৩৩. আবহমানকালের বাণী

আবহমানকালের বাণী

১. অনাবৃষ্টে রাজ্য মজে, পাপে মজে ধর্ম।
কোটালে গৃহস্থ মজে, আলস্যে মজে কর্ম।

২। অতি বড় ঘরণী না পায় ঘর,
অতি বড় সুন্দরী না পায় বর।

৩। অজ্ঞানে করে পাপ, জ্ঞান হলে সরে,
সজ্ঞানে করে পাপ, সঙ্গে সঙ্গে ফেরে।

৪। অনভ্যস্তা বিষং বিদ্যা বৃদ্ধস্য তরুণী বিষম।
আরোগে তু বিষং বৈদ্যা হৃজীর্ণে ভোজনং বিষম।

(অনুবাদ ও অনভ্যস্ত বিদ্যা বিষের তুল্য, যুবতী নারী বৃদ্ধের কাছে বিষবৎ, নীরোগ ব্যক্তির পক্ষে বৈদ্য বিষবৎ, কারণ তিনি দুষ্টবুদ্ধিসম্পন্ন হলে রোগসৃষ্টি করতে পারেন, এবং ভুক্তদ্রব্য হজম হওয়ার আগে পুনরায় ভোজন করলে বিষবৎ ক্রিয়া করে।)

৫। অকাল গেল, সুকাল গেল, পাকল কাঁঠাল কোষ
আজ বন্ধু ছেড়ে যাও দিয়ে আমার দোষ।

৬. অকাজে বউড়ি দড়,
লাউ কুটতে খরতর।

৭। অকালে খেয়েছে কচু,
মনে রেখো কিছু কিছু।
অকালে না নোয় বাঁশ,
বাঁশ করে ব্ল্যাশ ব্ল্যাশ।

৯। অকেজোর তিন কাজ বড়
ভোজন নিদ্রা ক্রোধ দড়।

১০। অগ্নি ব্যাধি ঋণ,
তিনের রেখো না চিন।

(ব্যাখ্যা ও আগুন নিবিয়ে ফেলা, রোগ সারিয়ে ফেলা ও ঋণ শোধ করে ফেলা কর্তব্য।)।

১১। অঘটির (বা আদেখলের) ঘটি হল,
জল খেতে খেতে প্রাণটা গেল।

১২। অজাযুদ্ধে ঋষি শ্রাদ্ধে প্রভাতে মেঘ ডম্বরে।
দাম্পত্যোঃ কলহে চৈব বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া।

(অনুবাদ : ছাগলের লড়াইয়ে, মুনিদের শ্রাদ্ধে, প্রভাতে মেঘগর্জনে এবং স্বামী-স্ত্রীর কলহে প্রথমে কিছুটা বাড়াবাড়ি হলেও ফল সামান্যই হয়।)

১৩। অতি চালাকের গলায় গড়ি
অতি বোকার পায়ে বেড়ি।

১৪। অজ্ঞানের কালে জানে না,
অমানুষের কালে মানে না।

(ব্যাখ্যা : শিশু বুঝতে পারে না বলেই দোষ করে, কিন্তু মনুষ্যত্বহীন লোক দোষকে দোষ বলে জেনেও তা গ্রাহ্য করে না।)

১৫। অতি প্রণয় যেখানে;
নিত্য যাবে না সেখানে;
যদি যাবে নিত্য
ঘটবে একটা কীর্তি।

১৬। অতি বড় সোদর,
তিন দিন করবে আদর।

১৭। অতি বাড় বেড়ো নাকো ঝড়ে ভেঙে যাবে।
অতি ছোট হয়ো নাকো ছাগলে মুড়াবে।

১৮। অনেক কালের ছিল পাপ,
ছেলে হল সতীনের বাপ।

১৯। অনেক খাবে তো অল্প খাও,
অল্প খাবে তো অনেক খাও।

২০। অল্প দেখে দেবে ঘি,
পাত্র দেখে দেবে ঝি।

২১। অন্ন নাই যার ঘরে,
তার মানে কিবা করে।

২২। অন্ন বিনা চর্ম গড়ি,
তৈল বিনা গায়ে খড়ি।

২৩। অন্নের জ্বালা বড় জ্বালা,
একদিনে লাগে তালা।

২৪। অবাক কল্লে না নাকের নথে,
কাজ কি আমার কানবালাতে।

২৫। অবুঝে বুঝাব কত বুঝ নাহি মানে,
পেঁকিরে বুঝাব কত নিত্য ধান ভানে।

২৬। অবোধারে মারে বোধায়,
বোধারে মারে খোদায়।

২৭। অভদ্রা বরষা কাল, হরিণী চাটে বাঘের গাল,
শোনরে হরিণী তোরে কই, সময় গুণে সবই সই।

২৮। অভাগা চোর যে বাড়ি যায়।
হয় কুকুর ডাকে নয় রাত পোহায়।

২৯। অভাগার ঘোড়া মরে।
ভাগ্যবানের মাগ (স্ত্রী) মরে।

৩০। অভাগিনীর দুটো পুত,
একটা কানা, একটা ভূত।

৩১। অরাধুনির হাতে পড়ে রুই মাছ কাঁদে,
জানি রাঁধুনি মোর কেমন করে রাধে।

৩২। অলক্ষ্মীর নিদ্রা বেশি কাঙালের ক্ষুধা বেশি।

৩৩। অল্প বৃষ্টিতে কাদা হয়,
বেশি বৃষ্টিতে সাদা হয়।

৩৪। অশ্বথের ছায়াই ছায়া,
মায়ের মায়াই মায়া।

৩৫। আগে আপন সামাল কর,
শেষে পরকে গিয়ে ধর।

৩৬। আগে না বুঝলে বাছা যৌবনের ভরে,
পশ্চাতে কাঁদিতে হবে নয়নের ঝোরে।

৩৭। আগে ভাল ছিল জেলে জাল দড়া বুনে,
কী কাজ করিল জেলে এঁড়ে গরু কিনে।

৩৮। আগে হাতে দিয়ে খোলা,
এখন হলে মনভোলা।

৩৯। অপদার্থে ধনং রক্ষেৎ দারান রক্ষেদ্ধনৈরপি।
আত্মানং সততং রক্ষেৎ দারৈরপি ধনৈরপি।

(অনুবাদ : বোকা লোকেরা আগে নিজের ধনসম্পদ রক্ষায় ও পরে স্ত্রীরক্ষায় সচেষ্ট হয়, কিন্তু বুদ্ধিমানেরা আগে নিজেকে রক্ষা করে, তা হলে ধন ও স্ত্রী দুটো আপনা থেকেই রক্ষা পায়।)

৪০। অতি লোভে তাঁতি নষ্ট।

৪১। অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট।

৪২। আনসতীনে নাড়েচড়ে,
বোন সতীনে পুড়িয়ে মারে।

(বোন যদি সতীন হয় তা হলে যন্ত্রণার শেষ থাকে না।)

৪৩। নিম তিত, নিশিন্দে তিত, তিত মাকাল ফল,
তার চেয়ে তিত কন্যে বোন সতীনের ঘর।

৪৪। আপন কোটে পাই, চিড়ে কুটে খাই।

(হাতের নাগালে পেলে শাস্তি দেওয়া সহজ।)

৪৫। আপনার চেয়ে পর ভাল,
পরের চেয়ে জঙ্গল ভাল।

৪৬। আপন বুদ্ধিতে ফকির হই,
পর বুদ্ধিতে বাদশা নই।

৪৭। আপন বেলা চাপন চোপন,
পরের বেলা ঝুরঝুরে মাপন।

৪৮। আপনার মান আপনি রাখ,
কাটা কান চুল দিয়ে ঢাক।

৪৯। আপনার হাত জগন্নাথ,
পরের হাত এঁটো পাত।

৫০। আপনার ছেলেটি খায় এতটি, বেড়ায় যেন ঠাকুরটি,
পরের ছেলেটা খায় এতটা, বেড়ায় যেন বাঁদরটি।

৫১। আপন ধন পরকে দিয়ে,
দৈবকী মরে মাথায় হাত দিয়ে।

৫২। আবর তাঁতি গোবর খায়,
স্ত্রীর বাক্যে মরতে যায়।

৫৩। আম শুকোলে আমসি,
বয়স গেলে কাঁদতে বসি।

৫৪। আমি করি ভাই ভাই,
দাদার কিন্তু মনে নাই।

৫৫। আমি কি নাচতে জানিনে,
মাজার ব্যথায় পারিনে।

৫৬। আর গাব খাব না,
গাবতলা দিয়ে যাব না,
গাব খাব না খাব কি,
গাবের তুল্য আছে কি?

৫৭। আশা আর বাসা,
ছোট করে মরে চাষা।

৫৮। আশার চেয়ে নিরাশা ভাল,
হয়ে গেল তো, হয়ে গেল।

৫৯। আষাঢ়ে না হলে সূত; হা সূত যো সূত,
মোলতে না হলে পুত হা পুত যো পুত।

৬০। আষাঢ়ে পান চাষাড়ে খায়,
গুয়াবনে পান গড়াগড়ি যায়।

৬১। ইঁদুর গর্ত খুঁড়ে মরে,
সাপ এসে দখল করে।

৬২। বাহিরে কোচার পত্তন,
ভিতরে ছুঁচোর কেত্তন।

৬৩। উই, ইঁদুর, কুজন, ডাল ভাঙে তিনজন,
সুচ, সোহাগা, সুজন, ভাল করে তিনজন।

৬৪। উচিত কথায় দেবতা তুষ্ট,
উচিত কথায় মানুষ রুষ্ট।

৬৫। উদ্যমেন হি সিধ্যন্তি কার্যানিন মনোরথৈঃ।
নহি সুপ্তস্য সিংহস্য প্রবিশন্তি মুখে মৃগাঃ।

(অনুবাদ : কেবল সংকল্পের দ্বারা কার্য সিদ্ধ হয় না, কার্যের জন্য চেষ্টা থাকাও দরকার। সিংহ নিদ্রিত থাকলে শিকার কখনো তার মুখে আপনা থেকে প্রবেশ করে না।)

৬৬। উপোস করলে যাবে দিন,
ধার করলে হবে ঋণ।

৬৭। যাবজ্জীবেৎ সুখং জীবেৎ ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ।
ভস্মীভূতস্য দেহস্য পুনরাগমনং কুতঃ।।

(অনুবাদ : যতদিন জীবিত থাকবে, ঋণ করে হলেও ঘি খাবে। কারণ এই দেহ মৃত্যুর পর ভস্মীভূত করে ফেললে আর কখনো ফিরে আসবে না।)

৬৮। ঋণ কর্তা পিতা শক্ৰমাতা চ ব্যাভিচারিণী।
ভাৰ্য্য রূপবতী শত্রু পুত্র শত্রুরপণ্ডিতঃ।

(অনুবাদ : ঋণকারী পিতা, কুলটা মাতা, রূপবতী স্ত্রী এবং মূর্খ পুত্র–এরা পরমাত্মীয় হলেও মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু।)

৬৯। এই বেলা নাও ঘর ছেয়ে,
আকাশে দেখ মেঘ চেয়ে।

৭০। এঁটে ধরলে চিচি করে,
ছেড়ে দিলে লম্ফ মারে।

৭১। এক কলসি জল তুলে কাকালে দিলে হাত,
এই মুখে খাবে তুমি বাগদিনীর ভাত।

৭২। এক কাটে ভারে, আর কাটে ধারে।

৭৩। এক কান কাটা শহরের বার দে যায়,
দু’কান কাটা গায়ের ভিতর দে যায়।

৭৪। এককাল ঠেকেছে, তিনকাল গিয়ে,
তবু আবার করবে বিয়ে।

৭৫। এক গাঁয়ের কুকুর, আর গাঁয়ের ঠাকুর।

৭৬। একচোখো মাসি, কারে ভালোবাসি।

৭৭। এক ছেলে যার, বাপের ঠাকুর তার।

৭৮। এক ছেলের মা, ভয়ে কাঁপে গা।

৭৯। এক ঝিকরে মাছ বেঁধে সে-ই বা কেমন বড়শি
এক ডাকেতে সাড়া দেয় না, সে-ই বা কেমন পড়শি।

৮০। এক পয়সা নাই থলিতে
লাফিয়ে বেড়ায় গলিতে।

৮১। এক পাগলে রক্ষা নেই, সাত পাগলের মেলা।

৮২। এক পুতের আশ, নদীর কুলে বাস;
ভাবনা বারো মাস।

৮৩। এক বুড়ির নাসা দোষ,
নাকের উপর হল খোস।

৮৪। এক মায়ের এক পুত,
খায় দায় যত দূত।

৮৫। এক লাউ-এর বিচি
কেউবা করে কচর কচর, কেউবা বলে কচি।

৮৬। একলা ঘরের গিন্নি হব,
চাবিকাঠি ঝুলিয়ে যাব।

৮৭। এক হেঁসেলে তিন রাধুনি,
পুড়ে মরে তার ফেন গালুনি।

৮৮। এক ঘরের একা ভাই (বউ) খেতে বড় সুখ,
মারতে (মরতে)এলে ধরতে নাই, তাই বড় দুখ।

৮৯। এ কী বিধির লীলাখেলা,
কাকের গলায় তুলসীমালা।

৯০। এ কী মোর জ্বালা মেয়ে চামকাটা ডালা,
কানে দুটো ঘুরঘুরে লায় মতির মালা।

৯১। একুশ কেঁড়া গুনে খান,
ফুলের ঘায়ে মূৰ্ছা যান।

৯২। একে তো হনুমান,
তায় আবার রামের বাণ।

৯৩। একে গুন্ গুন্ দুয়ে পাঠ,
তিনে গোলমাল, চারে হাট।

৯৪। এত যদি সুখ কপালে,
তবে কেন তোর কথা বগলে।

৯৫। ঔষধার্থে সুরাপান
পান না বাড়ালেই থাকে মান।

৯৬। কইতে কইতে মুখ বাড়ে,
খাইতে খাইতে পেট বাড়ে।

৯৭। কইতে জানলে ঠকি না।
বলতে জানলে উঠি না।

৯৮। পয়সা দিয়ে কিনব দই,
গোয়ালিনী মোর কিসের সই?

৯৯। কড়ি লবে গুনে, পথ চলবে জেনে।

১০০। কতই-বা দেখব আর, ছুঁচোর গলায় চন্দ্রহার।

১০১। কতই সাধ হায়রে চিতে, ফোকলা দাঁতে মিশি দিতে।

১০২। কত ব্রত করলি যশী,
বাকি ভূমি-একাদশী।

১০৩। কত সাধ যায়রে চিতে
বেগুন গাছে আঁকশি দিতে।

১০৪। কপট প্রেমে লুকোচুরি,
মুখে মধু প্রাণে ছুরি।

১০৫। কপালে নেই ঘি, ঠকঠকালে হবে কী?

১০৬। কপালের লিখন, না যায় খণ্ডন।

১০৭। কর যদি তাড়াতাড়ি,
ভুলের হবে বাড়াবাড়ি।

১০৮। কর্ম না বাধ্যতে বুদ্ধি বুদ্ধ্যা বাধ্যতে
সুবুদ্ধিরপি যদ্ৰামো হৈমং হরিণমালগাৎ।

(অনুবাদ ও বুদ্ধি কর্মের বশ হয়, কিন্তু কর্ম বুদ্ধির বশ হয় না, যেমন–রামচন্দ্র বুদ্ধিমান হয়েও সোনার হরিণের অনুসরণ করেছিলেন।)।

১০৯। কাঁটা বিনা কমল নাই,
কলঙ্ক বিনা চাঁদ নাই।

১১০। কাকের ডিমও সাদা হয়,
বিদ্বানের ছেলেও গাধা হয়।

১১১। কাকের বাসায় কোকিলের ছা’
জাত স্বভাবে করে রা’।

১১২। কাকের মাংস কাকে খায় না,
জোকের গায়ে জোক বসে না।

১১৩। কাছা দিতে কেঁচা আঁটে না,
কোঁচা দিতে কাছা আঁটে না।

১১৪। কাজ নেই কাজ করে,
ধানেচালে এক করে।

১১৫। কাজে কুঁড়ে ভোজনে দেড়ে,
বচনে মারে তেড়ে ফুড়ে।

১১৬। কাজের বেলা কাজি, কাজ ফুরুলে পাজি।

১১৭। কাজের বেলা ভাগে, খাবার বেলায় আগে।

১১৮। কাজের মধ্যে চাষ, রোগের মধ্যে কাশ।

১১৯। কাজের মধ্যে দুই, ভাত খাই আর শুই।

১২০। কাপড়ের দাগ যায় ধুলে,
মনের দাগ যায় মলে।

১২১। কার শ্রাদ্ধ কেবা করে, খোলা কেটে বামুন মরে।

১২২। কালো কাড়র রুক্ষু মাথা,
লক্ষ্মী বলেন থাকব কোথা!

১২৩। কালা বলে গায় ভালো
কানা বলে নাচে ভালো।

১২৪। কালি কলম পাত, তবে অক্ষরের জাত।

১২৫। কারে কত দেখব আর,
ছুঁচোর গলায় চন্দ্রহার।

১২৬। কালে কালে কতই হল,
পুলিপিঠের লেজ গজাল।

১২৭। কী দেব কী দেব খোঁটা।
গয়ায় মরছে বাপ বেটা।

১২৮। কিবা জ্যেষ্ঠ, কি কনিষ্ঠ
যেই বুঝে সেই শ্রেষ্ঠ।

১২৯। চলচ্চিত্তং জলদ্বিত্তং চলজ্জীবনযৌবন
চলাচলমিদং সর্বং কীর্ত্যিস্য সংজীবতি।

(অনুবাদ ও চিত্ত, বিত্ত, জীবন ও যৌবন সমস্তই চঞ্চল ও অস্থায়ী, কিন্তু যার কীর্তি আছে তিনিই অমর।)

১৩০। কুঁড়েঘরে বাস, খাট পালঙ্কের আশ।

১৩১। কুপুত্র যদ্যাপি, কু-মাতা কখনো নয়।

১৩২। কৃপণের ধন বর্বরে খায়,
কৃপণ করে হায় হায়।

১৩৩। কোনো কালে নাইক গাই,
চালুনি নিয়ে দুইতে যাই।

১৩৪। ক্ষমার বড় গুণ নাই, দানের বড় পুণ্য নাই।

১৩৫। বনানী দহতে! বহ্নেঃ সভা ভবতি মারুতঃ।
সব দীপনাশায় ক্ষীণে কস্যাস্তি গৌরবম।

(অনুবাদ ও অগ্নি যখন বন দগ্ধ করে, তখন বায়ু তার সহায় হয়, কিন্তু সেই অগ্নি যখন ক্ষীণ হয়ে প্রদীপের ন্যায় হয়, তখন বায়ু শত্রু হয়ে তাকে নিভিয়ে দেয়।)

১৩৬। খাওয়াবে হাতির ভোগে,
দেখবে বাঘের চোখে।

১৩৭। খাটে খাটায় লাভের গতি
তার অর্ধেক মাথায় ছাতি ঘরে বসে পুছে বাত।
তার কপালে হা-ভাত।

১৩৮। খাব না খাব না অনিচ্ছে,
তিনি রেক চলে এক উচ্ছে।

১৩৯। খাবার আছে চাবার নেই,
দেবার আছে নেবার নেই।

১৪০। খাবার বেলায় মা, ছেলে ধরতে কেউ না।

১৪১। খাবার বেলায় মস্ত,
উলু দেবার বেলায় মুখে ঘা।

১৪২। খায়দায় পাখিটি, বনের দিকে আঁখিটি।

১৪৩। গুরু নিন্দা বনে যায়।
বনের বাঘে ধইর্যা খায়।

১৪৪। খায় না খায় সকালে নায়
হয় না হয় দুবার যায়
তার কড়ি কি বৈদ্যে খায়?

১৪৫। খেতে পায় না পচা পুঁটি
হাতে পরে হীরের আংটি।

১৪৬। খোঁয়াড়ে পড়লে হাতি
চামচিকেতেও মারে লাথি।

১৪৭। গঙ্গার জল গঙ্গায় বলল,
পিতৃ পুরুষ উদ্ধার হল।

১৪৮। আগচ্ছতি যদা লক্ষ্মীনারিকেল ফলাধুবৎ।
নির্গেচ্ছতি যদা লক্ষ্মী গর্জভুক্ত কপিণ্ডবৎ।

(অনুবাদ ও লক্ষ্মী যখন আসেন, তখন নারিকেলের জলের মতো কোথা হতে আসে তা বোঝা যায় না। সেইরূপ সম্পদ যখন চলে যায়, তখন গজকীট কর্তৃক ভক্ষিত অন্তঃসারশূন্য কয়েতবেলের মতো মানুষকে কীভাবে নিঃস্ব করে, তা লক্ষ করা যায় না। ‘গজ’ শব্দের অর্থ এখানে হাতি নয়, একপ্রকার কীট।)

১৪৯। গতর নেই চোপায় দড়,
মেঙ্গে খায় তার পালি বড়।

১৫০। গব্য থাকলে আগে পাছে,
কী করবে তার শাকেমাছে।

১৫১। গরু, জরু (স্ত্রী), ধান রাখ বিদ্যমান।

১৫২। গা বড়, তার মাঝের পাড়া,
নাক নেই তার নথ নাড়া।

১৫৩। গাইতে গাইতে গায়েন, বাজাতে বাজাতে বায়েন।

১৫৪। গাঙ্গে গাঙ্গে দেখা হয়, বোনে বোনে দেখা নয়।

১৫৫। গাছ থেকে পড়ে গেল জন পাঁচশত,
যার যেখানে ব্যথা তার সেখানে হাত।

১৫৬। গাছে ওঠে পড়তে, জামিন হয় মরতে।

১৫৭। গাজনের নেই ঠিক-ঠিকানা,
ডেকে বলে ঢাক বাজনা।

১৫৮। গাধা সকল বইতে পারে,
ভাতের কাঠি বইতে নারে।

১৫৯। গিন্নির ওপর গিন্নিপনা
ভাঙা পিড়েয় আলপনা।

১৬০। গুটিপোকা গুট করে, নিজের ফাঁদে নিজে পড়ে।

১৬১। গৃহ স্থির আগে করে,
গৃহিণী স্থির তার পরে।

১৬২। গোঁফ নেইকো কোনো কালে,
দাড়ি রেখেছেন তোবড়া গালে।

১৬৩। ঘটির তলায় দিয়ে আঠা,
যোগেযাগে কাল কাটা।

১৬৪। ঘন দুধের ফোঁটা, বড় মাছের কাঁটা।

১৬৫। ঘরজামায়ের পোড়া মুখ
মরা-বাঁচা সমান সুখ।

১৬৬। ঘরদোর নেই যার, আগুনে কী ভয় তার?

১৬৭। ঘরে নেই ভাত, কেঁচা তিন হাত।

১৬৮। ঘরে থাকতে নানা বিধি,
খেতে দেয় না দারুণ বিধি।

১৬৯। গরে নেই ঘটিবাটি, কোমরে মেলাই চাবিকাঠি।

১৭০। ঘরে বসিয়ে মাইনে দেয়
এমন মনিব কোথায় পায়।

১৭১। ঘরে বাইরে এক মন, তবে হয় কৃষ্ণ ভজন।

১৭২। ঘরের ভাত দিয়ে শুকনি পোষে,
গোয়ালের গরু টেকে বসে।

১৭৩। ঘি দিয়ে ভাজ নিমের পাতা,
তবু যায় না জাতের জাতা।

১৭৪। ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে; তোমার একদিন আছে শেষে।

১৭৫। চক্ষে দেখলে শুনতে চায়,
এমন বোকা আছে কোথায়?

১৭৬। চন্দ্র-সূর্য অস্ত গেল, জোনাকি ধরে বাতি।
মুঘল পাঠান হদ্দ হল ফারসি পড়ে তাঁতি।

১৭৭। আকাশে মেঘের ছায়া,
মিছে কর তার মায়া।

১৭৮। চাল নেই ধুচুনি নাড়া
নাক নেই তার নথ নাড়া।

১৭৯। চালে খড় নেই, ঘরে বাতি,
বিছানা নেই, পোহায় রাতি।

১৮০। চাষার চাষ দেখে চাষ করলে গোয়াল,
ধানের সঙ্গে খোঁজ নেই, বোঝা বোঝা পোয়াল।

১৮১। চুরি বিদ্যে বড় বিদ্যে, যদি না পড়ে ধরা,
যদি পড়ে ধরা, তবে হাতে-পায়ে কড়া।

১৮২। চোর হেঁচড় চোপায় দড়,
আগে দৌড়ায় ঠাকুর ঘর।

১৮৩। চোর-ডাকাতের ভয়, পেটে পুরলে রয়।

১৮৪। ছাঁচের ঘরে খাবি খায়।
সমুদ্র পার হতে চায়।

১৮৫। ঘূদন দড়ি, গোদা বাড়ি
যে আমার আমি তারি।

১৮৬। ছাগলে বলে আলুনি খেলাম
গেরস্ত বলে পরানে মলাম।

১৮৭। ছিঁড়ে ছিঁড়ে কাটুনি, পুড়ে পুড়ে রাঁধুনি।

১৮৮। ছিল না কথা, দিল গাল,
আজ না হয়, হবে কাল।

১৮৯। ছুঁচোয় যদি আতর মাখে,
তবু কি তার গন্ধ ঢাকে?

১৯০। ছুঁচোর গোলাম চামচিকে,
তার মাইনে চৌদ্দ সিকে।

১৯১। হেঁদো কথা মাথার জটা,
খুলতে গেলেই বিষম ল্যাঠা।

১৯২। ছোট কাঁটাটি ফুটে পায়,
তুলে ফেল নইলে দায়।

১৯৩। ছোট শরাটি ভেঙে গেছে, বড় শরাটি আছে,
নাচ কোদ কেন বউ আমার হাতে আন্দাজ আছে।

১৯৪। জন, জামাই, ভাগনা–তিন নয় আপনা।

১৯৫। জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে–তিন বিধাতা নিয়ে।

১৯৬। জপ তপ কর কি, মরতে জানলে ডর কী?

১৯৭। জল জল বৃষ্টির জল, বল বল বাহুর বল।

১৯৮। জলের শক্র পানা, আর মানুষের শত্রু কানা।

১৯৯। জামায়ের জন্য মারে হংস,
গুষ্টিসুদ্ধ খায় মাংস।

২০০। জিব পুড়ল আপন দোষে
কী করবে মোর হরিহর দাসে।

২০১। জেলের পরনে তেনা, নিকারির কানে সোনা।

২০২। জোছনাতে ফটিক ফোটে,
চোরের মায়ের বুক ফাটে।

২০৩। জ্বালা দিতে নেই ঠাঁই,
জ্বালা দেয় সতীনের ভাই।

২০৪। ঝাঁটা দিয়ে বিষ (ভূত) ঝাড়ানো
ঝিকে মেরে বউকে শেখানো।

২০৫। ঝি জব্দ কিলে, বউ জব্দ শিলে,
পাড়া-পড়শি জব্দ হয় চোখে আঙুল দিলে।

২০৬। ঝোলে ঝালে অম্বলে
বেগুন সব ঠাঁই চলে।

২০৭। টক টেশো আঁটি সারা
শাসশূন্য আঁশ ভরা
এই আম বিলাবার ধারা।

২০৮। টকের জ্বালায় দেশ ছাড়লাম,
তেঁতুল তলায় বাঁশ গাড়লাম।

২০৯। টাকা তুমি যাচ্ছ কোথা? পিরিতি যথা,
আসিবে কবে? বিচ্ছেদ যবে।

২১০। ঠাকুরকে দেখিয়ে কলা,
নৈবিদ্যি নে’ ছুটে পালা।

২১১। ঠেটা লোকের মুখে আট,
বাইরে থেকে কাটে গাঁট।

২১২। ডাকলে ডাক, বসলে ক্রোশ,
পথ বলে মোর কিসের দোষ?

২১৩. ডুব দিয়ে খাই পানি,
আল্লাহ জানে আর আমি জানি।

২১৪। ঢেঁকিশালে যদি মানিক পাই
তবে কেন পর্বতে যাই।

২১৫। ঢের দেখেছি চুরি করতে,
এমন দেখিনি ধুকড়ি পরতে।

২১৬. তাঁতি রাগে কাপড় ছেড়ে
আপনার ক্ষতি আপনি করে।

২১৭। তাল, তেঁতুল, মাদার,
তিনে দেখায় আঁধার।

২১৮। তাল বাড়ে ঝোপে,
আর খেজুর বাড়ে কোপে।

২১৯। তিন মাথা যার, বুদ্ধি নেবে তার। ২

২০। তুক তাক ছয় মাস, কপালে যা বারো মাস।

২২১। তুফানে যে হাল ধরে না, সেই বা কেমন নেয়ে,
কথা পাড়লে বুঝতে পারে না, সে-ই কেমন মেয়ে।

২২২। মূলে নেই লক্ষ্মীপূজা একেবারে দশভুজা।

২২৩। অবংশো পতিততা রাজা মূর্খ পুত্ৰশ্চ পণ্ডিতঃ
অধনশ্চ ধনং প্রাপ্য তৃণবন্নন্যতে জগৎ।

(অনুবাদ : নীচ বংশজাত ব্যক্তি যদি রাজা হয়, মূর্খ ব্যক্তির পুত্র যদি পণ্ডিত হয়, দরিদ্র যদি হঠাৎ প্রচুর ধনলাভ করে, তবে তারা জগৎকে তৃণের ন্যায় অগ্রাহ্য করে।)।

২২৪। তেলা মাথায় ঢাল তেল,
রুখু মাথায় ভাঙ বেল।

২২৫। তোমারে বধিবে যে,
গোকুলে বাড়িছে সে।

২২৬। তোর পায় গড় না,
তোর কাজের পায়ে গড়।

২২৭। তোর শিল, তোর নোড়া
তোরই ভাঙি দাঁতের গোড়া।

২২৮। থাকরে কুকুর আমার পাশে,
ভাত দেব সেই পৌষ মাসে।

২২৯। থাকে যদি চুড়ো বাঁশি
মিলবে রাধা হেন কত দাসী।

২৩০। দক্ষিণদ্বারী ঘরের রাজা, পূর্বারী তার প্রজা,
পশ্চিমদ্বারীর মুখে ছাই, উত্তরদ্বারীর খাজনা নাই।

২৩১। দয়া আছে মায়া আছে গলা ধরে কাঁদি,
আধ পয়সার আটটি কলা পরান গেলে না দি।

২৩২. দয়া করে দেয় নুন, ভাত মারে তিনগুণ।

২৩৩। দল ভাঙলে যে, কৈ খাবে সে।

২৩৪। দশে মিলি করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ।

২৩৫। দশে যারে বলে ছি, তারে বাঁচায় কাজ কী?

২৩৬। দশের মুখে জয়, দশের মুখে ক্ষয়।

২৩৭। দাড়িকে মাঝি করা, মরা গাঙ্গে ডুবে মরা।

২৩৮। দাওয়া মারা যতদিন, বাপ খুড়ো ততদিন।

২৩৯। দায়ে বালি, কুড়লে খিল,
ভাল মানুষকে ভাল কথা বজ্জাতকে কিল।

২৪০। দিন গেল আলে ডালে,
রাত হলে চেরাগ জ্বলে।

২৪১। দিন থাকতে বাঁধে আল,
তবে খাবে নানা শাল।

২৪২। দিনে বাতি যার ঘরে, তার ভিটায় ঘুঘু চরে।

২৪৩। দিল্লিকা লাডডু, যো খায় সো পাস্তায়া,
যো নেহি খায় সো ভি পস্তায়া।

২৪৪। দুই সতীনের ঘরকন্না,
ঘরের গিন্নি ভাত পান না।

২৪৫। দুই স্ত্রী যার, বড় দুঃখ তার।

২৪৬। দুধ কলা দাও যত,
সাপের বিষ বাড়ে তত।

২৪৭। ধর্ম হয় না করলেই উপাস,
কোদাল পাড়লেই হয় না চাষ।

২৪৮। ধর্মের কল বাতাসে (আপনি) নড়ে
পাপ করলে ধরা পড়ে।

২৪৯। ধীর জাল ঘন কাটি, তবে বলি দুধ আউটি।

২৫০। ধীরে রাধে ধীরে খায়, তবে খাওয়ার মজা পায়।

২৫১। নখে কাটে কচি কালে, ঝুনো হলে দাঁত না চলে।

২৫২। ন চ বিদ্যাসমো বন্ধুৰ্নচ ব্যাধিসম্যে রিপুঃ।
ন চাপত্যসমঃ স্নেহোন চ দৈবাৎ পরং বলম।

(অনুবাদ ও বিদ্যার তুল্য বন্ধু নেই। ব্যাধির ন্যায় শত্রু নেই। অপত্য স্নেহের মতো কোনো স্নেহ হতে পারে না। দৈব বল সকল বলের শ্রেষ্ঠ।)

২৫৩। নদী, নারী, শৃঙ্গধারী–এ তিনে না বিশ্বাস করি।

২৫৪। নয় মণ তেলও,পুড়বে না,
রাধাও নাচবে না।

২৫৫। আচারো বিনয়ো বিদ্যা প্রতিষ্ঠা তীর্থ দর্শন।
নিষ্ঠা বৃত্তিস্থূপপা দানং, নবধা কুললক্ষণম্।।

(অনুবাদ ও সদাচার, বিনয়, বিদ্যা, খ্যাতি, তীর্থদর্শন, শাস্ত্রানুমোদিত ধর্মে আসক্তি, ব্রাহ্মণোচিত বৃত্তি (অর্থাৎ বেদ অধ্যয়ন প্রভৃতি), তপস্যা এবং দান–এই নয়টি সদ্বংশীয় ব্যক্তির লক্ষণ।)।

২৫৬। পিতা রক্ষতি কৌমারে, ভর্তা রক্ষতি যৌবনে।
পুত্রশ্চ স্থবিরে ভাবে, ন স্ত্রী স্বতন্ত্রমহতি।

(অনুবাদ : নারী বাল্যে পিতার, যৌবনে স্বামীর এবং বার্ধক্যে পুত্রের অধীন থাকবে। স্ত্রীগণের পক্ষে স্বাধীন হওয়া উচিত নয়। এখানে স্বাধীন বলতে যথেচ্ছাচারী বোঝানো হয়েছে।)

২৫৭। না দেওয়ার চাল, আজ না কাল।

২৫৮। না দেখে চলে যায়, পায় পায় হোঁচট খায়।

২৫৯। নাপিতের আসি, ধোপার বাসী।

২৬০। না বুঝে ছিলাম ভালো, অর্ধেক বুঝে পরান গেল।

২৬১। নামে ডাকে গুরুমশাই,
লেজা মুডোর জ্ঞান নাই।

২৬২। নারীর বল, চোখের জল।

২৬৩। নিতে পারি, খেতে পারি, দিতে পারি নে,
বলতে পারি, কইতে পারি, সইতে পারি নে।

২৬৪। নিত্য চাষার ঝি,
বেগুন ক্ষেত দেখে বলে, এ আবার কী?

২৬৫। মাতলো যস্য গোবিন্দঃ পিতা যস্য ধনঞ্জয়ঃ।
সোহভিমন্যঃ রণে শেতে, নিয়তিঃ কেন বাধ্যতে।

(অনুবাদ : যার মামা স্বায়ং শ্রীকৃঞ্চ, পিতা অর্জুন, সেই অভিমন্যুও যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন, সুতরাং নিয়তিকে কেউ অতিক্রম করতে পারে না।)

২৬৬। নণ পুরুষের তিনগুণ ঝাল,
পরনে গামছা, গায়ে ঠাকুরদাদার শাল।

২৬৭। নীরোগ শরীর যার, বৈদ্যে করবে কী।
পরের ভাতে বেগুন পোড়া, পান্তাভাতে ঘি।

২৬৮। নেকা, বোকা, ঢিলে (ঢলঢল) কাছা,
তিনে প্রত্যয় না করো বাছা।

২৬৯। নেবার বেলা পরিপাটি, দেবার বেলা ফাটাফাটি।

২৭০। লেবু কচলাবে যত, তেতো হবে তত।

২৭১। নেভবার আগে ক্ষণেক তরে,
দীপ জ্বলে ধপ করে।

২৭২। নেশাতে বুক ফাটে, কুকুরে মুখ চাটে।

২৭৩। পড়ল কথা সভার মাঝে,
যার কথা তার গায়ে বাজে।

২৭৪। পড়ক না পড়ক পো, সভার মাঝে নে থো।

২৭৫। পড়েছি তাফালে, যা থাকে কপালে।

২৭৬। পড়েছি মোগলের হাতে,
খানা খেতে হবে সাথে।

২৭৭। পতির পায়ে থাকে মতি,
তবে তারে বলে সতী।

২৭৮। পথে পেলাম কামার, দা গড়ে দে আমার।

২৭৯। লেখনী পুস্তিকা জায়া পরহস্তং গতাগত।
যদি মা পুনরায়তি ভ্ৰষ্টা চ মর্দিত।

(অনুবাদ : কলম, বই এবং পত্নী একবার হাতছাড়া হলে আর তাদেরকে ফিরে পাওয়ার আশা করা যায় না। যদিবা কখনো ফিরে পাওয়া যায়, তবে তা আগের অবস্থায় থাকে না–এরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ফিরে আসে।)।

২৮০। পুস্তকস্থা চ যা বিদ্যা পরহস্তগতং ধনম্।
কার্যকালে সমুৎপন্নে ন সা বিদ্যান,তদ্ধন।

(অনুবাদ : যে-বিদ্যা কার্যকালে মনে পড়ে না ও যে-ধন কার্যকালে পাওয়া যায় না সে বিদ্যা বা ধনের প্রয়োজন নেই।).

২৮১। পরে তসর খায় ঘি, তার আবার ভাবনা কী?

২৮২। পরের কথায় লাথি চাপড়,
নিজের কথায় ভাত কাপড়।

২৮৩। পরের ঘরে খায় আয়,
আঠারো মাসে বছর যায়।

২৮৪। পরের চাল পরের ডাল, নদে করে বিয়ে।

২৮৫। পরের ছেলে (বা বিড়াল) খায়,
আর বনের পানে (পথ পানে) চায়।

২৮৬। পরের জন্য গর্ত খোড়ে, আপনি তাতে পড়ে মরে।

২৮৭। পরের জন্য ফাঁদ পাতে,
আপনি পড়ে মরে তাতে।

২৮৮। পরের দুধে দিয়ে ফুঁ, পুড়িয়ে এলেন আপন মু’।

২৮৯। পরের দেখে তোলে হাই, যা আছে তাও নাই।

২৯০। পরের ধনে পোদ্দারি, লোকে বলে লক্ষ্মীশ্বরী।

২৯১। পরের পিঠে, বড় মিঠে।

২৯২। পরের মাথায় দিয়ে হাত, কিরা করে নির্ঘাত।

২৯৩। পরের লেজে পড়লে পা তুলোপানা ঠেকে,
নিজের লেজে পড়লে পা কেঁক করে ডাকে।

২৯৪। পরের সোনা দিও না কানে,
কেড়ে নেবে হঁচকা টানে।

২৯৫। পরের হাতে ধন, পেতে কতক্ষণ।

২৯৬। পচ পাগলের ঘর,
খোদায় রক্ষা কর।

২৯৭। পাগল কি গাছে ফলে,
আক্কেলেতে পাগল বলে।

২৯৮। পিঠা খায় মিঠার জোরে,
হাত নেড়ে বেড়ায় নানির জোরে।

২৯৯। মার আর ধর আমি পিঠে বেঁধেছি কুলো।
বকো আর ঝকো, আমি কানে দিয়েছি তুলো।

৩০০। পিসি বল, মাসি বল, মার বাড়া নাই,
পিঠে বল, মিঠে বল, ভাতের বাড়া নাই।

৩০১। পুঁটি মাছের প্রাণ, দেখতে দেখতে যান।

৩০২। পুতুল যেমন পুতুল কাঁচে,
যেমন নাচায় তেমনি নাচে।

৩০৩। পুরান বসন ভাতি, অবলাজনের জাতি।

৩০৪। পুরুষের দশ দশা, কখনো হাতি কখনো মশা।

৩০৫। পূর্বে হাঁস, পশ্চিমে বাঁশ,
উত্তরে কলা, দক্ষিণে মেলা।

৩০৬। পেট জ্বলে ভাতের তরে,
সোনার আংটি হাতে পরে।

৩০৭। পেটের বাছা আর বাড়ির গাছা।

৩০৮। পোড়া কপালে সুখ নাই,
বিয়ে বাড়িতে ভাত নাই।

৩০৯। ফকিরে ফকিরে ভাই ভাই,
ফকিরের রাজত্ব সব ঠাঁই।

৩১০। ফাল্গুনে আগুন, চৈতে মাটি,
বাঁশ রেখে বাঁশের ঠাকুরদাকে কাটি।

৩১১। ফুটনির মামা, ভিতরে কপিল উপরে জামা।

৩১২। ফুরাল বাগানের আম, কী খাবিরে হনুমান।

৩১৩। ফুলের নাই গন্ধ, চোখ থাকতে অন্ধ।

৩১৪। ফুলে শোভা ভোমরা
গাই-এর শোভা চামড়া।

৩১৫। বউ-এর রাগ বিড়ালের উপর,
বিড়ালের রাগ বেড়ার উপর।

৩১৬। বউ ভাঙলে সরা, গেল পাড়া পাড়া,
গিন্নি ভাঙলে নাদা, ও কিছু নয় দাদা।

৩১৭। ফেন দিয়ে ভাত খায়; গল্পে মারে দই,
মেটে হুঁকোয় তামাক খায় গুড়গুড়িটা কই?

৩১৮। বজ্ৰাদপি কঠোরাণি মৃদুনি কুসুমাদপি।
লোকোত্তরাণাং চেতাংসি কোহি বিজ্ঞাতুমীশ্বরঃ।

( অনুবাদ : অসামান্য ব্যক্তিগণের মন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বজ্রের মতো কঠোর এবং অবস্থাবিশেষে ফুলের মতো কোমল হয়। সাধারণ মানুষ তাদের স্বরূপ বুঝতে পারে না।)

৩১৯। বড় ঘরের বড় কথা, গরিবের ছেঁড়া কাঁথা,
বড় ঘরের বড় কথা, বললে কাটা যায় মাথা।

৩২০। বড় বড় বানরের বড় বড় পেট,
লংকা ডিঙাতে সব মাথা করে হেঁট।

৩২১। বড়র পিরিতি বালির বাঁধ,
ক্ষণে হাতে দড়ি ক্ষণেকে চাঁদ।

৩২২। বন পোড়ে সবাই দেখে, মন পোড়ে কেউ না দেখে।

৩২৩। বল বুদ্ধি ভরসা, তিন তিরিশে ফরসা।

৩২৪। বসতে জায়গা পেলে, শোবার জায়গা মেলে।

৩২৫। বসে খেলে কুলোয় না,
করে খেলে ফুরোয় না।

৩২৬। বাইরে হাসিখুশি ভেতরে গরল বাঁশি।

৩২৭। বাঘ ভালুকের রাজ্যে থাকি,
মনের কথা মনেই রাখি।

৩২৮। বাঘে মহিষে যুদ্ধ হয়, নল খাগড়ার প্রাণ যায়।

৩২৯। বাছার আমার এত বাড়,
ছ’ আনার কাপড়ে ন’ আনার পাড়।

 ৩৩০। বড় গাছের তলায় রাস,
ডাল ভাঙলেই সর্বনাশ।

৩৩১। বাড়িতে পায় না শাক সজিনা,
ডাক দিয়ে বলে ঘি আন না।

৩৩২। বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মীস্তদর্ধং কৃষি কর্মনি।
দতধং রাজসেবায়াৎ ভিক্ষায়াৎ নৈব নৈব চ।

(অনুবাদ : বাণিজ্যে সবচেয়ে বেশি লাভ হয়। কৃষিকার্যে তার অর্ধেক লাভ হয়। রাজকার্যে [সরকারি চাকরিতে] তার অর্ধেক। ভিক্ষায় কখনো সম্পদ লাভ করা যায় না।)

৩৩৩। বাপকা বেটা সেপাইকা ঘোড়া,
কুচ নেহি তো থোড়া থোড়া।

৩৩৪। বাপের জন্মে নেই কো চাষ,
ধানকে বলে দূর্বাঘাস।

৩৩৫। বামুন গেল ঘর, তো লাঙ্গল তুলে ধর।

৩৩৬। বারো কাঁদি নারিকেল, তের কাঁদি কলা,
আজ আমাদের ছোট রানির উপবাসের পালা।

৩৩৭। বারোটা ঝাড়লুম তেরোটা মল,
তুই না মরে অপযশ হল।

৩৩৮। বার বার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান,
এইবার তোমার আমি বধিব পরান।

৩৩৯। বারো রাজপুত্রের তেরো হাঁড়ি,
কেউ খায় না কারো বাড়ি।

৩৪০। জ্ঞাতিভিৰ্বণ্টতে নৈব, চৌরেণাপি ন নীয়তে।
দানেন ন ক্ষয়ং যাতি বিদ্যারত্নং মহাধনম্।

(অনুবাদ : বিদ্যা শ্রেষ্ঠ রত্ন, কারণ এটা জ্ঞাতিগণ ভাগ করে নিতে পারে না, চোরে চুরি করে নিতে পারে না, অথবা দান করলে [বৃদ্ধি ছাড়া] ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না!)

৩৪১। বিদ্বত্তঞ্চ নৈব তুল্যং কদাচন।
স্বদেশে পূজ্যতে রাজা বিদ্বান সর্বত্র পূজ্যতে।

(অনুবাদ : বিদ্বান ব্যক্তি রাজা অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ, যেহেতু রাজা কেবল নিজের দেশে। পূজা পান; কিন্তু বিদ্বান সর্বত্র সমাদর লাভ করেন)।

৩৪২। বিধি যদি বিপরীত, কেবা করে কার হিত।
বিধির লিখন, না যায় খণ্ডন।

৩৪৩। বিন্দু বিন্দু বৃষ্টি, পুকুরের সৃষ্টি।

৩৪৪। বিপদে শিবের গোঁড়া, সম্পদে শিবত নোড়া।

৩৪৫। বিয়ে ফুরোলে বাজনা, কিস্তি ফুরোলে খাজনা।

৩৪৬। পরোক্ষে কার্য-হন্তারং প্রত্যক্ষে প্রিয়বাদিন।
বর্জয়েৎ তাদৃশং বন্ধুং বিষকুম্ভং পয়োমুখনম্।।

(অনুবাদ : যিনি সামনে প্রিয় বাক্য বলেন, কিন্তু পরোক্ষে ক্ষতি করেন, তিনি বন্ধু হলেও উপরে দুধ দেওয়া ও ভিতরে বিষ-ভরা দুধের কলসির ন্যায়। সুতরাং তাদেরকে সযত্নে বর্জন করবে।)

৩৪৭। বুঝতে নারি সেকরার ঠার, বলে এক করে আর।

৩৪৮। বুদ্ধিগুণে হা-ভাত, বুদ্ধিগুণে খা ভাত।

৩৪৯। বুনলাম ধান হল তিল,

ফলল রুদ্রাক্ষ খেলাম কিল।

৩৫০। বেদে কি জানে কর্পূরের গুণ,
এঁকে এঁকে বলে সৈন্ধব নুন।

৩৫১। বেহায়ার নাহি লাজ, নাহি অপমান,
সুজনকে এক কথা মরণ সমান।

৩৫২। বৈষ্ণব হইতে বড় হয়েছিল সাধ,
তৃণাদপি শুনে মনে লেগে গেছে তাক।

৩৫৩। ভক্তিহীন ভজন, আর লবণহীন ব্যঞ্জন।

৩৫৪। ভগবানের মার দুনিয়ার বার।

৩৫৫। ভাঁড়ে নেই ঘি, ঠকঠকালে হবে কী?

৩৫৬। ভাগাড়ে মড়া পড়ে, শকুনের টাক নড়ে।

৩৫৭। ভাগের ভাগ পেলে, না খেয়েও চিবিয়ে ফেলে।

৩৫৮। ভাগ্যবানের দুটি পুত,
একটি বাঁদর, একটি ভূত।

৩৫৯। ভাঙা ঘরে জোছনার আলো,
যেদিন যায় সেদিন ভালো।

৩৬০। ভাত পায় না কুঁড়ের নাগর,
আমানি খেয়ে পেটটা ডাগর।

৩৬১। ভাত রোচে না রোচে মোয়া
মণ্ডা রোচে না পোয়া পোয়া।

৩৬২। ভাবে ডগমগ তেলাকুচো,
হেসে মল কালো ছুঁচো।

৩৬৩। ভীষ্ম, দ্রোণ, কর্ণ গেল শল্য হল রথী,
চন্দ্র, সূর্য, অস্ত গেল জোনাকির পাছায় বাতি।

৩৬৪। চারৈ; পশ্যন্তি রাজান; শাস্ত্রৈ; পশ্যন্তি পণ্ডিতা;
গাব; পশ্যন্তি ঘ্রাণেন ভুতে পশ্যন্তি বর্বরা।

(অনুবাদ : রাজারা গুপ্তচরের সাহায্যে অপ্রত্যক্ষ ব্যাপার প্রত্যক্ষ করেন। পণ্ডিতগণ শাস্ত্রের সাহায্যে বস্তুর জ্ঞানলাভ করেন। গরু ঘ্রাণের সাহায্যে বুঝতে পারে। কিন্তু মূর্খ। ব্যক্তি শুধু অতীত ব্যাপারে জানে, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তার কোনো জ্ঞান নেই।)

৩৬৫। মন চায় বাদশা হতে, খোদা দেয় না মেগে খেতে।

৩৬৬। মনটি শখের বটে, হাতে কিন্তু পয়সা নাই।
জোনাকি পোকার আলো দেখে গ্যাসবাতির শখ মিটাই।

৩৬৭। মরা মালঞ্চে ফুটল ফুল,
টেকো মাথায় উঠল চুল।

৩৬৮। মা ডাকলে খেলাম না,
বাবা ডাকলে গেলাম না,
সাত পুরুষের বেঁকি বলে, পান্তা খা, পান্তা খা।

৩৬৯। মা পায় না কাঁথা সেলাই করবার সুতা,
ব্যাটার পায়ে দ্যাখো চৌদ্দ সিকের জুতা।

৩৭০। মাতৃবৎ পরদারেষু পরদ্রব্যে লেষ্ট্রিবৎ।
আত্মবৎ সর্বভূতেষু য; পশ্যতি সে পণ্ডিতঃ।

(অনুবাদ পরস্ত্রীকে মায়ের মতো, পরের জিনিসকে মাটির ঢেলার মতো এবং সমস্ত প্রাণীকে নিজের ন্যায় জ্ঞান করাই প্রকৃত পণ্ডিতের লক্ষণ।)

৩৭১। মায়ের গলায় দিয়ে গড়ি,
বউকে পরাই ঢাকাই শাড়ি।

৩৭২। মায়ের পোড়ে না, মাসির পোড়ে,
পাড়া-পড়শির ধবলা ওড়ে।

৩৭৩। মুচি হয়ে শুচি হয় যদি হরি ভজে,
শুচি হয়ে মুচি হয় যদি হরি ত্যাজে।

৩৭৪। মূর্খ লোকে কেনে বই জ্ঞানবানে পড়ে,
ধনবানে কেনে ঘোড়া, বুদ্ধিমানে চড়ে।

৩৭৫। মেগে এনে বিলিয়ে খায়, হাতে হাতে স্বর্গ পায়।

৩৭৬। মেজে ঘষে হল ক্ষয়
মালা তবু ধনো নয়।

৩৭৭। যখন আদর জুটে, ফুটকলাই নিয়ে ফুটে,
যখন আদর টুটে, উেঁকি দিয়ে কুটে।।

৩৭৮। যখন বিধি মাপায়।
তখন উপরি উপরি চাপায়।

৩৭৯। যখন যার কপাল খোলে,
শুকনো ডাঙায় ডিঙি চলে।

৩৮০। যখন যার পড়তা হয়,
ধুলো মুঠা ধরে সোনা মুঠা হয়।

৩৮১। সকল পথ দৌড়াদৌড়ি, খেয়া ঘাটে গড়াগড়ি।

৩৮২। মাতা যস্য গৃহে পাস্তি, ভার্যা চ ব্যাভিচারিণী।
অরণ্যং তেন গন্তব্যং যথারণ্যং তথা গৃহম্।

(অনুবাদ : যার গৃহে মা নেই, স্ত্রী দুশ্চরিত্রা, তার পক্ষে বনগমন করা কর্তব্য। কারণ তার পক্ষে গৃহ অরণ্যতুল্য।)

৩৮৩। যদি থাকে আগে পিছে, কী করে শাকে মাছে।

৩৮৪। যদি দেখে আঁট আঁটি,
কাঁদিয়া ভিজায় মাটি।

৩৮৫। যদি হয় সুজন, তেঁতুল গাছে ন’জন।

৩৮৬। যদি হয় সোনার ভাগারি, তবু ধরে লোহার কাটারি।

৩৮৭। যদু ধোপা, মধু ধোপা, সব ধোপারই এক চোপা।

৩৮৮। যার দৌলতে চুয়া চন্দন,
তারি পাতে খোলার ব্যঞ্জন।

৩৮৯। যার নুন খাই তার গুণ গাই।

৩৯০। যারে না বামুন বলি, তার গায় নামাবলী।

৩৯১। যেখানে আঁটাআঁটি
সেখানেই লাঠালাঠি।

৩৯২। যেমন সরা তেমনি হাঁড়ি, গড়ে রেখেছে কুমার বাড়ি।

৩৯৩। রাজার রাজ্যপাট, গরিবের শাকভাত।

৩৯৪। রাম লক্ষ্মণ দুটি ভাই, রথে চড়ে স্বর্গে যাই।

৩৯৫। রূপে ঢলঢল গুণে পশরা,
কেঁদে মলো যত কালো ছেচরা।

৩৯৬। লঙ্কার রাবণ ম’ল
বেহুলা কেঁদে রাড়ি হল।

৩৯৭। লাউ শাকের বালি আর অন্তরের কালি।

৩৯৮। লাজের মাথায় পড়ক বাজ
সাঘো গিয়ে আপন কাজ।

৩৯৯। লাভ-লোকসান জেনে,
চাষ করে না বেনে।

৪০০। লিখিব পড়িব মরিব দুঃখে,
মৎস্য মারিব খাইব সুখে।

৪০১। সজনে শাক বলে আমি সকল শাকের হেলা,
আমার খোঁজ করে কেবল টানাটানির বেলা।

৪০২। শঠের মায়া, তালের ছায়া।

৪০৩। শসা বেচুনি বেচে শসা, তার হয়েছে সুখের দশা।

৪০৪। অন্নং জীর্ণং হি প্রশংসেৎ, ভার্যা বিগত যৌবনাম।
রণাৎ প্রত্যাগতং শূরম, শস্যষ্ণ গৃহমাগতম।

(অনুবাদ : অন্ন জীর্ণ হলে তার প্রশংসা করা চলে, ভার্যা যৌবন অতিক্রান্ত হলে প্রশংসনীয়। শস্য গৃহে আসলে তবেই তার মূল্য। কার্য সমাধার পূর্বে প্রশংসার বিশেষ মূল্য নেই।

৪০৫। শাক অম্বল পান্তা–তিন ওষুধের হন্তা।

৪০৬। শুয়ে শুয়ে লেজ নাড়ে, সেই বাঘে মানুষ মারে।

৪০৭। সখা যার সুদর্শন, তার সঙ্গে কি সাজে রণ?

৪০৮। সঙ্গ দোষে কী না হয়,
ছুঁচো ছুঁলে গন্ধ হয়।

৪০৯। সতী হল কবে? সে মরেছে যবে।

৪১০। সব কাজে যার হুঁশ, তারেই কয় মানুষ।

৪১১। সন্নাসীর অল্প ছিদ্র গায় সর্বজন,
শুভ্রবস্ত্রে মসীবিন্দু দেখায় যেমন।

৪১২। সময়ে সব হয়, বোন ভাগনা ভাই,
ঘরের স্ত্রী আপন নয়, যখন গাঁটে পয়সা নাই।

৪১৩। মিত্রদ্রোহী কৃতঘাশ্চ যশ্চ বিশ্বাসঘাতকঃ।
কে ত্রয়ো নরকং যাস্তি যাবচ্চন্ত্র দিবাকরো।

(অনুবাদ : যে-সকল লোক মিত্রদ্রোহী, কৃতঘ্ন এবং বিশ্বাসঘাতক, তারা যতদিন পর্যন্ত চন্দ্র সূর্য উঠবে, ততদিন নরকগামী হবে।)

৪১৪। সাত ভাই তাঁত বোনে, আপন কোলে সবাই টানে।

৪১৫। সাত সতীনে নড়ি চড়ি, বেরা আগুনে পুড়ে মরি।

৪১৬। সারাদিন থাকব নায়, কখন দিব খরম পায়?

৪১৭। সারাদিন বড়শি হাতে, সন্ধেবেলা আমড়া ভাতে।

৪১৮। সারাদিন যায় হেসে খেলে,
সন্ধেবেলা বৌ কপাল ডলে।

৪১৯। সুজন-পিরিত সোনা, ভেঙে গড়া যায়।
কুজন-পিরিত কাঁচ ভাঙিলে ফুরায়।

৪২০। সুদিনের বারো ভাই, দুর্দিনের কেউ নাই।

৪২১। সেই মন খসালি, তবে কেন লোক হাসালি।

৪২২। সেই ধানে সেই চাল, গিন্নি বিনে আল থাল।

৪২৩। স্বামী নাই, পুত্র নাই, কপাল ভরা সিঁদুর
চাল নাই, ধান নাই, গোলা ভরা ইঁদুর।

৪২৪। স্বামীর মা শাশুড়ি, তারে বর মানি
কোথা হতে এলেন আমার খুড় শাশ ঠাকুরানি।

৪২৫। হক কথা বলব, বন্ধু বিগড়ায় বিগড়াবে,
পেট ভরে খাব, লক্ষ্মী ছাড়ে ছাড়বে।

৪২৬। হয় না হয় বিয়ে, ঢাক বাজাও গিয়ে।

৪২৭। হাতি চড়ে ভিক্ষা মাঙি,
ইচ্ছেয় না দাও ঘড় ভাঙি।

৪২৮। হাতে কড়ি পায় বল, তবে যাই নীলাচল।

৪২৯। হাল যদি ধরে ঠেসে, যায় কি তরী তুফানে ভেসে?

৪৩০। হেলায় কার্য নষ্ট বুদ্ধি নষ্ট নির্ধনে,
যাচনে মান নষ্ট, ভোজন নষ্ট দুই বিনে।

৪৩১। হরি বাচান প্রাণ, বৈদ্যের বাড়ে মান।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *