ঘর-সংসার
১. বিধাতা তাকেই অধিক পছন্দ করেন, যে তার নিজের ঘরকে ভালোবাসে।
–কার্ভেন্টিস
২. রাজাই হোক আর চাষাই হোক, সে-ই সুখী যে তার গৃহে শান্তি খুঁজে পায়।
–গ্যেটে
৩. গৃহে যদি সুখ থাকে তবে বাইরের জগৎকে সে দ্বিগুণ উৎসাহে কাছে টেনে নিতে সক্ষম হবে।
স্কট
৪. গৃহই আমাদের দেশের সমাজের ভিত্তি, গৃহকে যদি আমরা সহজ না করি, মঙ্গল করি, তাহাকে ত্যাগের দ্বারা নির্মল না করি, তবে অর্থোপার্জনের সহস্র নতুন পথ আবিষ্কৃত হইলেও দুর্গতি হইতে আমাদের নিষ্কৃতি নাই।
–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৫. শিশুদের অত্যধিক শাসন করা অমানবিক এবং গুরুতর অপরাধ।
–উইলিয়াম বেন
৬. সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে।
–প্রচলিত প্রবাদ
৭. যে-গৃহে হাসি আছে, সে-গৃহের রং উজ্জ্বল রূপালি।
বেন জনসন
৮. ভেবে দেখ ওরে মন এ সংসার পান্থশালা।
একদল আসে হায়
অন্যদল চলে যায়।
স্বার্থপূর্ণ এ জীবন দুদিনের খেলা।
কায়কোবাদ
৯. সংসারে যারা সবকিছুকে মেনে নেবার চেষ্টা করে, তাদের দুঃখ নেই।
–সুইফট
১০. যারা সন্ন্যাসী হয়েছেন–সংসারের বন্ধন হতে আপনি মুক্ত হয়েছেন তাঁরা বনে গিয়ে ঈশ্বরের ধ্যানে নিযুক্ত হন, এটা বিচিত্র কথা নয়। কিন্তু যারা স্ত্রী-পুত্র-পরিবার পিতামাতার সমস্ত কাজ করে মনে মনে ঈশ্বরকে স্মরণ করতে পারে–তাদের প্রতি ভগবানের অধিক কৃপা প্রকাশ পেয়ে থাকে।
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ
১১. সংসার সাগরে
দুঃখ তরঙ্গের খেলা
আশা তার একমাত্র ভেলা।
গিরিশচন্দ্র ঘোষ
১২. অসতী স্ত্রীলোক বাপ-মা ও সমস্ত পরিবারের ভেতর থেকেও সংসারের কাজকর্ম করে, কিন্তু তার মন পড়ে থাকে সেই উপপতির প্রতি। হে সংসারী জীব, মন ঈশ্বরে রেখে তুমিও বাপ-মা পরিবারের কাজ কোরো।
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ
১৩. সংসার মানে ব্যর্থ বাসনা, বেদনার
জলাভূমি,
সংসার মানে সংসার ভাঙা, সংসার
মানে তুমি।
–নির্মলেন্দু গুণ
১৪. সংসারিক কর্তব্যপালনই প্রকৃতপক্ষে ধর্মকার্য। দুনিয়া চোখের সামনেই তো পড়ে রয়েছে। কেতাবের চেয়ে দুনিয়া থেকে মানুষের শেখবার আছে বেশি।
–আলমগির
১৫. সংসার যে কি ভয়ানক জায়গা দুঃখেকষ্টে না পড়লে বোঝা যায় না। দুঃখীকে কেউ দয়া করে না, সবাই ঘৃণা করে।
বিভুতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
১৬. প্রত্যেক অতিথি একে অপরকে অপছন্দ করে আর অতিথিসেবক সবাইকে অপছন্দ করে থাকে।
আলবেনীয় প্রবাদ
১৭. যত প্রকার বন্ধন আছে তার মধ্যে সবচেয়ে মধুর বন্ধনই হলো অতিথি আর অতিথিসেবকের মধ্যে।
জর্জ ডব্লিউ রাসেল
১৮. প্রথম দিন যিনি অতিথি, দ্বিতীয় দিনে তিনি বোঝা এবং তৃতীয় দিনে তিনি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ান।
ল্যাবোলাই
১৯. যিনি কারও বাড়িতে দীর্ঘদিন আতিথ্য গ্রহণ করেন, তিনি শুধু নির্বোধই নন, চূড়ান্তরূপে অসামাজিকও।
–সৈয়দ সব্যসাচী
২০. কারও বা থাকে দাবি, কারও থাকে দায়; এই দুই নিয়ে সংসার।
– –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২১. হাসিখুশি প্রাণবন্ত গৃহের অনেক শত্রু থাকে।
–অ্যারন বার
২২. সেই গৃহই ভালো যে-গৃহে নিরাপত্তা আছে।
–জর্জ কোলম্যান
২৩. দূরত্ব কখনো রক্তের সম্বন্ধ ভাঙতে পারে না–তাই ভাই সবসময় ভাই থাকে।
–কেবলে
২৪. ভাইয়ের সঙ্গে ভাইয়ের রক্তের সম্পর্ক। যতই মনোমালিন্য আর শত্রুতা হোক ভাইয়ের বিপদে ভাই চুপ করে বসে থাকতে পারে না।
–সৈয়দ সব্যসাচী
২৫. একজন ভাই প্রকৃতিপ্রদত্ত বন্ধু।
–জে. বি. লিগয়
২৬. মানুষেরা সবাই একে অপরের ভাই।
–জাঁ পল সার্জ
২৭. যার কোনো ঋণ নেই এবং ঘরে সুখ আছে, দরিদ্র হলেও তিনিই পৃথিবীতে সর্বাপেক্ষা সুখী ব্যক্তি।
–বি. সি. রায়
২৮. জগতের দরিদ্ররূপে ফিরি দয়া তরে
গৃহহীনে গৃহ দিলে আমি থাকি ঘরে।
–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২৯. যত দীনই হোক না, গৃহের মতো আশ্রয় কোথাও নেই।
–পেনে
৩০. সংসার কেমন? যেমন–আমড়া। শাঁসের সঙ্গে খোঁজ নেই। কেবল আঁটি আর চামড়া–খেলে হয় অম্লশূল।
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ
৩১. সংসারী যদি জীবন্মুক্ত হয়, সে মনে করলে অনায়াসেই সংসারে থাকতে পারে। যার জ্ঞানলাভ হয়েছে, তার এখানে-সেখানে নেই, তার সব সমান।
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ
৩২. আকৃতি ভিন্ন ধরনের হলেও গৃহ গৃহই।
এন্ডি উল্যাং
৩৩. বিচিত্র সংসার। এখানে পাপের প্রলোভন, শোকের হুতাশন, কুসংসর্গের মাদকতা, লালসার প্রবণতা এবং ইন্দ্রিয়গণের উত্তেজনায় নিত্যই মানুষের পদস্খলন ঘটিতেছে, নিত্যই আমরা ধনের লোভে আকাক্ষার তাড়নায় সম্মানের আশায় পাপপঙ্কে ডুবিতেছি। এই পরীক্ষা পারাবার উত্তীর্ণ হতে অতি বড় বীরপুরুষ কম্পিত হন, অনেক সময়ই মানুষ লক্ষ্যহারা হইয়া কষ্ট পায়, আত্মনাশ করে।
শেখ ফজলল করিম
৩৪. স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার পিছনে কামনা আছে, ছেলের প্রতি ভালোবাসার পিছনে আমাদের উচ্চাশা আছে, কিন্তু মেয়ের প্রতি ভালোবাসার পিছনে কিছুই নেই।
শংকর
৩৫. ভালোবাসা দিয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে জয় করা যায়।
এডিসন
৩৬. যে-মেয়ের কর্তব্যজ্ঞান নেই, সে কখনো সুগৃহিণী হতে পারে না।
–বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন
৩৭. সংসারের শান্তির জন্য স্বামীকে বধির এবং স্ত্রীকে অবশ্যই অন্ধ হতে হবে।
উরিয়ানো
৩৮. সংসার একটি বিশাল যুদ্ধক্ষেত্র। এখানে আমাদের প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়।
বি. সি. রায়
৩৯. নিজের সংসারে সুশাসন যদি প্রতিষ্ঠা করা যায়, তবে দেশের তথা বিশ্বের সুশাসন আপনা থেকেই প্রতিষ্ঠিত হবে।
–ভবেশ রায়
৪০. মানুষের সংসারযাত্রা ক্ষণিক, অদ্ভুত, বৈচিত্র্যময়। কাঁটায় ঘেরা পোলাপ পাপড়ি। সারা সংসার যেন জাল, সংসারের মানুষ মন্ত্রমুগ্ধের মতো এই জাল পরিক্রমণ করছে। কেউ বিপাকে পড়ে, কেউ দাঁড়িয়ে দেখে, কেউ জড়িয়ে তলিয়ে যায়।
কাজী আফসারউদ্দিন আহমদ
৪১. নিজের গৃহ, নিজের গৃহ বলে চিৎকার করার কিছু নেই। কারণ তোমার ঘরেই তুমি অতিথি।
সি. এস. কালভারলি
৪২. যারা সংসারকে মায়ার খেলা বলে প্রচার করে তারা নিঃসন্দেহে হতাশাবাদীদের দলভুক্ত।
বি. সি. রায়
৪৩. দুঃখদৈন্য থাকা সত্ত্বেও গৃহই মানুষকে নিয়ত হাতছানি দেয়।
–আফরা বেন
৪৪. গৃহগঠন এবং গৃহবিচ্ছেদ স্ত্রীলোকই করে থাকে।
–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৪৫. তেমনভাবে দেখতে গেলে পৃথিবীর সবাই একা। কাউকে দেখা যায় না। পাশে কাউকে পেতে চায় না। হয় অন্ধের মতো আগের লোকের লাঠি ধরতে হয়, নাহয় পিছনের লোকের হাত। একেই বলে সঙ্গতি। সভ্য মানুষের জীবনের সবটাই সঙ্গতি। এই সঙ্গতিকেই বলে সংসার।
–বিমল কর
৪৬. দুঃখদৈন্য থাকা সত্ত্বেও গৃহই একমাত্র শান্তির স্থল।
উইল কারলটিন
৪৭. যারা সংসার-বন্ধন কেটে পালাতে পারে তারাই মুক্ত জীব।
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ
৪৮. সংসার কি ছাড়তে হয়? সংসারে থেকে সাধনা করতে করতে সংসার আপনিই ছেড়ে পালায়।
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ
৪৯. আমাদের গৃহ ছিল স্বর্গে আর তার উত্তরাধিকারীদের গৃহই তাদের জন্য স্বর্গ।
–হেয়ার
৫০. দুঃখ ঘৃণা এবং ভয়কে পরিহার করতে পারলে সংসারে অশান্তি দূর হয়।
–জেফারসন
৫১. বাপ-মা উভয়েই হইয়া উঠিলে ছেলের পক্ষে সুবিধা হয় না।
–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৫২. গৃহের শান্তি স্বর্গের চেয়ে কম নয়।
–গোল্ডস্মিথ
৫৩. গৃহে শুয়ে থাকার নিরাপত্তা বেশি আর গাছের নিচে শুয়ে থাকার আনন্দ বেশি।
ভিকটর হুগো
৫৪. সংসারীর জ্ঞান আর সর্বত্যাগীর জ্ঞানে অনেক তফাত। সংসারীর জ্ঞান দীপের আলোর মতো; ঘরের ভিতরটাই আলো হয়, নিজের ঘরকন্না ছাড়া আর কিছুই বুঝতে পারে না। কিন্তু সর্বত্যাগীর জ্ঞান আলোর মতো। সে-আলোকে ঘরের ভেতর সব দেখা যায়।
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ
৫৫. যে গৃহকে ভালোবাসে না সে দেশকেও ভালোবাসতে পারে না।
কোলরিজ
৫৬. গৃহ ছেড়ে বাইরে সুখ-শান্তি প্রেম-ভালোবাসার অন্বেষণ করাটা নেহাত বোকামি।
অজ্ঞাত
৫৭. সংসার মানুষকে পোদ্দারের মতো বাজাইয়া লয়, শোকের ঘা, ক্ষতির ঘা, মুক্তির লোভের ঘা দিয়া। যাদের সুর দুর্বল পোদ্দার তাহাদিগকে টান মারিয়া ফেলিয়া দেয়।
–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৫৮. প্রত্যেক মানুষই এই সংসারে অভিশাপ নিয়ে জন্মায়। কিসে অভিশাপ? যা সে হতে চায় না তাই তাকে হয়, যা সে হতে চায় তা সে কোনোদিনই হতে পারে না।
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
৫৯. গৃহকে আনন্দময় করিবার দায়িত্ব প্রধানত নারীর হইলেও এ কার্যে স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের সহযোগিতা নিতান্ত প্রয়োজন। বাসগৃহ ও শস্যাদি পরিপাটি রাখা, খাদ্যদ্রব্য রুচিকর করিয়া রান্না করা, শৃঙ্খলা ও মিতব্যয়িতার সহিত সংসার পরিচালনা করা, নিজের দেহ ও পোশাক-পরিচ্ছদকে সুশ্রী ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ইত্যাদি কার্য স্ত্রী সামান্য চেষ্টাতে নিজেই সম্পাদন করিতে পারে। সাধ্যমত প্রসাধনক্রিয়াদি দ্বারা নিজের রূপ যৌবনকে স্বামীর চক্ষে লোভনীয় রাখিবার চেষ্টা করা প্রত্যেক স্ত্রীর উচিত।
–আবুল হাসনাত
৬০. মানুষের বাসগৃহ তা যত বড়ই হোক না কেন তা মূলত গৃহই।
–কিথ প্রিক্টন
৬১. তুমি বাইরে বেরিয়ে এসো। সকলের মাঝখানে। চেয়ে দেখো কী কঠোর সংসার। তোমার চারদিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, চারদিকে তোমার বিভিন্ন শক্তির ঘাত-প্রতিঘাত। এই জয়-পরাজয়ের জুয়াখেলায় তুমি আপন সংকল্পে স্থির হয়ে নিজের পথ বার করবে। মনে রেখো, এ সংসারে দুর্বলের ঠাঁই নেই, অযোগ্যকে ক্ষমা করে না কেউ। তুমি যদি নৈরাশ্য কিংবা বৈরাগ্য নিয়ে একপাশে সরে দাঁড়াও–সবাই তোমাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাবে।
–প্রবোধকুমার সান্যাল
৬২. আগে গৃহের প্রত্যেকের মন জয় করো। বাইরে সবার সাথে মধুর ব্যবহার করবে আর গৃহে অসন্তোষের আগুন জ্বালাবে এটা ঠিক নয়।
লুসিয়াস
৬৩. বেশি বয়সেই বিচিত্র বৃহৎ সংসারে তরঙ্গদোলার মধ্যেই স্ত্রী-পুরুষের যথার্থ স্থায়ী গভীর সংযত নিঃশব্দ প্রীতির লীলা আরম্ভ হয়–নিজের সংসার বৃদ্ধির সঙ্গে বাইরের জগৎ ক্রমেই বেশি বাইরে চলে যায় সেইজন্যই সংসার বৃদ্ধি হলে এক হিসাবে সংসারের নির্জনতা বেড়ে ওঠে এবং ঘনিষ্ঠতার বন্ধনগুলি চারদিক থেকে দুজনকে জড়িয়ে আনে।
–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৬৪. সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর পরিবার। সমগ্র সৃষ্টির ভিতর আল্লাহর নিকট অধিকতর প্রিয় সেই ব্যক্তি, যে তার নিজের পরিবারের প্রতি দয়ালু।
–আল-হাদিস
৬৫. বুঝে পড়ে দেখিলাম করি
তালিকা
সবচেয়ে সুমধুর ছোট শ্যালিকা।
–গোলাম মোস্তফা
৬৬. প্রত্যেকটি মানুষই এই সংসারে অভিশাপ নিয়ে জন্মায়। কিসের অভিশাপ? যা যে হতে চায় না তাই তাকে হতে হয়, যা সে হতে চায় তা সে কোনদিনই হতে পারে না।
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়