০৩. ধর্ম, দর্শন ও সৃষ্টিকর্তা

ধর্ম, দর্শন ও সৃষ্টিকর্তা

১. আল্লাহ ব্যতীত উপাস্য নাই।

–আল-কোরআন

২. সে-ই যথার্থ ধর্ম, যাতে সব মানুষের কল্যাণ নিহিত।

হান্নামুর

৩. ধর্ম একটাই, যদিও রয়েছে এর একশোটা রূপ।

জর্জ বার্নার্ড শ

৪. ধর্মের মূল কথাই হচ্ছে মানুষ হিসেবে মানুষের সেবা করা।

স্টমাস ফুলার

৫. যারা ধর্মবিশ্বাসী তারাই যুবক এবং যারা অবিশ্বাসী তারাই বৃদ্ধ।

চ্যানি

৬. প্রত্যেক ধর্মই ভালো; কারণ প্রত্যেক ধর্মই মানুষকে ভালো হবার শিক্ষা দেয়।

–জর্জ ক্র্যাবি

৭. ধর্ম নিয়ে যারা বাড়াবাড়ি করে তাদের ধর্মান্ধ না বলে স্বার্থান্বেষী বলা ভালো।

লর্ড হ্যালিফক্স

৮. একটি ধর্ম আরেকটি ধর্মের মতোই সত্য।

রবার্ট বার্টন

৯. ধর্ম অর্থ সৃষ্টিকর্তার প্রতি মানুষের ভালোবাসা।

উইলিয়াম পেন

১০. তিনিই তোমাদের মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ করেছেন, তখন তোমরা কিছুই জানতে না। তিনিই তোমাদের শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, বুদ্ধি এবং পরস্পরের প্রতি মায়া মমতা দিয়েছেন যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও।

–আল-কোরআন

১১. সত্যই হল ভগবান, সত্য-সাধনাই হল তপস্যা, জগতের যা-কিছু শ্রেষ্ঠ কাজ তার মূলে সত্য; সত্যের চেয়ে বড় আর কিছুই নেই।

ব্যাসদেব

১২. মাহপুরুষেরা ধর্ম-সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করিয়া যান, আর আমরা তাহা হইতে সম্প্রদায়টাই লই, ধর্মটা লই না।

বরীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৩. কোরআন একটি জানালা, যার দ্বারা আমরা পরবর্তী দুনিয়ার দৃশ্যাবলী দেখতে পাই।

ইবনে হাব্বল

১৪. ধর্মের গোঁড়ামি দরিদ্রকে আরও দরিদ্র করে তোলে।

সুইফ্ট

১৫. যারা তীর্থের পর তীর্থ পর্যটন করে বেড়ায়, তাদের মধ্যে কেবল আছে আত্মতাড়না, তারা দেবতার পিছনে পিছনে ছোটে, দেবত্বের স্পর্শ পায় না।

–প্রবোধকুমার সান্যাল

১৬. সত্যবাদী ও ধর্মনিষ্ঠ বণিক ব্যতীত অন্যান্য বণিককে প্রতারক দলভুক্ত করা হবে।

–আল-হাদিস।

১৭. প্রত্যেক ধর্মেই অনেক ভালো জিনিস আছে। এইসকল ধর্মের মধ্যে যা সুন্দর তা গ্রহণ করে যা নিকৃষ্ট তা ত্যাগ করব।

আকবরনামা

১৮. ধর্মের মাঝে থেকেই মানুষ এত দুষ্টু আর বদমায়েশ হয়েছে; ধর্মের আবরণে যদি মানুষ না থাকত তা হলে তারা আরও কত দুষ্টু ও বদমায়েশ হত।

ফ্রাংকলিন

১৯. একটি গৃহে যদি ধর্মগ্রন্থ না থাকে, অথচ প্রতিদিন খাবারের নিমিত্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্যসামগ্রী থাকে, তাতে সে-গৃহের লোকদের দেহের খাদ্য হয় বটে, কিন্তু আত্মার খাদ্য থেকে এরা বঞ্চিত হয়।

সি. ভি. মেইজ

২০. মানুষকে অপমান কোরো না, মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব।

–শেখ সাদি

২১. পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয়।

বাইবেল

২২. ধর্মীয় কুসংস্কারগুলো মানবজাতির পক্ষে সবচেয়ে ক্ষতিকারক।

বার্ট্রান্ড রাসেল

২৩. নিশ্চয়ই অত্যাচারীরা পরস্পরের ভাই, কিন্তু যারা সৎ কাজ করে আল্লাহ্ তাদের বন্ধু।

–আল-কোরআন

২৪. যে-ব্যক্তি প্রতিশ্রুতি দেয় যে, সে মানুষের কাছে কিছুই চাইবে না, আমি তাকে বেহেশতের প্রতিশ্রুতি দিই।

–আল-কোরআন

২৫. সাবধান! লোককে দেখাইবার জন্য তাহাদের সাক্ষাতে তোমাদের ধর্মকর্ম করিও না। করিলে তোমাদের স্বর্গীয় পিতার নিকটে তোমাদের পুরস্কার নাই।

বাইবেল

২৬. তোমরা যখনই প্রার্থনা করিতে দাঁড়াও, যদি কাহারও বিরুদ্ধে তোমাদের কোনো কথা থাকে, তাহাকে ক্ষমা করিও, যেন তোমাদের স্বর্গস্থ পিতাও তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেন।

বাইবেল

২৭. সামান্য মূল্যের বদলে আমার আয়াতগুলোকে বিক্রি কোরো না।

–আল-কোরআন

২৮. (কেয়ামতের দিন) কাহারও সুপারিশ কবুল হইবে না।

–আল-কোরআন

২৯. ঈশ্বরকে বিশ্বাস করা শক্ত, কিন্তু তার চাইতেও বেশি শক্ত তাঁকে অবিশ্বাস করা। কতির বিস্ময়কর লীলা দেখে তাঁর প্রতি আমার বিশ্বাস জন্মেনি, বরং এ-বিশ্বাস জন্মেছে মানুষের প্রাণপ্রাচুর্য দেখে।

টেনিসন

৩০. যে-ঈশ্বর আমাদের জীবন দান করেছেন, তিনি একই সাথে আমাদের স্বাধীনতাও দান করেছেন।

টমাস জেফারসন

৩১. কোনো ভৃত্য দুই কর্তার দাসত্ব করিতে পারে না, কেননা সে হয় একজনকে ঘৃণা করিবে, অন্যকে প্রেম করিবে, নয়তো কজনে অনুরক্ত হইবে, অন্যকে তুচ্ছ করিবে।

বাইবেল

৩২. ধর্মমোহের চেয়ে নাস্তিকতা অনেক ভালো।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩৩. মানবতাই মানুষের একমাত্র ধর্ম হওয়া উচিত।

বার্ট্রান্ড রাসেল

৩৪. চিত্তকে মিথ্যার বিরুদ্ধে স্বাধীন করে রাখাই ধর্ম।

–ডা. লুৎফর রহমান

৩৫. সবকিছু মেনে নেওয়ার অর্থাৎ আনুগত্যের নিয়মকানুন এসেছে ধর্মগ্রন্থ থেকে এবং মুক্তি বা স্বাধীনতার নিয়মকানুন এসেছে বিজ্ঞান বা মানুষের মন থেকে।

–ম্যাক্সিম গোর্কি

৩৬. ধর্ম অর্থ ঈশ্বরের এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসা ব্যতীত কিছুই বোঝায় না।

–উইলিয়াম পেন

৩৭. ভয়ের তাড়া খেলেই ধর্মের মূঢ়তার পিছনে মানুষ লুকোতে চেষ্ট করে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩৮. মানুষের জন্য যাহা কল্যাণকর তাহাই ধর্ম। যে ধর্ম পালন করিতে গিয়া মানুষকে অকল্যাণ করিতে হয়, তাহা ধর্মের নামে কুসংস্কার মাত্র। মানুষের জন্য ধর্ম, ধর্মের জন্য মানুষ নয়।

প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ

৩৯. ধর্ম নিয়ে যারা কোন্দল করে, ধর্মের মর্ম তারা জানে না।

–ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

৪০. ধর্ম আর ধর্মবিশ্বাসের বেলায় মানুষ এত বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠে যে, সে বিনা দ্বিধায় মনে করে তার নিজের ধর্মই পৃথিবীর সেরা আর তার ধর্মমতই অভ্রান্ত।

–আবুল ফজল

৪১. আল্লাহর সৃষ্টিতে কোনো পরিবর্তন নাই।

–আল-কোরআন

৪২. তোমাদের মনে যা আছে, তা প্রকাশ করো বা গোপন করো, আল্লাহ্ তা জানেন।

–আল-কোরআন

৪৩. অধিকাংশ ধর্ম এবং ধর্মের অধিকাংশ তথ্য অন্ধ-বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত।…. তাই বিজ্ঞানের ন্যায় ধর্মের উপর সকল লোকের অটল বিশ্বাস হয় না। ধর্মকে সন্দেহাতীত রূপে পাইতে হইলে উহাকে অন্ধবিশ্বাসের উপর রাখিলে চলিবে না। উহাকে খাঁটি বিশ্বাস অর্থাৎ জ্ঞানের উপর প্রতিষ্ঠা করিতে হইবে।

আরজ আলি মাতুব্বর

৪৪. ভগ্নমনোরথ হয়ো না, নিরাশ হয়ো না, যদি মুমিন হও, বিশ্বাসী হও, জয়ী তুমি হবেই।

–আল-কোরআন

৪৫. মানুষ মহত্তম বলে অন্তরে যা ধারণ করে তা-ই ধর্ম। ধর্মের সঙ্গে কর্ম না-ও মিলতে পারে।

আবদুর রহামান শাদাব

৪৬. ধর্ম মানুষের প্রয়োজনেই সৃষ্ট, তাই ধর্ম মানুষের মঙ্গলের কথাই বলে।

–স্টেপ হেন

৪৭. অর্থের লোভে যে-ব্যক্তি কোরান পাঠ করে, সে অন্যের দুয়ারে ভিক্ষা করে।

হজরত আবু তোর

৪৮. যে-ব্যক্তি রোজা রাখিয়া মিথ্যাচার ও নিন্দাবাদ পরত্যাগ করে না, তাহার পান আহার ছাড়িয়া দেওয়াকে খোদাতাআলা গ্রাহ্য করেন না, অর্থাৎ তিনি তাহার রোজা গ্রহণ করেন না।

–আল-হাদিস

৪৯. আমার ধর্ম কোনো ভৌগোলিক সীমার মধ্যে আবদ্ধ নেই। আমার ধর্মের ভিত্তি হল ভালোবাসা এবং অহিংসা।

মহাত্মা গান্ধী

৫০. শয়তানের কোনো ক্ষমতা নাই তাহাদের উপর যাহারা ইমান আনিয়াছে এবং প্রভুর উপর নির্ভর করিয়াছে।

–আল-কোরআন

৫১. আল্লাহ্ কখনো কাফেরগণকে সৎপথ প্রদর্শন করেন না –আল-কোরআন

৫২. নামাজ চিৎকার করিয়া পড়িও না, চুপিচুপিও পড়িও না। বরং উহার মাঝামাঝি এক পথ ধরো।

–আল-কোরআন

৫৩. ধর্ম ব্যক্তিগত ব্যাপার এবং রাজনীতিতে এর স্থান হওয়া অনুচিত।

–মহাত্মা গান্ধী

৫৪. আমার ধর্মের প্রতি আমি একান্ত অনুগত। এর জন্য আমি প্রাণ দিতে প্রস্তুত। তবে এ আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ সম্বন্ধে রাষ্ট্রের কিছুই করণীয় নেই। ………. আপনার বা আমার ধর্ম সম্বন্ধে রাষ্ট্র কিছুই করবে না। এটা হল প্রত্যেকের ব্যক্তিগত ব্যাপার।

মহাত্মা গান্ধী

৫৫. ধর্মকে যারা সম্পূর্ণ উপলব্ধি না করিয়া প্রচার করিতে চেষ্টা করে, তাহারা ক্রমশই ধর্মকে জীবন হইতে দূরে ঠেলিয়া দিতে থাকে। ইহারা ধর্মকে বিশেষ গণ্ডি আঁকিয়া একটা বিশেষ সীমানার মধ্যে বদ্ধ করে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৫৬. যে করে ধর্মের নামে
বিদ্বেষ সঞ্চিত
ঈশ্বরকে অর্ঘ্য হতে
সে করে বঞ্চিত।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৫৭. ভণ্ডরাই ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে।

–কমরেড মুজাফফর আহমেদ

৫৮. যারা সম্পদ বিপদে দান করে, রাগ দমন করে, লোকদের ক্ষমা করে, আল্লাহ্ এমন হিতকারীদের ভালোবাসেন।

–আল-কোরআন

৫৯. ক্ষমাশীল হও, ভালো কাজ করতে আদেশ করো এবং যারা লেখাপড়া শেখে, তাদের কাছ থেকে দূরে থাকো।

–আল-কোরআন

৬০. তোমরা কি তাহাকে হেদায়েত করিতে চাওযাহাকে আল্লাহ বিপথে নিয়াছেন? বস্তুত আল্লাহ্ যাহাকে বিপথে নেন, তাহাদের জন্য তুমি পাইবে না কোনো পথ।

–আল-কোরআন

৬১. তাহারা (বিধর্মিগণ) আল্লাহকে ছাড়িয়া যাহাকে বন্দনা করিতেছে তোমরা তাহাদিগকে মন্দ বলিও না, কেননা তাহা হইলে তাহারা অজ্ঞানতাবশত আল্লাহকে মন্দ বলিয়া ফেলিবে।

–আল-কোরআন

৬২. নাস্তিক হওয়া সহজ নয়। এ এক অনন্য শক্তিরই অভিব্যক্তি। কেননা, বিশেষ জ্ঞান, বুদ্ধি, প্রজ্ঞা ও মনোবল না থাকলে নাস্তিক হওয়া যায় না। আশৈশব লালিত বিশ্বাস, সংস্কার, আচার-আচরণ, রীতিনীতি পরিহার করা সাধারণের পক্ষে সম্ভব নয়, কেবল অসামান্য নৈতিক শক্তিধর যুক্তিবাদী পুরুষের পক্ষেই তা সহজ।

ড. আহমদ শরীফ

৬৩. যিনি যোগী, যাহার মন বিশুদ্ধ হইয়াছে, যিনি নিজের মনকে সম্পূর্ণ বশে রখিতে পারেন, যিনি জিতেন্দ্রিয়, সেই জ্ঞানী সকলকেই নিজের আত্মার মতো দেখেন, তাই কর্ম করিলেও তাঁহার আর কোনো পাপ-পুণ্য জন্মে না।

শ্রীশ্রীগীতা

৬৪. যদি কেহ একটি মুদ্রা ধর্মযুদ্ধে ব্যয় করে, একটি দ্বারা কোনো দাসকে মুক্ত করে, একটি দরিদ্রকে দান করে এবং একটি আপন পরিবারের জন্য ব্যয় করে, তবে শেষের কার্যের পুণ্য অপর তিনটি কার্যের পুণ্যসমষ্টি অপেক্ষা অধিক।

–আল-হাদিস

৬৫. যিনি নিয়মিতভাবে আহার-বিহার করেন, কাজকর্ম যিনি নিয়মিতভাবে করেন, আর যিনি নিয়মিতভাবে ঘুমান আর জাগিয়া থাকেন, তাঁহার পক্ষেই যোগ সার্থক হইয়া তাঁহার দুঃখ দূর করে।

শ্রীশ্রীগীতা

৬৬. যারা সৎপথ অবলম্বন করিয়া জীবিকা অর্জন করে,তাহারা খোদাতালার প্রিয় বন্ধু।

–আল-হাদিস

৬৭. যাহারা যেভাবে আমার ভজনা করে, আমি তাহাদিগকে সেইভাবেই দয়া করিয়া থাকি। লোকে সকল রকমেই আমার পথে চলিয়া থাকে।

শ্রীশ্রীগীতা

৬৮. দয়া, সত্য ও কল্যাণ–এই যদি মানুষের আদর্শ হয়, সমাজের প্রতি মানুষ যদি এই সাধনাকে গ্রহণ করে, তা হলে মানুষের জীবনে এমন কোনো সমস্যার কল্পনা করা যায় না, যা আপোসে শান্তিতে মীমাংসা হতে পারে না।

–আল-কোরআন

৬৯. যিনি আমাকে সব প্রাণীর মধ্যে দেখিতে (উপলব্ধি করিতে) পারেন এবং সকল প্রাণী আমারই মধ্যে আছে ইহা বুঝিতে পারেন, আমি তাঁহার কাছে প্রত্যক্ষ হই। আর তিনিও আমার কাছে অদৃশ্য থাকেন না।

–শ্রীশ্রীগীতা

৭০. ঈশ্বরপরায়ণতা চরিত্রলাভের জীবনস্বরূপ।

মানকুমারী বসু

৭১. ভক্তে বাঁচাও দয়া জানি,
সে যে গো তার পাওনা জানি,
পাপীরে লও বক্ষে টানি করুণাময় কইব তবে।

কাজী নজরুল ইসলাম

৭২. কর্মকার যেমন রজতের ময়লা দূরীভূত করে, সেরূপ মেধাবী ব্যক্তি ক্ষণে ক্ষণে অল্প অল্প করে আত্ম-মল ক্রমশ দূরীভূত করবেন।

ত্রিপিটক

৭৩. ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করো তা-ই যা অতিরিক্ত নয়।

স্কাইলাস

৭৪. পরের লব্ধ বস্তুতে স্পৃহা করা ও লালায়িত হওয়া উচিত নয়। যে-ভিক্ষু পরবস্তুতে স্পৃহা করে ও লালায়িত হয়, সেই ভিক্ষু সমাধি লাভ করতে পারবে না।

–ত্রিপিটক

৭৫. সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢেকো না, আর জেনেশুনে সত্যকে গোপন কোরো না।

–আল-কোরআন

৭৬. সকল প্রাণীর মূল, নিত্য কারণ আমিই। আমিই বুদ্ধিমানের বুদ্ধি ও তেজস্বীর তেজ।

–অজ্ঞাত

৭৭. সকল জগৎ যাহার মধ্যে আছে, আর যিনি সকল জগৎ ব্যাপিয়া আছেন সেই পরম পুরুষকে শুধু একনিষ্ঠ ভক্তি দ্বারাই পাওয়া যায়।

শ্রীশ্রীগীতা

৭৮. নিজে সৎ না হয়ে অন্য লোককে সৎ হতে উপদেশ দেওয়া অর্থহীন।

–আল-কোরআন

৭৯. যে-ব্যক্তি প্রাণী হিংসা করে, সে কখনো আর্য হতে পারে না। যিনি সর্বজীবের প্রতি হিংসা ত্যাগ করে মৈত্রীভাবাপন্ন হয়েছেন তিনিই আর্য নামে অভিহিত হন।

ত্রিপিটক

৮০. যাঁহারা অন্য কামনা ত্যাগ করিয়া একমনে আমারই কথা ভাবেন আর সর্বদা আমারই উপাসনা করেন, সেই ভক্তদের আমি ইহলোকে কল্যাণ ও পরলোকে মুক্তির ব্যবস্থা করিয়া থাকি।

শ্রীশ্রীগীতা

৮১. রাষ্ট্রশাসনের ব্যাপারে জনসাধারণের মতামত প্রকাশ করতে দাও।

–আল-কোরআন

৮২. নিশ্চয় আল্লাহ্ কোনো জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তাহারা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করে।

–আল-কোরআন

৮৩. যিনি ধর্মে আনন্দ লাভ করেন, যিনি সতত ধর্মে রত–ধর্মপথে অবস্থিত, যিনি ধর্মচিন্তায় আত্মনিয়োগ করেন এবং সতত ধর্মানুসরণ করেন, সেই ভিক্ষু কখনোই সদ্ধর্ম হতে পতিত হন না।

ত্রিপিটক

৮৪. নিশ্চয় আল্লাহ সীমা লংঘনকারীকে ভালোবাসেন না।

–আল-কোরআন

৮৫. অভ্যাসযোগের চেয়ে জ্ঞান বড়, জ্ঞানের চেয়ে ধ্যান বড়, ধ্যানের চেয়ে কর্মফল ত্যাগ করা বড়। সকল প্রকার কর্মফল ত্যাগ করিতে পারিলেই পরম শান্তি পাওয়া যায়।

শ্রীশ্রীগীতা

৮৬. নিশ্চয়ই নিজের মনের বিরুদ্ধে জেহাদ করাই শ্রেষ্ঠ জেহাদ।

–আল-কোরআন

৮৭. সকল প্রকারের কুসংস্কার ও অনাচার ছাড়িয়া দাও।

–আল-কোরআন

৮৮. চন্দ্র যেমন তারকারাজির উপর প্রধান–জ্ঞানী লোক তেমনি মূর্খ নামাজির উপর প্রধান।

–আল-হাদিস

৮৯. ধর্মের জন্য কোনো জবরদস্তি নেই। নিশ্চয় সুপথ প্রকাশ্যভাবে কুপথ থেকে পৃথক হয়েছে।

–আল-কোরআন

৯০. যে-ব্যক্তি নিজের জন্য কাজ করে না এবং অপরের জন্য কাজ করে না, সে ব্যক্তি খোদার কাছ থেকে কোনো পুরস্কার আশা করতে পারে ন।

–আল-কোরআন

৯১. কিতাবপ্রাপ্ত জাতিদের সঙ্গে মহত্তর কারণ ব্যতীত বিবাদ কোরো না, বরং বলো–আমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে আমরা বিশ্বাস করি এবং তোমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতেও আমরা বিশ্বাস পোষণ করি, আমাদের এবং তোমাদের আল্লাহ এক এবং তাঁর প্রতি আমরা নতি স্বীকার করে থাকি।

–আল-কোরআন

৯২. যে-নামাজে হৃদয় নম্র হয় না, সে-নামাজ খোদার নিকট নামাজ বলেই গণ্য হয় না।

–আল-হাদিস

৯৩. আমরা সবাই পরকালের গানে ছুটে চলেছি। প্রত্যেকেই আমরা এক-একজন মুসাফির ছাড়া আর কিছু নই। এই সফরের শুরু মায়ের কোল হতে, শেষ কবর পর্যন্ত। প্রতিটি দিন, মাস, বছর এই সফরের এক-একটি মনজিলবিশেষ। প্রতিটি নিশ্বাস এক একটি পদক্ষেপের মতো।

ইমাম গাজ্জালি (রহঃ)

৯৪. ছোট পাপকে ছোট বলিয়া অবহেলা করিও না, ছোটদের সমষ্টিই বড় হয়।

–হযরত আলি (রা.)

৯৫. ইসলামে সন্ন্যাসধর্ম নাই।

–আল-হাদিস

৯৬. আমরা ভক্তিপ্রবণ জাতি। ভক্তি করাকেই অমরা ধর্মাচরণ বলিয়া থাকি। কাহাকে ভক্তি করি তাহা বিচার করা আমাদের পক্ষে বাহুল্য।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৯৭. অলৌকিকতার কাছে সবার আকৃতি ঝরে যায়।

শক্তি চট্টোপধ্যায়

৯৮. চান ভগবান প্রেম দিয়ে তাঁর
গড়া হবে দেবালয়,
মানুষ আকাশে উঁচু করে তোলে
ইট পাথরের জয়।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৯৯. তব মসজিদ মন্দিরে প্রভু নাই মানুষের দাবী
মোল্লা-পুরুত লাগায়েছে তার সকল দুয়ারে চাবি।

কাজী নজরুল ইসলাম

১০০. অন্য মানুষের পাপদর্শন ও বর্ণনা থেকে বিরত থাকো; তা তোমাদের মধ্যেও আছে।

–আল-হাদিস

১০১. ধার্মিক হতে চাইলে প্রতিদিন রাতে শোবার সময় প্রতিদিনের কর্মের হিসাব নিকাশ করবি অর্থাৎ ভাল কর্ম কী করেছিস এবং মন্দ কর্ম কী করেছিস, তা চিন্তা করে মন্দ কর্ম আর যাতে করতে না হয় সেজন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হবি।

শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী

১০২. ঈশ্বর যদি থাকেন, তা হলে তার অস্তিত্ব অনুভব করার, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কোনো-না-কোনো পথ থাকবে। সে-পথ যতই দুর্গম হোক, আমি সে-পথে যাবার দৃঢ়সংকল্প করে বসেছি। হিন্দু ধর্ম বলে, নিজের শরীরে নিজের মনের মধ্যে সে-পথ আছে।

–ঋষি অরবিন্দ

১০৩. সব ধর্মের লোকে একজনকেই ডাকছে। কেউ বলছে ঈশ্বর, কেউ রাম, কেউ হরি, কেউ আল্লাহ্, কেউ ব্ৰহ্ম। নাম আলাদা, কিন্তু একই।

শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব

১০৪. ইসলাম শব্দের অর্থ সমৰ্পণ, শান্তি ও নিরাপত্তা। ধর্মীয় পরিভাষায় ইসলামের অর্থ বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহতাআলার নিকট আত্মসমর্পণ করা এবং তাঁহার যাবতীয় আদেশ মানিয়া লওয়া।

মাওলানা মোঃ আবদুস সাত্তার

১০৫. অলৌকিকতা আমাদের শেখায় ধর্মমতকে বিচার করতে। ধর্মমত বিচার করতে শেখায় অলৌকিকতাকে।

–প্যাসকেল

১০৬. ইসলাম একমাত্র ধর্ম, যা সকল যুগে সকল মানুষের ধর্ম অর্থাৎ বিশ্বজনীন ধর্মরূপে গণ্য হতে পারে।

–জর্জ বার্নার্ড শ

১০৭. তোমরা ভীত হইও না, তোমরা চিন্তিত হইও না। তোমরা আল্লাহর প্রতি দৃঢ় ইমান রাখিতে পার।

ভলতেয়ার

১০৮. সত্যি যদি ঈশ্বর বলে কিছু না থাকত তা হলে মানুষের প্রয়োজন হত তাঁকে আবিষ্কার করার।

ভলতেয়ার

১০৯. নিয়মিত ইবাদত করো। কারণ ইবাদত মানুষকে অন্যায় ও লজ্জাজনক কাজ থেকে রক্ষা করে এবং নিঃসন্দেহে আল্লাহুকে স্মরণ করা এক মহত্ত্বের কাজ।

–আল-কোরআন

১১০. কোরআনের অনুশাসনই একমাত্র সত্য এবং একমাত্র কোরআনই মানুষকে শান্তির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

নেপোলিয়ান বোনাপার্ট

১১১. বিজ্ঞান আর ধর্ম, ধর্ম আর বিজ্ঞান, যেভাবেই এদের সাজাই না কেন, ওরা একই পরকলার এপিঠ-ওপিষ্ঠ, দুদিক দিয়েই আমরা অন্ধকার দেখি, যে পর্যন্ত না দুটোর ফোকাস-বিন্দু সত্যের ওপর স্থাপিত হয়।

–পার্ল এস বাক

১১২. ধর্মহীন বিজ্ঞান পঙ্গু আর বিজ্ঞানবিহীন ধর্ম অন্ধ।

–আইনস্টাইন

১১৩. ধর্ম যখন বিজ্ঞানকে ভয় পায় তখন সে ঈশ্বরকে অসম্মান করে, আর ঢলে পড়ে আত্মহত্যায়।

ইমারসন

১১৪. সকলকেই আমি সমান ভালোবাসি। (বিশেষ) ভালোবাসা বিশেষ কাহারও প্রতি আমার নাই। কিন্তু যাহারা ভক্তি করিয়া আমার পূজা করে, আমি তাহাদের অনুগ্রহ করি তাহাদের ছাড়িয়া যাই না, আবার তাহারাও আমাকে ছাড়িয়া যায় না। (এটি আমার পক্ষপাত নয়, এটি আমার ভক্তির মহিমা মাত্র)।

শ্রীশ্রীগীতা

১১৫. তোমাদের প্রার্থনা আল্লাহতাআলা মঞ্জুর করিবেন–এইরূপ দৃঢ়বিশ্বাস লইয়া তাঁহার নিকট প্রার্থনা করো।

–আল-হাদিস

১১৬. ঈশ্বর জীবের জন্য কর্তৃত্ব, কর্ম বা কর্মের ফল কিছুই সৃষ্টি করেন না। মানুষ স্বভাববশতই (মায়ার প্রভাবে) কুর্ম করিতে আরম্ভ করে।

শ্রীশ্রীগীতা

১১৭. বহু বাক্য বললে পণ্ডিত হওয়া যায় না। যিনি নিরাপদ–মঙ্গলকারী, শত্রুহীন এবং যার কাছ থেকে কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, তিনিই পণ্ডিত বলে কথিত হন।

ত্রিপিটক

১১৮. কাম, ক্রোধ ও লোভ–এই তিনটি নরকের দ্বারের মতো (এ-পথে চলিলে নরকে যাইতে হয়)। ইহাতে মানুষের সর্বনাশ হয়। তাই এই তিনটিকে ত্যাগ করিবে।

শ্রীশ্রীগীতা

১১৯. যে-ব্যক্তি প্রাণিহত্যা করে, মিথ্যা কথা বলে, চুরি করে, পরদার গমন করে, সুরা ইত্যাদি মদকদ্রব্য সেবন করে, এরূপ ব্যক্তি ইহলোকে আপনার কুশলকর্মের মূল খনন করে–অর্থাৎ নিজেই নিজের নিপাতের কারণ হয়।

ত্রিপিটক

১২০. যার যার নিজ নিজ কাজে যদি সকলে মনোযোগী হয়, তবে সকলেরই সিদ্ধিলাভ হয়।

শ্রীশ্রীগীতা

১২১. যে-ভিক্ষু অতি অল্প লাভ করেও তা অবজ্ঞা করেন না, সেই পবিত্র জীবিকাধারী নিরলস ভিক্ষুকেই দেবতারা প্রশংসা করেন।

–ত্রিপিটক

১২২. পরমেশ্বর সকল প্রাণীতে আছেন সমানভাবে, অথচ সকল কিছু নষ্ট হইয়া গেলেও তিনি নষ্ট হন না। তাঁহাকে এইরূপে যিনি জানিতে পারেন তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী।

শ্রীশ্রীগীতা

১২৩. যিনি ইহলোকে পুণ্য ও পাপ অতিক্রম করে ব্রহ্মচর্যবান হন এবং পৃথিবীতে জ্ঞানপরায়ণ হয়ে বিচরণ করেন, তিনি নিশ্চয়ই ভিক্ষু বলে কথিত হন।

ত্রিপিটক

১২৪. আকাশ সকল বস্তু ব্যাপিয়া আছে কিন্তু অতি সূক্ষ্ম বুলিয়া আকাশে কোনো কিছু লাগিয়া থাকে না। তেমনি পরমাত্মা অত্যন্ত সূক্ষ্ম, তাই তিনি সকল স্থানে থাকিয়াও কোনোকিছুতে লিপ্ত হন না।

শ্রীশ্রীগীতা

১২৫. ঈর্ষাপরায়ণ ও শঠ ব্যক্তি কেবল মিষ্টি বাক্য দ্বারা কিংবা শরীরের সৌন্দর্যের দ্বারা সাধু হতে পারে না, কিন্তু যাঁর এসকল সমুচ্ছিন্ন ও সমূলে উৎপাটিত হয়েছে সেই নির্দোষ ও মেধাবী ব্যক্তি ‘সাধু’ বলে কথিত হন।

ত্রিপিটক

১২৬. আগুন যেমন ধোয়ায় ঢাকা থাকে, তেমনি সকল কাজই দোষে ভরা (কাজ করিলেই দোষ না থাকিয়া পারে না)। সুতরাং কর্মে কোনো দোষ থাকিলেও তাহা ত্যাগ করিতে নাই।

শ্রীশ্রীগীতা

১২৭. ক্রোধকে অক্রোধ (ক্ষমা) দ্বারা জয় করবে, অসাধুকে সাধুতা দ্বারা জয় করবে, কৃপণকে দান দ্বারা জয় করবে, মিথ্যাবাদীকে সত্য বাক্য দ্বারা জয় করবে।

–ত্রিপিটক

১২৮. যে বলে এ-জীবনে দুঃখকে বরিয়া লও, পরলোকে স্বর্গসুখ পাইবে, সে যেমন ভ্রান্ত, যে পরকালের নরকাগ্নির উল্লেখ করিয়া এ-জীবনের সুখরাশি বর্জন করিতে বলে, সেও তেমনি ভ্রান্ত। দুঃখের কষাঘাতে তুমি-আমি ধরাপৃষ্ঠ হইতে মুছিয়া গেলে অপর কোটি কোটি জীব এ-সৃষ্টিকে মুখরিত করিয়া রাখিবে। তুমি-আমি কে যে, এই পৃথিবীর বাহিরে, মরণের পরপারে আমাদের জন্য বিধাতা এক বিরাট স্বর্গপুরী গড়িয়া রাখিবেন! গৃহী হাঁড়ি লইয়া কার্য করে। হঠাৎ যখন কোনো আঘাতে সেটি ভাঙিয়া যায় সে উহা দূরে নিক্ষেপ করিয়া নতুন করিয়া কাজে লাগে। কবে সে ভগ্ন খোলার সুবর্ণ মন্দির গড়িয়াছে?

–ওমর খৈয়াম

১২৯. লৌহজাত দ্রব্য হতে উৎপন্ন মরিচা যেমন লৌহকেই নষ্ট করে ফেলে, সেরূপ নীতিধর্ম অতিক্রমকারী ব্যক্তিকে নিজকৃত দুষ্কর্ম সকল দুর্গতিতে নিয়ে যায়। –ত্রিপিটক

১৩০. মূর্খতার চেয়ে বড় পাপ আর নাই।

সন ইবনে আবদুল্লাহ

১৩১. রাগ আসক্তির ন্যায় অগ্নি নেই, দ্বেষের ন্যায় গ্রাহ বা প্রাসকারী (হিংস্র জন্তু) নেই, মোহের ন্যায় জাল নেই ও তৃষ্ণার ন্যায় নদী নেই।

ত্রিপিটক

১৩২. যত প্রকার পাপ আছে মানুষের চিত্তে ব্যথা দেয়াই তার মাঝে বড় পাপ। এই মহাপাপ কেউ কোরো না।

–ডা. লুৎফর রহমান

১৩৩. যে শাস্ত্রের ব্যবস্থা না মানিয়া ইচ্ছামতো কাজ করে, সে সিদ্ধিলাভ করিতে পারে না। ইহলোকেও তাহার সুখ হয় না, পরলোকেও তাহার উত্তম গতি হয় না।

শ্রীশ্রীগীতা

১৩৪. ভক্তি আপনার উন্নতির জন্য। যাহার ভক্তি নাই, তাহার চরিত্রের উন্নতি নাই।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

১৩৫. আমাদের রিপু সত্যের সম্পূর্ণ মূর্তিকে আচ্ছন্ন করে, কামে আমরা মাংসই দেখি, আত্মাকে দেখি নে; লোভে আমরা বস্তুই দেখি, মানুষকে দেখি নে; অহংকারে আমরা আপনাকেই দেখি, অন্যকে দেখি নে; একটা রিপু আছে যা এদের মতো উগ্র নয়। যা ফাঁকা তাকে বলে মোহ; সে হচ্ছে জড়তা, অসাড়তা। আমাদের চৈতন্যের আলো ম্লান করে দিয়ে সত্যকে আবৃত করে। সে বিঘ্ন নয়, সে আবরণ। অভ্যাস অনেক সময় সেই মোহরূপে আমাদের মনকে আকৃষ্ট করে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৩৬. কোনো প্রকার পাপকর্ম না করা, কুশলকর্মের অনুষ্ঠান করা এবং অপন চিত্তকে পরিশুদ্ধ করে রাখা–এটাই বুদ্ধগণের অনুশাসন।

ত্রিপিটক

১৩৭. উপবাসপালন আত্মশুদ্ধি এবং সংযমের শ্রেষ্ঠতম একটা উপায়। এর মাধ্যমে স্রষ্টাকে লাভ করা যায়, স্বাস্থ্যকে রক্ষা করা যায়, হিংসা-দ্বেষ এবং নৃশংস স্বভাব থেকে দূরে সরে থাকা যায় এবং খুব সহজেই কুপ্রবৃত্তির ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখা যায়।

ডি. এস. ফোর্ড

১৩৮. চিত্তকে মিথ্যার বিরুদ্ধে স্বাধীন করে রাখার নামই ধর্ম।

–ডা. লুৎফর রহমান

১৩৯. এই জগৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন, এখানে অল্প লোকেই উত্তমরূপে দেখতে পায়, অল্পসংখ্যক লোকই জালমুক্ত পাখির ন্যায় স্বর্গে গমন করে।

ত্রিপিটক ১৪০. মুসলমান একটি বিশেষ ধর্ম, কিন্তু হিন্দু কোনো বিশেষ ধর্ম নহে। হিন্দু ভারতবর্ষের ইতিহাসের একটি জাতিগত পরিণাম।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৪১. একটি মহৎ আত্মা সমুদ্রে ভাসমান জাহজের মতো।

–ফ্লেচার

১৪২. যার কৃত পাপকর্ম কুশলকর্ম দ্বারা আবৃত হয়, সে মেঘমুক্ত চন্দ্রের ন্যায় জগৎতেগ উজ্জ্বল করে।

ত্রিপিটক

১৪৩. ইমানের সঠিক অর্থ হচ্ছে এই যে, অন্তর দিয়ে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও মহত্ত্বের উপলব্ধি করবে এবং তার প্রতিটি নির্দেশকে যথাযথ পালন করবে।

হযরত ওমর ফারুক (রা.)

১৪৪. হীনধর্মের অনুসরণ কোরো না, প্রমত্তভাবে জীবনযাপন কোরো না, মিথ্যা দৃষ্টির সেবা কোরো না, সংসারবর্ধক হয়ো না।

ত্রিপিটক

১৪৫. ঈশ্বর উদাসীন বলেই তাঁকে পাবার জন্য আমাদের এত আগ্রহ, এত ব্যাকুলতা। দেবতা কথায় কথায় আমাদের করতলগত হলেই তার মূল্য যেত কমে, আমাদের কামনা ও কৌতূহল যেত থেমে।

–প্রবোধকুমার সান্যাল

১৪৬. স্রষ্টার সৃষ্টির দিকে চাহিয়া এক প্রহর ধ্যান করা সত্তর বৎসরের এবাদত অপেক্ষা শ্রেয়।

–আল-হাদিস

১৪৭. ওঠো, অলস হয়ে থেকো না, সদ্ধর্ম আচরণ করো। ধর্মাচারী ইহ এবং পর উভয় লোকেই সুখে থাকেন।

–ত্রিপিটক

১৪৮. ধর্মচিন্তার বিকাশের সঙ্গে বিজ্ঞানবুদ্ধির বিকাশ সমন্বিত না হলে তা মানুষের মৃত্যুভয়ই কেবল বাড়িয়ে তোলে।

সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণন

১৪৯. সত্য হয়ে উঠতে চাইলেই মৃত্যু ঘটে ধর্মের। বিজ্ঞান মৃত ধর্মের তালিকা।

–অস্কার ওয়াইল্ড

১৫০. বিজ্ঞান অন্বেষণ করে, ধর্ম করে ব্যাখ্যা। বিজ্ঞান দেয় জ্ঞান, যা ক্ষমতা; ধর্ম দেয় চিন্তা, যা নিয়ন্ত্রণ।

মার্টিন লুথার কিং

১৫১. অসাধু ও আপনার অহিতকর কর্ম করা সহজ; কিন্তু যা সাধু ও হিতকর, তা পালন করা অতিশয় দুষ্কর।

ত্রিপিটক

১৫২. কোরআন মজিদ কেবলমাত্র নামাজ আর অজুর বর্ণনা করার জন্য অবতীর্ণ হয়নি, বরং তা মানবজাতির সর্বাঙ্গীণ কল্যাণের এক পরিপূর্ণ বিধান। মানবজীবনের কোনোদিকই তাতে বাদ পড়েনি। তাই মুললমানদের সব নীতি ও কাজ কোরআনের উপর ভিত্তি করে যদি পরিচালিত না হয়, তা হলে তা তাদের কোনো কল্যাণে আসবে না।

মাওলানা আবুল কালাম আজাদ

১৫৩. মানুষের মনের ভিতর পাপ ও পুণ্যের দুইটি অনুভূতি আছে। পাপ ও পুণ্যের যে দ্বন্দ্ব মনের মধ্যে চলিতে থাকে, উহাদের জয়-পরাজয়য়ের উপর মানুষের ধর্ম বা অধর্ম নির্ভর করে।

ডা. লুর রহমান

১৫৪. যে ধর্ম বা ঈশ্বর বিধবার অমোচন করতে অথবা পিতৃ-মাতৃহীন অনাথের মুখে এক টুকরো খাবার দিতে পারে না, আমি সে-ধর্ম বা ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না।

–স্বামী বিবেকানন্দ

১৫৫. মিথ্যা পাপ, মিথ্যা নিন্দা আরও পাপ এবং স্বজাতির মিথ্যা নিন্দার মতো পাপ অল্পই আছে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৫৬. পরার্থের বহু অনুরোধেও কোনো ব্যক্তির নিজ স্বার্থ পরিত্যাগ করা উচিত নয়, স্বকীয় কার্য উত্তমরূপে জেনে তাতে নিবিষ্ট থাকা কর্তব্য।

–ত্রিপিটক

১৫৭. রিপু যাকে শাসন করে, সে দাসদের মধ্যে অধম। ১৫. যখন অবসর পাও, সাধন করো আর তোমার প্রভুর প্রতি অনুরক্ত হও।

–আল-কোরআন

১৫৯. আমার পুত্র আছে, আমার ধন আছে, মূর্খেরা এভাবে চিন্তা করে যন্ত্রণা ভোগ করে। যথন আপনিই আপনার নয়, তখন পুত্র কিংবা ধন কীভাবে আপনার হবে?

ত্রিপিটক

১৬০. দার্শনিক হওয়া বলতে আসলে কী বোঝায়? ঘটনার বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নেয়া নয় কি?

–এপিক্তেতাস

১৬১. দর্শন ছাড়া তুমি কিছুই করতে পার না; কেননা প্রতিটি বিষয়েরই আছে গোপন তাৎপর্য যা আমাদের জানা দরকার।

–ম্যক্সিম গোর্কি

১৬২. জ্ঞানহীন পুরুষ কেবল বলীবদের ন্যায় দেহমাংসে এবং বয়সে বর্ধিত হয়ে থাকে বটে, কিন্তু তার প্রজ্ঞা বর্ধিত হয় না।

–ত্রিপিটক

১৬৩. আত্মা যত মহৎ কাজও তত মহৎ হবে।

রবার্ট গ্রীন

১৬৪. ইসলাম একমাত্র ধর্ম যা জন্ম ও বর্ণবৈষম্যের সকল বাধা বিদূরিত করেছে।

–পারশিক ডাক্তার এস. এন. ধন্না

১৬৫. পবিত্রতা ইমানের অঙ্গ।

–আল-হাদিস

১৬৬. দণ্ডকে সকলেই ভয় করে। জীবন সকলেরই প্রিয়। অতএব নিজকে উপমাস্থলে রেখে কাউকে হত্যা করবে না কিংবা আঘাতও করবে না।

ত্রিপিটক

১৬৭. কোনো লোকের যদি আহারের জন্য খাদ্য, পরনের জন্য কাপড়, বসবাসের গৃহ না থাকে অথবা ঐ সমস্তের জন্য তার পর্যাপ্ত অর্থ না থাকে, তবে তার পক্ষে আল্লাহর ইবাদত করতে যাওয়া মাতলামি ছাড়া কিছুই নয়।

ইমাম গাজ্জালি (রহঃ)

১৬৮. অন্তরীক্ষে, সমুদ্রমধ্যে কিংবা পর্বত-বিবরে–জগতে এমন কোনো স্থান বিদ্যমান নেই যেখানে অবস্থান করলে মৃত্যু আক্রমণ করতে পারে না।

ত্রিপিটক

১৬৯. কুরআন শরীফ কোন বৈজ্ঞানিক পুস্তক না হইলেও ইহা অবৈজ্ঞানিক নহে। কুরাআনে আল্লাহর মহত্ত্ব বর্ণনার জন্য প্রাসঙ্গিক রূপে এরূপ অনেক কথা বলা হইয়াছে, যাহা আশ্চর্যরূপে আধুনিক বিজ্ঞানের সহিত মিলিয়া যায়। যদি দুই এক স্থানে সামান্য অমিল দেখা যায়, তাহা আধুনিক বিজ্ঞানের অসম্পূর্ণতাবশত।

–ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

১৭০. সাংসারিক কর্তব্যপালনই প্রকৃতপক্ষে ধর্মকার্য। দুনিয়া চোখের সামনেই তো পড়ে রয়েছে। কেতাবের চেয়ে দুনিয়া থেকে মানুষের শিখবার আছে বেশি।

-আলমগির

১৭১. যে দুশ্চরিত্র ও অসমাহিত হয়ে শত বৎসর জীবিত থাকে, তার জীবন অপেক্ষা চরিত্রবান ধ্যানপরায়ণ ব্যক্তির একদিনের জীবনও শ্রেয়।

ত্রিপিটক

১৭২. ইচ্ছা করে কেউ পাপাঁচরণ করে না। পাপ অজ্ঞানতার ফল।

সক্রেটিস

১৭৩. মৃত্যুকে পরিহার করা বোধহয় কঠিন নয়, পাপকে পরিহার করাই অধিকতর কঠিন। কারণ পাপ মৃত্যু অপেক্ষা দ্রুতগামী।

সক্রেটিস

১৭৪. যার হাত ও জবান থেকে মানবজাতি নিরাপদ, তিনি খাঁটি মুসলমান।

–আল-হাদিস

১৭৫. তোমরা রোজা রাখিও, তাহা হইলে স্বাস্থ্য ভালো থাকিবে।

–আল-হাদিস

১৭৬. দেশের জন্য যারা নির্যাতন ভোগ করে তারা ফুলের মালা পায়। কিন্তু যারা এদেরকে ফুলের মালা পাওয়ার মতো করে গড়ে তুললেন তাঁরা মালা পান না। তারা সব সময় থাকেন লোকচক্ষুর অন্তরালে। আল্লাহ্ যে এত বড় স্রষ্টা, তিনিও তাই মানুষের দেখার অতীত, কল্পনার অতীত, তিনি শ্রেষ্ঠ স্রষ্টা। তাই তিনি সবচেয়ে বেশি গোপন।

কাজী নজরুল ইসলাম

১৭৭. ঈশ্বর একটি বৃত্তের মতো, যার কোনো নির্দিষ্ট কেন্দ্রবিন্দু নেই, কোনো অবস্থানও নেই।

–এস্কাডোক্লেস

১৭৮. মহৎ দার্শনিকেরা আসলে কবি যারা তাদের কবিতার বাস্তবতায় বিশ্বাস করে।

আন্তোনিয়ো মাচাদো

১৭৯. সমস্ত দর্শনই জীবনের একটি পর্যায়ের দর্শন।

নিৎসে

১৮০. কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক
কে বলে তা বহুদূর?
মানুষেরি মাঝে স্বৰ্গনরক
 মানুষেতে সুরাসুর।

–শেখ ফজলল করিম

১৮১. একমাত্র আল্লাহ্ সর্বযুগে, সর্বদেশে, সকল মুসলমানের উপাস্য; একমাত্র আল্লাহ্ অসীম, অপরূপ, অতুলনীয়; আল্লাহ্ চিন্ময়, অব্যয়, অদ্বিতীয়।

–এয়াকুব আলি চৌধুরী

১৮২. যার নিজের ধর্মে বিশ্বাস আছে, সে পরের ধর্মকে ঘৃণা করতে পারে না।

কাজী নজরুল ইসলাম

১৮৩. প্রত্যেক জিনিসের মরিচা পরিষ্কার করিবার এক-একটি সামগ্রী আছে। হৃদয় পরিষ্কারের একমাত্র উপায় আল্লাহ্তাআলার শরণ এবং তাহার শরণের ন্যায় কোনো উপায়ই নাই যাহা তাহাকে শাস্তি হইতে মুক্তি দিতে পারে।

আল-আদিস

১৮৪. একটি ক্ষুদ্র পাপই পারে অনেক বড় পাপের দ্বার খুলে দিতে।

টমাস এডওয়ার্ড

১৮৫. পাপাত্মা ঐ ব্যক্তি যে মানুষের মন্দ কাজ প্রকাশ করে আর ভালো কাজ গোপন রাখে।

–প্লেটো

১৮৬. যে পাপ করে সে সাধারণ মানুষ, যে পাপ করার জন্য অনুতাপ ও দুঃখ করে সে সাধু ব্যক্তি, যে পাপের বড়াই করে সে শয়তান।

টমাস মুলার

১৮৭. যে-কোনো কাজ তোমার ভেতর শক্তির উদ্রেক করে দেয়, তা-ই পুণ্য। আর যা তোমার শরীর ও মনকে দুর্বল করে তা-ই পাপ।

–স্বামী বিবেকানন্দ

১৮৮. যে সর্বাপেক্ষা কম পাপ করে, সে-ই উত্তম মানুষ। কেননা, কেউই নিষ্পাপ ও ত্রুটিমুক্ত নয়।

ইপিকারমার্স

১৮৯. একজন পাপী ও সাধুর মধ্যে পার্থক্য এই যে, প্রত্যেক সাধুর অতীত রয়েছে এবং প্রত্যে পাপীর ভবিষ্যৎ রয়েছে।

অস্কার ওয়াইল্ড

১৯০. আমার পূর্ণ বিশ্বাস যে, আত্মা অবিনশ্বর এবং আত্মার কাজ নিরবধিকাল চলতে থাকবে। এটা অনেকটা সূর্যের মতো; যা আমাদের চোখে রাতে অস্তমিত বলে মনে হয়, কিন্তু যা বাস্তবে শুধু অন্য কোথাও আলোক বিতরণ করতে গেছে মাত্র।

গ্যেটে

১৯১. প্রতিটি দুঃখি আত্মা সতোর প্রতীক।

টমাস হার্ভে

১৯২. আমাদের আত্মার সন্তুষ্টির জন্য দেহের কাছ থেকে কিছু পারিশ্রমিক নিতে

ভার্জিল

১৯৩. মহাপ্রাণ ব্যক্তির সমাধিশায়িত দেহ প্রাণশক্তিহীন জীবিত মানুষপূর্ণ সমগ্র জগৎ থেকে শ্রেষ্ঠ। আত্মা যার জীবন্ত, তাঁর বিনাশ নেই; তার দেহের মৃত্যু হতে পারে, কিন্তু নিজে অক্ষয় ও অমর।

–শেখ সাদি

১৯৪. ঈশ্বরের মতো তৃষ্ণার উপস্থিতিও দার্শনিকদের অবজ্ঞা করে। একে শোধিত করে দার্শনিক তার প্রতিশোধ নেন।

রেনে শ্যার

১৯৫. ধার্মিকদের কাছে পরকাল যেরকম, দার্শনিকদের কাছে উত্তরপূরুষেরা তেমনই।

–দেনিস দিদেরো

১৯৬. অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া গরিবদের আত্মাকে বিধাতা সাহায্য করেন।

–এডমন্ড ওয়ালার

১৯৭. আত্মা যে অমর, আত্মা যে অভয়, আত্মা সমস্ত সুখ-দুঃখ, ক্ষতি-লাভের চেয়ে বড়, অসীমের মধ্যেই যে আত্মার আনন্দ নিকেতন, এই কথাটি প্রকাশ করাই হচ্ছে। মানুষের সমস্ত জীবনের অর্থ।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৯৮. প্রকৃত মু’মিন তাঁহারাই যাহারা আল্লাহর প্রতি দৃঢ় প্রত্যয়শীল হন, তাহারা রসুলের অনুগত হন; আর এর মধ্যে কোনোপ্রকার সন্দেহ প্রকাশ করেন না, অথবা অন্তরে কোনো প্রকার দ্বিধা-দ্বন্দ্বকে স্থান দেন না; আর তাহারা জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জেহাদ করিয়া যান; তাহারাই প্রকৃত ইমানদার।

–আল-কোরআন

১৯৯. দার্শনিকেরা যা বলেন তার চেয়ে বিস্ময়কর ও অবিশ্বাস্য কিছুই আর নেই।

–দেকার্তে

২০০. দর্শনের আংশিক জ্ঞান মনকে টেনে নেয় নাস্তিকের দিকে; আর গভীর জ্ঞান মনকে নিয়ে আসে ধর্মের কাছে।

ফ্রান্সিস বেকন

২০১. এক সে স্রষ্টা সব সৃষ্টির
সে এক পরম প্রভু,
একের অধিক স্রষ্টা কোন্
সে ধর্ম কহে না কভু

কাজী নজরুল ইসলাম

২০২. যে-ঈশ্বর আমাদের জীবন দান করেছেন, তিনি একই সাথে আমাদের স্বাধীনতা দান করেছেন।

–জেফারসন

২০৩. পৃথিবীতে যা-কিছু ঘটে তা হচ্ছে সর্বকালের মধ্যে দিয়ে বর্তমান ঈশ্বরের এক মহাপরিকল্পনারই অংশ।

হেনরি ওয়ার্ড বিশার

২০৪. মানবতার সেবা করাই শ্রেষ্ঠ ইবাদত। আল্লাহ্র সৃষ্টি সম্বন্ধে গবেষণা করাও আল্লাহর ইবাদত। পুণ্য অর্জন অপেক্ষা পাপবর্জন শ্রেয়।

–হযরত আলি (রা.)

২০৫. আমি দেখতে পাই যে, বিশ্বের সর্বত্র বিচক্ষণ ও বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের ধর্ম ছিল একটাই–সত্যনিষ্ঠ জীবনযাপন এবং অসত্যকে মোকাবিলা করার ধর্ম।

রালফ ওয়ালডো ইমারসন

২০৬. সূর্যের মতো স্নেহ, নদীর মতো বদান্যতা এবং মাটির মতো আতিথেয়তা যার মধ্যে আছে; সে-ই সত্যিকার অর্থে ধার্মিক।

–হযরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রা.)

২০৭. ধর্ম ছাড়া কেউ বাঁচিতে পারে না। এমন অনেকে আছেন যাঁহারা অহংকারের সহিত ঘোষণা করেন ধর্মের সহিত তাঁহাদের কোনো সম্পর্ক নাই–যদি কেহ বলে যে, সে নিশ্বাস নেয় অথচ তাহার নাক নাই, সেই শ্রেণীর কথা।

মহাত্মা গান্ধী

২০৮. মানুষের ভেতর যে-দেবত্ব আছে তারই প্রকাশসাধনকে বলে ধর্ম।

স্বামী বিবেকানন্দ

২০৯. হিন্দু, খ্রিস্টান, এ ভেদ মানুষের তৈরি। আমরা মানুষ একই বিধাতার হাতে গড়া মানুষ। শুধু সংকীর্ণ মন নিয়ে এই হিন্দু, খ্রিস্টানের ভেদ রচে মস্ত ব্যবধানের বেড়া গড়ে তুলেছি পরস্পরের মধ্যে। এ-ভেদ আমরা মানব না। মানুষে মানুষে মনের মিল চাই, প্রাণের মিল চাই; সেই মিল ঘটাতে পারলে এ-পৃথিবী সৃষ্টির সার্থকতায় ভরে উঠবে।

সৌরিন্দ্রমোহন

২১০. পাপকে ঠেকাবার জন্য কিছু না করাই তো পাপ।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২১১. মানুষ যতই গোপনে পাপ করুক না কেন, তার শাস্তি সে প্রকাশ্যেই পায়।

বেন জনসন

২১২. যদি পাপ করে থাক, কাতরকণ্ঠে তা প্রকাশ করো, শীঘ্র সান্ত্বনা পাবে। পাপকে গোপনে রেখো না, উত্তরোত্তর বর্ধিত হয়ে অতিসত্বর তোমাকে অধঃপাতের চরমে নিয়ে যাবে।

ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র

২১৩. আল্লাহই মুসলমানদের বন্ধু এবং সঙ্গী। তিনি তাদের অন্ধকার থেকে বার করে আলোকে নিয়ে আসেন।

–আল-কোরআন

২১৪. প্রাচীন ধর্ম বলছে, ঈশ্বরে যে বিশ্বাস করে না, সে নাস্তিক। নতুন ধর্ম বলছে, যে নিজেকে বিশ্বাস করে না, সে-ই নাস্তিক।

–স্বামী বিবেকানন্দ

২১৫. ঈশ্বরকে যত চিন্তা করবে, ততই সংসারে সামান্য ভোগের জিনিসে আসক্তি কমবে।

–শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব

২১৬. যে সত্যপথে চলে, কেউ তার কেশাগ্রও ছুঁতে পারে না, তোমরা সকলে মনে নিষ্ঠার সাথে হরিনাম কর, পবিত্রতার মধ্যে যাও।

–প্রভু জগদ্বন্ধু

২১৭. কুরআন, হাদিস সবাই বলে
পবিত্র সে বেহেশত নাকি
মিলবে সেথায় আসল শরাব
তন্বীনূরী ডাগর আঁখি?
শরাব এবং প্রিয়ায় নিয়ে
নিদ কাটে মোর দোষ কি তাতে?
বেহেশতে যা হারাম নহে
মর্ত্যে হবে হারাম তা কি?

কাজী নজরুল ইসলাম

২১৮. প্রকৃতি হল ঈশ্বরের জীবন্ত ও দৃশ্যমান পরিচ্ছেদ।

গ্যেটে

২১৯. নামায প্রত্যেক বয়স্ক নরনারীর জন্য অবশ্যকরণীয়; কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে হুঁশিয়ার করা হয়েছে, কেবল পূর্বদিকে বা পশ্চিমদিকে মাথা নত করলে কোনো লাভ নাই–যদিনা তার পশ্চাতে থাকে উপাসনা উন্মুক্ত সত্য-সরল মন। সর্বপ্রকার সংস্কারের মোহমুক্ত তত্ত্বান্বেষী জ্ঞানোজ্জ্বল মন–এই-ই ইসলামের কাম্য।

প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ

২২০. আল্লাহর কাছে কখনো চেয়ো না
ক্ষুদ্র জিনিস কিছু
আল্লাহ্ ছাড়া কারো কাছে কভু
শির করিও না নিচু।

কাজী নজরুল ইসলাম

২২১. মহানবীর জীবন ও চিন্তাকে যে অনুসরণ করে না, যে শুধু ‘দরুদ’ (শান্তিবাদ) পাঠ করিয়াই প্রেমিক হইবার দাবি রাখে, সে মহানবীর কেহই নয়। ভণ্ড বলিয়া তাহার গায়ে ধূলি নিক্ষেপ করিলে আমার মনে দুঃখ হইবে না।

–ডা. লুৎফর রহমান

২২২. রথযাত্রা, লোকারণ্য–মহা ধুমধাম,
ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম।
পথ ভাবে আমি দেব’ রথ ভাবে ‘আমি’
মূর্তি ভাবে আমি দেব’ হাসে অন্তর্যামী।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২২৩. ধর্ম মানব-প্রতিভার এক আশ্চর্য উদ্ভাবন। ধর্ম মানুষের প্রাণের উচ্ছলতা, কামনার উদ্দামতা, অভিলাষের অদম্যতা, আচরণের অবাধ্যতা, চিন্তার স্বাধীনতা, সম্ভাবনার বিচিত্রতা প্রভৃতি এক নিয়মিত খাতে পরিচালিত করে যান্ত্রিক পরিমিতিতে সীমিত রাখে।

ড. আহমদ শরীফ

২২৪. ধর্ম দুরাত্মাকে করে নিয়ন্ত্রিত, সু-আত্মাকে রাখে আড়ষ্ট, আনন্দকে করে দুর্লভ, অতৃপ্তিকে করে চিরন্তন, আকাঙ্ক্ষাকে করে বোবা, বেদনাকে করে অন্ধ, অনুভূতি হয় নিরবয়ব আর হয় সীমিত। সবল ও দুর্বল জ্ঞানী-মূর্খ, সাধক ও দুষ্ট সমভাবেই থাকে।

ড. আহমদ শরীফ

২২৫. ধর্মবোধ মানুষের অন্তরে এমন এক জীর্ণতা এনে দেয়, প্রাণশক্তির উৎসমুখে এমন এক বাঁধ নির্মাণ করে, এমন এক প্রত্যয় ও নিশ্চিত ভাব জাগায়, যার কবলমুক্ত হওয়া সম্ভব হয় না কারো পক্ষে।

ড. আহমদ শরীফ

২২৬. যাহার হৃদয়ে ক্ষুদ্র সষ্টপ (সরিষা) বীজের পরিমাণ ধর্মভাব আছে, সে কখনো দোযখে যাইবে না এবং যাহার হৃদয়ে তদনুরূপ অহংকার আছে, সে কখনো বেহেশতে প্রবেশ করিতে পারিবে না।

–আল-হাদিস

২২৭. ধর্ম মানব-মনীষা আর উপলব্ধির এক দুর্লভ কৃতিত্ব আর সম্পদ। ধর্মের কাছে মানুষ পায় আত্মজ্ঞান, অতীন্দ্রিয় জিজ্ঞাসার প্রেরণা, আধ্যাত্মিক শান্তি ও সাধনা। ধর্ম মানুষকে দিয়েছে বিশ্বাস, ভক্তি, বিনয়, ক্ষমা, করুণা আর আত্মনিবেদনের পথে দিয়েছে শৃঙ্খলা আর সংযত জীবন দীক্ষা।

–আবুল ফজল

২২৮. ইসলামের সেবা এবং আল্লাহর আদেশকে আগামী দিনের জন্য স্থগিত রেখো না।

হযরত আবুবকর (রা.)

২২৯. পৃথিবীর সর্বপ্রকার অশান্তির একমাত্র সমাধান ইসলাম।

–স্যার টমাস আরনল্ড

২৩০. ইসলাম দুটি বিশিষ্ট জিনিস মানুষকে দিতে চেয়েছে। প্রথম, নিরাকার আল্লাহর সঙ্গে তার আত্মিক ও সামাজিক যোগসম্পন্ন প্রবৃত্তি। দ্বিতীয়, ভ্রাতৃত্ব, সাম্য ও স্বাধীন মনোবৃত্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষের স্বচ্ছ সদ্ব্যবহার।

–মোঃ ওয়াজেদ আলি

২৩১. যদি ইসলামের অর্থ ঈশ্বরে আত্মনিবেদন হয়, তবে আমরা সকলেই ইসলামে বাঁচি এবং মরি।

–গ্যেটে

২৩২. ইসলামের জাতীয়তা দেশের গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ নয়। সে সংকীর্ণ প্রাদেশিকতা ও ক্ষুদ্র জাতীয়তার বহু ঊর্ধ্বে।

ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ

২৩৩. খোদাতাআলার আদেশসমূহের প্রতি প্রগাঢ় ভক্তি প্রদর্শন এবং যাবতীয় সৃষ্টি জীবের প্রতি সহানুভূতি হইবে ইসলাম।

–আল-হাদিস

২৩৪. ইসলামে নাই বড় ছোট
আশরাফ আতরাফ
এই ভেদ-জ্ঞান নিষ্ঠুর হাতে
কর মিসমার সাফ।

কাজী নজরুল ইসলাম

২৩৫. ঈশ্বরকে ভয় করাই হল মহৎ জীবনের শুরু।

ওল্ড টেস্টামেন্ট (বাইবেল)

২৩৬. মানুষ যে সমস্ত পাপকাজ করে, আল্লাহ্ তার মধ্যে কতকগুলো মাফ করে থাকেন। কিন্তু যে-ব্যক্তি মাতাপিতার অবাধ্য হয়, তাঁদের প্রতি অন্যায় আচরণ করে, তার পাপ কখনো ক্ষমা করে না।

–আল-হাদিস

২৩৭. ইমানদার পুরুষ ও ইমানদার স্ত্রীলোকেরাই প্রকৃতপক্ষে পরস্পর পরস্পররের বন্ধু ও দরদি। ইহাদের পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য এই যে, ইহারা ভাল কাজে আত্মদান করে, অন্যায় ও পাপ হইতে মানুষকে বিরত রাখে, যথারীতি নামাজ কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে, জীবন ভরিয়া আল্লাহর রসুলের বিধান পালন করিয়া চলে। প্রকৃতপক্ষে ইহাদের প্রতিই আল্লাহর রহমত বর্ষিত হইয়া থাকে।

–আল-কোরআন

২৩৮. ব্যাভিচারী হইতে ইমান দূরে পলায়ন করে। কিন্তু সে ব্যাভিচার ত্যাগ করিলেই ইমান আবার তাহার নিকট প্রত্যাবর্তন করিবে।

–আল-হাদিস

২৩৯. যে-কাজ দিয়ে তুমি নিজে তাপগ্রস্ত হও অথবা তোমার সমাজকে তাপগ্রস্ত কর সেটাই পাপকার্য।

–শ্রীলোকনাথ ব্রহ্মচারী

২৪০. সুষ্টি রয়েছে তোমা পানে চেয়ে
তুমি আছ চোখ বুজে,
স্রষ্টারে খুঁজে-আপনারে তুমি
আপনি ফিরিছ খুঁজে,
ইচ্ছা অন্ধ! আখি খোল,
দেখ দর্পণে নিজ কায়া,
দেখিবে তোমারি সব অবয়বে
পড়েছে তাহার ছায়া।

কাজী নজরুল ইসলাম

২৪১. মানবমনের মহত্তর কল্যাণ হচ্ছে ঈশ্বর সম্পর্কে জ্ঞান।

সেনেকা

২৪২. অন্তর দিয়া সত্য উপলব্ধি করা, মুখ দিয়া প্রকাশ করা এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মারফত সেই অনুযায়ী কাজ করার নামই ইমান।

–আল-হাদিস

২৪৩. ঈসা-মুসাকে যেসব ধর্ম-মাতাল প্রহার করিয়াছিল, তাহাদেরই বংশধর আবার মারিতেছে মানুষকে।

–কাজী নজরুল ইসলাম

২৪৪. যারা নিজেদের সাহায্য করে, ঈশ্বর তাদের সাহায্য করে।

এলজারমন সিডনি

২৪৫. কোরআন শরিফের পাঁচটি অবয়ব আছে প্রথম বৈধ জিনিস, দ্বিতীয় অবৈধ জিনিস, তৃতীয় স্পষ্ট আদেশসমূহ, চতুর্থ রহস্যময় বাক্যসমূহ, পঞ্চম দৃষ্টান্তসমূহ। যেইগুলি বৈধ বলিয়া বলা হইয়াছে, সে সমুদয় বৈধ বলিয়া জানিও এবং যেগুলি অবৈধ বলা হইয়াছে তাহা অবৈধ বলিয়া জানিও। আজ্ঞাসমূহ পালন করিও। রহস্যসমূহে বিশ্বাস স্থাপন করিও এবং দৃষ্টান্তসমূহ পড়িয়া সতর্কতা অবলম্বন করিও।

–আল-হাদিস

২৪৬. কোরআনের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে মানুষ। কিসে মানুষের কল্যাণ, কিসে অকল্যাণ বিভিন্নভাবে এবং বিভিন্ন ভঙ্গিতে তারই আলোচনা করা হয়েছে কোরআনে।

মাওলানা আব্দুল মতিন জালালাবাদী

২৪৭. খোদাভীতি, খোদভক্তি সম্পর্কে অন্তরের সঙ্গে বাহ্যিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং কার্যকলাপের কোনো সম্পর্ক নাই।

হজরত ওমর (রা.)

২৪৮. টিকিত্ব হিন্দুত্ব নয়, ওটা পাণ্ডিত্য। তেমনি দাড়ি ইসলামত্ব নয়, ওটা মোল্লাত্ব।

কাজী নজরুল ইসলাম ২৪৯. মানুষের ভিতরে যে দেবত্ব আছে তারই প্রকাশ সাধনাকে বলে ধর্ম।

–স্বামী বিবেকানন্দ

২৫০. মানুষের কল্যাণের জন্য ঐসব ভজনালয়ের সৃষ্টি, ভজনালয়ের মঙ্গলের জন্য মানুষ সৃষ্টি হয় নাই। আজ যদি আমাদের মাতলামির দরুন ঐ ভজনালয়ই মানুষের অকল্যাণের হেতু হইয়া উঠে–যাহার হওয়া উচিত ছিল স্বৰ্গৰ্মতের সেতু–তবে ভাঙিয়া ফেল ঐ মন্দির মসজিদ। সকল মানুষ আসিয়া দাঁড়াইয়া বাঁচুক এক আকাশের ছত্রতলে, এক চন্দ্র-সূর্য-তারা-জ্বলা মহামন্দিরের আঙিনাতলে।

কাজী নজরুল ইসলাম

২৫১. মুহম্মদকে যাহারা মারিয়াছিল, ঈসা-মুসাকে যে-সব ধর্মমাতাল প্রহার করিয়াছিল, তাহাদেরই বংশধর আবার মারিয়াছে মানুষকে ঈসা-মূসা-মুহম্মদের মতো মানুষকে।

কাজী নজরুল ইসলাম

২৫২. এমনি করিয়া যুগে যুগে ইহারা মানুষে অবহেলা করিয়া ইট-পাথর লইয়া মাতামাতি করিয়াছে। মানুষ মারিয়া ইট-পাথর বাঁচাইছে। ইহারা মানুষের চাইতে ইট পাথরকে বেশি পবিত্র মনে করে। ইহারা ইট পূজা করে। ইহারা পাথর পূজারী।

কাজী নজরুল ইসলাম

২৫৩. অবতার পয়গম্বর কেউ বলেননি আমি হিন্দুর জন্য এসেছি, মুসলমানের জন্য এসেছি, ক্রীশ্চানের জন্য এসেছি–তাঁরা বলেছেন আমরা মানুষের জন্য এসেছি–আলোর মত সকলের জন্য। কিন্তু কৃষ্ণের ভক্তেরা বললে কৃষ্ণ হিন্দুর, মুহম্মদের ভক্তেরা বললে মুহম্মদ মুসলমানের, খ্রীষ্টের শিষ্যেরা বললে খ্রীষ্ট ক্রীশ্চানদের, কৃষ্ণ মুহম্মদ খ্রীষ্ট হয়ে উঠলেন জাতির সম্পত্তি। আর এই সম্পত্তি নিয়েই যত বিপত্তি। আলো নিয়ে কখনও ঝগড়া করে না মানুষ, কিন্তু গরু-ছাগল নিয়ে করে।

কাজী নজরুল ইসলাম

২৫৪. মানুষ তাহার পবিত্র পায়ে-দলা মাটি দিয়া তৈরি করিল ইট, রচনা করিল মন্দির মসজিদ। সেই মন্দির মসজিদের দুটো ইট খসিয়া পড়িল বলিয়া তাহার জন্য দুইশত মানুষের মাথা খসিয়া পড়িবে? যে এ কথা বলে, আগে তাহার বিচার হউক।

কাজী নজরুল ইসলাম

২৫৫. দাসত্ব যদি অন্যায় না হয় তবে পৃথিবীতে অন্যায় বলে কিছু নেই।

–আব্রাহাম লিঙ্কন

২৫৬. স্বর্গে দাসত্ব করার চাইতে নরকে রাজত্ব করা শতগুণে শ্রেয়।

–মিল্টন

২৫৭. ধর্মের মূল কথাই হচ্ছে মানুষ হিসাবে মানুষের সেবা করা।

–টমাস ফুলার

২৫৮. ধর্ম হচ্ছে জীবন, দর্শন হচ্ছে চিন্তন। ধর্ম নেত্রপাত করে উর্ধ্বে, সৌন্দর্য নেত্রপাত করে অন্তরে। চিন্তন জীবন উভয়ই আমাদের প্রয়োজন এবং আমাদের প্রয়োজন উভয়ের মধ্যে সুসামঞ্জস্যতা।

জেমস ফ্রিমান ক্লার্ক

২৫৯. প্রেম, আশা ও নির্ভর এই তিনটি ধার্মিকদিগের নিত্যসম্বল। যাহার অন্তর মৃত, যাহার হৃদয়ে প্রেম, আশা বা নির্ভর নাই, সে কখনও ধর্মপথে অবিচল থাকিতে পারে না। সুতরাং তাহার পতন অবশ্যম্ভাবী।

–শেখ ফজলল করিম

২৬০. ধর্মানুভূতির দ্বারাই মানবের সহজাত বৃত্তিসমূহ লাভ করে কোমলতা, মধুরতা, গভীরতা আর ব্যাপকতা। মানুষ লাভ করে অন্তদৃষ্টি।

–আগস্ত কোমত্রে

২৬১. যদি নিজের ধর্মকে নিজেই সৃষ্টি করে নিতে পারেন, তা হলে কোনো মার্কা দেয়া ধর্মই আপনার কোনো উপকারে আসবে না, উপকার করতে পারবে না, এটাই ঠিক। আপনি নিজেই সমস্ত জ্ঞান এবং কদর্যতার উৎস, নিজেই দেবতা এবং কন্টে। সুতরাং নিজের সৃষ্টি ভিন্ন আর কিছু কী করে আপনি স্বীকার করে গ্রহণ করতে পারেন? বিধাতাকে মানুষ গড়েছে নিজেরই অনুরূপ করে, নিজের মনের রূদ্ধ স্ফুর্ততার অনুপানে, আর একথা যে জাগতিক সত্য।

–ম্যাক্সিম গোর্কি

২৬২. পরমাত্মা-তত্ত্ব সদা করহ চিন্তন,
অনিত্য ধনের চিন্তা করহ বর্জন,
ক্ষণকাল সাধুসঙ্গ কেবল সংসারে
একমাত্র তরী ভবসিন্ধু তরিবারে।

শংকরাচার্য

২৬৩. যে-ব্যক্তি মুখে সাধু ও মিষ্টি কথা বলে, অথচ তদনুসারে কাজ করে না, তার সঙ্গ পরিত্যাগ করো।

–গৌতম বুদ্ধ

২৬৪. কেউ তোমাকে মুক্ত হবার জন্য সাহায্য করতে পারবে না, আপনার সাহায্য আপনি করো, নিজের প্রচেষ্টায় নিজমুক্তি সাধনের চেষ্টা করো।

–গৌতম বুদ্ধ

২৬৫. মূর্খ ও জ্ঞানহীন মানুষের ধার্মিক হইবার অধিকার নাই। সে ধার্মিক হইতে পারে না।

–ডা. লুৎফর রহমান

২৬৬. কোনো বিষয়ে মনের কেন্দ্রীয়করণের নামই ধ্যান। এক বিষয়ে একাগ্র করতে পারলেই সে-মনকে যে-কোনো বিষয়ে হোক না কেন, একাগ্র করতে পারা যায়।

–স্বামী বিবেকানন্দ

২৬৭. প্রাচীন ও আধুনিক দুনিয়ার প্রায় প্রত্যেক প্রখ্যাত নাস্তিকই সুজন, সুনাগরিক ও মনীষী। মানুষ হিসেবে এঁদের সামাজিক দায়িত্বজ্ঞান, কর্তব্যবোধ ও কল্যাণবুদ্ধি অপরের চাইতে তীক্ষ্ণ ও তীব্র। কিন্তু বাঁধা-পথের যাত্রীদের চোখে এঁদের এ চেহারা ধরা পড়ে না।

ড. আহমদ শরীফ

২৬৮. পাপ পতনের পদক্ষেস্বরূপ।

রবার্ট বার্টন

২৬৯. পাপ তার নিজের জন্য নরক নিজেই তৈরি করে, আর পুণ্য তৈরি করে স্বর্গ।

মেরি বেকার হার্ডি

২৭০. পাপস্বীকার অনুশোচনার প্রথম স্তর।

–এডমণ্ড গাইটন

২৭১. বেদে সাপকে ঝাপির ভিতর পুরিয়া রাখে, তার বিষদাঁত ভাঙে, বিষের থলি গলাইয়া ফেলে, কিন্তু বিষের উৎস তাহার নিঃশেষ হয় না। দিনদিন আবার সে বিন্দু বিন্দু করিয়া সঞ্চয় করে। দুনিয়ার প্রচলিত বিধানে পাষাণের অবরোধে পাপীকে আবদ্ধ করিয়া শিকলের পেষণে শাসক তাহার পাপকে বিনাশ করিতে চায়। কিন্তু তা হয় না।

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

২৭২. সৎ স্বভাব ও সুন্দর আচরণই পুণ্য। আর যে-বিষয় সম্পর্কে তোমার মনে দ্বিধা জাগে এবং লোকসমাজে যা প্রকাশ হওয়া তুমি অপছন্দ কর, তা-ই পাপ।

–আল-হাদিস

২৭৩. পুণ্য কাজ করা কষ্টকর, কিন্তু সে-কষ্টটা ক্ষণস্থায়ী, আর পুণ্য কাজটি চিরস্থায়ী। মন্দ কাজ সুখকর, কিন্তু এ-সুখটা ক্ষণস্থায়ী, আর মন্দ কাজটি দীর্ঘস্থায়ী।

প্লেটো

২৭৪. যারা বিশ্বাস করে খোদায় ও শেষ দিনে, আদেশ করে ভালো কাজে, নিষেধ করে মন্দ কাজে এবং হিতসাধনে তৎপর হয়, তারাই পুণ্যবান।

–আল-কোরআন

২৭৫. পুণ্য জিনিসটা কী? না, পুণ্য হচ্ছে একটি হ্যাঁন্ডনোট যাতে ভগবান আমাদের কাছে ঋণ স্বীকার করছেন, কোনো একরকম টাকায় তিনি কোনো এক সময় সেটা পরিশোধ করে দেবেন।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২৭৬. হে আল্লাহ্, আমি অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা, অতি বৃদ্ধবয়স এবং কবরে আজাব হইতে তোমার নিকট আশ্রয় চাই। যে-বিদ্যায় কোনো উপকার হয় না তাহা হইতে, যে-হৃদয় নত নয় তাহা হইতে, যে-ইন্দ্রিয় সন্তুষ্ট হয় না তাহা হইতে, যে-প্রার্থনা কবুল হয় না তাহা হইতে তোমার আশ্রয় চাই।

–আল-হাদিস

২৭৭. হে খোদা আমার অন্তরের
একমাত্র আকাঙ্ক্ষা
ছড়িয়ে দাও আমার দৃষ্টির আলো সবার উপর।

–আল্লামা ইকবাল ২৭৮. আমি আল্লাহকে সবচেয়ে ভয় পাই। তার পরেই ভয় পাই সেই মানুষকে যে আল্লাহকে মোটেই ভয় পায় না।

–শেখ সাদি

২৭৯. মুসলমানগণের মধ্যে যাহার স্বভাব সর্বাপেক্ষা ভালো সেই সর্বপেক্ষা খাঁটি মুসলমান এবং তোমাদের মধ্যে যাহারা আপন স্ত্রীর সহিত সর্বাপেক্ষা ভালো ব্যবহার করে তাহারাই তোমাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি।

–আল-হাদিস

২৮০. একজন খাঁটি মুসলমান কা’বা ঘর হইতে উত্তম।

–আল-হাদিস

২৮১. আরব আমার ভারত আমার
চীনও আমার নহে গো পর
মুসলিম আমি সারা দুনিয়ায়
ছড়িয়ে রয়েছে আমার ঘর।

–আল্লামা ইকবাল

২৮২. যে যত বেশি দুর্বল, অসহায় ও অসমর্থ, তার জীবনে দৈবশক্তির প্রভাবও তত অধিক।

–ড. আহমদ শরীফ

২৮৩. ভগবানের কাজে সাহায্য করা মানুষের একটি প্রধান কর্তব্য। মানুষ যতই ক্ষুদ্র এবং তুচ্ছ জীব হউক না কেন, তাহার মধ্যে ঐশী শক্তির বিকাশ রহিয়াছে।

শ্রী ক্ষিতিনাথ ঘোষ

২৮৪. মানুষ নিজের জন্য, বিধাতা সকলের জন্য।

–কার্ভেন্টিস

২৮৫. যে বিপদে ধৈর্যধারণ করে, আল্লাহ্ তাকে উত্তমরূপে পুরস্কৃত করেন।

–আল-কোরআন

২৮৬. যে-নামাজে হৃদয় নম্র হয় না, সে-নামাজ আল্লাহর নিকট নামাজ বলিয়াই গণ্য হয় না।

–আল-হাদিস

২৮৭, খাঁটি অলৌকিকতা দেখায় মানুষেরাই, এখন তারা ব্যবহার করে ঈশ্বরের দেয়া সাহস আর বুদ্ধি।

জ্যাঁ আনুই

১৮৮. বিস্ময় সমস্ত দর্শনের ভিত্তি, অনুসন্ধান তার অগ্রগতি, আর অবজ্ঞায় সমাপ্তি।

মতেইন

১৮৯. ধর্মের মূল কথাই হচ্ছে মানুষ হিসাবে মানুষের সেবা করা।

–টমাস ফুলার

১৯০. এ জগতে তুমি মানুষকে যা কিছু দাও না, জ্ঞান দান অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ দান আর নেই। পতিতকে পথ দেখান, জ্ঞানান্ধকে জ্ঞান দান করাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম।

–ডা. লুৎফর রহমান

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *