৬. উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতা

৬. উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতা

একটা জ্ঞান ঋদ্ধ সমাজে আমাদেরকে অবিরত উদ্ভাবন
করতে হয়। সৃজনশীলতা থেকে উদ্ভাবন ঘটে,
সৃজনশীলতা আসে সুন্দর মন থেকে।

.

জ্ঞান যখন কোনো অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, তখন সমাজ জীবনের মৌলিক চাহিদা মেটানোর চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় ক্ষমতায়ন ও সার্বিক উন্নয়নের উপর। শিক্ষা ব্যবস্থায় পারস্পরিক ক্রিয়া ও সৃজনশীলতা শিক্ষাদানে উন্নয়ন সাধন করে ও আত্মশিক্ষা লাভে অনুপ্রেরণা দান করে থাকে। আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক উভয় প্রকারের শিক্ষায় মূল্যবোধ, মেধা ও গুণাবলির উন্নতি ঘটে। শিক্ষালাভের দ্বারা কর্মশক্তি জ্ঞানঋদ্ধ হয় এবং আত্মোন্নয়ন ঘটায়। চিন্তাভাবনায় নমনীয়তা অর্জিত হওয়ায় বিভিন্ন ইস্যু ও সমস্যা মোকাবিলায় দক্ষতা লাভ করা যায়। কাজের ধরন অনুযায়ী তাদেরকে কাঠামো ও হার্ডওয়ার ড্রাইভেনের পরিবর্তে প্রাসঙ্গিক সফটওয়ারের উন্নয়ন করার প্রয়োজন হতে পারে। ম্যানেজাররা অধিক পরিমাণে প্রতিনিধিত্বমূলক দায়দায়িত্ব অর্পণের উপর জোর দেন, যাতে কর্মচারীবৃন্দ আদেশ পালন করতে পারে। পরিশেষে বলতে হয়, অর্থনীতি বিশেষভাবে জ্ঞানচালিত শিল্পকারখানা দ্বারা চালিত হয়।

আমি এখানে আপনাদের সঙ্গে একটা মেসেজ শেয়ার করতে ইচ্ছা করি। এই মেসেজটা মন, সম্পদ, ব্যক্তিত্ব, দল এবং নেতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। একুশ শতকে নেতাদের প্রয়োজন জ্ঞান ঋদ্ধ নতুন দিকদর্শন। নেতার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সততার সঙ্গে কাজ করে সফলতায় পৌঁছানো

গতকালের কাজের ধারণা আমি উল্লেখ করেছি, সে কাজ আজ করতে হবে না। আমাদের চারপাশের পৃথিবীর বাস্তবতার পরিবর্তনকে আমাদের অবিরতভাবে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। আমাদেরকে উদ্ভাবন ও তা কার্যকর করতে হবে।

আমি নীচে নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করেছি–

  • জ্ঞানের সাহয্যে নেতৃত্বের অধিকারী হওয়া উচিত।
  • নেতৃত্ব মিশনের লক্ষ্য অর্জন করার উদ্দেশে বহুবিধ কর্মদক্ষতার বিভক্তিকরণে নেতৃত্ব দানে সক্ষম হয়।
  • টেকসই উন্নয়নের দরকার এই উপলব্ধির মাধ্যমে নেতৃত্বকে ঋদ্ধ করা।
  • সমস্ত প্রয়োজনে নেতৃত্বকে সংবেদনশীল হতে হয়।
  • নেতৃত্ব টিম স্পিরিটকে উজ্জীবিত করে।
  • উদ্ভাবন কীভাবে সৃজনশীলতায় উন্নীত হয় তার দ্বারাই নেতৃত্বকে বিচার করতে হয়।

নেতৃত্ব অবিরতভাবে জ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি ও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অভিব্যক্ত হয়।

  • নেতৃত্ব প্রত্যেক স্তরে অতিরিক্ত মূল্যবোধের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।
  • নেতৃত্ব ফলাফলকে কদর করে ও তার উপর ভিত্তি করে পদক্ষেপ নেয়।
  • নেতারা সততার সঙ্গে কাজ করে সাফল্যলাভ করে ও নেতারা অগ্রণী ব্যক্তি হিসাবে তাদের অধীনস্থদের সাহায্যে কাজ করে।

আমি উন্নয়নের ধরন এবং জাতির, বিশেষ করে ব্যবসাবাণিজ্যে ডাইনামিক সংযোগ সম্বন্ধে পড়াশোনা করেছি। আপনারা জানেন, পৃথিবীতে কমই উন্নত দেশ আছে, আর আছে উন্নয়নশীল দেশ। তাদের মধ্যে কি সম্পৃক্ততা আছে? একটা উন্নত দেশ বিভিন্ন দেশে তাদের পণ্য প্রতিযোগিতামূলক উপায়ে বাজারজাত করে, উন্নতদেশ হিসাবে তাদের অবস্থান সুসংহত করার লক্ষ্যে। উন্নয়নশীল দেশও তাদের পণ্য প্রতিযোগিতামূলক পথে বাজারজাত করে, তারা উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন দেখে। দেশগুলোর দুধরনের প্রতিযোগিতা হচ্ছে সাধারণ বিষয়। পণ্যের গুণগত মান, মূল্যমান ও সরবরাহের সময় নির্ধারণ করতে পারে এমন সব দেশগুলো অধিকতর সাফল্যলাভ করে। উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশগুলোতে পণ্যের বাজার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিরূপিত হয়। একেই বলা হয় উন্নয়নের আইন।

এই অনুষঙ্গে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারের ব্যাপার আছে যাতে দেশের দূরবর্তী এলাকাতে যোগাযোগ উন্নত হয়। দেশব্যাপী সংযোগের জন্য আজকের দিনে আমাদের ৯০০ মিলিয়ন মোবাইল আছে। ২০১৭ এর শেষের দিকে মোবাইল ভিত্তিক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা হবে ৫০০ মিলিয়ন, বর্তমানে এই সংখ্যা ১৬০ মিলিয়ন। নতুন ব্যবহারকারীদের অধিকাংশ হবে গ্রামীণ এলাকায়। বর্তমানে ৬০০,০০০ গ্রামের সংখ্যাগরিষ্ঠদের ৭০ শতাংশ জনগণ এখনো উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ পায় না। এমনকি থ্রিজি মোবাইল নেটওয়ার্ক সংযোগ অধিকাংশ গ্রামীণ এলাকায় সহজলভ্য নয়।

একটা তথ্য এখানে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে চাই। গবেষণার মাধ্যমে ইউএস ও নেদারল্যান্ডে ফাইবার অপটিক ক্যাবেলের উন্নতি সাধিত হয়েছে।

বর্তমানে ব্রডব্যান্ড স্পিড-এর ক্ষেত্রে ভারত পৃথিবীর মধ্যে ১১৮ তম স্থানে আছে। ভারতে গড় স্পিড ১.৭ এমবিপিএস। সেক্ষেত্রে জাপান ও হংক-এর স্পিড ২০ এমবিইপিএস। এখন ভারতে আনুমানিক ১৪ মিলিয়ন কিলোমিটার ফাইবার ক্যাবেল গত এক দশকে কিছু নগরী এবং কতকগুলো জেলার সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। ২০১৭-এর মধ্যে ৩০ মিলিয়ন কিলোমিটারে পৌঁছে যাবে, যার ফলে জেলা ও ব্লক পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। গ্রাম ও শহরতলির সঙ্গে ডিজিটাল সেতুবন্ধন রচনা করা আমাদের দরকার। ২.৫ লক্ষ পঞ্চায়েত ও ৬০০,০০০ গ্রামকে ফাইবার অপটিকে যুক্ত করা প্রয়োজন। যদি আমরা এটা করতে পারি তবে আমাদের প্রয়োজন হবে ৬ লক্ষ ক্যাবেল কিলোমিটার ও ১৫ মিলিয়ন ফাইবার কিলোমিটার সংযুক্ত করা ২.৫ লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে। এখন যদি আমরা ৬০০,০০০ গ্রাম ও নগরীকে সংযুক্ত করতে পারি, তবে আমাদের প্রয়োজন হবে ৪০০ মিলিয়ন ফাইবার ক্যাবেল কিলোমিটার। ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়ার সৃষ্টি করবে ৪০০ কিমি ফাইবার অবকাঠামো। জানা গেছে, চীন প্রত্যেক বছর ২০০ মিলিয়ন ফাইবার ক্যাবেল কিলোমিটার ডিজিটাল সেতুবন্ধন রচনা করে থাকে। আমাদের জন্য সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ হবে আন্ডারগ্রাউন্ড ফাইবার ক্যাবেলকে একটা ফলপ্রসূ প্রোজেক্টের ব্যবস্থাপনায় সঠিক সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা। ফাইবার অপটিকস প্রযুক্তি সংযুক্ত হতে পারে হাইটেনশন ইলেট্রিক অয়ারে। হাইব্রিড ফাইবার, কপার, এলুমিনিয়াম ক্যাবেল বিদ্যুৎ সঞ্চালন করতে পারে। আমরা অপটিক্যাল ফাইবারকে বর্তমানের বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত করে সারাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারি। যে পর্যন্ত গ্রামগুলো ওয়াই-ফাই সুবিধা না পাবে, ততদিন ডিজিটাল প্রযুক্তি সীমিত পরিসরেই থাকবে। আমি আপনাদেরকে বলতে চাই, প্রকৌশল, প্রযুক্তি ও যোগাযোগের উন্নয়ন সাধনের জন্য সরকারের সঙ্গে কাজ করতে হবে। সরকারি ও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটা রোডম্যাপ করতে হবে যাতে ফাইবার ক্যাবেলের কমবিনেশনের মাধ্যমে হাই স্পীডের ওয়াই-ফাই সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেওয়া যায়। এতে গ্রামে ওয়াই-ফাই ও 3-G/4- G সংযোজন সম্ভব হবে। একবার এটা সম্ভব হলে, আমরা অল্প মূল্যে গ্রহণযোগ্য সেবা প্রদান করতে পারব।

আমি আর একটা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রের উপর আলোকপাত করতে পারি, যা মানব জাতিকে বিপুল সুযোগ সুবিধা দান করতে পারবে। এটা হচ্ছে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেনস (AI)। আপনারা সচেতন হলে, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানুষের উদ্যমকে বাড়িয়ে দিতে পারে। এর সাহায্যে ডাক্তাররা যথেষ্ট দক্ষতা দেখাতে পারবেন চিকিৎসাশাস্ত্রে উল্লিখিত স্পট ক্যান্সারের বিষয়ে।

আমি ২০১৪-১৫ বছরের জন্য বিশ্ব প্রতিযোগিতা’ রিপোর্ট পড়ছিলাম। গ্লোবাল কমপেটিটিভ ইন্ডেক্স র‍্যাকিং এর শর্তগুলো পড়লাম। সুইজারল্যান্ডের র‍্যাঙ্ক হচ্ছে ১, সিংগাপুরের র‍্যাংক ২, ইউএস এর র‍্যাংক ৩, ইউই এর ১২, কোরিয়ার ২৬, চীনের ২৮ এবং ভারতের ৭১। গ্লোবাল কমপেটিটিভনেস ইন্ডেক্সে আমাদের কাজের গতি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। গ্লোবাল কমপেটিটিভনেস নির্ধারিত হয় একটা সংস্থার উদ্ভাবনীশক্তির উপর। প্রতিষ্ঠান ও ফার্মের RAD নেওয়া পদক্ষেপ থেকে গ্লোবাল কমপেটিটিভনেস নির্ধারিত হয়। আমাদের প্রয়োজন গ্লোবাল কমপেটিটিভনেসকে উন্নত করে পরবর্তী পাঁচ বছরে পৃথিবীর দেশগুলোর মাঝের র‍্যাকিং এ শীর্ষ ১০ এর মাঝে থাকা দরকার। গবেষক, প্রযুক্তিবিদ, প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ার, বিজিনেস লিডার ও সর্বোপরি রাজনৈতিকদের সমর্থন পাওয়া গেলেই এটা সম্ভব। জ্ঞানের নতুন দিগন্ত ও নতুন দিকদর্শন দিনদিন অধিকতর অর্থবহ এবং ঋদ্ধ হয়। সৃজনশীলতা থেকে উদ্ভাবনের উদ্ভব ঘটে।

জ্ঞানভিত্তিক সমাজে আমাদেরকে অবিরামভাবে উদ্ভাবন করতে হবে। উদ্ভাবন সৃজনশীলতা থেকে আসে। সৃজনশীলতা আসে সুন্দর মন থেকে।

