জ্যোৎস্না, রাত একটা পঁয়তিরিশে এক নারী

জ্যোৎস্না, রাত একটা পঁয়তিরিশে এক নারী

টেবিলটার মাঝখান দিয়ে উঁচু নিচু ঢেউ উঠেছে
তাই তোমাকে বাড়িতে ডাকতে পারছি না
টেবিল কারা ঠিক করে দেয়, তাও কি তোমার কাছেই জানতে হবে?
যাঃ টেলিফোনটা হঠাৎ বোবা-কালা হয়ে গেল আজ বিকেলে
মোবাইলটা তো চুরি হয়ে গেল পরশুদিন
কিংবা চোরকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, আমিই কোথাও ফেলে এসেছি
আচ্ছা, ওই ফোন কি জলের নীচেও শোনা যায়?
সে দিনই বাড়িতে নিজেকে ফোন করলুম ওই নম্বরে। বাজলও ঠিক
যেন প্রথমে কাদের জড়ামরি কণ্ঠস্বর, তারপর প্রবল জলস্রোতের শব্দ
তারপর একজন, বোধ হয় জলকন্যা, বলল, পাতালপুরীর দরজা যে খুলছে না!
হ্যাঁ সত্যি, বলেছে এই কথা
সেই দরজা শেষ পর্যন্ত খুলেছে কি না তা আর জানা হল না
আমার ঘাড়ে একটা বাঘ কামড়ে দিয়েছে, সেখানে এখনও রক্তের রেখা
ভেসে ওঠে
তুমি আসবে না, না ডাকলে তুমি আসবে না?

আমি বাথরুমে একা কাঁদি, খুব বিচ্ছিরি, খুব মলিন, না, না
সে কান্না অবশ্য তোমার জন্য নয়, একটা গানের সুর ভুলে যাবার জন্য
কিন্তু নিজের বাঁ দিকের স্তনে হাত দিয়ে ফিসফিস করে বলি, এটা তোমার
আমার আঙুল তোমার আঙুল হয়ে যায়
এ সব কথা বোধ হয় লেখা উচিত নয়, তাই না?
আমি কী করব, রাত্তির ঠিক একটা পঁচিশে
একটা সাদা পেঁচা উড়ে যায়
বারান্দার টবে এক থোকা রজনীগন্ধার পাশে দুটো জোনাকি
আমি শুধু পাতলা, সবুজ নাইটি পরা, ব্রা নেই, প্যান্টি নেই
টবের সামনে হাঁটু গেড়ে বসেছি, যেন জোনাকি আলো কখনও দেখিনি
জ্বলছে, নিবছে, অদৃশ্য হবার খেলা দেখাচ্ছে
বৃষ্টির ফোঁটার মতন রজনীগন্ধায় আসছে সুগন্ধ
যে সব দেশে তুষারপাত হয় না, সে সব দেশে জ্যোৎস্না অনেক গাঢ়
রাত্তির একটা পঁয়তিরিশে বুক মুচড়ে সব মেয়েরই মনে হয়
কেন হারিয়ে গেল গত জন্মের দুটো ডানা?