৫. মৃত্যুটা ইনসিওর করা ছিল

০৫.

মৃত্যুটা ইনসিওর করা ছিল

বিকেলে বাড়ি ফিরে বারান্দায় বসে ছিলাম হাতে ইস্কির গ্লাস নিয়ে। মনে মনে ভাবছিলাম আমি একজনকে খুন করেছি। যদিও জানি যে প্ল্যানটার মধ্যে কোনো ফাঁক ছিল না, তবু আমার মনে হচ্ছিল যদি কোনো ভুল করে থাকি তাহলে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে যাবো।

একটা গাড়ি এসে দরজার কাছেদাঁড়ালো। শেরিফ জেফারসন গাড়ি থেকে নেমে আমার কাছে এলেন। ওঁকে খুব ক্লান্ত এবং উদ্বিগ্ন লাগছিল।

আমি দুটো হুইস্কি ঢেলে ওঁকে এক গ্লাস দিলাম।

তদন্তের ব্যবস্থা করেছি। জো পরশু থেকে ছুটিতে যাবে, তাই তাড়াতাড়ি করে নিতে হবে। কালকেই করবো। তোমাকে সাক্ষী দিতে হবে।

ঠিক আছে। আমি হাত দেখিয়ে চেয়ারে বসতে বললাম।

উনি বললেন, আমি প্রকৃত তথ্যগুলো সোজাসুজি জানতে চাই। ডাক্তার বলছে এটা দুর্ঘটনা, তোমার কি মনে হয়? আমার শিরদাঁড়ার মধ্যে দিয়ে একটা ভয়ের স্রোত বয়ে গেল।

আর কিছু হতে পারে না, আমি বললাম, এটা নেহাৎই দুর্ঘটনা।

উনি বললেন, এটা দুর্ঘটনা বলেই আমার মনে হচ্ছিল যতক্ষণ পর্যন্ত মিসেস ডেলানি ওঁকে ত্যাগ করে যাবার মতলব করেছিলেন। আমি একজন বাতিকগ্রস্ত পুরোনো পাপী। অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করতে করতে আমি চারিদিকে ঘুরে দেখছিলাম। মিসেস ডেলানি সমস্ত কাপড় জামা নিয়ে গিয়েছেন। আমার মনে হয় উনি যখন সকালের দিকে বেরিয়েছেন তখন আর ফিরবেন না বলেই বেরিয়েছেন।

অনেকক্ষণ ধরে আমি ওঁর মুখের দিকে চেয়ে চুপ করে রইলাম। তারপর বললাম, দুর্ঘটনায় হোক বা আত্মহত্যা করেই হোক যেভাবেই উনি মারা গিয়ে থাকুন তাতে কিছু যায় আসে না। জিনিসটা জটিল করে কোনো লাভ নেই। যদি উনি আত্মহত্যাই করে থাকেন তাহলে মিসেস ডেলানির পক্ষে তাতে অসুবিধা বাড়বে। আপনি বুঝতে পারছেন যে লোকে কত কি বলবে। কেন ওঁকে আরো কঠিন অবস্থায় ফেলবেন?

জেফারসন পাইপে ধোঁয়া ছাড়লেন।

আমি সবই জানি কিন্তু আমার কর্তব্য, ব্যাপারটার রেকর্ড পরিষ্কার রাখা। মিসেস ডেলানির মুখে চোট লাগলো কেমন করে? আমার মনে হয় কেউ খুব জোরে ওকে মেরেছিল, এবং সে ওঁর স্বামী ছাড়া আর কেউ হতে পারে না। এতেই মনে হয় ওদের বনিবনা ছিল না। এটা এমন ব্যাপার যে অনুসন্ধান করা উচিৎ। বুজ পারবে খুব তাড়াতাড়ি অনুসন্ধান করতে।

আমি বললাম, আপনি এখানকার ভারপ্রাপ্তকর্তা। আমার মনে হয় আপনি ব্যাপারটা নিয়ে বেশী বাড়াবাড়ি করছেন। আপনি কি সত্যিই মনে করেন, কেউ টি. ভি. সেটে স্ক্রু ড্রাইভার ঢুকিয়ে মরতে যায়? ডাক্তারের মতো আমিও নিশ্চিত যে এটা একটা দুর্ঘটনা।

উনি একটু ভাবলেন তারপর বললেন, মেয়েটাকে আমি পছন্দ করি। ওকে ঝামেলায় ফেলার মানে হয় না। যদি মিসেস ডেলানি স্বামীকে ছেড়ে গিয়েও থাকেন উনি পরে মত বদলে ছিলেন। এটা ওঁর স্বপক্ষে যাবে।

আমার সঙ্গে ওঁর মোড়ের মাথায় দেখা হয়েছিল। উনি ফিরেই আসছিলেন।

জেফারসন উঠে দাঁড়ালেন। ওকে খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছিল।

আমি এবার যাই। তুমি তদন্তের সময় এসো বেলা এগারটায়।

আমি যাবো।

আমরা গোধূলির আলোয় বাইরে বেরিয়ে এলাম। উনি চলে যাবার পর আমি ঘরে ফিরে গেলাম।

গিল্ডাকে টেলিফোন করতে ইচ্ছা হচ্ছিল কিন্তু সেটা নিরাপদ হবে না। সামনে দীর্ঘ রাত। যেহেতু ডেলানির মৃত্যু আমার বিবেকে নাড়া দিচ্ছিল, সেজন্য আমার খুব ভয় করছিল।

গ্লীন ক্যাম্পে রিক্রিয়েশন হলে তদন্তটা হলো। জনা বারো লোক ভেতরে বসে ছিল। গ্লীন ক্যাম্পে ডেলানিকে বিশেষ কেউ চিনত না। তার মৃত্যুর ব্যাপারে কারুর আগ্রহও ছিল না।

এগারোটা বাজতে পাচে আমি হলে ঢুকলাম। গিল্ডা এলো মিনিট খানেক পরে। ওর সঙ্গে একজন সুবেশ যুবক, আমি আগে ওকে দেখিনি। গিল্ডা এগিয়ে এসে যুবকটির সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। ওর নাম জর্জ ম্যাকলিন, ডেলানির অ্যাটর্নী, লস এঞ্জেলস থেকে এসেছে। ম্যাকলিন আমার সঙ্গে করমর্দন করলো।

এগারোটায় জেফারসন আর ম্যালার্ড এলেন। ওঁরা গিল্ডার সঙ্গে করমর্দন করলেন। ম্যাকলিনকে আর আমাকে দেখে মাথা নাড়লেন, তারপর বসে পড়লেন।

করোনার জো স্ট্রিংগার এসে ঘরের মাঝখানে টেবিলের পেছনে বসলেন। ছোটখাটো মোটা মর্যাদাপূর্ণ চেহারা তেমন বুদ্ধিদীপ্ত নয়। স্ট্রিংগারের বয়স সত্তরের কাছে। উনিকাজ শুরু করলেন। জেফারসন সাক্ষী দিলেন, উনি ডেলানিকে টি. ভির সামনে কি ভাবে মরে পড়ে থাকতে দেখেছিলেন। উনি স্ট্রিংগারকে বললেন যে, এতে কোনো গোলমাল নেই, ডাক্তার এটা সমর্থন করবেন। স্ট্রিংগার ডাক্তারকে ডাকলেন।

ডাক্তার সাক্ষীর চেয়ারে বসলেন। উনি বললেন যে ডেলানি প্রচণ্ড শক খেয়ে মারা গেছেন। নিঃসন্দেহ এটা একটা দুর্ঘটনা। উনি উল্লেখ করলেন যে ডেলানি একটা পুরো ইস্পাতের চেয়ারে বসে ইস্পাতের স্ক্রু-ড্রাইভার ব্যবহার করেছিলেন। এই অবস্থায় স্ক্রু-ড্রাইভারটা কোনো খোলা তারের সংস্পর্শে এলে এত প্রচণ্ড শক্ লাগবে যে, খুব স্বাস্থ্যবান লোকও মারা যাবে।

জো কিছু নোট করলেন, ডাক্তারকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি আমাকে ডাকলেন।

প্রথমেই তিনি আমাকে যা বললেন, তাতে আমার তিনভাগ কাজ হয়ে গেল। মিঃ রেগান, আপনি কি বলতে পারেন কিভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটলো?

আমি স্ট্রিংগারের টেবিলে গিয়ে টি. ভি. সেটটা এঁকে বোঝালাম তারটা কিভাবে খুলে গিয়েছিল, স্ক্রু-ড্রাইভার ঠেকে গিয়ে কিভাবে শ লাগতে পারে। আমি এও বললাম ডেম্পসির ছবি দেখার জন্য ডেলানি কতটা উৎসুক ছিলেন। আসলে লোকে বুঝতেই পারে না, চালু টি. ভি. তে হাত দিলে কি বিপদ ঘটতে পারে। আসলে কথা হলো উনি লোহার চেয়ারে বসে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে কাজ করতে গিয়েছিলেন, যার জন্য বাঁচবার কোনো সুযোগ-ই ছিল না।

স্ট্রিংগারকে দেখে মনে হলো উনি আমার সমস্ত কথা বিশ্বাস করেছেন। আমি যখন সীটে গিয়ে বসলাম, উনি তখন ম্যাকলিনকে জিজ্ঞেস করলেন তার কিছু বলার আছে কিনা।

জর্জ বললে সে কিছু বলতে চায় না, ঠিক আছে।

স্ট্রিংগার বললেন যে, দেখা যাচ্ছে ডেলানি দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলে রায় দিতে তার কোন দ্বিধা নেই। শেরিফ জেফারসন, ডাঃ ম্যালার্ড, ম্যাকলিন ও আমি গিল্ডার পেছন পেছন সবাই বাইরে এলাম প্রচণ্ড রোদের মধ্যে। স্ট্রিংগার গিল্ডাকে সমবেদনা জানালেন। জেফারসন বললেন, যদি আমি কিছু করতে পারি, মিসেস ডেলানি আমাকে বলবেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত হবো।

গিল্ডা তাকে ধন্যবাদ দিল। বলল যে ম্যাকলিনই সব কিছুর ব্যবস্থা করতে পারবে।

ওঁরা চলে যাবার পর শুধু গিল্ডা আর আমি একা রইলাম। এখন আমার মন থেকে সব ভয় চলে গিয়েছিল। যেমনটি হবে বলে আমার প্ল্যান ছিল, ঠিক তেমনি হয়েছে সব কিছু।

গিল্ডা আমাকে বললো, ঐ টি. ভি সেটটার তো দাম দেওয়া হয়নি, উনি দিয়েছিলেন কি? তুমি ওটা নিয়ে যেও।

ঠিক আছে পরশু এসে নিয়ে যাবো, আর কিছু?

সে মাথা নাড়লল, মিঃ ম্যাকলিন সব কিছুর ব্যবস্থা করবেন।

আমি গিল্ডাকে বললাম, একমাস এখন আমাদের দুরে থাকতে হবে। আমার মনে হয় তোমার লস এঞ্জেলসের কোনো হোটেলে চলে যাওয়াই ভাল। মাস খানেক পর আমার এখানকার ব্যবসা গুটিয়ে তোমার কাছে চলে যাব। কোথাও চলে যাব আমরা নিউইয়র্ক বা আর কোথাও, নতুন করে শুরু করবো। আমি দোকান খুলবো। লস্ এঞ্জেলস থেকে আমায় চিঠি লিখো। টেলিফোন করো না।

তাহলে পরশু দেখা হচ্ছে। গিল্ডা রাস্তা পেরিয়ে বুইকটার কাছে গেল।

হঠাৎ পকেটে হাত দিয়ে কটা কাগজ পকেটে ঠেকলো, দেখলাম দুটো চিঠি, যে দুটো পিওন আমায় ডেলানিকে দিতে বলেছিল, ভুলেই গিয়েছিলাম।

আমি ছুটে গিয়ে গিল্ডাকে চিঠি দুটো দিয়ে বললাম যে, কাল এসেছে দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। গিল্ডা চলে গেল। একমাস অপেক্ষা করা কিছু বেশি নয়, তারপর আমাদের সামনে রয়েছে একটা নতুন উদ্দীপনাময় জীবন।

যেভাবে বলে রেখেছিলাম সেইভাবেই টি. ভি. সেটটা আনবার জন্য আমি ব্লু-জয় কেবিনে গেলাম। গাড়ি থেকে নামতে নামতে গিল্ডা বারান্দায় বেরিয়ে এল। ওর পরনে কাউবয় শার্ট আর চাপা প্যান্ট।

ওকে বিবর্ণ দেখাচ্ছে, চোখের নীচে কালি পড়েছে, রাত্রে ঘুম হয়নি নিশ্চয়। আমি উঠে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। ও আমাকে সরিয়ে দিলো।

আমি ওর দিকে তাকিয়ে বুঝলাম কিছু গণ্ডগোল হয়েছে। আমার হঠাৎ খুব ভয় করে উঠলো।

টেরি…খারাপ খবর।

কি ব্যাপার?

আমাদের কোনো টাকা নেই।

 চমকে তাকালাম। এ কথা শুনবো বলে আশা করিনি।

মিঃ ম্যাকলিন কাল এসেছিলেন। উনি ভেবেছিলেন আমি জানি। জ্যাক ভীষণ টাকা উড়িয়েছে। ম্যাকলিন সাবধান করতেন, ও শোনেনি। এখানকার ভাড়াটা অদ্ভুত বেশি। কোনদিনই ওর বিশেষ কিছু ছিল না যদিও ও বলতে অনেক আছে। যে টাকাটা ও রেখে গেছে তাতে ওর দেনাই শোধ হবেনা। টেরি, আমি খুবই দুঃখিত। এখনও বুঝে দেখো আমাকে বিয়ে করে তোমার কোনো লাভ নেই। তোমাকে আমার কিছুই দেবার নেই। ব্যবসা শুরু করতে না পারলে বৌ নিয়ে তুমি জড়াতে চাও না, আমি জানি। আমাকে ভুলে যাওয়াই তোমার পক্ষে ভালো হবে।

আমি বললাম, এটা খুবই দুঃসংবাদ বটে। ডেলানির টাকা নিয়েই নতুন করে শুরু করব ভেবেছিলাম। কিন্তু গিল্ডা আমি তোমায় ভালোবাসি। কিছু একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে। আমি তোমাকে বিয়ে করবো। আমাকে একটা চাকরি নিতে হবে। প্রথমে একটু অসুবিধে হলেও পরে ঠিক হয়ে যাবে।

আমি উঠে গিয়ে গিল্ডার পাশে বসলাম। গিল্ডা আমি তোমাকে চাই। হয়ত এটাই ভালো হলো। এই টাকাটা নিতে আমার দ্বিধা হচ্ছিল। আমাকে সুযোগ দাও আমি সব ঠিক করে দেব।

মুখটা অন্যদিকে করে গিল্ডা কাঁদতে লাগলো। কারীর বেগ কমলে ও আমাকে বললো, আমি ভাবছিলাম এটা দুর্ঘটনা না, আত্মহত্যা। তোমার কি মনে হয় দেনাশোধ করার জন্য ও নিজেই এটা করেছে?

ও যা বলছিল আমি সবটা না শুনলেও ওর শেষ কথাটায় চমকে তাকালাম।

দেনা শোধ–তার মানে?

ও একটা ইনসিওরেন্স করেছিল, আমি নিজেই জানতাম না। মিঃ ম্যাকলিন কাল আমায় বলেছে। ওর মধ্যে দুর্ঘটনার কথাও আছে। পাঁচ হাজার ডলার। উনি বলেছেন, টাকাটা পাওয়া যাবে। এতে জ্যাকের দেনা শোধ হয়েও কিছু থাকবে। আমি কোনো একটা কাজ না পাওয়া পর্যন্ত তাতে চলবে।

আমি অবাক হয়ে গেলাম মনে হলো হৃৎপিণ্ডটা যেন উল্টে গেছে, সেটটা ইনসিওর করা জানতাম না তো!

সেটটা তুমি দেবার পর, একজন এসেছিল। তার নাম বোধহয় লাউসন, ও-ই ইনসিওর করিয়েছে।

আমার মনে পড়লো ডেলানির নামটা লাউসন আমার কাছেই পেয়েছিল। কিন্তু ওটা তো সেটের জন্য। তোমার স্বামীর দুর্ঘটনার জন্য তো নয়?

হ্যাঁ, তাই। সেটের মালিক এতে দুর্ঘটনায় পড়লে তাও পলিসির মধ্যে আছে। মিঃ ম্যাকলিন তাই বলছেন।

হঠাৎ আমার বরফের মত ঠাণ্ডা লাগলো। আমার সমস্ত কিছু ভেঙে পড়ছে মনে হলো। ভয়ে অসাড় হয়ে গেলাম আমি। এর মানে তদন্ত হবে। জেফারসন আর ডাঃ ম্যালার্ডের মত সব কিছু সহজে ইনসিওরেন্স কোম্পানি মেনে নেবে না।

এই পলিসিটার জন্য আমার জীবন বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে। আমি বললাম, গিল্ডা তদন্ত হতে পারে। এটার দাবী না করাই বোধহয় ভালো। এটা নিয়ে হৈ-চৈ করা ঠিক হবে না। ওরা তোমার আমার ব্যাপারটা জেনে ফেলতে পারে।

গিল্ডা চমকে তাকালো, কিন্তু পাঁচ হাজার ডলার! তিন হাজার তো দেনাই রয়েছে। আমাকে করতেই হবে।

আমি বললাম ওরা টাকা না দেবার যে কোনো ছুতো বার করতে চাইবে। ওরা প্রমাণ করতে চাইবে এটা আত্মহত্যা। তা হলে ওদের টাকা দিতে হবেনা। আত্মহত্যা করার একটা ভালো কারণ ওরা বার করতে চাইবে। আমরা পরস্পরের প্রতি আসক্ত এটা দেখাতে পারলে ওদের খুব সুবিধে হবে। ওদের যদি সন্দেহ হয় যে আমরা প্রেম করি তাহলে ওরা নেকড়ের মতো আমাদের ছিঁড়ে খাবে। এতে কোনো ভুল নেই। ওরা জিতবে বলছিনা কিন্তু তোমাকে মামলা লড়তে হবে। ওদের উকিল তোমার কাছ থেকে ঘটনাটা বার করে আমাকেও কোর্টে হাজির করাবে। খবরের কাগজের প্রথম পাতায় আমাদের নিয়ে রসের গল্প বের হবে।

গিল্ডা আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে ছিল যেন আমি পাগল। আমি ওকে বুঝিয়ে দিলাম যে দাবীটা না মেটা পর্যন্ত আমি দূরে দূরেই থাকবো।

লস্ এঞ্জেলসে আমাদের দেখা করা চলবে না। দাবী তোলর পরে ইনসিওরেন্সের লোক তোমার ওপর নজর রাখবে। আমাদের একসঙ্গে দেখলে ভালো হবে না। আমাদের প্রেমটা ওরা দাবীর বিরুদ্ধে লাগাতে পারে।

ও হতাশ ভাবে বললো, ঠিক আছে তুমি যা ভালো বোঝ কর। আমি উঠে পড়লাম, ও আমাকে জানালো যে ম্যাকলিন বলেছেন ইনসিওরেন্সের লোক না দেখা পর্যন্ত সেটটা রাখতে হবে। এটায় আমি আর একটা ধাক্কা খেলাম।

ঠিক আছে, তুমি তাহলে লস্ এঞ্জেলসের হোটেলে উঠে আমায় চিঠি লিখো। আমিও চিঠি লিখবো কিন্তু দেখা করবো না।

ঠিক আছে টেরি।

আমি ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলাম।