• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

অশুভ সংকেতের পর – কাজী মাহবুব হোসেন

লাইব্রেরি » কাজী মাহবুব হোসেন, জোসেফ হাওয়ার্ড » অশুভ সংকেতের পর – কাজী মাহবুব হোসেন
অশুভ সংকেতের পর - জোসেফ হাওয়ার্ড - অনুবাদ - কাজী মাহবুব হোসেন

সূচিপত্র

  1. অশুভ সংকেতের পর – কাজী মাহবুব হোসেন
  2. সূচনা

অশুভ সংকেতের পর – কাজী মাহবুব হোসেন

অশুভ সংকেতের পর – জোসেফ হাওয়ার্ড
অনুবাদ – কাজী মাহবুব হোসেন

প্রথম প্রকাশঃ মার্চ, ১৯৮৪

সূচনা

নয় বৎসর আগে:

প্রত্নতত্ত্ববিদ কার্ল বুগেনহাগেন বিচলিত।

দীর্ঘদিন যাবৎ ইঁদুরের মত মাটির তলায় বাস করতে হচ্ছে বলে তিনি বিব্রত নন, বরং এটাই তাঁর ভাল লাগে। পাতালপুরীর অন্ধকার ঠাণ্ডা ভাব আর স্যাঁতসেঁতে সোঁদা গন্ধ যেন তাঁর কাছে অতীতের একটা নিখুঁত ছবি তুলে ধরে। নিরিবিলি, শান্ত, চুপচাপ।

কিন্তু ইদানীং বুগেনহাগেন বিভিন্ন রকম অশুভ সংকেত পাচ্ছেন।

সহজে ভয় পাবার মানুষ তিনি নন-প্রচণ্ড আধ্যাত্মিক ক্ষমতাসম্পন্ন সিদ্ধপুরুষ বুগেনহাগেন। শয়তানের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়েই তাঁকে বাস করতে হচ্ছে মাটির নিচে।

ভয়ের সঙ্গত কারণ আছে বলেই তিনি ভীত। আধ্যাত্মিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে শয়তানকে হত্যা করতে গিয়ে তিনি বিফল হয়েছেন। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে অনেকগুলো হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে ইবলিস। বুগেনহাগেন এতদিন যা সন্দেহ করেছিলেন তাই একে একে সব সত্য প্রমাণিত হয়েছে। আর নিস্তার নেই তাঁর—এবার তাঁকেই হত্যা করে ইবলিস তার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করবে। মিশেল মরগ্যানকে বোঝাতে হবে। যে করেই হোক ইবলিসকে ঠেকাতেই হবে।

.

মিশেল মরগ্যানের সাথে এ ব্যাপারে আগেও একবার কথা হয়েছে তাঁর। সমুদ্রের ধারে একটা ক্যাফেতে তার সাথে আজ আবার মিলিত হয়েছেন বুগেনহাগেন।

প্রথমে এসব বিশ্বাস করেনি মিশেল। অবশ্য এজন্য তাকে দোষও দেয়া যায় না। তবে তার সুন্দরী সঙ্গিনী জোন বুগেনহাগেনের কথা বিশ্বাস করেছে। মেয়েটির উপস্থিতি চাননি বুগেনহাগেন। কিন্তু উপায় নেই। মিশেলের মত মেয়ে ঘেঁষা লোককে একা পাওয়া খুবই দুরূহ ব্যাপার। বারবার বলে দেয়া সত্ত্বেও প্রেমিকাকে সাথে নিয়ে এসেছে সে।

স্বাধীন সাংবাদিক জোন হার্ট। লালচে চুলের সাথে তার সুন্দর উজ্জ্বল চোখ তাকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

ওর স্থায়ী বাস লণ্ডনে। প্রেমিক মিশেলের সাথে কয়েকটা দিন কাটাবে বলে অশুভ সংকেতের পর আজই ইসরাইলে পৌঁছেছে সে। তার ভালবাসার মানুষ মিশেল।

মিশেলকে খবরের কাগজে যে হেড লাইনটা বুগেনহাগেন দেখাচ্ছেন সেটা কয়েকদিন আগে লণ্ডনে থাকতেই দেখেছে জোন। লেখাটার শিরোনামাঃ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লণ্ডনস্থ রাষ্ট্রদূত ও তাঁর স্ত্রী সমাহিত।

খবরটা মিশেলও দেখেছে। কিন্তু খবরটায় তার কৌতূহল জাগানোর মত কিছু সে খুঁজে পায়নি—এখনও পেল না।

‘হ্যাঁ,’ নির্লিপ্ত ইংরেজ অ্যারিস্টোক্র্যাট গলায় ভদ্রতা রক্ষা করে বলল, ‘অত্যন্ত রহস্যজনক।’

বিন্দুমাত্র না দমে বুগেনহাগেন তাকে এবার একটা আমেরিকান খবরের কাগজ বের করে দেখালেন। ওটার হেড লাইনঃ

‘রাষ্ট্রদূতের শোকার্ত পুত্রের এই অকাল ভাগ্যবিপর্যয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও তাঁর স্ত্রী মর্মাহত।

ছবিতে দেবদূতের মত চেহারার একটা ছেলের দিকে আঙুল দিয়ে দেখালেন বুগেনহাগেন। ‘চিনতে পার?’

আবার ভাল করে খুঁটিয়ে দেখে মাথা নাড়ল মিশেল

একটু দুঃসহ অস্থিরতা অনুভব করলেন বৃদ্ধ। তিনি ছাড়া গোটা পৃথিবীতে পুরো ঘটনা জানে এমন আর কেউ বেঁচে নেই। ‘য়িগেইলের দেয়ালটা দেখেছ তুমি?’ প্রশ্ন করলেন তিনি। উৎকণ্ঠায় তাঁর গলাটা একটু চড়া শোনাল।

‘মাত্র গত সপ্তাহেই না ওটা খুঁড়ে পাওয়া…’ কথা শেষ করতে না দিয়েই মিশেলকে থামিয়ে দিলেন তিনি। সময় খুব অল্প। ছবিটার ওপর আঙুল দিয়ে গুঁতো দিয়ে ধীর গলায় থেমে থেমে বললেন, ‘য়িগেইলের আঁকা শয়তানের চেহারা হুবহু এক! কোন সন্দেহ নেই—এই ‘ডেমিয়েন থর্ন’ ছেলেটাই স্বয়ং শয়তান!’

অবিশ্বাস্য মন্তব্যটা শুনে মিশেলের ভুরু উঁচু হল। শুনুন, আপনার…’ আরম্ভ করতেই আবার বাধা দিলেন বুগেনহাগেন।

‘তোমাকে বিশ্বাস করতেই হবে।’

বুগেনহাগেনের গম্ভীর আর দৃঢ় ভাব দেখে মিশেলের ঠোঁট থেকে কৌতুকের হাসিটা মিলিয়ে গেল। আজ পর্যন্ত যা কিছু মিশেল শিখেছে, তা বুগেনহাগেনই তাকে হাতে ধরে শিখিয়েছেন। তিনি যে অত্যন্ত স্থির মস্তিষ্কের লোক এটা ভাল করেই জানে মিশেল।

‘কিন্তু…’ এর পরে কি বলবে মনে মনে না ভেবেই শুরু করল মিশেল। ‘আমি আর্কিয়লজিস্ট—গোড়া ধার্মিক নই। ওসব বিশ্বাস করি না আমি।’ বলেই জোনের দিকে চেয়ে বুঝল ওখান থেকে কোন সমর্থন সে পাবে না-কার্ল বুগেনহাগেন একেবারে অভিভূত করে ফেলেছেন ওকে। ঘটনাটা কি, খুলে বলুন তো?’ বগেনহাগেনেরে দিকে ফিরে প্রশ্ন করল মিশেল

‘এক সপ্তাহ আগে অল্ সেইন্টস্ চার্চে নিয়ে ডেমিয়েনের বাবাই তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। কয়েকটা ছুরি ছেলেটার হৃৎপিণ্ডে গেঁথে দেয়ার চেষ্টা করেও শেষে ব্যর্থ হয়েছে সে।‘

শুনতে শুনতে নিজের অজান্তেই শিউরে উঠল জোন। কাগজটা হাতে নিয়ে আর একবার দেখে মিশেল বলল, ‘কিন্তু এখানে তো সেসব কিছু লেখেনি?’

বুক ভরে একটা শ্বাস নিয়ে বৃদ্ধ বললেন, ‘ছুরিগুলো আমি নিজেই রবার্ট থর্নের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। আমার বন্ধু ফাদার জেমস ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনিই ওই পুরানো আমলের ছুরিগুলো আমার বলে চিনতে পেরে মার্কিন এমব্যাসির মাধ্যমে সেগুলো পুলিশের হাত থেকে উদ্ধার করে আমার কাছে ফেরত পাঠাবার ব্যবস্থা করেন।

অখণ্ড নীরবতা। কেউ কোন কথা বলছে না। অবাক হয়ে বৃদ্ধের দিকে চেয়ে আছে মিশেল। কফির কাপটা তুলেছিল, ওটা হাতেই ধরা রয়েছে—চুমুক দিতেও ভুলে গেছে মিশেল।

‘অ্যামব্যাসেডরের নাম ছিল রবার্ট থর্ন,’ বলে চললেন বুগেনহাগেন। জোনের চোখ দুটো তাঁর মুখের ওপর গেঁথে রয়েছে। ‘রোমের হাসপাতালে তার নবজাত পুত্র প্রসবকালেই মারা গেছে জানিয়ে, তাকে তার স্ত্রীর মুখ চেয়ে আর একটা শিশু গ্রহণ করতে রাজি করায় শয়তান-সাধক এক প্রীস্ট। কিন্তু আসলে ওই শিশুটা ছিল পশু-গর্ভজাত শয়তানের দূত। কিছুই না জেনে লণ্ডনে নিজের ছেলের যত্ন দিয়েই তাকে মানুষ করতে থাকে তার স্ত্রী।’ একটু থেমে আবার বলতে শুরু করলেন কার্ল। কিন্তু কিছুদিন যেতেই ধীরে ধীরে ছেলেটার স্বরূপ প্রকাশ পেতে থাকল। থর্ন শেষ পর্যন্ত আমার কাছে সাহায্য চাইতে এল। তার মুখে সব ঘটনা শুনে আমার কিছুই বুঝতে বাকি রইল না। শয়তানের অশুভ শক্তিকে নির্মূল করার উদ্দেশ্যে ছুরিগুলো থর্নের হাতে তুলে দিলাম আমি। ইতিমধ্যে থর্নের স্ত্রী এবং আরও দু’জন হতভাগ্য সত্য জানার অপরাধে প্রাণ হারাল।’ মাথা হেঁট করলেন বুগেনহাগেন। ‘কিন্তু শয়তানের বুকে ছুরি বেঁধাবার আগেই পুলিশের গুলিতে মারা পড়ল থর্ন। পুলিশের ধারণা স্ত্রীর মৃত্যু শোকে রবার্ট থর্নের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।’ আঙুল দিয়ে ছবিটার দিকে দেখালেন তিনি। ‘ছেলেটা এখনও বেঁচে!’

অনেকক্ষণ চুপ করে থেকে মিশেল জিজ্ঞেস করল, ‘ছেলেটা এখন কোথায়?’

‘আমেরিকায়,’ জবাব দিলেন বৃদ্ধ। তার চাচার কাছে। ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী ওখানে সে ধীরে ধীরে বড় আর শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

জোনের ভিতরকার সদাজাগ্রত সাংবাদিক সত্তাটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠল মিশেল, চল না, আমরা আমেরিকা যাই?’ বলে উঠল সে।

চুপ কর!’ মৃদু ধমক দিল মিশেল। এটা কাগজে ছাপিয়ে বাহবা নেয়ার মত কোন ব্যাপার নয়। বুগেনহাগেনের কথা যদি সত্যি হয় তবে বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পায়ের কাছে রাখা ব্যাগের ভেতর থেকে পুরানো একটা অপূর্ব সুন্দর কারুকাজ করা চামড়ার থলে বের করে টেবিলের ওপর রাখলেন বুড়ো বুগেনহাগেন। কয়েকটা আলাদা ভাগ অসংখ্য ফিতে দিয়ে আটকানো রয়েছে। টেবিলে রাখার সময়ে ঝনাৎ করে শব্দ হল।

‘এটা তোমাকে ছেলেটার নতুন অভিভাবকদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে, বললেন বৃদ্ধ। এর ভিতরে আছে সাতটা ড্যাগার আর একটা চিঠি। চিঠিতে সবকিছু ব্যাখ্যা করা আছে।’

শক্তিশালী বক্তার কাছে বসে তার কথা শুনে বিশ্বাস করা, আর সেই কথা নিজে প্রচার করে অন্য একজনকে বোঝানো, সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা।

‘তা কি করে হয়?’ আপত্তি জানাল মিশেল। ‘আমি কি করে গিয়ে তাকে বলি…’

‘ওদের সাবধান করতেই হবে!’ চেঁচিয়ে উঠলেন বুদ্ধ। পাশের টেবিলের লোকগুলো বিরক্ত হয়ে ফিরে চাইল। গলা নামিয়ে তিনি প্রায় ফিসফিস করে বললেন, ‘বয়স হয়েছে আমার—আমি অসুস্থ। আমার পক্ষে যাওয়া অসম্ভব। তাছাড়া ব্যাপারটা আমি ছাড়া আর দ্বিতীয় ব্যক্তি জানে না, তাই…’ কথাটা জোরে উচ্চারণ করতেও যেন ভয় পাচ্ছেন তিনি।

‘তাই কি?’ প্রশ্ন করল মিশেল।

কফির কাপের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে থেকে বললেন, ‘ঝুঁকি না নিয়ে যেখানে নিরাপদ সেখানেই থাকতে হবে আমাকে।’

ধীরে ধীরে মাথা নাড়ল মিশেল। আমার একটা সুনাম আছে, আমি কি করে…’ বাধা দিয়ে দৃঢ় গলায় তিনি বলে উঠলেন। ‘সেইজন্যেই তোমাকে যেতে হবে। তোমার কথা বিশ্বাস করবে ওরা।’

অস্বস্তিবোধ করছে মিশেল। ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ বটে—কিন্তু তাকে যা করতে বলা হচ্ছে সেটা তার পক্ষে একেবারেই অসম্ভব।

আমাকে আমার অসাধ্য কাজ করতে বলছেন আপনি-আমাকে ওরা পাগল ঠাওরাবে।

উঠে দাঁড়ালেন বুগেনহাগেন। পিছন থেকে বিকেলের রোদ পড়ে তাকে পবিত্ৰ দেখাচ্ছে। য়িগেইলের দেয়ালটা দেখবে এসো,’ বললেন তিনি। অনুরোধ নয়—আদেশ। এই আদেশ উপেক্ষা করার শক্তি মিশেলের নেই।

‘এখনই?’ দুর্বল স্বরে প্রশ্ন করল সে। উত্তরটা তার জানাই আছে।

‘এখনই,’ বলে নিজের জীপটার দিকে এগিয়ে গেলেন বুগেনহাগেন।

একা পড়ে যাচ্ছে দেখে জোন বলে উঠল, ‘আমাকে সাথে নেবে না?’ সমর্থনের আশায় অপূর্ব সুন্দর করে হাসল সে।

মাথা নাড়ল মিশেল। তুমি হোটেলে ফিরে যাও। যত শীঘ্রি সম্ভব ফিরতে চেষ্টা করব আমি।’ ঝুঁকে জোনকে লম্বা একটা চুমো খেয়ে উঠে দাঁড়াল সে।

‘ঠিক আছে,’ ক্ষোভের সাথে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল জোন। তবে আগেই বলে রাখছি, অনন্তকাল অপেক্ষা করতে পারব না আমি।

হেসে ফিরে তাকিয়ে হাতের ইশারায় ওর দিকে একটা চুমো ছুঁড়ে দিয়ে বেরিয়ে গেল মিশেল।

ওর সাথে জোনের ওই শেষ দেখা। এটা মেনে নিতে অনেক সময় লেগেছিল তার। এর প্রকৃত কারণ বুঝতে সময় লেগেছিল আরও বেশি

আকর শহরের কাছেই সেবুলান উপত্যকার মাথায় দাঁড়িয়ে আছে দেয়াল ঘেরা প্রাচীন বেলভোয়াদুর্গ। দ্বাদশ শতাব্দীতে ক্রুসেডাররা ইউরোপ থেকে এসে যীশুর নামে এই পবিত্র জায়গাটা মুসলমানদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়ার পরে ওই দুর্গ তারা তৈরি করেছিল। এই দুর্গের ধ্বংসাবশেষের মধ্যেই বুগেনহাগেন খুঁজে পেয়েছেন তার প্রমাণ। নিঃসন্দেহ হয়েছেন যে শয়তান আমাদের মধ্যেই স্বশরীরে বিচরণ করছে এখন।

লম্বা লোমওয়ালা ভেড়াগুলো দুর্গের জীর্ণ দেয়ালের পাশে ঘাস খাওয়া বন্ধ করে জীপের শব্দে চট করে মাথা তুলে কান খাড়া করল। ভোর হয়ে আসছে। উপত্যকার মাথা থেকে টকটকে লাল সূর্যটা বিচিত্র রঙের আলো ছড়াচ্ছে চারপাশে।

দেয়ালের পাশে জীপ রেখে দু’জনে বেরিয়ে এল। জীপের পিছন থেকে মাথায় বাতি লাগানো একটা বাড়তি মাইনহেলমেট খুঁজে বের করে মিশেলের হাতে দিলেন বুগেনহাগেন। যেখানে যাচ্ছে সেখানে ওটার দরকার পড়বে। বাতিরও দরকার হবে।

একটা বিশালকায় দাঁড়কাক প্রাচীরের ওপর বসে বুভুক্ষু চোখে ওদের দিকে চেয়ে রয়েছে। কেউ লক্ষ্য করল না ওকে।

দুর্গের অন্ধকার বড় হলঘর ধরে ষাট ফুট উঁচু পিলারগুলোর পাশ দিয়ে এগিয়ে গেল দু’জনে। ছাদের কাছে খাঁজ থেকে কয়েকটা বাদুড় ঝুলছে—ঘুমাচ্ছে। চামড়ার থলেটা বুকের কাছে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন বুগেনহাগেন। ভয় পাচ্ছেন যেন। হেলমেটের বাতি জ্বেলে নিয়ে সুড়ঙ্গ পথ ধরে নিচে নামতে শুরু করল ওরা।

নতুন খুঁড়ে বের করা জায়গাগুলোতে প্লাস্টিকের সাইনবোর্ড লাগানো। হঠাৎ কি একটা চোখে পড়তেই ভীষণভাবে চমকে উঠল মিশেল। অশ্লীল, কদর্য, অথচ যৌন আবেদনে ভরা সুন্দর একটা মূর্তি। একটা উজ্জ্বল লাল রঙের জন্তুর ওপর বসে আছে এক পূর্ণ যৌবনা যুবতী। জন্তুর সাতটা বিকট মাথায় সাতটা শিঙ। সারা দেহে পৌরাণিক কোন ভাষায় খোদাই করে কি যেন লেখা।

চমকিত হলেও অজ্ঞ নয় মিশেল। ‘বেবিলনের বেশ্যা!’ চেঁচিয়ে উঠল সে। ভয়ানক নামটা দেয়ালে দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হয়ে উঠল।

মিশেলকে ভীতিপ্রদ মূর্তিটার সাথে একা ফেলে ততক্ষণ দেয়ালের ফাঁক গলে পাশের ঘরটায় চলে গেছেন বুগেনহাগেন। তাড়াতাড়ি তাকে অনুসরণ করল মিশেল।

সামনেই য়িগেইলের দেয়াল। বুগেনহাগেনের হেলমেট থেকে আলো পড়েছে। রাতের পরে রাত শয়তানের পরিবর্তনশীল চেহারা দেখতে পেয়ে পাগল হয়ে গিয়েছিল শিল্পী য়িগেইল। তাঁরই আঁকা এই দেয়াল।

সবচেয়ে বড় ছবিতে শয়তান তার পরিণত ভয়ঙ্কর মূর্তিতে ধ্বংসলীলায় মেতেছে। একটা খাঁজের থেকে ঝুলছে সে-হাত আর পায়ের পুষ্ট পেশীগুলো ফুলে উঠেছে। পিঠের ওপর বাদুড়ের মত পাখা দুটো সম্পূর্ণ ছড়িয়ে নিজেকে কিছুটা আড়াল করে রেখেছে। ওর মুখের কাছ থেকে দেয়ালের খানিকটা চলটা উঠে গেছে বলে চেহারা বোঝা যাচ্ছে না।

দ্বিতীয় ছবিটায় মুখ দেখা যাচ্ছে। সাপের মত বিভক্ত জিভ। চুলের বদলে মাথা থেকে কিলবিল করে বেরিয়ে এসেছে অসংখ্য সাপ। কিন্তু এই চেহারাটাও স্পষ্ট নয়।

আর একটা ছবি রয়েছে। এটা আগের ছবি দুটোর চেয়ে অনেক ছোট—শয়তানের ছেলেবেলার ছবি। ফুটফুটে সুন্দর দেবদূতের মত চেহারা-ঠিক ডেমিয়েনের মত। একেবারে হুবহু ওই চেহারা।

‘এই ছবি দেখে তোমার সব সন্দেহ দূর হবে,’ বললেন বুগেনহাগেন। কিন্তু কথাটা বলার কোন দরকার ছিল না। মিশেল আগেই নিঃসন্দেহ হয়েছে।

ছবিটার আকর্ষণে ওটার কাছে এগিয়ে গেল সে। ষাঁড়ের চাবুকের মত একটা তীক্ষ্ণ শব্দ প্রতিধ্বনিত হল সুড়ঙ্গের ভিতর। তারপরই শোনা গেল একটা গুরুগম্ভীর গুড়গুড় আওয়াজ। ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে স্থির দাঁড়িয়ে আছে ওরা-একে একে কয়েকটা সেকেণ্ড পেরিয়ে গেল।

হঠাৎ মাথার ওপর থেকে ওদের বেরোবার পথ রোধ করে বালি আর পাথরের ধস নেমে এল। ধুলোয় মিশেলের দম আটকে আসছে। বুগেনহাগেন অবিচল। এসব কেন ঘটছে তিনি তা স্পষ্ট বুঝতে পারছেন।

কাশির দমক একটু কমতেই মিশেল প্রশ্ন করল, ‘এখান থেকে বেরোবার আর কোন পথ আছে?’

ধীরে ধীরে মাথা নাড়লেন বৃদ্ধ। আর কোন পথ নেই—কোন উপায়ই আর নেই তাঁদের।

চড়াৎ করে আর একটা কান ফাটানো শব্দ উঠল। ঝুরঝুরে বালি আস্তে আস্তে জায়গাটা ভরে ফেলেছে। কিছুই করার উপায় নেই-আজ এখানেই হবে তাদের জীবন্ত সমাধি।

আর একটা প্রচণ্ড শব্দের সাথেই সব শেষ হল। কেবল মাত্র দুটো জিনিস রক্ষা পেল—একটা য়িগেইলের দেয়াল, আর অন্যটা বুগেনহাগেনের সেই চামড়ার থলেটা। দুটো প্রচণ্ড শক্তিশালী শক্তি যেন রক্ষা করল দুটো ভিন্নমুখী জিনিস 1

ফলাফলটা বাইরেও পৌঁছল। বেঙের ছাতার আকারে ধুলোবালি উঠল আকাশে। সেই সাথে দাঁড়কাকটা আকাশে উড়ল-মৃতের থেকে জীবন পেয়ে উঠল যেন। কর্কশ স্বরে ডেকে উঠে অজানার উদ্দেশে উড়াল দিল সে।

Book Content

অশুভ সংকেতের পর – ১
অশুভ সংকেতের পর – ২
অশুভ সংকেতের পর – ৩
অশুভ সংকেতের পর – ৪
অশুভ সংকেতের পর – ৫
অশুভ সংকেতের পর – ৬
অশুভ সংকেতের পর – ৭
অশুভ সংকেতের পর – ৮
অশুভ সংকেতের পর – ৯
অশুভ সংকেতের পর – ১০
অশুভ সংকেতের পর – ১১
অশুভ সংকেতের পর – ১২
অশুভ সংকেতের পর – ১৩
অশুভ সংকেতের পর – ১৪
অশুভ সংকেতের পর – ১৫
লেখক: কাজী মাহবুব হোসেন, জোসেফ হাওয়ার্ডসিরিজ: সেবা হরর সিরিজবইয়ের ধরন: সেবা প্রকাশনী
অশুভ সংকেত - ডেভিড সেলজার

অশুভ সংকেত – কাজী মাহবুব হোসেন

শেষ অশুভ সংকেত - কাজী মাহবুব হোসেন

শেষ অশুভ সংকেত – কাজী মাহবুব হোসেন

ক্ষ্যাপা তিনজন - কাজী মাহবুব হোসেন

ক্ষ্যাপা তিনজন – কাজী মাহবুব হোসেন

রক্তাক্ত খামার – কাজী মাহবুব হোসেন

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑

Login
Accessing this book requires a login. Please enter your credentials below!

Continue with Google
Lost Your Password?
egb-logo
Register
Don't have an account? Register one!
Register an Account

Continue with Google

Registration confirmation will be emailed to you.