প্রাচীন বাঙলার শাসনপ্রণালী

প্রাচীন বাঙলার শাসনপ্রণালী

আগেই বলেছি যে একেবারে গোড়ায় বাঙলার সমাজব্যবস্থা কৌমভিত্তিক ছিল। ঋগ্বেদ পড়লে বুঝতে পারা যায় যে, আর্যসমাজেও সেই ব্যবস্থা ছিল। এই কৌমভিত্তিক শাসনপদ্ধতি থেকেই রাজতন্ত্রের উদ্ভব হয়। তবে এটার উদ্ভব প্রাচ্যদেশের অসুরগণ কর্তৃকই সাধিত হয়েছিল; আর্যগণ কর্তৃক নয়। এটা ঐতয়ের ব্রাহ্মণ (১/১৪) খুব সরলভাবে স্বীকৃত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে—দেবগণের সঙ্গে অসুরদের যুদ্ধ চলছিল। অসুররা দেবগণকে পুনঃ পুনঃ পরাহত করছিল। দেবগণ বলল—আমাদের মধ্যে কোন রাজা নেই (অ-রাজত্বং) বলেই অসুররা আমাদের পরাহত করছে। অতএব অসুরগণের মতো আমাদেরও একজন রাজা নির্বাচন করা হউক। সকলেই এত রাজী হল (‘রাজ্যনাম করবামাহম ইতি তথেতি’)। অথর্ববেদেও বলা হয়েছে—প্রাচ্যদেশের সার্বভৌম নৃপতিকেই ‘একরাট’ বলা হয়। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে আর্যরা মাত্র রাজতন্ত্রের ধারণাটাই প্রাচ্যভারতের অসুরদের কাছ থেকে নেয়নি, সার্বভৌম ‘একরাট’-এর ধারণাটাই নিয়েছে।

বাঙলায় যে রাজতান্ত্রিক রাজ্যসমূহ ছিল, তা আমরা মহাভারত ও জাতকগ্রন্থ থেকেও জানতে পারি। শ্রীলঙ্কার ‘দীপবংশ’ ও ‘মহাবংশ’ নামে দুটি প্রাচীন গ্রন্থও এ সম্বন্ধে আলোপাত করে। এসব আমরা আগেই উল্লেখ করেছি।

দুই

বাঙলা মৌর্যসাম্রাজ্যভুক্ত হবার পর মনে হয়, মৌর্য শাসনপদ্ধতিই বাঙলা দেশ প্রচলিত হয়েছিল। কেননা, মহাস্থানগড়ের লিপিতে আমরা ‘মহামাত্র’ উপাধিধারী একজন মৌর্যরাজকর্মচারীকে উত্তরবঙ্গের পুন্ড্রবর্ধনে অধিষ্ঠিত দেখি। তবে উত্তরবঙ্গ ছাড়া, বাঙলার অন্যত্রও মৌর্যশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কিনা তার কোন সংবাদ আমাদের জানা নেই। বাঙলা, গুপ্তসাম্রাজ্যভুক্ত হবার পর বাঙলার মাত্র এক অংশই গুপ্ত সম্রাটগণের প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে ছিল। যে অংশ গুপ্তসম্রাটগণের অধীন ছিল, সে অংশ কতকগুলি নির্দিষ্ট শাসনবিভাগে বিভক্ত ছিল, যথা—ভুক্তি, বিষয়, মণ্ডল, বীথি ও গ্রাম। ভুক্তিই ছিল সবচেয়ে বড় শাসনবিভাগ। এক একটা ভুক্তি বিভক্ত ছিল কতকগুলি ‘বিষয়’-এ। আবার ‘বিষয়’গুলি বিভক্ত ছিল কতকগুলি ‘মন্ডল’-এ। এক এক ‘মন্ডল’ বিভক্ত ছিল কতকগুলি ‘বীথিতে’। আবার বীথিগুলি বিভক্ত ছিল কতকগুলি ‘গ্রাম’- এ। গ্রামই ছিল ন্যূনতম শাসনবিভাগ।

গুপ্তরাজগণের সময় ভুক্তি ছিল মাত্র দুটি-পুণ্ড্রবর্ধন ভুক্তি ও বর্ধমান ভুক্তি। এ দুটি ভুক্তি যথাক্রমে স্বাধীনতা পূর্ব যুগের রাজশাহী ও বর্ধমান ডিভিসনের সীমারেখার প্রায় সমান ছিল। প্রতি ভুক্তির এক একটি অধিকরণ থাকত, এবং তার শাসনভার ন্যস্ত ছিল এক এক জন রাজকর্মচারীর ওপর। প্রতি ভুক্তির শাসনকর্তার নাম ছিল ‘উপরিক মহারাজ’। সম্রাট নিজেই ভুক্তির শাসনকর্তাদের নিযুক্ত করতেন।

পুণ্ড্রবর্ধন-ভুক্তি তিনটি বিষয়ে বিভক্ত ছিল—কোটিবর্ষ, খটপর বা খরপর ও পঞ্চনগরী। ভুক্তির অধিকরণে নানারূপ আমলা ছিল। মল্লসারুল অভিলেখে আমরা এরূপ অনেক আমলার নাম উল্লিখিত দেখি, যথা ‘ভোগপটিক’ ‘পট্টলক’, ‘চৌরদ্ধরণিক’, ‘অবসথিক’ ‘হিরণ্যাসমুদয়িক’ ‘ঔড্রঙ্গিক, ‘ঔরস্থনিক’ ‘কর্তৃকৃতিক’ ‘দেবদ্রোণিসম্বন্ধ’ ‘কুমারামাত্য, অগ্রহারিক, ‘বিষয়পতি’ ইত্যাদি।

বিষয়গুলির শাসনকর্তা ছিল বিষয়পতি। বিষয়পতিগণ উপরিক কর্তৃকই নিযুক্ত হতেন, কিন্তু কোন কোন সময় সম্রাটও তাঁদের নিযুক্ত করতেন। বিষয়পতিরও নিজ অধিকরণ থাকত। তার নাম ছিল বিষয়াধিকরণ। বিষয়াধিকরণের আমলারা। নানা নাম বহন করতেন, যথা ‘নগরশ্রেষ্ঠী’, ‘প্রথম কুলিক’, প্রথম কায়স্থ’ প্রথম সার্থবাহ’ ইত্যাদি।

বীথি বিভাগেরও নিজস্ব অধিকরণ থাকত। এর আমলাদের নাম হত মহত্তর ‘খড়গি ও ‘বহনায়ক’। গ্রামগুলিরও অধিকরণ থাকত। গ্রামের অধিকরণকে ‘অষ্টকুলাধিকরণ’ বলা হত। এগুলি আজকালকার দিনের পঞ্চায়েতের সামিল ছিল। এ সকল অধিকরণে থাকত ব্ৰাহ্মণ, মহত্তর, কুটুম্ব, গ্রামিক ইত্যাদি। গ্রামের প্রধান ব্যক্তিই গ্রামিক নির্বাচিত হতেন।

গুপ্তসম্রাটগণের সরাসরি অধীন ভূভাগ উপরে বর্ণিত শাসনপদ্ধতি অনুযায়ী শাসিত হত। যেসব ভূভাগ সরাসরি তাদের অধীনস্থ ছিল না, সেগুলির শাসনভার সামন্ত-রাজগণের হস্তে ন্যস্ত হত। গুপ্তসাম্রাজ্যের অবনতির সময় এই সকল সামন্তরাজ্য স্বাধীনতা ঘোষণা করে ‘মহারাজাধিরাজ’ বা ‘ভট্টারক’ উপাধি গ্রহণ করে, ও নিজ নিজ অঞ্চলে স্বাধীন রাজ্য স্থাপন করে। ৫০০ খ্রিস্টাব্দ হতে ৭৫০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বাঙলার নানাস্থানে এরূপ স্বাধীনরাজ্যের অভ্যুত্থান ঘটেছিল। এই সকল স্বাধীন রাজ্যে গুপ্তসম্রাটগণের প্রবর্তিত শাসণপ্রণালী অব্যাহত ছিল। তবে ‘বিষয়’গুলি গুপ্তসম্রাটগণের সময় যেভাবে শাসিত হত, ঠিক সে ভাবে হত না। বিষয়গুলি শাসনভার ‘জ্যেষ্ঠকায়স্থ’ বা ‘জ্যেষ্ঠকরণিক’ নামধারী প্রধান কর্মচারীদের দ্বারা সম্পাদিত হত।

গুপ্তযুগে ‘পুস্তপাল’ নামে একজন কর্মচারীর আমরা উল্লেখ পাই। তাঁর কাজ ছিল জমি বিক্রয়যোগ্য কিনা সে সম্বন্ধে অনুসন্ধান করা। অনুসন্ধানের পর তিনি যদি দেখতেন যে জমি বিক্রয়যোগ্য তা হলে গ্রামের ‘মহত্তর’ (মাতব্বর) ও কুটুম্বগণের (সাধারণ গৃহস্থ) সামনে মাপ-জোখ করে জমি বিক্রয় করা হত।

তিন

পালবংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপাল নিজে ‘প্রকৃতিপুঞ্জ’ কর্তৃক নির্বাচিত হলেও তিনি বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্রের প্রবর্তন করেছিলেন। গুপ্তযুগের ন্যায় পালযুগেও ভুক্তি, বিষয় মণ্ডল প্রভৃতি শাসনবিভাগ বজায় ছিল। তবে পুণ্ড্রবর্ধনভুক্তি ও বর্ধমান ভুক্তি ছাড়া, বাঙলায় আর এক ভুক্তির সৃষ্টি হয়েছিল। সেটা ‘দণ্ডভুক্তি’ (বর্তমান মেদিনীপুরের অংশবিশেষ) এছাড়াও উত্তর বিহারে ‘তীরভুক্তি’ (ত্রিহুত), দক্ষিণ বিহারে শ্রীনগরভুক্তি ও আসামে’ ‘প্রাগজ্যোতিভুক্তি’র উল্লেখ পাওয়া যায়।

বাঙলার ইতিহাসে পালরাজগণের আমলেই আমরা প্রথম ‘মন্ত্রী’ বা সচিব’ পদের উল্লেখ পাই। পালরাজগণের মন্ত্রিগণ অসীম ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হতেন। তাঁদেরই পরামর্শ অনুযায়ী তাঁরা দেশশাসন করতেন ও সাম্রাজ্যিক অভিযানে লিপ্ত হতেন। পালরাজগণ নিজেরা বৌদ্ধ হলেও, তাঁদের মন্ত্রীরা ছিলেন ব্রাহ্মণ। গোড়ার দিকে এক শান্ডিল্য গোত্রীয় ব্রাহ্মণবংশকে আমরা পালেদের মন্ত্রী হিসাবে অধিষ্ঠিত থাকতে দেখি। এই বংশের গর্গ ধর্মপালের মন্ত্রী ছিলেন। গর্গের পুত্র দর্ভপাণি দেবপালের মন্ত্রী ছিলেন ও তাঁর পৌত্র কেদারমিশ্র বিগ্রহ-পাল ও নারায়ণপালের মন্ত্রী ছিলেন। কেদারমিশ্রের পর তাঁর পুত্র গুরবমিশ্রমও নারায়ণপালের মন্ত্রী হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে আর এক বংশীয় মন্ত্রীর পরিচয় পাই। ওই বংশের যোগদেব তৃতীয় বিগ্রহপাল ও বৈদ্যদেব কুমারপালের মন্ত্রী ছিলেন। পরে পালরাজবংশের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বৈদ্যদেব কামরূপে এক স্বাধীন রাজ্য স্থাপন করেছিলেন।

পালরাজগণের রাজ্ঞীরা অসীম ক্ষমতার অধিকারিণী হতেন। জ্যেষ্ঠপুত্র বয়ঃপ্রাপ্ত হলে তাকে ‘যুবরাজ’-এর পদে অভিষিক্ত করা হত। রাজার অন্যান্য সন্তানকে ‘কুমার’ বলা হত।

পালরাজগণ প্রধান মন্ত্রী ছাড়া অন্যান্য মন্ত্রিগণেরও পরামর্শ গ্রহণ করতেন। নানা অভিধাধারী এরূপ অনেক মন্ত্রী ছিলেন। যথা ‘মহাসন্ধিবিগ্রহিক’, ‘রাজামাত্য’, ‘মহাকুমারমাত্য’, ‘দুতক’, ‘মহাসেনাপতি, ‘মহাপ্রতিহার’ ‘মহাদণ্ড-নায়ক’ — মগাদৌসধনিক’ ‘মহাকৰ্তকৃতিক’, ‘মহাস্থপতলিক’, ‘মহাসর্বাধিকৃত’, ‘রাজস্থানীয়’, এবং ‘অমাত্য’। এছাড়া, রাজ্যের বিভিন্ন বিভাগের পরিচালনার জন্য ‘অধ্যক্ষ’ অভিধাধারী পরিচালকবর্গ ছিল, যথা ‘বলাধ্যক্ষ’ নৌকাধ্যক্ষ’ বা ‘নাবাধ্যক্ষ‍ ইত্যাদি। এছাড়া রাজত্ব আদায় ও অন্যান্য রাজকর্ম সমাধার জন্য নানা শ্রেণির রাজকর্মচারী ছিল, যথা ‘শৌল্কিক’, ‘ক্ষেত্রপ’, ‘ধর্মাধ্যক্ষ’ ইত্যাদি। সমসাময়িক লিপিসমূহ থেকে আমরা জানতে পারি যে পালরাজগণের আমলে সামন্তসংখ্যা বিশেষভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। তাঁরা নানা উপাধিবিশিষ্ট হতেন, যথা ‘রাজন’, ‘রাজন্যক’, ‘রাজনক’, ‘রানক’, ‘সামন্ত’, ‘মহাসামন্ত’, ইত্যাদি। অপারমান্দের শাসক লক্ষ্মীশূর কর্তৃক ‘অনন্তসামন্তচক্র’, আটবিক-সামন্তচক্র চূড়ামণি’ ইত্যাদি অভিধা বহন থেকে মনে হয় যে বিভিন্ন সামন্তবর্গের মধ্যে কোনরূপ মৈত্রীসঙ্ঘও ছিল। পালরাজগণের আমলে সামন্তসংখ্যা বৃদ্ধি নিঃসন্দেহের ইঙ্গিত করে যে সাধারণ প্রজারা ক্রমশ কেন্দ্রীয় সার্বভৌম রাজশক্তির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক হারিয়ে ফেলছিল। পালসাম্রাজ্যের পতনের এটাও মনে হয় একটা কারণ ছিল।

চার

পালরাজগণের শাসনপদ্ধতি পরবর্তীকালে সেন, কাম্বোজ, চন্দ্র ও বর্মবংশীয় রাজগণ গ্রহণ করেছিলেন। তবে কিছু কিছু পার্থক্যেরও সৃষ্টি হয়েছিল। আমলাতন্ত্র আরও বৃহদাকার ধারণ করেছিল, এবং অনেক নতুন রাজকর্মচারী সৃষ্ট হয়েছিল। আগে গ্রাম’ই সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম শাসনবিভাগ ছিল। কিন্তু এযুগে আমরা ‘গ্রাম’কে ‘পটক’ বা পাড়ায় বিভক্ত হতে দেখি। এছাড়া কোন কোন ভুক্তির সীমা বাড়িয়ে (যেমন পুন্ড্রবর্ধভুক্তির) বা হ্রাস করে নূতন ভুক্তি সৃষ্টি করা হয়েছিল। যেমন বর্ধমান-ভুক্তিকে খন্ডিত করে তার উত্তর অংশে কঙ্কাগ্রামভুক্তি সৃষ্টি করা হয়েছিল।

কেশবসেনের ইদিলপুর লেখা থেকে আমরা জানতে পারি যে, সেনরাজগণের একশত মন্ত্রী থাকত, এবং তাঁদের মধ্যে প্রধান মন্ত্রী ‘মহাসন্ধিবিগ্রহিক’ উপাধি বহন করতেন। মন্ত্রীবর্গের মধ্যে ‘মহামহত্তক’ বা ‘মহত্তক’ অভিধাধারীগণ বেশ গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থাকতেন। অন্যান্য মন্ত্রীরা নানা নামে অভিহিত হতেন। যথা ‘বৃহদ-উপরিক’, ‘মহাভৌগিক, ‘মহাভোগপতি’, ‘মহাধর্মাধ্যক্ষ’, ‘মহাসেনাপতি’, ‘মহাগণস্থ’, ‘মহাসমুদ্রিকৃত’, ‘মহাসর্বাধিকৃত, মহাবলাধিকরণিক’, ‘মহাবলকোষ্টিক’, ‘মহাকরণাধ্যক্ষ’, ‘মহাপুরোহিত’, ‘মহাতন্ত্রাধিকৃত’ ইত্যাদি। অনুমিত হয় যে তাঁরা শাসনতন্ত্রের বিভিন্ন বিভাগের অধিকরণসমূহের অধিকর্তা ছিলেন। সেনযুগের অধিকরণসমূহের অধিকর্তাদের অভিধা পাল-যুগের অধিকরণসমূহের অধিকর্তাদের অভিধাসমূহের সহিত তুলনা করার লক্ষ্য করা যায় যে উভয়ের মধ্যে একটা পার্থক্য ছিল। যেমন পালযুগের প্রধান বিচারপতিকে ‘মহাদন্ডনায়ক’ বলা হত; কিন্তু সেনযুগে তাঁকে বলা হত ‘মহাধর্মাধ্যক্ষ’। তবে সব নামই যে পরিবর্তন করা হয়েছিল, তা নয়। যেমন পালযুগের ন্যায় প্রধান হিসাব-রক্ষককে ‘মহাক্ষপটলিক’ বলা হত, এবং অনুরূপভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলা হত ‘মহামহত্তক’ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ‘মহাসন্ধিবি গ্রহিক’ ইত্যাদি। পররাষ্ট্রমন্ত্রীই ‘ছুতক’-এর কাজ করতেন। গুপ্তচর বিভাগের মন্ত্রীকে বলা হত ‘মন্ত্ৰপাল’ শান্তি-শৃঙ্খলা-রক্ষাকারী মন্ত্রীদের বলা হত ‘মহাপ্রতিহার’ চৌরোদ্ধরণিক’ ‘দন্ডপাশিক’ ও ‘চটভট’। প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধানকে বলা হত ‘মহাসেনাপতি’। এছাড়া অন্যান্য বিভাগের অধিকর্তাদের বলা হত ‘কোট্টপাল’ বা ‘কোট্টপতি’, ‘মহাব্যূহপতি’, ‘নৌবলাধ্যক্ষ’, ‘বলাধক্ষ’, “হস্তি -অশ্ব-গো-মহিষ-অজবিকাধ্যক্ষ, মহাপিলুপতি, ‘মহাগণস্থ’ ‘মহাবলাধিকরণনিক’ ‘মহাবলকোষ্টিক ও বৃদ্ধবনুস্ক’। পাল ও সেনবংশীয় রাজাদের শক্তিশালী বৃহৎ নৌবহর ছিল এবং সম্পর্কেও বহু কর্মচারী ছিল।

পাল ও সেনবংশীয় রাজাদের আমলে বাঙলায় যে এক সুদৃঢ় এবং সুসংবদ্ধ শাসনপ্রণালী ছিল, যে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *