্যি সত্যি মুগ্ধ হয়েছিলাম। যদিও এখনও আমি বুঝতে পারছি না তুমি কীভাবে আমার প্রিয় ওই দুটো জিনিস সংগ্রহ করেছ। যাই হোক, কফি আর সিগার দিয়ে তুমি যখন আমাকে প্রস্তাব দিলে আমার গল্প শুনতে চাও ব্যস ওটাই ছিল আজ রাতে তোমার সবচেয়ে বড় ভুল প্রফেসর, বলে সে থেমে গেল।
প্রফেসর কিছু না বলে তার দিকে তাকিয়ে আছে। সদ্য ডিম ফুটে বেরোনো বাচ্চাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে মা মুরগি যেরকম ফোঁস করে ওঠে, প্রফেসরকে দেখে মনে হচ্ছে ভেতরে ভেতরে ঠিক সেরকম ফুঁসছে সে। ডান হাতে থাকা পাইপটাতে বারবার টান দিচ্ছে, কখন নিভে গেছে ওটা খেয়ালও নেই তার।
“এফবিআইয়ের রিড টেকনিকে নয়টা ধাপ আছে। প্রথমটা হলো ‘পজিটিভ কনফ্রন্টেশন’ অর্থাৎ সাসপেক্টের মনোযোগ আকর্ষণ করা। তুমি আমাকে সিগার আর কফি অফার করে খুব ভালোভাবেই আমার মনোযোগ আকর্ষণ করতে পেরেছিলে। এরপর রিড টেকনিকের দ্বিতীয় ধাপ অনুযায়ী তুমি যখন গল্প শুনতে চাইলে ওটাকে বলে ‘থিম ডেভলপমেন্ট’। কি ঠিক বলছি না?” ফাত্তাহ প্রশ্ন করলেও প্রফেসর কোনো জবাব দিল না।
এই থিম ডেভলপমেন্ট মানে পুরো ঘটনাটাকে তুমি কীভাবে সাজাচ্ছ এটাই হলো রিড টেকনিকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই স্টেজটার ওপরেই নির্ভর করে পুরো টেকনিকের সাফল্য। আর এ কারণে তুমি এই স্টেজেই সবচেয়ে বেশি সময় নিয়েছ। ধীরে ধীরে আমাকে একটার পর একটা প্রশ্ন করে আমার অতীত খুঁড়ে খুঁড়ে বার করেছ। তুমি চেষ্টা করেছ আমার পুরো জীবন এবং অপরাধের জগৎটাকে একটা ম্যাপিঙের মধ্যে নিয়ে আসার। ব্রিলিয়ান্ট প্রফেসর। সত্যি কথা হলো, তুমি কাজটাতে প্রায় সফল হয়েই যেতে যদি না আমি এই ব্যাপারগুলো আগে থেকেই জানতাম।”
“তুমি সবই যদি বুঝতে পেরেছ, তাহলে তুমি মাঝে মাঝে আমাকে অপমানজনক প্রশ্ন করে খুঁচিয়েছ কেন?” থমথমে গলায় জানতে চাইল প্রফেসর।
“কারণ সোজসুজি সব বলে গেলে তুমি আগেই সন্দেহ করতে। তাই বলার সাথে সাথে আমি তোমাকে বাধাও দিয়েছি। তবে তোমার থিম তুমি ঠিকই ডেভলপ করতে পেরেছ প্রফেসর। অথবা বলা চলে আমি তোমাকে ডেভলপ করতে দিয়েছি। কখনো ইমোশনাল আবার কখনো উত্তেজিত হয়েছি কিন্তু বেলা শেষে তোমার আর আমার কথোপকথনের জার্নিটা ঠিকই সাজাতে পেরেছিলে তুমি প্রফেসর। থিম ডেভলপ করার পর আসে ‘হ্যান্ডেলিং ডিনায়ালস’ এবং ‘ওভারকামিং অবজেকশন’। এই স্টেজে এসে তুমি যেকোনো ব্রিলিয়ান্ট ইন্টারগেটরের মতোই রিড টেকনিকটাকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিয়ে এই দুটো স্টেজকে একসাথে মিশিয়ে ফেলেছ। তুমি যখন একেবারেই হঠাৎ ব্যক্তিগত ব্যাপার থেকে রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ব্যাপারগুলোতে চলে গেলে আমি তখন বুঝতে পারছিলাম তুমি রিড টেকনিকের এই দুটো ধাপকে নিজের মতো সাজিয়ে ইমপ্রোভাইজেশন করছ। তুমি ওই দুটো স্টেজকে ফিউশন করে আমাদের কথোপকথনকে পরের দুটো স্টেজ ‘প্রকিরমেন্ট অভ অ্যাটেনশন’ এ নিয়ে গেছ আমাকে ধীরে ধীরে উত্তেজিত করে। এমনকি,” বলে সে নেতাদের মতো তার নখবিহীন একটা আঙুল তুলল। “এরপর তুমি যখন সবকিছুকে খুব দ্রুত গুছিয়ে নিয়ে কথোপকথনটাকে খুব ঠান্ডা মাথায় আমাকে ব্যক্তিগত মূল্যবোধের ব্যাপারগুলো থেকে শুরু করে বৃহত্তর মূল্যবোধের দিকে ধাবিত করছিলে আমি পরিষ্কার বুঝতে পারছিলাম তুমি এর পরের স্টেজ ‘প্যাসিভ মুড’-এ চলে গেছ। যেখান থেকে তুমি আমাকে এমন এক স্টেজে নিয়ে যাবে যেখানে ‘অলটারনেটিভ কোয়েশ্চেন’ থেকে সরাসরি আমার মৌখিক স্বীকারোক্তির দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে,” বলে সে তার ভালো চোখের চকচকে ধারালো দৃষ্টিটাকে একেবারে সরাসরি প্রফেসরের দিকে স্থির করে পুরানো সেই তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে বলে উঠল, “এবং তুমি আমাকে হতাশ করোনি। ঠিক তাই করেছ। আমার ওপরে তুমি একের পর এক চাপ সৃষ্টি করে এমন এক অবস্থায় নিয়ে গেছ কিংবা আমিই তোমাকে নিয়ে যেতে দিয়েছি যেখানে আমার স্বীকারোক্তি দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না,” একটানা বলে সে থেমে গেল।
“আহ্, প্রফেসর আমি জানি না এমনিতে তুমি কেমন মানুষ কিন্তু আজ রাতে তুমি ভয়াবহ নিম্নমানের কোনো থ্রিলার সিনেমার চাইতেও বোরিং ছিলে আমার কাছে। তুমি ভেবেছিল আমাদের সাধারণ কথোপকথনের ভেতরে ভেতরে তুমি আরেকটা মাইন্ড গেম খেলেছ। কিন্তু সত্যি কথা হলো খেলাটা তুমি না খেলছিলাম আমি,” এই পর্যন্ত বলে সে চুকচুক করে মুখ দিয়ে শব্দ করে বলে উঠল, “আহ্ প্রফেসর, আর সেই খেলায় সাংঘাতিকভাবে হেরে গেছ তুমি। তোমাদের দেশি ভাষায় যাকে বলে ‘গো-হারা হেরে গেছ,” ফাত্তাহর ফ্যাসফ্যাসে গলায় বিকৃত উল্লাস।
ফাত্তাহর কথা শেষ হতেই প্রফেসর ঝট করে উঠে দাঁড়াল। প্রায় ঝড়ের মতো এগিয় গেল ফাত্তাহর দিকে। নিজের দুই হাত ফাত্তাহর গলার একেবারে কাছে নিয়েও থেমে গেল সে। ঝড়ের বেগে নিঃশ্বাস ফেলছে প্রফেসর।
তার হাতের থেকে দুই ইঞ্চি দূরে থাকা ফাত্তাহর চোখে ঝিকঝিক করছে উত্তেজনা। “কাম অন, প্রফেসর। দেখাও তোমার বাহাদুরির কিছু নমুনা। কথায় তো পারলে না, এবার অন্তত একটু পুরুষত্ব তো দেখাও,” বলে সেও ঝট করে দাঁড়িয়ে প্রফেসরের মুখোমুখি সোজা হয়ে বলে উঠল, “নিজের ওই নিরাপত্তার ঘেরাটোপ ভেঙে বেরিয়ে আসো প্রফেসর। আমার জগতে একবার পা রেখে দেখো কতটা নগ্ন আর বীভৎস আমার এই জগৎটা। আর এই জগতে তোমার মতো লোকের ভুল করার কোনো উপায় নেই। কোনো সুযোগ নেই শিশুতোষ কর্মকাণ্ডের”
প্রফেসর এখনও হাত দুটো বাড়িয়েই রেখেছে। জোরে জোরে নিঃশ্বাসের সাথে মুখ লাল হয়ে উঠেছে তার। ফাত্তাহর গলা ধরতে গিয়েও ধরল না। ফাত্তাহর মুখে ফুটে উঠল বিকৃত হাসি।
ফুসস করে নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো শব্দ করে খুলে গেল দরজাটা। ঝড়ের বেগে ভেতরে ঢুকল দুজন কমান্ডো। ঢুকেই তারা এগিয়ে আসতে লাগল ওদের দুজনের দিকে। তাদের ঠিক পেছনেই আফসার আর আতিকুল আলম।
তাদের দিকে ফিরে প্রায় চিৎকার করে উঠল প্রফেসর, “আউট,” নিজের ঘুরিয়ে দরজার দিকে দেখিয়ে রাগের সাথে নির্দেশ দিল সে। “আউট, এখনও আমার কথা শেষ হয়নি।”
“স্যার,” আফসার কিছু একটা বলার চেষ্টা করছিল। প্রফেসর রাগের সাথে ধমকে উঠে বলে বসল। “এই মুহূর্তে বেরিয়ে যাও,” বলে সে একটু থেমে নিজের গলাটাকে সংযত করে বলে উঠল, “আমার কথা শেষ হয়নি। বেরোও তোমরা। প্লিজ।”
আফসার একবার তাদের দুজনকে দেখে নিয়ে আতিকুল আলমের দিকে দেখল। আতিকুল আলম হাতের ইশারায় তাদেরকে বেরোতে বলল। কমান্ডো দুজন আগে বেরিয়ে গেল। আফসার বেরোতে গিয়েও বলে উঠল, “স্যার, আমি ঠিক বাইরেই আছি,” কী বলবে বুঝতে না পেরে এটা বলেই সে বেরিয়ে গেল। আতিকুল আলম বেরোনোর আগে তার দিকে ফিরে দুবার মাথা নাড়ল। সে বেরোতেই ‘ফুসস’ শব্দ হয়ে দরজাটা বন্ধ হয়ে গেল।
প্রফেসর বড় করে দম নিয়ে নিজের চেয়ারটার কাছে এসে ওটাকে ঠিকঠাক করে বসে পড়ল। তারপর সময় নিয়ে সে যখন কথা বলল তার গলা অনেকটাই শান্ত হয়ে এসেছে। “বুঝলাম, তুমি আমার মাইন্ড গেইম পুরোটাই ধরতে পেরেছ এবং আমাকে বোকা বানিয়েছ,” বলে সে পাইপটাকে টেবিলের ওপর থেকে উঠিয়ে নিল। “কিন্তু বোমা দুটোর অবস্থান তো তুমি ঠিকই বলে দিয়েছ—” কথাটা শেষ না করে প্রফেসর জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল ফাত্তাহর দিকে।
ফাত্তাহ আফসোসের সাথে একবার মাথা নাড়ল। “প্রফেসর, প্রফেসর। তুমি বড় ভোলা। তুমি এখনও বুঝতে পারনি ব্যাপারটা,” বলে সে নিজের মুখটাকে আরেকটু সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে এলো।
“ওই বোমা দুটো ছিল স্রেফ আইওয়াশ, আসল বোমাটা এখনও অধরাই রয়ে গেছে। আমি ধরা পড়ার পর যখন বলেছিলাম অমি ঢাকায় দুটো বোমা সেট করেছি ব্যাপারটা স্রেফ ধোঁকা ছিল। বোমা আসলে আছে তিনটে,” বলে সে একটু থেমে হাসতে হাসতে যোগ করল। “তৃতীয় এবং সবচেয়ে বড় বোমাটা এখনও তার জায়গামতোই রয়ে গেছে। গল্পের মূল ভিলেনের মতো সময়মতো সে তার ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে হাজির হবে।”