যাবট নিকট দিয়া যায় বেণু বাজাইয়া তখন আমি দুয়ারে দাঁড়ায়ে

কি রূপ দেখিনু সই কদম্বের তলে

সেই কোন বিধি আনি সুধানিধি থুইল রাধিকা নামে

আমিত অবলা তাহে এত জ্বালা বিষম হইল বড়

এ সখি সুন্দরি কহ কহ মোয়

হলধর ভয়ে মালা নাহি পারে দিতে

জনম গেল পর দুঃখে কত বা সহিব

ব্রহ্ম রন্ধ্রে সহস্র দল পদ্মে রূপের আশ্রয়

চৌদ্দ ভুবনে ভুবন তিন সপ্ত আখর তাহার চিন

মতান্তরে যে কহয়ে শুনহ নিশ্চয়

সদা বল তত্ত্ব তত্ত্ব কত তত্ত্ব শুন চব্বিশ তত্ত্বে হয় দেহের গঠন

আমার পরাণ পুতলী লইয়া নাগর করে পূজা

পুরুষ প্রকৃতি দোঁহে এক রীতি সে রতি সাধিতে হয়

প্রবর্ত সাধিতে বস্তু অনায়াসে উঠে

স্বরূপ বিহনে রূপের জনম কখন নাহিক হয়

এরূপ মাধুরী যাহার মনে তাহার মরম সেই সে জানে

রাগের ভজন শুনিয়া বিষম বেদের আচার ছাড়ে

এ তিন ভুবনে ঈশ্বর গতি ঈশ্বর ছাড়িতে পরে শকতি

নারীর সৃজন সে অতি কঠিন কেবা সে জানিবে তায়

সে কেমন যুবতী কুলবতী সতী সুন্দর সুমতি সার

সজনি শুনগো মানুষের কাজ

নায়িকা সাধন শুনহ লক্ষণ যে রূপে সাধিতে হয়

প্রবর্ত্ত দেহের সাধনা করিলে কোন বরণ হব

মিলা অমিলা দুই রসের লক্ষণ নায়ক নায়িকা নাম লক্ষণ কথন

হইলে সুজাতি পুরুষেরি রীতি যে জাতি নায়িকা হয়

কাতরা অধিকা দেখিয়া রাধিকা বিশাখা কহিল তায়

সাধন শরণ এ বড় কঠিন বড়ই বিষম দায়

ব্রহ্মাণ্ড ব্যাপিয়া আছয়ে যে জন কেহ না দেখয়ে তারে

সহজ সহজ সবাই কহয়ে সহজ জানিবে কে

সহজ আচার সহজ বিচার সহজ বলি যে কায়

সতের সঙ্গে পিরীরি করিলে সতের বরণ হয়

পিরীতি উপরে পিরীতি বৈসয়ে তাহার উপরে ভাব

প্রেমের পিরীতি কিসে উপজিল প্রেমাধরে নিব কারে

পিরীতি করিয়া ভাঙ্গয়ে যে সাধনা অঙ্গ পায় না সে

নিজ দেহ দিয়া ভজিতে পারে সহজ পিরীতি বলিব তারে

শুন গো সজনি আমারি বাত পিরীতি করবি সুজন সাত

সুজনের সনে আনের পিরীতি কহিতে পরাণ ফাটে

আপনা বুঝিয়া সুজন দেখিয়া পিরীতি করিব তায়

শুন শুন দিদি প্রেম সুধা নিধি কেমন তাহার জল

প্রেমের যাজন শুন সর্ব্বজন অতি সে নিগূঢ় রস

প্রেমের আকৃতি দেখিয়া মূরতি মন যদি তাতে ধায়

রসের কারণ রসিকা রসিক কায়াটি ঘটনে রস

রসিকা নাগরী রসের মরা রসিক ভ্রমর প্রেম পিয়ারা

রসিক রসিক সবাই কহয়ে কেহত রসিক নয়

শৃঙ্গার রস বুঝিবে কে সব রস সার শৃঙ্গার এ

কাম আর মদন দুই প্রকৃতি পুরুষ তাহার পিতার পিতা সহজ মানুষ

এই সে রস নিগুঢ় ধন্য ব্রজ বিনা ইহা না জানে অন্য

স্বরূপে আরোপ যার রসিক নাগর তার প্রাপ্তি হবে মদন মোহন

বাশুলী কহিছে শুনহ দ্বিজ কহিব তোমারে সাধন বীজ

এ দেহে সে দেহে একই রূপ তবে সে জানিবে রসেরই কূপ

চণ্ডীদাসে কহে শুনহ মাতা কহিলে আমারে সাধন কথা

চণ্ডীদাসে কহে তুমি সে গুরু তুমি সে আমার কল্পতরু

কহিছে রজকিনী রামী শুন চণ্ডীদাস তুমি নিশ্চয় মরম কহি জানে

পুন আর বার আসি তরাতর রামিনী জগতমাতা

এক নিবেদন করি পুনঃপুন শুন রজকিনি রামি

শুন রজকিনি রামি ও দুটি চরণ শীতল বলিয়া শরণ লইনু আমি

নিত্যের আদেশে বাশুলী চলিল সহজ জানাবার তরে

উঠিতে কিশোরী বসিতে কিশোরী কিশোরী নয়ান তারা

উঠিতে কিশোরী বসিতে কিশোরী কিশোরী গলার হার

উঠিতে কিশোরী বসিতে কিশোরী কিশোরী হইল সারা