আমি নিশ্চিত যে, ভারতে সব সময়ই উদ্ভাবনমূলক চিন্তাচেতনার প্রকৌশলী, ব্যবস্থাপক, শ্রমিক ও শত শত সৃজনশীল মন আছে। কলেজগুলোর থাকা উচিত একটি উদ্ভাবনী কেন্দ্র, যেখানে উদ্ভাবনমূলক আইডিয়া ও খরিদ্দারদের জন্য একটা পণ্যের আকার দেয়ার চর্চা থাকতে হবে। উদ্ভাবনী কেন্দ্র সৃজনশীল নেতাদের দ্বারা পরিচালিত হবে। সৃজনশীল নেতারা তরুণদের অনুপ্রেরণা দিতে পারেন এবং একটা পণ্যের উৎপাদনে সাহায্য করতে পারেন।

আমি বহু ফোরামে ২০২০ সালের মধ্যে ডিভেলপমেন্ট প্রোফাইলের স্তম্ভসমূহ উপস্থাপন করেছি। আমি আপনাদের কাছেও তা উপস্থাপন করব।

  • একটি দেশ গ্রাম, শহর এবং শহরতলি মিলে গঠিত
  • একটি দেশে সমতাভিত্তিক বিতরণ ব্যবস্থা, যথেষ্ট বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্যসম্মত পানীয় জল থাকতে হবে।
  • একটি দেশে কৃষি, শিল্প ও সেবা বিভাগকে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
  • একটি দেশে মূল্যবোধমূলক শিক্ষাব্যবস্থা সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করে।
  • একটি দেশের সর্বোত্তম গন্তব্য মেধাবী পণ্ডিত, বিজ্ঞানী এবং আবিষ্কারকদের তৈরি করা।
  • একটি দেশে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য হতে হবে।
  • একটি দেশের সরকার হতে হবে সংবেদনশীল, স্বচ্ছ ও দুর্নীতি মুক্ত।
  • একটি দেশকে সম্পূর্ণ দারিদ্র্যতা, নিরক্ষরতা মুক্ত করতে হবে এবং সমাজ থেকে মহিলা ও শিশুদের প্রতি নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
  • একটি দেশে সমৃদ্ধি, সুস্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, সন্ত্রাসহীন, শান্তিপূর্ণ ও সুখী জীবনের জন্য টেকসই পথে চলতে হবে।
  • একটি দেশ হচ্ছে বসবাসের জন্য নিরাপদ স্থান যেখানে জাতি তার নেতৃত্বের জন্য গর্বিত।

ভারতকে এই সমস্ত গুণাবলি অর্জন করতে হলে একটি রূপকল্প থাকবে। আমি বিশ্বাস করি, এজন্য পাঁচটি ক্ষেত্রে সমন্বিত কাজ করতে হবে। এইগুলো হলো—

১. কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ

২. বিশ্বাসযোগ্য ও গুণগত বৈদ্যুতিক শক্তি, পরিবহন এবং সারাদেশের সমস্ত অংশে অবকাঠামো উন্নয়ন করা।

৩. শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন করা।

৪. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটানো।

৫. সমালোচনামূলক প্রযুক্তিতে আত্মবিশ্বাস রাখা।

এই পাঁচ ক্ষেত্রের বিষয়গুলো ঘনিষ্ঠভাবে পারস্পরিক সম্পর্ক যুক্ত। যদি এগুলো সমন্বিত পন্থায় চলে, তবে খাদ্য, অর্থনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা গড়ে উঠবে

প্রত্যেক দেশে অর্থনীতির প্রত্যেক শাখা, বিজ্ঞান, প্রকৌশল, প্রযুক্তি, ব্যবস্থাপনা যাই হোক না কেন প্রত্যেক ক্ষেত্রেই সৃজনশীল নেতৃত্বের প্রয়োজন। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মহান মানবিক চরিত্রের মাধ্যমে একটা জাতির সমৃদ্ধি ঘটে। এটা যে যে ভাবে ঘটে—

  • একটা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটে প্রতিযোগিতামূলক কাজ থেকে।
  • জ্ঞানের দ্বারা প্রতিযোগিতামূলক কাজ চালিত হয়।
  • জ্ঞান প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন দ্বারা চালিত হয়।
  • প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন সম্পদ বিনিয়োগের মাধ্যমে চালিত হয়।
  • সম্পদ বিনিয়োগ দ্বারা চালিত হয়। বিনিয়োগ থেকে ফিরে আসে প্রাপ্তি।
  • উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতা
  • রাজস্ব অর্থমূল্য ও পুন: বিক্রির দ্বারা চালিত হয়।
  • অর্থমূল্য ও পুন: বিক্রি খরিদ্দারের বিশ্বস্ততার সাহায্যে চালিত হয়।
  • অর্থমূল্য ও পুন: বিক্রি চালিত হয় গুণমান ও পণ্যের অর্থমূল্যে।
  • গুণমান ও পণ্যের অর্থমূল্য চালিত হয় কর্মচারীর উৎপাদনশীলতা ও উদ্ভাবনের দ্বারা।
  • কর্মচারীর উৎপাদনশীলতা চালিত হয় কর্মচারীর বিশ্বস্ততার উপর।
  • কর্মচারীর বিশ্বস্ততা চালিত হয় কর্মচারীর সন্তুষ্টির দ্বারা।
  • কর্মচারীর সন্তুষ্টি চালিত হয় পরিবেশগত কাজের দ্বারা।
  • পরিবেশগত কাজ চালিত হয় ব্যবস্থাপনা উদ্ভাবনের দ্বারা।
  • ব্যবস্থাপনা উদ্ভাবন চালিত হয় সৃজনশীল নেতৃত্বের দ্বারা।

আমার জীবনে আমি তিনটা স্বপ্ন দেখেছি। সেই স্বপ্নগুলো হচ্ছে ভিশন, মিশন এবং রিয়েলাইজেশন। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন (ইসরো), দ্য ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডিভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন (ডিআরডিও)- এর অগ্নি প্রোজেক্ট এবং প্রোভাইডিং আরবান অ্যামেনিটিস ইন রুরাল এরিয়াস (পুরা) মিশন এক সময় জাতীয় মিশনে পরিণত হয়। অবশ্য এই তিনটি প্রোগ্রাম বহু চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা মোকাবিলা করে সাফল্যের মুখ দেখে। আমি এই তিনটি ক্ষেত্রেই কাজ করেছি। আমি আপনাদেরকে জানাতে চাই, এই তিনটি প্রোগ্রাম থেকে আমি শিখেছি নেতৃত্ব কাকে বলে:

  • নেতাদের অবশ্যই একটা ভিশন থাকতে হবে।
  • নেতাদের ভিশনকে বাস্তবায়িত করার জন্য ভাবাবেগ থাকতে হবে।
  • নেতাদের অবশ্যই সামর্থ্য থাকতে হবে একটা অনাবিষ্কৃত পথে ঢুকে পড়ার।
  • নেতাদের অবশ্যই সাফল্য ও ব্যর্থতাকে মোকাবিলার পদ্ধতি জানতে হবে।
  • নেতাদের অবশ্যই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস থাকতে হবে।
  • নেতাদের অবশ্যই ব্যবস্থাপনায় কুশলী হতে হবে।
  • নেতাদের প্রত্যেকটি কাজে স্বচ্ছতা থাকা উচিত।
  • নেতাদের অবশ্যই সততার সঙ্গে কাজ করে, সততার সঙ্গে সফল হতে হবে।

সমস্ত মিশনগুলোর সাফল্য অর্জনের জন্য আপনাদেরকে হতে হবে সৃজনশীল নেতা। সৃজনশীল নেতৃত্বের অর্থ ভিশনকে অনুশীলন করা। সমৃদ্ধ ও উন্নত ভারত গড়ার কাজে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পকারখানা থেকে সৃজনশীল নেতা তৈরি করা।

আসুন, সমৃদ্ধি লাভের জন্য আমরা বিজ্ঞানের আলোকে কর্মপরিধি ও বিধি প্রণয়ন করি। আসুন আমরা একটি বায়োমেডিক্যাল স্বাস্থ্যসেবা গড়ে তোলার জন্য সমন্বিতভাবে ভূমিকা রাখি।

(মাহিন্দ্র একোলে কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেক মাহিন্দ্র, হায়দ্রাবাদ এর তরুণ ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে ১৪ মে ২০১৫ এর ভাষণ থেকে। )

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *